কাঁটা

ওডিন এর ছবি
লিখেছেন ওডিন (তারিখ: রবি, ০৮/১১/২০০৯ - ৯:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সব মানুষেরই কিছু না কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। বিশাল দার্শনিক- কিন্তু নিজে কাঁচাবাজার করতে ভালোবাসেন, প্রখ্যাত চিন্তাবিদ- কিন্তু হাবিবের কন্ঠ তার কাছে সুমধুর মনে হয় (আর মিলাকে 'দেখতে' ভালোবাসেন), দেশসেরা সমাজসেবী- কিন্তু মাঝে মাঝে হাল্কা রাজনীতি করতে মন চায়- এইরকম আরকি। যত বড় মহাপুরুষই হোক- মুহম্মদ ইউনূস থেকে তার জিগরি দোস্ত উইলিয়াম নামের ভদ্রলোক, এমনকি আমাদের পেপারওয়ালা শাহীন- কেউই এর বাইরে না। তবে অকপটে নিজেদের এইসব সীমাবদ্ধতা স্বীকার করেন খুব কম লোকই।

আমিও কিন্তু সেই আত্মসমালোচক মহামানবদের পর্যায়ে পড়ি না। সবসময় 'খুব খিয়াল কইরা' চেষ্টা করতে থাকি যাতে আমার দূর্বলতাগুলো প্রকাশ না পায়। কিন্তু তারপরেও নানান ফাঁকফোকর পেয়ে সেগুলো কেমন করে জানি বের হয়ে পড়ে- আর আমার ভাবমূর্তির সাড়ে বারোটা বাজিয়ে দেয়।

ভদ্রসমাজে প্রকাশ পেয়ে যাওয়া আমার যেইসব সীমাবদ্ধতা আছে তার মধ্যে একটা হল আমার ইর্ষা করার একরকম অতিমানবীয় ক্ষমতা। আমি প্রচন্ডরকমের হিংসুটে একটা মানুষ। সচলের অনেকেই হয়ত ইতোমধ্যে এর আভাস পেয়েছেন। হয়তো কেউ দারুন একটা লেখা দিলো, কমেন্ট করি- আরেব্বাহ, উত্তমজাঝা- আর মনে মনে বলি- ব্যাটা ঠেলাগাড়ির তলে চাপা পইড়া মর- মইরা নরকবাসী হ- এমুন একটা নরকে যা যেইখানে তোর কিবোর্ড হইবো ইউএসবি আর পিসিতে পোর্টই থাকবো না! কেম্নে লেখবি এইবার? কেউ হয়ত ভালো ছবি পোস্ট করলো- কমেন্ট করি- অসাধারন- তালিয়া- মারহাবা- চলুক, আর মনে মনে বলি- ফাঙ্গাস পড়ুক তর বাক্সে! ফাঙ্গাস সংক্রমিত হয়া মর- মইরা এমুন কালা আন্ধার একটা জায়গায় যা যেইখানে নাইটভিশন গগলস লাগায়া ছবি তুলতে হইবো... দেখি তখন এইচডিআর কেম্নে করস...

তবে এই হিংসাফিংসা খুব একটা পাত্তা না দিলেও লোকজন যেটা নিয়ে হাসাহসি করে তা হলো আমার কিংবদন্তিসম মাকড়শাভীতি। আমি অবশ্য এটাকে কোন্ওরকম ফোবিয়া'র পর্যায়ে ফেলে দিতে রাজি নই। আমার আসলে চারটের বেশি পাওয়ালা জন্তু ঠিক পছন্দ না। তবে এইটা ঠিক যে একবার উত্তরাখন্ডের একটা গ্রাম, হনুমানচটিতে সারারাত টর্চ জ্বালিয়ে রেখেছিলাম- কারন আমি আপাদমস্তক শহুরে মানুষ, ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঘু্মোতে পারি না। (এখানে পড়ুন- ঘরে আমি একা ছিলাম না, বেশ কয়েকজন বহুপদী রুমমেটও ছিলেন।এইরকম একটা বিষয় নিয়ে কয়দিন আগে সচলে বেশ ক্রিটিকালি এক্লেইমড একটা গল্প লেখা হয়েছিলো)

আরেকটা সীমাবদ্ধতা- যদিও আমি এটাকে সেই অর্থে ঠিক সীমাবদ্ধতা বলতে রাজি নই, কিন্তু পাপিষ্ঠ ফ্যাসিবাদি জনগন তাই ভাবে- হল আমার মাছ খাওয়ার ব্যপারটা। আমি বুঝি না লোকজন কেন এটা এত সিরিয়াসলি নেয়। আমি মাছ খেতে ভালোবাসি- আর আমি মনে করি মাছেরাও আমার প্লেটে আসতে পেরে নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করে। আমার আর মাছের মধ্যে এত প্রেমময় এই সম্পর্কের মাঝে কেন কাঁটার মত তুচ্ছ একটা জিনিস এসে বিরক্ত করবে? এইজন্য আমি নিজে এইসব কাঁটাজাতীয় জিনিসপত্র 'হ্যান্ডল' করি না। কিন্তু দুষ্টু লোকজন প্রপাগান্ডা করে বেড়ায় যে আমি নাকি মাছের কাঁটা বাছতে পারি না। এটা ঠিক সৌভাগ্যক্রমে আশেপাশে সবসময়ই কেউ না কেউ থাকে- যাঁরা আমার মাছের আরাধনা তরান্বিত করেন। এটাতেও লোকজনের আপত্তি। তাদের কথা হলো নিজে মাছের কাঁটা না বাছা খুবই অপমানজনক একটা ব্যপার। 'সমাজ' কি বলবে আমার এই অমার্জনীয় সীমাবদ্ধতাকে? এখন না হয় মায়ের রেস্টুরেন্টে ফ্রি খাচ্ছো- কাঁটার মত জিনিসপত্র নাহয় তিনিই সামলে ফেলেন, কিন্তু বাইরে কোথাও খেতে গেলে কি হবে? কে তোমাকে এই লজ্জার হাত থেকে রক্ষা করবে?

বলাই বাহুল্য 'সুশীল' 'সমাজের' অন্যসব উপদেশের মত আমিও এইসব পাত্তা দিই না। আরে বাবা দরকার হইলে তোরাও মানুষজন এমপ্লয় কইরা 'নিষ্কন্টক' হয়া মাছ খা না- আমি কি কিছু কইসি নাকি?

শুক্রবার ছিলো আমার এক বন্ধুর জন্মদিন। আমি আমার এই বন্ধুকে খুব পছন্দ করি- তার জন্মদিনকে আরো বেশি- কারন সেদিন খুব গুরুতর ধরনের খাবারদাবারের আয়োজন থাকে। তাই সে নেমন্তন্ন করা মাত্র আমি রাজি হয়ে গেলাম। অবশ্য সে এটাও বলে দিলো- ডোরবেল বাজাতে হবে কনুই দিয়ে- । এইরকম অশালীন ইঙ্গিতের পরে তো আর খালিহাতে যাওয়া সম্ভব না। কিন্তু এই টরেন্টের যুগে পয়সা খরচ করে কোন গাধা? আমার পেনড্রাইভে সদ্য নামানো জানালা সাত, কয়েকটা অ্যান্টিভাইরাস, রামস্টাইনের নতুন অ্যালবাম আর বন্ধুর জন্য বুকভরা ভালবাসা নিয়ে রওনা দিলাম।

এইবেলা বলে রাখি আমার আবার একটু ক্লাস্ট্রোফোবিয়ার মতন আছে। (আচ্ছা আচ্ছা- স্বীকার করছি আমি সবরকম ফোবিয়ার চলন্ত গোডাউন!), তাই লিফটজাতীয় জিনিসগুলো একটু এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। কিন্তু সেদিন ভাবলাম হুদাহুদি এনার্জি লস করে লাভ নেই- সামনে খাওয়াদাওয়ার মত কঠিন পরিশ্রমের কাজ, তাই লিফটে উঠে পড়লাম। আর যেই ভয় সমসময়ি করি- ছয়তলায় পৌছামাত্র লোডশেডিং- আর আমি লোহার বাক্সে আটকা! সাথে সাথে আমার মাথায় শর্টসার্কিটের মত হলো। তারপরেও কোনমতে ইমার্জেন্সি বেল বাজালাম- আমার বন্ধুকে ফোন করলাম- অনন্তকাল (মিনিট দুয়েক) পরে বন্ধু আর বন্ধুপিতা এসে আমাকে মোটামুটি অর্ধমৃত অবস্থায় উদ্ধার করলেন। ভেতরে নিয়ে আমাকে ঠান্ডা পানি খাওয়ানো হলো- আঙ্কেল চিন্তিতমুখে পায়চারি করছেন, আন্টি নিজে এসে আমাকে বাতাস করা শুরু করলেন। আমার বন্ধু চোখ সরু করে আমাকে দেখতে লাগলো। স্পষ্টতই আমাকে নিয়ে ওর বাবা-মার এতো বাড়াবাড়ি সে পছন্দ করছিলো না। সে আমার দিকে আরও বিরক্তভাবে তাকাতে লাগলো যখন তাকে আমার জন্য ট্যাং বানিয়ে আনার হুকুম দেয়া হলো। বলাই বাহুল্য কেকের মস্তবড় একটা টুকরোও এর মধ্যে আমি খেয়ে ফেলেছি।

আমার ওপর ওর বিরক্তি আরো বাড়লো খাবার সময়। আঙ্কেল আর আন্টি দুইজনেই আমার দুইপাশে বসে আমাকে খাওয়াচ্ছেন। বার বার বলছেন- আহারে- ছেলেটার ওপর দিয়ে কি ঝড়টাই না গেলো- কতক্ষন লিফটে আটকা ছিলো- নাও বাবা- আরেকটু কোর্মা নাও। আমিও চিঁচি করে বললাম যে আরেক টুকরো রোস্ট খেলে আমার হয়তো আরেকটু ভালো লাগতে পারে। দুইটা টুকরো চলে এলো আমার প্লেটে। এর মধ্যেই আন্টি আবার বারকয়েক আমার মাথায় হাতও বুলিয়ে দিয়েছেন। আর বন্ধুর তো রাগের চোটে খাবি খাওয়ার অবস্থা। জন্মদিন ওর- আর সমস্ত এটেনশনের কেন্দ্র আমি, এইরকম অবিচার সে কিছুতেই মনে হয় মেনে নিতে পারছিলো না।

এইরকম স্বর্গীয় এক মুহূর্তে আমার বন্ধু- যাকে এখন আমি বন্ধু পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করছি- একটা সর্বনাশা কাজ করে বসলো। বদমাশটা বলে - 'কিরে তুই মাছ খাবি না? এত ভালো কই মাছ- বাবা কারওয়ান বাজার থিকা আনলো'। 'হ্যা হ্যা বাবা, মাছ তো খেতেই হবে' আঙ্কেল সাথে সাথে মাছের বাটি টেনে আনেন তাঁর দিকে।

'ইয়ে মানে হ্যা, অবশ্যই অবশ্যই আসলে মাছটা ঠিক...' আমি আমতা আমতা করে আড়চোখে বন্ধুর দিকে অগ্নিদৃষ্টি হানলাম। চশমায় মাইনাস লেন্স বলে ব্যটা এযাত্রা বেঁচে গেলো- কনভেক্স হলে শয়তানটার খালি ছাইটুকু পড়ে থাকতো। হতচ্ছাড়া ততক্ষনে সবগুলো দাঁত বের করে ফেলেছে। আঙ্কেল কই তুলে দেন আমার প্লেটে। আমি নাড়াচাড়া করতে থাকি। আমার বন্ধু হাতে পেপসিরর গ্লাস নিয়ে চুমুক দিতে দিতে বিশ্রীরকমের নিঃশব্দ হাসি হাসতে থাকে। ভাবখানা- কেমুন ধরা খাইলা?

এইসময় আমার সবচে প্রিয় আন্টি (যিনি দুনিয়ার সবচে মমতাময়ী মহিলাদের লিস্টে থাকবেন- বুড়ি তেরেসা থাকবে তাঁর ছয় ধাপ নীচে) বললেন- 'আহারে, ছেলেটার ওপর দিয়ে কত ঝড়ঝাপ্টা গেলো- আমাদের বাসায় এসে কি যাচ্ছেতাই অবস্থা- বেচারার হাত এখনো কাঁপছে। কষ্ট করার দরকার নাই, আমিই ওকে কাঁটা বেছে খাওয়ায় দিচ্ছি'

তক্ষনি আমার প্রানপ্রিয় বন্ধুর হাত থেকে পেপসির গ্লাসটা ঠাস করে পড়ে আঙ্কেলের সিল্কের লুঙ্গির খানিকটা আর কার্পেটের অনেকখানি ভিজিয়ে টেবিলের নিচে চলে গেলো।


মন্তব্য

মুস্তাফিজ এর ছবি

একটা মাকড়শা দিলাম।

.........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.

...........................
Every Picture Tells a Story

ওডিন এর ছবি

পছন্দ হইল না, একখান শাদা লেন্সই নাহয় ধার দিতেন। খাইছে
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

খেকশিয়াল এর ছবি

হো হো হো
ভাইরে, আমার মাকড়শাভীতিও কিংবদন্তীসম। রামস্টাইন-পাঙ্খা নাকি!! লিব এস্ত ফার আলা দা কেমন লাগলো? আমি সারাদিন শুন্তাসি!

------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

ওডিন এর ছবি

পাঙ্খা মানে... আবার জিগান ক্যা? 'সবার জন্য ভালোবাসা' এখনও ভালোমত শুনে শেষ করতে পারি নাই- তাই এখনি কিছু কমু না।

সচলায়তন আস্তে আস্তে তো দেখি আমার পছন্দের জায়গা হয়ে যাচ্ছে। শয়তানী হাসি
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

সবজান্তা এর ছবি

একই অবস্থা আমারও। কাঁটা একদমই বাছতে পারি না। ইলিশ মাছ পছন্দের মাছ, তাই ইলিশ মাছের পেটের অংশে কোথায় কোন কাঁটা সেটা একদম মুখস্ত আমার। আর রুই মাছের কাঁটা নেহায়েত বড় হওয়াতে কারো সাহায্য লাগে না।

নচেৎ অন্য কোন মাছ হলে, কাঁটা বাছার সময়, মা ছাড়া আমার দুনিয়া অন্ধকার।


অলমিতি বিস্তারেণ

ওডিন এর ছবি

আহা, আপনেও আমার দুঃখ বুঝতে পারলেন। হাসি
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

তুলিরেখা এর ছবি

কাঁটা বাছেন কেন?
কচরমচর কইরা কড়কড়াইয়া চিবাইয়া খাইয়া ফেলাইবেন! দেঁতো হাসি

নিজে আমি কেবল ইলিশ পাবদা পমফ্রেট এইসব সুবিধাজনক মাছ খাইতাম দেশে থাকতে, ঝোল দুইচোখে দেখতে পারিনা, কড়কড়া ভাজা না হইলে খাইয়া সুখ কিসের? হাসি
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

ওডিন এর ছবি

আমি যে কাঁটা বাছি এইরকম ভ্রান্ত ধারনা কেমনে হইলো আপনার? আমিও সুবিধাজনক মাছ ছাড়া খাই না- ফর এক্সাম্পল চিংড়ি চাল্লু
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আমি মাছ খাই... মাংস ভালু পাই না।

______________________________________________________

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

ওডিন এর ছবি

আমিও মাছ খাই- সুবিধাজনক অবস্থায় থাকলে। চোখ টিপি
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

রণদীপম বসু এর ছবি

বুঝলাম না, কাঁটা বাছতে না পারেন ভালো কথা ! তাই বলে মাছ রিজেক্ট করবেন, তা কী করে হয় ! আমরা হা-মাছেরা আছি না ! এইদিকে চালান করে দিলেই তো হয় !

গাইগুঁই যা-ই করেন, আপনি যে আসলেই খুব হিংসুক আর ঈর্ষাকাতর, তা তো বুঝাই যাচ্ছে !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

ওডিন এর ছবি

দাদা আমি মাছ 'রিজেক্ট' করি এটা ভুল ধারনা- তবে এর পরে কোন মেছো নেমন্তন্নে গেলে আপ্নেরে সাথে নিয়া যাবো। হাসি
এই হিংসাটাই কমাতে পারি না- নাহলে কবে ভালো মানুষের খাতায় নাম উঠায় ফেলতাম।
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

রাহিন হায়দার এর ছবি

হিংসাটা কমন পড়সে। আর আমার বেলায় তেলাপোকা। তয় আমারে কাঁটা বাছতে দিলে ৫০ % সিস্টেম লসে পড়বেন! দেঁতো হাসি

...............................
অন্ধকারে অন্ধ নদী
ছুটে চলে নিরবধি

ওডিন এর ছবি

হেহ- এইদিকে আপনার থেকে ভালো অবস্থানে আছি আমি। খালি উড়ন্ত তেলাপোকারাই আমাকে বিরক্ত করতে পারে। খাইছে
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

রাহিন হায়দার এর ছবি

হ! প্রিসাইজ করতে ভুলে গেস্লাম। বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে তো সবসময় বলা যায় না কোনটা উড্ডয়নশীল, এই জন্য অবজার্ভেশনে রাখি সবগুলারেই।

...............................
অন্ধকারে অন্ধ নদী
ছুটে চলে নিরবধি

মৃত্তিকা এর ছবি

হো হো হো খুবই মজা পেলাম!!

অফটপিকঃ বন্ধুটা কী তোমাদের হালুম ছিলো?

ওডিন এর ছবি

থেঙ্কু। আর না- হালুম না, আমার স্কুলের এক বন্ধু। সে এমন খেপসে যে গত দুই দিন ধরে আমার ফোন ধরে না। খাইছে

তবে একবার হালুমের জন্মদিনে বেহুলা রনি ওদের লিফটে আটকা পড়সিলো! ২০০৬?
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

সাইফ তাহসিন এর ছবি

হো হো হো হো হো হো হো হো হো হো হো হো হো হো হো

এত মজা করে লেখলা মিয়া, হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে গেছে। আর কাকীমার আয়ু হোক কয়েক শতক যেন তিনি তোমার কাটা বেছে দেবার জন্যে ঠিক তোমার পাশেই থাকেন। লেখাটা খুবই মজার হয়েছে। মিয়া, এমন বস লেখা আর কয়েকটা ছাড়ো, তাইলে আমি আজে বাজে লেখা বন্ধ করে নিয়মিত তোমার লেখা পড়ে যাব। দুর্দান্ত।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

ওডিন এর ছবি

আপনে তো পইড়া মজা পাইলেন- আর আমি একজন পিচ্চিকালের দোস্ত হারাইলাম এক তুচ্ছ কাঁটার জন্য! ইয়ে, মানে...

লেখা আর কয়েকটা ছাড়ো, তাইলে আমি আজে বাজে লেখা বন্ধ করে নিয়মিত তোমার লেখা পড়ে যাব

খবরদার এই কাজটাও কইরেন না- নাইলে আর কিছু লেখুমই না। কোথায় আপনে/আপনারা আর কোথায় আমি।

---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

মামুন হক এর ছবি

আমারও হাসতে হাসতে চেয়ার থেকে পড়ে যাবার অবস্থা হলো। দারুন রসিয়ে লিখেছেন ওডিন। আরো লিখুন। তারা শর্ট পরে গেলরে ভাই।

ওডিন এর ছবি

সাবধানে ভাই... পইড়েন না। আর ধন্যবাদ! তারাফারা এইসব ভ্রান্ত ধারনা- আপনার ভালো লাগসে- এই্টাতেই খুশি। তবে পুরানো লিফটে একটু খিয়াল কইরা...
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

ভুতুম এর ছবি

লেখাটা চরম মজার হৈছে। আমি তো কাঁটার ভয়ে মাছই খাই না, এক শুধু ফিলে পেলে খাই।

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

ওডিন এর ছবি

কাঁটার মত তুচ্ছ একটা জিনিস কে এত ভয়? উড়ন্ত তেলাপোকাদের মত মূর্তিমান আতঙ্কেরা দুনিয়াতে থাকতে?? অ্যাঁ
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

সাফি এর ছবি

অসাধারন লেখা হইসে ভাই (আপনার মতন করে বললাম চোখ টিপি )
আমি মাছ খাইনা, কাঁটা বাছার ঝামেলাও নাই দেঁতো হাসি

ওডিন এর ছবি

খুব খারাপ কথা, এই বাংলার দামাল ছেলে হয়ে মাছ খান না- এক্কেরে কইষ্যা মাইনাস দেওনের কাম আপনারে। দেঁতো হাসি
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

নিরব দর্শক [অতিথি] এর ছবি

লেখাটা মাস্তি হইছে, ভীষণ মনে ধরছে দেঁতো হাসি
আমার ফোবিয়া হল তেইল্লাচোরা (আসলে ঠিক ভয় না, গা-রি-রি-করা একটা ব্যাপার আর কি)। অথচ নিয়তির কী অবিবেচক মশকরা, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাণীবিদ্যার প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষায় আমার কপালে ঐ তেইল্লাচোরার মতন খাচ্চর জিনিসটার ব্যবচ্ছেদই পড়ল ! তাও আবার "মুখোপাঙ্গ" বিশ্লেষণ ! আমি ক্ষীণদৃষ্টি বালক, আর আমাকেই কি না এ... Read moreমন বদখত দর্শন পতঙ্গের দাঁত হাতানো লাগবে !!!!!

আপনার মৎস্য-বিষয়ক তিক্তাভিজ্ঞতার জবাবে বলি - প্র্যাক্টিস মেক্স আ ম্যান পার্ফেক্ট (ওম্যান অলসো), আমি কৈমাছ থেকে ইলিশমাছ পর্যন্ত সবরকম মাছই চামচ দিয়ে বেছে খাই, ভালই লাগে, দেখেন ট্রাই করে - আপনিও পার্বেন "এনশাল্লাহ্" দেঁতো হাসি

ওডিন এর ছবি

হে হে থ্যাঙ্কস ফর দ্য অ্যাডভাইস। আর বলসিই তো কেম্নে এইচএসসি তে তেলাচুরা সাইজ করসিলাম। এর মাশুল এখনো দিতে হইতেসে।

আরেকটা ধইন্যবাদ এইসব হাবিজাবি পড়ার জন্য।
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

মাকড়সা ভয় পাই। মাছ সিরামভাবে খাইতে পারি না।

লেখা ফাটাফাটি হইসে।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

ওডিন এর ছবি

সব মাকড়শা আর তেলাপোকার (উড্ডয়নরত) আইপিসহ ব্যান চাই। জেনেটিক্যালি মডিফাইড কাঁটাছাড়া মাছ চাই।
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

নিবিড় এর ছবি

মহামান্য ওডিন আপনার লেখা পড়ার সময় একটা ঝরঝরে অনুভূতি পাওয়া যায়। এই লেখাও তার ব্যতিক্রম নয় বলে হে নর্স দেবতা আপনার একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য হাসি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

ওডিন এর ছবি

আপনারা পড়েন দেখেই তো সাহস করে লিখে ফেলি। ধন্যবাদ। আর লিফটে একটু সাবধান! হাসি
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

অতিথি লেখক এর ছবি

১/তেলাচুরা আর মাকড়রে মুইও ডরাই...২/চিংড়িপোকা লাজবাব...৩/জোশ লেখা!! *তিথীডোর

ওডিন এর ছবি

চিংড়ির মত এত মহাপ্রতাপশালী 'মাছ' কে আপনি পুকা বলে অপমান করলেন!!! খুব খারাপ! দেঁতো হাসি
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমার আসলে চারটের বেশি পাওয়ালা জন্তু ঠিক পছন্দ না

চশমায় মাইনাস লেন্স বলে ব্যটা এযাত্রা বেঁচে গেলো- কনভেক্স হলে শয়তানটার খালি ছাইটুকু পড়ে থাকতো।

আচ্ছা, মাঝরাত্তিরে এহেন লেখা পড়তে দেবার মানে কী? চাও আমার অট্টহাসিতে পাড়াপড়শিরাও জেগে যাক?! দেঁতো হাসি আর আমি কোন্‌টা ছেড়ে কোন্‌টায় মন্তব্য করি এখন! গড়াগড়ি দিয়া হাসি
আমি মাছ খেতে ভালোবাসি- আর আমি মনে করি মাছেরাও আমার প্লেটে আসতে পেরে নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করে
হ! আর আমি আসলে কাঁটাও বাছতে পারি চেষ্টা করলে, তবে সবসময় তাড়াহুড়ার উপ্রেই থাকার বদভ্যাস আছে তো, না বেছেই কুড়মুড়িয়ে খেয়ে ফেলতে চাই, আর তখনই বিপত্তির ঘটে। আমার তাই হাতের কাছেই রিমেডি থাকে, হোমিওপ্যাথির Sillicea 30! খাইছে
এখন না হয় মায়ের রেস্টুরেন্টে ফ্রি খাচ্ছো- কাঁটার মত জিনিসপত্র নাহয় তিনিই সামলে ফেলেন
বল্বা পরে বৌ-এর রেস্টুরেন্টে ফ্রি খাবা! খাইছে আর ঐযে ইন বিটুইন আবার উত্তরাখাণ্ড বা আর কোথাও গিয়ে মাছ খাইতে হলে আমার রিমেডিটা ট্রাই করে দেখতে পারো। সাধারণত ২৪ঘন্টার মাঝে কাজে দেয়। চোখ টিপি
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ওডিন এর ছবি

অ্যাঁ! হোমিওপ্যাথি কাটা রিমুভ করে কেমনে? গলায়া ফ্যালে? কিন্তু আমি তো জানতাম হোমিওপ্যাথি হইলো প্লাসেবো। অ্যাঁ

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ব্যাপক ফাটাফাটি লেখা! অনেক মজা পাইসি। হো হো হো

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ওহ্, আমি নিজেও ব্যাপক হিংসুটে! আপনার চেয়েও বেশি। এই মুহূর্তে আপনাকে যে কী সব বলে অভিশাপ দিচ্ছি, জানলে আপনি বলবেন, না বাবা এরচেয়ে মাকড়শাই আমার ঢের ভালো! মন খারাপ

পেটমোটা মাকড়শা আর উড়ন্ত তেলাপোকা আমিও একটু ভয় পাই আর কি চোখ টিপি

তবে মাছের কাঁটা নিয়ে আমার কোনোই সমস্যা নাই। সবরকম মাছই খাই। কাঁটা নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয় না। এবং আমি মাছের মাথাও খুব সুন্দর করে খেতে পারি। দেঁতো হাসি

ওডিন এর ছবি

হেহ তাহলে তোমাকে আমার অফিশিয়াল কাঁটাবাছনেওয়ালা হিসেবে নিয়োগ দিমু নে দেঁতো হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।