চাচামিয়া

কনফুসিয়াস এর ছবি
লিখেছেন কনফুসিয়াস (তারিখ: শনি, ০৬/১২/২০০৮ - ৭:৩৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি সোফার এক কোনায় পায়ের উপর পা তুলে আরেকটু আরাম করে বসে গলা উঁচিয়ে বললাম, চাচামিয়া, শেখ মুজিবরে নিয়াও কিছু বলেন, ওনারে আপনের কেমুন মনে হয়?

চাচা একটা গলা খাঁকারি দিলেন, তারপর প্রায় অদৃশ্য কোন একটা জায়গা থেকে একদম জুয়েল আইচের স্টাইলে একটা পান বের করলেন। তারপর শূন্যে সপাং সপাং খানিক্ষণ ঝেড়ে মুছে, পুরাই রজনীকান্ত স্টাইলে সেটা মুখে চালান করে দিলেন। পুরো পরিবেশটাই এমন সিনেমাময় যে, খানিকটা কান পাতলেই আমি ব্যাকগ্রাউন্ডে কোথাও দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার ধিড়িম ধিড়িম বাজনা শুনতে পাচ্ছিলাম।

চাচামিয়ার গলা আরও কয়েকবার শব্দ করে উঠলো। আমি সোফায় পা বদলে বসলাম। আগ্রহে বেশ খানিকটা সামনে ঝুঁকে আছি, কি বলবেন শোনার অপেক্ষায়।

যে বাড়িতে এসেছি, আমাদের পরিচিত এক বাংলাদেশীর বাড়ি সেটা, কিবরিয়া ভাই-র। সদ্য পুত্রসন্তানের পিতা হয়েছেন। এই আনন্দে কিবরিয়া ভাই আশপাশের অনেককেই নিমন্ত্রণ করেছেন। যাবো না যাবো না ভেবেও শেষমেষ হাজির হলাম। এমনিতেই অসামাজিক হিসেবে অনেক দুর্নাম কামিয়ে ফেলেছি। শুনেছি আড়ালে আবডালে আমার অহংবোধ নিয়ে বেশ নাকি কানাঘুঁষা চলে। সেসব প্রাচীর অবশ্য এক দু'বারের হাজিরায় লোপাট হবার কোন সম্ভাবনা নেই, তবু আসা।

তো আসা ইস্তক একটু বেকায়দায় আছি। এই বাড়িটা একটু আজিব কিসিমের মনে হলো। বসবার ঘর আর তার ঠিক পাশের ঘরটার ঠিক মাঝবরাবর একটা পর্দা টানা। কিবরিয়া ভাবী পর্দানশীন বলে জানি। কিন্তু আসা মাত্রই আমার বউ ঐ পর্দার আড়ালে চট করে হারিয়ে গেলো, তার আর দেখা পাচ্ছি না। এরকম পরিস্থিতিতে আমরা পাশাপাশি দুই রুমে বসেও এসএমএস চালাচালি করি, আজ চাচামিয়ার কথার তোড়ে সেটাও হচ্ছে না।
বসার ঘুরে ঢুকেই সামনে প্রমাণ আকৃতির একটা বুকশেল্ফ দেখে মনে ভরে গিয়েছিলো। কাছে যাবার উপায় নেই, দুর থেকে সেখানে জরির কাজ ওয়ালা কিছু বইয়ের ঝিলিক দেখতে পাচ্ছিলাম। লোকেদের ভিড় টিড় এড়িয়ে এক ফাঁকে কাছে গিয়ে দেখি, আঠারো খন্ড মওদুদী সমগ্র সেগুলো। মুখটা বিস্বাদ হয়ে গেলো সাথে সাথেই, এ তো একেবারে ডেরায় এসে পড়লাম দেখি! দুইবার চেয়ে নিয়ে পানি খেয়েছি, মুখের তেতো ভাব কমেনি তাতে একটুও, পানিতে কিছু মেশানো ছিলো কি না বসে বসে তাই ভাবছি।

তার মাঝে দেখা পেলাম এই চাচামিয়ার। ইনি কিবরিয়া ভাইয়ের বাবা। দেশ থেকে সদ্যই এসেছেন নাতিকে দেখতে, সাথে চাচীও আছেন। খানিক এদিক ওদিক তাকিয়ে আর কাউকে চেনা-জানা পেলাম না। তাই শেষমেষ কি বুঝে চাচামিয়ার ঘাড়েই চাপলাম।

আলাপ চালাতে একটু সমস্যা হচ্ছিলো অবশ্য। উনি কানে বেশ খাটো। গলা চড়িয়ে চড়িয়ে কথা বলতে হয়। দুয়েকটা শব্দ দুম করে চেঁচিয়ে হয়তো বলে ফেলা যায়। কিন্তু পুরো একটা বাক্য এরকম উঁচু স্কেলে শেষ করে আনাটা বেশ কসরতের কাজ। আমি গান টান গাই না, গলাও সাধি না, তাই বিপাকে পড়েছি।

চাচামিয়াকে জিজ্ঞেস করলাম, বৈদেশ কেমন লাগে চাচা?
সেই শুরু। চাচা এইবার ঠিক উপস্থিত বক্তৃতার বক্তার মত অদৃশ্য একটা মাইক্রোফোন ঠিক করে নিলেন। আমি খেয়াল করে দেখলাম, তাঁর সবকিছুতেই বেশ একটা স্টাইল আছে। লুংগি পড়া থেকে গলায় মাফলার জড়ানো বা কোন কথা বলার আগে মাথা পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রী বাঁকিয়ে খানিকটা ধ্যান করে নেয়া, সবকিছু মিলিয়ে বেশ একটা বলিউড বলিউড ভাব। তিনি হড়বড় করে বললেন, এই দেশটা বাবা বেশ ভাল। ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব আছে চারিদিকে। জন-মানু(ষ) কম, তাই বেশ আরাম লাগে। বাংলাদেশের মত ভিড় ভাট্টা নাই। দেশে যেরকম উঁচা উঁচা বিল্টিং, আর অনেক অনেক মানু, এইরকম তো এইখানে না, বোঝলেন না?
আমি বুঝলাম।
কানের ব্যাপারটা শুরুতে ধরতে পারিনি। চাচাকে পান সাজিয়ে দিতে এসে চাচী-ই হঠাৎ করে বললেন, বাবাজী, কালা মানুষ, একটু জোরে বলো ওনারে।
এইরকম অবলীলায় কাউকে কালা ডাকতে শুনিনি আগে, আমি একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম।

কেমন করে কানের এই সমস্যা, এই নিয়েও উনি না জিজ্ঞেস করতেই বলে দিলেন। এই ঘটনা বেশ ইন্টারেস্টিং। তখন যুদ্ধের সময়। চাচামিয়ার বাড়ি সীমান্তের পাশেই কোথাও। কোন এক সকালে উনি খেজুর গাছে উঠেছিলেন রসের হাঁড়ি বদল করতে। হঠাৎ ভারত থেকে উড়ে এলো এক বিমান। একেবারে ভোমরা-ঘুড়ির মতন শব্দ করে। মাথার একদম বিশ হাত উপর দিয়ে চলে গেলো সেই বিশ হাত লম্বা বিমান। আর সেই বিমানের শব্দে চাচামিয়ার কানে তালা লেগে গেলো, সেটা আজও খুলে নাই।

আমার বেশ খারাপ লাগলো শুনে। যুদ্ধের কথা জিজ্ঞেস করলাম, চাচামিয়া, কিছু "ইয়াদ" আছে আপনার?
এইবার মনে হয় চাচামিয়ারে গল্পের মুডে পেলো। "তা আছে না আবার?" বলে শুরু করতেই থেমে যেতে হলো। নতুন মানুষ এলেন। তাদের সাথে সালাম বিনিময় হলো। চাচামিয়া নতুন গল্পে মজে গেলেন।
হুট করে নির্বাচন প্রসংগ এলো। বললাম, চাচা, কি মনে হয়, কে যাবে এইবার?
চাচা একবার চোখ বুজে কি যেন ভাবলেন, সম্ভবত বক্তব্য গুছিয়ে আনলেন একটু। তারপর হঠাৎ করে বললেন, জিয়ার ছেলেরাতো ভাল না বাবাজী। জিয়ার কথা চিন্তা করেন, উনি মারা গেলেন। ওনার বাম পকেটে পাওয়া গেলো তিন টাকা, ডান পকেটে পাওয়া গেলো কুরান শরীফ...। কিন্তু তাঁর ছেলেরা...।
আমার পেটে একটু মোচড় লাগে। এই ব্যাপারগুলা কোন বাংলাদেশের ইতিহাস বা কোন জিয়াউর রহমানের কথা ইনি বলছেন ঠিক ধরতে পারলাম না। তবে, বুঝতে পারছিলাম, উনার পাল্লা শেষমেষ দাঁড়িপাল্লার দিকে টানবে।

এর মাঝে দুয়েকবার মাঝের পর্দা কেঁপে ওঠে। আমি চাচামিয়ার তীব্র দৃষ্টি এড়িয়ে তার ফাঁকে ফোকরে উঁকি মারি, যদি আমার বউটারে এক নজর দেখতে পাওয়া যায়।
তার খানিক পরেই কোন একজন ভাবী বেরিয়ে আসেন, মাত্রই অফিস থেকে ফিরেছেন তিনি বোঝা গেলো, কাজের পোশাক পরনে। এইভাবেই নতুন বাবু দেখতে চলে এসেছেন। চাচামিয়ার কাছ থেকে বিদায় নিতে আসলেন, চাচামিয়া চশমাটা হাতে নিয়ে কাঁচ দুটো একটু মুছলেন। তার অবিকল সিনেমার জাজদের মত গম্ভীর গলায় বললেন, মা জননী, আমরা মুসলমানের জাত, আমাদের কাপড় চোপরে যদি সেইটার ছাপ না থাকে কেমুন হয় বলেন? আপনে কিছু মনে নিয়েন না, আমি বুড়া মানু, আপনার ভাল-র জন্যেই বলছি, একটু ঢোলাঢালা কাপড় পরবেন।
ভাবী প্রায় মাটির সাথে মিশে গেলেন। আমি বৈদ্যুতিক শক খাওয়ার মত করে বেকুব হয়ে বসে রইলাম। ভাবী মাথা নেড়ে খুব দ্রুত বিদায় নিলেন। চাচামিয়ার নজরের জোর দেখে আমি চমৎকৃত হবো কি না বুঝলাম না!

আমি তখুনি, সোফায় পা বদলে বউয়ের জন্যে অপেক্ষার সময়টা কাটিয়ে দিতে বললাম, চাচামিয়া, শেখ মুজিবের কথা বলেন, উনারে আপনের কেমুন মনে হয়?

চাচামিয়া এইবার সাধু-সন্ন্যাসীদের মতন পাক্কা বিশ সেকেন্ড চুপ থাকেন। তারপরে বলেন, তার আগে একটা গল্প বলি বাবাজী। ফেরাউন আর তার বন্ধু গেছে এক রাজ্যে ঘুরতে, গিয়া দ্যাখে, সেইখানে সব জিনিসের দাম এক টাকা। কলার দামও এক, কাঁঠালের দামও এক। আবার ইলিশ মাছের দামও এক, কৈ মাছের দামও এক টাকা....।
আমি আবারও মাথা চুলকালাম। এইটা ফেরাউনের গল্প কেমনে হইলো? এটাতো আমাদের জসীমউদ্দীনের সেই "মুড়ি মুড়কির এক দর" এর গল্প। এই গল্পের ফেরাউন ভার্সন তো শুনি নাই।
চাচামিয়া ততক্ষণে বলে চলেছেন, তা বোঝলেন বাবাজী, তো মুজিব হইলো গিয়া ধরেন এই ফেরাউনের মতন...।

আমার তক্ষুনি একটা গায়েবী ফোন এলো। খুব জরুরী দরকারী ফোন। রিংটোনের বাজনা ছাড়াই আমি সেই ফোন ধরে অন্যপ্রান্তের কারও সাথে ব্যস্ত হয়ে কথা বললাম। তারপর অতি দ্রুত সেই পুলসিরাতের মতন কাঁপতে থাকা পর্দার পাশে দাঁড়িয়ে বেশ কবার হাঁকাহাঁকি করে আমার বউকে বের করে আনলাম। ওর হাত ধরে কানে কানে ফিসফিস করে বললাম, চল, ভাগি।
বউ অবাক, হলো কী?
সিঁড়ি বেয়ে ছুটে নামতে নামতে আমি হাঁপানো গলায় বললাম, তেমন কিছু না, এই মাত্র বাংলাদেশের ইতিহাসকে নতুন করে লেখা হবার হাত থেকে বাঁচালাম!

----------------
জনগুরুত্বপূর্ণ ডিসক্লেইমারঃ উপরে যাহা পড়িলেন, তার পুরোটাই চাপাবাজি। জীবিত বা প্রাক্তন-জীবিত কাহারো সাথে উক্ত ঘটনার কোনই মিল নাই। কেহ মিল খুঁজিয়া পাইলে, তাহা নিছকই কাকতাল বলিয়া জানিবেন।


মন্তব্য

সবজান্তা এর ছবি

হা হা... মজা পাইলাম। তয় আমি কিন্তু মুজিবরে কেন ফেরাউন বলা হইলো সেই মাজেজা টের পাইলাম না... বুঝায়া দেন...


অলমিতি বিস্তারেণ

কনফুসিয়াস এর ছবি

আপনি তাহলে মুড়ি-মুড়কির এক দরের গল্পোটা জানেন না?
আচ্ছা, আমি আপনাকে খুব শিঘ্রী গল্পটা জোগাড় করে দেবো। না পেলে নিজেই স্মৃতি থেকে লিখে ফেলবো।

-----------------------------------
মানুষ এত বড় যে ,
আপনি যদি 'মানুষ ' শব্দটি একবার উচ্চারণ করেন
যদি অন্তর থেকে করেন উচ্চারণ
যদি বোঝেন এবং উচ্চারণ করেন ' মানুষ' -
তো আপনি কাঁদবেন!

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

সবজান্তা এর ছবি

একটা জানতাম যে একটা প্রবচনের মত যে, যে দেশে মুড়ি মুড়কির এক দর সেখানে থাকা ঠিক না ... এটা ?


অলমিতি বিস্তারেণ

অভ্রনীল এর ছবি

আমিও মজা পাইলাম। তয় চাচামিয়ার দৃষ্টি আসলেই প্রশংসার যোগ্য!! দেঁতো হাসি

_______________

একটি ছাগলের দুটি কান,
তুই আমার জানের জান।

হিমু এর ছবি

চাচামিয়া কিঞ্চিৎ মার্জারস্বভাব মনে হচ্ছে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

অবনীল এর ছবি

মহিলাগন পড়ার আগে ঢিলাঢালা জামা পড়ে নিয়েন। নাইলে বাকায়দা চিপায় পড়ার আশঙ্কা আছে। চোখ টিপি

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

ধুসর গোধূলি এর ছবি
স্বপ্নাহত এর ছবি

হ। ঠিক কৈসেন। বদনা হাতে দৌড়ানির নিয়ম কানুন কার কাছ থেকে শিখসে সেইটা দেখতে হবেনা ? চোখ টিপি

---------------------------------

বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বদনা হাতে নাকি মোবাইল হাতে?
আর আমার ফটুকের হাতে ঐটা বদনা না, কতোবার কমু- ঐটা লোটা! মন খারাপ
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

কনফুসিয়াস এর ছবি
অভ্রনীল এর ছবি

তয় আমরা যে নতুন ইতিহাসটা মিস করলাম! ঐটা মিস দেয়া কি উচিত হইসে? কুংফু বেরাদর আরেকটু থাকলেই তো হইত... চাচার থেইকা ইতিহাস ডাউনলোড কইরা ফেলন যাইত...

_______________

একটি ছাগলের দুটি কান,
তুই আমার জানের জান।

কনফুসিয়াস এর ছবি

নারে ভাই, আমার ড়্যাম বেশি না, প্রসেসরও স্লো, ডাউনলোডের মাঝখানে শিওর হ্যাং হয়ে যেতাম।

-----------------------------------
মানুষ এত বড় যে ,
আপনি যদি 'মানুষ ' শব্দটি একবার উচ্চারণ করেন
যদি অন্তর থেকে করেন উচ্চারণ
যদি বোঝেন এবং উচ্চারণ করেন ' মানুষ' -
তো আপনি কাঁদবেন!

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

রাকিব হাসনাত সুমন এর ছবি

হাহা হাহাহা.......... চমতকার ।

চাচামিয়ার মতো দৃষ্টি যাদের তাদের কাছে তো শেখ মুজিব ফেরাউন হবেনই.....

কনফুসিয়াস এর ছবি
স্নিগ্ধা এর ছবি

ভাই কনফুসিয়াস, আমি দরকার হলে ডিসেম্বরের এই মরণ ঠান্ডায় ভার্জিনিয়ার রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে, টাকা যোগাড় করে আপনার আর তিথির জন্য প্লেনের টিকেট পাঠাবো - যাতে অসামাজিক দূর্নাম ঘুচিয়ে, একজন 'দায়িত্ববান, সুষ্ঠু বাংলাদেশী নাগরিক' হিসেবে লোকজনকে বিরক্ত করার ইচ্ছা হলে এই মহাদেশে এসে সেটা করতে পারেন !

কিন্তু, তাও, তাওও, দয়া করে ঢালিউডি চাচামিয়া আর পর্দাদেয়া লিভিংরুম কে ...বৎ পরিত্যাগ করুন!!!!

আরেকটা কথা, আমার মতে আপনার উচিত ছিলো - চাচামিয়ার ইতিহাসের সায়েন্স ফিকসন ভার্সন ধৈর্য্য ধরে শোনা, এবং শুনে টুনে সবশেষে চোখ টোখ উলটে শুধু একটাই কথা বলা - "কস্কি মমিন !!!!" দেঁতো হাসি

স্বপ্নাহত এর ছবি

আমার মতে আপনার উচিত ছিলো - চাচামিয়ার ইতিহাসের সায়েন্স ফিকসন ভার্সন ধৈর্য্য ধরে শোনা, এবং শুনে টুনে সবশেষে চোখ টোখ উলটে শুধু একটাই কথা বলা - "কস্কি মমিন !!!!" দেঁতো হাসি

পুরা মমিন টাইপের উপদেশ। পছন্দ হৈসে!

---------------------------------

বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

মুশফিকা মুমু এর ছবি

"এই যে কনফু ভাইয়ের নেইবার ভাই দেখেন কনফু ভাই আপনারে নিয়ে কি লিখসে"
খাইছে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

আলমগীর এর ছবি

আণবিক বোমার ইমো তৈরি করা হইতেছে।
সাবধান!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

গল্পটা এত তাড়াতাড়ি শেষ করে দিলেন! আপনার লেখা সত্যিই লেখকদের মত।

কনফুসিয়াস এর ছবি

আপনি বেশ নিষ্ঠুর বোঝা গেলো। এইখানে গল্পটা শেষ না করে দিলে জিয়া আর মুজিবের কী অবস্থা হতো ভাবেন দেখি!

-----------------------------------
মানুষ এত বড় যে ,
আপনি যদি 'মানুষ ' শব্দটি একবার উচ্চারণ করেন
যদি অন্তর থেকে করেন উচ্চারণ
যদি বোঝেন এবং উচ্চারণ করেন ' মানুষ' -
তো আপনি কাঁদবেন!

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সেটা তো ভাবিনি...আমি একটু আত্নকেন্দ্রিক তবে নিষ্ঠুর না হাসি

সৌরভ এর ছবি

সবাই হালকা মন্তব্য কইরা ভাগতেসে। কিন্তুক আমি এই পোস্টে একটা প্রশ্ন রাখতে চাই। আমি একজন সুহৃদের কাছে এইরকম কিছু প্রশ্নের শিকার হয়েছি।

এইরকম মানুষগুলোকে এড়িয়ে চলে আমরা কি শেষ পর্যন্ত নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারছি না? ওনার পুত্র কিংবা পৌত্রদের ঘরে হয়তো বিশ বছর পরেও শোভা পাবে জনাব মওদুদীর মন্ত্র লেখা পুস্তকাদি।

আর ভ্রান্ত মৌলবাদ এর দায় বয়ে বেড়াতে হবে পরের প্রজন্মকেও।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

কনফুসিয়াস এর ছবি

সৌরভ,
তোমার সুহৃদ তোমার কাছ থেকে কী উত্তর পাইছিলো বলো তো? আমারও জানা দরকার।

আমার কাছে তেমন কোন উত্তর নাই। আশি বছর বয়েসী মানুষকে কোন যাদুমন্ত্রবলে তাঁর এতদিনের আদর্শ বদলে ফেলতে সমর্থ হবো, আমার তেমন কোন ক্যারিশমা নাই। আর, আলাপের সুযোগ যেখানে আছে, সেখানে হয়তো আমি আলাপ করি, যুক্তি আনি। কিন্তু যেখানে নাই, সেখানে তেমন কিছু করার নাই, এড়িয়ে চলা ছাড়া।

-----------------------------------
মানুষ এত বড় যে ,
আপনি যদি 'মানুষ ' শব্দটি একবার উচ্চারণ করেন
যদি অন্তর থেকে করেন উচ্চারণ
যদি বোঝেন এবং উচ্চারণ করেন ' মানুষ' -
তো আপনি কাঁদবেন!

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

নজমুল আলবাব এর ছবি

হয়নাই।
বুইড়া হউক আর জাউড়াই হোক ধরে আচ্ছা মোমনি দেয়ার পক্ষে আমি। বউ নিয়া চইলা আসার পক্ষে না। এই পিছলাগুলারে একটু ট্রিটমেন্ট দেয়ার পক্ষে।

একবার এক বুইড়ার কবলে পড়ছিলাম। সে আমারে ব্যাপক উপদেশ দিতেছে, ইতিহাস শেখাচ্ছে। আর আমি তার টেবিলে রাখা ডাইজেস্ট পত্রিকার মলাটে গোলমেআজমের ছবির কপালে তুই রাজাকার লিখলাম। এরপরে ভেতরে গিয়ে দেখি গোলমালের জীবনি দেয়া, তাতে আবার ১৯৭১ বলে কোন সালের অস্তিত্য নাই। ১৯৭০ এর পর একটা প্রশ্নবোধক দিয়ে লিখলাম, বরাহ নন্দন সে সময় কোথায় ছিল? সব কিছু করতে সময় লেগেছে ১৫/২০ মিনিট। কাজটা করেছি সন্ধ্যার দিকে। সে টের পেয়েছে পরদিন। তারপরে সেকি তড়পানিরে ভাই। আমারে সেই বাড়ির পিচ্চি ফোন দিয়ে বলে, তুমি কি কইরা গেছ? আব্বায় তোমারে খুঁজতাছে। চোখ টিপি

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

কনফুসিয়াস এর ছবি

হা হা হা! অপু ভাই, কঠিন মজা পাইলাম।
এইবারে হয় নাই, কিন্তু আপনার কাছাকাছি মজার গল্প আমার ভান্ডারেও একটা আছে, ফাঁকতালে বলবোনে, কোন এক দিন।

-----------------------------------
মানুষ এত বড় যে ,
আপনি যদি 'মানুষ ' শব্দটি একবার উচ্চারণ করেন
যদি অন্তর থেকে করেন উচ্চারণ
যদি বোঝেন এবং উচ্চারণ করেন ' মানুষ' -
তো আপনি কাঁদবেন!

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

রানা মেহের এর ছবি

চাচামিয়ার উদ্ভাবনী ক্ষমতার প্রশংসা।

সৌরভ এবং অপু

ঠিক। সাইজ করা উচিত।
তবে সবসময় বোধহয় করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা।
কনফুসিয়াসের লেখা পড়ে যা মনে হচ্ছে
সেই পরিস্থিতিতে এর থেকে বেশী করা সম্ভব ছিল না
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সুমন চৌধুরী এর ছবি

যাক অন্তত পলাইয়া বাঁচতারছো তাইলে..দেঁতো হাসি



অজ্ঞাতবাস

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আমিও বদ্দার সাথে একমত।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

চাচামিয়াকে নেমন্তন্ন জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই, ভিডিও, সিডি, পোস্টার, পত্র-পত্রিকা ড্রয়িংরুমে জড়ো করুন। তারপর তাঁর উপস্থিতিতে সার্বক্ষণিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের গান বা ভিডিও চালান। কী প্রতিক্রিয়া হয় তাঁর, জানতে ইচ্ছে করছে।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

কনফুসিয়াস এর ছবি

হাসি
সন্ন্যাসীদা,
করতে পারলে ভাল হতো। কিন্তু আমি আপাতত "তফাত গেলাম" কর্মসূচী হাতে নিয়েছি। দেঁতো হাসি

-----------------------------------
মানুষ এত বড় যে ,
আপনি যদি 'মানুষ ' শব্দটি একবার উচ্চারণ করেন
যদি অন্তর থেকে করেন উচ্চারণ
যদি বোঝেন এবং উচ্চারণ করেন ' মানুষ' -
তো আপনি কাঁদবেন!

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

দময়ন্তী এর ছবি

বাপরে! এইসবক্ষেত্রে না পালালে নিজের ব্লাডপ্রেশার বেড়েটেড়ে একশা হয়৷
-------------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

দ্রোহী এর ছবি

কস কী কনফু????


কী ব্লগার? ডরাইলা?

শিক্ষানবিস এর ছবি

আপনি তো "তফাত গেলাম" কর্মসূচীর কথা বলে দিলেন।
কিন্তু আমার কি হবে? পুরো পরিবার আর পূর্বপুরুষদের সবাই যদি চাচামিয়ার মতো উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন হয় তখন? তফাত যাব কিভাবে?

তফাত যাওয়ার উপায় নাই। তাই সন্ন্যাসীদার পলিসি হাতে নিতে হবে ভাবছি। আমি অবশ্য আগে থেকেই এইরকম কিছু একটা করার চেষ্টায় আছি। কিন্তু সরাসরি কিছু করা যায় না। আমি "তাহাদের" আদর্শ লালন করি না, এটাই এখনও বুঝাতে পারি নাই। বোঝানো বেশ কঠিন। তারপরও বাসায় মুক্তিযুদ্ধের কিছু বই জড়ো করে ফেলেছি। দেখা যাক কতদিনে কি হয়!

তারেক ভাই, আপনার একটা কথা ঠিক। কৈশোর থেকে একটা চিন্তা লালন করতে করতে যারা চাচামিয়াদের মতো বৃদ্ধ হয়েছে তাদের সে চিন্তায় পরিবর্তন আনা প্রায় অসম্ভব। তাই, তাদের বংশধরেরা যে তাদের সে আদর্শ লালন করে না, সেটা বোঝাতে পারলেই আমি খুশি।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

শুধুই কাক, শুধুই তাল... সমস্যা একটাই, ইদানিং কাক-তাল দুটাই অনেক বেড়ে গেছে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- এইবার বিএনপি-রাজাকার জোট ক্ষমতায় গেলে মওদূদী চুদির্ভাইর চটিগুলা ইস্কুলের বাচ্চাগো লাইগা পাঠ্য বানায়া ছাড়বো। তখন আসল ঠেলা বুঝবো বাঙালী!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

নিঝুম এর ছবি

আফসোস...প্লেনটা চাচা মিয়ার কানটা ই কেবল কালা করে দিলো, মুখটা চোখে পড়ল না...
--------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

রায়হান আবীর এর ছবি

এরকম পরিস্থিতিতে আমরা পাশাপাশি দুই রুমে বসেও এসএমএস চালাচালি করি

আপনারা পারেনও মিয়া... হাসি

বাপ মার কারণে আগে বিএনপির প্রতি সামান্য ইনফুয়েন্সড ছিলাম- গত একমাস আগে থেকে সিদ্ধান্ত নিছি- ওখন থেকে বিএনপিরে ঘিন্না করুম। সেইটা জিয়া স্যারের পোলার কারণে যতটুকু- তারচেয়ে তার কারণে বেশী। বদ একটা।
=============================

তারেক এর ছবি

চাচামিয়া তো জটিল। পালাইয়া ভালো করছেন।
নজমুল ভাইয়ের টা ও একটা ফাইভ স্টার কাজ হইছে হো হো হো
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।