কারি পাউডার

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: মঙ্গল, ২৫/১২/২০১২ - ৮:৩৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১৮১১ এর ২৭ মার্চ লন্ডনে টাইমস কাগজে বিজ্ঞাপন বেরোয় যে অবসরপ্রাপ্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর অফিসারদের আর ভয় নাই, এইবার তারা ঝাঁ চকচকে নূতন হিন্দুস্তানি কফি হাউসে “নিখুঁতভাবে তৈরী ভারতীয় খাবার” চেখে দেখতে পারবেন। চার্লস স্ট্রীট আর জর্জ স্ট্রীটের কোণায় এই কফি হাউস, পোর্টম্যান স্কয়ারের কাছের এই জায়গা ততদিনে অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রেস্টুরেন্টের ভেতর ভারতীয় নানাবিধ দৃশ্যাবলীর ছবি টানানো দেয়ালের পাশে বাঁশ বেতের চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে তারা ফেলে আসা ভারত উপমহাদেশের কথা ফেলে দীর্ঘশ্বাস ফেলত আর অর্ডার করত কারি। আলাদা ধূমপান কক্ষে তারা টান দিত হুক্কায়। চার্লস স্টুয়ার্ট বলে এক লোক ছিল, দুষ্টলোকে কইত তার নাকি ষোলখানা ভারতীয় বউ আর সে নাকি রোজ ভোরবেলা গঙ্গায় ঢিপ ঢিপ ডুব দিয়ে গোসল করত, সেই স্টুয়ার্ট সায়েব এই জায়গার নাম দিয়েছিলেন “হুক্কা ক্লাব”।

রেস্তোরাঁর ভারতীয় মালিক শেখ দীন মুহম্মদ তার কাস্টমারদের নিশ্চিত করতেন যে ব্যবহৃত সকল মশলা, তেল, লতাপাতা...তা সে কারির জন্যই হোক বা হুক্কার, সকলই সরাসরি ভারত হতে আমদানিকৃত এক নম্বুরি খাঁটি মাল।

শেখ দীন মুহম্মদের বান্ধা কাস্টমারদের মধ্যে ছিলেন উইলিয়াম মেকপিস থ্যাকারে, যিনি সিলেট জেলার কালেক্টর পদে কাজ করার সময় ধুন্ধুমার পয়সা বানান। বুনো জংলা সিলেটে তিনি বেতন পেতেন অতি অল্প, বাৎসরিক ৬২ পাউন্ড মাত্র। এই পয়সায় ধনী হওয়া কষ্ট, তিনি ধনী হয়েছিলেন অন্য উপায়ে। সিলেটে তখন গিজগিজ করত হাতি, তিনি ঐগুলিকে ধরে কোম্পানীর কাছে বেচা শুরু করলেন। এই করে করে তার এতো পয়সা হল যে দশ বছর পর মাত্র ২৭ বছর বয়সে রিটায়ার করেন আর মিডলসেক্সের হ্যাডলিতে বিরাট এস্টেট কিনে কচি দেখে একটা সুন্দরী বিবাহ করে আনন্দে দিন কাটাতে থাকেন।

লন্ডনের অলিগলিতে অবসরপ্রাপ্ত কোম্পানীর অফিসার তখন ঝাঁকে ঝাঁকে, এদের ডাকা হত নবাব। থ্যাকারের মতই এই লোকগুলো বিবিধ এস্টেট কিনে নিচ্ছিল, আবার কেউ কেউ পার্লামেন্টে সিটও কিনত।

দীন মুহম্মদের রেস্টুরেন্ট ভাগ্য অবশ্য ভালো ছিল না, খোলার দুবছর হবার আগেই হিন্দুস্তানি কফি হাউস লাটে ওঠে। সেখানে খাবার ভালোই ছিল হুক্কাও মন্দ ছিলনা, কিন্তু লন্ডন শহরের কাছের অন্যান্য কিছু কফি হাউসের সাথে কম্পিটিশানে টেকা গেলনা। মুহম্মদের পার্টনার ব্যবসা চালিয়ে যান, আর দীন মুহম্মদ ব্রাইটনে হাম্মামখানা খোলেন যা ছিল শ্যাম্পুর জন্য বিখ্যাত।

ইংরেজ রান্নাঘরে কারি ঢোকার জন্য ভারতীয় বাবুর্চির তেমন প্রয়োজন হয়নি, নানান চ্যানেলে কারি ইংরেজ মেন্যুতে ঢুকে পড়ে। ভারতে কর্মরত ইংরেজের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ভারতের খাবারদাবার নিয়ে নানান কানকথা শুনত, সত্যিমিথ্যে মিশানো। ঘরের ছেলের চিঠিতে প্রায়ই থাকত ভারতীয় খাবারের বর্ণনা আর রেসিপি। বার্নফুট, ডামফ্রিশায়ারের দুই বোন উইলহেলমিনা আর স্টেফানা ম্যালকম তাদের দশ ভাইয়ের সাথে নিয়মিত পত্রালাপ করতেন, সেই ভাইদের অনেকেই ভারতে ভাগ্য ফেরাতে গিয়েছিল। এই দুই বোন ভাইয়ের পাঠানো রেসিপি দেখে তৈরি করতেন “মালগাটাওয়ি সুপ” আর আচার।

১৮৩১ সালে অরিয়েন্টাল ট্রান্সলেশন কমিটি এক প্যাম্ফলেট ছাড়ে “ইন্ডিয়ান কুকারি” নামে। এতে ছিল নানান ভারতীয় খাবার যেমন পুলাউ, কোরমা, দোপিয়াজা, খিচুড়ি, কাবাব আর আমের আচারের রন্ধনপ্রণালী। ১৮৪০ এর দিকে সেলিম কারি প্রোডাক্ট কোম্পানীর কর্ণধার এডমান্ড হোয়াইট বিজ্ঞাপন দেন যে কারি হল স্বাস্থ্যকর খাবার। ভিক্টোরিয়ান বিজ্ঞাপন প্রথা অনুযায়ী তিনি যে প্যাম্ফলেট ছাড়েন তার প্রথম পাতায় লেখা ছিল “কারিঃ এর স্বাস্থ্যকর ও ওষধি গুণাবলী এবং ঘরোয়া, বাণিজ্যিক ও জাতীয়ভাবে এর গুরুত্ত্বাবলী”। এইখানে তিনি কইলেন যে সেলিম কোম্পানীর খাঁটি ফিসকারি পেস্ট উত্তম হজমে সাহায্য করে, যা কিনা রক্ত চলাচল বেগবান করে আর মন হয় অতি ফুরফুরা। তিনি এমনকি এও বলে গেছেন যে কারি জীবন রক্ষায় সাহায্য করতে পারে। উদাহরন ছিল জেরুজালেম কফি হাউসের কাস্টমার হার্পার সায়েবের কেস, যিনি অসুস্থ হয়ে বহুবিধ ওষুধ ব্যবহার করেও যেখানে রুগ্নই ছিলেন সেইখানে তিনি কারি পেস্টের সুগন্ধী হার্বাল ব্যবহার করে হয়ে ওঠেন চনমনে ও সজীব!

প্রথম ব্রিটিশ যে কুকবুকে ভারতীয় রেসিপি প্রকাশিত হয় তা ছিল হ্যানা গ্লাসের দ্য আর্ট অফ কুকারি, ১৭৪৭ সালে। এইখানে পুলাউ এর তিনটে আলাদা আলাদা রেসিপি দেয়া হয়। পরের সংস্করনগুলোয় আসে মুর্গি আর খরগোশের গোস্তের কারি রেসিপি আর আচারেরও।

ব্রিটিশ কারির একটা সোজাসরল ফর্মুলা ছিল। পেঁয়াজ আর মাংস প্রথমে বাটারে ভাজা হত, তারপর কারি পাউডার দেয়া হত আর সাথে চিকেন স্টক বা দুধ। কিছুক্ষণ পর রান্না প্রায় হয়ে এলে এক ছিটা লেবুর রস দিয়ে কড়াই নামিয়ে ফেলা হত। নানান ভ্যারিয়েশনে এই কারির রেসিপিতে পুরাতন ইংরেজের কুকবুক ছিল ভরা। “বেঙ্গল চিকেন কারি” এর রেসিপিতে আসত বাংলার চাটনি, লেবুর আচার আর কাঁচা আম। “মালয় কারি” তে দেয়া হত কুরানো নারিকেল।

উপমহাদেশে মশলা ব্যবহৃত হত কিন্তু সাধারণত রান্নার একদম শেষ পর্যায়ে তা দেয়া হত। কাশ্মীরের রমণীরা আজও প্রস্তুত করে ভের, সরিষার তেল রসুন আর মরিচবাটার মিশ্রণ পেস্ট। এইটে শুকাতে সুতায় ঝুলিয়ে সিলিঙয়ে টানানো হয়। অল্প ভের গুঁড়া করে রান্নায় দেয়া হয় ঝাঁঝ আনতে। গুজরাটে মুসাফিরের দল পোঁটলায় রসুন গুঁড়া, মরিচ আর লবণ নিয়ে ঘুরত আর তেল সহযোগে ঐ মশলা ক্যাম্পফায়ারে রান্না করার সময় দিত। ভারতীয়রা গুঁড়া মশলা কম ব্যবহার করার পেছনে কারণ ছিল, একেক মশলার বাস বেরুতে একেক রকম সময় লাগে। সব মশলা গরম তেলে ছাড়লে ঠিকমত কোনটা রান্না হয়না তো কোনটা পুড়ে যায় দ্রুত, ভারি সমস্যা। বোম্বে আর ভাসাই এলাকার খ্রিস্টান পল্লীর লোকে এই সমস্যা সমাধানের জন্য করল কি, একেক মশলা আলাদা আলাদা ভাবে ঠিক সময় নিয়ে ভেজে তারপর সেগুলি গুঁড়া করে বোতলে ভরে রাখতে লাগল। এই মশলাই পরে বটলড মাসালা নামে দোকানে বিক্রি হতে থাকে।

ইংরেজদের স্বভাব ছিল রান্নায় পানি বা স্টক যোগ করার সময় কারি পাউডার ঢালা। মশলা প্রথমে ভেজে নিলেই বাস হয় বেশী, তাই ভারতীয় হাঁড়ির তলা সমান না হয়ে হয় গোল যেন মাঝখানের মশলা ভাজতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত তেল না লাগে। তেল ছড়িয়ে যাবার ভয় থাকেনা এভাবে।

ভারতীয় রান্নার রেসিপির তেঁতুল ইংরেজ বাবুর্চি না পেয়ে যোগ করল লেবুর রস, কারি রান্নার শেষে এইটা যুক্ত হত। বাংলার বিভিন্ন রেসিপিতে আমের বদলে এল আপেল, করলার বদলে শসা। মোগল পুলাউতে যে আঙুর দেয়া হত সেইটা ব্রিটিশ কারিতেও ঢুকে গেল। পরে এগুলি এতই ব্যবহৃত হত যে ইংরেজরা আপেল আঙুর কারিতে না থাকলে মনে করত কোন কারিই হয়নি। কোলকাতায় ১৯৫০ এ লিওঁ পেতি যখন স্পেন্স হোটেলে রেস্টুরেন্ট চালাতে গিয়েছিলেন তখন স্থানীয়রা হাঁ করে তাকিয়ে ছিল কারির মধ্যে আপেল আর আঙুর দেখে।

curry powder
ছবিঃ এম্প্রেস কারি পাউডার

জোসেফ এডমান্ডস এর বাছুরের গোস্তের কারি রেসিপিঃ
বাছুরের গোস্ত, ৪ পেঁয়াজ, ২ আপেল (কাটা), ২ টেবিলচামচ “এম্প্রেস” কারি পাউডার, ১ চা চামচ ময়দা, আধ পাইন্ট স্টক বা পানি, ১ চা চামচ লেবুর রস।
কাটা পেঁয়াজ আর আপেল অল্প মাখনে ভাজুন। গোস্তের স্লাইস বাদামী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন (আলাদাভাবে)। যোগ করুন কারি পাউডার আর ময়দা, পেঁয়াজভাজা আপেলভাজা। আরেকটু পানি বা স্টক। রান্না হয়ে এলে নামিয়ে আনার আগে যোগ করুন লেবুর রস। পরিবেশন করুন ধোঁয়াওঠা ভাতের সাথে, সাথে চলতে পারে আচার, ক্যাপসিকাম বা ক্ষীরা।

১৮৫৮ সালে ইংরেজ অফিসারের বউ ম্যাটি রবিনসন বোম্বে এসে লেখেন, “কিসব উদ্ভট ফল আর গান্ধা মাছ এরা দেখি গপগপিয়ে খায়, আমার তো মুখেই রোচেনা ছ্যা ঘেন্না! আর কারি ওয়াক থু, মুখেই দেয়া যায়না। আমাকে ইংরেজ কারি কেউ এনে দাও!” ইলাইজা অ্যাকটন যখন মডার্ন কুকারি বইয়ে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান কারির রেসিপি যুক্ত করেন তখন সাবধানবাণী দেয়া হয়, “কারো কারো এইটে প্রচন্ড টক লাগতে পারে, পেঁয়াজ আর রসুনও অনেকের স্বাদে অতিরিক্ত লাগা স্বাভাবিক।” আরেকটা বিষয় ছিল ঝাল, অ্যাংলো ইন্ডিয়ানরা রান্নায় অসম্ভব ঝাল দিত।

ইংরেজ বগলে করে এই কারির রেসিপি অন্যান্য কলোনিতেও নিয়ে গিয়েছিল। ১৮৬৪ সালে অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত রান্নার বইয়ে মাদ্রাজ, বেঙ্গল আর বোম্বে কারির রেসিপি ছিল। অস্ট্রেলিয়ানরা কারিতে দেয়া শুরু করল ওয়েটলবার্ড আর ক্যাঙ্গারুর লেজ।

চীনে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পেল সয়া সস, আরা নানান সয়া ভিত্তিক চাটনি। এইসব সস এরা ভারত নিয়ে গেল। আচার চাটনি অনেকদিন টিকত, জাহাজের লোকে ব্যারেল ভর্তি করে আচার রাখা শুরু করল লম্বা জার্নির জন্য। হ্যানা গ্লাস একটা চাটনির রেসিপির নাম দিলেন “ক্যাপ্টেন্স অফ শিপস”, এই আচার বলা হল টিকবে বিশ বছর। এতে ছিল বাসি বিয়ার, অ্যাঞ্চোভি, জয়ত্রী, লং, গোলমরিচ, আদা আর মাশরুম। তিনি লিখলেন যে “এক চামচ এই মালের সাথে এক পাউন্ড গলিত মাখন দিলেই হয়ে যাবে চমৎকার ফিশসস”।

ইংরেজ ক্যুজিনের একটি অত্যুত্তম সসের আইডিয়া এই ভারতীয় আচার থেকেই এসেছিল। ১৮৩০ সালে বাংলার প্রাক্তন গভর্নর লর্ড মার্কাস স্যান্ডিস উস্টারে গিয়েছিলেন লি অ্যান্ড পেরিন্স নামে এক দোকানে। ব্রড স্ট্রিটের এই দোকানে বিক্রি হত খাবার, কসমেটিক্স আর নানান ওষুধপাতি। এই দোকান আরো বিখ্যাত ছিল এশিয়া আর আমেরিকা থেকে আমদানিকৃত মশলা আর শুকনো ফলের জন্য। লর্ড স্যান্ডিস একটা টুকরা কাগজে আচারের রেসিপি লিখে দিলেন, লি অ্যান্ড পেরিন্স সেইটা এত কড়া করে করল যে স্যান্ডিসের মাথা চক্কর দিয়ে উঠল ঐ চেখে। পিছনে ব্যারেলভর্তি করে বাকিটা ফেলে রাখা হল, অবহেলায়।

কোন এক গ্রীষ্মে গুদাম পরিষ্কারের সময় দেখা গেল ঐ ব্যারেলগুলা থেকে অসম্ভব চমৎকার বাস বেরুচ্ছে, লি অ্যান্ড পেরিন্স চেখে দেখল বাজে গন্ধ সরে সসটা চমৎকার মশলাদার হয়েছে। সাথে সাথে ঐ রেসিপি অনুযায়ী উস্টারশায়ারে ফ্যাক্টরি গড়া হল, আর ১৮৫৫ সাল আসতে আসতে তা এতই জনপ্রিয় হয় যে বছরে তা বিক্রি হত ত্রিশ হাজার বোতল। এই সসই উস্টার সস বা উস্টারশায়ার সস (Worcestershire sauce) নামে দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে, এমনকি পরের দিকে তা ভারতেও চালান যায়।

...........................................................................................................................
লিজি কলিংহ্যাম রচিত Curry: A Tale of Cooks and Conquerors এর কিছু অংশের ছায়ানুবাদ।

পাদটীকা

  • ১. তামিল ভাষায় “মিলাগুথান্নি” বা গোলমরিচ-পানি সুপ
  • ২. এই লেবুর আচার সম্ভবত সিলেটি হাতকরা
  • ৩. Curry: A Tale of Cooks and Conquerors, পৃষ্ঠা ১২৮

মন্তব্য

নাফিসা এর ছবি

সুস্বাদু লেখা! হাসি

সত্যপীর এর ছবি

থ্যাঙ্কু থ্যাঙ্কু হাসি

..................................................................
#Banshibir.

নিলয় নন্দী এর ছবি

যাক রান্নার বইতে যে 'উস্টার সস' বলে যে বস্তুর নাম পরেছি তার রহস্যভেদ হলো।
লেখা -গুড়- হয়েছে

সত্যপীর এর ছবি

হ আমিও ফ্রিজ খুইলা উস্টার সসের বোতলরে কইতে পারুম, 'চিনছি তরে'! খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

দিগন্ত এর ছবি

আপনার লেখাগুলো যুদ্ধ থেকে সরে এখন খাবার-দাবারে চলে গেছে, যথারীতি দারুণ লেখা। শেয়ার দিলাম।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সত্যপীর এর ছবি

কিছু খানাদানা কইরা নেই, তারপর আবার যুদ্ধে যাওয়া যাবে নে। পেটে খেলে পিঠে সয়।

হুমায়ুন বাদশারে নিয়া কিছু লিখার ভাও করতেসি।

..................................................................
#Banshibir.

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

লেখা পরে পড়তেছি। আগে ছাগুকটের জন্যে একটা আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- লন দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সত্যপীর এর ছবি

সোনা ব্লগের মক্ষিরানী মার্কা পাবলিক সচলে দেখে খুব অবাক হইসিলাম। একটা পোস্ট সচলের প্রথম পাতায় আর একই সাথে সোনা ব্লগে স্টিকি করা, কি দিন পড়ল রে ভাই!

..................................................................
#Banshibir.

কুমার এর ছবি

সত্যিই সেলুকাস।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ঘটনাটা কী? মিস্‌ করে গেছি মনে হচ্ছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

http://www.sachalayatan.com/guest_writer/47290

এই (কমেন্ট সেকশান দ্রষ্টব্য) হইল ঘটনা পাণ্ডবদা।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

থ্যাঙ্কুস্‌! থ্যাঙ্কুস্‌!! কী অসাধারণ বিনুদন মিস্‌ কৈরা গেসিলাম!!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর এর ছবি

হ!

..................................................................
#Banshibir.

মন মাঝি এর ছবি

আপনি লুক খুব খ্রাপ! আপনার লেখা পড়লে খালি ক্ষুধা পায়, জিহবা টনটনায়, মুখ ভরে পানি আসে। কি মুশকিলরে বাবা!
-------------------

একটা মজার বিরক্তির কথা বলি। ঢাকায় একসময় (এখনো হয়তো) উস্টার সস্‌ বললে বেশির ভাগ দোকানি খালি Oyster সস্‌ বুঝত। কিছুতেই বুঝানো যেত না। এমনকি 'উস্টারশায়ার' বললেও না। তাদের ধারণা Oyster-ই উস্টার। একদম ইংরেজিতে বানান করে Worcestershire বলে বা লিখে দিতে হত তখন।
আমার ফ্রিজে এক বোতল উস্টার আছে বটে, কিন্তু আমি তার একটা ব্যবহারই কেবল জানি। এবং আনফর্চুনেটলি (?) সেটা মাংসে না খাইছে

****************************************

সত্যপীর এর ছবি

আমিও লেখতে লেখতে খালি লুল ফেলি, খুবই লজ্জার বিষয়।

উস্টার সস দিয়া মাংস রানছি তেমন আহামরি লাগেনাই খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ঢাকায় উস্টার সস্‌ ক্রয়সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা আমারও ঠিক একই। এখনো নিজে কিনতে না গিয়ে কাউকে পাঠাতে হলে কাগজে লিখে দেই Worcestershire সস্‌ (Oyster সস্‌ নয়)। তারপরও বেশির ভাগ সময়ে Oyster সস্‌ই দিয়ে দেয়। এই বস্তুটা আবার আমার একেবারেই না-পছন্দ।

আমিও আপনার মতো সাদাসিধা মানুষ। আমিও উস্টার সসের একটাই ব্যবহার জানি যেটা মাংস রান্না নয়। সেখানে আবার টাবাস্‌কো সস্‌ও লাগে। ঘটনা হচ্ছে কি, আমার ফ্রিজে এক বোতল টাবাস্‌কো সস্‌ আছে। এছাড়া আমার কাছে সেলারি সল্ট, ব্ল্যাক পেপার, লাইম এমনসব অতি দরকারি জিনিসও আছে। এখন আপনি যদি বাকিটা জোগাড় করতে পারেন তাহলে আমরা দুই সাদাসিধা মানুষ একটা সন্ধ্যা বানিয়ে ফেলতে পারি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

স্যাম এর ছবি

বাকিটা ২ রকম আমি নিয়ে আসতে পারি চোখ টিপি

মন মাঝি এর ছবি

ঠিকাছে, আমি টমাটো জোগাড় করে নিব না হয়। এমন মজার সালাদ থেকে শীত মৌসুমের প্রধান ও সেরা সব্জিটাই বা বাদ যায় ক্যাম্নে, বলুন দেখি? তাছাড়া টমাটোতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-সি আর 'লাইকোপিন' থাকে। এই 'লাইকোপিন' নাকি হার্টের জন্য মহা উপকারী বস্তু! তবে একটা সমস্যা হল, নেটে পড়লাম লাইকোপিনের পুরো উপকার পেতে এবং এবজর্ব করতে হলে নাকি সস বা জুস আকারে খেতে হয়। কি করা যায় বলুন দেখি, ঐ সালাদে কি টমাটো সস্‌ বা জুস ফর্ম্যাটে দেয়া যাবে? খারাপ লাগবে না?

****************************************

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ওই কোস্টে গেলে শিওর যেই কামটা করতেই হবে সেইটা হইল আফনের হাতের রান্না খাইতে হবে। এইটায় কোন ছাড় নাই। আর খাওন নিয়া লেখা তাও আবার সত্যপীরের হাতে, স্বাদু না হয়ে যাবে কই?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সত্যপীর এর ছবি

আমি জঘন্য রান্ধি, ঠেকায় না পড়লে নিজেই খাই না। পুস্ট দেইখা বিভ্রান্ত হইবেন না।

তবে চরম খানাদানার ব্যবস্থা করা হবে ছিন্তা নাই, আমার বউ মারাত্মক রান্ধে।

..................................................................
#Banshibir.

স্বপ্নহারা এর ছবি

ভাল প্রফেসররা প্র্যাকটিকালে লাড্ডাগোড্ডাই হওয়া ভাল। চোখ টিপি

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনি বলছেন পীরসাহেব সব প্র্যাক্টিক্যালেই লাড্ডাগোড্ডা? উনি তো অনেক বিষয় নিয়েই লেখেন, বিশেষ করে জমিদার আর রাজা-মহারাজার .......

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সত্যপীর এর ছবি

রাজাগজার আমি জানি লাড্ডাগুড্ডাই।

..................................................................
#Banshibir.

সুমন চৌধুরী এর ছবি

একদিন নেহারি নিয়া লেখেন দেঁতো হাসি

সত্যপীর এর ছবি

খাওয়াদাওয়ার লেখা পাইলেই নামায়ালাই সুমনদা, নেহারি নিয়া কিসু পাইলে নিগ্ঘাত দিমু!

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

হ, আপনে তেহারি নিয়া লেখেন। এইটার খালি গল্পই শুনলাম। সর্বশেষ মিথুনদা' ঢাকায় আইসা তীরুদা'র রান্ধা কাচ্চি আর আপনার রান্ধা তেহারির গল্প কইরা গেছেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

ইয়া মাবুদ, বঙ্গ মাতার কোন পুত্র সন্তান এত বড় “রন্ধন শিল্পী” হয় ! বেঁচে থাকুক বঙ্গ মাতার পুত্র সন্তান দেঁতো হাসি

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

সত্যপীর এর ছবি

আমার কথা নি কন? আমি অত্যাধিক বাজে বাবুর্চি, খালি পুড়ায় ঝুড়ায় ফেলাই নাইলে লবন সয়াসস বেশী দিয়ালাই মন খারাপ

তয় খাইতে উস্তাদ চাল্লু

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

ক্ষুধা লাগসে!!

ফারাসাত

সত্যপীর এর ছবি

আপেল দিয়া একখান কারি রান্ধেন দিকি।

..................................................................
#Banshibir.

স্বপ্নহারা এর ছবি

এই সিরিজের খানাগুলা কী শালিকা রেগুলার রাঁন্তেছে নাকি? তাইলে রওনা দিতাছি!

এডমন্টন গেসিলা, আঙ্গো এইহান্থেকে ঘুরে যাইতা?

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সত্যপীর এর ছবি

যামুনি ক্যালগেরী একসুমায়। এখন ০ ডিগ্রী বাদ্দিয়া তোমাগো -২৫/৩০ এ যাওয়ার শখ নাই খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

শাব্দিক এর ছবি

আমারো ক্ষুদা পাচ্ছে। মন খারাপ

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

সত্যপীর এর ছবি

খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

আলতাইর এর ছবি

লুল, আমি একইদিনে তিনবার অয়েস্টার সস কিন্না আনসি। বাসায় বড় বইনে আমারে 'রাসভ শিরোমণি' খেতাব দিসে!

সত্যপীর এর ছবি

হাহাহাহাহাহাহাহাহাহা!

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

ধুর, রাত সাড়ে তিনটার সময় এই পোস্ট পড়াই দিনের প্রথম ভুল ইয়ে, মানে...

সত্যপীর এর ছবি

কন কি সাড়ে তিনটা? ঘুম যান মিয়া!

..................................................................
#Banshibir.

দুর্দান্ত এর ছবি

কিলিংহাম কি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও বাংলার ইতিহাসে স্যান্ডিস নামক একজন গভর্নর ' ভর্তি' করলেন?
১৮৩০ সালে উস্টারশায়ারের জমিদারীতে কোন লর্ড ছিলনা, বরং সেখানে তখন গদিনশিন ছিলেন লেডি স্যান্ডিস-হিল। ১৮৩৬ সালে মাতার জমিদারি ওয়ারিসানসুত্রে প্রথম পুত্র আর্থার স্যান্ডিসের ওপরে বর্তায়। আর ১৮৬০ সালে আর্থারের ওফাতের পরে আর্থারের আদরের ছোটভাই মার্কাস জমিদারির হাল ধরে। আর্থার-মার্কাস দুই ভাই ব্রিটিশ সাংসদ ছিল।

এদের একজন বা দুইজনেই যে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির গভর্নর পদেও বহাল ছিল নাকি?

***
উস্টার সসের মূল উপাদান গাঁজিত এঞ্জভি মাছ। গ্রীক-রোমানেরা গাঁজিত মাছের সস কিভাবে হাভাতের মত গিলতো, তাতে আর গেলাম না। ইস্ট ইন্ডিয়া জন্মের বহু আগে থেকে ইউরোপ ও এশিয়ায় গাঁজিত মাছের সস প্রচলিত ছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নিজেও এশিয়া থেকে গাজিত মাছের সস মূলত পূর্ব এশিয়া থেকে ইউরোপে পাচার করেছে, কিন্তু তারা সেটাকে ডাকতো 'কেচাপ' নামে। এখনো ইন্দোনেশিয়ায় 'কেচাপ-ইকান' নামে মাছ ও সয় সসের এক অনবদ্য মিশ্রণ পাওয়া যায়। আঠারো শতকে ইংল্যান্ডে বেশকতগুলো এঞ্জোভি ও মশলার 'কেচাপ' এর রকমফের চালু ছিল। উস্টারশায়ারেও সেরকমই কিছু একটা চালু ছিল, যা পরে জনপ্রিয়তা পায় ও অন্যেরা ক্রমে লাটে ওঠে। মোট কথা 'ভারতীয় কারি'র অনুপ্রেরনা ছাড়াই উস্টারসসের জন্ম বেশ ভাব ভাবেই সম্ভব ছিল।

কারি বা আচার ফাচার নয়, চট্টগ্রামের চিংড়ী মাছের 'বালাচং' (মালয়শিয়ায় যেটা সাম্বাল ব্লাচান) বরং নানা বিচারে উস্টারসসের নিকট আত্মীয় বলা চলে।

সত্যপীর এর ছবি

উস্টারে লি অ্যান্ড পেরিন্সের দোকানে স্যান্ডিস সায়েব গেছিলেন, ঐখানে তার এস্টেট ছিল বলা নাই। স্যান্ডিসের নাম আমিও গভর্নর জেনারেলের লিস্টে পাইলাম না, স্যান্ডিস সায়েবের গল্প লি আর পেরিন্স সায়েবই প্রচার করেন মনে হৈতেছে। এইখানে একটা আস্তা বইই পাইলাম উস্টার সস নিয়া। সেইখানেও বিবিধ পাতায় সেই স্যান্ডিস সায়েবের রেসিপির গল্প। মিথই মনে হয়।

অ্যাঞ্চোভি ভালু পাই!

..................................................................
#Banshibir.

দ্রোহী এর ছবি

আমি খালি খাইতে ইচ্ছুক। রান্না করা বা রান্নার ইতিহাস পড়া কোনটাতেই ইচ্ছুক না। মন খারাপ

সত্যপীর এর ছবি

ক্যাঙ্গারু টেইল খাইসেন কিনা কন?

..................................................................
#Banshibir.

বন্দনা এর ছবি

এইখানে যে কারী পাউডার সাউথ-ইন্ডিয়ানরা ব্যবহার , আমার কেন জানি ভালোলাগেনা, যেই তরকারিই রান্না করেন না কেন সব একরকম লাগে এটা ব্যবহার করলে।আপ্নার খাইদাই সিরিজ বেশ ভালু পাই, তবে প্রত্যেক খাইদাই সিরিজের সহিত একটা করে রেসিপি বাধ্যতামূলক করে দিলে কেমন হয় দেঁতো হাসি

সত্যপীর এর ছবি

রেসিপি দিসি তো, আপেল দিয়া কারির রেসিপি (ওয়াক থু)।

..................................................................
#Banshibir.

স্যাম এর ছবি

পীরসাব থাইফুড কেমন লাগে?

সত্যপীর এর ছবি

জব্বর লাগে। দেশী চাইনিজের থাইসুপ হৈল দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সুপ।

..................................................................
#Banshibir.

কীর্তিনাশা এর ছবি

ব্যাপক ক্ষুধা লেগে গেল। যাই জলপাইর টক,ঝাল,মিষ্টি আচার দিয়ে ধোঁয়া ওঠা গরম খিচুড়ি খেয়ে আসি দেঁতো হাসি

লেখায় আপনাকে উত্তম জাঝা!

আর ছাগু কটের জন্য কোলাকুলি

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

সত্যপীর এর ছবি

খি খি। চতুর্দিকেই ছাগু আজকাল, হাত পাতলেই দুইচাইরটা ধরা পড়ে শয়তানী হাসি

..................................................................
#Banshibir.

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।