৭ই মার্চের সত্য ভাষণের খোঁজে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি
লিখেছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০১৪ - ১২:৩২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১)

৭ মার্চের ভাষণের শেষে বঙ্গবন্ধু কী বলেছিলেন তা অডিও, ভিডিও, টেক্সট তিন ভার্সনেই সর্বত্র পাওয়া যায়। ইন্টারনেটে সহজলভ্য। সবখানেই ভাষণ শেষ হয়েছে 'জয় বাংলা' দিয়ে। কিন্তু তবু বছরের পর বছর ধরে একটা বিতর্ক চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। কেউ কেউ দাবী করছেন বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণের শেষে 'জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান' বলেছিলেন আবার কেউ নাকি শুনেছেন ‘জয় বাংলা, জিয়ে পাকিস্তান’। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর সপক্ষে কোনো প্রমাণ কেউ দেখাতে পারেননি। রূপকথার গল্পের চরিত্রের মতো যা কিছু মানুষের কল্পনায় ঘুরপাক খায় শুধু।

সম্প্রতি এই বিতর্কের পুরনো পালকে নতুন রঙ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের উপ প্রধান সেনাপতি এ কে খন্দকার। প্রথমা থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বই '১৯৭১: ভেতরে বাইরে'। এই বইয়ের প্রথম সংস্করণে তিনি লিখেছেন

"বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণেই যে মুক্তিযুদ্ধ আরম্ভ হয়েছিল, তা আমি মনে করি না। এই ভাষণের শেষ শব্দ ছিল 'জয় পাকিস্তান'। তিনি যুদ্ধের ডাক দিয়ে বললেন, 'জয় পাকিস্তান'! এটি যে যুদ্ধের ডাক বা স্বাধীনতার আহ্বান, তা প্রচণ্ডভাবে প্রশ্নবিদ্ধ এবং তর্কাতীতও নয়।"

AK Khon 1
প্রথম সংস্করণে শুধু 'জয় পাকিস্তান'

প্রবল বিতর্ক তৈরি করে তিন দিনের মধ্যে প্রথম সংস্করণ শেষ হয়ে যায়। এবং চতুর্থ দিনেই দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করা হয়। সঙ্গে একটি সংশোধনী! এখানে তিনি লিখলেন-

বইয়ের ৩২ পৃষ্ঠার দ্বিতীয় স্তবকে আমি লিখেছিলাম "এই ভাষণের শেষ শব্দ ছিল 'জয় পাকিস্তান"। আসলে তা হবে "এই ভাষণের শেষ শব্দগুলো ছিল 'জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান"।

A K KHandoker Songsodhon
দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকার সংযোজন। [কৃতজ্ঞতা: মেহেদী হাসান রানা]

প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বক্তব্য শুনে তিনি এই সংশোধনী এনেছেন দ্বিতীয় সংস্করণে। ফলে নতুন করে বাক্যটি দাঁড়ায় এরকম

"বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণেই যে মুক্তিযুদ্ধ আরম্ভ হয়েছিল, তা আমি মনে করি না। এই ভাষণের শেষ শব্দগুলো ছিল 'জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান'!"

বাদ দেওয়া হয় "তিনি যুদ্ধের ডাক দিয়ে বললেন, 'জয় পাকিস্তান" বাক্যটি।

A K Khandoker 2
দ্বিতীয় সংস্করণে সংশোধনী। [কৃতজ্ঞতা: মেহেদী হাসান রানা]

জনাব এ কে খন্দকার দাবী করেছেন ভাষণটি তিনি শুনেছেন, কিন্তু কিভাবে শুনেছেন তা প্রকাশ করেননি। ৭ মার্চে তিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন, ফলে রেসকোর্সের ময়দানে তাঁর সরাসরি উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা কম। এই সংশোধনীর মাধ্যমে নিজের শ্রবণ এবং স্মরণশক্তির দুর্বলতা তিনি প্রমরণ করলেন। নিজের শ্রবণশক্তি এবং স্মরণশক্তির ওপর তিনি নিজে কতোটা আস্থাহীন, তা তিনি নিজেই প্রকাশ করে দিলেন। এরপরও তিনি পাঠকের আস্থা আশা করেন?

অনেকেই বলার চেষ্টা করছেন এ কে খন্দকার যেহেতু মুক্তিযুদ্ধের উপ-প্রধান সেনাপতি, অতএব তাঁর বক্তব্যই গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের উপ-প্রধান সেনাপতি হলেও, যুদ্ধে তাঁর অংশগ্রহণ অনেক পর থেকে। ১৫ মে তিনি পালিয়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন, তারও পরে তিনি যুদ্ধে যোগ দেন, ততোদিনে বাংলার নদীতে বয়ে গেছে অনেক রক্ত। কিংবা তারও আগে যখন এ কে খন্দকার পাকিস্তানের বিমান বাহিনী প্রধানকে খারাপ আবহাওয়ায় বিমান চালনা প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন, তখন এদেশের মানুষ ভাষার দাবীতে, স্বাধীকারের দাবীতে লড়ছিলো, রক্ত দিচ্ছিলো। মুক্তিযুদ্ধের উপ-প্রধান সেনাপতি হলেই সব জানা যায় না সম্ভবত। ৭ মার্চের রেসকোর্সের জনসভায় কী বলা হয়েছিলো সে ব্যাপারে তাঁর চেয়ে প্রত্যক্ষশ্রোতাদের সাক্ষ্যই বেশি গ্রহণযোগ্য।

২)

মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
বঙ্গবন্ধুর ভাষণে 'জয়/জিয়ে পাকিস্তান' তত্ত্ব যারা এখনো প্রচার করার চেষ্টা করেন তাদের অন্যতম প্রধান সম্বল বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, বিশিষ্ট লেখক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। 'বাংলাদেশের তারিখ' ও 'বাংলা ভাষার সংগ্রাম এখনো অসমাপ্ত' বইয়ের প্রথম সংস্করণে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের শেষে তিনি জুড়ে দিয়েছিলেন 'জিয়ে পাকিস্তান' শব্দ দু'টি। 'বাংলাদেশের তারিখ' বইটি কোনো স্মৃতিচারণমূলক বা প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতার বই না। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান অনেক বই লিখেছেন বিভিন্ন স্থান থেকে তথ্য সংকলন করে। 'যথাশব্দ', 'যার যা ধর্ম', 'মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যা' ইত্যাদি। তেমনি তাঁর আরেকটি বই 'বাংলাদেশের তারিখ', মূলত পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদগুলো থেকে বাছাই করা কিছু খবরের সংক্ষিপ্ত ভার্সনের সংকলন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণের যে নিউজগুলো পত্রিকায় ছাপা হয়েছিলো, সেখানে কোথাও 'জিয়ে পাকিস্তান' এর উল্লেখ নেই। [এই পোস্টটি দেখলেই এর সত্যতা পাবেন] সব নিউজ তিনি নিলেন পত্রিকা থেকে, কিন্তু 'জিয়ে পাকিস্তান' কোথা থেকে নিলেন? তার কোনো জবাব নেই।
Habib 2
বাংলা ভাষার সংগ্রাম এখনো অসমাপ্ত বইয়ের আলোচ্য অংশ [কৃতজ্ঞতা: অনিকেতদা]

'বাংলাদেশের তারিখ' বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণ থেকেই উধাও হয়ে যায় 'জিয়ে পাকিস্তান' শব্দ দুটি। এমনকি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের জীবদ্দশায় "বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপঞ্জি ১৯৭১-২০১১' নামে এই বইয়ের পরিবর্ধিত সংস্করণ প্রকাশ করে প্রথমা। যা প্রকাশিত হয় ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে। সেখানেও ৭ মার্চের ভুক্তিতে 'জিয়ে পাকিস্তান' শব্দ দু'টি নেই। অর্থাৎ মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান অনেক আগেই সরে এসেছিলেন 'জিয়ে পাকিস্তান' তথ্য বিতরণ থেকে। কিন্তু সেই যে চিলে কান নিয়েছিলো, সবাই এখনো তার পেছনেই ছুটছে এবং তাঁর ঘাড়ে বন্দুক রেখে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে গুঁজে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে 'জিয়ে পাকিস্তান'!

Habibur 1
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপঞ্জি ১৯৭১-২০১১ বইতে ৭ মার্চ ১৯৭১ তারিখের ভুক্তি

কবি শামসুর রাহমান
কবি শামসুর রাহমান তাঁর স্মৃতিচারণমূলক রচনা 'কালের ধূলোয় লেখা' বইতে এক জায়গায় উল্লেখ করেছিলেন যে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু ভাষণ শেষ করেছিলেন 'জয় বাংলা, জিয়ে পাকিস্তান' বলে! যা প্রথমে ধারাবাহিকভাবে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ হয়। এবং পরবর্তীকালে বই আকারে প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে।

Kaler Dhulay
কালের ধূলোয় লেখা বইয়ের প্রাসঙ্গিক অংশ। [কৃতজ্ঞতা: অনিকেতদা]

তিনি নিজে রেসকোর্স ময়দানে সেদিন উপস্থিত ছিলেন না। বেতারে শুনেছেন। কিন্তু ভাষণটি সেদিন বেতারে প্রচারিত হয়নি, হয়েছিলো পরদিন সকালে! অথচ জয়/জিয়ে পাকিস্তানপন্থীরা দিন তারিখ ভুলের হিসেবটুকু মেনে নিলেও শ্রবণশক্তির ভুলটুকু মানতে চান না। যদিও শামসুর রাহমান নিজেই পরবর্তীকালে নিজের ভুল স্বীকার করে নেন।
'কালের ধুলোয় লেখা' প্রকাশের পর বিতর্ক হয়। সেই বিতর্কের এক পর্যায়ে আলী যাকের লিখেন

"আমি জানি না, ৭ই মার্চ ১৯৭১ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় কবি স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন কি না। ঐ জনসভায় আমি ছিলাম এবং আমার সঙ্গে আরো ৮-৯ জন বন্ধু ছিলেন। আমার স্পষ্ট মনে আছে যে, ঐ জনসভায় তার বক্তৃতা শেষে বঙ্গবন্ধু কেবল একটি স্লোগানই দিয়েছিলেন আর তা হচ্ছে- 'জয় বাংলা'।

ALy Zaker
আলী যাকের এর চিঠির পূর্ণরূপ

এই বিতর্কে আরো অংশ নেন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ দৈনিক পত্রিকা 'দৈনিক পাকিস্তান' (পরবর্তীতে 'দৈনিক বাংলা') এর স্টাফ রিপোর্টার মনজুর আহমদ। যিনি রিপোর্টার হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ কাভার করতে সেদিন রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত ছিলেন। এবং তাঁর রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরদিন 'দৈনিক পাকিস্তান' এ ছাপা হয় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বিষয়ক প্রতিবেদন। তিনি লিখেন

"জনসভা ও বক্তৃতার বিবরণ সংগ্রহ করাই ছিল আমার এবং অন্যান্য সাংবাদিকের দায়িত্ব। এই গুরুদায়িত্ব পালনে চোখ কান সারাক্ষণ সজাগ রাখতে হয়েছে। সেই দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থেকে স্পষ্ট করেই বলতে চাই, বঙ্গবন্ধুর 'জয় পাকিস্তান' আমরা কেউ শুনিনি। পরদিনের কোনো পত্রিকাতেই এর কোনো উল্লেখ নেই। বক্তৃতার পুরো নোট ছাড়াও আমাদের অনেকেই সে বক্তৃতা টেপ করেছিলেন। রাতে রিপোর্ট লেখার সময় সেই টেপ বাজিয়ে আমরা নোট মিলিয়ে নিয়েছিলাম। না, 'জয় পাকিস্তান' কোথাও ছিল না। ছিল না বলেই পরদিনের পত্র-পত্রিকার সুবিস্তৃত বিবরণীতে কিংবা ওই জনসভা সংক্রান্ত আরো অসংখ্য ছোট বড় প্রতিবেদনে এর কোনো উল্লেখও ছিল না।"

Manjur Ahmed_Daily Pakistan
মনজুর আহমদ এর প্রতিবাদের পূর্ণরূপ

উল্লেখ্য শামসুর রাহমান ১৯৭১ সালে 'দৈনিক পাকিস্তান' এর সহকারী সম্পাদক ছিলেন।

এরপর শামসুর রাহমান নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি প্রিয় বন্ধু আলী যাকেরকে ধন্যবাদ জানান একটি বড় রকমের ভুল সংশোধন করে দেওয়ার জন্য। তিনি লিখেন

"আমি কবুল করছি, দুই সময়ের সম্পূর্ণ দু'টি আলাদা বক্তৃতার বক্তব্য এক মনে করে গুলিয়ে ফেলেছি। সত্যি কথা বলতে আমার দ্বিধা নেই, 'না আলী যাকের আমি দুই সভার কোনোটিতেই সশরীরে হাজির ছিলাম না। প্রথম বক্তৃতাটি আমি একটি চায়ের দোকানে বসে অত্যন্ত মনোযোগসহকারে শুনেছিলাম। কোনোকালেই আমি বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার ধৃষ্টতা দেখাইনি, কোনও সভায় কোনও উচ্চারণে তো নয়ই, এমনকি মনে মনেও নয়। আমি তো ভালো করেই জানি, তাঁর অবদানের কল্যাণেই আমরা আজ একটি স্বাধীন দেশের বাসিন্দা।
আর আমার এই ভুল ত্রুটির জন্যে, সকল বঙ্গবন্ধুপ্রেমী ব্যক্তির কাছে আমি লজ্জিত, নিজের কাছে তো বটেই।"

Shamsur Rahman Sorry
ত্রুটি স্বীকার করে শামসুর রাহমানের ক্ষমা প্রার্থণা

কবি শামসুর রাহমান ত্রুটি স্বীকার করে লজ্জিত হয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থণা করলেও এখনো তাঁর কাঁধে বন্দুক রেখে 'জিয়ে পাকিস্তান' বলে চিৎকার করে যাচ্ছেন অনেকে।

আহমদ ছফা
জয়/জিয়ে পাকিস্তানবাদীরা আহমদ ছফার ঘাড়ে বন্দুক রেখেও বঙ্গবন্ধুর মুখে গুঁজে দিতে চেষ্টা করেন 'জয় পাকিস্তান'। ছফা তাঁর 'একাত্তর: মহাসিন্ধুর কল্লোল' নামক প্রবন্ধের এক জায়গায় লেখেন:

"একটা কথা বলি, শেখ সাহেব যে ভাষণ দিয়েছিলেন তাতে জয় বাংলার সঙ্গে সঙ্গে জয় পাকিস্তান শব্দটিও উচ্চারণ করেছিলেন। এখন এই ভাষণ নিয়ে নানা বিতর্ক বিতণ্ডা চলছে। আমি এত ছোট্ট মানুষ! আমাকে সাক্ষ্য দিতে কেউ ডাকবে না। আমি যেমন শুনেছি, তেমনি বললাম। হতে পারে, আমার শ্রুতির বিভ্রম ঘটেছিল।"

Chofa
আহমদ ছফার বক্তব্য

'একাত্তর: মহাসিন্ধুর কল্লোল' নামের প্রবন্ধটি প্রথম ছাপা হয় ছফার 'আনুপূর্বিক তসলিমা এবং অন্যান্য স্পর্শকাতর প্রসঙ্গ' বইতে, ১৯৯৪ সালে। প্রকাশক স্টুডেন্ট ওয়েজ। এর পর এই প্রবন্ধটি ছাপা হয় তাঁর রচনাবলীতে এবং পরবর্তীকালে সলিমুল্লাহ খানের সম্পাদনায় 'বেহাত বিপ্লব ১৯৭১' বইতে।
৭ই মার্চ ১৯৭১ রেসকোর্সে অন্য সবাই প্রধানত বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনতেই গিয়েছিলেন, কিন্তু ছফা গিয়েছিলেন পত্রিকা বিক্রি করতে। এই সমাবেশ উপলক্ষে ছফা এবং তাঁর বন্ধুরা মিলে 'লেখক সংগ্রাম শিবির' এর পক্ষ থেকে 'প্রতিরোধ' নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন। যার নিচে থার্ড ব্র্যাকেটে লেখা ছিলো 'স্বাধীন বাংলার প্রথম পত্রিকা'। আট পৃষ্ঠার সে পত্রিকায় কবিতা লিখেছিলেন হুমায়ুন কবির, মুহম্মদ নূরুল হুদা, রফিক নওশাদ, রফিক কায়সার এবং ফরহাদ মজহার। পত্রিকা প্রকাশের ক্লান্তি এবং সমাবেশে বিক্রি ইত্যাদির কারনে ভাষণের দিকে তাঁর পূর্ণ মনোযোগ না থাকাটাই স্বাভাবিক। এমনকি এই পত্রিকার সম্পাদকীয়টা তিনি নিজে লিখেছিলেন কি না সেটাই তিনি এই প্রবন্ধ লেখার সময় মনে করতে পারছিলেন না। তিনি লিখেছেন,

"খুব সম্ভবত আমি সম্পাদকীয়টা লিখেছিলাম। এখন মনে পড়ছে না, হয়ত কিছু নাও লিখে থাকতে পারি।"

আহমদ ছফা নিজে যেখানে দ্বিধান্বিত, ঠিকঠাক মনে নেই বলে স্বীকার করছেন, সেখানে তাঁকে প্রামাণ্য সাক্ষী মেনে এখনো লড়াই করে যাচ্ছেন আমাদের 'জয় পাকিস্তান'পন্থীরা!
এমনকি ছফা এই প্রসঙ্গে আর কোথাও কোনোদিন লিখেননি পর্যন্ত।

নির্মল সেন
৭ই মার্চের 'জয় পাকিস্তান' প্রচারণায় অন্যতম শক্তিমান নাম নির্মল সেন। তিনি 'আমার জীবনে ৭১ এর যুদ্ধ' বইতে 'জয় পাকিস্তান' এর কথা উল্লেখ করেছিলেন বলে একটা প্রচারণা আছে। কিন্তু কোনোদিন কেউ সেই বইটি থেকে কোনো রেফারেন্স আজ পর্যন্ত দিতে পারেনি। কিছু অখ্যাত ব্লগপোস্ট লিঙ্ক মারফত জানা যায় তিনি লিখেছিলেন

"শেখ সাহেবের ভাষণের মাঝে মাঝে পেছনের দিকে তাকাচ্ছিলেন। পেছনে ছিল ছাত্রলীগ নেতারা। তিনি এবারের সংগ্রাম, মুক্তি সংগ্রাম বলে একটু থামলেন এবং পেছনে ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খানের কাছে কি যেন জিজ্ঞাসা করলেন। তারপর তিনি বললেন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান। শেখ সাহেবের মঞ্চে সামনের সারিতে চেয়ারে আমি ও আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বসে ছিলাম, যেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো। শেখ সাহেবের ভাষণের প্রতিটি অক্ষর গোগ্রাসে গিলছিলাম। এরপর সভা ভাঙল।"

তিনি যাঁকে সাক্ষী মেনেছিলেন, সেই আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী নিজেই এগুলো অস্বীকার করেছেন, এই নিয়ে তাঁদের তর্ক বাহাসও হয়েছিলো। যাহোক, এসবের কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র না পাওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে আলোচনার আগ্রহ নেই। বিপরীতে নির্মল সেন এর আরেকটি বই "মা জন্মভূমি" থেকে একটি উদ্ধৃতি দেই।

"আমি মনে করি, একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়াউর রহমান একটি ঘোষণা দিয়েছিলেন। ঘোষণাটি তাৎপর্যপূর্ণ এবং সাহসিকতাপূর্ণ। মরহুম জিয়াউর রহমান নিঃসন্দেহে সে জন্য কৃতিত্বের দাবীদার। একটি নির্দিষ্ট সময়ে এবং একটি নির্দিষ্ট প্রেক্ষিতেই এই ঘটনাটি বিবেচ্য। কিন্তু এর বেশি কিছু নয়। প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ। আজকের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। যদিও এই ঘোষণার আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। এছাড়াও একটি ঘোষণা ২৬ মার্চ রাতে শেখ সাহেব পাঠিয়েছিলেন বেতার মারফত। ঘোষণাটি আমাদের থানার ডাকঘরে এসেছিল। আহ্বান এসেছিল শেখ মুজিবুর রহমানের নামেই। আমি নিজের চোখে সে ঘোষণা দেখেছি। এ ব্যাপারে কারও ধার করা কথা বা তত্ত্ব শুনতে বা বুঝতে আমি রাজি নই।"

'মা জন্মভূমি' বইয়ের ৫২-৫৩ পৃষ্ঠায় এই অংশটুকু পাওয়ার কথা। আমি নিয়েছি নির্মলেন্দু গুণ এর 'আত্মকথা ১৯৭১' বই থেকে। মূল বইটি সংগ্রহের চেষ্টা করছি।

Nirmal Sen
'মা জন্মভূমি' বইতে ৭ই মার্চের ভাষণ সম্পর্কে নির্মল সেন এর বক্তব্য

নির্মলেন্দু গুনের এই বইটি প্রকাশের পর আরো প্রায় ৫ বছর বেঁচেছিলেন নির্মল সেন। কোনো প্রতিবাদ করেছেন বলে শুনিনি।

অলি আহাদ
অলি আহাদ এর 'জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ৭৫' বইটিতেও বঙ্গবন্ধুর ভাষণের শেষে 'জয় বাংলা। জয় পাকিস্তান।' আছে। কিন্তু এটা তিনি স্মৃতি থেকে লিখেননি। এই বইতে তিনি একই সঙ্গে নিজের ঘটনাবহুল রাজনৈতিক জীবনের বর্ণনা করেছেন, পাশাপাশি রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর তথ্য, দলিল, চিঠি ছবি ইত্যাদি সংকলন করেছেন। ৭ মার্চ বিষয়ে তাঁর নিজের কোনো স্মৃতি তিনি উল্লেখ করেননি। সম্পূর্ণ ভাষণটি তিনি তুলে দিয়েছেন বইতে, শেষে শুধু যোগ করে দিয়েছেন 'জয় পাকিস্তান' থিউরি।
এই সম্পূর্ণ ভাষণের মূদ্রিত ভার্সন অসংখ্য বইতেই আছে। অলি আহাদের বইটি ছাড়াও এই মুহূর্তে হাতের সামনে আছে এম আর আখতার মুকুল এর 'আমি বিজয় দেখেছি', মযহারুল ইসলাম এর 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব', মুজিবনগর সরকারে তাজউদ্দিন আহমেদ এর দফতরের কর্মকর্তা মোজহারুল ইসলামের 'আমি স্মৃতি আমি ইতিহাস' [যুদ্ধের পরে এই বইটি বঙ্গবন্ধু পড়েছিলেন, এবং লেখককে ডেকে নিয়ে প্রশংসা করেছিলেন] প্রভৃতি গ্রন্থ। স্বাধীনতার দলিলপত্র (১৫ খণ্ড) পাওয়া যায় ইন্টারনেটে। এই সবগুলো পূর্ণাঙ্গ ভাষণের মূদ্রিত রূপের শেষে শুধু 'জয় বাংলা' আছে।
এতোগুলোর পাশে অলি আহাদের একটি, যাও তিনি নিজে শোনেননি, নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেননি, সেটা প্রামাণ্য হতে পারে না।

হুমায়ুন আহমেদ
৭ই মার্চের ভাষণের মেষে বঙ্গবন্ধু 'জয় পাকিস্তান' বলেছিলেন, এই তথ্যটা সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে সম্ভবত হুমায়ুন আহমেদের নাম ব্যবহার করে। বেশিরভাগ মানুষ জানে যে হুমায়ুন আহমেদ তাঁর বিখ্যাত এবং জনপ্রিয় উপন্যাস 'জ্যোৎস্না ও জননীর গল্প' বইতে এই কথা লিখেছেন। চাঁদে সাঈদী হুজুরকে দেখার মতো অনেকে একবাক্যে ব্যাপারটা বিশ্বাস করে নিলো।
কিন্তু সত্য হচ্ছে হুমায়ুন আহমেদ এই কথা বলেননি! বরঞ্চ উল্টো কথা বলেছেন! 'জ্যোৎস্না ও জননীর গল্প' বইটির ভূমিকায় তিনি লিখেছেন

"জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের বিখ্যাত ভাষণ প্রসঙ্গেও একই ব্যাপার। জাস্টিস মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সাহেবের বিখ্যাত গ্রন্থ বাংলাদেশের তারিখ প্রথম সংস্করণে তিনি উল্লেখ করেছেন ভাষণের শেষে শেখ মুজিবুর রহমান বললেন, 'জয় বাংলা জিয়ে পাকিস্তান।' দ্বিতীয় সংস্করণে তিনি 'জিয়ে পাকিস্তান' অংশটি বাদ দিলেন। কবি শামসুর রাহমানের লেখা আত্মজীবনী যা দৈনিক জনকণ্ঠে 'কালের ধুলোয় লেখা' শিরোনামে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে সেখানেও তিনি বলেছেন শেখ মুজিবুর রহমানের শেষ কথা ছিল 'জিয়ে পাকিস্তান'। আরো অনেকের কাছে আমি এ ধরনের কথা শুনেছি, যারা আওয়ামী ভাবধারার মানুষ। সমস্যা হলো আমি নিজে ৮ এবং ৯ মার্চের সমস্ত পত্রিকা খুঁজে এরকম কোনো তথ্য পাই নি। তাহলে একটি ভুল ধারণা কেন প্রবাহিত হচ্ছে?"

H A_JOJG
জোৎস্না ও জননীর গল্প বইয়ের প্রাসঙ্গিক অংশ [কৃতজ্ঞতা: নাবিলা তাবাসসুম চৌধুরী]

এখানে স্পষ্টভাবেই দেখা যাচ্ছে যে হুমায়ুন আহমেদ এরকম কোনো কথা বলেননি। উল্টো তিনি হাবিবুর রহমান এবং শামসুর রাহমান কেন ভুল বার্তা ছড়াচ্ছেন তা জানতে চেয়েছেন, প্রতিকারের আহ্বান জানিয়েছেন। এবং স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন তিনি নিজে কোনো পত্রিকায় এরকম কোনো তথ্য পাননি।
তার মানে অতি আগ্রহীরা শুধু বঙ্গবন্ধুর ভাষণেই 'জিয়ে পাকিস্তান' এর মিথ্যে বুলি জুড়ে দিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে পারছেন না, হুমায়ুন আহমেদের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে তিনি না বললেও তাঁর লেখায় গুঁজে দিতে চাইছেন গুজবের 'জিয়ে পাকিস্তান!'

নীলিমা ইব্রাহিম এবং কলিম শরাফী
এরকম আরেকটি প্রচেষ্টা দেখা গেছে নীলিমা ইব্রাহিম এবং কলিম শরাফীর ক্ষেত্রে। ৭ই মার্চের ভাষণ বিতর্ক যখন চলছিলো তখন নীলিমা ইব্রাহিম বিরক্ত হয়ে শ্লেষাত্মক কিছু মন্তব্য করেছিলেন তাঁর 'আবিষ্কারের নেশায়' নামক প্রবন্ধে। যা ছাপা হয়েছিলো 'অগ্নিস্নাত বঙ্গবন্ধুর ভস্মাচ্ছাদিত কন্যা আমি' বইতে। সেখানে তিনি লিখেছিলেন

"শুনলাম ৭ মার্চে বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু নাকি শেষে বলেছিলেন, 'জয় বাংলা', 'জয় পাকিস্তান'। কলিম শরাফী এটা রেকর্ড করেছিলেন। আজকাল আওয়ামী লীগাররা সুযোগ পেলেই সে রেকর্ড বাজিয়ে জনসমাগম ঘটায়। কারণ ওই ভাষণ শুনেই তো সাত কোটি বাঙালি মরণযজ্ঞে প্রাণ আহুতি দেবার জন্য ছুটে এসেছিল। একবার কলিম শরাফীকে জিজ্ঞেস করলেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়, কিন্তু আবিষ্কারের গৌরব তো অর্জিত হবে না। যদি শেখ মুজিব 'জয় পাকিস্তান' ধ্বনি দিয়ে থাকেন, তাহলে আজ তাঁর স্মৃতি নিয়ে এতো বিরোধ কেন? রাজাকার, আলবদর, মুসলিম লীগ, জামাতি যারা সেদিন পাকিস্তান রক্ষা করতে চেয়েছিলেন, শেখ মুজিব তো তাদেরই মহানায়ক ছিলেন সেদিন। তাহলে এ স্বাধীনতা যুদ্ধটা হলো কেন, কার প্ররোচনায়? এবারের নব আবিষ্কার হবে শেখ মুজিব স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন। গোলাম আজম যেমন ভাষা আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামেরও তিনিই সেনানায়ক। সব সমস্যা মিটে গেল। আমরা যতোই 'জাতির পিতা' 'জাতির পিতা' বলে জয়ধ্বনি দেই না কেন, পিতা তো এখন মরণ সাগর পার হয়ে গেছেন, সাক্ষীর কাঠগড়ায় এসে তো আর দাঁড়াবেন না। তাহলে সার সত্য হলো, শেখ মুজিব পাকিস্তান রাখতে চেয়েছিল, গোলাম আজম বৈরীভারতের গলাধরে দেশটাকে খণ্ড বিখণ্ড করেছেন। এবারে আমরা সবাই আনন্দে হাততালি দিতে পারি, শেখ মুজিবের কলঙ্ক মোচন হয়েছে অন্ততঃ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, আহ্বান করেছিলেন সে সব মিথ্যা অপবাদ থেকে আজ তিনি মুক্ত হবেন-জামাতী কিছু গণতন্ত্রী আবিষ্কারকের মাধ্যমে।"

Nilima 1a
Nilima 2
নীলিমা ইব্রাহীম এর সেই তীর্যক মন্তব্য

নীলিমা ইব্রাহীমের এই বক্তব্যও নিজেদের পক্ষের বলে প্রচার করার চেষ্টা করছে 'জয় পাকিস্তান'পন্থীরা। সঙ্গে আবার জুটছে কলিম শরাফীর নাম। কলিম শরাফীর আত্মজীবনী 'ভরা থাক স্মৃতি সুধায়'তে এসব কিছুর উল্লেখ নেই যদিও।

আতাউস সামাদ
আতাউস সামাদ এর একটি প্রবন্ধে দেখা যায় তিনি লিখেছেন

"স্বাধীনতার ঘোষণায় ৭ মার্চের ভাষণটি মূল উপাদান হিসেবে গণ্য করা হয়। এ দেশের ইথারে এর চেয়ে বেশি বাজানো কোনো সঙ্গীত বা শব্দমালা খুঁজে পাওয়া যাবে না। কাজেই সেই বিখ্যাত ভাষণ থেকে কে বা কারা এবং কি কারণে এ শব্দটি গায়েব করে ফেললো সে ব্যাপারে আদালতের একটা রায় বা ব্যাখ্যা অতি জরুরি। কারণ মূল ভাষণ থেকে এই শব্দ দুটি গায়েব করে আদালতকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে বলে স্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে। বিবদমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে ২৫ মার্চ রাতে লিখিত ঘোষণার যথার্থতা প্রমাণ করা কঠিন। সেই জায়গায় ৭ মার্চের অবিকৃত ভাষণটি (জিয়ে পাকিস্তান সংবলিত) স্বাধীনতার ঘোষণার ব্যাপারে একটা শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। কাজেই এখানে ঐতিহাসিক প্রমাণ নষ্ট করার জন্য শুধু নৈতিক প্রশ্ন নয়, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আদালতের রায় থাকায় একটা আইনি প্রশ্নও এখন সামনে এসে পড়েছে। এই শব্দ কটি বিলোপ করাতে আদালতের যে রায় এসেছে তাতে এ শব্দ কয়টি যুক্ত থাকলে আদালতের বিবেচনা ভিন্ন হতে পারে।"

কিন্তু মূল ভাষণে এই শব্দ দু'টি তিনি কিভাবে এবং কোত্থেকে পেয়েছেন বা শুনেছেন তা বলেননি। আদালতই বা এই শব্দ দু'টি কোত্থেকে এনে যুক্ত করবে তাও তিনি বলেননি। স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেওয়া যায় তিনিও হাবিবুর রহমান প্রমুখদের দ্বারাই বিভ্রান্ত হয়েছিলেন।

বদরুদ্দীন উমর
সবশেষে আসা যাক বদরুদ্দীন উমর এর প্রসঙ্গে। 'একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের নায়কেরা' শীর্ষক প্রবন্ধেও তিনি একই দাবী করেছেন। বলেছেন

"৭ মার্চ ছাত্রলীগ নেতাদের চাপে রেসকোর্স ময়দানে তিনি ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ইত্যাদি বলে দেশের জনগণকে লাঠিসোঁটা নিয়ে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানালেও, নিজের বক্তৃতা শেষ করেছিলেন ‘জয় পাকিস্তান’ বলে। আমি এটা নিজের কানে শুনেছিলাম। এ কবি শামসুর রাহমান ‘কালের ধূলোয় লেখা’ নামে লিখেছেন তাঁর আত্মজীবনীতে, সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল কাজী ………….. লিখেছেন তার একাত্তরের যুদ্ধের স্মৃতি কথায়, বিচারপতি হাবিবুর রহমান লিখেচেছন ‘বাংলাদেশের তারিখ’ নামে তাঁর বইটিতে ঔপন্যাসিক হুমায়ুন আহমদ একাত্তরের ওপর লিখিত তাঁর ‘ জ্যোস্না ও জননীর …………’ নামক উপন্যাসের …………. লিখেছেন যে, অনেকের কাছে তিনি এ ধরনের কথা শুনেছেন আওয়ামী ভাবধারার মানুষ। সে সময় টেপ রের্কডারের প্রচলন হয়নি। কাজেই ব্যক্তিগতভাবে কেউ টেপে ধারণ করেন নি। রেডিওর কর্তৃত্ব তাই মার্চের পর আওয়ামী লীগের লোকদের হাতে পড়ায় তারা এই অংশে তাদের স্বভাবসিদ্ধ মিথাচারী অভ্যাসের কারণে মুছে ফেলেছিল। কাজেই তার কোন শাব্দিক রেকর্ডের কোন অস্তিত্ব আজ আর নেই। ৮ই মার্চের কোন পত্রিকাতেই ঐ বক্তৃতার পূর্ণ বিবরণ তখন ছাপা হয় নি। কিন্তু সেটাই ছিল বাস্তব সত্য এবং তৎকালে শেখ মুজিবের সামগ্রিক রাজনৈতিক অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।"

তিনি নিজের কানে বঙ্গবন্ধুকে 'জয় পাকিস্তান' বলতে শুনেছেন। এবং সাক্ষী মেনেছেন কবি শামসুর রাহমান, হাবিবুর রহমান, হুমায়ুন আহমেদ প্রমুখকে। সাক্ষীদের সাক্ষীরা প্রত্যেকেই নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন আগেই। বদরুদ্দীন উমরের ভুলটা কবে ভাংবে? আদৌ ভাংবে কি?

৩)

৭ই মার্চ ১৯৭১ সালে রেসকোর্স ময়দানে এবং আশেপাশে মিলিয়ে কতো লোক ছিলো? ঐ ডামাডোলের সময়ে সেটা গোনা বা আন্দাজ করা মুশকিল। জাহানারা ইমাম এর একাত্তরের দিনগুলি বইতে পাই

"রেসকোর্স মাঠের জনসভায় লোক হয়েছিল প্রায় তিরিশ লাখের মত। কত দূর দূরান্তর থেকে যে লোক এসেছিল মিছিল করে, লাঠি আর রড ঘাড়ে করে- তার আর লেখাজোখা নেই। টঙ্গী, জয়দেবপুর, ডেমরা এসব জায়গা থেকে তো বটেই, চব্বিশ ঘন্টার পায়ে হাঁটা পথ পেরিয়ে ঘোড়াশাল থেকেও বিরাট মিছিল এসেছিল গামছায় চিড়ে গুড় বেঁধে। অন্ধ ছেলেদের মিছিল করে মিটিংয়ে যাওয়ার কথা শুনে হতবাক হয়ে গেলাম। বহু মহিলা, ছাত্রী মিছিল করে মাঠে গিয়েছিল শেখের বক্তৃতা শুনতে।" (পৃষ্ঠা: ২৬)

মোজহারুল ইসলাম এর 'আমি স্মৃতি আমি ইতিহাস' বইতে বলেন

"অবশেষে সেই বহু প্রত্যাশিত ৭ই মার্চ পূর্ব পাকিস্তানের দ্বারে এসে উপস্থিত হলো। ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানে দুপুর থেকে জনতার তরঙ্গ উঠলো। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তাঁর ভাষণ দিতে এলেন। বিকেল বেলা। দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত প্রায় পনর লক্ষাধিক জনতা 'বঙ্গবন্ধু জিন্দাবাদ', 'জয় বাংলা' আর স্বাধীন বাংলাদেশ' ধ্বনিতে আকাশ বাতাস মুখর করে তুললো। জনতার এই জয়ধ্বনির মাধ্যমে ভাষণ দিতে উঠে শেখ মুজিব যে ঘোষণা করেছিলেন, ১৯৭১ খৃস্টাব্দের ৭ই মার্চের সেই ঘোষণা শুধু মাত্র বাংলাদেশের ইতিহাসেই নয়, সমগ্র পৃথিবীর ইতিহাসে লেখা হয়ে গেছে।"

ধরে নেওয়া যায় সেদিন সমাবেশে প্রায় লাখ বিশেক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। কেউ সেদিন 'জয়/জিয়ে পাকিস্তান' শব্দ দু'টি শোনেননি, শুধু শুনেছিলেন সেই গুটিকয়েক ব্যক্তি, যারা সেদিন সেখানে উপস্থিতই ছিলেন না!

আবুল মনসুর আহমেদ তাঁর আমার দেখা রাজনীতির ৫০ বছর বইতে লিখলেন

"স্বাধীনতা ঘোষণার দাবিদার তরুনদের খুশি করিবার জন্য শেখ মুজিব আরো দুইটা কাজ করিলেনঃ প্রথমতঃ উপসংহারে তিনি বলিলেনঃ আজিকার সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম। দ্বিতীয়তঃ কিছুদিন ধরিয়া তিনি সব বক্তৃতার শেষ করিতেন একসঙ্গে 'জয় বাংলা' 'জয় পাকিস্তান' বলিয়া। এই দিনকার সভায় প্রথম ব্যতিক্রম করিলেন। শুধু 'জয় বাংলা' বলিয়া বক্তৃতা শেষ করিলেন।"

Monsur
আমার দেখা রাজনীতির ৫০ বছর: আবুল মনসুর আহমেদ। [পৃষ্ঠা ৫৫৫-৫৫৬] [কৃতজ্ঞতা: মূর্তালা রামাত]

Moni Sing
জীবন সংগ্রাম: কমরেড মনি সিংহ [পৃষ্ঠা ২৭১]
M R Akter
চরমপত্র: এম আর আকতার মুকুল [পৃষ্ঠা ২৫]
Abdul Mannan
১৯৭১ এক সাধারণ লোকের কাহিনী: আব্দুল মান্নান খান [পৃষ্ঠা ১৪]
Siddik
মুক্তিসংগ্রাম থেকে মুক্তিযুদ্ধে যাত্রা: ইঞ্জিনিয়ার সিদ্দিক আহমদ [পৃষ্ঠা ৯]

তার বিপরীতে অসংখ্য মানুষ বলে গেছে, বলছে ৭ই মার্চে শুধু 'জয় বাংলা'ই বলা হয়েছিলো। যে প্রায় বিশ লাখ মানুষ সেদিন রেসকোর্সে উপস্থিত থেকে পিনপতন নিরবতায় এই ভাষণ শুনেছেন, তাঁদের বেশিরভাগই বছরের পর বছর ধরে বেতারে আর রেডিও টেলিভিশনে এই ভাষণ শুনছেন এই এতোগুলো বছর ধরে। কারো কাছে মনে হয়নি যে এই অডিও সংস্করণে দু'টো শব্দ বাদ দেওয়া হয়েছে।

সবচেয়ে বড় প্রচারণাটা চালানো হয় যে রেকর্ডটি পরদিনই এডিট করে বেতারে প্রচার করা হয়। কিন্তু সেদিন একাধিক অডিও ভিডিও রেকর্ড হয়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা এগুলো করেছেন। সবগুলোকে এক রাতে একই ভাবে সম্পাদনা করা হয়েছে? কোন সে এডিটর! সব খবরের কাগজকে বলে দেওয়া হয়েছে শব্দ দু'টি না ছাপতে? আর সাংবাদিকরাও মুখ বুজে শুনে রিপোর্ট থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছে শব্দ দু'টি? খুব বেশি কষ্ট কল্পনা হয়ে গেলো না ব্যাপারটা?

৪)
দেখা যাচ্ছে 'জিয়ে পাকিস্তান বা জয় পাকিস্তান' এর দাবীদার সত্যিকার অর্থে নেই। কোনো একভাবে একটি গুজব একবার ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিলো, সেটাই বছরের পর বছর ডালপালা মেলে এর ওর ঘাড়ে চেপে সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে। আর মুক্তিযুদ্ধের বিকল্প ইতিহাস সন্ধানীরা তা লুফে নিচ্ছেন। কেউ এমনকি তা একটু যুক্তি বিবেচনা চিন্তা চেতনা দিয়ে যাচাই করতে চেষ্টা করছেন না, যে বইতে লেখা সেই বইটাও ভালো করে পড়ে দেখার প্রয়োজন বোধ করছেন না। চিলে কান নিয়েছে শুনেই ছুটে যাচ্ছেন চিল পাকড়াও করতে।

আর যখনই এসব ভ্রান্ত ধারনাকে যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করার চেষ্টা করা হয়েছে, তখনই সেই চেষ্টাকে 'ভিন্নমত দমিয়ে রাখার চেষ্টা', 'বাকশালী গুণ্ডামী' ইত্যাদি ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।

বাংলাদেশে অনেকে আছেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত এবং প্রচলিত ইতিহাসকে আওয়ামী বাকশালীর ইতিহাস মনে করেন। অতএব এটা বর্জন করে নতুন ইতিহাস লিখতে হবে, নতুন ইতিহাস খুঁজতে হবে। বিকল্প ইতিহাস আনতে হবে, জানতে হবে, মানতে হবে। গ্রান্ড ন্যারেটিভের বাইরে আদার ন্যারেটিভগুলো খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে। না থাকলে বানিয়ে নিতে হবে। প্রয়োজনে মেহেরজান বানাতে হবে, অথবা জজ মিয়াদের আনতে হবে মঞ্চে।
তাঁদের খোঁজ দ্য সার্চ কোনোদিন শেষ হবে না, কারন সত্যের সবগুলো বিকল্পই মিথ্যা।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
[০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪]

কৃতজ্ঞতা: ফেসবুক গ্রুপ বইপড়ুয়া, আহমাদ রনি


মন্তব্য

মাসুদ সজীব এর ছবি

গুল্লি গুল্লি
নাজু ভাই একটা প্রশ্ন করতে চাইছি।

১। প্রথমে হাবিবুর রহমান/ছফাদের জিয়ে পাকিস্থান লেখার উদ্দেশ্য কি? উনারা কেউ-ই ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেননি, বিশেষ করে ছফা সংশয়ে থেকে গেছেন। অপরদিকে শামসুর রহমান ভুলের জন্যে ক্ষমা চেয়েছেন। যারা মিথ্যাচার করেছেন, এখনো করছেন কিংবা সংশয়ে ছিলেন (ইচ্ছে করলেই সেই সংশয় দূর করা যেত, এমন না ৭১ এর কেউ আর বেঁচে নেই, তারপরও সংশয়ে থেকেছেন) তাদের কে কি এমন কর্মের জন্যে দোষারপ করা যায় না?

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

২৫ মার্চ কালরাতের গণহত্যাকে যিনি পিটুনি অভিযান বলতে পারেন, তাঁর কাছ থেকে এর বেশি আশা করাই অন্যায়।
আর ছফা তো স্বীকারই করেছেন যে তাঁর ভ্রম হতে পারে। তিনি তো নিশ্চিত করে কিছু বলেননি।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

Fallen Leaf এর ছবি

বাংলাদেশে এত কন্ট্রোভার্সি যে ঠিক করেছি আগামী বছর তিনেক সব ধরনের তথ্য সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা থেকে নিজেকে বিরত রাখব। এই সব কন্ট্রোভার্সি সংক্রান্ত আলোচনা মাথায় অহেতুক চাপ সৃষ্টি করে। সেই সূত্র ধরে ফেসবুক একাউন্টও পার্মানেন্টলি ডিলিট করেছি। নতুন কোন ব্লগ লেখার আশে পাশেও যাচ্ছি না। কিন্তু আপনার এই তথ্য বহুল ও শ্রমসাধ্য লেখাটি তে একটি ধন্যবাদ দেয়ার থেকে বিরত থাকতে পারলাম না। চমৎকার লেখা। উত্তম জাঝা!
ছোট্ট একটা অনুরোধ আর তা হল আপনার লেখাটির হার্ড কপি কি দয়া করে কন্ট্রোভার্সি তৈরী কারী ব্যাক্তিদের কাছে (যারা এখনো জীবিত) পাঠিয়ে কোথায় কখন কিভাবে "নিজের কানে" ৭ মার্চের ভাষণে জিয়ে পাকিস্তান বা জয় পাকিস্তান এই সব শব্দ গুলো শুনেছেন তা কি এই "গুনী" লেখকদেরকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন?
আবারো অনেক ধন্যবাদ।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি কি মনে করেন, বদরুদ্দীন উমরকে এই লেখার হার্ডকপি কেন শ্বেত পাথরে খোদাই করেও যদি পাঠাই, উনি মানবেন? উনার শিষ্যরা মানবেন?

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ধ্রুব আলম এর ছবি

খারাপ কথা কই একখান। উনাদের পাছায় ট্যাটু মাইরা দিলেও বিশ্বাস করাইতে পারবেন না, যে উহা উনাদের পাছায় লেখা।

কইবো নিজের পাছা নিজে দেখা যায় না, দেখি নাই! দেখি নাই! তাই বিশ্বাস করবার পারুম না।

ব্যাপারটা হইলো, সত্য সত্যই। কারো বিশ্বাস-অবিশ্বাসে কিছু আসে যায় না। ফ্যাক্টে বিলিভ করতে হয় না, চোখের সামনেই থাকে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ধ্রুব আলম এর ছবি

চলুক

ধ্রুব আলম এর ছবি

গুরু গুরু

হিমু এর ছবি

৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ তারিখে দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত আবদুল গাফফার চৌধুরী লিখিত উপসম্পাদকীয়তে এসেছে:

৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু ‘জয় পাকিস্তান’ বলেছেন এটাও সম্ভবত খন্দকার সাহেব কানকথা শুনে লিখেছেন। তার আগে প্রয়াত বিচারপতি হাবিবুর রহমান (শেলী) এই কথাটি লিখে সমালোচিত হয়েছেন। তিনিও নাকি আমাদের ‘গোলআলু পণ্ডিত’ ড. আনিসুজ্জামানের কানে কানে বলে গেছেন যে, তিনি (বিচারপতি) বঙ্গবন্ধু জয় পাকিস্তান বলেছেন এটা স্বকর্ণে শুনেছেন। এটা নিয়ে বিচারপতির সঙ্গে আমার কলম যুদ্ধ হয়। আমাকে তিনি অত্যন্ত স্নেহ করতেন। এই কলমযুদ্ধের পর ঢাকায় তার সঙ্গে দেখা হতেই তিনি আমার কাছে স্বীকার করেন, তিনি বঙ্গবন্ধুর ৪ জানুয়ারির (৭১) ও ৭ মার্চের (৭১) ভাষণকে গুলিয়ে ফেলেছেন। ৪ জানুয়ারির নির্বাচন বিজয়ের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু জয় পাকিস্তান বলেছিলেন, ৭ মার্চের ভাষণে বলেননি। তিনি বিভ্রান্ত হয়েছিলেন।
তাকে বলেছি, মনে এই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও বিভ্রান্তি নিয়ে কথাটি আপনি কেন লিখতে গেলেন? তিনি বিব্রতভাবে বলেছেন, যে পত্রিকাটিতে আমার এ সম্পর্কিত লেখাটি বের হয় তার সম্পাদক আমাকে উৎসাহ দিয়ে বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে জয় পাকিস্তান বলেছেন কথাটা যখন আপনার মনে জেগেছে তখন লিখে ফেলুন। একটা কনট্রোভাসি সৃষ্টি হোক। কনট্রোভাসির মধ্য দিয়ে সত্য বেরিয়ে আসবে।’ আমি আমার প্রিয় বিচারপতি শেলী ভাইকে বলেছিলাম, আপনি ওই অসাধু সম্পাদকের ফাঁদে পা দিয়েছেন। আপনাকে দিয়ে কনট্রোভাসি সৃষ্টি করে ওই সম্পাদক তার কাগজের কাটতি বাড়াবেন, কিন্তু আপনি সুনাম হারাবেন। এই একই খেলার ফাঁদে একে খন্দকারও পা দিয়েছেন কিনা আমি জানি না। তবে ওই সম্পাদকের প্রকাশনা সংস্থাই খন্দকার সাহেবের বইটি প্রকাশ করেছে। বিতর্কের ঝড়ে বইটি নাকি হু হু করে বিক্রি হয়ে গেছে। তাতে পকেট ভারি হয়েছে মুনাফালোভী সম্পাদকের। সুনাম খোয়াচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের একজন বর্ষীয়ান নেতা।

[সূত্র খবরের লিঙ্ক, স্ক্রিনশট]

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

নির্মল সেন গাফ্ফার চৌধুরীকে সাক্ষী মেনেছিলেন, গাফ্ফার চৌধুরী অস্বীকার করার পর কলম যুদ্ধ হয়। 'জয় পাকিস্তান'পন্থীরা এখন বলছেন গাফ্ফার চৌধুরীর চেয়ে নির্মল সেন বেশি বিশ্বস্ত। অতএব গাফ্ফার চৌধুরী বাতিল। হাসি

গাফ্ফার চৌধুরী এখনো কি জানেন না যে এই কন্ট্রোভার্সি তৈরির পেছনে শুধু পত্রিকা আর বইয়ের কাটতি বাড়ানো উদ্দেশ্য না?
টেকাটুকা তো এখন হাতের ময়লা!

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মরুদ্যান এর ছবি

দরকারি লেখা। চলুক

যাদের চুলকানি তাদের কে যতই প্রমাণ দেখান বলবে সবই ফটোশপ।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হ, সবই ফটোশপের দোয়া। ব্যাপক খাটনি গেছে চোখ টিপি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কনফুসিয়াস এর ছবি

এত সব প্রমাণ যাদের জন্যে দিলেন, তাদের মস্তিষ্ক এগুলো নেবার জন্যে তৈরি বলে মনে হয় না।
তবু ভাল, এগুলো দলিল হয়ে রইলো। অনেক ধন্যবাদ নজু ভাই।

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আরেহ্, গরীবের বাড়িতে হাতির পদধূলি!
এগুলো লিখে কিছু হয় না খুব ভালো করেই জানি। তবু সময়টা নষ্ট করলাম আরকি হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

গুরু গুরু
দোয়া করি, দীর্ঘায়ু হোন। আর এভাবে সত্য উদঘাটন করুন।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হাসি
অনেক ধন্যবাদ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

গুরু গুরু গুল্লি

এর থেকে কনভিন্সিং ভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করা সম্ভব না। যারা জয় পাকিস্তান থিয়োরির প্রবর্তক, তারা 'শুনেছি', 'অমুক বলেছে', 'তমুক করেছে' এইসব ধানাই পানাই বাদ দিয়ে ৮ই মার্চের কোন পেপার কাটিং দেখাক। গোল মিটে যাক।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

পত্রিকা সব বুর্জোয়াদের দখলে, পত্রিকা সবসময় সত্য কথা বলে না। সত্য কথা বলে শুধু অমুকে তমুকে আর উজবুকে। বুঝতে হবে। চোখ টিপি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

Raihan Jamil এর ছবি

Fantastic writing! There is NO DOUBT that Bangabandhu only said Joy Bangla.

But I would like to take this opportunity and share with people that the text of the speech is hugely distorted in many places. The version in our constitution is also full of mistakes.

The most researched version of the March 7 speech can be found here:

http://cbgr1971.org/index.php/history/historical-milestones/38-march7speech

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ইচ্ছে ছিলো এই পোস্টে অডিও ভিডিও আর টেক্সট জুড়ে দেওয়ার। কিন্তু এর মধ্যেই পোস্ট হাতি সাইজ হয়ে গেছে আর ততক্ষণে ক্লান্তিও চেপে বসেছিলো বলে দেইনি। হয়তো কখনো সময় পেলে দ্বিতীয় খণ্ড করবো। অডিও ভিডিও আর টেক্সট এর সহীহ কপি নিয়ে, এগুলোর ইতিহাস নিয়ে।
আপনার লিঙ্কের জন্য ধন্যবাদ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অভিমন্যু . এর ছবি

এই একে খন্দকারের বই ছাপা হবার পর থেকে এইসব ‘জিয়ো’ দের জ্বালায় অতিস্ট হইয়্যা গেছিলাম, কইছে দেখেলেনতো আওয়ামী লীগের লোকেরাও কয় খালি তোরাই আন্ধা। যাউকগ্যা এইবার পইপই কইর্যা এগুলারে জবাব দিমু।
অনেক উপকার করলেন ভাই। উত্তম জাঝা!

________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি

অতিথি লেখক এর ছবি

জবাব দিবেন কিভাবে?
'জিয়ো'দের ষ্ট্যাটাসে গতকাল শেহাব ভাইয়ের পোষ্টের লিঙ্কসহ কমেন্ট করলাম। সকালে দেখি সেই কমেন্ট মুছে দিয়েছে। এই পোষ্টের ডোজ তো আরও কড়া। ওটা তো তাও কয়েকঘন্টা ছিল, এটা শেয়ার করা মাত্রই মুছে দিবে।

তবে এই পোষ্ট এখানে আসার পর থেকে 'জিয়ো'দের উৎপাত উল্লেখযোগ্যহারে কমে গেছে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

টেনশন নিয়েন না, তারা নতুন উপাত্ত খুঁজতেছে। একটু সময় দেন না ভাই, এমন করেন কেন? কদিন পরেই তারা আরো অনেক মহারথী নিয়ে হাজির হবে দেখবেন।

একটা ব্যাপার খেয়াল করেন। প্রথমে ছিলো ভাষণের শেষে 'জয় বাংলা, জয়/জিয়ে পাকিস্তান'। এ কে খন্দকার প্রথম সংস্করণে সেখান থেকে 'জয় বাংলা' স্রেফ ফেলে দিলেন। শুধু 'জয় পাকিস্তান' হয়ে গেলো!
যদিও দ্বিতীয় সংস্করণে আবার 'জয় বাংলা' ফিরে এলো। কিন্তু এই প্রপাগণ্ডা প্রচারকারীদের টেন্ডেন্সিটা খেয়াল করুন। তারা দ্বিতীয় সংস্করণকে মনে রাখে না। প্রথম সংস্করণকেই মনে রাখে। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

কদিন পরে হয়তো এই প্রথম সংস্করণের দোহাই দিয়ে শুধু 'জয় পাকিস্তান' তত্ত্বটাই টেকানোর চেষ্টা চলবে।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

গুরু গুরু গুল্লি গুল্লি গুল্লি

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ আব্দুল গাফফার রনি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কোন যুক্তি বা প্রমাণকে স্বীকার না করতে যারা বদ্ধপরিকর তারা এগুলো কিছুই মানবে না। তারা অবশ্য এটা এখনো ঠিক করে উঠতে পারেনি 'জিয়ে পাকিস্তান' বলা হয়েছিল না কি 'জয় পাকিস্তান' বলা হয়েছিল। অচিরেই 'পাকিস্তান জিন্দাবাদ', 'পাকিস্তান পায়েন্দাবাদ', 'লং লিভ পাকিস্তান' ইত্যাদি শুননেওয়ালা ঐতিহাসিকরাও মঞ্চে আবির্ভূত হবেন বলে আশা করছি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এদের সুবিধা হলো এদের কখনো পরিশ্রম করতে হয় না, খাটতে হয় না। 'অমুকে বলছে' বলে দিলেই কেন জানি সবাই বিশ্বাস করতে শুরু করে।
আর আমরা খেটেখুটে সব রেফারেন্স জোগাড় করি, তবু এগুলা সব ভুয়া হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

স্যাম এর ছবি

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার তথ্যবহুল পোষ্ট । অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ।

আজকে বাংলানিউজে মজার একটি খবর দেখলাম । এখনে শেয়ার করছি... এ কে খন্দকারের বহুল আলোচিত ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ এর সব বক্তব্যকে শতভাগ সত্য বলেই উল্লেখ করেছে বিএনপি। এর মধ্য দিয়ে দলটির রাজনীতির প্রধানতম স্লোগান ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া’ বক্তব্যটি বাতিল করে দিচ্ছেন দলের নেতারা! ওই বইয়ের ৬০ পৃষ্ঠায় একে খন্দকার বলেছেন, ‘মেজর জিয়ার ঘোষণাটিকে কোনোভাবেই স্বাধীনতার ঘোষণা বলা চলে না। মেজর জিয়া রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না বা ঘোষণা দেওয়ার মতো উপযুক্ত ব্যক্তিও ছিলেন না। যে ঘোষণা চট্টগ্রাম বেতার থেকে তিনি দিয়েছিলেন ঠিক একই ধরনের একাধিক ঘোষণা ২৬ ও ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম বেতার থেকে বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ও ছাত্রনেতাও দিয়েছিলেন, এমন কি বেতারকর্মীরাও একই ধরনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।’ খন্দকারের এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হয়েছে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করা অবান্তর। আর কেবল তাই নয় জিয়াউর রহমানকে একজন অনুপযুক্ত ব্যক্তি হিসেবেও চিহ্নিত করেছেন বইয়ের লেখক।
তারা বলছেন, এ বিষয়ে সামান্য প্রতিবাদ না করে বইয়ের বক্তব্যকে শতভাগ সত্য বলে একে খন্দকারের বক্তব্যকেই মেনে নিচ্ছেন বিএনপি শীর্ষ নেতারা।

যাক শেষ পর্যন্ত একটা মিথ্যা প্রপাগান্ডার বিনিময়ে তবু একটা সত্য প্রতিষ্ঠা পেল । এটাই সান্তনা!
এসজিএস শাহিন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রণদীপম বসু এর ছবি

চলুক

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রণদীপম বসু এর ছবি

অসাধারণ ডকুমেন্টারি নজু ভাই ! অসাধারণ কাজ ! চলুক

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বাংলাদেশে অনেকে আছেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত এবং প্রচলিত ইতিহাসকে আওয়ামী বাকশালীর ইতিহাস মনে করেন। অতএব এটা বর্জন করে নতুন ইতিহাস লিখতে হবে, নতুন ইতিহাস খুঁজতে হবে। বিকল্প ইতিহাস আনতে হবে, জানতে হবে, মানতে হবে। গ্রান্ড ন্যারেটিভের বাইরে আদার ন্যারেটিভগুলো খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে। না থাকলে বানিয়ে নিতে হবে। প্রয়োজনে মেহেরজান বানাতে হবে, অথবা জজ মিয়াদের আনতে হবে মঞ্চে।
তাঁদের খোঁজ দ্য সার্চ কোনোদিন শেষ হবে না, কারন সত্যের সবগুলো বিকল্পই মিথ্যা।

মিজান, পিষে ফ্যালো

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

অসাধারণ, নজরুল ভাই। স্যালুট।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হিমু এর ছবি

এই গুজবকে কালানুক্রমে সাজাতে পারলে ভালো হতো। তাহলে "গুজবুক জিরো" কে, বুঝতে সুবিধা হতো।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বইগুলো প্রকাশের কালানুক্রম তৈরি করতে পারবো, সেটা কোনো ব্যাপার না। ৫ মিনিটের কাম।
কিন্তু প্রথম গুজবটা সম্ভবত মুখে মুখে ছড়ানো হয়েছিলো, কোনো রেফারেন্স নাই। খুঁজছি। চেষ্টা করবো পরে একসময় একটা টাইমলাইন তৈরি করতে

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

এক লহমা এর ছবি

টাইমলাইনটার অপেক্ষায় থাকলাম। গুজবুক ০-কে যদি নাও পাওয়া যায়, ১, ২, ৩ -গুলোকে চিহ্নিত করতে পারলে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে!

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সৌরভ কবীর এর ছবি

এই মিথ্যাটা প্রথম ছড়ানো নিয়ে আজ সকালেই একটা লেখায় পড়ছিলাম।

The only media outlets which, on March 8,1971, reported that Bangabandhu had raised the slogan of Joi Pakistan after he had spoken of Joi Bangla were the newspapers Dawn from Karachi and the Pakistan Times from Lahore. They lied. They wished to reassure West Pakistan that East Pakistan's leader still wished it to be part of Pakistan.

সূত্র এখানে।

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এগুলো দেখেছি। কিন্তু শামসুর রাহমানদের কানে কানে কে বলে দিয়ে গেছিলো সেটা বুঝতে চেষ্টা করছি।
হাবিবুর রহমানের 'বাংলাদেশের তারিখ' বইটাকেই সবাই উৎস মানেন, শামসুর রাহমানের লেখাটাও। কিন্তু এগুলো ২০০০ সালের পরে। নীলিমা ইব্রাহিমের লেখা পড়ে জানতে পারি ৯০ এর মাঝামাঝি সময়ে এই বিতর্ক হয়েছিলো। তখনকার কুশীলব কারা ছিলো তা এখনো জানতে পারিনি। চেষ্টায় আছি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

নাজমুল হুদা তথ্য মন্ত্রী থাকাকালীন একবার নাকি সংসদে চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলেন... পরে, তথ্য প্রমাণ না পেয়ে চুপ মেরে গেছেন

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হুদা তো হুদাই

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

এই ব্যাপারটাকে কিছুটা কাউনটার-ইনটুইটিভ মনে হচ্ছে। কারণগুলি বলছিঃ

১। ডন পত্রিকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর পৃষ্ঠপোষকতায়। জন্মলগ্ন থেকেই ডন অখণ্ড পাকিস্তানী এবং পাকিস্তানী জাতীয়তাবাদের একনিষ্ঠ সমর্থক।

২। ১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানে আওয়ামী লীগের কোন সমর্থন ছিল না, যার প্রমাণ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পশ্চিম পাকিস্তানে একটা আসনেও জয়লাভ করেনি। পশ্চিম পাকিস্তানের মিডিয়া এবং জনগণের মনে সেই সময় এই ধারণা বদ্ধমূল হয়ে গেছে যে বাঙ্গালী জনগন এবং আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরোধী।

এই দুই কারণে কেন ডন পত্রিকা পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাইবে যে বাঙ্গালীদের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষায় আগ্রহি-সেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হচ্ছে না।

Emran

কল্যাণ এর ছবি

চলুক চলুক

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

তিথীডোর এর ছবি

পাঁচ তারা। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
আপনি তাড়া দিলেন বলেই তো লিখলাম

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তারেক অণু এর ছবি

খুব গুছিয়ে লিখেছেন, ধন্যবাদ নজু ভাই। সাথে ৪ জানুয়ারির ভাষণটা যোগ করে দিলে আরও ভাল হত কি?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

৪ জানুয়ারির টেক্সট আমার কাছে আছে।
আসলে প্রথম যখন এই পোস্টের চিন্তা করেছিলাম, তখন আরো অনেক কিছু ভেবেছিলাম। এখানে অন্তত ৭ই মার্চের অডিও ভিডিও টেক্সট ইত্যাদি যোগ করার প্ল্যান ছিলো। রেকর্ডিংয়ের ইতিহাস যোগ করার চিন্তা ছিলো। এমনকি এই ভাষণ যেটা এখন সর্বত্র প্রচার হয়, সেটা যিনি উদ্যোগ নিয়ে রেকর্ড করিয়েছিলেন আবুল খায়ের, [তিনি এবছরই মৃত্যুবরণ করলেন] তাঁর ছেলে বর্তমানের বিশিষ্ট নজরুল সঙ্গীত শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিলের ছোট একটা ইন্টারভিউও নিয়েছিলাম।
কিন্তু এই পোস্ট এমনিতেই এতো দীর্ঘ হয়ে গেলো, আর আমারো এতো তথ্য জোগাড় করা, ভাঙ্গা মোবাইল ক্যাম দিয়ে ছবি তোলা, প্রসেস করা, আপ করা সব মিলিয়ে স্রেফ ২৪ ঘন্টা একটানা... ক্লান্তি ভর করলো, তাই অনেক কিছুই যোগ করা হয়নি এই পোস্টে। আরো অনেক বইয়ের ছবি তোলা আছে।
দ্বিতীয় পর্ব করতে হবে মনে হচ্ছে।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ধ্রুব আলম এর ছবি

চলুক

অপেক্ষায় থাকলাম।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সত্যি বলি, এই পোস্ট লেখার প্রস্তুতিটা আমার ভয়াবহ ছিলো। আরো অনেক কিছুই আছে।
অসুবিধে নেই। দেখি 'জয়/জিয়ে পাকিস্তান'পন্থীরা নতুন কী নিয়ে হাজির হয়... তখন বাকিগুলো দেওয়া যাবে হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সুবোধ অবোধ এর ছবি
সত্যপীর এর ছবি

আপাতত ৭১ এর ৮ই মার্চের খবরের কাগজ দেখতে কইছেন স্যারেরা। ওনারা দেখেন নাই কিন্তু ঐটা ছাড়া চলবেনা। ৭২ এর ৮ই মার্চ এর রিপোর্ট মাঞ্ছিনে মাঞ্ছিনে।

..................................................................
#Banshibir.

মুস্তাফিজ এর ছবি

আমার কাছে ৮ই মার্চ ৭১ এর পত্রিকা আছে

...........................
Every Picture Tells a Story

ধ্রুব আলম এর ছবি

তাত্তারি দেন মিয়া!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ওস্তাদ, ছবি তুলে আপান...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

তাদেরকেই কন্না ৭১ এর ৮ মার্চের খবরের কাগজ থেকে 'জয়/জিয়ে পাকিস্তান' বের করতে। যদি পারে তাইলে তারে আমি কাচ্চি বিরিয়ানি খাওয়ামু

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ইয়ে... নজু ভাই...
পাকিস্তানের "ডন" পত্রিকার কাটিং পেলেও কি কাচ্চি খাওয়াবেন? শয়তানী হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রেজাউর রাতুল এর ছবি

এমন একটি যুক্তি নির্ভর ও যৌক্তিক প্রমান উপস্থাপন সহ লেখা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

শাবাশ!
লেখাটাতে যে সকল লোকের লেখার রেফারেন্স দিয়েছেন তাঁদের তুলনায় আমিতো নস্যি। হ্যাঁ, বঙ্গবন্ধুর একাত্তরের ৭ মার্চের ভাষণ রমনা রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত থেকে শোনার সৌভাগ্য আমার হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু 'জয় বাংলা' উচ্চারণের পরে আর কোন শব্দ উচ্চারণ করেন নি এটা একরকম জোর দিয়েই বলতে পারি। এই ভাষণের স্মৃতি চারনে সচলে আমার একটা লেখা আছে। 'আমার স্মৃতিতে একাত্তরের ৭ই মার্চ এই লেখার একটা অংশ উদ্ধৃত করছি। "শুরু হলো বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণ, ''ভায়েরা আমার, আজ দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি___।'' আমি একমনে ভাষণ শুনছি আর অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছি সেই কাঙ্খিত
বাক্যটি শোনার জন্য। তারপর এক সময়ে বঙ্গবন্ধু বললেন " রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।" তারপর তিনি অল্পক্ষণ অপেক্ষা করলেন। তারপর সেই মাহেন্দ্রক্ষণে
আসলো সেই ঘোষণা, " এ বারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।" মুহুর্মুহু জয়বাংলা শ্লোগানে রেসকোর্স ময়দান তখন প্রকম্পিত।"

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনার কানে যে সমস্যা আছে সেইটা তখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারেন নাই? তেতাল্লিশ বছর পার হইছে তো কি হইছে? কানের ডাক্তার দেখান, তাইলে 'জয় পাকিস্তান' শুনতে পাইবেন চোখ টিপি
ঐ সমাবেশে উপস্থিত থাকতে পারছিলেন বইলা আপনাকে ঈর্ষা করলাম

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

ব্যাপক লেখা। জনাব খোন্দকারের বই প্রকাশ হবার পর থেকে এই ব্যাপারে যতগুলো লেখা পড়েছি তার মধ্যে সবচেয়ে তথ্যবহুল এবং কম্প্রিহেন্সিভ বলে মনে হল, এই জন্য নজরুল ভাইকে ধন্যবাদ। এটা পড়ার পরেও যদি কারও 'দ্বিধা' বা 'প্রশ্ন' থাকে, তাহলে ধরেই নিতে হবে যে সেই ব্যক্তি আসলে দ্বিধায় ভুগছে না, তার আসলে যা সত্য সেটা স্বীকার করার ইচ্ছা নেই, এবং নিতান্তই সুশিলিয়ভাবে ত্যানা পেচাতে ইচ্ছুক।
চলুক

- ইয়ামেন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বাকশালী গুণ্ডারা 'ভিন্নমত'কে দমিয়ে রাখতে চায় জানেন না? এই পোস্টের লেখক একজন আওয়ামী লীগার... তার যুক্তি প্রমাণ কোনোটাকেই বিশ্বাস করা যাবে না। বলতে হবে এটা একটা আওয়ামী গুণ্ডামী... হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মাসুদ সজীব এর ছবি

এটা পড়ার পরেও যদি কারও 'দ্বিধা' বা 'প্রশ্ন' থাকে, তাহলে ধরেই নিতে হবে যে সেই ব্যক্তি আসলে দ্বিধায় ভুগছে না, তার আসলে যা সত্য সেটা স্বীকার করার ইচ্ছা নেই, এবং নিতান্তই সুশিলিয়ভাবে ত্যানা পেচাতে ইচ্ছুক।

চলুক চলুক

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

সমস্যা আর কিছুই না, আয়োডিনের অভাব এই দেশের মানুষের। কমনসেন্স বলে যে একটা জিনিস আছে, সেটার ব্যবহার করতে পারলে ৭ই মার্চের ভাষণের বক্তব্যের সাথে যে পাকিস্তানের শুভকামনা যায় না সেটা বুঝতে খুব কঠিন হওয়ার কথা না। এই পাইকারী দরে আয়োডিন আর কমনসেন্সহীন বলদের বলদামীর সুযোগ নিয়ে পেহেলি রোশনি পত্রিকার ভণ্ড সম্পাদক থেকে শুরু করে আলু গোষ্ঠির সব কলুই পকেটে কিছু পয়সাপাতি ঢুকিয়ে নিচ্ছে। দিনশেষে ইটস আ গুড বিজনেস, আব্দুল করিম খোনকার সেই বিজনেসের একজন ফড়িয়া মাত্র।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এবং বিজনেস এখন শুধু টেকাটুকায় না। অথবা প্রত্যক্ষ টেকাটুকার আরো নানবিধ ভার্সন। যাউগ্গা... বহুদিন পরে আপনার দেখা পেলাম হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

হ।
তয় চোরা না শুনে ধর্মের কাহিনী!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

শুনবো না জানি, তবু বলি আরকি হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কল্যাণ এর ছবি

খুব দরকারি লেখা। দারুণ কাজ করেছেন নজু ভাই গুরু গুরু । এই সব ডকুমেন্টেড হিসাবে থাকার দরকার আছে।

সিম্পলি এরা সব শুওর। স্বার্থের জন্যে সব পেরেছে, পারে।

উপরে হিমু ভাই এর কালানুক্রমিক সাজানোর মন্তব্যটা দারুণ।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ... এটা নিয়ে আরো কিছু কাজ করার ইচ্ছে আছে

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

জরুরী, সময়োচিত, এবং তথ্যবহুল লেখাটার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ, নজু ভাই।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অশেষ ধন্যবাদ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তাসনীম এর ছবি

পয়েন্ট বাই পয়েন্ট রেফারেন্স দেওয়া হয়েছে - পুরা একাডেমিক কাজ। এই শ্রমসাধ্য লেখাটার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

লেখাটা স্টিকি করা হোক।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ তাসনীম ভাই

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মেঘলা মানুষ এর ছবি

এই জিনিসটার কেউ একজন 'অডিও' প্রমাণ দিতে পারল না কেন? পুরো ভাষণের অডিও আছে, ওরকম কিছু কেউ শুনতে পাওয়া যায় না। ঐ অংশটা কেউ এনে দিক ( আদৌ যদি তার অস্তিত্ব থাকে), তারপর কথা বলুক। তার আগে পর্যন্ত সবকিছুই অগ্রহণযোগ্য।

এটা কেবল একটা পোস্ট না, এটা নিজেই একটা দলিল হয়ে দাঁড়িয়েছে গুরু গুরু

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ মেঘলা মানুষ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ঈয়াসীন এর ছবি

এই লেখাটি ব্লগ জগতে দলিল হয়ে থাকবে। ধন্যবাদ নজরুল ভাই।

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ ঈয়াসীন ভাই

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নজমুল আলবাব এর ছবি

এই লেখাটার জন্য আপনারে কান্ধে নিয়া ঘুরতে হবে ছাতার গ্রামের মাঠে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

একটা সময় ছিলো, ছাতার গ্রামের মাঠে যাইতে হবে শুনলেই কান্দন পাইতো। এখন বড্ড মিস করি... থ্যাঙ্কু বস...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আরেকটা কথা মনে আসলো, কান্ধে নিয়া যে ঘুরতে চান, আমার ওজন জানেন মিয়া? চোখ টিপি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নজমুল আলবাব এর ছবি

ছাতার গ্রামে আমার কেমন প্রভাব সেইটা মনেহয় ভুলে গেলেন, কান্ধে নিবার কথা বলতে হয়তো দেরি হইবো, মানুষ জমা হওনেরতো দেরি হবে না। আপনেরে গোষ্ঠিশুদ্ধা তুলে ফেলবেনা একদম। চোখ টিপি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ডরাইলাম হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আয়নামতি এর ছবি

উত্তম জাঝা! উত্তম জাঝা নজরুল ভাই! অনেক শ্রমসাধ্য একটা কাজ। এটার প্রয়োজন ছিল এবং আছে।
চোরা ধর্মে কাহিনি শুনুক আর নাই শুনুক তাদের জন্য ঝামার বরাদ্দ থাকুক দলিল হিসেবে।
সাথে এক্সট্রা কিক্ জুড়ে দিলেম দেঁতো হাসি

আচ্ছা, ২৭ মার্চ,১৯৭১ সন্ধ্যে ৭:৪৫ মিনিটে মেজর জিয়াউর রহমানের রেডিওর ঘোষণাটি থেকে
on behalf of Bangobondhu Sheikh Mujibur Rahman, বাক্যটিকে বেমালুম চেপে গিয়ে(আসলে নিজেরা এমনটা করেছে তো তাই সবখানেই চুর দেখে) ভিডু তৈরি করা হয়েছে এ ব্যাপারে সত্যের সেনানীদের বক্তব্য কী?

ইতিহাস বিকৃতকারীদের আইন করে শাস্তির ব্যবস্হা করা দরকার! এই আইন, সেই আইন হলে কেন ইতিহাস বিকৃতি রোধে আইন করা হবে না??

মুস্তাফিজ এর ছবি

চলুক

...........................
Every Picture Tells a Story

স্যাম এর ছবি

চলুক

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ইতিহাস বিকৃতকারীদের আইন করে শাস্তির ব্যবস্হা করা দরকার! এই আইন, সেই আইন হলে কেন ইতিহাস বিকৃতি রোধে আইন করা হবে না??

এদেশেই বোধহয় সম্ভব, জাতির ইতিহাস যার যার মতো যা খুশি লিখতে পারে। তারপরও নাকি আওয়ামী বাকশালী সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয় না!

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

দারুণ সংযোজনগো আয়নামতি! এই এক্সট্রা কিকে আমার চাচা হাজি গোলাম মোরশেদের কন্ঠও শোনাযায়। যিনি ২৫ মার্চ ১৯৭১ এ বঙ্গবন্ধুর সাথে ৩২ নম্বরের বাসা থেকে পাক আর্মির হাতে বন্দি হয়েছিলেন। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি বঙ্গবন্ধুর অবৈতনিক উপদেষ্টাও হয়েছিলেন। তাঁর কাছ থেকেও ইতিহাসের অনেক খুঁটিনাটি জেনেছি। চলুক

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বস, আপনার সাথে কথা আছে...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

গুয়েবলস্‌রা প্রপাগান্ডা ছড়াবেই। বলদেরা শুঁকে দেখে বলবে মিশ্রণ কেমন হলো, ছাগলের দল চিবুবে। বুদ্ধিবিচির দল আঁক কষে বের করবে নতুন কোন মিশ্রণ তৈরি করা যায় এরপর। এরা থামবে না। আর এর জন্যই আপনাদের কাজের মূল্য বেড়ে যায় অনেক।

কড়িকাঠুরে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এরা থামবে না জানি, আর এটাও জানি যে আমরাও থামবো না। এতো সোজা না বাবা...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নীড় সন্ধানী এর ছবি

৭ই মার্চ ভাষণের অডিও, ভিডিও সহ এত চাক্ষুষ সাক্ষী জীবিত থাকা সত্ত্বেও একজন হুইন্যা মানুষ যখন এরকম মিথ্যাচার করে, তখন বুঝতে হবে এই ঘটনার পেছনে একটা বেনেফিশিয়ারী স্কীম আছে। একে খন্দকার তার বইতে মনের ভুলে এই তথ্য দেননি। দ্বিতীয় সংস্করনে রীতিমত ভূমিকা দিয়ে এটিকে জয় বাংলার সাথে ট্যাগ করে দিয়েছেন। সুতরাং এটা এখন একেবারে পরিষ্কার যে এ কে খন্দকার নিছক একটি বই লেখেননি, বরং একে খন্দকারগং ইতিহাস নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটা জল ঘোলাকরণ কর্মসূচীতে হাত দিয়েছেন। আমরা আর কদিন অপেক্ষা করলে সেই কর্মসূচীর অবশিষ্ট অংশও পেয়ে যেতে পারি। 'প্রথমা'র ইতিহাস কারখানার পাইপলাইনে এরকম আরো কিছু থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

প্রথমার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বইয়ের কারখানার বইগুলো নিয়ে আগেও কাটাছেঁড়া করেছি, আরো করবো। টেনশন নিয়েন না, এতো সোজা না... জবাব দিয়ে যেতে হবে।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তাহসিন রেজা এর ছবি

ইদানীং খুব দমে যাচ্ছিলাম। আপনার এই মন্তব্যটা পড়ে কেন জানি খুব ভালো লাগছে।
জবাব দিয়ে যেতে হবে। এতো সহজে ছেড়ে দেব না ।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”

অলীক জানালা _________

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

প্রথমার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বইয়ের কারখানার বইগুলো নিয়ে আগেও কাটাছেঁড়া করেছি, আরো করবো। টেনশন নিয়েন না, এতো সোজা না... জবাব দিয়ে যেতে হবে

হাততালি হাততালি হাততালি হাততালি হাততালি নজু ভাইইইই এগিয়ে চল/ আমরা আছি তোমার সাথে

ইয়ে, মিছিল করারা ইমো কই? রেগে টং

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথমা প্রকাশনের আরেকটি প্রকাশনা- "মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর - একটি নির্দলীয় ইতিহাস" (লিখেছেন গোলাম মুরশিদ) থেকে ২ টি বাক্য উদৃত করছিঃ

৭ই মার্চের ভাষণের বর্ণনায় লিখেছেনঃ "সেই সংগে তিনি জনগণকে আহ্বান জানা ঘরে ঘরে দুর্গ তৈরি করতে। দরকার হলে যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে। তিনি গ্রেফতার হতে পারেন, নিহত হতে পারেন- এও তিনি আশঙ্কা করেছিলেন। তাই তিনি বলেন যে, তিনি আর নির্দেশ দিতে না-পারলে, এটাকেই জনগন যেন তাঁর চূড়ান্ত নির্দেশ হিশেবে গণ্য করেন।
"

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এই বইটাতেও প্রচুর ঝামেলা আছে। লিখেছিলামও

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

এক লহমা এর ছবি

চলুক
এই বিপুল খাটুনির অসাধারন দলিলটা ঐ তাদের কাছে এত কিছুর পরেও আপনি যেমন উপরে একটি মন্তব্যে বলেছেন, "বাকশালী গুণ্ডারা 'ভিন্নমত'কে দমিয়ে রাখতে চায় জানেন না? এই পোস্টের লেখক একজন আওয়ামী লীগার... তার যুক্তি প্রমাণ কোনোটাকেই বিশ্বাস করা যাবে না। বলতে হবে এটা একটা আওয়ামী গুণ্ডামী... " কিন্তু সেই কারণেই আরো, এই কাজটা চালিয়ে যেতেই হবে। ইতিহাসকে যারা ঝাপসা করে দিতে চায় তাদের মোকাবিলা করার এই একটাই পথ - বারে বারে ইতিহাসটাকে সামনে নিয়ে আসা। অনেক অভিবাদন আপনাকে, নজরুল-ভাই! দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ এক লহমা, দ্বিতীয় পর্ব লিখবো, একটু সময় নিয়েই লিখবো।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সুবোধ অবোধ এর ছবি

আমি কইলাম ২+২=৫, আপ্নে পারলে আমারে বুঝান!!
যাই হোক, আসল কথা বলি, এক কথায় -অসাধারণ। আর অনেক কথায় -এই বিতর্ক নিয়ে এটাই আমার পড়া সবচেয়ে ডিটেইল এবং তথ্যবহুল লেখা। যারা গোঁয়ার এবং কোন রকম প্রমাণ ছাড়াই নিজেদের আত্মার স্লোগান "জয় পাকিস্তান" বঙ্গবন্ধুর মুখ দিয়ে বের করিয়ে নিয়ে নিজেদের টা জায়েজ করতে চায় তাদের আপনি কোন কিছু দিয়েই বোঝাতে পারবেন না। তারা ২+২=৫ এর কাল্পনিক এবং বাড়তি ১ এর মতই জয় বাংলার সাথে নিজেদের মন গড়া "জয় পাকিস্তান" জুরে দেয়।

এমন অসাধারণ লেখার জন্য আপনাকে স্যালুট বস।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথমা প্রকাশনের আরেকটি বই ("মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর- একটি নির্দলীয় ইতিহাস", লেখকঃ গোলাম মুরশিদ) থেকে কিছু অংশ উদ্বৃত করছিঃ

পৃষ্ঠা নং- ৭০ এ সাতই মার্চের ভাষণের বর্ণনায় বলা হয়েছে, "রক্ত যখন দিয়েছি, তখন আরো রক্ত দেবো। এই দেশের মানুষকে মুক্ত করবো ইনশা-আল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।"

একই পৃষ্ঠায় অন্য একটি প্যারাগ্রাফে আছেঃ "কেউ কেউ বলেন, তিনি বক্তৃতা শেষ করেন 'জিয়ে পাকিস্তান' বলে। (হাবিবুর, ২০০৮) কিন্তু টেলিভিশন কেন্দ্রে তাঁর বক্তৃতার যে ভিডিও রেকর্ড ছিল, তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করেও এই অপবাদের কোন সমর্থন পাও্য়া যায়নি।"

পরের পৃষ্ঠায়, ৭ই মার্চের ভাষণের ছবির ক্যাপশনে লেখা, "এই ভাষণেই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং দেশবাসীকে উদ্ধুদ্ধ করেছিলেন প্রতিরোধ এবং সংগ্রামের।"

একই প্রকাশনী সংস্থা থেকে বের হওয়া বই দুটি সম্ভবত ভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে লেখা।

যাইহোক, খুবই তাৎপর্যপূর্ণ পোষ্ট; লেখককে অনেক ধন্যবাদ।

--সুবীর

স্যাম এর ছবি

চলুক
সম্ভবত এই বইটি নিয়েও কিছু বিতর্ক হয়েছিল

অতিথি লেখক এর ছবি

ঠিক! বিতর্ক ছিল, বইটির কোথাও চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের আসেনি (ঐযে বললাম, ভিন্ন এজেন্ডা ছিল)। যদিও ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে বা স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ভুমিকা নিয়ে সরাসরি অসমর্থনযোগ্য কিছু চোখে পড়েনি।

--সুবীর

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

স্যাম্ভাই,
"মুক্তিযুদ্ধের নির্দলীয় ইতিহাস" এই প্রচেষ্টাটাই একটা কাঁঠালের আমসত্ত্ব
সচলেই কে যেন বইটার চমৎকার একটা কাটাছেঁড়া করেছিলেন, মনে পড়ছে না ইয়ে, মানে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

স্যাম এর ছবি
সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

লইজ্জা লাগে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

পুরনো পোষ্ট বুকমার্ক করার উপায় কি?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমি শুধু তাদের বই নিয়ে আকথা কুকথা কই, প্রথমা আর আমার কাছে বই বেচবো না মনে হয় চোখ টিপি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

চমৎকার লেখা। প্রচুর পরিশ্রম করে লিখেছেন। আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ।

মূলত যাদেরকে উদ্দেশ্য করে এ লেখা, তাদের নাকে সত্য গুঁজে দিলেও তারা বলবে, না দেখিনি! তবে রেফারেন্স হিসেবে এ লেখার গুরুত্ব অপরিসীম। কেউ যদি সত্যিই ধন্দে পড়ে, তার চোখ খুলে দেয়ার জন্য এ লেখা যথেষ্ট।
গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

____________________________

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ হিজিবিজবিজ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

তথ্য সন্নিবেশন এবং উপস্থাপনায় অনন্যসাধারন একটি পোষ্ট, অসংখ্য ধন্যবাদ! একটি নিবেদন, পোষ্টটি প্রিয়তে কিংবা বুকমার্কে রাখতে চাই, কিভাবে করবো? সচলে এই ফিচার আছে কি?

স্যাম এর ছবি

নীড়পাতায় ইন্ট্রোর নীচে একটা অপশন আছে bookmark

সুবোধ অবোধ এর ছবি
আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

ধন্যবাদ স্যাম,
এই জিনিসটা খুঁজতে খুঁজতে হয়রান হয়ে পড়েছিলাম। এখন পুরনো অনেক লেখা খুঁজে বের করে বুকমার্ক করতে হবে। প্রসংক্রমে এ্যাডমিন গণকে বলি, এই বুকমার্ক অপশনটা একটা পোষ্ট ওপেন করার পরও থাকলে ভাল হতো, তাহলে সেটা পড়ার পর সেখান থেকেই বুকমার্ক করা যেত।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

rezsid এর ছবি

বিতর্ক , কুতর্ক আমাদের ইতিহাস সচেতন করে তোলে । মন্দের ভালো

রাহী

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

স্যাম এর ছবি
মাহবুব লীলেন এর ছবি

একখানা অসাধারণ কাজ দেখাইলেন স্যার
যাদের জানা দরকার তাদের সামনে যেমন এক টোকায় বাড়িয়ে দেয়া যাবে
তেমনি জিয়েপ্রিয় পাকসোহাগীদের মুখেও ছুঁড়ে মারা যাবে এক ঝটকায়

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

থ্যাঙ্কু স্যার, জিয়ে পাকিস্তান চোখ টিপি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শেহাব এর ছবি

প্রমাণ করলেন এইটা ১৯৭৫ না ২০১৪।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

অসাধারণ বললেও কম বলা হয়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মাসুদ সজীব এর ছবি

২৫শে মার্চ কেন আসলো? ৭ই মার্চে শেখ মুজিবের মুক্তির ডাক, স্বাধীনতার আহ্বানের জন্যেই তো আসলো নাকি? কি বলেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান সেইদিন? ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলো, আমি হুকুম দিবার যদি নাও পারি.. রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দিবো, এদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ.. এগুলো কি ঘুমপাড়ানিয়া গান নাকি পাপিস্থানপ্রীতিতে পূর্ণ ছিলো? এগুলোর মাঝে কি যুদ্ধের আহ্বান ছিলো না, যুদ্ধের ঘোষনা ছিলো না? আপনি না বুঝতে পারলে সেটি আপনার সমস্যা ইয়াহিয়ার মতো লোক ঠিকি বুঝেছেন আর তাই আক্রমন শুরু করেছেন। আর সম্মুখে যুদ্ধটা শুরু হয়েছে সেইদিন থেকে।

তাহলে প্রশ্ন করতে পারেন ৭ই মার্চ স্বাধীনতার ঘোষনা করলে কেন ২৫ মার্চ পর্যন্ত পাপিস্থান অপেক্ষা করলো, কেন যুদ্ধটা ৮ই মার্চ শুরু হলো না? যুদ্ধ মানেই পরিকল্পনা আর প্রতিপক্ষকে গুড়িয়ে দেওয়ার দীর্ঘ পরিকল্পনাকে সফল করতে কিছুটা প্রস্তুতির প্রয়োজন পড়ে। সেই প্রস্তুতির জন্যে পাপিস্থান থেকে কামান-বারুদ আনতে হয়েছে। যদি ৮ই মার্চ থেকে পাপিস্থান অমাাদের আক্রমন করা শুরু করতো তাহলে আজকের ত্যানাপ্যাঁচানো কিংবা নব্য ইতিহাস রচয়িতারাও বলতো শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চ যুদ্ধের ঘোষনা দিয়েছেন।

শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দূরদর্শীতা আজকের কাঠবলদ মার্কা সমালোচকদের থেকে লক্ষ কোটি গুণ বেশি ছিলো বলেই উনি বলেছিলেন “ যদি আমি হুকুম দিবার নাও পারি..! অর্থাৎ উনাকে যে সরিয়ে দেওয়া হবে (হত্যা কিংবা গ্রেফতার) সেটা উনি খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছেন। এতকিছু স্পষ্ট করে দেওয়ার পরও যদি কেউ ৭ই মার্চের ভাষন নিয়ে সন্দেহ আর সংশয় প্রকাশ করে সন্দিহানে থাকেন তাহলে বলতে হয় তিনি নিজের বেলায় গাছ থেকে কলা পেড়ে পাঁকিয়ে খেতে পারেন আর অন্যের বেলায় সেই কলার খোসা ছাড়িয়ে দিলেও সেটি কলা কিনা তাতে সন্দেহ প্রকাশ করেন। এবং এই সমস্ত লোকদেরকেই আদর্শ ছাগু বলে।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

৭ই মার্চের ভাষণটা আমি মাঝে মধ্যেই শুনি। শুনতে ভালো লাগে। এই ভাষণ শোনার পরও যারা বলতে পারে যে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা চায় নাই, তাদের জন্য স্রেফ করুণা...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হ, সাতুই মার্চের ভাষনে বঙ্গবন্ধু কই কইছে "আই ডু হেয়ারবাই ডিক্লেয়ার দ্য ইন্ডেপেন্ডেন্স..."??? দেহান তো একবার... খাইছে

স্বাধীনতার ঘোষণা হবে এইরাম, ফ্যাক্সবার্তার মতন ছাপ্পামারা চাল্লু

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার শ্রমসাধ্য কাজ। রেফারেন্স হিসেবে কাজে লাগবে। আপনাকে ধন্যবাদ।

গোঁসাইবাবু

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ গোঁসাইবাবু

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তাহসিন রেজা এর ছবি

অসাধারণ কাজ গুরু গুরু

------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”

অলীক জানালা _________

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

স্যাম এর ছবি

আকাশ কালো করে মুষলধারে বর্ষণ হচ্ছে। এরকম দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেই প্রতিবাদ লিপি সম্বলিত একটি ফেস্টুন বহন করে মহাসড়ক ধরে হেঁটে চলছেন এক প্রবীণ অধ্যাপক। কৌতূহল নিয়ে কেউ তার কাছে এগিয়ে গেলে তার হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন একটি কাগজ। সেটিতে লেখা রয়েছে বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণ শেষ করেছিলেন শুধু জয়বাংলা বলে। এভাবেই তিনি মুক্তিযুদ্ধের উপপ্রধান একে খন্দকারের লেখা ১৯৭১ ভেতরে বাইরে বইয়ে উল্লেখ করা জয় পাকিস্তান তথ্যটির প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। প্রতিবাদ জানানো এই শিক্ষক হচ্ছেন ময়মনসিংহের নান্দাইল শহীদ স্মৃতি আদর্শ ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আফেন্দি নূরুল ইসলাম।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আফেন্দি নূরুল ইসলামকে স্যালুট

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হাসিব এর ছবি
Faizul Momen এর ছবি

খুব ভালো হয়েছে!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধন্যবাদ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ফিউসা রহমান  এর ছবি

যাদের জীবনে কখন বই পড়তে দেখিনি ,পকেটের পয়সা খরচ করে কেনা তো দূরের কথা..তারা এখন জানতে চায় প্রথমার বিক্রয়কেন্দ্র কোথায় !!!
শ্রমসাধ্য তথ্যবহুল লেখাটির জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা।ড়

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হাসিব এর ছবি

সৌমিত্র পালিত জানাচ্ছেন,

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পরের মাস ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে ওরিয়েন্ট লংম্যান থেকে 'বাংলাদেশ, মাই বাংলাদেশ' নামে একটা বই প্রকাশিত হয়েছিল। আসলে এটা অক্টোবর ১৯৭০ থেকে ১৯৭১ এর মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর অনেকগুলো ভাষনের সংকলন।

দেখা যাচ্ছে ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের আগে পাকিস্তান টেলিভিশন সার্ভিস এবং রেডিও পাকিস্তানে 'পলিটিক্যাল ব্রডকাস্ট' নামে একটা অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়েছিল। আওয়ামী লীগের প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান 'পাকিস্তান জিন্দাবাদ' বলে সে অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষ করেন (ছবি-১)।

১৯৭০ এর ৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পুরো পাকিস্তানে ২৯১ আসনে জিতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। এই বিজয়ে জনগনকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য ডিসেম্বরের ৯ তারিখ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু সেদিন লিখিত বিবৃতির শেষে বলেন 'জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান' (ছবি-২ থেকে ৪)।



একাত্তরের ৭ মার্চ আঠারো মিনিটের অমর বক্তব্যের শেষে তিনি বলেছিলেন 'জয় বাংলা'। শুধুমাত্র 'জয় বাংলা' (ছবি-৫ থেকে ১০)।






মার্চের ২২ তারিখে প্রধান সংবাদপত্রগুলোতে প্রকাশিত ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধু্র সাক্ষরিত বাণীতে ছিল 'জয় বাংলা' (ছবি-১১ থেকে ১২)।

উনি বই থেকে কতোগুলো ছবি শেয়ার করেছেন ফেইসবুকে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দারুণ সংযোজন

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হাসিব এর ছবি

খন্দকার সোর্স হিসেবে কতোখানি লেজিট সেটা নিয়ে লিখেছেন নাদিম কাদির লিখেছেন ডেইলি ট্রিবিউনে

After decades, the gentleman has finally finished his job, which has led to widespread debate. Air Vice Marshal (retd) AK Khandaker’s book 1971: Bhitore Baire is nothing less than a shock and a total misrepresentation of the days that led to the 1971 Bangladesh independence war. Khandaker was one of my father’s closest friends and colleagues, and thus I write this with all due respect to him, although since my father was martyred, he never enquired about us, and I only meet him on official events.

I have gone through some of the book’s chapters that concerned me the most. If we start with his “Joy Pakistan” claim, I was young, but I remember clearly when my father shouted “Joy Bangla,” and told us that a call for independence has been made by Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman. My father, Lt Col Muhammad Abdul Qadir of the Corps of Engineers, was based in Chittagong and was martyred on April 17, 1971.

My father had contact with Dhaka over the telephone, and was informed about the speech on March 7, 1971. On March 8, he listened to Bangabandhu’s speech on the radio and asked all of us to be silent. He broke the silence with “Joy Bangla.” There was no “Joy Pakistan.”

However, I also believe that had Bangabandhu even said “Joy Pakistan,” it was a calculated move. He kept all options open, especially to avoid any bloodbath. But nobody remembers hearing him say “Joy Pakistan.”

In early March 1971, we raised a black flag in our 70 Panchlaish residence in Chittagong amid “Joy Bangla” slogans, although not very loudly and amid my mother’s warnings to my father for being too open, as he was in active service of the Pakistan army.

Khandaker, in his book, says that the Bengali defence officers had no preparation. This is true for him, because he was known as the “gentleman of the Pakistan Air Force” and had served the Pakistan army until May, 1971. This he confirmed in his book. Only those Bengali army officers who had agreed to serve Pakistan were spared, but people like my father were tortured and killed by the end of April 1971.

My father had met Bangabandhu before the crackdown which the great leader had confirmed to my mother when we met him in 1974. My father was in constant touch with Brig Majumder, Col Osmani, Maj Zia, and Maj Rafiq. They held meetings here and there, and Maj Zia (later President Zia) also visited our home around March 20-22, 1971 with Begum Khaleda Zia. Wing Commander Mirza and PIA’s Captain Nizam, mentioned in his book, were also my father’s friends.

My father also had close links with local Awami League leaders. One such leader, who identified my father’s grave in 2007, told me that he was present when Col Qadir raised a Bangladesh flag in his office. My father even said that if India recognised Bangladesh, as per AL leaders, then the conflict would be minimal, or else a major one was inevitable.

Please see the letter written to AL leader Mohammad Quamaruzzaman in 1971, ahead of the war, by my father, referring to East Pakistan as Bangladesh. He writes about keeping minimal operations open as “it will come to use for our Bangladesh.”

Khandaker, in his book, also contradicts himself by saying on one hand that Bangabandhu had no military plan but again appointed Col Osmani as military advisor on March 10, 1971.

Khandaker was inside the barracks, and was not one of those who were active in the preparations for resistance, thus his involvement and knowledge is a farce.

There was training in campuses, and many Bengali army officers had revolted. My father too did not report to work and left to join the war.

But it was tragic that he came back to see his pregnant wife and was arrested by the Pakistani army, who had also offered him safety if he cooperated about the whereabouts of explosives missing from Oil and Gas Development Corporation as well as information about the plan of the “traitors.”

Khandaker also writes as if Bangabandhu was facing a conventional war and would announce all his plans in public. One should read about what Bangabandhu had done for the release of Bengali officers and officials of other ranks stranded in Pakistani camps, besides getting the country on the right footing in the comity of nations.

It was the end of a political war, and Bangabandhu moved cautiously on the armed option, but he definitely gave directives to the kinds of fathers who were soldiers of the greater leader.

The Bangladesh genocide was one of the worst the world had ever seen, and thus any preparation would have been too small against the aircrafts, tanks, and automatic weapons of the Pakistani army.

Like a true statesman, he kept all his doors open and did what he thought was best for his people and Bangladesh.

I was saddened to read Khandaker saying that he was “pained” to see the attacks on non-Bengalis or the Biharis. I remember how these Biharis, many of whom still remain in Bangladesh and hoist Pakistani flags, had initiated the killings and looting of Bengali homes in Chittagong as well as in Dhaka and Khulna. They later joined the Pakistanis in carrying out the genocide.

Air Vice Marshal (retd) AK Khandaker has always enjoyed the cream from regime to regime. That suggests he had no allegiance to any of them, but only to himself.

He was not killed or arrested by the Pakistanis who gave him leave during the war twice. He quickly showed his allegiance to the leaders of the 1975 coup, Ziaur Rahman, Hussein Muhammad Ershad, and then somehow not the BNP but to the Awami League. He moved about freely between his residence in cantonment, and his sister-in-law’s residence in the Azimpur area in Dhaka during 1971.

Is something ominous awaiting the nation? His quick shift of position worries me, and that should be investigated. Those who advised Prime Minister Sheikh Hasina to include him in her cabinet and party must be very careful in their advice.

We have seen many disasters, but not any more. I write this as a commitment to my country and to the truth, which is above everybody and everything.
- See more at: http://www.dhakatribune.com/op-ed/2014/sep/12/foolish-imagination#sthash.s4KbuEYm.dpuf

নজমুল আলবাব এর ছবি
নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

বদরুদ্দীন উমরের ভুলটা কবে ভাংবে? আদৌ ভাংবে কি?

তিনি গতকালও যুগান্তরে লিখেছেন

৭ মার্চের বক্তৃতা শেখ মুজিব যে ‘জয় পাকিস্তান’ বলে শেষ করেছিলেন এটা আমিও শুনেছিলাম। এটা কোনো ‘কানকথা’ নয়। আওয়ামী লীগওয়ালাদের এক্ষেত্রে সুবিধা হয়েছে যে, তখনকার দিনে কোনো টেপরেকর্ডার বা মোবাইল ফোন ছিল না। রেডিও পাকিস্তানে বক্তৃতার যে টেপ ছিল, সেটা সে সময় আওয়ামী লীগের লোকদের হাতে থাকায় ‘জয় পাকিস্তান’ শব্দ কেটে দিয়ে তারা এই কথার বস্তুগত ভিত্তি চিরতরে নষ্ট করেছিল।

[লিঙ্ক এখানে ]

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

অতিথি লেখক এর ছবি

বদরুদ্দীন উমরের এই বক্তব্যটাও কিন্তু "শোনা কথা"-ই হল। তিনি অবশ্য একটা কাজ করতে পারেনঃ পাকিস্তানে আশা করি তাঁর প্রভাবশালী বন্ধু-বান্ধব আছেন। তাদেরকে ধরে রেডিও পাকিস্তানের সদর দপ্তর থেকে ৭ই মার্চের ভাষণের অবিকৃত মূল টেপ তিনি সংগ্রহ করে জাতিকে শোনাতে পারেন (সদর দপ্তর আশা করি আওয়ামী লীগের দখলে ছিল না)।

Emran

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

ব্যাপার্টা কিছুই না, খালি 'প্রথমা প্রকাশনী' বইলা কথা। বাকীডা পোস্টে আপনা কয়া দিছেন। যাউজ্ঞা, আমিও একটা বই লেখবাম যে আমার জন্মের ৬ বছর আগেই আমি শুনছি শেখ মিয়া কইছে - জয় বাংলা, জিয়ে পাকিস্তান, লং লিভ দ্যা কুইন, বন্দে মাতরম ... ইত্যাদি। নজু ভাই, প্রথমারে কয়া আমার বইটা ছাপানোর ব্যাবস্থা দেখেন, লাভ পিপটি-পিপটি!!!

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হায় হায়, আপনে এগুলা শুনছেন? আমিও তো এগুলাই শুনছি!
যাক, দুইজন সাক্ষী পাওয়া গেলো। আর কয়জন পাইলেই ইতিহাস লেখুম চোখ টিপি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আমিও তো জাতে সাক্ষী দেঁতো হাসি আমারেও লয়েন লগে চোখ টিপি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

বিডিনিউজের মতামত- বিশ্লেষণ পাতায় আজ (মে ২৭, ২০১৫) তারিখ প্রকাশিত যুদ্ধাহতের ভাষ্য: ৩২ ‘‘অবশ্যই বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা’ বলছিলেন- শীর্ষক সাক্ষাৎকারে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন খানের জবানিতে বলা হয়েছে-

‘‘আমি চলে যাই সকাল ১১টার দিকে। মঞ্চের খুব কাছেই ছিলাম। কত যে মানুষ। সবার হাতেই লাডি। লাডিই ছিল সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক। বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব… এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’; সবাই তখন চিৎকার করে উঠে। আমরা মনেপ্রাণে তৈরি ছিলাম। বঙ্গবন্ধু তো বলছেনই, ‘আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি…’– এই কথাটাই আমার কাছে স্বাধীনতার ঘোষণা।’’

কিছুদিন আগে এ কে খন্দকার তাঁর এক বইতে লিখেছেন ওই ভাষণ শেষে বঙ্গবন্ধু সেদিন ‘জয় পাকিস্তান’ বলেছিলেন। আপনি তো সেখানে ছিলেন। এ সম্পর্কে আপনার অভিমত?

পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে মুক্তিযোদ্ধা আফতাব বলেন:

‘‘তিনি কি সেখানে থাইকা ভাষণ শুনছিলেন? লাখ লাখ লোক ভাষণ শুনেছে। অবশ্যই বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা’ বলছিলেন। তিনি কোন দুঃখে ‘জয় পাকিস্তান’ বলবেন? কেউ লিখলেই কি ইতিহাস পাল্টাইয়া যাইব!’’

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অবশেষে ছয় বছর পর এ কে খন্দকার সাহেব ভুল স্বীকার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন। স্বীকার করে নিলেন যে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণ শেষ করেছিলেন ‘জয় বাংলা’ বলে। প্রকাশকের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন সংশোধনীর
সূত্র: https://www.kalerkantho.com/print-edition/news/2019/05/27/773927?fbclid=IwAR1YgzkiqE-b6qKZC7UFi4bROpcAD3kAwn17bwA1U-C8ob8hirt_KR3bhXQ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।