[justify]জড়োতা বলে যে জটবাঁধানো জবড়জং ব্যাপারস্যাপার আছে বস্তুর ক্ষেত্রে তা আমরা কম বেশি সবাই জানি। পদার্থের জন্মদোষে দুষ্ট এই গুণটা হলো, বস্তু অত্যন্ত বস্তুনিষ্ঠ হয়ে যে অবস্থায় আছে, নিতান্ত বাধ্য বা বাধাপ্রাপ্ত না হলে সেই সুব্যবস্থার কোনো দুরবস্থা করতে চায় না নিজে থেকে। অর্থাৎ যা স্থির আছে সে খামাখা কখনো অস্থির হবে না। যে ঘোরার উপরে আছে, বলপ্রয়োগ সাপেক্ষে ঘোর না কাটানো পর্যন্ত সে বেঘোরেই ঘুরতে থাকবে। এরকম সুলিখিত সংবিধান পড়েছিলাম বিজ্ঞান বিষয়ে স্কুল-কলেজ-এমনকি ভার্সিটিতেও। কিন্তু এই জড়োতার উল্টোপিঠেও আর এক জড়োতা আছে, যাকে বলে কোনো কিছু না করার বা আলসেমির জড়োতা। আর এইটা এখন আমার দৈনন্দিন জীবনজুড়ে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। পরম শূন্য উষ্ণতার মতো যদি পরম শূন্য জড়োতা বলে কিছু থেকে থাকে তবে আমি নিশ্চিত, তা এখন আমকে জাপটিয়ে জড়িয়ে রেখেছে। আমার এই লেখাতেও অবধারিতভাবে সবাই বৈচিত্র্যহীন জড়োতার বিচিত্র সব উপকরণ রয়েছে যা বিষম বিরক্তির উদ্রেক কোনোরূপ জড়োতা ছাড়াই করতে পারে।
চে গুয়েভারার স্মৃতি নিয়ে নির্মিত "The Motorcycle Diaries" যখন থেকে দেখেছি তখন থেকেই একটা ইচ্ছে ছিলো অন্তত একবার হলেও জীবনে এরকম কোনো একটা অভিজ্ঞতা দরকার, একটা মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়ব, আর ঘুরে বেড়াবো| কানের দুপাশ দিয়ে সাই সাই শব্দে বাতাস বেড়িয়ে যাচ্ছে, দুপাশে বিস্তীর্ণ মাঠ, শুধু ছুটে চলা, এরকম একটা দৃশ্য চিন্তা করলে ঘরে বসে থাকাটা আসলেই কষ্টকর| তখন মাত্র মিড টার্ম শেষ হয়েছে, পরীক্ষাতে
পোষ্ট পড়ে মেজাজ খারাপ হতে পারে। তাই শুরুতে দুটো গান শুনে নিন। প্রথমে শুনুন শোনাও তোমার অমৃতবাণী। একটা শুনে মন ভরেনি? এবার আরেকটা। শুধু তোমার বাণী।। সৌজন্য ছাড়া আজকাল টিভিতে ছাগলও গান গায় না। খবরের পরতে পরতেও সৌজন্য। বিরতি বিজ্ঞাপন তো আছেই। এমনকি হেডলাইনের মাঝখানেও বিজ্ঞাপন চলে। এই গানগুলো পোষ্টের অপ্রাসঙ্গিক জাতের বিজ্ঞাপন। মূল বিষয়ে আসি। বিষয় হলো 'বাণী'।
তোমার নাম কী?
তোমার বাবার নাম কী?
একটা ছড়া বলতো?
একটা গান গাও তো?
ছোট্টবেলায় আমাকে পেলেই সবাই এইসব প্রশ্ন করার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে যেত। আর আমিও একদম রেডি থাকতাম গান গেয়ে বা ছড়া আবৃত্তি করে সবার প্রশংসা পাবার জন্য। সব প্রশ্নের উত্তরই যে পারতাম তা নয়। মাঝে মাঝে বাবার নামটা ভুলে যেতাম। এভাবেই চলছিল আমার দিনগুলো।
[justify] দুষ্টুর অনেক আফসোসের মাঝে একটা বড় আফসোস তার নানাভাই। নানু মারা গেছেন সেই ছোট্টবেলায়, আবছা একটা ফটোগ্রাফ ছাড়া নানুর আর কোনও স্মৃতি নেই দুষ্টুর। তার আছে শুধু নানাভাই। ওর অনেক বন্ধুর নানুকেও দেখেছে ও, কিন্তু কেউই ওর নিজের নানাভাই এর মতো না। পাড়ার বন্ধুদের কথাই ধরি, মারুফের নানা থাকেন দেশের বাড়ি, প্রতিবার মেয়ের বাড়ি আসার সময় শুধু মারুফ না, দুষ্টুদের সকলের জন্যেই কতশত মজার জিনিস নিয়ে আসেন! রুপার নানা মারা গেছেন, ওর আছে নানী, নানীমনি কী সুন্দর গল্প বলেন! দুষ্টুর মাথায় বিলি কেটে কেটে কতদিন ওদের সবাইকে ঘুমকুমারির গল্প শুনিয়েছেন। দিনার নানাভাই এর মাথাভরা টাক আর গালভরা দাড়ি, ইংরেজি ছবি সান্তা ক্লজের মতো, দুষ্টুকে দেখলেই ছড়া কেটে বলেন, ‘দুষ্টের শিরোমণি, নামটাও তাই/ সারাদিন হেসে খেলে তাই তাই তাই! রিফাতের নানু একটু রাগী রাগী চেহারার, দেখলেই বানান জিজ্ঞেস করবেন, আর উৎরে গেলেই লজেন্স বা বাবলগাম দুষ্টু পাবেই!

ওপারে সন্যাসী গ্রাম। এপারে কলারণ। মাঝখানে পানঘুচি নদী। ও নদীর কুল নাই কিনারা নাই—আছে দৈরার পানি। পানি দেখলে বিশুবাবুর প্রাণ উড়ে যায়। তার এই ভয়ধরা মুখ দেখে বুড়ো মেনাজ মাঝি হাসে। বৈঠা হালকা মেরে বলে, আপনের বাড়ি কনে?
–ফরিদপুর।
প্রতি রাতে একটি করে কবিতা আত্মহত্যা করে আমার বারান্দায় ।
আমার ভাবনা গুলোকে যখন আমি
কবিতার খাতায় বন্দী করতে পারিনা,
তখন ভাবনাগুলো আমার অজান্তে
সুসজ্জিত হয়ে কবিতায় রুপ নেয় ।
তারপর আমার বারান্দায় ফুলগাছটির ডালে ঝুলে আত্মহত্যা করে ।
আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি,
কবিতার মৃতদেহ পড়ে আছে আমার বারান্দায় ।
বিকৃত অবস্থায় ।
সে কবিতার চেহারা আমি মনে করতে পারিনা
আমাকে কেউ যদি জিজ্ঞেস করে আমার সবচেয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার কথা , নিঃসন্দেহে সেটি ছিল বাবার মৃতদেহ ঘরে এসে পৌছানোর অপেক্ষা । রাত প্রায় আড়াইটার কাঁচা ঘুম ভেঙ্গে গিয়ে যদি বুঝতে পারেন, আপনার বাবা যাকে খুব সাধারন এবং আপাতঃদৃষ্টিতে নিরিহ একটা পেটব্যথার জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল তিনি আর নেই , তখন কেমন লাগে ?
দুপুর দুইটায় ফ্রেশার ডিউটি ডাক্তার চলে গেলেন। পরে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তার এলেন আর এলেন দারুণ এক নার্স। মরমা এই মেয়ের নাম তিংতিং! একদম শেষ পর্যন্ত আমাকে অসম্ভব সাহায্য করেছে সে। বিকাল তিনটায় আমাকে ব্যাথা বাড়ার ঔষধ দেয়া হলো। ব্যাথার ঔষধ মানে Oxytocin।মেয়েদের শরীরে সহজাতভাবেই এটা তৈরি হয়। সিন্থেটিক ফর্মে Pitocin দেয়া হয় স্যালাইনের মাধ্যমে যাতে ব্যাথার তীব্রতা বাড়ে আর জরায়ুর মুখ তাড়াতাড়ি খুলে যায়। নার্স মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলাম কতক্ষন লাগবে, সে বললো তিন ঘন্টার মতো। আমি জানতাম লেবার এর গড়পড়তা সময় আট ঘন্টা তবু সেসময় সেটা ভুলে গেলাম। তিনঘন্টা কে আঁকড়ে ধরলাম...দিহান, দেখতে দেখতে কেটে যাবে ১৮০ মিনিট, এমন কোনো ব্যাপার না।
আকাশ তো সবসময় নীল থাকে না, মাঝে মাঝে মেঘ থাকে, রাতের বেলা কালো থাকে। মানুষ আবার মেঘের জন্য অপেক্ষা করে, রাত হলে স্বপ্ন দেখে, কেউ কেউ ছাদে গিয়ে উদাস ভঙ্গিতে বসে থাকে। এইটা কোনো সমস্যা না, সমস্যা হলো—আমরা তরুণেরা অধিকাংশ সময়ে উদাস হয়ে বসে থাকি, চারপাশের কোনো খেয়াল রাখি না। ওদিকে বিশাল বড় মেঘ এই দেশের আকাশ ছেঁয়ে ফেলছে, আসলে মেঘ বলা ঠিক না, কোনো অভিশপ্ত কিছু যার কোনো সমার্থক শব্দ খুঁজে পাচ্ছি না আর আম