আকাশে ছড়ানো মেঘের কাছাকাছি- [পর্ব এক]

ওডিন এর ছবি
লিখেছেন ওডিন (তারিখ: রবি, ০৪/১১/২০১২ - ৩:৩৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

the paro valley

দুইহাজার এক দুই সালের দিকে একটা কম্পিউটার গেইম খুব খেলতাম, মাইক্রোসফট ফ্লাইট সিমুলেটর। গেমসটা ছিলো বিমান চালানোর একেবারে বেশিরকমের নিখুঁত একটা সিমুলেশান। এতোটাই নিঁখুত যে প্রথমে এইটা কে অফিশিয়ালি রিলিজ দেয়া নিয়ে বেশ ঝামেলা হয়েছিলো। নিন্দুকেরাও বলে টুইন টাওয়ারে হামলাকারী নাকি এইটা ব্যবহার করে অনেক প্রাক্টিস করেছিলো।

অর্ধবৃত্তাকার জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আমার মনে হলো সেইরকম কোন একটা ফ্লাইট সিমুলেটর গেমের মধ্যে ঢুকে গেছি। এই ক্ষুদ্র জীবনে অনেকবারই বিমানে চড়া হয়েছে, কিন্তু বিমানের জানালা দিয়ে বাইরে তাকালেই মেঘে মোড়ানো পাইন গাছের ডগা, ডগার একটু নিচেই কি জানি কি এক পাখির বাসা, মেঘ একটু ফাঁক হয়ে গেলে নিচে ঘন সবুজ শস্যের খেত, খেতে কাজ করছে রঙচঙে কাপড় পরা মেয়েরা, ডানার অল্প ওপাশেই আকাশের দিকে উঠে গেছে সবুজ থেকে হাল্কা সবুজ- এর থেকে শাদা হওয়া পাহাড়-- এইরকম দৃশ্য দেখা এই প্রথম।

বিমানটা এখন একটা সরু উপত্যকার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, দুই পাশেই খাড়া পাহাড়। আশেপাশের থেকে সহযাত্রীদের নানাবিধ বিস্ময়সূচক অব্যয়ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। সবই যে খুব উৎসাহী তা নয়, অনেকের মধ্যেই বেশ একটা ভয়ের ছাপ। এর কারণও আছে অবশ্য। ফ্লাইট ক্রু বাদ দিলে আমি, আমার ভাই এবং আমার বাবা- আমরা তিনজনই মনে হয় এই বিমানের সবচে কমবয়েসী যাত্রী। বিমান ভর্তি সব বুড়োবুড়ির দল!

প্রথম চমকটা পেয়েছিলাম কিন্তু এইজন্যেই। ব্যাঙ্কক থেকে আসা পারো-গামী দ্রুক এয়ারের ফ্লাইটে সেইদিন ঢাকার যাত্রী ছিলাম আমরা তিনজনই। প্লেনের দরজা দিয়ে ঢুকে যখন আইল ধরে এগোচ্ছি, প্রথমেই যা খেয়াল করলাম - বিমান ভর্তি সব বুড়োবুড়ি! এতো সিনিয়র সিটিজেনদের একটা জায়গায় একসাথে আমি কখনো দেখি নাই। খুবই অস্বাভাবিক একটা ব্যপার। তবে একট দিক চিন্তা করলে আবার ব্যপারটা খুব একটা অস্বাভাবিক না। কারন আমাদের গন্তব্যটাই একটু আজব মার্কা।

বলতে ভুলেই গেছি, সময়টা অকটোবর ২০১০, আমরা যাচ্ছি ভূটান! হিমালয়ের কোলে মেঘ আর কুয়াশা আর পাহাড় আর শিশিরভেজা বনে ঘেরা রহস্যময় একটা রাজ্য। উনিশশো সত্তর সালের আগে ওইখানে কোন মোটরগাড়ি চলার উপযোগী সড়কপথ ছিলো না। বিশ বছর আগেও সাধারন ট্যুরিস্ট ঢুকতে পারতো না ওখানে। নিরানব্বই সালের আগে টেলিভিশন ছিলো না।

ওদের রাজধানীতে এখনো কোন ট্রাফিক লাইট নেই। পুরো দেশটায় মানুষ সাত লাখেরও কম!
তবে পরে জানলাম, মাইক্রোসফটের সাথে যোগাযোগ করে ওদের নিজেদের ভাষার ফন্ট তৈরী করে নিয়েছে। উইন্ডোজ সেভেন এর ভূটানিজ সংস্করণও আছে একটা! হাসি

চারপাশে আকাশ ছোয়া পর্বতে ঘেরা সাত হাজার ফুট উঁচুতে পারো উপত্যকাই ভূটানের সবচে প্রশস্ত জায়গা, আর পারো বিমানবন্দর নাকি দুনিয়ার সবচে বিপদজনক বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে একটা। তাই শুধু ভূটানের রাস্ট্রীয় ক্যারিয়ার ছাড়া অন্য এয়ারলাইনসগুলো আসে না এইখানে। চারপাশের উঁচু পাহাড়, আঁকাবাকা উপত্যকা আর একেবারে বিমানের পেটে লেগে যাওয়া বনের চুড়ো পেরিয়ে একেবারে আক্ষরিক অর্থেই শ্বাসরুদ্ধকর ল্যানডিং এর পরে আশেপাশের সবাই যেভাবে ধরে রাখা নিঃশ্বাস ছাড়লো- সেইটা একটা দেখার মতো দৃশ্য! আমিও যে ভয় পাই নি তা না, কিন্তু জানালার বাইরের দৃশ্য এমন মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলো যে ভয় টা ঠিকমতো শেকড় গেড়ে বসতে পারে নাই আরকি।

দরজার বাইরে বের হয়ে মুগ্ধতা আরো বাড়লো। সময়টা দুপুরের একটু আগে। চমৎকার ঝকঝকে রোদ, এরপরেও যেই আকাশ-উপত্যকার মাঝ দিয়ে আমরা এসেছি সেইটা এরইমধ্যে মেঘের আড়ালে চলে গেছে। দূরে ধাপে ধাপে উঁচু হয়ে যাওয়া পাহাড়- ওপরদিকে মেঘে ঢাকা। একপাশে পাহাড়ের গায়ে কেল্লাটাইপ কিছু একটা দেখা গেলো, ভেবে নিলাম এইটাই তাহলে পারোর সেই বিখ্যাত যং হবে। টারম্যাকে নামতে নামতেই মনে হলো লোনলি প্লানেটে পড়ে আসা কথাটা- এই পিচঢালা অংশটুকুই নাকি পুরো দেশের সবচে লম্বা, সবচে সোজা আর সবচে সমতল জায়গা।

ততক্ষণে প্লেনের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেছে, আমার আশেপাশের সহযাত্রীরাও আমার মতোই নির্বাক- আর ওইসময়েই ধ্বক করে খেয়াল করলাম ব্যপারটা।

চারপাশ প্রায় নিঃশব্দ! ব্যাগেজ কার্টটা যদ্দুর মনে হয় ইলেক্ট্রিক ছিলো, টারম্যাকের ওপর ওইটার চাকার মৃদু ঘষটানোর আওয়াজ, আর দূরে পর্বতের ফাঁক দিয়ে বয়ে চলা হাওয়ার শোঁ শোঁ শব্দ ছাড়া আর কোন কিছুর আওয়াজ নেই। মানুষের কথাবার্তা, যন্ত্রপাতির গুঞ্জন, গাড়ির হর্ণ- কিচ্ছু না! এইটা কি আসলেই একটা এয়ারপোর্ট? এইখানে দাঁড়িয়েই নিচু বাউন্ডারি ওয়ালের বাইরে এয়ারপোর্টের পার্কিঙ লটটা দেখা যাচ্ছে। গোটাবিশেক গাড়ি- সব চুপচাপ।

ইমিগ্রেশন অফিসটা বাইরে থেকে দেখতে ঠিক একটা ছোটখাটো গুম্ফার মতো, শুধু ভেতরে গেলেই মনে হয় এইটা একটা সরকারি অফিস। ঢোকার সময়েই দরজার দুই পাশে রাজার পোর্ট্রেট- স্বাগত জানানোর ভঙ্গিতে, আর দেয়ালজুড়ে মারাত্মকরকমের সুন্দর সব থাঙ্কা পেইন্টিংস!

paro airport

ভালো লাগা আরো বেড়ে গেলো যখন ইমিগ্রেশানে শাদা চামড়াদের থেকে বেশি খাতির আমরা বাংলাদেশিরা পেলাম। যদিও আমাদের ভিসা মাত্র পনেরো দিনের- তারপরেও সেইটা অন অ্যারাইভাল, আর অন্যসব বিদেশিদের মতো আমাদের কোন নির্দিষ্ট ট্যুর প্রোগ্রামের মধ্যে দিয়ে আসতে হচ্ছে না। ভূটান ট্যুরিস্টের সঙ্খ্যা একটু নিয়ন্ত্রণ করে, আর ওদের মটো হচ্ছে হাই ভ্যালু লো ইমপ্যাক্ট ট্যুরিজম। ওরা খুবই কালচারালি সেন্সিতিভ আর অতিরক্ত ট্যুরিস্টের বিরূপ প্রভাব যাতে দেশে না পড়ে, সেইজন্য সমস্ত বিদেশি ট্যুরিস্টকেই একটা নির্দিষ্ট ট্যুর গ্রুপের সাথে আগে থেকে ঠিক করা ভ্রমণসূচী অনুযায়ী ঘুরতে হয়। আর এইখানে অনেক সময়েই প্রত্যেক জনের প্রত্যেক দিন দুইশ ডলারের আশেপাশে লেগে যায়। এইজন্যেই মনে হয় নেপাল বা ইন্ডিয়ার মতন অল্পবয়সী ট্যুরিস্ট দেখলাম না বললেই চলে- বেশিরভাগই সত্তোরোর্ধ্ব রিটায়ার্ড বুড়োবুড়ি ।

সৌভাগ্যক্রমে ইন্ডিয়ান আর বাংলাদেশী নাগরিকেরা আবার এই নিয়মের মধ্যে পড়ে না। তাই আমরা সহজেই অনেকটা অল্প পয়সায় ঘুরে বেড়াতে পেরেছিলাম। আর এমনিতেও আমরা ছিলাম সরকারী অতিথি, সার্ক অঞ্চলের অর্থোপেডিক চিকিৎসকদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে নিমন্ত্রণ পেয়ে, তাই ওইদিকেও কিছু সুবিধে ছিলো।

ব্যাগপত্র গুছিয়ে নিয়ে যখন বাইরে বের হলাম, আমাদের নাম ছাপা কাগজ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আমাদের গাইড কাম ড্রাইভার ভদ্রলোকের সাথেদেখা হলো। অন্য সবার মতনই ভুটানের জাতীয় পোষাক পরে আছে, যেইটার নাম হলো 'ঘো' আর অনেকটা হাতা গোটানো রঙচঙে বাথরোবের মতো দেখতে। ভদ্রলোকের নাম উগেইন। উনি নিজেই বাবার বড় স্যুটকেসটা টানতে টানতে নিয়ে একটা লেক্সাস হ্যারিয়ার এসইউভির পেছনে তুলে ফেললেন। তারপরে দুই পাশে বার্লির ক্ষেত আর বনে ছাওয়া পথ, যার পাশে অনেকখানি জায়গা জুড়ে আবার পারো চু (চু মানে নদী) ও পাশে পাশে অনেকদূর চলে গেছে, পেরিয়ে শহরের একটু বাইরে আমাদের থাকার জায়গায় এসে পড়লাম।

দেখা গেলো যে উগেইন শুধু আমাদের ড্রাইভার প্লাস গাইডই না, সে নিজেই এই রিসোর্টের মালিক! আরো জানা গেলো সে একজন প্রাক্তন ফুটবলার। জাতীয় দলে খেলেছে, ক্যাপ্টেনও ছিলো কিছু দিনের জন্য। ইনজুরিতে পড়ে খেলা ছেড়ে দিয়ে এখন নিজের পৈতৃক বাড়িটাকে রিসোর্টে কনভার্ট করে, আর থিম্পুতে আরেকটা হোটেল চালু করে এখন চুটিয়ে হোটেলের বিজনেস করছে।

আমার এই তুচ্ছ লেখালেখির সাথে পরিচিত যারা, তাদের অনেকেই জানেন যে জাতীয় দলের প্রাক্তন ফুটবলার (এবং অধিনায়ক) দের সাথে আমার দেখাসাক্ষাত ঠিক স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে হয় না। এবং সেই অভিজ্ঞতাও যে খুব সুখকর তা না। কিন্তু এই একজন জাতীয় দলের প্রাক্তন ফুটবলার (এবং অধিনায়ক) এর সাথে সাক্ষাতটা আমার অতীতের সব তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলিয়ে দিতে সাহায্য করেছে- এতে কোনোই সন্দেহ নেই।

উগেইনের রিসোর্ট দেখে তো ভালো লাগলোই, একতলা লম্বা একটা এল শেইপড দালান, সামনে বিশাল উঠোন আর বাগান, বেশ বড় বড় ঘর। উঠোনের মাঝখানে একটা মন্দিরমতো জিনিস। ভেতরে মাখনের প্রদীপ জ্বলছে। সামনে রাস্তা পেরিয়ে বার্লির ক্ষেত, তার একটু দূর থেকেই বল শুরু হয়েছে। বনের মধ্যে কুয়াশার মত কি জানি একটা জিনিস আটকে আছে যেইটা পরে বুঝলাম যে আসলে মেঘ। কিন্তু আসল কাহিনী হইলো যে ঘরে দেখি ফ্রি ওয়াইফাই কানেকশন আছে। স্পিডও দুর্দান্ত! ভূটানের মতো আপাতদৃষ্টিতে এইরকম ব্যাকডেটেড জায়গাতে এইরকম টেকনোলজি দেখে আমি একটু অবাকই হইলাম- এইটা স্বীকার করতেই হবে। অবাক আরো ভালো মতো হলাম যখন ঘন্টাখানেক পরে শহরে গিয়ে সব কাগজ মানে পাসপোর্ট ছবি এইসব দিয়েও পনেরো মিনিটের মধ্যেই ভূটানিজ টেলিকম তাশি সেল এর একটা সিম কিনে সেইটা অ্যাক্টিভেটও করে ফেলতে পারলাম।

doggy!!!! <3
রিসোর্টে দেখা এনার সঙ্গে

the town of paro
শহর

পারো শহরের একমাত্র বড় রাস্তাটা ১৯৮৫ তে বানানো হয়। আর পুরো শহরটা এতোই ছোট যে পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখতে আধঘন্টার বেশি লাগে না। আর শহরটার ওপর ছায়া মেলে রয়েছে বিখ্যাত পারো যং। যং (dzong) এর অর্থ করা যেতে পারে ফোরট্রেস-মনাস্টেরি। একাধারে দুর্গ আর সন্ন্যাসীদের আবাসস্থল। মূল মন্দিরকে ঘিরে একটা কমপ্লেক্সের মতন গড়ে ওঠে, যেইটাতে সরকারী অফিস, সেই অঞ্চলের আদালত থেকে শুরু করে স্কুল পরযন্ত থাকে। পুরো ভূটানেই এইরকম ছোট-বড় যং এ ভর্তি। আর বড় যংগুলো অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সেন্টার হিসেবেও কাজ করে। যেমন এই পারো র যং, বা আরেকটা শহর পুনাখা'র যং- যেইটা আগে প্রাচীন রাজধানী ছিলো।

শহরের মূল সড়কটা ধরে দক্ষিণ দিকে গেলে পাঁচটা চোর্তেন আর আর্চারি গ্রাউন্ড পেরিয়ে গেলেই পারো যং এ যাওয়ার জন্য একটা কাঠের সেতু আছে। যদিও এখন মূল ফটকের পাশ দিয়ে গাড় যাওয়ার জন্য নদীর অন্যপাশ ঘুরে একটা আলাদা সড়ক করা হয়েছে- উৎসবে পার্বণে এই পুরোনো সেতুওয়ালা পথটাই ব্যবহার করা হয়। আমরা যখন গেলাম ওইসময় রিস্টোরেশান এর জন্য সেতুটা বন্ধ ছিলো, তাই পরে যং এর ওপরতলার একটা ঘরের জানালা থেকে এই ছবিটা তোলা হয়
the bridge

পারো যং ভূটানের অন্যতম সুন্দর আর বড় যং। ভূটানিজ স্থাপত্যকলার একটা উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে ধরা হয় এইটাকে। প্রাথমিকভাবে গুরু পদ্মসম্ভব এর প্রতিষ্ঠা করা একটা মঠের চারদিকে এই যং গড়ে তোলার কাজ শুরু করা হয় ১৬৪৪ এর দিকে। পারো যং এর অফিশিয়াল নাম হলো রিনচেন পুং যং- যার অর্থ করা যেতে পারে রত্নের স্তুপের ওপর অবস্থিত যং। আমি তো নাম শুনেই খুশি হয়ে গেছিলাম, জিজ্ঞেস করলাম যে রত্নপেটিকাভরা গুপ্তকক্ষের সন্ধান পাওয়া টাওয়া গেছে নাকি কখনো। উত্তর শুনে হতাশই হলাম অবশ্য।

Paro (Ringpung) Dzong
পারো যং

the entrance of dzong\
প্রবেশপথে লামা'র দল

এইখানে কয়দিন আগে পর্যন্তও ভূটানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ছিলো, এখন অবশ্য পুরো প্রশাসনিক অংশটাকেই মিউজিয়াম করে ফেলা হয়েছে। ভেতরে ঢুকে রকমসকম দেখে অবশ্য চোখ টেরিয়ে যাওয়ার দশা হলো। প্রথমেই একটা বেশ বড় উঠোন, মানে যাকে কোর্টইয়ার্ড বলে, পাথর দিয়ে বাঁধাই করা। এর চারদিকে ঘিরে কাঠের লাল, হলুদ আর কমলা রঙের দুইতলা দালান। মাঝখানের মূল মন্দিরটা টিপিকাল তিব্বতি ধরনের ট্রাপেজয়েড শেপ এর শাদা চুনকাম করা দালান। বিশেষ পার্বণের সময় এইটার দেয়াল থেকে একটা আঠারো বর্গমিটারের থাঙ্কা ঝুলিয়ে দেয়া হয়- যেইটা কিনা আবার তিনশো বছরের পুরোনো!

the monk

paro dzong

ornate windows
কেন্দ্রীয় মন্দিরের জানালা

Untitled

entrance of the central chapel
কেন্দ্রীয় মন্দিরের প্রবেশপথ

অবসর

দুই সাধু ক্যারম খেলছিলেন মনে হয়

monk

আর এক সাধু উঁকিঝুঁকি মারছেন

courtyard
মূল চত্বর

DSC06066

acolyte with amulets
তাবিজ বিক্রেতা বাচ্চা সাধু

প্রথম দিনে এই পারো যং দেখেই মোটামুটি আমাদের বজ্রাহত অবস্থা! তারপরে শহরে হালকা হাঁটাহাটি করেই দিন কাটিয়ে দেয়া হলো। ছোট্ট শহরে হাঁটাহাটি করেই বা কতক্ষণ আর কাটানো যাবে। তবে ঘুরে ঘুরে কিছু ছবি তোলা হলো আরকি।

)
ভূটানের লোকজন খুবই মরিচপ্রেমী মানুষ দেখা গেলো

frame II
নিঃসংগ দোকানী

schools out!
পুলাপান স্কুল থেকে ভিজে ভিজেই ফিরছে

Untitled
ইনি অবাক হয়ে দেখছিলেন এই কালো মোটা পাগলাটাইপের আজব চেহারার এক বিদেশীকে হাসি

kid with funny hat
আর ইনি হলেন আগেরজনের ভাই হাসি

frame I
ইনি দুনিয়াদারী নিয়ে বেশ উদাসীন বলে মনে হচ্ছে হাসি

sunshine
শেষ বিকেলে রোদ আর মেঘের খেলা

ঘুরেফিরে উগেইনের আড্ডায় ফিরে এসে প্ল্যান করা হলো ভূটানের আইকন বিখ্যাত টাইগার্স নেস্ট মনাস্টেরি দেখতে যাবো পরের দিন।

সেই গল্পও পরের বার হবে আশা করি হাসি

কৈফিয়ত একঃ লেখার শিরোনাম মহীনের ঘোড়াগুলির গান থেকে ধার করা। আজকে দুপুরবেলা কার্তিকের জোৎস্না প্রান্তরে ঘাস খেতে খেতে অনেকবার এইটা শুনছিলাম হাসি

কৈফিয়ত দুইঃ

দুই বছর আগের ট্রাভেলগ এখন কেনো? কারন আমি বিশাল আইলসা! হাসি তবে গতকাল থেকে এই বইটা পড়তে গিয়ে মাথা একটু আউলে গেলো। ভাবলাম- সময় গেলে সাধন হবে না- তাই এইবেলা লিখে ফেলা শুরু করলাম। এইটা আগামী কয় হপ্তার মধ্যেই শেষ করব বলে আশা রাখি।

কৈফিয়ত তিনঃ

এই লেখাগুলো যদ্দুর মনে হয় তারেক অণুর জন্য। উনি একটা অভিশাপ। সারাক্ষণ খালি আমাকে মানসিক অশান্তিতে ফেলে দেন। উনি সুযোগ পাইলেই ফেসবুক গুটক স্কাইপীতে নক করে জিগান- ও দাদা- ভেনেজুয়েলার অ্যাঞ্জেল ফলস দেখতে যামু, যাইবেন নিকি?

যাই কই মন খারাপ


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

ফন্ট বানানোর টেন্ডার যে মাইক্রোসফট পেয়েছে, এটা কি কাগু জানে?

ওডিন এর ছবি

উপস! এইখানে বইলা কি ভুল করলাম নাকি? চিন্তিত

হিমু এর ছবি

আপনি বাংলাদেশকে আরেকটি আন্তর্জাতিক সঙ্কটে ঠেলে দিলেন মন খারাপ

ওডিন এর ছবি

আরে বেপার না। ওইসব সঙ্কট-টঙ্কট কাটায়া ওঠা যাবে। মাইক্রোসফট তথা আমেরিকার বেইল নাই। খালেদা জিয়ার চিন আর ভারত জয়ের পরে এই দুই ইমার্জিং সুপারপাওয়ারের সাথে আমাদের সম্পর্ক এখন লৌহদন্ডের নেয় শক্ত দেঁতো হাসি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

তারেক অণু একটি অভিশাপ। আপ্নে ভালু। কালো মোটা পাগলা টাইপের আজব চেহারার ভাই হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ওডিন এর ছবি

ভাইবা দেখলাম তারেক নামের লোকগুলাই অভিশাপ। আমাদের তারেক ভাইয়ার কথাই ধরো। তার আলাভোলা বেবসায়ী বন্ধু গিয়াসুদ্দিন আল মামুনের কি সর্বনাশটাই না করলো ওঁয়া ওঁয়া

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তেব্র পেতিবাদ! আমাগো মহাকবি তারেক্রহিম কার জন্যি অভিশাপ?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ওডিন এর ছবি

খালি কি মহাকবি তারেক রহিম, অনিকেতদা আর কনফু ভাই এর কথাও ভুলে গেলেও চলবে না। এরা প্রত্যেকেই এক একজন মূর্তিমান তারেক মানে অভিশাপ! ইয়ে, মানে...

মুস্তাফিজ এর ছবি

একদিন ঠিকই যামু।

আচ্ছা ভাইজান, একটা জিনিষ যোগ করে দিই
তেংজিং হিলারী এয়ারপোর্ট (লুকলা এয়ারপোর্ট) সবচাইতে ডেঞ্জারাস এয়ারপোর্ট। ইটুব থাকলে চট কইরা দেইখা ফালান, জিনিষ একটা
http://youtu.be/5vx5K43aveA

...........................
Every Picture Tells a Story

ওডিন এর ছবি

হ' এইট জানতাম। এইজন্যেই লুকলা গেলে বাসের আর হাঁইটাই যামু, জানের ডর আছে না দেঁতো হাসি

বাই দ্য ওয়ে- আমি ঠিক ধরেছিলাম আপনে ভূটান যান নাই, নেট থেকে ফটো যোগাড় করে ওই টাইগার্স নেস্টের ফাঁকিবাজি পোস্টটা দিছিলেন- আপনের কথায় নিঃসন্দেহ হইলাম হেহেহেহেহেহে শয়তানী হাসি

মুস্তাফিজ এর ছবি

আমি লুকলা হেঁটেই গিয়েছিলাম, ঝিরি থেকে লুকলা হাঁটাপথ অসাধারন।
ও আচ্ছা টাইগার্স নেস্টের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

কড়িকাঠুরে এর ছবি

হুম- চলুক

গানটা অনেক অনেক অনেক... পছন্দের... গানের শিরোনামে লেখা ছবিও পছন্দ হইছে...

ওডিন এর ছবি

ধন্যবাদ কড়িকাঠুরে হাসি

মহীনের ঘোড়াগুলি আমার প্রিয় ব্যান্ড। আমার প্ল্যান আছে একটা চা-কফির দোকান প্লাস আড্ডা দেয়ার জায়গা এস্টাবলিশ করার। একটু আন্দাজ করেন ওই কাফে'র নাম কি হবে- চোখ টিপি

কড়িকাঠুরে এর ছবি

ডাগদর মানুষের খালি টেস্টং... পারুম না আন্দাজ করতে। যদি সময় সুযোগ হয় মানে যদি চান্স পাই আর কি- তয়লে গিয়ে আড্ডা আর লগে কাপের মধ্যে হিয়া গুলাইয়া খাইয়া আসুম নি।

ওডিন এর ছবি

হাহাহা

যাক বলেই দিই তাহলে - 'প্রিয়া কাফে' চোখ টিপি

কড়িকাঠুরে এর ছবি

কাপের মধ্যে কইলাম হিয়া গুলাইয়া খামু কইছিলাম... হাসি

ওডিন এর ছবি

এহহে ওইটা মিস করে গেলাম লইজ্জা লাগে

সাফি এর ছবি

এবং আজকের তাড়েকাণু পুরষ্কার বিজয়ী...

ওডিন এর ছবি

প্রথমেই আমি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই ওপরের গড অলমাইটি গুরু গুরু আর নিচের বস অলমাইটি কে শয়তানী হাসি ।এরপরে আমার বোকা বাবা-মা, যাঁরা তরুণ বয়সে অজ্ঞাতকূলশীল কালো মোটকু আমাকে শিশু হাসপাতাল থেকে কুড়িয়ে নিয়ে এসে মানুষ করেছেন। স্মরণ করছি আমার অকালমৃত পোষা গোল্ডফিশ হাইনরিখ আর আমার অকালে মানসিক ভারসাম্য হারানো কুত্তা মন্টু কে। আই মিস ইউ গাইজ। এরপরে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার প্রিয় নর্থফেইস ব্যাকপ্যাক কে- হইতে পারে সে একটা নকল, থামেল থেকে আ=মাত্র আটশ টাকায় কেনা- তারপরেও ইউ রক বাডি! দেঁতো হাসি

আর সবশেষে প্রিয় সচলবাসীকে- আপনারা সবাই যে আমার থেকে নিম্ন বুদ্ধিমত্তার প্রাণী- এইটা জেনেও আমি আপনাদের ভালোবাসি। শয়তানী হাসি

সবশেষে, বাকি সবার জন্যও ভালোবাসা। আসেন ভাইসব- এই ২০১২ সালে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলেদেশ ও জাতিকে আর বিভক্ত না করি। মেইক লাভ, নট ওয়ার। রিকনসিলিয়েশান, নট রিভেঞ্জ। হাভার্ড স্কলার শ্রীমতি শর্মিলা বসু ও এই কথাই বলেছেন। উনি কিন্তু একজন ডক্টরেট ডিগ্রিধারী- খুব খিয়াল কইরা

কোলাকুলি

তারেক অণু এর ছবি
সাফি এর ছবি

দেঁতো হাসি

শাব্দিক এর ছবি

হাততালি হাততালি হাততালি

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

চলুক
চমৎকার একটি পোস্ট, ছবিগুলো খুব সুন্দর!
ভ্রমনপ্রিয় সব সচলদের জন্য আমাদের বেশ মজা, দিব্যি কেমন এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াতে পারি তাদের পোষ্টের সাথে সাথে দেঁতো হাসি হাততালি

ওডিন এর ছবি

আপনেও একটা ব্যাকপ্যাক কাঁধে লটকে পথে বের হয়ে পড়েন মিয়া। খালি পড়লেই হপে? দেঁতো হাসি

রংতুলি এর ছবি

চলুক বর্ণনা মুগ্ধ হয়ে পড়লাম! উদাসীন বাবুটাও খুব পছন্দ হইছে।

ওডিন এর ছবি

মন্তব্য লাফায়

তাই ঘ্যাচাং!

রংতুলি এর ছবি

লাফায় ক্যান?!

ওডিন এর ছবি

ধন্যবাদ রংতুলি হাসি

বন্দনা এর ছবি

দারুণ একটা পোষ্ট, এখন আমাকে বলেন , রাফ্লি খরচ কেমন পরে ওডিনদা??

ফারাসাত মাহমুদ এর ছবি

আমি আর আমার কলিগ এবছর গিয়েছিলাম একটা প্যাকেজে। থিম্ফুতে ছিলাম ২ রাত ২ দিন এবং পারোতে ছিলাম ১ রাত। জনপ্রতি খরচ হয়েছিলো সর্বমোট ৩৫,০০০ টাকা। এর মধ্যে বিমান ভাড়া, ৩ বেলা খাওয়া, হোটেল, গাড়ী ভাড়া সবকিছুই অন্তর্ভূক্ত ছিলো। সাথে নিয়ে গিয়েছিলাম ২০০ ডলার, ১০০ ডলার নিয়ে ফেরত এসেছি :D। বাংলাদেশী ১ টাকা = ভূটানীজ ১ দশমিক ৫০ রুপী।

ওডিন এর ছবি

আমি গেছিলাম পাঁচদিনের জন্য। বিমানভাড়া বাদে দুইশ ডলারের মতো খরচ হয়েছিলো, তবে খরচ একটু বেশি হওয়ার কারণ, আমরা মানুষ ছিলাম কম, আর ট্রান্সপোর্টের খরচ একটু বেশি। আমাদের গাড়ি ভাড়া করে ঘুরতে হয়েছিলো। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট খুব একটা নাই ওইখানে (পাবলিকই নাই, আবার পাবলিক ট্রান্সপোর্ট দেঁতো হাসি )

তবে তারপরেও আমি মনে করি ব্যাঙ্কক সিঙ্গাপুর ঘোরার থেকে ভূটানে ঘোরা অনেক ভাল। নেক্সট টাইম আরো সময় নিয়ে যাব, বিখ্যাত ড্রুক পাথ এ ট্রেক করার ইচ্ছে আছে হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সবাই তারেকাণু হইয়া যাইতেছে ওঁয়া ওঁয়া

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ওডিন এর ছবি

তারেকাণু হইলো সেই রক্তবীজ নামক পৌরাণিক দস্যুর মতন। এক এক ফঁটা রক্ত থেকেই আরেকটার জন্ম হয় শয়তানী হাসি

সত্যপীর এর ছবি

নেপাল গেছি ভুটান যাইনাইক্যা। নেপাল এখনো চক্ষে লাইগা আছে, এখন দেখতেছি ভুটান্নাগেলে জীবন কয়েকানাই মিছা।

একদিন আম্রাউ...

..................................................................
#Banshibir.

ফারাসাত মাহমুদ এর ছবি

আমার সুইজারল্যান্ড যাওয়ার শখ মিটে গেছে ভাই। অসাধারণ সুন্দর একটা জায়গা। পাহাড়, মেঘ, মানুষ সব মিলিয়েই। অবশ্যই যাওয়া উচিৎ। হাসি

ওডিন এর ছবি

আমারো ভাই, আমারো।

আমার আব্বাহুজুর ভুটানের আগে সুইজারল্যান্ড ঘুরে এসেও এইটা স্বীকার করেছে । হাসি

ওডিন এর ছবি

পীরবাবা! জাহাঙ্গীর বাদশার কসম, যদি আপনি আমার মত শান্ত নির্জন জায়গাতে ছুটি কাটানোর জায়গার ভক্ত হন, তাহলে বেঙ্কক সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়া বাদ্দিয়া ভূটান চলে যায়েন। না গেলে বিশ্বাস করবেন না কেমন অন্যরকম একটা জায়গা।

mamun এর ছবি

গুরু গুরু

ওডিন এর ছবি
নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনি ২০১০ অক্টোবরে? আমি গেলাম ২০১১ অক্টোবর। এই সময়েই বেশীরভাগ লোক যায় নাকি? আমার গাইডের নামও তো উগেন ছিল, একই লোক কিনা!! তার অবশ্য রিসোর্ট নাই। তবে বিশাল একখানা বাড়ির মালিক সে।

এয়ারপোর্টে নামার পর নৈঃশব্দের ধাক্কাটা হঠাৎ কেমন যেন লাগে। কানের মধ্যে পাহাড় থেকে ভেসে আসা অজানা পোকামাকড়ের কিরকির করা শব্দটাও সেইরকম। চাইছিলাম রেকর্ড করতে, কিন্তু যন্ত্রে কাজ হয় না।

পারো জং গতবছর ভূমিকম্পের ধাক্কায় বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এখন টুরিষ্ট ঢুকতে দেয় না। বাইরে ঘুরে ফিরে চলে আসতে হয়েছে। ওদের প্রাচীন যাদুঘরে গেছেন নিশ্চয়ই। ক্যামেরা মোবাইল বন্ধক রেখে ঢুকতে হয় দেখে অবাক হইছিলাম। তবে ভেতরের জিনিসগুলো সেইরাম। মাত্র একশো বছর আগেও ভুটানের রাজা খালি পায়ে লুঙ্গি ছালা পরে শাসন করতো। আমাদের দেশে ২০০০ বছর আগেও রাজাবাদশার এত দুরাবস্থা ছিল না। ওদের রাজার পোলারা অক্সফোর্ডের ডিগ্রি নিয়ে দেশ চালায়, আমাদের রাজার কোন কোন পোলা বিএ ফেল করে চুরিধারি করে সংসার চালায়। নাহ......পার্থক্যের কথা ভাবলে ব্যথাই লাগে।

বাকী অংশ দ্রুততম সময়ে দেন। হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ওডিন এর ছবি

ওই উগেইন ও কি ফুটবলার ছিলো? তাইলে কিন্ত এক লোক হইতেও পারে। অবশ্য উগেইন নামটা ভূটানে বেশ কমন মনে হইলো। ওদের এক প্রাচীন রাজার নাম। হাসি

ওদের জাদুঘরটা আসলেই দুর্দান্ত! পুরোনো ওয়াচটাওয়ারটাকে কি অসাধারণভাবেই না রিস্টোর করেছে।

আর ভূটানের সাথে দেশের পার্থক্যের কথা চিন্তা করা বাদ দিছি। কি পিচ্চি একটা দেশ, আমাদের কলাবাগান ধানমন্ডি মিলিয়েও এর থেকে বেশি মানুষ আছে- আর কি ওদের পরিকল্পনা আর সেইগুলোর এক্সিকিউশান। জিডিপি নাই, এর বদলে গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস। মানুষকে সুখী করাই ওদের মূল লক্ষ্য। েডুকেশান ফ্রি, হেলথকেয়ার ফ্রি, আমরা তো এইগুলার স্বপ্নই দেখে যাব মনে হয়।

কনফারেন্সে ওদের ফরেন মিনিস্টার আর হেলথ মিনিস্টারের সাথে কথা বললাম- যেইরকম রাস্তার ধারের পানের দোকানীর সাথে কথা বলেছি। নিজের দেশকে নিয়ে এইরকম গর্বিত মানুষজন খুব একটা দেখি নাই

ফারাসাত মাহমুদ এর ছবি

এই বছর রোযার ঈদের সময় ভূটান গিয়েছিলাম। থিম্পু আর পারো। আপনার প্রথম দু'টো ছবি দেখে খুব মজা পেয়েছি, কারণ একই জায়গা থেকে প্রায় একই অ্যাঙ্গেলে আমিও এরকম দু'টো ছবি তুলেছি। যদিও আমার ছবিগুলো আপনার মত সুন্দর হয়নি, তারপরও এখানে দেয়ার চেষ্টা করে দেখলাম এই কথাটা দেখাচ্ছে - "To complete this form, please complete the word verification below." যদিও কোন ক্যাপচা বা সেজাতীয় কিছু নীচে, উপরে, ডানে, বামে কোনদিকে নেই।

লেখাটা অসাধারণ লাগলো।

ওডিন এর ছবি

কি আর সুন্দর ছবি, সাধারণ পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরা দিয়ে তোলা। তবে এইটা ঠিক, জায়গাটাই এমন যে মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে তুললেও ছবি ভালো আসার কথা হাসি

অতিথি লেখকের অ্যাকাউন্ট থেকে লগ ইন করে তো ছবি পোস্ট করতে পারা যায় মনে হয়

অতিথি লেখক এর ছবি

ছবি দেবার লোভে শেষ পর্যন্ত নিবন্ধন করে ফেললাম। এবার ছবি দেখেন।

এইটা পারোতে আমাদের হোটেলের ব্যালকনি থেকে তোলা।
DSC_1989

এইটা পারো যং থেকে শহরের দৃশ্য
DSC_1946

পারো মিউজিয়ামের বাইরে ফুলের বাগান
DSC_1950

ফারাসাত

শাব্দিক এর ছবি

সুন্দর!!! চলুক

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ!!

ফারাসাত

স্যাম এর ছবি

এত্ত বড় একটা কমেন্ট লিখে হারিয়ে ফেললাম মন খারাপ মন খারাপ ইমোনির্ভর এই আমার জন্য এটা যে কত বড় দুঃখের বড় লেখকদের তা বোঝাতে পারবনা মন খারাপ
যাই হোক - আপনার সাথে মাত্র কয়েক মাস এর জন্য দেখা হয় নাই - ২০০৯ এর সেই সফরে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম আর ৫ বছর পর থেকে ভুটানেই থেকে যাব - কে জানত ফিরে এসেই জীবন বদলে যাবে চিরদিনের মত !

প্রকৃতি, মানুষ সব মিলিয়ে অসাধারণ! আপনার লেখায় একেবারে পুরো ফিরে যেতে পারলাম --- অনেক ভাল লাগল।

ওদের কাঁচাবাজার টা (থিম্ফু তে) আমার ভীষন ভাল লেগেছিল ----

GDP নয় GNH মেনে চলা এ দেশটি আমার সব মিলে ভীষন আধুনিক মনে হয়েছে।

ওডিন এর ছবি

থিম্পুতে দুইটা বিকেল শুধুই হেঁটে বেড়িয়েছি। পরের দিকে লিখব এইটা নিয়ে। ওদের একটা বুকশপে, দ্য জাংশন, এ ঢুকে তো আমার দিশেহারা হবার মতো অবস্থা! আর একটা কাফে ছিলো- দ্য আর্ট কাফে- ওইটাও মারাত্মক একটা জায়গা।

ভূটানে চাকরি একটা পেয়েই গেছি। খালি ক্যারিয়ারবিষয়ক পড়ালেখার জন্য একটু আটকে আছি আরকি। সারা জীবন না হলেও এক বছর থেকে যাওয়ার ইচ্ছে খুব ভালমতোই আছে হাসি

পড়ার আর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ প্রিয় ব্যানার্জি হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

ঘুরাঘুরি ভালু পাই !! ওডিনদা আর ঘনুদা দুই জনেই অভিশাপ !! শয়তানী হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ওডিন এর ছবি

শয়তানী হাসি

আপনের ঘুরোঘুরির আরো লেখা কই?

অরফিয়াস এর ছবি

হ আমি লেখি পরে আমারেও অভিশাপ কইবো !! খাইছে

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ওডিন এর ছবি

মানুষে অভিশাপ বললেই কি আর অভিশাপ হয় রে পাগলা! তারেক রহমান ভাইয়াকে দ্যাখেন না, ওনাকে অনেকেই তো অভিশাপ বলে- আসলে উনি হইলেন দেশের ভবিষ্যত কান্ডারী গুরু গুরু

অরফিয়াস এর ছবি

গুরু গুরু

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু এর ছবি

মিয়া একখান পোস্টের ছোট্ট একটা অংশ উৎসর্গ করলেন তাও লেখলেন মুনে অয়, আপনি এত কিপটা! খাইছে আর আমি পেরুতে বইসে মাচু পিচুর পোস্ট আপনার বয়স কমা উপলক্ষে দিছিলাম, ভুইল্যা গেলেন অ্যাঁ

কইছি তো, অ্যাঞ্জেল ফলসের বিমান ভাড়া আমার, মানে টেপুই গেলে সেখান থেকে, ঢাকা থেকে না, শয়তানী হাসি

আর মনে না ধরলে বলেন, একলাই রওনা দিমু, ভ্রমণসঙ্গী, সাধন সঙ্গী সবাই মওজুদ লইজ্জা লাগে

ভুটান ভালা পাই, লিখতে থাকেন জলদি, বাঘের বাসায় গেছিলেন তো, নাকি?

আহা কি ছবির মত দেশ!

ওডিন এর ছবি

মনে ধরবে না মানে? আমার সারাজীবনের আরাধ্য গন্তব্য তিব্বত কারাকোরাম মিডল এশিয়ার পরেই হইলো দক্ষিণ আমেরিকা। পেরু ইকুয়েডোর বলিভিয়া থিকা এক্কেবারে ভেনেজুয়েলা!

যামুই যামু। মন্ত্রের সাধণ কিংবা শরীর পাতন! গুল্লি

আর পুরা পোস্ট এবং এই বিষয়ক পরের লেখাগুলোও আপনের জন্য। জন্মদিন আইতাছে না? হেফি বাড্ডে দেঁতো হাসি

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

তারেকানু একটি অভিশাপ। অনেকেই এখন ভ্রমণকাহিনী লিখতে ভয় পায়।

লিখেছেন বলে আপনাকে ধন্যবাদ। চমৎকার লেখা হয়েছে, ভালো ছবি এসব বলে আপনাকে আর বিব্রত করলাম না চলুক

ওডিন এর ছবি

কিন্তু তারেকাণুর লেখা পড়ে তো সবার তো আরো কি-বোর্ডের পর ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা চিন্তিত

হাইজ্যাকিং তো হইলো, আপনের ঘুরাঘুরির কাহিনী লেইখা ফেলেন এইবার।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

তাহলে তো বড়ই মিস করলাম! মাস দুয়েক আগে আমার ছোট বোন ডাক্তারদের একটা গ্রুপের লিডার হয়ে ভুটান গিয়েছিলো, অনেকে পরিবার-পরিজনসহও গিয়েছিলেন। আমার বোনও আমাকে বিশেষ অনুরোধ করেছিলো। কী কারনে জানি যাওয়া হয় নাই। তাছাড়া খুব একটা আগ্রহও ছিলনা।
লেখা এবং ছবি দুই-ই খুব ভাল লেগেছে। চলুক

ওডিন এর ছবি

ঘুরে আসেন একবার- তবে হাতে সময় নিয়ে- তিন চারদিনের প্যাকেজ ট্যুরে না। ভালো লাগবে অবশ্যই!

মন মাঝি এর ছবি

চলুক

****************************************

ওডিন এর ছবি
ওডিন এর ছবি
তাপস শর্মা এর ছবি

চলুক

বদ্দা রক্স \m/

ওডিন এর ছবি

ইয়েহ! আই নো চাল্লু

অতিথি লেখক এর ছবি

আপ্নারা ঘুরতে থাকেন
আর আমরা খালি বইয়া বইয়া দেখি আর আঙ্গুল চুষি।

নির্ঝরা শ্রাবণ

ওডিন এর ছবি

এমনে বললে কি আর হপে? ঝলা কান্ধে নিয়া পথে বের হতে হপে দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক চলুক আপনি আবার ভ্রমন কাহিনী শুরু করেছেন দেঁতো হাসি

রিক্তা
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।

ওডিন এর ছবি

হু। ঘুরোঘুরি অনেক হচ্ছে- কিন্তু ওই বিষয়ে লেখালেখি হচ্ছে না। তাই আবার শুরু হলো লোকজনকে বিরক্ত করা শয়তানী হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

হুমম হাসি ঘুরাঘুরির ছবি ফেইসবুকে দেখতে পাই।

রিক্তা
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

মুগ্ধ হয়ে পড়ে গেলাম চলুক

ওডিন এর ছবি

ধন্যবাদ বাপ্পী ভাই হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ভুটান নিয়ে এ পর্যন্ত দু'বার মুগ্ধ হলাম- প্রথমবার নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্প পড়ে, দ্বিতীয়বার আপনার ছবিগুলো দেখে।

-সাইফুজ জামান

ওডিন এর ছবি

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের কোন গল্প?

লজ্জিত হয়েই স্বীকার করছি আমি ওই গল্পটা পড়ি নাই লইজ্জা লাগে

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হে হে, ধারাবাহিক লেখা হইলো ক্ষুদ্র ঋণের মতো। কখনোই শেষ হয় না।
আপনি এবার ইতিহাসপাতাল এবং এই সিরিজ- দুটার জন্যই খেলাপি হবেন চোখ টিপি

ওডিন এর ছবি

হেহেহেহে আমার অবশ্য ঋণখেলাপী হওনের রেকর্ড নাই, উত্তরাখন্ডের লেখাটা শেষ করেছিলাম না চোখ টিপি , তবে এইটা ঠিক একেবারে টিনের চাল খুলে নেয়ার আগমুহূর্তে শেষ করেছি খাইছে

ইতিহাসপাতালও চলবে আশা করি হাসি

যুধিষ্ঠির এর ছবি

চলুক

ওডিন এর ছবি

আপনে না বলে ভুটান যাইতাছেন? কবে?

ওডিন এর ছবি
জুন এর ছবি

উত্তম জাঝা!

যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...

কৌস্তুভ এর ছবি

ট্যাকা দেন ভুটান যামু

ওডিন এর ছবি

আহেম ইয়ে মানে শুভকাজটা সেরেই যাও না হয় দেঁতো হাসি

ধুসর জলছবি এর ছবি

আপ্নেও মন খারাপ । কোনো এক অক্টোবরে ব্যাগ গুছিয়ে রওয়ানা দিব , হাসি আমিন। ছবি গুলোর ভিতরেই নির্জনতা ব্যপারটা ফুটে আছে। ভুটানে চাকরি বাকরি পাওয়া যায় কেমন?

ওডিন এর ছবি

ডাক্তারদের চাকরি আছে কিছু, আমাকে অফার করেছিলো, তবে বেতন খুবই কম। আমি অবশ্য ওইখানে পেটেভাতে কাজ করতেও রাজি আছি দেঁতো হাসি

শাব্দিক এর ছবি

০১
লেখা আর ছবি দুইই উত্তম জাঝা!
০২
ভুটান যাবার ইচ্ছা আছে পোস্ট পড়ে ইচ্ছাটা আরও বেড়ে গেল। কোন সিসেন সুবিধাজনক হবে?
০৩
পুলাপানের ইস্কুল ইউনিফর্ম খুবই পছন্দ হইসে।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

ওডিন এর ছবি

সিজন এমনিতে অক্টোবর থেকে মার্চ। তবে জানুয়ারি ফেব্রুয়ারিতে চরম ঠাণ্ডা পড়ে ।

সবজান্তা এর ছবি

এই নিয়ে বার সাতেক লেখাটা খুললাম মন্তব্য করার জন্য। নানা গিয়ানজামে মন্তব্য করতে পারতেছি না। কখনো আবেগের চোটে কী লেখুম বুঝতেছি না, কখনো উইন্ডো খুলে ভুলে বন্ধ করে দিছি।

লেখার কথা আর কী কমু... আপনি তো জানেনই তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্মের চর্চা এখন অল্প যে কয়টা জায়গাতে টিকে আছে, ভুটান তার মধ্যে একটা- ভুটানরে তাই ভালু পাই। আমার জন্যেও পারলে চাকরি দেখেন। যাইগা ভুটান দেঁতো হাসি

ওডিন এর ছবি

আমিও যামুগা। এখানে বড় দুখ রে ওঁয়া ওঁয়া

guest_writer এর ছবি

অনেক সুন্দর

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

কী সুন্দর! ফেসবুকে মনে হয় আগেও দেখেছিলাম কিছু ছবি। এক বন্ধু প্রস্তাব দিলো সামনের মার্চে বেড়াতে যাওয়ার। গেলে, আপনার কাছ থেকে টিপস নিয়ে যেতে হবে। হাসি

ওডিন এর ছবি

অতিঅবশ্যই

zaman এর ছবি

আমার মা ও একদিন মুড়ি ভাঁজবে, কাউরে দিমু না...............

মেঘা এর ছবি

একদিন আমিও মন খারাপ

আসুক একবার আমার বর বাংলাদেশে তাপ্পর আমিও যাব নেপাল ভূটান চীন জাপান সবখানে। দেখতে দেখতে ছারখার হয়ে গেলাম আপনাদের জ্বালায়। হুহ!

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।