[justify]গন্ধটা টের পায়, ভালো করেই টের পায় শম্ভু। এবং আজকাল এতটাই টের পায় যে নিজেকেই ঘৃণা করতে শুরু করেছে হয়তো মনে মনে। বিকেলের পরিত্যক্ত রোদ ওর রোদে পোড়া দেহটাকে আরেকবার স্নান করিয়ে দিয়ে যায়। ময়লা গামছাটা দিয়ে মুখ মুছে গত রাতের বাসি রুটি আর জীবন সরকারের দোকানের মটর তরকারী দিয়ে উদরপূর্তি করতে গিয়েও সে টের পায় সেই গন্ধটা। একটা মাছি তার রুটির আশেপাশে অনেকক্ষণ ধরেই ঘুরঘুর করছিল, কয়েকবার তাড়িয়ে দিয়েও
এমন হয়না। সহজে হয়না। এমনভাবে ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া কথা শোনা হয়নি বহুকাল...
প্রথম সূচনা হয়েছিল ‘পথের পাঁচালি’ দিয়ে তারপর সেই পথে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলো ‘গৃহদাহ’, এরপর ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ এবং শেষটা ছিল ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’... এরপর বহুদিন। বহু সময় গড়িয়ে গেছে কিন্তু সেই স্পর্শের বিহ্বলতা, হৃদয়ের পোড়াস্থানে আন্দোলন উঠেনি বহুদিন।
আজ ১৯শে মে । আজ থেকে প্রায় ৫১ বছর আগে এমনি একটা দিনে ভাষার জন্য রক্ত ঝরেছিল। সেই ভাষা আমার বাংলা ভাষা।
বাংলা ভাষার কথা আসলেই ৫২'র সেই রক্তিম পুষ্পাঞ্জলির কথা মনে পড়ে। কিন্তু এই ভাষার জন্যই যে আরেকটা বৃহৎ আন্দোলন হয়ে গিয়েছিল তার খবর কেউ রাখেনা। ইতিহাসের খাতাতেও এই আন্দোলন চিরকাল ব্রাত্য।
[justify]তিনি রবীন্দ্রনাথের কে ছিলেন? কি ছিলেন প্রকৃত অর্থে? সম্পর্ক, দ্বন্দ্ব, মিল, অমিল, কথা, টানাপোড়েন এসব নিয়ে বাংলা সাহিত্য অনেক অনেক আলোচনা করেছে। সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত বিশ্লেষণ এবং বিন্যাস অব্যাহত। সেই তর্ক করার ইচ্ছে আমার নেই কিংবা বৃহৎ অর্থে বলতে গেলে সেই তর্কের জন্য যে জ্ঞান দরকার সেইরকম বোদ্ধা আমি নই।
হয়তো একদিন স্বপ্ন সোনালী ফসল কুড়াবে। হয়তো একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখা যাবে বদলে গেছে আকাশ রঙ কিংবা সভ্যতার ইতিহাসের প্রচ্ছদ। হয়তো ততদিন স্বপ্ন দেখতেই হবে। হয়তো একদিন আমিও বদলে যেতে পারি। হয়তো আমিও একদিন অকৃতজ্ঞ হতে পারি। হয়তো একদিন বহির্বিশ্বের খোঁজে নাবিক হতে পারি। হয়তো একদিন কলম্বাসকে থামিয়ে দিতে পারি। হয়তো একদিন চোখের জল শুকিয়ে দিতে পারি। হয়তো একদিন নিউট্রিনোকে শাসন করতে পারি। হয়তো আমিও একদিন
হারিয়ে যাওয়া পাখিরা হয়তো আর এই পোড়া শহরে ফিয়ে আসবেনা। হয়তো একাধিক নিমজ্জিত সরলতার অন্তরালে হারিয়ে যাবে সময়ের ব্যাথা। ঋতুর মুগ্ধতা দেখে যাওয়ার ইচ্ছে নিয়ে কেটে যাবে আরেকটা অক্লান্ত শৈশবের সকাল। একদিন ছিল হারানো গুঞ্জন, একদিন ছিল লালিত বিদায়ের মন্দ বাতাস। সেই স্রোত আজ পলাতক। আকাশের দিকে তাকাই, হয়তো। মুগ্ধ কিংবা সংক্ষিপ্ত আলাপনে নিঝুম একটা স্মৃতি মেদুরতা ছেয়ে থাকে হেঁয়ালিতেও টের পাই।
মিথ্যে কথা বলব না। স্বীকার করছি আমিও একসময় নিজেকে হিন্দু মনে করতাম! এবং হিন্দুধর্মাচার পালনও করতাম! সেই সময়ের কথা বলছি যখন আমি সদ্য কিশোর। এগুলি পরিবারতন্ত্রের দ্বারাই আমাদের মাঝে গেঁথে দেওয়া হয়। আজ জীবনের কিছু বছর পেছনে ফেলে এসে একটা জিনিষ বারবার ধাক্কা দেয় – যে সংস্কৃতি নিজের আচরণে সভ্যতাকে পর্যন্ত কলঙ্কিত করতে পারে তাকে ধারণ করা কী অমানবিকতার নামান্তর নয়?
কি দিয়ে পরিচয়টা শুরু করব। গায়ক, গীতিকার, নাকি অভিনেতা, নাকি বেতার সাংবাদিক, নাকি গদ্যকার, নাকি একজন সাংসদ? মনে হয় প্রথম দুটি বাদ দিয়ে তিনি নিজেকে আর কিছুই বলতে পছন্দ করেন না। আর এই দুটি মিলে নিজেকে তিনি গানের কারিগর বলতে পছন্দ করেন কিংবা বলেন-‘আমি গান বাজনার লোক’ কিংবা ‘নাগরিক কবিয়াল’ কিংবা ‘সঙ্গীতের গোলাম’ যিনি শুধু ‘গানের ধর্ম’ পালন করেন।
প্রথম দিনের পর। চার তারিখ রাতে ফিরে গিয়েই ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের দিন অনেক কাজ আছে। সারাদিনের ক্লান্তি এবং প্রসন্ন মন নিয়ে ডুবে গেলাম। পাঁচ তারিখ সকালে উঠেই অনেক ছোটাছুটি করতে হল। কারণ চার তারিখ প্রায় চার মাস পর আগরতলায় যাওয়ার ফলে অনেক পরিচিত স্বজনরা বলছিল পরের দিন যাতে ওদের ওখানে যাই। তবে সবার কথা রাখতে পারিনি!