১৯৭১ সালের ৩০শে জুন, রাত ১১টা, গ্রামের সবাই তখন উৎকন্ঠা আর উদ্বেগ নিয়ে ঘুমের ঘোরে। ১৯ বছরের টগবগে তরুন সাত্তার যুদ্ধে যাবার জন্য নিজেকে তৈরী করে নিলো। আস্তে আস্তে মায়ের ঘরের কাছে এসে দড়জায় টোকা দিলো। মা তামান্না বেগম প্রথম টোকাতেই ভয়ে লাফ দিয়ে উঠলেন। পাশে ঘুমিয়ে পড়া স্বামীকে ধাক্কা দিয়ে তুললেন। সাত্তার বিলম্ব দেখে আবার টোকা দিলো, আর সাথে বললো-"মা আমি, দড়জাটা খুলো।" তামান্না বেগম ...
এখনো ঘুমাই নি বলেই আমার কাছে আজকে মনে হলেও আসলে এটা ঘটে গেছে কাল অর্থাৎ ২৩-০৭-২০০৯ তারিখ বৃহষ্পতিবার অপরাহ্ণ ছ'টায়। মিরপুর-০১ এর গোলচক্কর সড়কদ্বীপে ভাস্কর হামিদুজ্জামান খানের যে ভাস্কর্যটা মেয়র সাদেক হোসেন খোকার মাধ্যমে উন্মোচন বা উদ্বোধন হলো, এটার নাম 'কিংবদন্তী'। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে স্টেইনলেস স্টীলে নির্মিত এ ভাস্কর্যটা প্রায় সাড়ে তিন ফুট বেদীর উপর আনুমানিক সাত ফু...
ছবি দেয়ার সবচে’ সহজ ও কঠিন সুবিধাটা হলো- নিরেট বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে একাধারে আমার মতো এক্কেবারে হাবাগোবা বেক্কল-টাইপ লোকটিও হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন এমন অসাধ্য প্রচেষ্টায় ইতংবিতং লিখে শহীদ হয়ে যাবার কোন ঝামেলা নেই। ছবিই সবকিছু বলে দেয়। এবং এমনভাবেই বলে দেয় যে, লেখার বাবারও সাধ্যি নেই এর চেয়ে বেশি কিছু বলা বা বুঝানোর। আর বেশি বুঝানো তো দূরের কথা, একটা ছবি দেখে আমরা যা বুঝতে পারি ত...
অনেকেই হয়তো দেখে থাকবেন, শ্রদ্ধ্বেয় জালাল ভাইকে নিয়ে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় একটি লেখা ছাপা হয়েছে। লেখাটি লিখেছেন সেলিম রেজা নূর।
সচলায়তন কিংবা আন্তর্জালে ঘুরে বেড়ানো অনেকের কাছে জালাল ভাইয়ের কীর্তি অচেনা নয়। একটি ছন্নছাড়া দেশের ভুলে মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য ইতিহাস তিনি সংগ্রহ করেছেন পরম যত্নে। কোনো প্রকার পৃষ্ঠপোষকতা বা উৎসাহ ছাড়াই গড়ে তুলেছেন মুক্...
মৃত্যুর পর তাঁকে যেন শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়, তাঁর এই শেষ ইচ্ছেটা তিনি একবারও কি উচ্চারণ করতেন, যদি জানতেন কবরের একটুকু জায়গা না পেয়ে দাফনের অপেক্ষায় তাঁর নিথর মরদেহটি পাঁচ পাঁচটি দিন হাসপাতালের হিমঘরে পড়ে থাকবে ! এই জাতির কাছে তাঁর চাওয়াটা কি খুব বেশি কিছু ?
বায়ান্নতে তৎকালীন শাসক গোষ্ঠি কর্তৃক বাঙালির স্বতঃস্ফূর্ত আবেগে গড়ে তোলা একুশের তাৎক্ষণিক ও প্রথম শহীদ ...
আমাদের জীবনকালেই হয়তো সেই সময়টা আমরা দেখে যাবো, এই দেশ এই মাটি এবং আমাদেরকে রাহুমুক্ত করতে নির্দ্বিধায় জীবনটাকে বাজী রেখে যাঁরা পাহাড়ের মতো অদম্য বুকটাকে টানটান করে দাঁড়িয়েছিলেন ট্যাঙ্ক গুলি আর বন্দুকের মুখে, আমাদের প্রচণ্ড অপরাধবোধ আর তীব্র পাপবোধ থেকে রেহাই পেতে ঋণশোধ তো দূরের কথা, একটুখানি কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্যেও তখন আর একজনকেও খুঁজে পাবো না আমরা ! তাঁরা আমাদের ভাই, বন্ধু,...
আশি বছর বয়সী এই জার্মান বুড়ো এবং তার স্ত্রীর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কি? তাদের সাথে দেখা হওয়ার আগে তা ঘুণাক্ষরেও অনুমান করার উপায় ছিল না।
হঠাৎ করেই এক দাওয়াতে পরিচয় তাদের সঙ্গে। উনি প্রথমেই উপস্থিত সবার কাছে ক্ষমা চাইলেন যে তার ইংরেজী জ্ঞান খুবই সীমিত। ওনার স্ত্রী একেবারেই পারেন না, তাই আমাদের কারও কারও কথা অনুবাদ করে দিতে হচ্ছিল। পাশে বসেছিলাম বলেই অনেক কথা বলার সুযোগ হলো এব...
১৯৮৪ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী।
বাবার হাত ধরে আমরা চার ভাই বোন প্রভাত ফেরীতে মনের আনন্দে ঘুরছি। এমনিতে আমাদের খালি পায়ে হাঁটা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, কিন্তু সেদিন বাবা যখন ঘুম থেকে উঠিয়ে বললেন জুতো পায়ে দিতে হবেনা, আনন্দে তখনই ফেটে যাবার অবস্থা। রিক্সায় উঠতে গিয়ে দেখি বাবার পায়েও জুতো নেই, রিক্সাওয়ালাদের পায়ে তো এমনিতেই জুতো থাকতনা, মিছিলে গিয়ে দেখি হাজার হাজার মানুষ সব খালি পায়ে। আজক...
মৃত্যু এখন সবচাইতে সহজ শব্দ
দিন দুই আগে আজিজে টুটুল ভায়ের ওখানে গিয়েছিলাম, যাবার আগে নজরুল ভায়ের কাছে জানতে চাইছিলাম উনি আসবেন কীনা, শুনলাম ব্যস্ত, মুক্তিযোদ্ধা খালেদের উপর তথ্যচিত্রের সম্পাদনার কাজ করছেন। শেষ পর্যন্ত একাই গিয়েছিলাম। একটু পর নজরুল ভাই নিজেই ফোন দিলেন, জানতে চাইলেন উনার ওখানে যাব কীনা, দরকার ছাড়া ওভাবে কেউ যানতে চায়না, চাপাচাপি করাতে বললেন যদি আসেন আমার আর তা...