Warning: Creating default object from empty value in theme_img_assist_inline() (line 1488 of /var/www/sachalayatan/s6/sites/all/modules/img_assist/img_assist.module).

জাতি-ইতিহাসেরও এরকম নিলাম কেউ কখনও দেখেছে কি? না শুনেছে?

মাসুদা ভাট্টি এর ছবি
লিখেছেন মাসুদা ভাট্টি (তারিখ: সোম, ২২/০২/২০১০ - ১০:২৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ভাষা আন্দোলন কি কেবলমাত্র ৩০ মিনিটের এক তুচ্ছ ঘটনা? নাকি এর পেছনে রয়েছে প্রবঞ্চনার ইতিহাস? ৪৭-এ দেশভাগের পর পরই যথন পশ্চিম পাকিস্তানের সুর পাল্টে যায় তখন পূর্ব বাংলায়্ও “ইয়ে আজাদি ঝুটা হ্যায়” শ্লোগান ওঠে। সবচেয়ে বড় কথা হলো হুজুগে বাঙালি যখন বুঝতে পেরেছিল যে, পাকিস্তান আন্দোলনের পুরোধা হিসেবে কাজ করেও তারা স্বাধীনতা পায়নি, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা আর ভয়ঙ্কর রক্তপাতের ওপর দিয়ে হেঁটে বাঙালি পৌঁছেছে বঞ্চনার কাছে। যে কারণে ৪৮ সালেই তাদের মুখের ভাষা বুকের ভাষা বদলে দেয়ার সমন এলো হাতে- ক্ষোভের শুরুটা আগেই ঘটেছিল, এবার তাতে বারুদ যোগ হলো মাত্র, আর বিস্ফারণ? সেতো ঊনপঞ্চাশেই শুরু হয়েছিল, নয় কি?
তাহলে কেন এখন বলা হচ্ছে, “দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিট”? একটা দীর্ঘ সময়ের ও অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনকে মাত্র ৩০ মিনিট সময় দিয়ে বেঁধে আজকের কর্পোরেট বুদ্ধিজীবীরা নতুন প্রজন্মকে কী শেখাতে চাইছেন? তারা ধূয়া তুলেছেন, নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাস তুলে ধরার। এই যদি তার নমুনা হয় তাহলে আর দেখতে হবে না! মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস হয়ে যাবে মাত্র ক’টি দিন, যদিও এই নয় মাস আসলে দীর্ঘ ২৫ বছর আন্দোলন আর সংগ্রামের ভেতর দিয়ে এগিয়ে আসা সময়ের পরিপক্ক রূপ। এমনকি এতো অল্প সময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল বলে তথাকথিত অনেক বুদ্ধিজীবীই বলেছিলেন, ভারতের সহযোগিতা না নিয়ে বাঙালিকে যদি অনন্তকাল ধরে স্বাধীনতার যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হতো তাও ভালো ছিল! আশ্চর্য আমাদের মানসিকতা, জাতীয় অর্জনকে কি করে বিসর্জন দিতে হয় তা আমাদের চেয়ে ভালো আর কেউ বোধ করি জানে না।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ কিংবা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে কোনও কর্পোরেটকে এরকম বেয়াদবি করতে দেখেছেন কি না সে বিচারের ভার আপনাদের ওপর। আমি নিশ্চিত যে, আমি যদি ভাষা আন্দোলনের মতো আমাদের জাত-ইতিহাসের সবচেয়ে কার্যকর স্ফূলিঙ্গকে নিয়ে এই কর্পোরেট ফাজলামির প্রতিবাদে কোনও লেখা লিখি তাহলে পত্রিকাগুলো বিজ্ঞাপন বন্ধের দোহাই দিয়ে তা ছাপবে না বা ছাপাতে দ্বিধা করবে। তাই এখানেই আমার প্রতিবাদ। আমি ভাষা আন্দোলনকে মাত্র ৩০ মিনিটে বেঁধে ফেলার এই অপ-রাজনীতির কূটচালের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমার ক্ষমতা এটুকুই।
মানুষ একদিনই আজকের ‘হোমো-সাপিয়েন্স’ হয়ে ওঠেনি তেমনই ৫২’র ২১শে ফেব্রুয়ারিও কেবলমাত্র ৩০ মিনিটের ঘটনার জের নয়, দীর্ঘ প্রবঞ্চনা, সংগ্রাম, আত্মত্যাগ আর আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন; মাত্র ৩০ মিনিট সময় দিয়ে তাকে বেঁধে ফেলার এই অপকৌশলকে আমাদের অবশ্যই নিন্দা জানানো উচিত।


মন্তব্য

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

প্রতিক্রিয়া পোষ্ট লেখার জন্যই সচলে ঢুকলাম কিন্তু আপনি পোষ্ট দেয়ায় আর দিলাম না কারণ আপনার বক্তব্যের সাথে আমার বক্তব্যে মিলে যায় । ধন্যবাদ ।

আমি ভাষা আন্দোলনকে মাত্র ৩০ মিনিটে বেঁধে ফেলার এই অপ-রাজনীতির কূটচালের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

আপনার সাথে প্রতিবাদে শামিল হলাম । ঐ কর্পোরেট বুদ্ধিবেশ্যাকে শত ধিক্কার । এই কর্পোরেট পত্রিকা জাস্টিস হাবিবুর রহমানকে দিয়ে ২০০৭ সালে একটি নিরপেক্ষ(!) মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখিয়েছিল যেখানে বলা আছে , ২৫ মার্চ রাত্রে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হালকা পিটুনি অভিযান চালিয়েছিল, শেখ মুজিব স্বেচছায় ধরা দিয়েছিলেন ইত্যাদি। এই শুয়রের বাচ্চা বুদ্ধিবেশ্যারাই আমাদের শেখাতে চায় মুক্তিযুদ্ধের কোনো পটভূমি নেই , আমার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে এরা ৯ মাসে বন্দী করতে চায় ।

উল্লেখ্য, মতিয়ুর রহমান তার 'দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিট’ তত্ত্ব প্রকাশ করেন ১৬ ফেব্রুয়ারী প্রথম আলোর মন্তব্য প্রতিবেদনে । তিনি বলছেন- ”সেই দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিটই নির্ধারণ করে দিয়েছিল আমাদের মহান মাতৃভাষা আর জাতির ভাগ্য, যা কিনা স্ফুলিংগ হিসেবে কাজ করেছে। সেই স্ফুলিংগ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল শহর থেকে গ্রামে, প্রতিটি জনপদে।” আসলে কি তাই ? "১৯৫২ সালের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক হত্যাকান্ডগুলি কোন দাবানল সৃষ্টি করতে না পারলেও ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র-জনতার উপর পুলিশের গুলিবর্ষণ ও হত্যার ঘটনা দাবানল সৃষ্টিকারী স্ফুলিংগের কাজ করেছিলো কারণ দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি এই সময়ের মধ্যে ব্যাপক ও গভীরভাবে পরিবর্তিত হয়েছিলো। এ প্রসঙ্গে মনে রাখা দরকার যে, কোন অত্যাচার নির্যাচতন, তা যতই নির্মম হোক, সব সময়ে দাবানল সৃষ্টিকারী স্ফুলিঙ্গের কাজ করতে পারেনা। সেটা সম্ভব হয় তখনই যখন দাবানল সৃষ্টির মতো ক্ষেত্র জনজীবনে তৈরী হয়। এই ক্ষেত্রটিই তৎকালীন পূর্ব-বাঙলায় ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির পূর্বে তৈরী হয়েগিয়েছিল এবং ঠিক সে কারণেই ছাত্র-জনতার উপর পুলিশের গুলিবর্ষণ ও হত্যাকান্ড এমন এক স্ফুলিঙ্গ হিসেবে কাজ করেছিল যা জনগণের রাজনৈতিক জীবনে প্রজ্জ্বলিত করেছিলো এক অদৃষ্টপূর্ব দাবানল।” (ভাষা, শ্রেণী ও সমাজ ,বদরুদ্দীন উমর, ১৯৮৫)

অবশ্য কর্পোরেট বুদ্ধিবেশ্যার কথায় আমি বিস্মিত নয় কিন্তু এই আয়োজনে অংশগ্রহনকারীদের নিয়ে আমার বিস্ময় জেগেছে বিশেষত ভাষা সংগ্রামী আব্দুল মতিন (ভাষা মতিন ) যিনি আটচল্লিশের আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন তিনি কি করে মতির তত্ত্বে সায় দিলেন , তিনিও কি বিক্রি হয়ে গেলেন কর্পোরেট বাজারে যিনি ছিলেন পুঁজির বিরুদ্ধে সোচ্চার কন্ঠ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

তৌফিক হাসান [অতিথি] এর ছবি

আপনার সাথে আমিও ধিক্কার জানাচ্ছি। আপনার এই লেখাটা খোমাখাতায় সবার সাথে শেয়ার করলাম।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

বায়ান্ন আর একাত্তর নিয়ে ব্যবসা বন্ধ হোক।

-------------------------------------------------------------------
স্বপ্ন নয় — শান্তি নয় — ভালোবাসা নয়,
হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা উর্দু হবে, এই ঘোষনা তো সেই আটচল্লিশের।

যারা বলে দুনিয়া কেঁপেছে বায়ান্নর ওই ত্রিশ মিনিট, তাদের কি ধারনা বাঙালী চার বছর ধরে উর্দুতে কথা বলার পর হঠাৎ একদিন ঘুম ভেঙে "আমার ঘুম ভাঙিয়ে গেল রে প্রানের কোকিলে" গান গাওয়া শুরু করেছিল?

লেখককে ধন্যবাদ বুদ্ধিবণিকদের এই প্রহসন তুলে ধরার জন্য।

-----------
"সে এক পাথর আছে কেবলি লাবণ্য ধরে"

-----------
চর্যাপদ

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌দুনিয়া কাঁপানো ত্রিশ মিনিট নাকি গতকাল শহীদ মিনারের সাজানো পুস্পস্তবক তছনছ করেছে? ঘটনা কি সত্যি?

কর্পোরেট দুনিয়া বানিজ্যের মধ্যেও শ্লোগান রাখে। ওটা নাকি সামাজিক দায়িত্বের অংশ। এটা একটা নিও জাতীয় ধারনা। দুনিয়া কাপানো ৩০ মিনিটও সেরকম একটা শ্লোগান। আমি শ্লোগানটিকে খারাপ মনে করি না। কিন্তু উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবি। কারন মিডিয়া বললেই যুগযুগের অবিচারের ইতিহাস মুছে যাবে না। কিন্তু এই নতুন শ্লোগান দিয়ে কি করতে চাইছে। কী বোঝাতে চাইছে নতুন প্রজন্মকে? নাকি কেবল কথার কথা। গ্রামীনফোন তো কথার বানিজ্য করে। এটাও তেমন একটা নাকি?

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এই প্রশ্নের উত্তর আমিও জানতে চাই।

অম্লান অভি এর ছবি

আগে আসুন সবার উন্মুক্ত মতামত পাওয়ার ব্যবস্থা করি। আর মাসুদা ভাট্টি এবং নুবুজ্জামান মানিক আপনারা- একটা সচ্ছ ধারণা দিতে পারবেন সেইসব আয়োজকদের কাছ থেকে। তারপর ক্রমাগত ধিক্কার চললে হয়তো এটা একটা নিছক অনুষ্ঠান বলে পরে জাতির কাছে মাফ চাইবে- আয়োজকরা। সেই মাফ চাওয়ার ব্যবস্থা করতে ধিক্কার অব্যহত থাক। যদি না মাফ বা গ্রহণীয় সদোত্তর না পাওয়া যায়-সেদিন হয়তো সবাই একসাথে যুদ্ধাপরাধীর মত এদের বিচারের আর ধিক্কারের আয়োজনে সামিল হব। বেশ্যা আর শুয়ারের বাচ্চার উচ্চারণে ঘৃণা ছুড়ব এক সাথে।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

সিনা এর ছবি

অদ্ভূদ! ড. আনিসুজ্জামানের মত তুখোড় বুদ্ধিজীবিকে মঞ্চে দেখে সীমাহীন ব্যথিত হয়েছি। বাঙালির শ্রেষ্ঠ সম্পদ, সর্বোচ্চ অনুভূতিকে পণ্যায়িত করার সুè কারসাজি দেখে যারা হাততালি দেয় - ধিক্কার তাদেরও। আসাদুজ্জামান নুর ভালো অভিনেতা। ব্যস! আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে তাঁর অভিনয় দতাকে স্মরণ করি। তাই বলে ’মতি’ ভাঁড়ের সাথে হাত মিলিয়ে ’গ্রামীণ ফোন-প্রথম আলো’ প্রমোট করার বিজ্ঞাপনে খ্যামটা নেচে বাঙালির অনুভূতি পদদলিত করার অধিকার কোথায় পেলেন তিনি? মতি মিয়া পাকা ব্যবসায়ি, নুরও কি সে পথ ধরেছেন! আমরা শংকিত। আসলেই অসহায় বোধ করছি।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

এদের চিনে রাখা জরুরি তাই ছবিটি (সূত্রঃ প্রথম আলো ) দিলামঃ

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

প্রত্যেকটাই এক একটা শুঁয়োর।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

হ ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

খুবই অবাক হলাম আপনিও এদের শুয়োর বলায় সায় দিলেন দেখে।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি, মাতৃভাষার অধিকার রক্ষায় সেদিনের সেই অংশগ্রহণকারী জীবন্ত কিংবদন্তিরা । রোববার গ্রামীণফোন ও প্রথম আলোর উদ্যোগে আয়োজিত ‘দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিট’ অনুষ্ঠানে ভাষাসৈনিকেরা
ছবি: মনিরুল আলম
সূত্র প্রথম আলো ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

আপনি অবাক হয়েছেন জেনে আমিও অ্যাঁঅ্যাঁঅ্যাঁঅ্যাঁ

এরা যদি "ভাষা আন্দোলনকে মাত্র ৩০ মিনিটে বেঁধে ফেলার" কর্পোরেট ধান্দা বা অপ-রাজনীতির কূটচালের আয়োজনে স্বেচ্ছায় যোগ দিয়ে থাকেন তবে তাদের বলাইদা শুয়রের বাচ্চা বললে আপনার আপত্তির পেছনে যুক্তি কি ? এরা মহান ভাষাসৈনিক ,জীবন্ত কিংবদন্তি-সো হোয়াট ? ভাষাসৈনিকরা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস রেপ করার অধিকার রাখেন -এই বিধান কোথায় আছে ? জিয়াউর রহমান তো মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর অধিনায়ক ছিলেন তাই বলে আমরা কি তার রাজাকার পুনর্বাসন নীতি ও মুক্তিযোদ্ধা আর্মী নিধনের সমালোচনা করি না ?

আমি মনে করি , ইতিহাসের কোন ব্যক্তি বা ঘটনার বিচার করতে হয় ওই সময়কালে / পটভুমিতে ব্যক্তি বা ঘটনার ভূমিকা কি ছিল তা’ দিয়ে । অতীত বা ভবিষ্যতের কোন ঘটনায় ব্যক্তির ভূমিকা দ্বারা বায়াসড না হয়ে ।

এদের শুয়রের বাচ্চা বলা হয়েছে তাদের সাম্প্রতিক কর্মের (দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিটে অংশ নেয়া) জন্য , মহান ভাষা আন্দোলনে তাদের ভূমিকা দ্বারা বায়াসড না হয়ে ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ভালই যুক্তি আপনার। সেটা খন্ডানে আমি পারবোনা। তবে আজ তারা একটা মঞ্চে উঠেছে বলেই সন্দেহের বশবর্তী হয়ে তাদের শুয়োর এবং শুয়োরের বাচ্চা বলে গালি দিচ্ছেন (বা সায় দিচ্ছেন), সেটা ভালো লাগেনি। তাদের সাথে কথা বলেন, তাদের জিজ্ঞেস করেন, কি মনে করে তারা এটা করেছেন। আপনি ইতিহাস নিয়ে লেখালেখি করেন, তাদের কাছে আপনার এ্যক্সেস তেমন কঠিন হওয়ার কথা নয়।

শহীদ মিনারে রাওডিজম না হলে (কিংবা এই অনুষ্ঠানটা তার একদিন পরে হলে) কয়জন আজ এসব যুক্তির ফুলঝুরি নিয়ে আসতো তা আমার জানা আছে। এর আগেও এগুলা হয়েছে। কোন পত্রিকা টু শব্দ করেনি, কোন ব্লগেও কেউ লেখেনি!

এধরনের কাউকে চট করে শুয়োর বা শুয়োরের বাচ্চা বলাতেই আমার আপত্তি। আমি মনে করি সচলায়তনের প্ল্যাটফর্মে এটা বিনা প্রতিবাদে ছেড়ে দেয়া উচিত নয়। কাউকে না কাউকে এর প্রতিবাদ করা উচিত, সেটাই করেছি। আমি ঠিক করেছি না আপনি ঠিক করেছেন সেটা ভবিষ্যতই বলবে।

ধন্যবাদ।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

বস, এদেরকে শুঁয়োর বলার কারণ মানিক ভাইয়ের মন্তব্যেই বলা আছে। আমি এমনকি এই ছবিতে কে কে আছে, এটা আলাদা করে দেখারও প্রয়োজন বোধ করি নাই। কারণ, আমি জামায়াত শিবির বাদে অন্য কারো সার্টিফিকেট দেখে কাজের বিচার করি না। ৩০ মিনিটে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখার অংশ যে-ই হবে, তার আগের ভূমিকা যা-ই থাক না কেন, সে নিশ্চিতভাবেই আমাদের গৌরবময় ইতিহাসকে ধর্ষণের সহযোগী। 'কেন' সে সেই ধর্ষণে অংশ নিলো, আলু বা জিপির কাছে বিক্রি হলো নাকি মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে তাকে ওখানে নিয়ে আসা হলো, সে কৈফিয়ত শোনার কোনো দরকার আছে বলে মনে হয় না।

আরেকটা কথা, এখানে 'সন্দেহ'-এর কিছু নাই।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বলাই'দা, "ব্লগ দিবস" নামের ভাঁড়ামোতে একটা ব্লগের হয়ে কেক কেটে ব্লগ দিবসের সূচনা করেছেন ড. জাফর ইকবাল। ড. ইকবালকে এক্ষেত্রে আপনার কী মনে হয়? শুয়োর না ছাগু?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ব্লগদিবস আর শহীদ দিবসের ইতিহাসবিকৃতি এক জিনিস না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- এক জিনিষ বলছি না।

ব্লগের ব্যাপারে মুহম্মদ জাফর ইকবাল অ থেকে ঁ সব জানেন, সেই তিনিও ব্লগারদের দ্বিধান্বিত থেকে ত্রিধান্বিত করায় শামিল হলেন। এই শামিল হওয়াটাকে কীভাবে দেখা যেতে পারে তাই জিজ্ঞেস করলাম।

ইতিহাসবিকৃতির কথা মাথায় আনার আগে আমাদের বোধ'য় ভাষা সৈনিকদের বয়সটা হিসেবে রাখা উচিৎ। তাঁদের আবেগটা বুঝতে চাওয়ার চেষ্টা করা উচিৎ। তাঁদের সবার ব্যাপারে, সবকিছুর ব্যাপারে অ থেকে ঁ জানাটা নাও থাকতে পারে। 'সবাই' যে সেখানে লাড্ডু রহমানের আহ্বানে ৩০ মিনিটে হাতিঘোড়া মারন ঘটাইতে গেছে, সেই ধারণা থেকেও বোধ'য় বাইরে আসা উচিৎ।

সংখ্যায় হয়তো খুব কম, কিন্তু সেখানে বয়সের ভারে নুব্জ দুয়েকজন অবশ্যই নিজের আবেগ থেকেই গিয়ে থাকবেন। তারা হয়তো ঘোৎ ঘোৎ শব্দ আড়াল করা, গায়ে মানুষের চামরা পরা শুয়োরকে না চিনেই তাদের সাথে উঠে পড়েছেন মঞ্চে, কেবল আবেগ থেকেই। এই আবেগী মানুষ কয়জনকে লাড্ডু রহমানের মতো যশবিলাসী আর কর্পোরেটপ্রেমীদের সাথে গুলিয়ে ফেলা মনে হয় না ঠিক হচ্ছে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

এভাবে স্কেইপরুট দিলে পরোবলেম। তখন রাজাকাররাও মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যাবে। চোখের সামনে তান্ডব দেখার পরেও ওই অনুষ্ঠানে 'না জেনে, না চিনে' যাওয়ার জন্য কাউকে দুঃখিত হতে দেখা গেছে নাকি, এই ইনফো পাওয়া যায় নাই।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- কেউ দুঃখিত হয়েছিলো কিনা সেটা জানার উপায়টা আসলে কী, যেখানে কোনো মিডিয়াতেই খবরটা আসে নি! ইনফোটা পাওয়া যাবে কার মাধ্যমে বলাই'দা?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

আলমগীর এর ছবি

মানিক ভাই
কিছু মনে না নিলে আমি একটু নাক গলাই।

১. প্রশংসা, খ্যাতি, টাকা আশা করে না এমন কোন মানুষ নেই। স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাও প্রশংসা চান। যে মানুষগুলো সেখানে গিয়েছে তারা একটু প্রশংসা (হয়ত কিছু টাকাও) পাবার জন্যই গিয়েছে।

২. আমাদের সংস্কৃতি হচ্ছে পূজার সংস্কৃতি। মানী লোককে আমরা পূজা করি, মানী লোকেরা আমাদের কাছে পূজা আশা করেন। একজনের কাছে না পেলে আরেকজনের কাছে যান।

৩. বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ব্যপকতা আর দেশের সাধারণ কৃষক/শ্রমিক ধরনের মানুষের সম্পৃক্ততা মাপলে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে কোন তুলনা হয়? আলীগ নেতারা বিএনপি আমলে পুলিশের পিটা খেলেই বলত "এ বর্বরতা ৭১কেও হার মানায়"। ব্যাপারটা অনেকটা সেরকম হয়ে গেল না? জিয়াউর রহমানকে সচলে কেউ শুয়োর বলেছে বলেও মনে পড়ে না।

৪. ভাষা সৈনিকরা একটা প্রোগ্রামে গেল বলেই কি শুয়োর হয়ে যাবেন? আমাদের বিবেচনা এত সংকীর্ণ হলে কেমনে করে হবে? একজন ড. আনিসুজ্জামানকে শুয়োর বলে ফেলা যায়?

৫. সম্প্রতি কালে শুয়োর যদি কাউকে বলতেই হয় (আপনার আর বলাইয়ের যু্ক্তি অনুযায়ী) সেটা শেখ হাসিনাকে বলা যায়; ভাষা আন্দোলনে শেখ মুজিবের ভূমিকার নতুন ইতিহাস রচনার জন্য।

৬.

ইতিহাসের কোন ব্যক্তি বা ঘটনার বিচার করতে হয় ওই সময়কালে / পটভুমিতে ব্যক্তি বা ঘটনার ভূমিকা কি ছিল তা’ দিয়ে । অতীত বা ভবিষ্যতের কোন ঘটনায় ব্যক্তির ভূমিকা দ্বারা বায়াসড না হয়ে

ঠিক আছে, রাজাকার পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে দু'জনের ভূমিকাই বাদ দিলাম বিবেচনা থেকে। মুক্তিযুদ্ধে কার অবদান বেশী: মুজিব না জিয়া?

ভাল থাকুন।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আলমগীর ভাই,

একজন ড. আনিসুজ্জামানকে শুয়োর বলে ফেলা যায়?
আসলে আপনার সবগুলো প্রশ্নের উত্তর আপনার এই প্রশ্নের মধ্যেই আছে। এখানে 'ব্যক্তি' কোনো ফ্যাক্টর না, ফ্যাক্টর হলো কাজ। শুঁয়োরের কাজটা যে-ই করুক, তাকে তার 'ব্যক্তি' পরিচয়ের জন্য মাথায় তুলে নাচার কোনো মানে নাই। যেহেতু,

প্রশংসা, খ্যাতি, টাকা আশা করে না এমন কোন মানুষ নেই। স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাও প্রশংসা চান। যে মানুষগুলো সেখানে গিয়েছে তারা একটু প্রশংসা (হয়ত কিছু টাকাও) পাবার জন্যই গিয়েছে।
, সেহেতু এরকম অন্যায় ছাড় দিলে তার সুযোগ এরা নিতেই পারে। এই অন্যায় ছাড়টা দিয়ে ইতিহাসকে ধর্ষণের সুযোগ দিতে চাই না বলেই মুখ খারাপ করতে হয়।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

টিউলিপ এর ছবি

"দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিট" স্লোগানটা যখন শুনি, খুব খারাপ লাগে নি। হ্যাঁ, আমি ব্যস্ততার কারন তখন দুইদিন পত্রিকা পড়ি নি, মতির মাত্র ৩০ মিনিটের তত্ত্ব জানা ছিল না। এই ৩০ মিনিট আন্দোলনের বিস্ফোরক ৩০ মিনিটকে স্মরণ করিয়ে দেবে, কিছু ছেলেমেয়ে মিছিলে যাবে, তাদের একটা ছোট অংশ হয় তো বিষয়টা নিয়ে আরেকটু কিছু জানবে এমন ভেবেছিলাম। জানি জিনিসটা খুব আশাব্যঞ্জক কিছু না, তাও সব কিছুর মাঝে পজিটিভ কিছু খোঁজার আশাতেই জিনিসটা দূর দূর করে দেই নি কর্পোরেট বাণিজ্য বলে।

খোমাখাতায় তাই শহীদ মিনার লাঞ্ছনার ছবিগুলো দেখে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম। দেশে থাকলে আমি কি করতাম? আমিও হয় তো যেতাম আমার নিজের মত করে সেই বিস্ফোরক ৩০ মিনিটকে সম্মান জানাতে, তার আগের চার বছরের আন্দোলনের ধারাবাহিকতাকে মাথায় রেখেই। আমার মত না জেনে আরও অনেকেই হয় তো যেত, যারা এই বর্বরতাকে ঘৃণা করত। ডঃ আনিসুজ্জামান, ভাষা মতিন, এদের আমি সেই বেনিফিট অব ডাউট দিতে চাই। তাদের এতদিনের অর্জনকে ৩০ মিনিটের ভুলের কারনে নস্যাত করে দিতে চাই না। কেউ যদি এটা ব্যক্তিপূজা মনে করেন, আমি মেনে নিব। কিন্তু ভাষা আন্দোলনের স্মারকলিপি পাঠের জন্যই যেমন গোলাম আজম ভাষা সৈনিক হতে পারে না, তার আগের পরের ভূমিকা আমি বিচার করি, তেমনি এঁদের ক্ষেত্রেও আমি একই কাজ করব।
___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

আলমগীর এর ছবি

বলাই দা
ইতিহাস বিকৃতি আর একটা লম্বা ইতিহাসের তিরিশ মিনিটকে ব্যবসার প্রয়োজনে হাইলাইট করা এক বিষয় হলো? আমরা তো ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য দিনগুলোকেই মনে রাখি। পালন করি বলে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধ তো কেবল স্বাধীনতা দিবস, বুদ্ধিজীবি দিবস আর বিজয় দিবসে সীমাবদ্ধ হয়ে যায় নি।

তর্কের খাতিরে ধরেই নিলাম ইতিহাস বিকৃতিতে সামিল হচ্ছেন ভাষা সৈনিকরা। এই যদি যুক্তি হয় তবে আমরা একটা "শুয়োর জাতি"। ক্ষমতার প্রয়োজনে ইতিহাস কমবেশী চাপা দেয়নি বা বিকৃত করেনি এমন কেউ নেই।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আলমগীর ভাই, এখানে ধরে নেয়ানেয়ির মতো কোনো অস্পষ্টতা নেই। স্পষ্টতই ইতিহাসকে অশালীনভাবে বিকৃত করা হয়েছে। 'ব্যবসায়'টা এখানে কী-ওয়ার্ড। আপনি আগে এই অস্পষ্টতা দূর করেন, আপনি যদি নিশ্চিত হোন যে বিকৃতি হয় নি, তাইলে কেন হয় নি সে কথা শোনা যাবে।

ক্ষমতার প্রয়োজনে যারাই এই ইতিহাসকে বিকৃত করেছে, তারা প্রত্যেকেই এক একটা বরাহ। কাউকেই ইতিহাসবিকৃতির জন্য ছাড় দেয়ার কিছু নাই। এই অসুস্থতার চর্চা কোথাও না কোথাও থামতে হবে। অন্যায় ছাড় দেয়ার মানসিকতা তাদের আকামে সাহায্যই করবে শুধু।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনার লেখাটা শেয়ার করলাম আপা।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ওডিন এর ছবি

সাঈদ আহমেদ লিখেছেন:
পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা উর্দু হবে, এই ঘোষনা তো সেই আটচল্লিশের।

যারা বলে দুনিয়া কেঁপেছে বায়ান্নর ওই ত্রিশ মিনিট, তাদের কি ধারনা বাঙালী চার বছর ধরে উর্দুতে কথা বলার পর হঠাৎ একদিন ঘুম ভেঙে "আমার ঘুম ভাঙিয়ে গেল রে প্রানের কোকিলে" গান গাওয়া শুরু করেছিল?

চলুক

এই লেখাটা আমিও শেয়ার করলাম।
সাথে মন্তব্যটাও!

______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব আশা নিয়ে বসে আছি, এ বছরই ১৭ই এপ্রিল বেলা ৪টায় বাংলাদেশের সরকার গঠন নিয়ে স্বাধীনতার একটা বিশেষ অনুষ্ঠান পালন হবে!! মন খারাপ :(
হায়, কর্পোরেট সমাজ!!মন খারাপ

- মুক্ত বয়ান

অতিথি লেখক এর ছবি

আশংকায় থাকি, কোন দিন একুশ শুধুমাত্র কার্ড বিতরনের দিনে না পরিণত হয়।
---- মনজুর এলাহী ----

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

লেখাটা শেয়ার করলাম আপু... মন খারাপ

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

দেশপ্রেম নিয়ে বাণিজ্য করার কুরুচিপূর্ণ মনোভাব দেখতাম ভারতীয় টেলিভিশনের বিজ্ঞাপনে আজ থেকে ১০ বছর আগে। এই ধান্দাবাজি বাংলাদেশেও কি রকম শক্তভাবে গেঁথে গেছে, তার আন্দাজ পাই প্রথম গত বিশ্বকাপের সময় নীচের এডটার মাধ্যমে। এতো লোকের কাছে এতো রকম প্রশংসা শুনেছিলাম এটার, যে আমি কোনভাবেই ঠাহর করে উঠতে পারিনি। একটা কম্পানী স্রেফ তাদের ব্রান্ড আইডেন্টিটি পোক্ত করার জন্য মানুষের পবিত্রতম অনুভূতিগুলোকে ইচ্ছামত সুরসুরি দিচ্ছে, যদিও তাদের শেষ উদ্দেশ্য আর কিছুই না - আরো বেশী সিম বেঁচা, আরো বেশী মোবাইল বেঁচা, আরো বেশী মুনাফা কামানো। আর এই নগ্ন ম্যানিপুলেশনে আবেগী হয়ে পাগল হয়ে হাততালি দিচ্ছে সুবুদ্ধিসম্পন্ন কিছু লোক।

সেই ধারারই শেষ সমাপ্তি দেখবেন এখন থেকে একুশে ফেব্রুয়ারীতে, স্বাধীনতা দিবসে, বিজয় দিবসে। আর উঠতে বসতে যারা ডিজুসদের গালি দেন, অথচ পকেটে ঠিকই গ্রামীনের একটা মোবাইল, দুটো সিম নিয়ে ঘুরছেন, দিনরাত প্রত্যক্ষ আর পরোক্ষভাবে গ্রামীনের টাকা আর শক্তি বাড়াতে সাহায্য করছেন, গ্রামীনের পাইকারী দেশপ্রেম কিনে নেওয়ায় মদদ দিচ্ছেন - তারাও কি সমানভাবেই দোষী নন? কর্পোরেটকে এতো ঘৃণা করলে তাদের এইসব কদর্য ক্রিয়াকলাপের বিরুদ্ধে ক্যাম্পইন ও বয়কটের সুযোগ আছে। নাকি আমরা আবারো শুধু মুখে হাতি-ঘোড়া মেরেই খাল্লাস?

সেই সুন্দর অথচ কুতসিত বিজ্ঞাপনটি

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

Atiq এর ছবি

কিছু মন্তব্য একটু বেশি আক্রমনাত্তক হয়ে গেছে বলে মনে হয়।

প্রত্যেকটাই এক একটা শুঁয়োর।

লেখার মূল শুর ছিলো , ২১শের চেতনাকে সংকুচিত করা হচ্ছে-এই অভিযোগ এবং এর প্রতিবাদ। "দুনিয়া কাঁপানো ত্রিশ মিনিট" মূল আপত্তি এই স্লোগানকে ঘীরে। সেই সাথে আছে বানিজ্যিকীকরনের অভিযোগ।

২১, না না ভাবে উদযাপিত হয়। এটা সেই বহু উদযাপন গুলোর আরেকটা সংযোজন হিসাবে নিতে মূল সমস্যা কোথায় তা আমার কাছে এখনো পরিস্কার না। আশংকাটাকি এখানে যে এটিই কালে ২১শে উদযাপনের মূল অনুষ্ঠান হয়ে উঠবে ? এই মিছিল উদযাপন কি শোক দিবসের ভাব-গাম্ভীর্যকে খর্ব করছে?

স্লোগানটা স্পষ্ট ভাবে রুশ বিপ্লবের- দুনিয়া কাঁপানো দশ দিন- থেকে ধার করা। এটা আসলে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্বকে বলা। কোন ভাবেই এই কথার মাধ্যমে রুশ বিপ্লবের সুদীর্ঘ ইতিহাসকে খর্ব করা হয়না। ১৪৪ ধারা লংঘনের ঐ ৩০ মিনিটকে আলাদাভাবে স্মরন করলে
২১শের চেতনা ম্লান হবার কোন কারন দেখিনা।

মনে হচ্ছে আমারা সবাই কর্পোরেট কেপিটাল ও কালচারকে ঘৃ্না করি। আসলে এর বিকল্পের কথা পরিস্কারভাবে উপস্থাপন করাটা বোধ হয় , যারা এই ঘৃ্না পোষনে অগ্রগামী,
তাদের জন্য জরুরী। তা না হলে, যে কথাটা প্রায়ই শোনা যায় আজকাল, দ্রুত জনপ্রিয় হবার জন্য এখন কর্পোরেট কালচারকে গালি দেয়া টা খুব কার্যকরী উপায়, সেটাকেই সত্যবলে মেনেনিতে আমরা আমজনতা প্ররোচিত হই।

হিমু এর ছবি

আসুন, আপনার জন্মদিনে আপনার বাবা-মায়ের সঙ্গমদৃশ্য পুনরাবৃত্ত করাই। জন্মদিন তো নানাভাবে পালিত হতে পারে, তাই না? সেই বহু উদযাপনের সাথে না হয় এটাও যোগ হলো। আপনি কি আপত্তি করবেন ভাই? এটা কি আপনার জন্মদিনের চেতনাকে ম্লান করবে?

ছ্যাঁচড়ামির একটা সীমা থাকে। গতকাল শহীদ মিনারে যে তাণ্ডব ঘটে গেছে, সেটা দেখে থাকেন যদি, তাহলে টের পাবেন এই সীমাকে কীভাবে প্রসারিত করা যায়।

কর্পোরেট যদি আপনার মাথায় গু ঢালে, আপনি মনে হয় তারপরও সশ্রদ্ধচিত্তে চুপ থাকবেন, পাছে মুখ খুলে বিখ্যাত হয়ে যান।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

বিলীন অরণ্য [অতিথি] এর ছবি

চলুক

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

ধন্যবাদ হিমু ভাই ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

Atiq এর ছবি

আপনার আইডিয়াটা আভিনব সন্দেহ নাই। বাবা বেঁচে নেই, থাকলে তার মতামত নেয়া যেত। আপনার বিবেচনা বোধ ও রুচিবোধ সত্যিই অনন্য। ভাল থাকবেন। অনেক ধন্যবাদ।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

কিছু মন্তব্য একটু বেশি আক্রমনাত্তক হয়ে গেছে বলে মনে হয়।

আমারতো তার উলটোটা মনে হয়। এই ইতিহাসবিকৃতি আকামের হোতাদেরকে জুতার মালা গলায় ঝুলিয়ে লাইত্থানো উচিত।

নিজস্ব ফ্ল্যাট বা গাড়ির ব্যাকসিটে ৩০ মিনিটে কোপাকুপি চলতে পারে, সেখানে কাঁপাকাপি করে দুনিয়া উলটায়া ফেললেও কেউ ট্যাঁ ফোঁ করছে না; কিন্তু সেই কাঁপাকাঁপিকে ইতিহাস হিসেবে উপস্থাপন করলে তখন বিরাট পরোবলেম। দেশ বা জাতি হিসেবে আমাদের গৌরবের বিষয় হাতেগোণা। একটা বিশাল জনগোষ্ঠীর অর্ধেকেরও বেশি দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, দুর্ণীতির সূচকে বছরের পর বছর চ্যাম্পিয়ন হই, আমাদের রাজধানী বসবাসের অনুপযুক্ত স্থান হিসেবে বিশ্ব তালিকার একেবারে প্রথম দিকে থাকে। আমাদের রাজনীতি কলুষিত, দেশের জন্মের বিরোধিতাকারীদের গাড়িতে মন্ত্রীত্বের পতাকা ওড়ে। এই অগৌরবের বিষয়গুলোকে ছাপিয়ে যে ঘটনাপ্রবাহ আমাদেরকে জাতি হিসেবে আত্মবিশ্বাস দেয়, ভাষা আন্দোলন তার মধ্যে একটা মাইলফলক।

এখানে 'মাইলফলক' শব্দটা লক্ষণীয়। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে আমাদের ওপর অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক নিপীড়নের যে 'ধারা' চলে এসেছিলো, তা থেকে হঠাৎ করেই উত্তোরণ মেলেনি। ৪৮এ জিন্নাহর সদম্ভ উক্তি, ৫২ এ রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতি, ৬৯এর গণ অভ্যত্থান, ৭০ এর নির্বাচন, ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ - প্রত্যেকটি 'মাইলফলক'ই একই সূত্রে গাঁথা, এদের কোনোটিই কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। স্বাধীনতা যুদ্ধ যেমন ২৫ শে মার্চের রাত থেকেই হঠাৎ করে কোনো পূর্বাপর ঘটনা ছাড়া শুরু হয় নি, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনও আধা ঘন্টার কোনো কোপাকুপি বা কাঁপাকাঁপির ফসল নয়। সুতরাং এটাকে ৩০ মিনিটের হুইমজিক্যাল একটা ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা রোধে কঠোরতাই কাম্য, আদর করে মাথায় হাত বুলিয়ে বকে দিলে এর পেছনের জ্ঞানপাপীদের কিছুই হবে না।

ইতিহাস বিকৃতিটাও আসলে একটা অপ-পরিকল্পনার অংশ। অলস জাতি হিসেবে এমনিতেই আমাদের দুর্ণাম আছে। কোনো বড়ো কিছু অর্জন যে হুট করে হয় না, তার জন্য দীর্ঘদিনের সাধনার প্রয়োজন হতে পারে - এই সত্যটাকে পুরোপুরি অস্বীকার করে একটা হঠাৎ বড়লোক হয়ে ওঠার স্বপ্নের বিভোর অকর্মণ্য অসহিষ্ঞু তরুণ সমাজ গড়ার জন্য ওরকম ৩০ মিনিটীয় উদ্যোগ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। ডিজ্যুসদের ৩০ মিনিটের'ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড'নীতি কোপাকুপির জন্য ভালো; কিন্তু একটা দেশ গড়ার জন্য তা ক্ষতিকর। আমার দেশটা এই ক্ষতির হাত থেকে বাঁচুক, এটা চাই বলেই ওইসব জ্ঞাপাপীদের আকামকে সমর্থন করি না, তাদেরকে সামর্থ্যের মধ্যে থেকে 'আক্রমণ' করতে হয়।

মনে হচ্ছে আমারা সবাই কর্পোরেট কেপিটাল ও কালচারকে ঘৃ্না করি। আসলে এর বিকল্পের কথা পরিস্কারভাবে উপস্থাপন করাটা বোধ হয় , যারা এই ঘৃ্না পোষনে অগ্রগামী,
তাদের জন্য জরুরী। তা না হলে, যে কথাটা প্রায়ই শোনা যায় আজকাল, দ্রুত জনপ্রিয় হবার জন্য এখন কর্পোরেট কালচারকে গালি দেয়া টা খুব কার্যকরী উপায়, সেটাকেই সত্যবলে মেনেনিতে আমরা আমজনতা প্ররোচিত হই।

মনে হচ্ছে এতোদিন শহীদদেরকে সম্মান জানানো হতো না! গেরামিন আর আলু উদ্যোগ নেয়ার আগ পর্যন্ত শহীদদের আত্মা মনে হচ্ছে পুলসিরাতের ওপরে আটকায়া ছিলো! এই জন্য এখন উনাগো ৩০ মিনিটের কাঁপাকাঁপি আর জুতা নিয়ে শহীদ মিনারে উঠে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করার নোতুন করে বিকল্প খুঁজতে হবে!

-----------
(আর কর্পোরেট কালচারকে গালি দিয়ে বিখ্যাত হওয়ার মুলা ঝুলাইয়া লাভ নাই। এখানে যারা তাদের আকামের সমালোচনা করে, তাদের কেউই রুটিরূজির জন্য গেরামিন বা আলুকে গালি দেয়ার ওপর নির্ভর করে না, এমনকি ব্লগ লেখাই অধিকাংশের প্রায়োরিটি লিস্টের অনেক নীচের দিকের ব্যাপার। )

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

বলাই'দার মন্তবে উত্তম জাঝা!

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

সমস্যা হচ্ছে আমরা সবাই কর্পোরেটের মধ্যে সান্ধায়ে গেছি। প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

কর্পোরেট যদি কর্পোরেটের মূল কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকে, সেটা নিয়ে আমি তেমন সমস্যা দেখি না। কিন্তু ওরা যখন জাতীয় দিবস আর উৎসবগুলোকে ডিফাইন করতে এগিয়ে আসে - স্পন্সরশিপের নামে উৎসব বা দিবসের পুরোদস্তুর টেকওভার শুরু হয়ে যায়, সেইখানে একটা বড় সমস্যা আছে। আমাদের সংস্কৃতি এতো খেলো হয়ে যায় নাই, যে বিটপী আর ইন্টারস্পীড থেকে আমাদের সংস্কৃতির ক্লাস নিতে হবে, গ্রামীণ আর লিভার ব্রাদার্সের লোগো না থাকলে উৎসব অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনার মন্তব্যের সাথে একমত।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

সুবিনয় মুস্তফীর সাথে একমত ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

ইতি এর ছবি

আচ্ছা, লেখক যদি প্রথম আলোতে কলাম লেখার সুযোগ পেতেন তখন কি এই লেখাটি লেখতেন? প্রশ্নটি অবান্তর জানি। তবু এই কারণেই প্রশ্ন জাগে মনে, লেখক কি পারবেন জয়নাল হাজারীর হাতে হাত রেখে আব্দুল গাফফার চৌধুরী যা বলেছেন তার প্রতিবাদ করতে?

হিমু এর ছবি

আপনি প্রকারান্তরে এ কথাটাই স্বীকার করলেন, প্রথম আলোতে কলাম লেখে এমন কারো সাহস, ইচ্ছা, শক্তি, যোগ্যতা বা ক্ষমতা নাই এই ছ্যাঁচড়ামির প্রতিবাদে কিছু লেখার। তাই না?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

  এর ছবি

লেখাটি আমার ফেসবুকে শেয়ার করলাম(যদিও জানিনা এই অধিকারটি সংরক্ষন করি কিনা), আমার মনের কথাগুলো বলে দিলেন, অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। বন্ধুর সাথে বিষয়টি নিয়ে আজকেই, তর্ক হচ্ছিল। আমি এখন পরবর্তী বছর কি "নতুন" কিছু করে সেই অপেক্ষায় আছি... মন খারাপ

ধন্যবাদ।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

Disrespecting Shahid Minar- clip from ETV News

কালকে আসলে কি হয়েছিল? অন্য কোন চ্যানেল বা খবরের কাগজে এই খবরটি আসেনি কেন? ETV র একটা ক্লিপ এ এটা দেখলাম, কিছু মানুষ (!!)
শহীদ মিনারের উপরে উঠে সাজানো সমস্ত ফুল তছনছ করছে, পাশবিক উল্লাস করছে, ঢাকায় যারা আছেন কেউ কি জানাতে পারবেন কি হয়েছিল???

http://www.somewhereinblog.net/blog/tinkutravelar/29102764

অন্য ব্লগের লিঙ্ক এখানে দেয়া ঠিক কিনা জানিনা, তবে ছবিগুলো দেখে স্তব্ধ হয়ে গেলাম, আরও অবাক লাগছে কোথাও এই খবরটি আসেনি দেখে...

-------------------------------------------------------------------
স্বপ্ন নয় — শান্তি নয় — ভালোবাসা নয়,
হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়

হিমু এর ছবি

শহীদ মিনারের চারপাশের পলাশ গাছের মুন্ডি কেটে প্যান-টিল্ট-জুম ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আমার ধারণা, ঐ সময়ে এই কীর্তি যারা ঘটিয়েছে, তাদের ভিডিওচিত্র আইনশৃঙ্খলারক্ষাবাহিনীর কাছে আছে। এদের শনাক্ত করা সম্ভব, শাস্তি দেয়া সম্ভব। তবে শহীদ মিনারে এই তাণ্ডবের বিরুদ্ধে কোন আইন কার্যকর আমার জানা নেই।

আমার ধারণা, যদি এই দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিটের ভাঁড়ামো না চলতো, উপস্থিত জনতা এবং পুলিশ এই লোকগুলিকে শক্ত ধোলাই দিতে পারতো।

এই লোকগুলি কি এই আয়োজনের অংশ নয়? প্রায় সব পত্রিকা আর টেলিভিশনে এই বীভৎস ঘটনার কথা সেন্সর করা হয়েছে। কারণ কী? মিডিয়া নিজেই এই তাণ্ডবের সাথে প্রকারান্তরে জড়িত বলে? কার্টুনিস্ট আরিফের কথা যেমন আলুপেপারে কখনো আসে না, সেরকমই স্বারোপিত সেন্সরশিপের স্বীকার হচ্ছে এই ঘটনা? যদি আলু-জিপি ও অন্যান্য মিডিয়া এই ঘটনার সাথে জড়িত না হয়, কেন তারা এর বিরুদ্ধে কিছু লিখছে না? কেবল মিষ্টি মিষ্টি খবর এসেছে প্রথম পাতায়, এটা চেপে যাওয়া হলো কেন?

সাড়ে আট হাজার পুলিশ র‌্যাবের বেষ্টনী ভেদ করে কীভাবে এই লোকগুলি এখানে এই কাজ করতে সাহস পায়? পুলিশ কেন এদের কিছু বলেনি? এই প্রশ্নের জবাব এই দুনিয়া কাঁপানো আধঘন্টার মৌলানাদের কাছ থেকে আসা উচিত।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম (প্রায়) সবগুলো বাংলা দৈনিক পত্রিকার আজকের সংখ্যায়, একটা লাইনও পেলাম না। এতো বড় একটা ঘটনা ঘটলো আর দৈনিক পত্রিকাগুলো কিছুই লিখলো না! বিডিনিউজও নিশ্চুপ!

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে শুধু আলু-জিপি কেনো, সব রসুনেরই গোয়া এক জায়গায় গিয়ে মিলেছে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

প্রথমে ছবিগুলো দেখে ভেবেছিলাম মিথ্যা ছবি, সাজানো ছবি, এরকম যে হতে পারে কল্পনাতেও ভাবিনি, ঢাকায় কথা বলে জানলাম ইটিভি ছাড়া আর কোন চ্যানেলে আসেনি এই খবর, প্রতিটা পেপারে খুঁজলাম, কোত্থাও আসেনি, ওরা কী ভেবেছে ওরা চোখ বন্ধ রাখলেই কেউ কিছু জানবেনা? এরকম ঘটনা কাল ঘটেছে এখনো বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে...

-------------------------------------------------------------------
স্বপ্ন নয় — শান্তি নয় — ভালোবাসা নয়,
হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়

তিথীডোর এর ছবি

অবিশ্বাস্য নিলজ্জতা!!
ধিক, শত ধিক...

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তিথীডোর এর ছবি

কর্পোরেট ব্যাক্তিত্বরা অর্থনীতি এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংস্কৃতিতেও (আসিফ ইকবাল দ্রষ্টব্য) পজিটিভ ভূমিকা পালন করছেন নিঃসন্দেহে!!
কিন্তু শহীদমিনার আর ভাষার ইতিহাস নিয়ে বেনিয়া যথেচ্ছাচারের দাপট দেখায় এরা কোন সাহসে??

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

হিমু এর ছবি

আসিফ ইকবাল সংস্কৃতিতে ঠিক কোন ধরনের হরিদাসপালীয় ভূমিকা পালন করেন আসলে?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

তাসনীম এর ছবি

আসিফ ইকবাল গ্রামীনের একজন বড়কর্তা, সেই সংগ রাইটার, সুর করেন কিনা জানি না। "ক্লোজআপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশে" যুক্ত ছিলেন শুনেছি।

আজকাল সবকিছুতেই কর্পোরেট নামে চলে, তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ, সেটাও কিন্তু ক্লোজআপ ওয়ান, সচলায়তন আলমের এক নম্বর পঁচা সাবানের কাছে বেচে দিলে, এটার নাম হবে "আলমের এক নম্বর পঁচা সচলায়তন"।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আচ্ছা, চিনতাম না ভদ্রলোককে।

ভালো একটা আইডিয়া দিলেন তো! আমি চিন্তা কর্তেছি কোনো এক রুহিতপুরী লুঙ্গি কোম্পানীর সাথে চুক্তিবদ্ধ হবো। তখন আমার নাম হবে, "অমুক রুহিতপুরী লুঙ্গি ধুসর গোধূলি"। এই নামেই ফাটায়া ব্লগে হাদুমপাদুম করবো।

আমার ছবিটার সাথে মিল আছে, কী বলেন! চোখ টিপি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আসিফ ইকবাল? (অবাককাণ্ড)

এই লোকই তো সব ধ্বংসের মূল... মাথা ভর্তি আইডিয়া, কীভাবে দেশ আর দেশের মানুষের ইমোশন কান্ধে করে কর্পোরেট বাপদের পদতলে দেওন যায়। সেই বিনিময়ে বাড়ি গাড়ি টাকা কড়ি ম্যালা কামাইছে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ওয়াইল্ড-স্কোপ এর ছবি

টিভি এড - এর শেষে মিডিয়া পার্টনারদের নাম দেখেন - কে বাদ আছে? সরিষার ভেতরেই তো ভুত:

অম্লান অভি এর ছবি

আমরা একুশে টিভির একটা খবরের অংশ নিয়ে মাততে দেখেছি এবং আমিও সেই খবর দেখে মর্মাহত কিন্তু আমি চাক্ষুষ সাক্ষি হতে না পেরে আনন্দিত- কারণ বিকেল ৪টায় শহীদ মিনারের কাছে ছিলাম আর মিনিট বিশেক সময় সেখানে কাটিয়েছিলাম তখন সেই পর্ব শেষ হয়ে গেছে অথবা শুরুই হয়নি। আমরা জানা তথ্য মতে মিছিলটি দুনিয়া কাপানো ৩০ মিনিটে'র মঞ্চ থেকে আসে- যারা ঐ উন্মাদনা করেছিল। খবরে না আসলে আমাদের কাছে কোন খবরই থাকতো না। হঠাৎ এই কথাটি কেন বললাম। সহযোগিতায় যারা ছিল তারা হচ্ছে-চ্যানেল আই, এটিএনবাংলা, এনটিভি, আরটিভি, দেশটিভি, একুশেটিভি, বাংলা ভিশন, রেডিওটুডে, এবিসি রেডিও। সবার চোখ এড়িয়ে একুশে নিউজটি ফলাও করে প্রচার করল। একুশেটিভি কি শ্যাম ও কুল দুই রাখার দাবিদারের খাতায নাম লেখাল!

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

সাইফ তাহসিন এর ছবি

চলুক

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এরা কারা? গতকাল অরূপের ছবিতে প্রথম খবরটা জানতে পারি। অবাক হচ্ছি এগুলো খবরে পত্রিকায় আসেনা কেন?

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

গতবছরের ভিডিও দেখেন। মানুষ বা পুলিশ সর্বদা এগুলা চেয়ে চেয়েই দেখে।

----------------------------------
~জীবন অনেকটা জড়ই, কিন্তু অনন্য!~

অতিথি লেখক এর ছবি

দৈনিক জনকন্ঠে এসেছে...তাও ফলাও করে নয়...

অতিথি লেখক এর ছবি

দৈনিক জনকন্ঠে এসেছে...তাও ফলাও করে নয়...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- লাড্ডু রহমান ১৬ তারিখে প্রথম পাতায় [একুশের সেই 'দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিট']— এ লিখেছেন

"সেই দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিটই নির্ধারণ করে দিয়েছিল আমাদের মহান মাতৃভাষা আর জাতির ভাগ্য, যা কিনা স্ফুলিংগ হিসেবে কাজ করেছে।"
লাড্ডুর বাচ্চা লাড্ডুকে কানে ধরে জিজ্ঞেস করা দরকার বিজয় দিবসে তারা কী করবে? নিয়াজীর আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করার "সেই ৩০ সেকেণ্ডই বানিয়ে দিয়েছিলো বাংলাদেশের মানচিত্র"!

লাড্ডু রহমান, তার আলু পেপার আর তার প্রেমিক জিপির বিরুদ্ধে রাস্ট্রদ্রোহীতার মামলা হওয়া উচিৎ। শহীদ মিনারে গতকালের তাণ্ডবে 'উস্কানী' দেয়ার জন্য। এই তাণ্ডব ঘটেছে এদের "৩০ মিনিট"-এর কারণেই। এই "৩০ মিনিটই" বদলে দিতে চেয়েছে একুশের মাহাত্য।

এদের বিচার হওয়া উচিত। দৃষ্টান্তমূলক বিচার।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

সেই সংদের কান্ড দেখুন - মতি-নূর গংদের ছবিসহ।

http://prothom-aloblog.com/users/base/zamanarshad/118
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

লিংক কাজ করেনা।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

লাড্ডু রহমান, তার আলু পেপার আর তার প্রেমিক জিপির বিরুদ্ধে রাস্ট্রদ্রোহীতার মামলা হওয়া উচিৎ।

একমত ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

অতিথি লেখক এর ছবি

একুশে ফেব্রুয়ারীর মাহাত্ম নতুন করে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার নামে এই ভন্ডামীর তীব্র প্রতিবাদ জানাই! একুশের চেতনা কি - এটা আমরা (আমাদের প্রজন্ম) যখন বুঝতে শিখেছি, তখন তো 'দুনিয়া কাঁপানো............' জাতীয় কোন বুলির প্রয়োজন হয় নি! এখন কেন তাইলে এই জাতীয় বিজ্ঞাপন?
নতুন প্রজন্মের দোহাই দিয়ে এই কর্পোরেট তামাশা বরং এ প্রজন্মকে আরো কনফিউজড করে দিতে পারে! এই আশঙ্কা থেকেই এই উদ্যোগটির নিন্দা জানাচ্ছি!

কাকুল কায়েশ

আরিফ জেবতিক এর ছবি

কোন এক অগ্রজ সাংবাদিক যেন একবার বলেছিলেন, এই দেশে সৃষ্টিকর্তার বিরুদ্ধেও তবু দুয়েকলাইন ফাঁকফোকরে লেখা যায়, কিন্তু মোবাইল ফোন কোম্পানির বিরুদ্ধে কিছু লেখা অসম্ভব।

মিডিয়া পার্টনার থাকলে ইটিভিও এই তান্ডব দেখাতো না।

অম্লান অভি এর ছবি

সহযোগিতায় সেও ছিল-একুশেটিভি। সাতটি টিভি আর দুটি এফএম রেডিও।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

নাশতারান এর ছবি

আমি ভয় পাচ্ছি। যে জাতির জাতীয়তাবোধ এত খেলো, যে দেশের সংবাদপত্র বিকলাঙ্গ সে দেশে কি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্ভব?

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

দুর্দান্ত এর ছবি

দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিট এর শ্লোগান আমরা পছন্দ করছি না, কেন করছিনা তার পেছনে শক্ত যুক্তি আছে। এটা ষড়যন্ত্র হতে পারে। আলু-জিপি মুর্দাবাদ। একমত।

কিন্তু যে কবিতা পাঠ, পথ-নাটক এর ছবি দেখলাম, নির্দিষ্ট ভাবে সেগুলোতে তো কোনো অসুবিধা দেখিনা। এগুলো এই মাত্রায় কর্পোরেট ছাড়া কোথায় কবে হয়েছে, আমাকে কি কেউ বলতে পারেন? ৯০ এর বিজয়দিবসের অনুষ্ঠানগুলোতে কোকাকোলা-পেপসি-বি এ টি'এর সাথে সাথে যাযাদি-উন্মাদ এর ব্র্যান্ডিং এর প্রতিবাদ শুনেছিলাম কি? মনে নেই।

সোজা হিসাব। কর্পোরেটের ঠেকা পড়েনি খামাখা দেশপ্রেম ফলাবে। সে প্রচার চায়, কাটতি বাড়াতে, যেদিন কাটতি কমে যাবে, আপনি নিজেই তার শেয়ারগুলো বেচে আসবেন। তখন সে একুশে ফেব্রুয়ারীতে পেছনে থেকে টাকা দিয়ে সুন্দর একটি অনুষ্ঠান করেছিল কি না, তা আপনি ভাববেন না। যদি এটা আমাদের পছন্দ না হয়, তাহলে আইন আসুক, এর বিরোধে জনমত আসুক।

আইন কেন আসবে না, সেটা জানতে হলে জিপি এর ১০০ জন উর্ধতন কর্মচারীর পারিবারিক পরিচিতি দেখুন, তাদের কাছ থেকে শুল্ক আয় দেখুন, তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আপনার আমার কতজন কাছের মানুষের রুটিরুজির যোগান দেয় সেটা ভাবুন।

জনমত কেন আসবে না, সেটা জানতে হলে জিপি এর সিম এর কাটতি দেখুন।

প্রতিবাদ তো হল। এবার প্রতিকারের কথাও হোক।

হিমু এর ছবি

কবিতা পাঠ, পথ নাটকের মতো সুন্দর জিনিসের মোড়কে ঐ "দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিট" এর "ধারণা"টা খুব বিপদজনক। এটা মাখনে মুড়ে গু খাওয়ানোর মতো। এবং এই গু খাওয়ার মতো লোকও দেশে কম নাই। আর কবিতা পাঠ পথ নাটকের পাশাপাশি দেখুন শহীদ মিনারে কী তাণ্ডব চলছে। এ ব্যাপারে মিডিয়া পার্টনাররা নিশ্চুপ। কারণ দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিট শ্যাষ। ৩১তম মিনিটে কী হয় না হয় তা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নাই।

কর্পোরেটের কাছে দেশপ্রেম ফলানোর আবেদনও করি না। তারা দেশপ্রেমের মোড়কে এই ছ্যাঁচড়ামি বন্ধ করলেই আমরা খুশি।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে শ্লোগানটাই চরম আপত্তিকর! তার মধ্যে আবার প্রোগ্রাম-পরবর্তী নারকীয় ঘটনাগুলা এটাকে তামাশা বানিয়ে ফেলেছে, সেজন্যই সবার প্রতিবাদ!
আপনার সাথে পুরোপুরি সহমত যে, প্রতিবাদ তো হল। এবার প্রতিকারের কথাও হোক!

আচ্ছা, আরেকটা জিনিস আপনার সাথে শেয়ার করতে চাই। গত ২০০৪-২০০৭, এই ৪ বছরে যেভাবে নতুন প্রজন্ম একুশে ফেব্রুয়ারী উদযাপন করেছে, তাকে তো আমি জাস্ট 'প্রো-ভ্যালেন্টাইনস ডে'-র সাথে তুলনা করব! ভ্যালেন্টাইনস ডে তে এরা অফিস অথবা ইউনিভার্সিটির ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ডেটিং করছে, কিন্তু সেটা থেকে যাচ্ছে অপুর্ন! কিন্তু একুশে ফেব্রুয়ারীতে সে অপূর্নতাটাকে তারা পুর্ন করতে পারছে!
আমি কথাটা এজন্য বলছি যে, সেই গত চার বছরে একুশে ফেব্রুয়ারীর দিনটাকে (সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত) আমার ভ্যালেন্টাইন্স ডে থেকে আলাদা কিছু মনে হয় নি!
একুশের চেতনা ধীরে ধীরেই আমাদের থেকে উঠে যাচ্ছে! তার মধ্যে যদি এই তিরিশ মিনিটের ব্যাপার চলে আসে, তাহলে তো বুঝতেই পারছেন, এরপর থেকে আমাদের এই প্রজন্ম কিভাবে একুশকে উদযাপন করবে?

কাকুল কায়েশ

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- কী প্রতিকারের কথা বলছেন আসলে!

এই যে আলু-জিপি মিলে আমাদের ইতিহাসের পাঠ দেখাচ্ছে, সেটা বন্ধ হয়ে গেলে তার বিকল্প খোঁজার প্রতিকার? নাকি জিপি যে মোবাইল সুবিধা দিচ্ছে, সেটার প্রতিকার!

যদি প্রথমটা হয়, তাহলে তো এক কথায় উত্তর দেয়া যায়। দরকার নাই এই ইতিহাস-ঐতিহ্য ধর্ষণের।

আলু-জিপি এইসব কর্মসূচী বলার আগেও লোকজন স্বতস্ফুর্তভাবে একুশ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস পালন করতো, এরা ইতিহাস জানানোর কাণ্ডারী না হলেও করবে। তাই, তারা দূরে গিয়া মরতে পারে, কোনো সমস্যা নাই।

দ্বিতীয়টার কথা যদি বলে থাকেন, তাহলে এটা বলতে হয় যে তাত্ত্বিকভাবে জিপিকে সাইড লাইনের বাইরে রেখে সরকারী টেলিকমের অবস্থা রমরমা করা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে কেনো সম্ভব হচ্ছে না? এটার উত্তরও দিবে জিপি সেই প্রথম ১০০ জন। তাদের 'কানেকশন', তাদের 'ম্যানেজ' করার ক্ষমতা— এসবের কারণেই টেলিটক মুখ থুবড়ে পড়ে আর পক্ষান্তরে জিপি হয় লালে লাল। এই ১০০ জনের জন্যই পোঙ্গা মারা খায় বাংলাদেশের বাকি ১৪ কোটি ৯৯ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯ শ' জন।

কারা এরা? ভিন গ্রহের প্রাণী? ভিন দেশের পাবলিক? নাকি আমার আপনার মতোই দেশের খেয়ে, দেশের পরে দেশকেই বাঁশটা দেয়া পাবলিক! এই ১০০ জনই তো জিপি চালায় বাংলাদেশে। তো এরা যদি জিপি চালাতে পারে, তাইলে এরাই শতভাগ দেশী টেলিটক কেনো চালাতে পারবে না! টেলিক কি রুটি-রুজি দিতে পারবে না, নাকি রুটি-রুজির ঠিকাদারী কেবল জিপিই নিয়ে রেখেছে ঈশ্বরের কাছ থেকে!

সরকারের সদিচ্ছা নেই, এই পয়েন্টেই তো এদের জিপিতে কাজ করাকে হালাল করা হয়, নাকি! তো সরকারের সদিচ্ছাকে পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে কারা? আমি যদি বলি, এই ১০০ জনই তাদের 'কানেকশন'কে দিয়ে সেই কাজটা করাচ্ছে, ভুল বলা হবে?

জিপির মতো এইসব পরের ধনে পোদ্দারী করা বেনিয়া গোষ্ঠীকে থামাতে হলে এখনই সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে। প্রথমত এর তথাকথিত ১০০ জনকে সরকারী ক্ষেত্রে 'কানেকশন'হীন করতে হবে। তারপর দেশের সকল সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়া নূতন স্নাতকদের এক বছরের বাধ্যতামূলক শিক্ষানবিশি করতে হবে স্ব স্ব সরকারী ক্ষেত্রে। এই এক বছরের শিক্ষানবিশি ছাড়া তারা তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ পাবে না।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার পরপরই জিপি সহ সব বেনিয়া মাসিক মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের দেশের মেধা ভাড়া করে নিয়ে যায়। দেশ এইসব মেধার পেছনে যে বিপুল অংকের টাকা খরচ করে, সেটা তো রিটার্ন পায়ই না উল্টো এরাই এইসব বেনিয়ার তালে পড়ে দেশের পশ্চাতে আছোঁলা বাঁশটা ঠেলতে থাকে।

উপরের পদ্ধতিটা প্রয়োগ করার সুযোগ থাকলে বেশি না, দশ বছরের মাথায়ই বাংলাদেশ যেকোনো সেক্টরে একটা আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াবে শক্ত হয়ে। তখন এইসব জিপি-টিপি কই গিয়ে খেতের আলে বসে আলুপোড়া দিয়ে খাবে, তার খবর কেউ রাখবে নাকি!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

দুর্দান্ত এর ছবি

তোমার মন্তব্যে আমার মনের কথাটা আরো পরিস্কার করে পড়তে পেলাম। শহীদ মিনারের দুর্ভাগ্যজনক অঘটন ও পাশাপাশি ২১শে ফেব্রুয়ারীর বানিজ্যিকিকরন তো রোগ নয়, এটি উপসর্গ মাত্র। রোগটি আরো ব্যাপক ও গভীর। উপসর্গে প্রতিবাদ করা যায়, কিন্তু এতে চোটপাট করে রোগের দীর্ঘস্থায়ী প্রতিকার হয় না।

আমি বলছি কর্পোরেটকে মঞ্চের মাঝখানে বসানোর মানসিকতার প্রতিকারের কথা। আমাদের সমাজে কর্পোরেটের অবদান আছে, সেটাতো পাড়ার সুয়ারেজ লাইনেরও আছে। স্বভাবিক বিচারবুদ্ধির যথাযথ প্রয়োগ না করলে কর্পোরেট আর সেপটিক ট্যাঙ্ক দুটোই উপচে পড়বে। এমন অবস্থায় খিস্তি খেউরে কাজ হয় না, শক্ত গাঁইট ওয়ালা বাঁশ জায়গামত ঢুকিয়ে ভালমত গুঁতাতে হয়।

কিন্তু আমিও জানি, তুমিও জানো, আমাদের সেই দরকারী বাঁশটি এখন জিপি-বসুন্ধরা-বিজিএম এ এর কাছে বন্দক দেওয়া আছে। একটা দেশপ্রেমী সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত আমরাই আমাদের বাঁশ খেয়ে পাছা মালিশ করতে করতে কর্পোরেটের গুষ্টি উদ্ধার করে যাবো। এতে বাঁশ বা কর্পোরেটের গাঁইট মোলায়েম হবে না।

এখন তুমি আমায় বল, বাংলাদেশে একটি দেশপ্রেমী সরকার কিভাবে আসবে?

প্রথমত এর তথাকথিত ১০০ জনকে সরকারী ক্ষেত্রে 'কানেকশন'হীন করতে হবে।

এই কানেকশান হীনটা কি ভাবে হবে? যেখানে সেনাবাহিনী-পুলিশ-সচিবালয়-বিশ্ববিদ্যালয়-আদালত-লীগ-জামাত-দল-জাতিসংঘ-এমচেম-বিজিএমইএ-চেম্বার এর হোমরা চোমরা থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর-কমান্ডারদের ছেলে-মেয়ে-মেয়েজামাইদেরকে এইসব কর্পোরেটে বড় পদে দেখি, তখন এই কানেকশান ভাঙার কথায় মনে বিশেষ বল পাইনা। সরকার আসবে সরকার যাবে, কিন্তু আমাদের দেশের 'শক্ত গাঁইট ওয়ালা বাঁশ' টি যাদের হাতে, সেই দলটি কোথাও যাবে না।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ দিয়ে জিপি-বসুন্ধরা-স্কয়ারে ইন্টর্নশীপ কর না, কে মানা করেছে। লাখ টাকার অফিসার এক্সিকিউটিভ হতে তো বাধা নেই। কিন্তু যেখান থেকে বাঁশটি ছোয়া যায়, সেখানে উঠতে হলে পাশ আর টেরনিং এর চাইতে, তোমার বাবার হাতের বাঁশ কত মোটা আর তাতে কয়টা গাঁইট, সেটাই মূখ্য।

হিমু এর ছবি
তাসনীম এর ছবি

কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডে সব কিছু পণ্য, কেনা এবং বেচার জিনিস। সুযোগ দিলে এরা সব জিনিস নিয়ে ব্যবসা করবে।

এদেরকে বাড়তে দিলে সামনে আসবে গ্রামীন ফোন শহীদ দিবস, ওয়ারিদ স্বাধীনতা দিবস আর একটেল বিজয় দিবস।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

এইটা গতবছরের ক্লিপঃ

................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

কাকুল কায়েশ এর ছবি

বুঝাই যাচ্ছে কালকের ঘটনা এরই ধারাবাহিকতা! কিন্তু তারপরও বলব, 'দুনিয়া কাঁপানো তিরিশ মিনিট' জাতীয় বুলি এধরনের তান্ডবকে আরো উস্কে দিচ্ছে!

---------------------------------------
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

"দুনিয়া কাঁপানো ত্রিশ মিনিট"এর সাফাই গাচ্ছি না ...

তবে গত দুইদিন ব্লগ আর ফেইসবুক দেখে ধারণা হয়েই যাচ্ছিল যে এইবারই প্রথম এসব বিশৃংখলা হয়েছে, এর আগে সবাই খালি পায়ে লাইন করে গান গাইতে গাইতে ফুল দিয়ে আসতো ... ব্যাপারটা যে তা না সেটাই একটু মনে করিয়ে দিলাম ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

কাকুল কায়েশ এর ছবি

আপনার সাথে আমিও সহমত। ৪৯ নং মন্তব্যে এ ব্যপারে একটু আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি!

---------------------------------------------
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

হিমু এর ছবি

এটার পুনরাবৃত্তি যে হোলো, তার অন্যতম কারণ, মিডিয়া এটা নিয়ে কিছু বলে নাই। কেউ কোনো প্রতিবাদ করে নাই। গত বছর মিনার বেয়ে কেউ উঠে পড়ে নাই, এই বছর উঠেছে, আগামী বছরের তিরিশ মিনিট কাঁপাকাঁপির পর শহীদ মিনারে রং গুলিয়ে হোলি খেলা হবে।

এটা "শহীদ" মিনার, সেটা সবাইকে মনে করিয়ে দেয়াও মিডিয়ার কাজের মধ্যেই পড়ে। এই দৃশ্যটা ঠেকানোর কাজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর, যারা এমনকি মূল বেদিতে পর্যন্ত মানুষকে উঠতে দেয় না, সেটা তাদের স্মরণ করিয়ে দেয়ার দায়িত্বও মিডিয়ার। মিডিয়া সেটা করেনি, বরং দুনিয়া কাঁপানো তিরিশ মিনিট কত সফলভাবে পালিত হলো, সেটার প্রশস্তি অর্ধেক পাতা ভরে গেয়েছে। এরপর শহীদ মিনারে কে হাগলো কে মুতলো তা নিয়ে কারো কিছু আসে যায় না।

এক পত্রিকায় দেখলাম কোন নেতা স্যান্ডেল পায়ে আর কোন নেতা জুতা পায়ে ফুল দিতে গেছে, সেটা বিতং করে ছেপেছে লাল কালি দিয়ে দাগিয়ে। লাভটা কী, যদি সাধারণ মানুষের চোখের সামনেই এরকম তাণ্ডব হয়, তাও পরপর দুই বছর?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

তাও পরপর দুই বছর?

দুই বছর কেমনে বুঝলেন? এই জিনিস আমি হাসিনার আগের আমলে হতে দেখেছি, সেটা বিরোধী দলের উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীদের কাজ এই ট্যাগ লাগিয়ে "জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন" নামে বিটিভিতে দেখানো হয়েছিল [সেই ভিডিও আমার কাছে নাই, দেখাতে পারবো না; তবে মনে আছে] ... তাই এই জিনিস সম্ভবত অনেক বছর ধরেই হয়ে আসছে, কখনোই ফোকাসে আসে নাই ...

এটার পুনরাবৃত্তি যে হোলো, তার অন্যতম কারণ, মিডিয়া এটা নিয়ে কিছু বলে নাই। কেউ কোনো প্রতিবাদ করে নাই। গত বছর মিনার বেয়ে কেউ উঠে পড়ে নাই, এই বছর উঠেছে, আগামী বছরের তিরিশ মিনিট কাঁপাকাঁপির পর শহীদ মিনারে রং গুলিয়ে হোলি খেলা হবে।

এই পয়েন্টে একমত ... অবশ্যই এইটা মিডিয়ার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে [যদিও গতবার কেউ মিনার বেয়ে উঠে নাই সেটা আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না] ... কিন্তু সমস্ত ব্লগে ব্যাপারটা যেভাবে লেখা হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে এই কালচার চালু করার দায় পুরাটাই গ্রামীণ ফোন/ প্রথম আলোর, এর আগে কখনও এমন হয় নাই [৫ আর ১৭ নাম্বার কমেন্ট খেয়াল করেন] ... এই জায়গায় আপত্তি ...

১৮ নাম্বার কমেন্টে আপনি বললেন,

আমার ধারণা, যদি এই দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিটের ভাঁড়ামো না চলতো, উপস্থিত জনতা এবং পুলিশ এই লোকগুলিকে শক্ত ধোলাই দিতে পারতো।

উপরের ভিডিও ক্লিপ তো তা বলে না ... এই ঘটনা বছর বছর ঘটে আসছে, কখনোই কাউকে ধোলাই দেয়া হয়েছে বলে শুনি নাই, আপনার কাছে অন্য তথ্য থাকলে দিতে পারেন ...

এই ঘটনার কথা মিডিয়ায় না আসা অবশ্যই অন্যায়, তেমনি আগেও এই ঘটনা ঘটেছে সেইটা চেপে গিয়ে সব কর্পোরেটের উপর চাপানোটাও নৈতিক মনে হল না ...

................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

হিমু এর ছবি

অর্থাৎ, কর্পোরেট গৌরবে আছে, আপদে নাই। তার জেল্লা প্রচার করতে গিয়ে এই কুকর্ম নিয়ে কথা বলার ফুরসত পায় না মিডিয়া।

"দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিট" এর পরিণতি এমনই। শুধু ঐ ৩০ মিনিটের খবরই মানুষের কাছে পৌঁছায়, বাকিটা গৌণ হয়ে যায়। এর দায় কর্পোরেটের না হলে, কার?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

আরেকটু স্পেসিফিক হই, এইখানে কর্পোরেটের দায়টা ঠিক কোন জায়গায় বলে মনে করেন?

১) বিশৃংখলা সৃষ্টি?

নাকি, ২) বিশৃংখলার কথা প্রচার না করা?

[ডিস্ক্লেইমারঃ শুধুমাত্র ফুল ছিটানোর ঘটনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, বাকি "দুনিয়া কাঁপানো ত্রিশ মিনিট" এর কন্সেপ্ট নিয়ে উপরে যেসব আলোচনা হয়েছে তার সাথে মোটামুটি একমত ... ]
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

হিমু এর ছবি

কর্পোরেটের দায়টাকে বাংলায় বলা যেতে পারে গ্রহণদায়, ইংরেজিতে এক্লিপসিং।

ব্লগে পড়ে জানলাম, ঘটনা যখন ঘটছে, একপাশে তখনও এই আয়োজন উপলক্ষে বকাবাহ্যি চলমান। সেখানে মোটামুটি জ্ঞানীগুণী লোকজন উপস্থিত, যারা জাতির পান আর চুনের দিকে বরাবর শ্যেনদৃষ্টি রাখেন। তাঁরা উপস্থিত থেকে কিছু করেন নাই, পরদিন পত্রিকায় কিছু বলেন নাই, বরং প্রশস্তি আর বন্দনা গেয়েছেন এই আয়োজন কত অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছে, তা নিয়ে।

আইনের চোখে কর্পোরেটের কোনো দায় নাই। কারণ শহীদ মিনারের কোনো মালিক দৃশ্যত নাই, আছে শুধু ৩০ মিনিটের ভাড়াটিয়া। নৈতিকতার চোখে, অবশ্যই আছে। শহীদ মিনার কী ও কেন? শহীদ মিনার অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক। এই সবকিছু ধামাচাপা দিয়ে তারা যেটা প্রচার করতে গেছে, সেটা হচ্ছে পুলিশের গুলিতে মানুষের মৃত্যুর কথা। প্রতিবাদের ব্যাপারটা তাদের এই নাটুকে প্রচারণায় ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে, আরো ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে এই তাণ্ডবের উদাহরণে। আমি যদি উপস্থিত শিশু হতাম, আমি দেখতাম, শহীদ মিনারে এসব করা যায়, কারণ যাদের সংগ্রামের কারণে এই শহীদ মিনার তৈরি হয়েছে, তাদের চোখের সামনেই কতগুলি লোক মিনার বেয়ে উঠে পড়ছে, ঝুলছে, ফুলের ডালা দিয়ে বাড়ি দিচ্ছে আরেক লোকের মাথায়। বড় হয়ে আমিও দিতাম।

এই যে এমপিরা স্কুল দেখতে যায়, আর শয়ে শয়ে বাচ্চা রোদে দাঁড়িয়ে থাকে, এমপিকে দোষ দেই কেন আমরা? কেন বাচ্চাগুলিকে ধমকাই না, বলি না যে কীরে পোলাপান তরা খাড়ায় থাকস ক্যান? কেন বাচ্চাদের বাপমাকে এমনকি স্কুলের মাস্টারকেও বকি না? কারণ দায়টা এমপির, সে যতোই এই দায় গা থেকে সরাতে যাক না কেন।

তুমি যদি যুক্তি দাও, দোষটা মিডিয়ার, তাহলেও তাকিয়ে দেখো, এরা স্পনসরের সাথে মিলেই কর্পোরেট।

আমি এই দৃশ্য আগে দেখি নাই। এরকম যে ঘটে, এটা আমার প্রত্যাশার বাইরে। ধরে নেই স্পনসরও আমার মতোই বাস্তবতা সম্পর্কে অজ্ঞ, কিন্তু মিডিয়াও কি তা-ই? তারাও কি বছরের পর বছর তাহলে এই দৃশ্য সম্পর্কে চুপ করে নেই? তারা ৩০ মিনিট সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান দিয়ে ভরে ফেলবে, আর ৩১তম মিনিটে তল্পিতল্পা গুটিয়ে বাড়ি চলে যাবে এইসব ঘটতে দিয়ে? এবং পরদিন একদম চুপ থাকবে, যাতে কেউ এই ঘটনা সম্পর্কে না জানে, পাছে তার স্পনসরের বদনাম হয়? এইরকম জ্ঞান আর এইরকম জ্ঞানদাতার দরকারটা কী, আমাকে বুঝিয়ে বইলো কোন একসময়।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ১ আর ২ কোনোটাই না করাও একটা অপশন কিংকু। সেইটারে বলে "হাগেও না, পথও ছাড়ে না!" কর্পোরেটের হাল হলো ঐ রকম।

প্রতিবছরই শহীদ মিনারে ফুল ছিটিয়ে 'গ্যাঞ্জাম' হয়। এইটা তো তারাও জানে। গত বছরের আলু পেপারে জিপি প্রথম পাতায় বিশাল জায়গা নিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছে পৃথিবীর নানা ভাষায় 'মা' কথাটি লিখে। অথচ তারা একটা লাইন লিখতে পারলো না যে "মায়ের ভাষার দিবসে শহীদ মিনারে ফুল ছিটিয়ে হট্টগোল করলে শহীদদের অপমান হয়, মায়ের অপমান হয়।" তারা কাছে থাকার শ্লোগান দেয়। কই এমন কোনো শ্লোগান তো দিলো না এখনো, "ভাইসব, আসুন হাতে হাত রেখে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে নয়।"

আমাদের সবকিছু নিয়ে, জনমত তৈরী নিয়ে, ইতিহাস বিষয়ে যুব সমাজকে সচেতন করা নিয়ে কর্পোরেটদের এতো চিন্তা ভাবনা; কই তাদের মধ্যে তো এইসব বিশৃঙ্খলা নিরসনে কোনো জনমত তোলার খবর পাওয়া যায় নাই। নাকি গিয়েছে, আপনার জানা থাকলে জানায়েন তো!

আমি বলছি না জিপি বা তাদের মতো অন্যরা এই বিষয়ে শ্লোগান শুরু করলেই এক ধাক্কায় শহীদ মিনারে এই ফুল ছিটানো বন্ধ হয়ে যাবে! কিন্তু তারা তরকারির মুরগিটা না খেয়ে ঝোলটা খাচ্ছে, এটা কেমন কেমন জানি লাগে!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি
মাসুদা ভাট্টি এর ছবি

ধন্যবাদ সবাইকে।

আমার কথা এখানে স্পষ্ট, কর্পোরেট বাণিজ্য সর্বগ্রাসী কিন্তু তাই বলে জাতি-ইতিহাসকে পণ্য করার ঘোর বিরোধী। কিছু কিছু জায়গায় আমাদের সীমারেখা টানা উচিত। বড় কথা হচ্ছে, বাণিজ্যের কাছে যখন আমরা বিক্রি হয়ে যাই তখন আমাদের নিজস্বতা বলে আর কিছুই থাকে না। একুশে ফেব্রুয়ারি কিংবা ১৬ই ডিসেম্বর, এটা কারো একার সম্পত্তি নয়, এটা একটি জাতি-রাষ্ট্রের সম্পদ, একে কোনও ব্যক্তি বিশেষ নিলামে তুলতে পারেন না, যদি কেউ সেই চেষ্টা করেন তাহলে তার প্রতিবাদ হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি এবং সেটাই এখানে করা হয়েছে।
তার মানে এই নয় যে, আমাকে গ্রামীণ মোবাইল বর্জন করতে হবে, এটা হয়তো সম্ভবও নয়, বাঘকে ছেড়ে ঘোঘ-কে নিয়ে বসবাসে পার্থক্য খুব একটা নেই। আধুনিক মানুষ হিসেবে আধুনিকতার অনুসঙ্গ মেনে নিতেই হবে, কিন্তু তা করতে গিয়ে যদি কারো অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি শুরু হয় তাহলে যার যার অবস্থান থেকেই সামর্থ অনুযায়ী প্রতিবাদ করা উচিত বলে মনে করি।
কেউ একজন বলেছেন, প্রথম আলো তে আমায় লিখতে দেয়া হয় না বলে আমি লিখেছি, আমি তো গ্রামীণ ফোনও ব্যবহার করি কিংবা ভবিষ্যতে হয়তো গ্রামীন ফোনের কাছে কোনও কাজের জন্য ধর্ণাও দেবো, তাই বলে তাদের কোনও কাজের সমালোচনা করার অধিকার কি বন্ধক দেয়া হয়ে গেলো? নিশ্চিত, নয়। আগেই বলেছি, কর্পোরেট বাণিজ্যের ভেতরে বসবাস করতে পারি, তার আগ্রাসনের শিকার হতে পারে আমার সমস্ত দিনের কর্মকাণ্ড কিন্তু নিজেকে, দেশকে, জাতিকে তার পণ্যে পরিণত হতে দিতে পারি না- প্র্রতিবাদটুকু এখানেই। আজকে ভাষা আন্দোলন নিয়ে বহু বিজ্ঞাপন নির্মিত হয়েছে, স্বাধীনতা দিবস নিয়ে হয়েছে, ৭ই মার্চ নিয়েও হবে (আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায়, তাকে খুশী করার একটা ব্যাপার আছে) হয়তো, কিন্তু কেউ যদি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে কেবলমাত্র ৩০ মিনিটের "গোলাগুলি" বলে বাণিজ্য করতে চায় তখন নিজেকে সামলানো মুশকিল হয়ে পড়ে- কর্পোরেট আমার সব খেয়েছে খাক, জাতি-ইতিহাসটুকু ছেড়ে দিক; এর বেশি কিছুই চাই না আর।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

প্রথম আলো তে আমায় লিখতে দেয়া হয় না বলে আমি লিখেছি, আমি তো গ্রামীণ ফোনও ব্যবহার করি কিংবা ভবিষ্যতে হয়তো গ্রামীন ফোনের কাছে কোনও কাজের জন্য ধর্ণাও দেবো, তাই বলে তাদের কোনও কাজের সমালোচনা করার অধিকার কি বন্ধক দেয়া হয়ে গেলো? নিশ্চিত, নয়।

একমত ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

প্রথম আলোর মিথ্যাচারেরে নমুনা
http://prothom-alo.com/media-detail/type/photo/album/255/media/1398
এই অবস্থা হইছে ৩০মিনিট দুনিয়া কাঁপানোর পরে।
---------------------
আমার ফ্লিকার

---------------------
আমার ফ্লিকার

Atiq এর ছবি

ভাষা আন্দোলন কি কেবলমাত্র ৩০ মিনিটের এক তুচ্ছ ঘটনা?

প্রিয় মাসুদা ভাট্টি,

৩০ মিনিটের ঘটনাটা তুচ্ছ হলো কি ভাবে, একটু বুঝিয়ে বলবে কৃতার্থ হই।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

বিনোদন আর বিনোদন!

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

Mashooq এর ছবি

Asif [i]Iqbal works for AC[i]I, not grameenphone.

Sorry, [b]Bangla text is not coming

হিমু এর ছবি

কেবল মাত্র নুরুজ্জামান মানিকের জন্যে হলেও মন্তব্যে একটা সহমত বাটন যোগ করা উচিত। ওনার কখনোই কোনো নিজস্ব বক্তব্য থাকে না, একমত, সহমত আর নুরুমানিকের্বামহাত ছাড়া আর ইনপুট বলতে গেলে আসেই না। মানিক ভাইয়ের খাটনি বাঁচানো হোক, মন্তব্যে সহমত বাটন যোগ করা হোক।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

অলম্বুষ এর ছবি

সহমত। দেঁতো হাসি

কুলদা রায় [অতিথি] এর ছবি

প্রথম আলোর মতি সাহেবের কীর্তির শেষ নাই। ৩০ মিনিটের আবিষ্কারটা মজাদার।
আনিসুজ্জামান তো লোক ভালই ছিলেন। সাজ্জাদ শরীফের উনি কি হন?
আর নূর সাহেবতো পয়সা পেলেই হল।
এদের কাছ থেকে ভাল মানুষি আশা করাটা অন্যায়।
মতি সাহেবের স্কিন ডিজিজ কি সেরেছে-যার দোহাই দিয়ে উনি সিপিবি থেকে কেটে পড়ে আম্রির কোলে উঠেছিলেন।

কুলদা রায়

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আমি ভাষা আন্দোলনকে মাত্র ৩০ মিনিটে বেঁধে ফেলার এই অপ-রাজনীতির কূটচালের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

আপনার সাথে প্রতিবাদে শামিল হলাম। সেইসাথে লিংকটা ছড়িয়ে দিলাম।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এখন পহেলা বৈশাখ নিয়েও বাণিজ্য হচ্ছে। ভবিষ্যতের জন্য খবরটা এখানে রেখে দিলাম।

Making money out of Baishakh festivity

BCL men arranged concerts, set up make-shift shops on DU campus
Rakib Ahammed

A section of Bangladesh Chhatra League leaders of Dhaka University pulled in big bucks by organising musical concerts and setting up shops on Dhaka University campus on the day of Pahela Baishakh.

Chhatra League leaders arranged three musical concerts and set up around 35 shops sponsored by some private companies including two cellphone operators on Wednesday, campus sources said.

They earned about Tk 10 lakh and the money was distributed among almost all the leaders of DU unit of Chhatra League, sources in the student wing said.

Of the three concerts those at Mall Chattor and in front of Arts Faculty were held without proper permission from the university administration.

Hundreds of advertisements of products of three private companies on the campus tainted the traditional image of Pahela Baishakh, the first day of Bangla New Year.

Besides, a number of former leaders allegedly extorted money from makeshift shops set up at Suhrawardi Udyan.

Each shop had to pay in between Tk 1,000 and 2,000 a day before the carnival, Chhatra League sources said.

“We didn't know private companies would sponsor the programmes,” said DU Proctor Dr KM Saiful Islam Khan.

Morally, nobody should make money by using spaces and structures of the university for sponsor companies, he added.

“We gave permission for the concert at the base of Raju Memorial. Two other spots were permitted for baul songs but the organisers held concerts there,” DU Proctor told The Daily Star.

A senior professor of DU Syed Manzoorul Islam said he had never seen such commercial shops on the campus on the occasion of Pahela Baishakh.

“The entire campus turned into a bazaar,” Prof Manzoorul said adding that DU is not the place for such business by student leaders.

DU authorities should constitute an enquiry committee to find out people involved in such activities, he added.

Chhatra League DU unit president Sheikh Shohel Rana Tipu said they had no commercial interest in arranging the programmes.

“We just helped students so that they could celebrate the Pahela Baishakh,” he added.

ডেইলি স্টার, এপ্রিল ১৭, ২০১০

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।