৯ এপ্রিল
আজ আমি উথলীর নিজ বাড়িতে বসে ডায়েরি লিখছি। গত দু'দিন যে ঝড় আমার ওপর দিয়ে গেছে- বেঁচে ফিরতে পেরেছি এটাই আমার জন্য বড় পাওয়া।
আমি যখন বাবা হলাম
যদি কেউ ভুল করেও মিডিয়াভিজ্ঞতা ০১ পড়তে চান তবে এখানে তা পাবেন
হাঁটছি তো হাঁটছিই। ঘোলা পানির উৎসটা আর পেলাম না। জায়গাটা ভুতুড়ে রকমের নীরব। এমনিতে সুন্দরবন এলাকা বলে জনবসতি কম, তার ওপর আতিকায় ব্যাঙের মতো ভয়ংকর দর্শন প্রাণীটার ভয়ে কেউ একা একা বাইরে বেরোতে সাহস করছে না। তাই বলে ভর দুপুরে আশে পাশে কোনো বন্যপ্রাণী কিংবা পাখ-পাখালীর দেখা পাওয়া যাবে না- এ কেমন কথা!
১।
মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লে মানুষ অনেক কিছু করে। আমি ঠান্ডা মাথায় ব্রাউজার খুলে মোশন প্ল্যানিং এর টিচার রনকে ইমেইল করে বললাম, “তোমার কোর্সের ফাইনাল প্রজেক্ট আগামী চার দিনে আমি কমপ্লিট করতে পারব না, ইনকমপ্লিট দিয়ে দাও”। সেটা গত ফল সেমিস্টারের কোথা। সেই ইনকমপ্লিট প্রজেক্টকে কমপ্লিট করার নিমিত্তে রনের সাথে প্রায় পনেরো-ষোলটা ইমেইল চালাচালি করে গতকাল দ্বিতীয়বারের মত দেখা করা গেলো।
[justify]
“আব্বু পেঙ্গুইনের টামির রং কি?”
আমি ঘুম জড়ানো গলায় উত্তর দেই - “পিংক”। এটা মেয়ের প্রিয় রং, পারলে দুনিয়া সে মুড়িয়ে দেয় এই রঙে। ছেলেদের রঙ হচ্ছে নীল আর মেয়েদের রঙ হচ্ছে গোলাপি, এটাই এই দেশে প্রচলিত ধারণা। সবাই মিলে এই গোলাপী রঙের স্তুপ ঢুকিয়ে দেয় মেয়ে বাচ্চাদের মাথার ভেতর। ছেলে আর মেয়ের বিভাজন মার্কিনিদের চেয়ে বেশি কারো পক্ষে করা সম্ভব বলে আমার মনে হয় না।
আমার জীবনের এক বিরল অনুভুতির কথা আজ বলছি।আমি মা হয়েছি সেই অনুভুতির কথা।বিয়ের আগে শুনতাম নিজে মা না হলে এই অনুভুতি বোঝা যায় না।তখন এসব নিয়ে এত গভীর ভাবে কখনও ভাবিনি।কিন্তু আজ বুঝতে পারছি।
আমি আর আমার বোন খুব বেশী ছোট বড় না। আমি হাঁটতে পারতাম না আর আপু হাঁটতে শিখে গেছে তখন এই ছিলো আমাদের মধ্যেকার পার্থক্য! আমার বোন আমি হবার পর আমাকে মেনে নিতে অনেক টাল বাহানা করেছে। ছোট বাচ্চারা আরেকটা ছোট বাচ্চাকে দেখলে ভাবে যে আরেকজন মায়ের সব আদর নিয়ে নিলো মনে হয়। আমার বোনের ভাবনাটা অনেকটা এমনই ছিলো। আমি হবার পর ওর মনে হয়েছিলো আমি ইঁদুর!
৭ এপ্রিল সকাল ছটা
এখন আমি সাতক্ষীরার কৈখালী গ্রামে আফজালের বাড়িতে বসে ডায়েরি লিখছি। এখানে এসেছি গতকাল বিকেলে।
কাল সকালে ডায়েরি লেখা শেষ করে উঠতে যাচ্ছি, এমন সময় জগমোহন এসে জানাল, কে একজন আমার সাথে দেখা করতে চায়।
আমি সবসময় স্বপ্নে ছিলাম। একদম ছোট্টো থেকে, শৈশবের যতদূর মনে করতে পারি ততদূর পর্যন্ত নিজেকে স্বপ্নের মধ্যে দেখতে পাই। ঘুমের ঘরের মধ্যে স্বপ্নের নীল বিছানা, রেশমী চাদরে ঢাকা। ধূপের ধোঁয়া দিয়ে ঘেরা। মেঝেতে লাল আর সাদা চৌকো চৌকো নকশা, সেই ঘরেই আমি শুরু থেকে রয়ে গেছি।