পুত্র হিসেবে আমার অপরাধসমূহ

অনিকেত এর ছবি
লিখেছেন অনিকেত (তারিখ: সোম, ২২/০৬/২০০৯ - ২:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার বাবা বেশ ছোট-খাট মানুষ।
একহারা গড়ন।
মৃদুভাষী।
মাথায় একটি বেশ বিস্তৃত,মসৃন টাক রয়েছে।
আমার বাবাকে খুব হাসি-খুশি টাইপের লোক বলা যাবে না। কিছুটা গম্ভীর---ভালো বাংলায় যাকে 'রাশভারী' লোক বলে। সে কারণে ছোটবেলায় বাবার সাথে তেমন একটা খাতির ছিল না। মায়ের সাথেই বেশি জমত।

বাবা কে তাঁর রাশভারী মূর্ত্তি থেকে কখনো-সখনো বেরুতে দেখা যেত। তখন সেটা আমাদের বাসায় একটা মোটামুটি উৎসবের ঘটনা।এই বিশেষ ঘটনাগুলো আবার ঘটত কিছু 'বিশেষ' 'বিশেষ' দিনে----রবীন্দ্রনাথের-নজরুলের জন্ম বা মৃত্যু দিবস, স্বাধীনতা দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারী, বিজয় দিবস-----আর মাঝে মাঝে কোন কোন বৃষ্টির দিনে।

এই দিনগুলিতে বাবার কার্যক্রম দেখার মত ছিল। আমাদের একটা থ্রি-ইন-ওয়ান ছিল। বাবা বিলেত থেকে ফেরার সময় নিয়ে এসেছিলেন। এই দিনগুলিতে বাবা বের করতেন তাঁর পুরোনো রেকর্ডের(LP) সম্ভার। কত কত পুরোনো রেকর্ড!ভিনাইল রেকর্ডেরও আগে মাটির তৈরী রেকর্ড ছিল। সেইসবও কিছু ছিল বাবার কাছে। ধুলোর আস্তর সরিয়ে, ঝেড়ে মুছে থ্রী-ইন-ওয়ানে চড়িয়ে দেয়া হত। সেই কালো কালো চাকতিগুলোর ভেতর থেকে মন্দ্রিত কন্ঠে সুর তুলতেন সাগর সেন----"প্রথম আদি তব শক্তি--" বা "ডাকব না ডাকব না--ওমন করে বাইরে থেকে ডাকব না--" অথবা ফিরোজা বেগমের অননুকরনীয় কন্ঠে "দূর দ্বীপ বাসিনী---", কিংবা "মোর ঘুম ঘোরে এলে মনোহর---", কিংবা শম্ভু মিত্রের কন্ঠে জীবনানন্দের 'আট বছর আগের একদিন' কিংবা সৌমিত্রের গলায় 'বনলতা সেন', কাজী সব্যসাচীর কন্ঠে "কে সেই মানুষ?" বা "উদ্বাস্তু"-----আহা, কি সব দিন!!

বাবা বিছানায় শুয়ে, হাতে একটা বই নিয়ে পড়ছেন। তার পাশে আমরা দুই ভাইবোন। আরেক পাশে মা। এইসব দিনগুলোতে বাবার মন খানিকটা তরল অবস্থায় থাকত। সচরাচর যেসব আহ্লাদী গুলো মায়ের সাথে করা হয়---সেই সব দিনগুলোতে বাবার সাথেও ঐ একই রকমের আহ্লাদী করার প্রয়াস চালাতাম। আমার সদা গম্ভীর বাবার মুখে তখন দেখা যেত প্রশ্রয়ের হাসি।

তখন টিভিতে একটা সিরিজ চলছিল---হাওয়াই ফাইভ-ও। হাওয়াই দ্বীপের পাঁচ তুখোড় পুলিশ অফিসার ও তাদের নিত্যদিনের অপরাধ দমনের রোমহর্ষক এডভেঞ্চারগুলো নিয়ে এই সিরিজ। আমরা বাচ্চারা তখন ঐ সিরিজ এর বিশাল ভক্ত। আমার শৈশবের পুরোটা এবং কৈশোরের কিছুটা অংশ কেটেছে সিলেটে। 'সিলেট' শুনলেই আপনাদের মাথায় প্রথমেই যে জিনিসটা আসে----সেটা বাদ দিয়ে দ্বিতীয় জিনিসটার কথা চিন্তা করুন ----হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন, লন্ডনীদের কথাই হচ্ছে। আমি তখন যে স্কুলে যাই, সেটাতেও অনেক ছেলেমেয়ে পড়তে আসে যাদের বাবা-চাচা-মামা লন্ডনে থাকেন। সেই সুবাদে তারা মাঝে মাঝেই নানান চমকপ্রদ খেলনাপাতি নিয়ে স্কুলে আসত---আর আমাদের মত ছেলেরা যাদের প্রবাসী আত্মীয় নেই, তারা বুকভরা হিংসা নিয়ে সেগুলো তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতাম। মাঝে মাঝে দেখা যেত স্রেফ খেলনার লোভে আমাদের মাঝে কেউ কেউ হ্যাংলার মত ওদের পেছনে ঘুরত। তাঁদের অক্লান্ত নিষ্ঠার পুরষ্কার হিসেবে--মাঝে মাঝে খেলনাগুলো ধরতে দেয়া হত। আমারও খুব ইচ্ছে করত---কিন্তু 'প্রফেসর সাব-র পুয়া' হিসেবে হ্যাংলামী করাটা আমার জন্যে কোন অপশন ছিল না।

এরই মাঝে একদিন আমার এক বন্ধু ভীষন উত্তেজিত অবস্থায় স্কুলে হাজির হল। সে এমনিতে একটু তোতলা ছিল। উত্তেজনার চোটে তোতলামী কয়েকগুন বেড়ে গেছে। গলার রগ উঁচিয়ে, বৃষ্টির মত থুথু ছেটাতে ছেটাতে সে যা বলল---তার শানে নযুল হল---সিলেটের একটা দোকানে ('রুণা স্টোর'--নামটা এখনো মনে আছে) নাকি হাওয়াই ফাইভ-ও এর পুলিশের গাড়ী এসেছে!! সেগুলো নাকি ইয়া বড় (হাত দুই দিকে ছড়িয়ে অবাস্তব রকমের একটা আকৃতি দেখানো হল)! সুইচ টিপে দিলে পোঁ পোঁ করে আওয়াজ করে। বাতি জ্বলতে থাকে ঝলমল করে। তারপর বিদ্যুৎ বেগে মেঝের উপর দৌড়া দৌড়ি করে। শুধু তাই নয়---মাঝে মাঝে দরজা খুলে পুলিশও নাকি বেরিয়ে আসে----!!!
আমাদের চোখগুলো ভাগ্যিস খুব ভালো করে কোটরে আটকানো---নাহলে সেইদিনই ডজন খানেক চোখ বারান্দায় গড়াগড়ি খেতো। আমার মনে হল উত্তেজনার চোটে ভাল করে নিশ্বাস নিতে পারছি না----ছেলে বলে কী এইসব??!!! হাওয়াই ফাইভ-ও এর পুলিশের গাড়ি !!! তাও সেটা সিলেটে এসেছ!!! তার মানে ঠিক যে শহরটাতে ওই পুলিশের গাড়ি আছে---ঠিক একই শহরে আমিও আছি---!!!!!

বাসায় গিয়েই বাবা কে এই সুসংবাদ শোনানো হল! আমার বাবার আবার নিজেরও ভীষন খেলনা-টেলনার লোভ। বিলেত থেকে পড়া শেষ করে ফেরার সময় বিস্তর টাকা খরচ করে আমার জন্যে একটা খেলনা ট্রেন নিয়ে এসেছিলেন। সেটা বলা হয়েছিল আমার---কিন্তু অনেকদিন পর্যন্ত সেইটার মালিকানা পাইনি--কারণ বাবা নিজে সেটা নিয়ে খেলছিলেন।

খবরটা শুনে আমি পরিষ্কার দেখলাম বাবার চোখ চকচক করে উঠল। তবে দরজা খুলে পুলিশ বেরিয়ে আসে---গল্পের এই অংশটা কেন জানি মনে হল বাবা ঠিক বিশ্বাস করলেন না।

সেদিন বিকেলেই বাপ-বেটা মিলে জিন্দাবাজার অভিমুখে রওনা হলাম। জিন্দাবাজার হল সিলেটের 'ডাউন-টাউন'। যাই হোক রিক্সা যত 'রুণা স্টোরের' কাছে এগুচ্ছে আমার বুকের ঢিপঢিপ আওয়াজ তত বাড়ছে। মনে হচ্ছে দোকান পর্যন্ত পৌছাতে পারব তো? নাকি এর আগেই উত্তেজনায় আমার ছোট্ট হৃদয়টা পুটুস করে ফেটে যাবে?

পরের কিছু মুহূর্ত্ত আমি সারা জীবনেও ভুলব না। আমাকে দোকানের বাইরে দাঁড় করিয়ে বাবা ভেতরে গেলেন। আমি তখন দোকানের কাঁচের দেয়ালে নাক ঠেকিয়ে তাকিয়ে দেখছি--- ভেতরে থরে থরে সাজানো মহার্ঘ্য সব খেলনা-পাতি। সকল কিছুকে ছাপিয়ে গর্বিত ভঙ্গীতে দাঁড়িয়ে আছে লাল রঙের একটা বি-শা-ল খেলনা গাড়ী---একেবারে যেন হাওয়াই ফাইভ-ও এর সেট থেকে পথ ভুল করে চলে আসা আলোর রথ---আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম--শুধু আমি নই----আরো চার-পাঁচটি শিশু আমার মতই গ্লাসের দেয়ালে নাক ঠেকিয়ে দেখছে অন্যপাশের নন্দন-কানন।

আমি আরো দেখতে পাচ্ছিলাম বাবা-কে।দোকানদারের সাথে কথা বলছেন। আমি দেখতে পাচ্ছি--আমার বাবার মুখটা থেকে একটা আলোর পরত সরে গেল। খুব ধীর পায়ে বেরিয়ে এসে বললেন---বাবা রে, খেলনাটার যে অনেক দাম! আমার মনে হল---বাবা মিথ্যে বলছেন। কোন এক অজ্ঞাত কারণে তিনি আমাকে গাড়ি কিনে দিতে চান না। তাই এইটা বানিয়ে বলছেন। আমি আজো জানিনা আমি কেন এইরকম ভেবেছিলাম। আমি আজো জানিনা কেন আমি সেদিন উন্মাদের মত কেঁদেছিলাম ঐ দোকানের সামনে। আমার চিৎকার করে গলা ফাটিয়ে কাঁদতে দেখে অনেকেই এসে জিজ্ঞেস করেছে---আমি কাঁদছি কেন। আমার বাবা বিব্রত মুখে কিছু-একটা উত্তর দিয়েছেন। তারপর আস্তে করে আমার হাতটা ধরে বাইরে নিয়ে এসেছেন। রিক্সায় উঠে যখন ফিরছি----স্বার্থপরের মত তখনো কেঁদে চলেছি। মনে হচ্ছিল বাবাটা কী হিংসুটে--আমাকে খেলনা কিনে দিতে চায় না---

একবার ভুল করে বাবার দিকে চোখ পড়েছিল---দেখলাম সেখানে বাবা বসে নেই।বড় ম্লান মুখে বসে আছেন অজানা কোন একজন লোক। তাঁর চোখটা হারিয়ে গেছে দূরে কোথাও। সেদিন বাসায় ফিরেও অনেক কেঁদেছিলাম। বাবা আর কিচ্ছুটি বলেন নি। রাতে ঘুমুবার সময় বাবা আসতেন ঘুম পাড়াতে--তখন আমি শুয়ে শুয়ে অনেক আগড়ম-বাগড়ম কথা বলতাম। কথাবার্তার বেশির ভাগই থাকত--- আবার যদি বাবা বিলেত যান পড়তে,তখন সেখান থেকে আমার জন্যে কী কী খেলনা নিয়ে আসবেন---এই জাতীয় জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা।

সেদিন বাবা এলেন না আমাকে ঘুম পাড়াতে----
সেদিন রাতভর আমি স্বপ্নে দেখলাম আমার বিছানার নীচে সারাটা মেঝে ছেয়ে আছে কোটি কোটি পুলিশের গাড়িতে---পোঁ পোঁ করে শোরগোল তুলে তারা ছূটোছুটি করছে---আলোর ঝলকানীতে আলো হয়ে আছে আমার সারাটা ঘর। সকালে উঠে যখন জানলাম এইটা আসলে স্বপ্ন, তখন আরো একবার কেঁদেছিলাম----

এরপর অনেকদিন কেটে গেছে। হাওয়াই ফাইভ-ও শেষ হয়ে নতুন রিরিজ এসেছে--দ্য সেইন্ট আর টারজান--- এখন আমিও একটু বড় হয়েছি। একটু একটু বুঝতে পারি আমার চারপাশের মধ্যবিত্ত জীবন। একটু একটু করে জানতে শিখছি---এই পৃথিবীতে চাইবার অনেক কিছু থাকলেও পাবার লিস্টিটা বড্ড ছোট। এখন আর আগের মত বায়না ধরিনা।

কিন্তু সবার অলক্ষ্যে যা করি---তা হল, যতবার আমি রুণা স্টোরের ধারেকাছে যাই--ততবার সবার চোখ এড়িয়ে একবার ঢুঁ মারি সেখানে। স্বচ্ছ কাঁচের ওপাশ থেকে দেখি---আলো ঝলমলে পুলিশের গাড়ীটা তখনো আছে---যেন আমার অপেক্ষায় আছে---

সেই শৈশব, কৈশোর পেরিয়ে প্রৌড়ত্বে দাঁড়িয়ে এখন আমার আর সে গাড়ির জন্যে কষ্ট হয় না। এখন আমার কষ্ট হয় শুধু আমার বাবাটার জন্যে---সেই দিনটার জন্যে---যেদিন আমি না বুঝে তাঁকে কষ্ট দিয়েছিলাম---স্বার্থপরের মত নিজের সুখের কথা ভেবে ভেবে, বুঝতে চাইনি তাঁকে কী মনঃকষ্টের মধ্যে আমি ফেলেছিলাম। হয়ত এখনো তাঁর মনের গভীরে কোন এক জায়গায় সেই খেদটা রয়ে গেছে---সন্তানকে খেলনাটা কিনে দিতে না পারার অক্ষমতা প্রসূত যন্ত্রনাটা---হয়ত নেই--

কিন্তু, বাবা আমি ভুলিনি।
বিশ্বাস কর বাবা--এখনো মাঝে মাঝে আমার নিজের সেই স্বার্থপর কান্ড, আর তোমার নত মুখের কথা মনে পড়ে। এখনো রাস্তা দিয়ে একা হেটে যাবার সময় হঠাৎ করে সেই দিনটা আমার উপর অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমি লজ্জায়-দুঃখে ম্রিয়মান হই। তোমার সাথে আমার সম্পর্কটা পরবর্ত্তীকালে অনেক বদলেছে। পিতা-পুত্রের বদলে আমরা দুই বন্ধুতে পরিনত হয়েছি। আমি সেদিনের পরেও নানান সময়ে তোমাকে নানান কষ্ট দিয়েছি। মন ভেঙ্গেছি। মন গড়েছি।

শুধু একটা অপরাধের দোষ স্বীকার করা হয়ে ওঠেনি কখনো।

তোমার এই অধম পুত্র তোমার কাছে আজ সকলের সামনে ক্ষমা চাইছে---সেদিনের সে অপরাধের জন্য। আজকের এই বাবা দিবসে সবাই কত ভাল ভাল কথা বলছে, স্মৃতি-চারণ করছে। আমি সেসব করছি না বাবা---আমি এসেছি আজ ক্ষমা চাইতে-----

বাবা, আমি ক্ষমাপ্রার্থী---


মন্তব্য

তুলিরেখা এর ছবি

খুব চমৎকার। জীবনের জলছবি আপনার কলমে এমন অসাধারণ হয়ে ফোটে!
অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ, তুলিরেখা। শুভেচ্ছা রইল---

সাইফ তাহসিন এর ছবি

অনিকেতদা, বড়ই হৃদয় বিদারক একটা দৃশ্য যেন চোখের মাঝে জ্বলে উঠল, আপনার অসাধারণ লেখনির জ্বোরে আপনার বাবার দু:খ ভারাক্রান্ত মুখটা যেন দেখতে পেলাম, কেমন যেন একটা অস্বস্তি যা ঝেড়ে ফেলা যায় না। আপনার বাবার জন্য একটা খেলনা নিয়ে যান পরবর্তীতে যখন দেশে যাবেন, তারপর পিতা পুত্র একসাথে সেটা নিয়ে খোলা মাঠে যেয়ে খেলবেন, আপনার মনে যেমন না পাওয়ার কষ্ট এবং উনার মনেও সেই কষ্ট এখনও নিশ্চয় ঘোরাফেরা করছে, হয়তো সে কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হতে পারে।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ বস।

এমি এর ছবি

মন্তব্য করার ভাষা হারিয়ে পাচ্ছি না । আপনার লেখাটা মনকে খুব বেশী ছুয়ে গেল ।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ এমি।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হৃদয়ছোঁয়া লেখা। এরকম মনে হয় আমাদের সবার জীবনেই ঘটে।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ঠিক এ কথাই বলবো ভাবছিলাম...
দারুণ লেখা...

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ, শিমুল---
শুভেচ্ছা রইল-----

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ, পিপি দা---
ভাল থাকবেন--

মামুন হক এর ছবি

বস সাত সকালেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো, একেবারে হৃদয় ছুয়ে যাওয়া লেখা। মন্তব্য করব বলে বসেছিলাম, এখন ভাষা হারিয়ে ফেলেছি...

অনিকেত এর ছবি

মন খারাপ করিয়ে দেবার জন্যে দুঃখিত বস---
আসলে এই অপরাধবোধটা বয়ে বেড়াতে বেড়াতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম---
আবারো দুঃখিত, বস---

স্বপ্নাহত এর ছবি

বাবা দিবস নিয়ে আপনার কাছ থেকে একটা লেখা খুব খুব আশা করছিলাম। হাসি

---------------------------------

তবে যে ভারি ল্যাজ উঁচিয়ে পুটুস্‌ পাটুস্‌ চাও?!

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

অনিকেত এর ছবি

ভাল থেকো --আমার প্রিয় ছড়াকার---

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

অসম্ভব ভাল লাগল ভাইয়া... এবার একটা খেলনা নিয়েই যান না...পিতা পুত্রে খেল্বেন একসাথে...দেঁতো হাসি

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ, বালিকা---!
দেখি, সেইরকমই একটা প্ল্যান আছে আমার----

সাইফ তাহসিন এর ছবি

একটা বড় হেলিকপ্টার হলে মনে হয় জমবে বেশী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিকেত এর ছবি

আমারো তাই ধারণা, বস---হা হা হা ---

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

....................

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনিকেত এর ছবি

মন খারাপ

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

লা জবাব!

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই--
ভাল থাকবেন-----

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

সেইরকম একটা চমৎকার খেলনা নিয়ে বাবার কাছে কবে যাবেন, অনিকেত'দা?

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অনিকেত এর ছবি

সেইদিনটার অপেক্ষায় আমিও আছি, শিমুল---
শুধু দোয়া করো, যেন আমি খুব দেরী না করে ফেলি----

ভাল থেকো---

জাহিদ হোসেন এর ছবি

মধ্যবিত্তের এই চিরন্তন টানাপোড়েন না থাকলে কি এইরকম একটা হৃদয়-কাঁদানো কাহিনী শুনতে পারতাম? আপনার বাবাকে শুভেচ্ছা। যদি পারেন তো তাঁর সাথে সময় কাটান। বসে বসে গল্প করুন। আমার কাছে অনেক সময় মনে হয়েছে যে বাবারা কিভাবে যেন দূরের মানুষ হয়ে যান এক সময়। পরে হাজার চেষ্টা করলেও তাঁরা কাছে আসতে পারেন না।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

অনিকেত এর ছবি

জাহিদ ভাই,
আপনার মন্তব্যটা পেয়ে আমার খুব ভাল লাগছে----
আপনি ভালো থাকবেন, জাহিদ ভাই---

আমি খুব আশায় আছি---জীবনের কোন এক যাদুময় মুহূর্তে--আপনার সাথে দেখা হয়ে যাবে----

ভালো থাকবেন---

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমরা যারা বিত্তের মধ্যে বড় হইনি, তাদের ছেলেবেলায় বাবাকে ঘিরে সিনারিওটা মোটামুটি একই রকম অনিকেত'দা। এখন ভেবে দেখন, ঐ রকম দশটা গাড়ি আপনি কিনে ফেলতে পারেন, রুনা স্টোর থেকে কোনো কিছু না ভেবেই। কিন্তু সেই যে সেদিনের চাওয়াটা, চেয়ে না পাওয়াটা- সেই যে আক্ষেপ, সেই যে কষ্টটা- এটা তো কখনোই পাওয়া হবে না আর। উঁহু, পয়সা দিয়েও না। এধরণের কিছু আক্ষেপ মনে হয় থাকাটা জরুরী আমাদের মনে। সবকিছু পূরণ হয়ে গেলে আসলে বেঁচে থাকার কোনো মানে নেই, মানে খুঁজে পাওয়াও যায় না।

কখনো কখনো চাওয়াগুলো পূরণ না হলেই বরং ভালো...।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অনিকেত এর ছবি

ধু-গো, বড় সত্যি কথা বলেছ রে ভাই---খুবই সত্যি কথা---
ভাল থেকো, ভাই আমার---

রানা মেহের এর ছবি

মা বাবাগুলো বোধহয় থাকেই
আমাদের থেকে কষ্ট পাবার জন্য

লেখাটা খুব ছুঁয়ে গেল
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ, রানা---
ভাল থেকো---

কীর্তিনাশা এর ছবি

মন ছুঁয়ে যাওয়া লেখা চলুক

তারেক ভাই ভালো থাকুন, আপনার বাবা দীর্ঘজীবি হোন !!

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ, কীর্তি---
একই শুভকামনা রইল তোমার জন্যেও----

সচল জাহিদ এর ছবি

অনিকেতদা

বাবা দিবসের লেখাগুলি পড়ে গিয়েছি সবই, কিন্তু মন্তব্য করিনি, কিছু কিছু বিষয় মন্তব্যের উর্দ্ধে। এই লেখাটিতে মন্তব্য না করে পারলামনা কারন নিজের জীবনের সাথে এত মিলে যায়। মনে আছে একটি সামান্য স্কুল ব্যাগ পাবার জন্য কত বায়না ধরেছি, বাবার নিম্নমধ্যবিত্ত আয়ে সেটাও সম্ভব ছিলনা, তাই রাগ করে কেদে স্কুলে চলে গিয়েছিলাম। হঠাৎ দেখি টিফিনের ফাঁকে বাবা স্কুলের মাঠে দাঁড়িয়ে তার হাতে একটি নতুন ব্যগ। বাবাকে কি কয়েকদিন সেজন্য দুপুরের খাবারে রুটি আর কলা খেতে হয়েছিল, নাকি বাস থেকে নেমে রিকশার বদলে হেঁটে আসতে হয়েছিল ? জানিনা, শুধু জানি আমার মুখের সেইদিনের সেই হাসি দেখে বাবার মনটা জুড়িয়ে গিয়েছিল।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অনিকেত এর ছবি

আহা রে--মনটা ভাল হয়ে গেল জাহিদ!
আসলেই বাবাগুলো এত ভাল হয় কেন????

তানবীরা এর ছবি

আর আমাদের মত ছেলেরা যাদের প্রবাসী আত্মীয় নেই, তারা বুকভরা হিংসা নিয়ে সেগুলো তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতাম।

খুব ছুঁয়ে যাওয়া লেখা ।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ,তানবীরা---
শুভেচ্ছা রইল---

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অনিকেত'দা, মনে হলো যেন চোখের সামনে সব দেখতে পেলাম। আপনার লেখার এই দিকটা এত মুগ্ধ করে! অসাধারণ বললেও কম বলা হবে।

এই লেখা আবারও পড়ব পরে, হয়ত, অনেকবার।

অতিথি লেখক এর ছবি

যাপিত জীবন যেখানে থমকে যায়..
কষ্ট যেখানে বাসা বাঁধে..
অনুতপ্ত মন যখন ক্ষমাপ্রার্থী..
শুভ্র পবিত্র চাদর ঢেকে দিয়ে যায় ভুল গুলো...

ভাল লাগল...

(জয়িতা)

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ, জয়িতা।

শুভেচ্ছা রইল।

সিরাত এর ছবি

পড়লাম। ভাল লাগলো। হাসি

তিথীডোর এর ছবি

.......................

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

ফাহিম হাসান এর ছবি

অনিকেত ভাইকে এরকম একটা লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ ফাহিম
শুভেচ্ছা নিরন্তর--

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।