আপনি পারজ? হতেই পারেন- সেটা আপনার চয়েস। আপনার যদি পারজ বা খাঞ্চোত হতে ইচ্ছে হয় তো হবেন- সেটা আপনার চয়েস।
‘এইটা আপ্নের কেমুন বিবেচনা চেয়ারমেন সাব’?
গৃহশিক্ষক। (১)।
অনেক কায়দা করে রাফসানের আব্বার কাছ থেকে আগের দুই মাসের বেতন আদায় করলাম। আজব মানুষ। প্রথম যেদিন পড়াতে গেলাম সেদিন ছাত্রের থেকে ছাত্রের পিতার আগ্রহ বেশি।
- কোথায় পড়েন?
- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
- কুন সাবযেক্ট?
- এগ্রোটেকনলজী।
- সেটা আবার কোন সাবযেক্ট? কি পড়ায় তাতে?
- এগ্রোনোমি, বায়োটেকনোলজী, বায়োকেমিষ্ট্রি, ষ্ট্যাটিস্টিক্স, সয়েল সাইন্স, !!!!
এক নিঃশ্বাসে বলে গেলাম।
হুজুর এতক্ষণ হামদ-নাত গাইছিলেন। যথেষ্ট জন-সমাগম হয়েছে বুঝতে পেরে হুজুর গলার স্বরটাও বাড়ালেন। মাইক অপারেটরও বাড়িয়ে দিল মাইকের ভলিউম। হুজুর বয়ান করছেন আর মাঝে মাঝে শ্রোতাদের উদ্দেশে বলছেন--‘জোরে বলুন সোবানাল্লাহ।’
শ্রোতারাও সমস্বরে বলে উঠছে--‘সোবানাল্লাহ।’
তেমিন হুজুর কখনো বলছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ’, তখনও মুসুল্লিদের বলতে হচ্ছে সোবানাল্লাহ। মাঝে-মাঝে হুজুর শ্রোতাদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন, ‘জোরে বলুন ঠিক কি না।’
ঠিক নয় এ কথা বলার ধৃষ্টতা বা বিদ্যা-বুদ্ধি কারো নেই। হুজুরের কথাটাকে শিরোধার্য মেনে তারা বলছে, ঠিক, ঠিক। কিন্তু হুজুর আওয়াজটা পছন্দ করলেন না। তাঁর ধারণা, মুসিল্লিরা আরো জোরে আওয়াজ দিতে পারে, কেউ কেউ হয়তো আওয়াজ করছেই না। তিবি আবার হাঁকলেন, ‘শুনিনি, আবার বলুন ঠিক কি না?’
এবার আওয়াজটা অনেক জোরালো হল। হুজুর বোধহয় এমন আওয়াজই চাইছিলেন।
৮.
কি যে এক অদ্ভুত যন্ত্রণা হয়েছিল কিছুদিন! পথে চলতে গেলে পথও চলা শুরু করত আমার সাথে। অথচ পথের শেষটা দেখব বলেই পথে নেমেছিলাম। সকালে হাঁটতে বেরুলে ঘর থেকে যেই না বাইরে আসতাম, দিব্বি সেজেগুজে পথ এসে ঠিক জুড়ে যেত সাথে। বলত- চল, তোমার সঙ্গী হই, তুমি বুঝি একা?
-কিরে ব্যাটা, কতক্ষন ধইরা তোর ফোন বাজতাছে। ধরস না ক্যান?
=কি বাজতাছে?!? এইডা তো বাজার জিনিস না, ধইরা ঝাকানোর জিনিস। বাজবো ক্যান?
-ধুর হালা, কি কস উলটা পাল্টা। তোর ফোন বাজতাছে, মোবাইল ফোন।
=ও, আইচ্ছা। ফোন শব্দটা একটু ভালোমতো উচ্চারন করবি তো। আমি শুনলাম তুই মানবদেহের কোন অঙ্গ বাজা’র কথা কইতাছস।
মতিন মুখ কাঁচুমাচু করে বলে,
- ভাই মেয়েরা এমন কেন?
বদরুল ভাই চায়ে ডালপুরি চুবিয়ে খাচ্ছিলেন। মতিনের কথা শুনে উদাস হয়ে গেলেন। হয়তো কোন পূর্ব স্মৃতি মনে পড়লো। ডালপুরি চায়ের মধ্যে গলা ডুবিয়েই রইল। আমরা উৎকণ্ঠার সাথে এই গেল এই গেল ভাবতে ভাবতে অপেক্ষা করছিলাম কখন ডালপুরি গলে চায়ের ভেতর টুপুস করে খসে পড়ে। কিন্তু না, দেখা গেল ডালপুরিরা মোটেও বিস্কুটের মতো চরিত্রহীন না। চায়ে গলা ডুবিয়ে রেখে দিলেও দিব্যি ঝুলে থাকে, গলে পড়ে না।
চারিদিকে একেবারে বরফ টরফ জমে একাকার। টানা দুইদিনের তুষারপাতে একেবারে অচলাবস্থার কাছাকাছি পৌছে গেছে শহরটা। এর মধ্যে দশ মিনিট বাইরে দাঁড়িয়ে থাকাও অসম্ভবের কাছাকাছি কাজ। মোবাইল স্ক্রিনটা দেখে নেয় চট করে, তাপমাত্রা মাইনাস এগার দেখাচ্ছে। এখানে আবার তাপমাত্রার সাথে আরেকটা জিনিস লেখা থাকে, যেটাকে বলে ‘ফিলস লাইক’, দেশে থাকতে এই ব্যাপারে তার কোন ধারণাই ছিল না। হুহু করে ঠান্ডা বাতাসও বইছে, তাপমাত্রা মাইনাস
শাং গ্রি লা কথাটা প্রথম উঠে আসে জেমস হিলটনের উপন্যাস লস্ট হরাইজন এ। তিবেতান হিমালয়ের এর দুর্গম অংশ, যেখানে আধুনিক মানুষের পা এখনো পড়ে নাই, সেইখানে আছে এক রহস্যময় উপত্যকা। ওইখানে মানুষের বয়স বাড়ে না, কোন অসুখবিসুখ হয় না। লোকজন আক্ষরিক অর্থেই অমর।