পাণ্ডবের চীন দর্শন-০২

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: রবি, ১৪/১২/২০০৮ - ৯:৪৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার ভাষা, আমার ভাষাজ্ঞান

একবার যাত্রার ঠিক আগ-মুহূর্তে স্মার্ট ট্রাভেল এজেন্ট বললেন, ‘পাণ্ডবদা, আজতো কানেকটিং ফ্লাইট পাচ্ছেন না তাই রাতে আপনাকে কুনমিঙ থাকতে হবে। চিন্তার কিছু নেই, হোটেল বুক করা আছে। এই নিন হোটেলের নাম। কুনমিঙ নেমে ট্যাক্সিকে এই নাম বললেই নিয়ে যাবে”। দেখি কাগজে ইংরেজীতে লেখা “জিনজিয়াঙ হোটেল”।
বললাম, “দাদা, এই ইংরেজী নামে চলবে না। পারলে চায়নিজে লিখে দেন”।
“স...আমার ভাষা, আমার ভাষাজ্ঞান

একবার যাত্রার ঠিক আগ-মুহূর্তে স্মার্ট ট্রাভেল এজেন্ট বললেন, ‘পাণ্ডবদা, আজতো কানেকটিং ফ্লাইট পাচ্ছেন না তাই রাতে আপনাকে কুনমিঙ থাকতে হবে। চিন্তার কিছু নেই, হোটেল বুক করা আছে। এই নিন হোটেলের নাম। কুনমিঙ নেমে ট্যাক্সিকে এই নাম বললেই নিয়ে যাবে”। দেখি কাগজে ইংরেজীতে লেখা “জিনজিয়াঙ হোটেল”।
বললাম, “দাদা, এই ইংরেজী নামে চলবে না। পারলে চায়নিজে লিখে দেন”।
“সে কী! ইংরেজী বুঝবেনা? আর আমি চায়নিজ লিখব কী করে?”
“দাদা রে! ট্যাক্সিওয়ালা যদি ইংরেজী বুঝতো তাহলে তো সে বিজনেস এক্সিকিউটিভের কাজ করত! আর এ এমন এক দেশ যেখানে হোটেলগুলোর দু’টো নাম থাকে। একটা ইউরোপীয় আর আরেকটা চায়নিজ (যেমন, ফু-বাঙ = ফরচুন বণ্ড, ফু-চুন = রিচ স্প্রীং)। তাই ওরা নিজেরা যে নাম বলে তা না বললে হোটেলে পৌঁছুতে পৌঁছুতে আমার রাত কাবার হয়ে যাবে”।
নিরুপায় ট্রাভেল এজেন্ট পেশাদারী হাসি হেসে আমাকে বিদায় দেন।

প্লেনে চায়না ইস্টার্নের বিমানবালাকে বলি, “তুমি কী দয়া করে আমাকে এই হোটেলটার নাম চায়নিজে লিখে দেবে?”
বিমানবালা তার সহকর্মীদের সাথে মিনিট পাঁচেক আলোচনা করে আমার কাছ থেকে কাগজ-কলম নিয়ে চায়নিজে দু’টি বর্ণ লিখল। আমি ভাবলাম এই দুই বর্ণ মিলে নিশ্চয়ই “জিনজিয়াঙ” হয়। তাই আগ বাড়িয়ে বললাম, “নাউ রাইট ‘বিঙওয়ান’ (হোটেল)”। বুঝতে পারিনি ভাষা নিয়ে আমার এই মাতব্বরি করা একেবারেই ঠিক হয়নি। বিমানবালা ধরেই নিল আমি চায়নিজ জানি কিন্তু লিখতে পারিনা। সে লেখা থামিয়ে ফর-ফর করে মিনিট খানেক চায়নিজে বকবক করে আমার দিকে সমর্থনের দৃষ্টিতে তাকায়। আমি আর বাক্য ব্যয় না করে তার হাত থেকে কাগজ-কলম নিয়ে আবারো বোকার মত বলি, “শিয়ে-শিয়ে (ধন্যবাদ)”। আমার আসলে বলা উচিত ছিল, “কস কী মমিন?”

একবার এক বাণিজ্যমেলায় গিয়ে ঠিক করলাম আগে চায়নিজ সংখ্যাগুলো শিখে নেব। তাহলে প্রতিপক্ষ যখন দাম নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবে আমি তখনই আসল দাম বুঝে ফেলব (বেকুব আর কাকে বলে!)। যাই হোক এক বুথে গেছি, নিজের বিজনেস কার্ড এগিয়ে দিয়ে বুথ ঘুরতে থাকি। আমার কার্ড নিয়ে এক ললনা তার পাশের ললনাকে চায়নিজে কী যেন প্রশ্ন করে। আমার মনে হল সে নিশ্চয়ই আমি কোন দেশ থেকে এসেছি তা জিজ্ঞেস করছে (আমার কার্ডে দেশের নাম লেখা ছিলনা)। আমি ইংরেজীতে বললাম, “ফ্রম মুনজালাগৌ”। ঝড়ে প্রথম বক মরল। প্রথম ললনা এবার আমার দিকে তাকিয়ে চায়নিজে দ্বিতীয় প্রশ্ন করল যাতে “মুনজালা” শব্দটা ছিল। ভাবলাম এবার নিশ্চয়ই দেশটা কোথায় তা জিজ্ঞেস করছে। আবার ইংরেজীতে বললাম, “ইটস বিটুইন ইন্দুগৌ অ্যাণ্ড মেইতিয়েনগৌ”। ঝড়ে দ্বিতীয় বক মরল। এবার তো দুই ললনার মুখ দিয়ে চায়নিজের তুবড়ি ছুটলো। আমি দাঁত বের করে ইংরেজীতে বললাম আমি চায়নিজ জানিনা। তারা কী আর বিশ্বাস করে!

একটু পর, ক্যাটালগ দেখে দাম জানতে চাইছি। আমি আর্টিক্যাল নাম্বার বললে দ্বিতীয়া প্রথমাকে চায়নিজে অনুবাদ করে দেয়, আর সে দাম লেখে। খামাখা সময় নষ্ট হচ্ছে ভেবে আমি নিজেই সদ্যলদ্ধ চায়নিজ জ্ঞানে আর্টিক্যাল নাম্বার বলতে থাকি “আড়ড়-ই-লিঙ (২০১)”, “ওহ-সান-বা (৫৩৮)” ইত্যাদি ইত্যাদি। এবার আর দুই ললনার কোন সন্দেহ নেই আমি চায়নিজ জানি, এতক্ষণ শুধু ভেক ধরে ছিলাম। অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে যখন বিদায় নিলাম তখনো দেখি প্রথমা অবিশ্বাস চোখে নিয়ে আমার দিকে ফিরে বিড়বিড় করছে।

দেশে ফেরার কিছুদিন পর দেখি সেই কোম্পানী থেকে আমার নামে চিঠি এসেছে। খাম খুলে দেখি হাতে লেখা বিশুদ্ধ চায়নিজে এক পত্র। সেই চিঠিকে প্রথমার লেখা চায়নিজ প্রেমপত্র মনে করে বেশ কয়েকদিন ব্যাগে নিয়ে ঘুরেছিলাম। ভেবেছিলাম যাজ্ঞসেনী চলে গেলেও পাণ্ডবের দিন চলে যায়নি। কয়েকদিন পর এক চায়নিজ সহকর্মীকে গোপনে সেই চিঠি পড়তে দিলে সে অনুবাদ করে বলল “বিশুদ্ধ ব্যবসায়িক পত্র”। আমরা যে মাল-সামান বিক্রি করি তারই বিস্তারিত বিবরণ। আরো অনুরোধ করেছে আমি যেন চায়নিজেই তার সাথে বাত-চিত করি, কারণ সে ইংরেজী জানে না। বলাই বাহুল্য ঐ কোম্পানীর সাথে ব্যবসাটা আর হয়নি। আর আমিও কখনো আগ বাড়িয়ে চায়নিজ বলার চেষ্টা করিনি।

চীনারা সাধারণত ধরেই নেয় আপনি চায়নিজ বোঝেন। তাই তারা আপনার জানার তোয়াক্কা না করেই সমানে নিজ ভাষায় আপনার সাথে আলাপ জুড়ে দেবে। আমি তাই আজকাল চীনের যেখানে ইংরেজী চলে না, সেখানে বাংলায় কথা বলি। তাও আবার পাণ্ডবীয় বাংলা নয়, খাঁটি ঢাকার রাস্তার ভাষায়। এখন চীনের বাজারে গেলে জিনিষ হাতে নিয়ে বলি, “অ্যাই, এইডার দাম কত?” প্রতিপক্ষ তার ভাষায় কিছু বলে। আমি আবার বলি, “আরে ব্যাটা বুঝার মতন দাম ক”। এইবার দোকানদার ক্যালকুলেটরে লিখে দাম দেখায়, ধরুন ২৫ টাকা (ইউয়ান)। আমি বলি, “তর মাথা খারাপ হইছে? ১০ ট্যাকায় দিবি?” এবার সে দাম দেখায় ২০ টাকা। আমি বলি, “১২ ট্যাকা হইলে আছি নাইলে ফোট”। এবার সে দাম দেখায় ১৫ টাকা। আমি নীরবে ১৫ ইউয়ান বের করে, দাম দিয়ে জিনিষ নিয়ে চলে আসি।

কে বলে বাংলা আন্তর্জাতিক ভাষা না?


মন্তব্য

মুস্তাফিজ এর ছবি

মজা পাইলাম
很笑话

...........................
Every Picture Tells a Story

এনকিদু এর ছবি

মজার পরের লাইনে ঐটা কি ?

কান-জি মনে হচ্ছে ।

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বস চায়নিজ জনেন দেখছি। নজরুলসহ আরো কিছু আগ্রহী ছাত্র আছে। কোচিং সেন্টার খুলে ফেলেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মুস্তাফিজ এর ছবি

চাইনিজ় জ়ানিনা, কপি করছি

...........................
Every Picture Tells a Story

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আমি শুনেছিলাম, "চায়না ইস্টার্ণ" নাকি অনেকটা লোকাল "মুড়ির টিন" বাসের মতো।

আপনার দরদাম করার প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বেশ খানিকক্ষণ হাসলাম হো হো হো


A question that sometimes drives me hazy: am I or are the others crazy?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চায়না ইস্টার্ণকে "সদরঘাট টু কুড়িল-বিশ্বরোড"-এ এই কিছুদিন আগেও চলা বাসগুলোর সাথে তুলনা করা যায়। শুধু বাপ-মায়ের দোয়া আছে বলে প্রতিবার ভালোয় ভালোয় ফেরত আসি।

একমাত্র পুরোনো বই কেনা ছাড়া আর কোন জিনিষ কেনায় আমার দর-দাম করার কোন প্রতিভা নেই। চীনে যে দর-দাম করার কথা শুনেছেন তা গাউছিয়া বিশেষজ্ঞদের তুলনায় নস্যি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আমার আসলে বলা উচিত ছিল, “কস কী মমিন?”

এখন চীনের বাজারে গেলে জিনিষ হাতে নিয়ে বলি, “অ্যাই, এইডার দাম কত?” প্রতিপক্ষ তার ভাষায় কিছু বলে। আমি আবার বলি, “আরে ব্যাটা বুঝার মতন দাম ক”। এইবার দোকানদার ক্যালকুলেটরে লিখে দাম দেখায়, ধরুন ২৫ টাকা (ইউয়ান)। আমি বলি, “তর মাথা খারাপ হইছে? ১০ ট্যাকায় দিবি?” এবার সে দাম দেখায় ২০ টাকা। আমি বলি, “১২ ট্যাকা হইলে আছি নাইলে ফোট”। এবার সে দাম দেখায় ১৫ টাকা। আমি নীরবে ১৫ ইউয়ান বের করে, দাম দিয়ে জিনিষ নিয়ে চলে আসি।

কে বলে বাংলা আন্তর্জাতিক ভাষা না?

হা হা ...

স্নিগ্ধা এর ছবি

বুঝতে পারিনি ভাষা নিয়ে আমার এই মাতব্বরি করা একেবারেই ঠিক হয়নি।

কিন্তু, তারপর কি হলো? মানে আপনার মাতব্বরির ফল অথবা পান্ডবোচিত 'ভাব নেয়া' (= হাঁটু-স্যুপে নাকানি চুবানি খাওয়া) র বিস্তারিত বিবরণ কোথায়?! দেঁতো হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অন্যের দুর্দশা নিয়ে মজা করেন, তাই না? নাকানি-চুবানি খাওয়ার আর কী দেখেছেন! সামনে আরো দুর্গতির কথা আছে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এনকিদু এর ছবি

কে বলে বাংলা আন্তর্জাতিক ভাষা না?

কেউ বলে না, আমরাই বোকার মত মনে করি ।

এই প্রসঙ্গে একটা মজার জিনিস বলি । আমার কিছু সহকর্মী আছে দক্ষিন আফ্রিকার লোক । একবার তাদের একজনের সাথে একটা জরুরী আলাপে বসলাম । ভাষা যথারীতি ইংরেজি, যা আমাদের দু'জনের কারোই মাতৃভাষা নয় । একটু পর সহকর্মী বলে, ইংরেজীতে নাকি তার বুঝিয়ে বলতে কষ্ট হচ্ছে , মাতৃভাষায় বলার সুযোগ পেলে ভাল হত । তত দিনে আমিও কিছু কিছু আফ্রিকান্স বুঝি, সেও কিছু কিছু বাংলা বুঝে । তারপর শুরু হল বাংলা আফ্রিকান্স আর ইংরেজীর খিচুড়ি ভাষায় আলাপ । সে এক মারাত্নক অভিজ্ঞতা !

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কত কিছু যে জানার বাকী আছে! এই শহরে আফ্রিকানার জানা বাঙালী আছে!!



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

জটিল!!! গড়াগড়ি দিয়া হাসি

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

খুব ইন্টারেস্টিং তো!

নির্জর প্রজ্ঞা এর ছবি

আপনার লেখা একদম "রসগোল্লা"। পড়ে ভালো লাগলো।

আমি নিজেও অনেকবার বাংলা বলে পার পাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমাদের পূর্বপুরুষরা তো ভাষা ছাড়াই কাজ চালিয়েছেন একটা সময়। তো অনেক সময় ভাষার চেয়ে মনের ভাবটা বুঝার চেষ্টা করলেই ভাবনা স্থানান্তর করা যায়, ভাষার স্থানান্তর না করলেও চলে।

ব্যক্ত হোক তোমা-মাঝে অনন্তের অক্লান্ত বিস্ময়
(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর )

যুধিষ্ঠির এর ছবি

আপনার ওই চাইনিজ-বাংলা কথোপকথন টেকনিক আমি বহুবার ব্যবহার করেছি, বিশেষত: চৈনিক মুদীর দোকানগুলোতে। ব্যাপারটা বেশ কাজের!

আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে চায়নাতে গিয়ে আপনি ব্যবসায়িক আলোচনাগুলো ললনাদের ছাড়া আর কারো সাথে করেন না!

লেখা তো চলছে ভালোই! এই গতিতেই চলতে থাকুক।

স্নিগ্ধা এর ছবি

আচ্ছা, পান্ডবেরা কি সেই সত্যযুগেও পরস্পরের সাথে 'আপনি, আপনি' করে কথা বলতো? নাকি, এটা এই কলিযুগে একেকজন একেক ব্যাচে হবার ফল? নাকি খামোখাই (মানে হুদাই একটা পান্ডবোচিত ভাব নেয়া) ? চিন্তিত

যুধিষ্ঠির এর ছবি

একদম ঠিক ধরেছেন! হুদাই।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ললনা-প্রসঙ্গতো এখনো বলিই নাই। তাতেই আপনার এই প্রতিক্রিয়া! আর সব শুনলে কী বলবেন!!



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আনিস মাহমুদ এর ছবি

আমার মনে পড়ল আরেক ঘটনা। ব্যাংকক থেকে ট্যাক্সিতে পাতায়া যাচ্ছি। তলপেটে প্রচণ্ড চাপ। ড্রাইভারকে নানাভাবে আমার দুরবস্থা বোঝানোর চেষ্টা করছি আর অনুরোধ করছি সুবিধামত কোনো একটা জায়গায় থামার। শালা বোঝেই না। একবার কিছু না বুঝেই মাথা নাড়ে আর বলে, "অকে, অকে।" আবার ড্যাশবোর্ড থেকে কয়েকটা মেয়ের ছবিওয়ালা পোস্টকার্ড বের করে বলে, "বিউতিফুল, বিউতিফুল।" শেষে অধীর হয়ে বাংলায় চি‍ত্কার করে যখন বললাম, "*দির ভাই, থামবি?" তখন সে গাড়িটা সাইড করে দাঁড় করাল আর চোখ-বন্ধ-হওয়া হাসি দিয়ে বলল, "অকে, অকে।"

লেখা দারুণ হচ্ছে! চলুক। চলতেই থাকুক।

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

স্পর্শ এর ছবি

হা হা হা!!
অকে অকে।
....................................................................................
অতঃপর ফুটে যাবার ঠিক আগে হীরক খন্ডটা বুঝলো, সে আসলে ছিল একটা মামুলি বুদবুদ!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বাংলা ভাষা আসলেই যে কত শক্তিশালী, তার আরেকটা প্রমাণ পেলাম হো হো হো


A question that sometimes drives me hazy: am I or are the others crazy?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

যাক... বহুত জ্ঞান হইলো... এখন থেকে আর বিদেশে যাইতে ডরামু না... খাস বাংলাটা আমি খুবই ভালো পারি... গাবতলী টার্মিনালের পোলা কি না... চোখ টিপি

ইংরেজি কম জানা নিয়াও আর কোনো টেনশন রইলো না...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

গৌতম এর ছবি

পাণ্ডবদার লেখা ত্থিকা বহুত সাহস পাইলাম। ধন্যবাদ। দেখি মরণের আগে চীন ত্থাইক্যা ঘুইরা আসা যায় কিনা।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

ব্লগস্পট ব্লগ ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

কীর্তিনাশা এর ছবি

ব্যাপক মজাদার পোস্ট হো হো হো

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

পুতুল এর ছবি

ভেবেছিলাম যাজ্ঞসেনী চলে গেলেও পাণ্ডবের দিন চলে যায়নি।

বস, এখন কি মনে হয়?
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বস, কলিজার এই পুরোনো ক্ষত নিয়া নাড়া দিলেন! যদি আজ ঢাকায় থাকতেন তাহলে সচলাড্ডায় সব খুলে বলতে পারতাম। লিখে সব বোঝানোর ক্ষমতাতো আমার নাই। কী আর করা আপনিতো থাকেন জর্ম্মন দেশে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

পান্ডব'দা, লিখে ফেলেন না রে ভাই...


A question that sometimes drives me hazy: am I or are the others crazy?

স্পর্শ এর ছবি

তাহলে তো চীনে ঘুরে আসতেই হয়! বাংলা যদি চলে! লেখাটা দারুণ! হাসি

....................................................................................
অতঃপর ফুটে যাবার ঠিক আগে হীরক খন্ডটা বুঝলো, সে আসলে ছিল একটা মামুলি বুদবুদ!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

হো হো হো
খুব মজা পেলাম।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

রানা মেহের এর ছবি

দুটো পর্বই আজ একসাথে পড়লাম
এবং ব্যাপক মজা পেলাম।

ব্যাবসার কারণে ইংলিশ নাম নেয়ার ব্যাপারটা কিন্তু
ভারতেও আছে।
আমর এক কলকাতার বন্ধুর কলসেন্টার নাম মার্ক রবিনসন!!!

চীনা ভাষা যে বোঝে জানে
তার জন্য পৃথিবীর কোন কাজই অসম্ভব নয়
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

দিগন্ত এর ছবি

“জিনজিয়াঙ হোটেল”

জানতে ইচ্ছা করছে এটার উচ্চারণ শিনজিয়াং কি না?


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

না, এই জিনজিয়াঙ-এর ইংরেজী বানান Jianjiang। আর শিনজিয়াঙ-এর ইংরেজী বানান Xinjiang।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

কে বলে বাংলা আন্তর্জাতিক ভাষা না?

হে হে আবার জিগায় !!
------------------------------
উদ্ভ্রান্ত পথিক

অবাঞ্ছিত এর ছবি

ফিরে এসে পুরোনো গুলো পড়লাম... জটীল মজা... পত্রের ব্যাপারটা মনে ধরসে দেঁতো হাসি

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

সিরাত এর ছবি

আনন্দ পাইলাম।

নাশতারান এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

এটা অনেক মজার হয়েছে।

আমার এক বন্ধুর খন্ডকালীন সহকর্মী ছিলো এক চৈনিক যুবক। তার ল্যাপিতে কিছু গোলযোগ দেখা দেয়ায় সে আমার বন্ধুর ল্যাপিতে কাজ করল কিছুদিন। কাজশেষে যেদিন সে ল্যাপি হস্তান্তর করল আমার বন্ধু দেখে তার তিলে তিলে সঞ্চিত তাবৎ বাংলা গানের সংগ্রহ উধাও। সেখানে দুর্বোধ্য সব চৈনিক সঙ্গীত ঠাসা। আমার বন্ধুর পুরা বজ্রাহত হওয়ার দশা।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চৈনিক বন্ধুটিতো চৈনিক অপারেটিং সিস্টেম লোড করে দেবার কথা। চীনে গেলে সেখানকার কম্পিউটারে কাজ করতে হলে ধারণার উপর ভিত্তি করে ওয়ার্ড বা এক্সেলের মত সাধারণ প্রোগ্রামগুলো চালাতে হয়। অবশ্য যেগুলোর কী-বোর্ড কমান্ড মনে আছে সেগুলো নিয়ে সমস্যা হয়না।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।