বিশ্ব বাঘ দিবসে বাঘের বই

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: সোম, ২৯/০৭/২০১৩ - ৬:৫২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

41I6B6EKb9L

বছর দেড়েক আগে টাইম পত্রিকায় বিশ্বের সেরা বাঘ বিশেষজ্ঞ এক মার্কিন জীববিদের দীর্ঘ সাক্ষাৎকার পড়েছিলাম, বাঘের অতীত, বর্তমান, ম্রিয়মাণ ভবিষ্যৎ, চোরাশিকার ইত্যাদি নিয়ে বিশদ বর্ণনার পরে উনি সবাইকে চমকে দিয়ে ২টি তথ্য দেন,

১) উনি জীবনে কোন দিন বুনো বাঘ দেখেন নি !
২) উনার বাঘে অ্যালার্জি আছে!

এবং তারপরও উনিই বিশ্বের সেরা বাঘ বিশেষজ্ঞ। সেই সাক্ষাৎকারের সুত্র ধরে বিবিসির বাঘ চোরাশিকার নিয়ে একটি তথ্যসমৃদ্ধ ডকুমেন্টরি দেখে ফেলি যেখানে একেবারে গোয়েন্দাদের মত অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেল যে বাঘের চোরাকারবারের পিছনে অন্যতম কারণ পূর্ব এশিয়ার কিছু রাষ্ট্র বিশেষ করে চীনের মানুষদের যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি সহ অন্যান্য কিছু আশায় বাঘের বিশেষ বিশেষ অঙ্গের চাহিদা এবং চীনের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ফলে তারই অধীনের একটি অংশ তিব্বতের বিপুল সংখ্যক মানুষের হাতে কাঁচা টাকা আসার ফলে তারা অতি মর্যাদা সম্পন্ম বাঘের চামড়া চোরাইপথে কেনার জন্য নগদ অর্থের ছড়াছড়ি। পরবর্তীতে স্বয়ং দালাই লামা যে কোন ধরনের বুনো প্রাণীর চামড়া বা অঙ্গ সংগ্রহের বিরুদ্ধে সরাসরি ভাষণ দিলে হাজার হাজার তিব্বতি তাদের শখের বাঘের, তুষার চিতার, চিতাবাঘের চামড়া পুড়িয়ে ফেলে। আশা করা যায় অন্তত তিব্বতের অধিবাসীদের চাহিদা কমার কারণে বাঘের মৃত্যুর হার কিছুটা হ্রাস পাবে।

এই সময়ে হাতে আসল Reaktion books সিরিজের বাঘ নিয়ে লেখা সুসি গ্রিনের বইখানা, এই সিরিজের ব্যপক ভক্ত আমি, পিপড়ে থেকে শুরু করে নীলতিমি পর্যন্ত তারা যা নিয়েই বই প্রকাশ করেছে তাই-ই সেই প্রাণী নিয়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা গবেষণালদ্ধ তথ্যে ঠাসা হয়েছে। বিশেষ করে সেই বিশেষ প্রাণীটির সাথে মানুষের সম্পর্ক, মানুষের চিত্রকলা, সাহিত্য, লোকগল্প এবং মানস জগতে প্রাণীটির কী পরিমাণ প্রভাব তা তুলে ধরা হয়েছে অসংখ্য পেইন্টিং, ভাস্কর্য, প্রাচীন ছাপচিত্র ইত্যাদির ছবি দিয়ে, সেই সাথে ছড়া, কবিতা, পুরাণ, লোকগল্প, ইতিহাস তো আছেই! মানে একটি বিশেষ প্রাণীর শুধু যে বৈজ্ঞানিক তথ্যসমৃদ্ধ কথাবার্তা তা নয়, বরং মানুষ ও সেই প্রাণী কিভাবে কতটা জড়িত তা নিয়েই এগিয়েছে চমৎকার বইগুলো।

প্রথমেই বাঘের শ্রেণী বিন্যাস করা হয়েছে, জীবজগতের মাংসাশীদের মাঝে তার ঠাই, আজ হতে ৬০ মিলিয়ন বছর আগের পৃথিবীতে মাংসাশীদের আবির্ভাব ঘটে, যদিও বিখ্যাত খড়গদন্তী বাঘ (Sabor-toothed Tiger) যে আদতে বাঘই ছিল না সেটা বলার পরে বাঘের বিবর্তন, আদি বাঘের বিচরণক্ষেত্র, শিকার ইত্যাদি ইত্যাদি ।

250157_10152154197770497_44054096_n

১৯০০ সালে পর্যন্ত পৃথিবীতে ৮ ধরনের বাঘ ছিল যাদের মধ্যে কাস্পিয়ান বাঘ, বালি বাঘ, জাভা বাঘ সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গেছে মানুষের কারণে, দক্ষিণ-চীনে বাঘও সম্ভবত বিলুপ্ত, সবচেয়ে বড় বেড়াল জাতীয় প্রাণী সাইবেরিয়ান বাঘ টিকে আছে ৪০০র মত, ইন্দোচীনা বাঘ ১৫০০, সুমাত্রা বাঘ ৪০০ এবং রয়েল বেঙ্গল বাঘ হয়ত সাকুল্যে ২৫০০ ! এই হচ্ছে বাঘের অবস্থান, দেখা যাচ্ছে বাঘ কেবল এশিয়াতেই আছে।

২০০০ বছরেরও আগে ইতিহাসবিদ প্লিনির প্রাকৃতিক ইতিহাসের ৮ নং ভলিউমে লিপিবদ্ধ আছে যে বাঘ সবসময়ই মানুষকে এড়িয়ে চলতে পছন্দ করে। যদিও গত কয়েকশ বছরে মানুষ সেধে যেয়ে হানা দিয়েছে বাঘের ডেরায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাপুরুষের মত মনের খেয়ালে হত্যা করতে। ব্রিটিশ শাসনামলে প্রাপ্ত হিসাবে দেখা যায় অনেক ব্রিটিশই এক হাজারের উপর বাঘ খুন করেছে শিকারের নেশায় বা খ্যাতির লোভে। যেখানে ১৬০০ সালে এক লক্ষ বাঘ ছিল, সেখানে ১৯০০ সালে তার অর্ধেক হয়ে পঞ্চাশ হাজার এবং ১৯৭০ সালে আড়াই হাজারে নেমে আসে!

বাঘ কখনই প্রয়োজনের অতিরিক্ত শিকার করে না, খুনের আনন্দে শিকার করে না, কেবল দিনের প্রয়োজন মেটানো হলেই সে সন্তুষ্ট। তবে একেক বাঘের খাদ্যাভাস একেক রকম, কেউ এক বসাতেই ২৭ কেজি মাংস খেয়ে চলে জায়,আর ফিরেও আসে না শিকারের কাছে, আবার কেউ কেউ এক টানা কয়েক দিন ধরে খেতে আসে, বিশেষ করে যারা পচে নরম হয়ে যাওয়া মাংস পছন্দ করে। বাঘ সাধারণত একাকীই শিকার ও খাওয়া সারে, যদিও বাঘিনী বাচ্চাদের নিয়ে খায়, আর প্রজনন মৌসুমের মিয়াঁ-বিবি অনেক সময় একসাথেই ভোজনপর্ব সমাহার করে।

মিলন মৌসুমে সাধারণ ৫ দিন যৌন অভিযান চলে, এবং মাঝে মাঝে তারা দিনে ৫০ বার সঙ্গম করে। বাঘিনী সাধারণত ২ থেকে ৩ টি বাচ্চা প্রসব করলেও বিবর্তনের আপাত রহস্যময় কারণে বাঘের সংখ্যা পড়তির দিকে থাকলে একেকবারে ৭টি বাচ্চাও প্রসব করে! অন্ধ অবস্থায় জন্ম নেওয়া বাঘের বাচ্চার প্রথম খাদ্য তাদের মায়ের দুধ। পরবর্তীতে তারা মায়ের সাথে যেয়েই শিকার করতে শেখে।

এর পরপরই সুসান আলোকপাত করেছেন মানবজাতির সুদীর্ঘ ইতিহাসে বাঘের ভুমিকার কথা, বাঘের শক্তি, ক্ষিপ্রতার প্রতি মানুষের মুগ্ধতার কথা, যে কারণে দেশে দেশে বাঘকে ঈশ্বর জ্ঞানে, নিদেন পক্ষে ঈশ্বরের বাহন হিসেবে পূজা করা হয়। প্রাচীন চীনের বেশ্যালয়ে বাঘের জননাঙ্গের স্যুপ কামোত্তেজক এবং রতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হত এবং এখনো হয়, অথচ এর পক্ষে কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায় নি, কিছু গণ্ডমূর্খ এককালে মনে করত, আরে বাঘ এত শক্তিশালী প্রাণী, বাঘের পেনিসের স্যুপ খেলে মনে হয় বাঘের মত শৌর্য বীর্য নিয়ে সঙ্গম করতে পারব, অথচ সত্যি কথা হচ্ছে বাঘ সঙ্গম করে বাঘের হিসেবে, মাত্র কয়েক মুহূর্তের জন্য! আবার আধুনিক বিশ্বে যৌনশক্তি বর্ধনের সবচেয়ে নামকরা ঔষধটির নাম ভায়াগ্রা যা এসেছে বাঘের সংস্কৃত নাম ব্যাঘ্র থেকে। মানে বাঘের কল্পিত গুণ বেচতে পিছিয়ে নেই কেউ-ই!

এসেছে চীনে কবিরাজি ঔষধে বাঘের হাড়ের চাহিদা, আমজনতার কাছে বাঘের চামড়ার আবেদন ( নানা দেবদেবীরা বাঘ ছাল গায়ে দিয়ে অথবা বাঘের চামড়ার উপরে বসেই গুলতানি করে )। এসেছে সত্যিকারের বাঘ শিকারি মুঘল বাদশাহদের কথা, বাবুর শব্দের মানেই ছিল বাঘ, আকবর প্রায়ই একটি মাত্র ধনুক এবং তীর সঙ্গী করে বাঘ শিকার করতে যেত, ৮৬টি বাঘ হত্যা করা জাহাঙ্গীর প্রায়ই পায়ে হেঁটে বাঘ শিকার করার চেষ্টা করত, এবং মাঝে মাঝে বাঘের সাথে সত্যিকারের মল্লযুদ্ধে মেতে উঠত।

বিখ্যাত শিকারি, পরিবেশবাদী, লেখক জিম করবেট সম্পর্কেও সামান্য আলোকপাত করেছেন সুসি, যদিও তার মতে করবেট ঝুঁকিহীন অবস্থায় থেকে বাঘকে গুলি করতেন। এসেছে আমাদের বাদাবনের কিংবদন্তী গাজী পীর এবং দক্ষিণ রায়ের পুরাণকথা। যদিও আজ পর্যন্ত ইতিহাসের যে শাসক বাঘকে সবচেয়ে বেশী মূল্যায়ন বা ব্যবহার করেছেন তিনি মহিশুরের টিপু সুলতান। টিপু শব্দের অর্থ বাঘ। উনার সিংহাসন ( বাঘ্রাসন) ছিল বাঘের আদলে তৈরি, প্রায় সব অস্ত্রে সোনালী বাঘের ছাপ থাকত, প্রাসাদের বাগানেও দুটি বাঘ শেকল বাঁধা অবস্থায় থাকত সবসময়।

রোমানদের কলোসিয়ামে যেমন বাঘ সিংহ মানুষ খুনের মোচ্ছব চলতে তেমন চলত ভারতবর্ষেও। সুরগুজার মহারাজা একাই ১৭০৭টি বাঘ হত্যা করেছিল। তারা বাঘ- সিংহকে এক খাঁচায় ছেড়ে দিয়ে দেখতে তাদের মরণপণ লড়াই।

এরপর কবিতা বিশেষ করে উইলিয়াম ব্লেকের বিখ্যাত টাইগার টাইগার, সারকাস, চলচ্চিত্র, প্রাচীন ধর্ম, জাদুবিদ্যা ইত্যাদিতে বাঘের অনিচ্ছুক অবস্থান ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

১৯৩৮ সালে জিম করবেটের ভাষ্যমতে বাঘের চমৎকার একটি ছবি তাকে শিকারের চেয়ে বেশী আনন্দ প্রদান করে উক্তিটি বাঘের সংখ্যাহ্রাসের ব্যাপারটি সবার সামনে নিয়ে আসে।

আর আজ বাঘের অস্তিত্ব প্রায় সম্পূর্ণ রূপে মানুষের করুণার উপর নির্ভর করছে। ৫,৫০০ বছর আগে দক্ষিণ সাইবেরিয়ার আমুর নদীর তীরে মানুষের পাথরে খোঁদাই করা বাঘের ছাপ পাওয়া গেছে, যা এখন পর্যন্ত মানুষের শিল্পে প্রাপ্ত প্রাচীনতম বাঘের অস্তিত্ব, এতটা পথ একসাথে পাড়ি দিলেও মানুষ ও বাঘ পরস্পরের শত্রুই থেকে গেছে। বাঘের চোরা শিকার, তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ব্যবসা যদি আমরা থামাতে না পারি তাহলে আর কয়েক দশকের মধ্যেই বাঘ দেখা যাবে কেবল ছবির বইয়ে এবং তথ্যচিত্রে।

আমাদের রয়েল বেঙ্গল-

সুন্দরবন হচ্ছে সমগ্র বাংলায় বাঘের থাকার জন্য সবচেয়ে জঘন্য জায়গা, যে বাঘ এক সময় সারা দেশে ছড়িয়ে ছিল , আজ মানববসতির আগ্রাসনে বাসস্থান হারাতে হারাতে তারা ঠাই নিয়েছে লোনাপানির বাদা বনে, যেখানে প্যাচপ্যাচে কাঁদার ছুরির মত ধারালো শ্বাসমূল এড়িয়ে তাদের চলাফেরা করতে হয়, স্বাদু পানির ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। তারপরও বাঘ সবচেয়ে বেশী টিকে আছে সুন্দরবনেই,কারণ মানুষ এখন পর্যন্ত সুন্দরবন কব্জা করতে পারে নি, বা করতে চায় নি। এই না পারা অথবা না চাওয়া প্রলম্বিত হোক, টিকে থাকুক বাঘেরা বুনো পরিবেশ।

বাঘ রক্ষায় আমাদের সামর্থ্য মত আমরা যা করতে পারি –

বাঘ জনিত যে কোন রকম ব্যবসা থেক বিরত থাকা, এবং কাউকে সেই ব্যবসায় জড়িত দেখলে বুঝিয়ে বলা। বিশেষ করে কোন চীনা আর আরবকে যদি দেখেন বাঘের পেনিস খুঁজছে নিজের অক্ষমতা ঢাকার জন্য বা সক্ষমতা বাড়াবার জন্য, প্রমাণ দিয়ে বুঝিয়ে দিন যে সেটা তো কোন কাজের নয়, মাঝখান থেকে তার মত অর্থব মর্ষকামীর জন্য একটা অপূর্ব প্রাণী অকালমৃত্যুর শিকার হয়েছে। আর সেইসাথে সুন্দরবন রক্ষার সাথে থাকুন- সেখানে যেয়ে হরিণের মাংস খাওয়ার মত বালখিল্যতা করবেন না, যদি ভাবেন আপনি না খেলেও অন্য কেউ খাবে, তাহলে অন্যদেরই মুড়ি ভিজাতে দিন, আপনি বিরত থাকুন। সুন্দরবন বাঘের শেষ আশ্রয় বাংলাদেশে, সেটা আমাদের জোরসে হিন্দি গান বাজিয়ে, বিরিয়ানির প্যাকেটে খাল ভরিয়ে দিয়ে পিকনিকের জায়গা না, এটুকু অন্তত মনে রাখুন, মেনে চলুন।

( আজ ২৯ জুলাই বিশ্ববাঘ দিবস, তাই কোন পূর্ব চিন্তা ছাড়াই পোস্টটি লিখে ফেললাম।

সুন্দরবনে বাঘ নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছেন তরুণ জীববিদ সার্থক রাসিক রহমান, এই পোস্টটি তার এবং বাংলাদেশে সকল প্রকৃতিপ্রেমীর জন্য)


মন্তব্য

Emran  এর ছবি

চলুক

যৌনশক্তিবর্ধনকারী হিসেবে বাঘের চেয়ে গণ্ডার আরবদের মধ্যে বেশী প্রিয়। আর এই কারণে মনে হয় আফ্রিকাতে এখন গণ্ডার বিলুপ্তির পথে।

তারেক অণু এর ছবি

আর কদিন পর মানুষের পেনিসের স্যুপ খাওয়া ছাড়া গতি থাকবে না, শুধু মানুষই সহজলভ্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

শেখদের কাছে রতিবর্ধক হিসাবে গোড়াবন পাখি (Great Indian Bustard)-ও খুব প্রিয় ছিল। এই ধ্বজগুলো আশির দশকে দলে দলে মুম্বাইতে আসতো গোড়াবন খাওয়ার জন্য। এভাবে এক দশকে এই পাখিটা বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিতে পরিণত হয়েছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তারেক অণু এর ছবি

হায় গোড়াবন! এই নিয়ে লেখা পড়ছিলাম রহস্য পত্রিকাতে

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

শুনেছি চড়ুই পাখির মগজ খেলে যৌনশক্তি বৃদ্ধি পায়। আর বিশেষ অঙ্গ দীর্ঘ ও দৃঢ় বানাতে শাণ্ডা'র তেলের ব্যবহার তো অতি পুরানো। আজ শাণ্ডাও বিলুপ্তির পথে। খুলনা শহীদ হাদীস পার্কের দেয়াল ঘেষে একাধিক শাণ্ডার তেলের কবিরাজ বসে। এই এক ধোনের জন্যে মানুষ সব শেষ করে দিলো।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
বাঘা লেখা হইসে। হাসি
- একলহমা

তারেক অণু এর ছবি

হালুম

মাহবুব লীলেন এর ছবি

নাচতে নাচতে গাজী সদরুল হাসে- আগে সুন্দরবনের পানিতে ভাসত মরা গাছ। এখন ভাসে পোড়া ডিজেল। ভটভট ভটভট ভটভট... সুন্দরবনের সব নদী এখন ভটভট ভটভট ভটভট। দিন রাত এখন সুন্দরবনে ট্রলার আর জাহাজের মিউজিক বাজে ভটভট। হরিণ পাতা খেতে এসে ট্রলারের শব্দ শুনে দৌড়ায়। বাঘ পানি খেতে এসে জাহাজ দেখে দৌড়ায়। কুমির রোদ পোহাতে ডাঙায় উঠে মানুষ দেখে নদীতে লাফায়। পুরা সুন্দরবনের মালিক এখন ভটভটিওয়ালা পর্যটকরা। বাঘ হরিণ বানর কুমির সবাইকে এখন ভটভটির আওয়াজ থেকে নিজেকে লুকিয়ে খেতে হয়- ঘুমাতে হয় এমনকি সংগমও করতে হয়...

নিজের সাকিন সুন্দরবন থেকে একখানা কোট মেরে দিলাম...

তারেক অণু এর ছবি

১০০ % সইত্য

তানিম এহসান এর ছবি

একদম সত্য কথ লীলেন্দা। সাকিন সুন্দরবন-তো লিখেছিলেন আগে; এই একমাস আগে সুন্দরবন এর পাশ থেকে ঘুরে এলাম, ভটভটভট আরও বেড়েছে, ভয়াবহ দশা।

তারেক অণু এর ছবি

হুম, মানুষ চিড়িয়াতে ভরা

তানিম এহসান এর ছবি

বাঘের বাচ্চা

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন লাগলো, বাঘ খুবই সুন্দর প্রাণী
ইসরাত

তারেক অণু এর ছবি

নিখুঁত একটি প্রাণী, অবশ্য সব প্রাণীই নিখুঁত

Rumel এর ছবি

ম্যানঈটার্স অফ রুদ্রপ্রয়াগ পড়েন, খুব ভাল।

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ, পড়েছি, সেবার প্রথম অনুবাদ ছিল সেটা

অতিথি লেখক এর ছবি

বিস্ময়কর লাগলো বাঘের সংখ্যা এক শতাব্দীতে এমন ভয়ংকর হ্রাস পাওয়া দেখে।মানুষ তার নিজের সুবিধার জন্যে,অন্যের কাছে নিজের বাহদূরী প্রকাশ করার জন্যে এই জঘন্য হত্যালিলায় মেতে উঠেছে।বরাবরের মতো তথ্য সমৃদ্ধ একটি লেখা লিখে আমাদেরকে অনেক কিছু জানার সুযোগ করে দেওয়ার জন্যে ধন্যবাদ।আমিও সচেতন হলাম,অন্যকেও সচেতন করা এখন আমাদের দায়িত্ব। গুরু গুরু

মাসুদ সজীব

তারেক অণু এর ছবি

এখনো কাগজে যা দেখানো হচ্ছে মূল সংখ্যা তার চেয়ে অনেক কম, আরও কমছে

শুভায়ন এর ছবি

হাততালি

তারেক অণু এর ছবি
নজমুল আলবাব এর ছবি

সবুর করো সুনারা, রামপালে কারেন বানাইয়া সুন্দরবনে বাত্তি জ্বালাইয়া দিমু, যাতে শ্বাসমুল দেইখা দেইখা বাগমামা পথ চল্তে পারে। পায়ে যাতে তার দুক্কু না লাগে

তারেক অণু এর ছবি
সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

টিকে থাকুক বাঘেরা বুনো পরিবেশ।

চলুক

তারেক অণু এর ছবি
সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বাঘ দিয়া কী হইবো? সুন্দরবন দিয়া কী হইবো? উজাড় করে দেন। বিল্ডিং বানাই মন খারাপ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তারেক অণু এর ছবি

বিল্ডিং তো এম পিঁ রা পাবে, আমরা ম্যাঙ্গোপিপল

অতিথি লেখক এর ছবি

বাঘ আসলে সৌন্দর্যবর্ধক কিংবা থাকলে বাংলাদেশের অহংকার! এমন না, বাঘ শক্তিসালী- পশুর রাজা। টিকে থাকতে হলে উপ-প্রজাতি তৈরি করে নিজেরাই মিউটেশান করে টিকে থাকবে (যেমন বললেন: ৭ বাচ্চা দেয়); না পারলে ধ্বংস হয়ে যাবে। প্রকৃতি চলবে প্রকৃতির খেয়ালে, আর্কিটেকচারি কারিগরি ফলাতে গিয়ে জাঙ্গল প্লানিং এর নুতন হুজুগ শুভ নয়।
নতুন একটা কায়দা হলো, সুন্দরবন বেল্ট খালি করে মানুষ সবাইকে সরিয়ে নিতে হবে (সম্ভব!); পর্যটন বন্ধ করে দিতে হবে সুন্দরবনে- এখনো সময় হয় নি।
ছোটবেলায় মীরপুর জু তে গেলে বাঘের সামনে ঠায় দাড়িয়ে থাকতাম। এখনো, বছরে একবার ২/৩ ঘন্টা বাঘ না দেখলে ছটফট লাগে। বাংলাদেশের বাঘের চওড়া কপাল আর নিষ্ঠুর চেহারার সাথে অত্যুজ্জ্বল গায়ের দাউ দাউ আগুনে রং হারিয়ে গেলে সমস্যা কি! চিড়িয়াখানায় আর সার্কাসে থাকবে বাঘ!
মানুষ সবচেয়ে নৃশংস প্রানি; বাঘ মারে, বাঘ নাচায় (সার্কাসে) আবার বাঘ পালে। তাহলে বাঘই তো ভাল! স্রেফ- ক্ষিধে পেলে বা সিকিউরিটি রিস্ক হলে আক্রমন করে।
৪৩৭ টা মাত্র বাঘ সুন্দরবনে আছে। আসুন এগুলো মেরে চামড়াগুলো বিখ্যাত ব্যক্তিদের দিয়ে দেই তারা সোফার কাভার বানাক।
(স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট)

তারেক অণু এর ছবি

মানুষ সবচেয়ে অমানুষ নিষ্ঠুর প্রাণী, শুধু কয়েকজনে মাঝে আছে সবচেয়ে বেশী ভালবাসা

রাত-প্রহরী এর ছবি

আপনি কত বিষয় নিয়ে যে লেখেন!
খুব ভালো হয়েছে লেখাটি। কিন্তু সুন্দরবনেই কি ২৫০০ রয়েল বেঙ্গল আছে?

--------------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

তারেক অণু এর ছবি

না না! সারা বিশ্বে! সুন্দরবনে কয়েকশ

guest_writer (desh_bondhu) এর ছবি

এই সব কথা মানুষকে বুঝিয়ে লাভ কি? ক্ষমতাসীন দল সেখানে বিদ্যুত প্রকল্প করবে, পারলে তাদের বুঝান। এটা করলে সেখানে বাঘ কেন, বনে মৌমাছিও থাকবে না। একটা সময় গাছে গাছে বানর ঝুলতো, এখন সেখানে গাছ নাই, সরকারী অফিসারেরা সেখানে চাকরী নিয়ে গেলে নিজেরা বাগানবাড়ী করে, কোটি টাকা আয় করে গাছ আর হরিন থেকে। সেখানকার জীবন চক্র বিনষ্ট হলে বাঘ থাকবে কোথা থেকে? ভারতের অংশে যেয়ে দেখেন, আরা আমাদের অংশে যেয়ে দেখেন, সুন্দরবন এখন হয়ে গেছে বাড়ির পাশের বাগানের মতো। কয়েকদিন পরে সেখানে টুনটুনি পাখী ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। এসব কিছুর জন্য কারা দায়ী সেটা আমরা জানি। যদি এই নিয়ম করা যেত, সেখানে একটা বাঘ বা হরিন মারা গেলে সেখানকার বন কর্মকর্তা আর বন মন্ত্রীর চামড়া ছুলে বিক্রি করা হবে, দেখবেন একটা বাঘ বা হরিনও মারা যাবে না।

তারেক অণু এর ছবি
মন মাঝি এর ছবি

ধইরা ঠুয়া দিয়া দিমু...

****************************************

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

আমাদের সুন্রবনই যায় যায়, আর বাঘ। কোনোভাবে বাঘসহ প্রণীকূলকে ব্যাবসা শিখাইতে পারলে ভালো হইতো। মানুষ টের পাইতো কত ধানে কত চাইল।
ব্যাঘ্রকণ্যার আবদার মিটাইতে আফ্রিকা থেইকা আইত মানুষের দাঁতের কানের দুল। আর এখান থেইকা যাইতো মানুষের পলিশ চামড়া। আমদানি রফতানি ভালোই হইতো।
লেখা নিয়ে আর কী বলবো? ওই বইটার খোঁজ দিয়েন পারলে। মানে সফট কপি আর কি।

স্বয়ম

তারেক অণু এর ছবি

সফট নাই যে আপাতত!

অতিথি লেখক এর ছবি

নো সমস্যা।

স্বয়ম

তারেক অণু এর ছবি
সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

দারুণ দিনে দারুণ লেখা হাততালি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

অণু ভাইয়া, বরাবরের মতোই অসাধারণ লিখেছেন। বাঘ হয়ে থাকুক আমাদের সকলের হৃদয়ের বাঘ।

- এস এম নিয়াজ মাওলা

তারেক অণু এর ছবি

আর বনে থাকুক বনের বাঘ

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

লেখাটা, বাঘ দিবসে ব্যাঘ্রসম।

তারেক অণু এর ছবি

হালুম্মম্মম্ম

অতিথি লেখক এর ছবি

‌হালুম........... হাসি

তারেক অণু এর ছবি

হালুম্মম্মম

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

হালুম হালুম হালুম হালুম
লেখা পড়ে মজা পালুম।
(সম্ভবত রিটন ভাইয়ের) একটা ছড়ার অনুকরণে ।

তারেক অণু এর ছবি

হালুম হালুম হালুম হালুম

খায়রুল মাসুদ  এর ছবি

এই ধরনের চীনা আরব পেলে তাদেরকে ধরে খাসীকরার জন্য আইন করতে তীব্র দাবী জানাচ্ছি , আমার মতে দুএকটা সফল খাসী করতে পারলে শরীর হীট করার চিন্তা মাথা থেকে চলে যাবে

তারেক অণু এর ছবি
রণদীপম বসু এর ছবি

বাঘ সম্পর্কিত বিষয়গুলো প্রথম জানার সুযোগ হয় সেই আমলে সেবা থেকে প্রকাশিত বেশ কটি বই থেকে। তারপর আর আলাদভাবে এ সম্পর্কে খুব একটা কৌতুহল জাগার সুযোগই হয়নি অন্যান্য অনেক কৌতুহলের ভীড়ে !

কেন যেন মনে হয় এ যুগে এসে প্রকৃতির এই প্রতাপশালী প্রাণীটাই সবচেয়ে দুর্ভাগা আজ। মানুষের হিংস্রতার কাছে হার না মেনে উপায় কী !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

তারেক অণু এর ছবি

সেবার শিকার কাহিনীগুলোর কথা বলছেন?

রণদীপম বসু এর ছবি

হুমম !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

ইমানদন্ড বড়ই অদ্ভুত চীজ। শুধু বাঘ বা সুন্দরবনই না, দন্ডবাদীগো খায়েশ পূরণ করতে গিয়া অনেক গাছ, প্রাণী থিকা শুরু কইরা এমনকি পুরা জনপদও বিলুপ্ত হইয়া গেছে গা, পুরা দুনিয়া ঐ দন্ডের নীচে আইনা দিলেও ঐডা ঠান্ডা হইব বইলা মনে হয় না।

জয় ইমানদন্ড ! ইমানদন্ডের জয় !!

-- রামগরুড়

তারেক অণু এর ছবি
রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

হালুম ধইরা ঠুয়া দিয়া দিমু...

লেখায় উত্তম জাঝা!

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

তারেক অণু এর ছবি

হালুম

নির্ঝর অলয়  এর ছবি

শিব্রামের ভাষায় "আমাকে একবার বাঘে পেয়েছিল, বাগে পেয়েছিল একেবারে"- প্রথম যখন ছোটবেলায় "সুন্দরবনের মানুষখেকো" বইটা পড়েছিলাম। আবার বাঘে পেল যখন বড়মামার উপহার দেওয়া, (অবশ্য আমার পছন্দ অনুযায়ীই) মহাশ্বেতা দেবীর অনবদ্য অনুবাদে দুই খণ্ডের 'জিম করবেট অমনিবাস' হাতে এল নবম শ্রেণীতে থাকতে। এরপর ধীরে ধীরে কেনেথ এন্ডারসন। শিকারকাহিনী আমাদের জন্য থ্রিলিং, বাঘের জন্য সংহারক। করবেটকে ভালো লাগে তাঁর সত্যভাষণ এবং শিকারী হওয়া সত্ত্বেও পরিবেশবাদী ও জীববান্ধব ভূমিকার কারণে। মুখোমুখি বাঘ শিকারের বারফট্টাই যারা করেন তাদের অধিকাংশের গপ্পোই আমার অতিরঞ্জিত বলে মনে হয়। সুন্দরবনের কাঠুরে আর মৌয়ালরা ছাড়া অন্য কেউ সাধ করে মুখোমুখি বাঘ মারতে সচরাচর যান নি। কেনেথ এন্ডারসনের অনেক গল্প আমার কাছে রঙ চড়ানো মনে হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে একটা তথ্য জানতে চাই, বাঘ কত বড় গাছে চরতে পারে এবং মাটি থেকে কতটা উঁচুতে লাফিয়ে উঠতে পারে? সেদিন এক ট্যুরিস্ট গাইড বলল ২১ ফিট- বিশ্বাস হল না। কারণ মাচা সাধারণত ১৫-২০ফিট উঁচুতে বাঁধা হয়।

বাবর মানে বাঘ নয় সিংহ। হাসি

সার্থকদের সাথে সোঁদরবনের ডকুট্রিপটা মিস হয়ে গেল বাজে ধরনের ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে। অনুজপ্রতীম সার্থকের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।

তারেক অণু এর ছবি

আমিও তাই-ই জানতাম, পরে দেখি- According to Stephen Frederic Dale, the name Babur is derived from the Persian word babr, meaning "tiger",

শাহাদাত হোসাইন এর ছবি

(লেখা)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।