প্রতিনায়ক; আমাদের রক্তমাংসের জীবনে সমাজ নির্ধারিত বাঁধাধরা নিয়ম-নৈতিকতা ও ঔচিত্যবোধের বাইরে এদের অবস্থান। একক শব্দে ধারণাটাকে ধরতে এর চাইতে সুন্দর বাংলায়ন আর হয়না। সৃজনশীল শিল্পমাধ্যমে এদের আনাগোনা অবশ্যম্ভাবী না হলেও, দুর্লভ নয়।স্বাভাবিকভাবেই সমাজের দৃষ্টিতে তাদের ভাবমূর্তি ইতিবাচক নয়। ‘স্বাভাবিকতা’টাই যেখানে সমাজ নির্ধারিত, সেখানে এই নেতিবাচক সীদ্ধান্তটা ধ্রুব ভেবে নেবারও কারণ নেই। সাদাচোখে এরা
তাই বলে খড়ম মারিলি ওরে বনিতা মুষলিনী?
এইরূপ কমপ্রিহেনসিভ কমবখতপনায় অঙ্গে অঙ্গে সর্ব প্রত্যঙ্গে কুন কিছু বাদ না রাখিয়া?
আমি কানে ইয়ারফুন দিয়া শুনি ফাঁসিবাদের পদধ্বনি ভলিউম
কম করে। বিবি অদূরে শয়ান।
ঘটনা আর কিছু নয় সারাদিন পেশাদার কবির হাড়ভাংগা খাটুনি খাটিয়া যবে
বাটী ফিরে বসেছিনু আপন কবিতার চর্চাপীঠে হেলান ও হাই সহযোগে
করকমলে লয়ে বামাচারিনী বামাটির প্রস্তুতকৃত এক পেয়ালা চা
[justify]আমার প্রবাস জীবন মোটামুটি আনন্দময়। আর এই আনন্দময় জীবনের বেশীরভাগই আমার স্ত্রীর অবদান। সে একেবারে খাঁটি বাঙালী বধু, গৃহকর্মে অতি নিপুণা। বিদেশে এসে বেশীরভাগ অবলা বাঙালী নারীরাই বেশ সবলা হয়ে উঠে। আমার স্ত্রীটি এখনও সেরকমটি হয়ে উঠতে পারেনি। ঘরের বাইরে একা বের হওয়া তার সাধ্যের বাইরে। রাস্তা পার হতে গেলে আমার হাত চেপে ধরে পার হয়। আমাদের বাসার পাশের গ্রোসারি শপ। সেখানেও সে একা যাওয়ার সাহস করে উ
আমাদের বাগানের পশ্চিম পাশটায় সূর্যের আলো খুব একটা আসেনা। রোদ না পেয়ে একেবারে যা তা অবস্থা ঘাসের। হামবার নার্সারির ম্যানেজার আলফান্সোর কথামতো গতো দু-মাসে চার বার সার দিয়েছি। সার মানে কম্পোস্ট, যেমন তেমন নয়, পাহাড়ি ভেড়ার নাদি মেশানো কালো কালো মাটির দলা। সেই দলা রোদে শুকিয়ে, হাত দিয়ে ভেঙে, গুঁড়ো গুঁড়ো করে মেশাতে হয় ঘাসের গোড়ায়। কাজের কাজ কিছুই হয়নি, বরং উৎকট গন্ধে এদিকে আসাই দায়। একগাল হেঁসে আলফান্সো বললো, সারে কাজ হবে না।
ভণিতা ১।।
অনুবাদে আমার দারুণ ভয়। একটা সময় তীব্র আনন্দ নিয়ে সেবার অনুবাদ পড়েছি, অপেক্ষায় থেকেছি কখন রিটার্ন অব শি কিংবা কাউন্ট অব মন্টিক্রিস্টো ছাপা হয়ে আমাদের পাড়ার সুমন ভাইয়ের দোকানে আসবে। পড়তে পড়তে ভাবতাম ইংরেজি পড়ার এবং সেইসাথে ইংরেজিতে লেখা বই কেনার মুরোদ হলে লেখাগুলো আবার পড়ে ফেলবো।
কবি হিসাবে আমার অপরাধ আমি জুনের সতারো তারিখে
আনমনে লিখেছিলাম একটি কবিতা। তাতে
ছিল না কুন পরনারীর প্রতি লালসা
ছিল না কুন নাইকা-মডেলের প্রতি মিষ্টি বচন
আমি শুধু হৃদয়ের সকল মধু ঢালিয়া খাতার পাতে রচেছিনু সুদুর আগ্নেয় দ্বীপ আইসলেন্ডের
প্রশস্তি। লিখেছিনু, হে বরফের মাঝে আগ্নেয়গিরি খচিত কাচা মাছের গন্ধে ভরা আইসলেন্ড
তুমি কি খাও?
কেন তুমার সন্তানদের পায়ে এমন মধুর জোর
এক।।
রাত একটা বাজতেই মোহন মিয়ার চায়ের তেষ্টা পায়। তবে তেষ্টা পেলেই তো আর উঠে যাওয়া যায় না, সব কিছুরই একটা নিয়ম রয়েছে। বিরক্ত মুখে কী বোর্ডের দিকে হাত বাড়ালেন তিনি। টেবিলের উপর একগাদা বই, কিছু খবরের কাগজ, একটি কালির দোয়াত, আর দোয়াতের পাশেই রুপোর মতো ঝকঝকে একটা পার্কার কলম পড়ে। মোহন মিয়া পুরনো দিনের মানুষ, টাইপ করার আগে একবার কাগজে না লিখলে তাঁর চলে না।
সেদিন বাড়ির অদুরেই
দেখা হয়ে যায় প্রতিদ্বন্দ্বী বন্ধু কর্কট রাশির
বরকত কবির সাথে, তবে সে
অপেশাদার।
কুশলাদি জানতে চাওয়ার আগেই সে উল্টিয়ে কলার
আমায় বলে, হেরে গেলে ভন্দু।
বিস্ময় ও গোসসায় আমি হয়ে উঠি কাতর
কিন্তু আমায় নিজের পক্ষ সমর্থনের কুন সুযুগই দেয় না নিষ্ঠুর
অপেশাদার কবিটি। বলে, পপিতা এখন আমার ফ্রেন্ড।
হয়ে যাই ভাষাহারা। নায়িকা পপিতা? অস্ফুটে শুধাই
আগের কথা
(.........................আমাদের শেখানো হচ্ছে কী করে বেঁচে থাকতে হয়। আপাতত শিখছি সংগ্রহ এবং বিনিময়, তারপর শিখবো উৎপাদন।
দু ধরনের নারকেল গাছ রয়েছে সমুদ্র তীরে, সবুজ আর লাল। যেকোনো নারকেল গাছে চড়তে পারি আমি, কেবল একটাই শর্ত। নিজে যে রঙেরটা সংগ্রহ করবো সে রঙেরটা রাখতে পারবো না। অন্য কারও নারকেলের সাথে বদলে নিতে হবে। নারকেল বিনিময়ের জন্য আলটপকায় একটা নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে, পূবের পাহাড় থেকে অনেকটা পথ দৌড়ে যেতে হয় সেখানে। আমরা সারাদিন দৌড়াই। ঘুম থেকে উঠে দৌড়ে যাই নারকেল বনে, নারকেল হাতে দৌড়ে যাই বিনিময়ের জায়গায়, সেই নারকেল কুঁড়েতে রেখে আবার নারকেল বনে, আবার বিনিময়, আবার কুঁড়ে……এই চলে দুপুর অবধি। ব্যাপারটা সহজ নয় মোটেই। হয়তো আমি পেড়েছি সবুজ নারকেল, আমার তাই প্রয়োজন লাল। কিন্তু বিনিময় কেন্দ্রে পৌছুতে পৌছুতে সব লাল শেষ। হাতের সবুজ নারকেল তখন জমা হয়ে যায় আলটপকায়। আমার মাথায় একদিন একটা বুদ্ধি এলো।)
নারকেল হাতে এতোটা পথ দৌড়ে যাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়, বিশেষ করে বেলা যখন বাড়তে থাকে। পূবের পাহাড় থেকে আরও খানিকটা পূবে একটা ছোট্ট ঝর্ণামতো রয়েছে, তারই ধারে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নেই আমরা। সেদিন দুহাতে দুটি দুটি চারটি লাল নারকেল নিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে ঝর্ণার ধারে পৌঁছুতেই দেখি ভীষণ শোরগোল। একজনকে জিগ্যেস করে জানতে পারলাম নারকেল নামিয়ে রেখে ঝর্ণায় নেমেছিলো শান্তনু। ফিরে এসে দেখে সব উধাও। বেশিক্ষণ খুঁজতে হয়নি, মাথার উপরে কিচকিচ শব্দ শুনে তাকাতেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে গেলো। কোত্থেকে একদল বানর এসে জুটেছে এখানে, নারকেলগুলো ওদেরই কব্জায়।