এক্সপোর্ট কোয়ালিটি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি
লিখেছেন ত্রিমাত্রিক কবি (তারিখ: শনি, ০৮/১১/২০১৪ - ৫:৩৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

'এক্সপোর্ট কোয়ালিটি' বেশ বড় করেই মোড়কের গায়ে লেখা। যেভাবে বসে আছি তাতে কীসের মোড়ক সেটা ঠিক ঠাহর করা গেল না। মোড়কের গায়ে বাকি লেখাগুলো ছোট ছোট, পড়া যাচ্ছে না চেয়ারে বসে। মাথাও নাড়াতে পারছি না ইচ্ছামত, কারণ আমার মাথা এখন আর পুরোপুরি আমার নিয়ন্ত্রণে নেই, আরেকজনের সুবিধামতো মাথার অবস্থান ঠিক রাখতে হচ্ছে। চুল কাটাচ্ছি।

যে ছেলেটা চুল কাটছে তাকে এই সেলুনে আগে দেখিনি কখনও। অবশ্য এমনিতে আমার সেলুনে আসা হয় কম, মোটামুটি বাধ্য না হলে এমুখো হই না আমি। তারপর দেশে আসলাম প্রায় চার বছর পর, হয়ত নতুন লোক এসেছে সেলুনে, হতেই পারে। ছেলেটা কেবল কৈশোর পেরিয়েছে, আমার চেয়ে বয়স কমই হবে বেশ খানিকটা, তাই তুমি করেই জিজ্ঞেস করলাম, 'তোমাকে তো আগে দেখিনি এখানে? তুমি কি নতুন নাকি?' নামটাও জিজ্ঞেস করি সেই সাথে।

নাম জানা গেল ছেলেটার, কমল। মনে মনে ভাবলাম, বাহ বেশ নাম তো। জানা গেল এখানে সে পার্টটাইম কাজ করে। সেলুনে লোকজন কম থাকলে সে আসে। আমিও যেহেতু কম যাই একেবারেই, সেহেতু তার সাথে দেখা হয় নি কখনও। অবশ্য আমি নিজেই আসলামও অনেক দিন পর, দেশে আসার পর এটা দ্বিতীয়বারের মতো চুল কাটা, তিন মাসে একবার আধাঘন্টার জন্যে এক জায়গায় গেলে সেখানকার সবার সাথে দেখা হয়ে যাবে এমন আশা করা কঠিন। তারপরেও চারবছর পর প্রথমবার গিয়ে অবাক না হলেও একটু আশ্চর্য হয়েছিলাম, আগের কর্মীরাই কর্মরত আছেন দেখে, সেজন্যেই ভেবেছিলাম নতুন কাউকে হয়ত আর দেখব না এখানে। সেলুনের চেহারাও তেমন একটা বদলায় নি, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তেমন একটা আধুনিকায়ন হয় নি, সেলুনের শ্রেণিচরিত্র পাল্টায়নি। চার বছর খুব কম সময় নয়। ঢাকার অনেক কিছুই খোলনলচে পালটে একেবারে অন্যরকম হয়ে গেছে, কারও শ্রেণি-উত্তরণ ঘটেছে, কেউবা বিলুপ্ত হয়েছে টিকতে না পেরে। অথচ এখানে সেই একই বেঞ্চ, বেসিনের ট্যাপ থেকে একইভাবে ফোঁটায় ফোঁটায় পানি পড়ছে, একটা নীল প্লাস্টিকের বাটিতে জমা করে রাখা ফেনা, একই বেসিন, বেসিনের পাশে এক টুকরো ফিটকিরি, মেঝেতে অবিন্যস্ত চুল, দেয়ালের রংও একই রকম ময়লা সাদা, বেঞ্চের ওপর রাখা সকালের বাসি সংবাদপত্র, চেয়ারগুলোর কাভার কি বদলেছে? আগে সম্ভবত লাল রঙের ছিল, এখন ছাইরঙা, নাকি আমার মনের ভুল? হতে পারে। কিছুই যেহেতু বদলায় নি, চেয়ারের কাভারই বা বদলাবে কেন? সেলুনের নামটা ভুলে গেছিলাম। চুল কাটানো নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম, সেই লেখার সময় মনে করতে পারছিলাম না, সেলুনের নাম। এইবার সেলুনের নাম চোখে পড়ে গেছে ঢোকার সময়, 'নিশা হেয়ার ড্রেসার'।

'এক্সপোর্ট কোয়ালিটি' বেশ বড় বড় করেই লেখা মোড়কের গায়ে। যেভাবে বসে আছি তাতে আর কিছু তেমন একটা চোখে পড়ে না। মোড়কের যে অবস্থা তাতে দেখে অবশ্য ঠিক এক্সপোর্ট কোয়ালিটি বলে মনে হচ্ছে না, অবশ্য এক্সপোর্ট কোয়ালিটি মানে ঠিক কোথায় এক্সপোর্ট করা হবে সেটার ওপরও নিশ্চয়ই নির্ভর করে পণ্যের মান বা কোয়ালিটি। আমি যতটুকু বুঝি, এই জিনিস লিখে দিতে হলে পণ্যকে আসলে কোনো বিশেষ কোয়ালিটির হতে হয় না, বরং 'বিদেশের সবকিছু ভাল' এই মানসিকতা থেকেই সম্ভবত এই জিনিসগুলো লেখা হয়। যদি বিদেশি জিনিস হয় তাহলে তো কথাই নাই। সেটাই পণ্যের বিজ্ঞাপনের পাঞ্চলাইন, কোন (বি)দেশে তৈরি, তার মানে সেই (বি)দেশের মানুষেরা এই জিনিস ব্যবহার করেন, সেটা উচ্চমানের না হয়ে যায়ই না। অন্যদিকে যদি দেশে তৈরি হয়, সেটার মান যেমনই হোক না কেন লিখে দেয়া হবে এক্সপোর্ট কোয়ালিটি, তার মানেও সেই একই- এটা বিদেশের লোকজনের ব্যবহার করার জন্য বানানো হয়েছে। অতএব বুঝে নাও।


দেশে এসে এবার একটা নতুন জিনিস দেখলাম। 'পাকিস্তানি লোন', নামের কোনো এক বিচিত্র ধরনের কাপড়। বিচিত্র বলছি, কারণ এই জিনিস দেখতে কেমন আমি আসলে সেটা জানি না। পাকিস্তানি কাপড় নিশ্চয়ই আগেও দেশে পাওয়া যেত, কিন্তু শুধুমাত্র 'পাকিস্তানি' বলে এই কাপড়ের সম্ভবত আলাদা চাহিদা আছে। রাস্তাঘাটে বড় বড় ব্যানার পোস্টার ঝুলিয়ে কোথায় কোথায় খাঁটি 'পাকিস্তানি লোন' পাওয়া যায় সেসবের বিজ্ঞাপন। বেশিরভাগ বিজ্ঞাপনে আবার 'পাকিস্তান' কথাটা বড় করে লেখা, সেটাই যে বিজ্ঞাপনের মূল আকর্ষণ সেটা বিজ্ঞাপন দেখলেই স্পষ্ট বোঝা যায়। বাসার পাশেই ইস্টার্ন প্লাস মার্কেট। যদিও ভুল বানানে লেখা মার্কেটের নাম, লেখা ইষ্টার্ন প্লাস। বাংলা বানানে রাস্তাঘাটে সবচেয়ে বেশি ভুল করা হয় সম্ভবত এই বানানগুলোতে, ণ-ত্ব আর ষ-ত্ব বিধানযুক্ত বানানগুলোতে; ফটোষ্ট্যাট, ইষ্টার্ণ, ষ্টুডিও, ষ্ট্যাণ্ডার্ড ইত্যাদি। তেমন কিছু না জেনেও স্বাভাবিক উচ্চারণ অনুযায়ী বানান লিখলে শব্দগুলোর বানান দন্ত্য-স দিয়েই হওয়া উচিত। নাকি বেশিরভাগ মানুষ এগুলো ষণ্ডার মত মূর্ধণ্য-ষ দিয়ে উচ্চারণ করে? ইষ্টার্ণ প্লাস বা ইস্টার্ন প্লাস যাই হোক, এর দোতলা তিনতলায় কাপড়-চোপড়ের অংশ দেখলাম মোটামুটি সব ব্যবসায়ী মিলে একটা মিনি পাকিস্তান বানিয়ে ফেলেছেন। সম্ভবত তিনতলার বিশাল অংশ জুড়ে একটা কাপড়ের দোকান, সাধারণ দোকানের চেয়ে আকারে অন্তত চার-পাঁচগুণ আকারে, দোকানের নাম 'করাচী বাজার'। দোকানের আকার আকৃতি দেখে বোঝা যায় কেনাবেচা নিশ্চয়ই ভালোই হয়, দেশের মধ্যে যদি এক টুকরো করাচী পাওয়া যায়, অনেকেরই নিশ্চয়ই। বাকি ব্যবসায়ীরা যে কারণেই হোক নিজেদের দোকানের নাম 'করাচী বাজার', 'পাঞ্জাবি বাজার' (পরার পাঞ্জাবি নয়) বা 'ইসলামাবাদ বাজার' রাখতে পারেননি, তাদের দোকানের আশে পাশে মার্কেটের বিভিন্ন পিলারে শোভা পাচ্ছে পাকিস্তানি লোনের বিজ্ঞাপন।

কমল এতক্ষণে চুলকে মোটামুটি সাইজে নিয়ে এসেছে। সেলুনের ভেতরেও কিছু পরিবর্তন চোখে পড়ে। আগে চুল বা দাড়ি কাটার জন্য কোনো ইলেক্ট্রিক যন্ত্র ছিল না, এখন সামনের দেয়ালের সাথে লাগানো টেবিলের মতো অংশের ওপর দুইটা ইলেকট্রিক শেভিং মেশিন পড়ে থাকতে দেখি। টেবিলের এক কোনায় একটা ভাঙাচোরা ক্যাসেট প্লেয়ার ছিল এখন আর দেখতে পেলাম না সেটাও। সম্ভবত এফএম ইফেক্ট। তাছাড়া সবার হাতেই স্মার্টফোন। দেশে এই পরিবর্তনটাও লক্ষণীয়। দেশে যে এখন মোটামুটি বেশ নিম্নবিত্ত মানুষেরাও মোবাইল ব্যবহার করেন বা করতে পারেন সেটা বেশ পুরোনো খবর। এবার দেখলাম একেবারে নিম্নবিত্ত না হলেও নিম্নমধ্যবিত্ত লোকজন (বিশেষ করে কৈশোর থেকে মধ্যবয়েসী পর্যন্ত) বেশ ব্যাপক হারে স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। বাসে যাতায়াত করলে এই জিনিসগুলো চোখে পড়ে। জাতায়াতের সময়টাতে সবাই ফোনে নানা কাজে ব্যস্ত। বেশিরভাগই ফেসবুকিং। কেউ কেউ চোখ বোলাচ্ছে সংবাদে, কেউ গেম খেলছে, কেউ বা টেক্সটিং।

চুল কাটাতে কাটাতে কমলের সাথে অল্প-স্বল্প কথাবার্তা চালাতে থাকি। পার্টটাইম চুল কাটার পাশাপাশি কী কাজ করে জানার চেষ্টা করলাম। ঠিক চেষ্টা না, ও নিজেই বলে ফেলল। প্রায় পাঁচ বছর এই দোকানেই কাজ করে পার্টটাইম। পাশাপাশি পড়াশোনা করছে। জানালো এখন হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজে তৃতীয় বর্ষে অনার্স পড়ছে। এটা তার মামার সেলুন। নিয়মিত লোকজন কম থাকলে বা বাইরে থাকলে সে কিছুটা সময় দেয় এখানে। তার চুল কাটার স্টাইলেও বুঝতে পারি, অতটা অভিজ্ঞ নয় সে চুল কাটায়। কিন্তু সেটা সে বুঝতে দিতে চায় না। চুল কাটতে কাটতে বলে চুল কমে গেছে অনেক। তাই চুল একটু বড়ই রাখতে চায় সে। তাহলে নাকি আমাকে ভাল দেখাবে। আমি হেসে সম্মতি জানাই। এরপর পরামর্শ দেয়া শুরু করে। চুলে মেহেদি দিতে বলে, গ্লিসারিন গোলা পানি দিতে বলে। আমি হাসিমুখে মেনে নেই। চুল বড় রাখবে বলেও চুলের সাইজ ধীরে ধীরে বেসাইজ করে ফেলতে থাকে।

সেলুন থেকে বাসার দূরত্ব এক মিনিটের হাঁটা পথ। চুল কাটানো শেষ হলে বের হয়েই গলির মোড়েই দেখি তথাকথিত বিপ্লব ও সংহতি দিবসের পোস্টার। পোস্টারে বাংলাদেশকে অন্ধকারের পথে নিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বলিষ্ঠ সৈনিক কালো চশমা পরে হাত তুলে কিছু একটা বলার চেষ্টা করছে। পোস্টারে জিয়ার সামনে কিছু জনতার সমাবেশ দেখানোর চেষ্টা করেছে। আমার চোখে কিছু জমাট অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই পড়ে না। মনে হয় ইষ্টার্ন প্লাস মার্কেটের করাচী বাজার থেকে উঠে আসা কোনো ব্যবসায়ী, যার জন্ম দেয়া এক বিপ্লব লন্ডনে বসে বিপ্লব করছে আর পাকিস্তানি ভূতের সাথে সংহতির চেষ্টা করছে।



রাস্তার পাশেই একটা ছয়তলা বাড়িতে লাল-নীল মরিচ বাতি দিয়ে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। বিয়েবাড়ি নিশ্চয়ই। বিয়েবাড়ি সাজানোর জন্য বাতির চেহারা অনেক আগেই বদলে গেছে। আগেকার প্লাস্টিকের খোলসের বড় বড় লাল-নীল-সবুজ বালবের বদলে এখন ছোট ছোট রঙিন মরিচ বাতি। আমার অবশ্য আগের বাতিগুলোই দেখতে ভালো লাগত। কিন্তু কে শুনবে আমার কথা! বাড়ির ঠিক সামনের বিদ্যুৎ পোলের সাথে বিজ্ঞাপন লাগানো, 'টিচার দিচ্ছি/নিচ্ছি', 'গৃহশিক্ষক দিচ্ছি' ইত্যাদি। ঢাকা শহর মানেই বিজ্ঞাপনের শহর। রাস্তার একটা দেয়ালও খুঁজে পাওয়া যাবে না যেটা রক্ষা পেয়েছে বিজ্ঞাপনমূলক ব্যানার, পোস্টার থেকে। 'এখানে পোস্টার লাগানো নিষেধ - আদেশক্রমে কর্তৃপক্ষ’, ন্যূনতম এই কথাটা তো থাকতেই হবে। এখানে সবাই সবসময়েই কিছু না কিছু বেচতে চায়। এই বেচাকেনার বাজারে সবচেয়ে সস্তা আর সহজলভ্য পণ্য সম্ভবত শিক্ষা। ঢাকা শহরের যেকোনো রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকালে কমপক্ষে আটটা শিক্ষা বেচাকেনার বিজ্ঞাপন চোখে পড়বে। আমি সেলুন থেকে বাসায় আসার এক মিনিটের রাস্তায় প্রায় বিশটার মতো শিক্ষা বেচার বিজ্ঞাপনের ব্যানার পোস্টার ঝুলতে দেখলাম। হাতে থাকা স্মার্টফোনে প্রমাণস্বরূপ কয়েকটা ছবিও তুলে ফেললাম। এই অগণিত শিক্ষা বেচাকেনার বিজ্ঞাপনের আমি দুইটি দিক খুঁজে পাই। একটা আশার আরেকটা নিরাশার। আমার মতে আশার দিকটা হচ্ছে বাজারে পণ্য হিসেবে শিক্ষার গুরুত্ব। বাঙালি কি শিক্ষাকে এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে? বাজারে সব পণ্যের মধ্যে তুলনামূলক বিচারে শিক্ষার বেশ ভাল চাহিদা আছে? এজন্যেই এত বিজ্ঞাপন, কিনবেনই যখন আমারটাই কিনুন? আর নিরাশার দিকটা হলো, শিক্ষা এখন আক্ষরিক অর্থেই পণ্য, এবং মজার ব্যাপার হলো বেশিরভাগই মানুষই সম্ভবত জানে না এই পণ্যটা দেখতে কেমন, এর গুণগত মান কেমন হওয়া উচিত, কেমন হলে একে শিক্ষা বলা যায়। যেহেতু মানুষের এই পণ্যটার ব্যাপারে ধারণা ভাসাভাসা, অনেকের তাও নেই, তাই যেকোনো কিছুকেই এখন যে কেউ শিক্ষা বলে বাজারে বেচে দিতে পারে। অন্যান্য পণ্যের সাথে তাই শিক্ষার বিজ্ঞাপনের কোনো পার্থক্য নেই। শিক্ষাও এখন এক্সপোর্ট কোয়ালিটি হতে হয়। কারণ সেইসব শিক্ষাদীক্ষা কিনেটিনে লোকে যেখন বেশ খানিকটা শিক্ষিত হয়ে ওঠেন তখন তো তাঁদের এদেশের গলিঘুপচিতে আর চলতে দেখা যায় না। এক্সপোর্ট কোয়ালিটির শিক্ষা কিনে নিয়ে তাঁরা নিজেই এক সময় এক্সপোর্ট কোয়ালিটি হয়ে যান।

[বানান কৃতজ্ঞতাঃ মিস্তিসা]


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

গরীব দেশের মানুষ আমরা। পণ্যের সাথে নিজেরাই এক্সপোর্ট হওয়ার জন্যও সদা উন্মুখ থাকি। নিম্নবিত্তরা মধ্যপ্রাচ্যে আর মোটামুটি শিক্ষিতরা স্বদেশ-স্বজন ছেড়ে কিছু অর্থের আশায় উন্নত দেশের হেঁসেলে অথবা বিল্ডার্সে ! দুঃখী মানুষগুলো তারপরও প্রাণোচ্ছল হাসে।

দেশে ভাল থাকুন।

রাজর্ষি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ভাল থাকুন আপনিও।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আনু-আল হক এর ছবি

মজার ব্যপার হল বেশিরভাগই মানুষই সম্ভবত জানে না এই পণ্যটা দেখতে কেমন, এর গুণগত মান কেমন হওয়া উচিত, কেমন হলে একে শিক্ষা বলা যায়। যেহেতু মানুষের এই পণ্যটার ব্যাপারে ধারণা ভাসাভাসা, অনেকের তাও নেই, তাই যে কোন কিছুকেই এখন যে কেউ শিক্ষা বলে বাজারে বেচে দিতে পারে। অন্যান্য পণ্যের সাথে তাই শিক্ষার বিজ্ঞাপনের কোন পার্থক্য নেই, শিক্ষাও এখন এক্সপোর্ট কোয়ালিটি হতে হয়, কারন সেইসব শিক্ষা দীক্ষা কিনে টিনে লোকে যেখন বেশ খানিকটা শিক্ষিত হয়ে ওঠেন তখন তো তাঁদের এদেশের গলি ঘুপচিতে আর চলতে দেখা যায় না, এক্সপোর্ট কোয়ালিটির শিক্ষা কিনে নিয়ে তাঁরা নিজেই এক সময় এক্সপোর্ট কোয়ালিটি হয়ে যান।

দারুণ!

আমি ভাবছিলাম, “সেইসব শিক্ষাদীক্ষা কিনে টিনে লোকে যখন বেশ খানিকটা শিক্ষিত হয়ে ওঠে “ ... এরপর লিখবেন, তখনই ত্যানা প্যাঁচাইতে এবং মিথ্যাচার করতে শুরু করেন খাইছে

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সেইটাও সত্যি। শিক্ষা বেশিরভাগ মানুষকে ত্যানা প্যাঁচাইতে শেখায়, সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ত্যানালাইসিস করতে করতে সিদ্ধান্ত নেয়া আর হয়ে ওঠে না।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

পোস্টারে বাংলাদেশকে অন্ধকারের পথে নিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বলিষ্ঠ সৈনিক কালো চশমা পড়ে হাত তুলে কিছু একটা বলার চেষ্টা করছে।

চ্ছিলনা!

Emran

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

সেলুনে চুল কাটা থেকে শুরু করে বাসায় ফিরে আসা- মাত্র এ সময়টুকু! পড়ে আক্ষেপ মিটলো না। আপনার গোটা একটা দিনের ভাবনা চিন্তা পড়তে ইচ্ছে করছে।
প্রত্যেকটা বিষয় নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ মুগ্ধ করেছে। যে কথাগুলো অনেক অনেক দিন মনে থাকবে তা হচ্ছে-

...পোস্টারে বাংলাদেশকে অন্ধকারের পথে নিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বলিষ্ঠ সৈনিক কালো চশমা পড়ে হাত তুলে কিছু একটা বলার চেষ্টা করছে। পোস্টারে জিয়ার সামনে কিছু জনতার সমাবেশ দেখানোর চেষ্টা করেছে, আমার চোখে কিছু জমাট অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই পড়ে না, মনে হয় ইষ্টার্ন প্লাস মার্কেটের করাচী বাজার থেকে উঠে আসা কোন ব্যবসায়ী, যার জন্ম দেয়া এক বিপ্লব লন্ডনে বসে বিপ্লব করছে আর পাকিস্তানি ভূতের সাথে সংহতির চেষ্টা করছে।...

গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

রিপন

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

দেখতে দেখতে সময় চলে যায় উদ্যোগ নিয়ে লেখাটা আর বেশিরভাগ সময়েই হয়ে ওঠে না। আপনাদের উৎসাহ পেলে নাহয় আবার আসবে দিন যাপনের গল্প। ভাল থাকুন।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সুজন চৌধুরী এর ছবি
ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

দেঁতো হাসি থেঙ্কু সুজন্দা।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১। লেখা এডিট করো। প্রচুর বানান ভুল আছে।

২। তিনটা লেখাকে ঠেসেঠুসে একটা লেখা বানানোটা ঠিক হলো না।

৩। লম্বা বিরতির পর দেশে ফিরলে পরে প্রথম প্রথম পরিবর্তনগুলো, অসঙ্গতিগুলো বেশ চোখে পড়ে। পরে আস্তে আস্তে সব গা সহা হয়ে যায়। সব গা সহা হয়ে যাবার আগে যতোটা পারো লিখে ফেলো।

৪। নরসুন্দরের নাম পালটে দাও। বিস্তারিত পরিচয়ে কলেজের নাম বাদ দাও। নয়তো এটা ওর জন্য অস্বস্তিকর হয়ে পড়তে পারে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

১) কিছু সম্পাদনা করলাম, তাড়াহুড়ায় লেখায় কিছু সিলি মিস্টেক ছিল। আরও কিছু ভুল আছে ঠিক বানান না জানার কারনে, যতটুকু চোখে পড়ল সম্পাদনা করলাম।

২) আপনি সম্ভবত আমার আগের কয়েকটা লেখাতেও এই অভিযোগ করেছেন দেঁতো হাসি আসলে এই ধরণের লেখা লিখতে গেলে আমার যেটা হয়, ঠিক পরিকল্পনা করে কী লিখব সেটা ভেবে তো বসা হয় না, এক বসায় যতটুকু লেখা হয়ে যায় ততটুকু তুলে দেই। অনেকদিন ধরেই ঢাকায় বাস যাতায়াত নিয়ে কিছু লিখব ভেবে ফেলে রেখেছি। কিছু পর্যবেক্ষণ চলাচলের সময় ফোনের এডিটরে টুকে রাখি, ভাবি সেদিন এসেই লিখে ফেলব, এরকম প্রতিদিনই রাস্তায় বেরোলেই মাথার ভেতর কিছু লেখা জমা হয়ে যায়। কিন্তু যখন লিখতে বসব, তখন আর লেখা হয়ে ওঠে না। এজন্যে কোন একদিন উদ্যোগ নিয়ে বসতে পারলে মাথার মধ্যে থাকা অন্য লেখাগুলোও ঢুকে পড়ে, ঠিক লাইনে আনা যায় না।

৩) আমি আসলে ঠিক অসঙ্গতি হিসেবেও দেখছি না। পরিবর্তন তো হবেই, সব হয়ত আমার চোখে ভাল লাগবে না। মনে হবে এটা হওয়া উচিত হয়নি, এটা এভাবে হতে পারত, কিন্তু সেসব ভেবে আর কী লাভ! আমার কাছে অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে চারবছরে ঢাকার চোখে পড়ার মত পরিবর্তন মনে হয়েছে (১) অতিরিক্তি (রিকশা, সিএনজি চালিত যান) ভাড়াবৃদ্ধি (২) নতুন স্টাইলের হিজাব (৩) শ্রেণি নির্বিশেষে স্মার্টফোন আর ফোনে ইন্টারনেট ফেসবুকের ব্যাপক ব্যবহার

৪) আসলে নরসুন্দরের নাম পাল্টেই দিয়েছি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামও পালটে দিয়েছি (উল্লেখ করিনি যদিও)। এখন সেলুনের নামও সামান্য বদলে দিলাম।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

তিথীডোর এর ছবি

১। দেশে এত ভাল সব বুটিক আর ফ্যাশন হাউজ থাকতে বেদিশার মতো পাকি লোন/লন কিনে পরতে হয় কেন বুঝলাম না। চিন্তিত

২। আবার আসিব ফিরে এমন কথা বলে মেধাবী দলের অনেকেই দেশ ছাড়ে, শেষমেশ ফিরে আসে হাতে গোনা কয়েকজন। আপনি তাদের একজন, ব্যাপারটা অতীব উত্তম। আর যাইয়েন না। হাসি

৩। কর্মক্ষেত্র কই, মাশটার হৈসেন? ছাত্র বনাম ছাত্রীর রেশিও কেমন? খাইছে

৪। বিষয়গত পর্যবেক্ষণ আর সেগুলো উপস্থাপনের স্টাইল পছন্দ হয়েছে। চলুক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

এনকিদু এর ছবি

১। দেশে এত ভাল সব বুটিক আর ফ্যাশন হাউজ থাকতে বেদিশার মতো পাকি লোন/লন কিনে পরতে হয় কেন বুঝলাম না। চিন্তিত

প্রশ্নটা আমারও। কয়েকবছর আগে ঈদের সময় আমার আত্নীয়াদের পাকিস্তান কাপড়ের প্রতি অদ্ভূত রকমের মোহ দেখে চমকে উঠেছিলাম। সাধারণ মধ্যবিত্ত নারীদেরকে খুব সূক্ষ্ম মগজ-ধোলাই দেয়া হচ্ছে হয়তো। আমার ধারনা ছিল গাউছিয়ায় এগুলো বিক্রি হয়। এখন জানা যাচ্ছে "ইষ্টার্ন প্লাস" নামের মার্কেটে রীতিমত আখড়া বানিয়ে ব্যবসা হচ্ছে।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আমাদের দেশে না শুধু উপমহাদেশের সব দেশেই সম্ভবত বিদেশী জিনিসের আলাদা কদর আছে, মালয়শিয়ায় দেখেছি, 'মেইড ইন জেপুন' এর আলাদা কদর। এমনকি আম্রিকা কানাডাতেও জাপানি জিনিসের আলাদা কদর আছে। সেই হিসাবে বিদেশি জিনিসের কদর থাকলে আলাদাভাবে কিছু বলার ছিল না। কিন্তু আমাদের দেশের অনেক মানুষেরই এই শুধু 'বিদেশি' জিনিসের বাইরেও 'পাকিস্তানি' বিদেশি জিনিসের আলাদা কদর আছে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

১) দেশি বুটিক কি পাকিস্তানি লোনের অভাব মিটাতে পারে? সাকিব আল হাসান কি পারে আফ্রিদির অভাব মেটাতে? মাশ্রাফি কি পারে ইম্রাঙ্খানের অভাব পূরণ করতে? এইসব বেসিক কোচ্চেন কল্লে কি হবে?

২) আমার মতে 'আবার আসিব ফিরে' টাইপের ভাবনা বেশিরভাগ মানুষেরই রোমান্টিক ভাবনার চেয়ে বেশি কিছু না। ভীর ভাট্টার ঢাকা শহর, টং দোকানের চা, রাস্তার জ্যাম, ছিনতাই, ধুলা আর ধোয়ার শহরে ফিরে আসার ভাবনা বেশিরভাগ মানুষের কাছে রোমান্টিক ভাবনাই। এর চেয়ে বেশি বেশিরভাগ মানুষই আসলে করতে চায় না, করতে হবে সেটাও বলছি না। একটা নির্ঝঞ্ঝাট শান্তির জীবন, কিছুটা নিরাপত্তা, বাচ্চাকাচ্চার কিছুটা নিশ্চিত ভবিষ্যত, একটা পাওয়ারফুল পাসপোর্ট মানুষ চাইতেই পারে। এক সময় আমাদের আগের জেনারেশন, মানে বাবা, চাচার কাছে শুনতাম একসময় গ্রামে ফিরে যাবেন তাঁরা, কিন্তু আসলে ফেরবার উপায় আর থাকেনা, তাদের কারোই আর গ্রামে ফেরা হয়নি, বিদেশ থেকে ফেরার ব্যপারটাও বোধহয় অনেকটা সেরকম। কিছুটা আকাঙ্খা, কিছুটা অভ্যস্ততা, কিছুটা অনিশ্চয়তা, কিছুটা আরাম আয়েশ আর আমাদের পেছন ফিরে তাকাতে দেয় না। অবশ্য তাকাতেই হবে তার দিব্যিও কেউ দিয়ে রাখেনি।

৩) কর্মক্ষেত্র একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, এখানে নাম না বলি, ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে আইডেন্টিফাইড হয়ে যাবার সুযোগ থাকতে পারে। আমি যে বোলোগ দিয়ে ইন্টারনেট চালাই সেটা ছাত্র-ছাত্রীরা জানুক সেটা আপাতত চাচ্ছি না। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ছাত্র-ছাত্রীর রেশিও সর্বদাই শোচনীয়, সেটা যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যেই সত্যি, দেশের বাইরেও যতটুকু দেখলাম একই অবস্থা মন খারাপ

৪) ধন্যবাদ হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

বানানে ভুল অগ্রাহ্য করেই পড়ে গেলাম । সাধাসিধে ভাষায় সুন্দর বর্ননা দিয়েছেন ।

অ. লিখতে গিয়ে নিজেও মাঝে মাঝে উপলদ্ধি করি সহজ বাংলা বানানও প্রায় ভুলতে বসেছি । ছোটবেলায় কোন বানান নিয়ে সন্দেহ থাকলে বিভিন্ন ভাবে হাতে লিখে দেখতাম কোনটা কম দৃষ্টিকটু লাগে । কি-বোর্ড অক্ষরে কেন যেন সেই ইনটিউশনটা পুরোপুরি পাই না । মাঝে মাঝে বানানের খোঁজে ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে দেখতে হয় । তবে সবচেয়ে বেশি লজ্জা লাগে যখন ইংরেজী শব্দ মনে আসে কিন্তু বাংলা শব্দটার খোঁজে ট্রান্সলেটরের সহায় হতে হয় ।

আ. ছোটবেলায় সেলুনে চুল কাটাতে গেলে ক্রিকেটের বা বলিউডের ম্যাগাজিন গুলো থাকতো । তবে এখন অধিকাংশ সেলুনেই স্যাটেলাইটের কানেকশন সহ টিভি আছে । সবাই সেদিকেই তাকিয়ে থাকে । মোহাবিষ্টের মত বলিউডের নায়িকার কোমর দুলানো দেখতে দেখতে নরসুন্দর যখন ঘ্যাচাং ঘ্যাচাং কেচি চালাতে থাকে তখন নিজের কানের ব্যপারে বেশ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি ।

ই. পাশ্চাত্য সভ্যতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন দিকটা - মুল্যবোধ, শিক্ষা - আমরা রফ্ত করতে না পারলেও কনজিউমারিজমের ব্যপারটা আমরা ঠিকই ধরে নিয়েছি । আমাদের পহেলা বৈশাখ, ২১ ফেব্রুয়ারী, ইদ, পুজা সবই এখন কেনাকাটা করার (শপিং) একটা উপলক্ষ্য মাত্র । তবে ইদের বাজারে বেচাকেনার তুংগে থাকে ভারতীয় শাড়ি এবং ড্রেস । এর পেছনে মুলত বাংলাদেশে প্রতিটা ঘরে ঘরে ভারতীয় সিনেমা এবং টিভি সিরিয়ালের অবাদ বিচরন একটা মুল কারণ । পাকিস্তানি জামাকাপড় বাংলাদেশে কতটা জনপ্রিয় এই ব্যপারটা ঠিক নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না । তবে এটা ঠিক যে পাকিস্তান শব্দটা এখনো বাংলাদেশের অনেক মুসলমানের মনেই এক নিষিদ্ধ অরগাজমিক উত্তেজনার সৃষ্টি করে । কতটা কাপড়ের গুনগত মান বিচারে আর কতটা সেই বিকৃত সুখ চরিতার্থ করতে মানুষ পাকিস্তানী কাপড় কিনতে যায় এটা নিক্তিতে মেপে বলা কঠিন ।

ঈ. এক্সপোর্ট কোয়ালিটির পণ্যের ব্যপারে আমাদের ফেটিশটা অনেক আগ থেকেই । তা সে হোক শিক্ষা, সংস্কৃতি, আদর্শ বা পণ্য ।
- আদর্শ ঃ কালো চশমা পরা যেই বিপ্লবী নেতার কথা বললেন, তিনি ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে অর্জিত আদর্শ বিকিয়ে দিয়ে পাকিস্তানি আদর্শের পুর্নস্থাপন করেছিলেন এই দেশে ।
- সংস্কৃতি ঃ সংস্কৃতিতেও আমরা স্বদেশী স্বত্তা ছেড়ে নিজের খুশিমত বিদেশী স্বত্তার আঁচল তলে ঠাঁই নিয়েছি । বাংলাদেশের বিয়ের অনুষ্ঠানে এখন কেউ হিন্দী গানের উত্তাল সুরের দোলায় দোলে, কেউবা আবার পাক্কা মুসলমানী ধারায় মেহেন্দী আর কাউয়ালীর অনুষ্ঠান করে । সাদামাটা বাঙালিয়ানা প্রায় বিলীন হওয়ার পথে ।
- শিক্ষা ঃ আমাদের নামজাদা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিলাতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমান পয়সায় নিয়ে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা দেয়ার দাবী করে । অথচ উত্তর আমেরিকার ডিগ্রী ছাড়া শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার ব্যপারে এক প্রবল অনীহা কাজ করে । নিজেদের দেয়া আন্তর্জাতিক মানের ডিগ্রীধারী ছেলেপেলেকে চাকরী দেয়ার ব্যপারেই তারা অনিচ্ছুক ।
- পণ্য ঃ এ ব্যপারে লিখতে গেলে বিশাল মহাভারত হয়ে যাবে । আমার নিজের পরিবার নিয়েই আমি বিব্রত । সবকিছুই বিলাত থেকে নিয়ে আসার ফরমায়েস দেয় । ইলেকট্রনিক্স পন্যের কথা তো বাদই দিলাম, প্রতিবার বারি যাবার আগে শ্যাম্পু, লোশনের, কসমেটিক্সের এক বিশাল লিস্ট চলে আসে ।

প্রতিবাদ স্বরুপ গত বার গত বছর একটা কাজ করেছিলাম । নিজের বাড়ির জন্য এক রোল টয়লেট টিস্যু পাঠিয়ে দিয়েছিলাম কুরিয়ার মারফত । একটা চিরকুটে লিখে দিয়েছিলাম, "দেশের সব পন্যে এতই খারাপ যে তা মাখলে তোমাদের মুখের, হাতের ত্বকের ক্ষতি হয় । তা শুধু পশ্চাৎদেশটাকে আর কেন অবহেলা করা ? মাত্র ১% হলেও তো সেটা শরীরেরই অংশ । তার যত্ন নেয়াও জরুরী । তাই এক্সপোর্ট কোয়ালিটির বিলাতি টিস্যু পাঠিয়ে দিলাম । "

দস্যু ঘচাং ফু

==============================
চৈনিক নই, আমি নিতান্তই ভেতো বাঙালী,
নেই ঢাল তলোয়ার, কি বোর্ড খানাই সম্বল খালি;
জামাত দেখিলে তেড়েফুড়ে তাহাতেই ঝড় তুলি ।

এনকিদু এর ছবি

তবে এটা ঠিক যে পাকিস্তান শব্দটা এখনো বাংলাদেশের অনেক মুসলমানের মনেই এক নিষিদ্ধ অরগাজমিক উত্তেজনার সৃষ্টি করে ।

চলুক


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

বানান ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ। বুনোহাঁসের সৌজন্যে বানান ঠিক করে দিলাম। কত বানান যে ভুল হয় নিজে ধরতেও পারি না। অনেক সময় কনফিউশানও থাকে না।

আমি যে সেলুনে যাই সেটা আমাদের বাসার একেবারে কাছে, সেটাই যাবার একমাত্র কারণ। এসি নাই, টিভি নাই, বলিউডি ম্যাগাজিনও নাই, এমনকি হলিউডি বলিউডি নায়কা নায়িকার হেয়ারস্টাইলের কোন কোলাজিত পোস্টারও নাই। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, নায়িকাও নাই, নায়িকার কোমরও নাই, সেখানে ছন্দও নাই, তাই আমার কান এখনও ঠিকঠাক আছে দেঁতো হাসি

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের একটা বই পড়ছিলাম, 'সংস্কৃতির ভাঙ্গা সেতু', বাঙ্গালীর এই ধরণের আচরণ নিয়ে ইলিয়াসের পর্যবেক্ষণ ভাল লেগেছে। এখানে আর সেটা নিয়ে না লিখি বিস্তারিত, অন্য কোন পরিসরে আলোচনার চেষ্টা করব।

আপনাকে এক্সপোর্ট কোয়ালিটির ধন্যবাদ, মানে থ্যাঙ্কু আরকি!

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

এনকিদু এর ছবি

বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের ব্যপক সৌহার্দ, সম্পৃতি এবং ব্যবসায়ীক সম্পর্ক প্রমাণের একটা অপচেষ্টা অনেকদিন ধরেই চলছিল। এই করাচী মার্কেট, সেখানে লোনের দোকান, চারপাশে পোস্টার এগুলো তারই অংশ। দেশে কি এখনও বাণিজ্য মেলায় বিশালা পাকিস্তানি প্যাভিলিয়ন বসে ?


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

একটা আরোপিত প্রচেষ্টা তো আছেই, কিন্তু সম্ভবত এখনও অনেকে বুকের ভেতর পাকিস্তানকে ধারণ করে, মোশ্তাক বা জিয়া নিশ্চয়ই বাংলাদেশে দুই পিস না।

অনেক বছর বাণিজ্য মেলায় যাই না। পাকিস্তানি স্টল বসে কিনা এখনও জানি না। কিন্তু না বসার মত এমন কোন ঘটনা ঘটেছে কি?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নাশতারান এর ছবি

১) লন (lawn) একটা বিশেষ বয়নের সুতি কাপড়। এই কাপড়ে ডিজাইনারদের করা নকশা বসিয়ে পাকিস্তানি বস্ত্রশিল্পে একটা বিপ্লব এসেছে। বিশাল একটা বাজার তৈরি হয়েছে লনের। টেক্সটাইলশিক্ষার সাথে জড়িত মানুষজনের সাথে আলাপ করে জেনেছি লন বানানো এমন কোনো দুরূহ ব্যাপার না। বাংলাদেশে আমরা বস্ত্রশিল্পে এমন কোনো উদ্যোগ কেন নিইনি, কেন আমাদের কাপড়ের বাজার পাকি কাপড়ে সয়লাব তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে। বাঙালির বর্তমান পাকিপ্রেমের একটা বড় অবদান আছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। বাংলাদেশে লনের রেপ্লিকা তৈরি হয়, এবং সেটা পাকি নামে বিক্রি হয়। এ থেকেই আমাদের কাঙালিপনা বোঝা যায়।

২)

পোস্টারে জিয়ার সামনে কিছু জনতার সমাবেশ দেখানোর চেষ্টা করেছে, আমার চোখে কিছু জমাট অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই পড়ে না, মনে হয় ইষ্টার্ন প্লাস মার্কেটের করাচী বাজার থেকে উঠে আসা কোন ব্যবসায়ী

চমৎকার লেগেছে।

৩) পুরানো ভোটকা মরিচবাত্তির চেয়ে এখনকার গুঁড়া মরিচবাত্তিই বেশি ভাল্লাগে আমার। কেমন ঝিকিমিকি জোনাকির মতো মনে হয়। দেঁতো হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

এই জিনিস মানে লন না লোন বা লৌন তাহলে নতুন? আলাদাভেব লন নামক কোন কাপড়ের নাম আগে কখনও শুনি নি। নাকি আগেও ছিল? নতুন করে ব্র্যান্ডিং আর মার্কেটিং হইছে?

ধন্যবাদ, মিস্তিসা। আর কষ্ট করে বানান ঠিক করে দেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নাশতারান এর ছবি

লন নতুন না। এর বাজারজাতকরণ নতুন। পাকিস্তানি ডিজাইনাররা নিজেরা নকশা করে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশনে নেমেছে কয়েক বছর আগে। এতে তুলনামূলকভাবে সুলভ মূল্যের ডিজাইনার কাপড় আমজনতার নাগালের মধ্যে চলে এসেছে। পাকি লন প্রোডাকশনের উদ্দেশ্য এটাই ছিলো, এবং তাদের উদ্দেশ্য সফল। আমি নিজে কোনোদিন লন ছুঁয়েও দেখিনি। যারা লন বলতে অজ্ঞান তাদের ভ্রূকুটি করেছি অনেক। কিন্তু বাঙালির পাকিপ্রেম প্রশ্নাতীত সত্য। দেশে এখন চাইনিজ লনও পাওয়া যায়। তারপরেও পাকি লন পেলে হামলে পড়ার মানুষের অভাব নাই। এগুলো ব্যক্তিগত বোধশক্তির ব্যাপার। কাউকে বুঝিয়ে শুনিয়ে এসব শেখানো যায় না। আবেগের ভরসায় না থেকে বাংলাদেশের বাজার থেকে পাকি প্রোডাক্টের প্রতাপ কীভাবে দূর করা যায় সেটা ভাবতে গিয়ে কিছু খোঁজখবর করেছিলাম লনের ব্যাপারে। কাপড়ে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ নই এখনো। এর পেছনে আমাদের সীমাবদ্ধতা, সদিচ্ছার অভাব, উদাসীনতা, লোভ সবই রয়েছে। বেক্সিমকো লন আনার পরে ভেবেছিলাম এবার হয়ত দেশে নিজস্ব লন তৈরি হচ্ছে। পরে শুনলাম তাদের লনও পাকিস্তান থেকে আমদানি করা। নিশ্চিত নই যদিও।

গতকাল ইসলামপুর থেকে তোলা ছবি।

দেশি ডিজাইনারদের দিয়ে নিজস্ব ডিজাইন করিয়ে দেশে লন বা এ জাতীয় সুলভ বস্ত্র উৎপাদন করতে আমরা সক্ষম বলে আমার বিশ্বাস। সমস্যা হলো এটা করার জন্য যেটুকু আবেগ আর বোধ থাকা দরকার সেটুকু যাদের আছে তাদের আর্থিক, প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা নেই। যাদের আর্থিক, প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা আছে তাদের সেই আবেগ, উপলব্ধিটুকু নেই; কিংবা থাকলেও ব্যবসায়িক চেতনার কাছে সেটা মার খেয়ে যায়।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

এই জিনিস এখন গলির মোড়ে মোড়ে

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মুস্তাফিজ এর ছবি

বাংলাদেশেও "লন" তৈরী হয়। বাজারে পাকিস্তানী বলে চালানো বেশীরভাগ "লন" কাপড়ই বাংলাদেশে তৈরী। তবে কাপড় তৈরীতে ব্যবহার করা সুতার বেশীর ভাগই আমদানীকৃত।
লন কাপড়ে সুতার "সারফেস ডেনসিটি" বেশী। সারফেস ডেনসিটি মানে এক বর্গ ইঞ্চি কাপড়ের দৈর্ঘ প্রস্থে (Warp weft) কতগুলা সুতা ব্যবহার করা হয়েছে তা। এক ইঞ্চিতে যত বেশী সুতা থাকবে সুতা তত পাতলা হবে কাপড় তত সুন্দর হবে। ভালো কোয়ালিটির লনে ইঞ্চিতে সাধারণত ১৩০x৭০ বা ১১০x৭৬টি সুতা থাকে। আর সুতার কাউন্ট ৪৫x৪৫, ৬০x৬০ বা ৮০x৮০ হয়। ৮০x৮০ কাউন্ট পর্যন্ত আমাদের দেশে ুনেক আগে থেকেই তৈরী হয়।
এখানে বলে রাখি রূপকথার মসলিন তৈরী হতো ৩০০থেকে ৫০০ কাউন্টের সুতা দিয়ে যা বর্তমানে অবাস্তব মনে হয়।

...........................
Every Picture Tells a Story

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

মুস্তাফিজ ভাইরে পাওয়া গেল হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নাশতারান এর ছবি

বাংলাদেশে ভালো মানের যে সুতি কাপড় তৈরি হয়, সেগুলোর ডিজাইন ভালো হয় না। ঘরে পরার কাপড় হিসেবে মানুষ কিনলেও ঘরের বাইরে, কোনো বিশেষ উপলক্ষ্যে পরিধেয়র মর্যাদা এগুলো পায় না। আমাদের দেশি শিল্পীদের দিয়ে নকশা করিয়ে কারখানায় ১৩০x৭০ কাউন্টের বা তার থেকে ভালোমানের সুলভ মূল্যের সুতি কাপড়ের প্রোডাকশন তো সম্ভব। তাই না?

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

শিশিরকণা এর ছবি

প্রচুর ফেসবুক বুটিক দেখি রেপ্লিকা লন বিক্রি করে। অর্থাৎ ডিজাইন পাকি, কাপড় হয়তো এখানে তৈরি, তারপর স্ক্রীন প্রিন্ট করা। কেউ জামার কাটিং অনুযায়ী ক্যানভাস এর আকার ধরে নকশা আকলে এরপর সেটা ধুমায়ে স্ক্রীন প্রিন্ট করলেই সস্তায় সুন্দর কাপড় সাপ্লাই দেয়া যায়। কেউ উদ্যোগ নিলেই এই ব্যবসা করে লাল হয়ে যেতে পারে ( সাথে পাকি ট্যাগ দিলে তো সোনায় সোহাগা)

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

ওডিন এর ছবি

মার্কেটে তেমন একটা যাই না, তবে ওইদিন অনিকেত দা আসা উপলক্ষে যেই রেস্তোরাঁতে মিট করলাম আমরা, সে জায়গাতে ইট্টু পর পর পাকিস্তানি লন কাপড়ের এড দেখে ভালই চমকাইছি, সেইটা স্বীকার করতেই হবে। বছরদুয়েক আগেও তো মনে হয় এইরকম দেখি নাই।

ব্লগরব্লগর জারি থাকুক। হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

পাকিস্তানের জিন্দাবাদই যখন চালু হয়ে গেছে আমাদের জয় বাংলার দেশে, পাকিস্থানি লন তো সামান্য জিনিস।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

রিক্তা এর ছবি

মানুষের বিদেশপ্রীতি দেখলে আমার মনটন খারাপ হয়ে যায়। এর মধ্যে পাকিস্তানি জিনিস নিয়ে অনেককে আবার গর্ব করতে শুনেছি মন খারাপ

--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

পাকিস্তানি ভূত কবে যে নামবে আমাদের ঘাড় থেকে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পাকিস্তান হৈল গিয়া আমাগো নিজের দেশ...
এইডারে ইয়াহুদী-নাছাড়া ফরেন মালের লগে মিলান কিল্লাই?

খেলার লগে পলিটিক্স মিশতে পারে,
আবেগের সাথে যুক্তিতর্ক মিশতে পারে...

কিন্তুক, পাকিস্তানের সাথে ফরেন? কাভি নেহী!!

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

লাইনে আসুন, দ্বীনের পথে আসুন।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সাফি এর ছবি

বাংলাদেশে যেয়ে এবার মনে হলো হিজাব পরিহীতার সংখ্যাও অনেক বেড়ে গেছে।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হিজাব নিয়ে এখন বাংলাদেশে সিরিয়াস গবেষণা হওয়া উচিত।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মরুদ্যান এর ছবি

আমার বউয়ের কথা কই। সে গত বছর পর্যন্ত ছিল হিজাব ছাড়া। হঠাৎ জানুয়ারি মাসে একদিনের নোটিশে আমারে সিদ্ধান্ত দিল যে হিজাব করবে। বললাম ঠিকাছে, কিন্তু কারণ কি? বলল ফেসবুকে তার কতক পুরুষ ফ্রেন্ড একটু 'অন্য' রকম ভাষায় প্রশংসাসূচক মেসেজ পাঠিয়েছে, যেটা তার ভাল্লাগেনাই। তাই তার সৌন্দর্য কেবল স্বামীর জন্য বরাদ্দ রেখে হিজাব চালু। হাসি

পাকি লনের কথা কি আর বলব? এই জিনিস বাংলাদেশে আসছে পরে, প্রথম এই জিনিস দেখি দোহাতে ২০১১ তে। এক ভাবি দুবাই থেকে কিনে এনে বাকিদের কাছে বিক্রি করে। জিনিস খুবই ভাল, নামকরা ডিজাইনারদের ডিজাইন, কিন্তু দাম ভারতীয় গুলোর থেকে কম। তখন থেকে দেদারসে কিনা শুরু। তারপর শুরু হল বাংলাদেশেও!

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

রংতুলি এর ছবি

চলুক আর হিজাবের দোকানও। এটা বিষয়টাই মন্তব্যে লিখব বলে ভাবতেছিলাম। ক্লাস ওয়ানের বাচ্চাদের জাব্বাজুব্বা পরায়ে স্কুলে পাঠানো দেখে আমার নিজের দমবদ্ধ লাগে। অথচ আমাদের কালে এইট/নাইনে ওঠার পর ক্লাসে খুঁজে ফিরে এক বা দু’জন বোরখাওয়ালী থাকত!

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

লিখে ফেলেন না এই বিষয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নীলকান্ত এর ছবি

অনেকদিন পর সচলে ঢুকলাম।
দেশ ছাড়ার পর এসব বিষয় তেমন একটা মাথায় আসে না। ফেরত যেতে মন চায়।


অলস সময়

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলে আসেন হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

তুমুল।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

এক্সপোর্ট কোয়ালিটি লেখা চোখ টিপি

প্রসেনজিত বিশ্বাস

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মেঘলা মানুষ এর ছবি

চলুক

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

চুল কাটাতে গিয়ে এতকিছু দেখলেন কেমনে! আমিতো সেলুনে গিয়ে ঝিমাই। পর্যবেক্ষণ ভাল লেগেছে। হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আমার খালি চোখে পড়ে যায় সবকিছু ইয়ে, মানে...

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

'এক্সপোর্ট কোয়ালিটি'র আদর্শ ব্লগ।

বিয়েবাড়ি সাজানোর জন্য বাতির চেহারা অনেক আগেই বদলে গেছে। আগেকার প্লাস্টিকের খোলসের বড় বড় লাল-নীল-সবুজ বালবের বদলে এখন ছোট ছোট রঙিন মরিচ বাতি। আমার অবশ্য আগের বাতিগুলোই দেখতে ভালো লাগত। কিন্তু কে শুনবে আমার কথা!

নিজের বিয়ের সময় 'আগেকার প্লাস্টিকের খোলসের বড় বড় লাল-নীল-সবুজ বালব' ব্যবহার করো !

তোমাকে যে ইদানীং কী মিস করছি! মাঝে মাঝেই যখন রাতবিরাতে আড্ডা দিতে ইচ্ছে করে তখন মনে হয় তুমি থাকলে যেয়ে আড্ডা দেয়া যেত!

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হেহে আপাতত লাইনে আসার ইচ্ছা নাই দেঁতো হাসি

আপনাদেরও খুব মিস করি রাজিব ভাই, হুটহাট কোন প্ল্যান ছাড়া ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দেয়ার মত মানুষ নাই আর।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মেঘলা মানুষ এর ছবি

এককালে নাকি চুল কাটার সময় নরসুন্দররা প্রচুর কথা বলতেন। তাঁদের নাকি মুখ না চললে হাত চলত না।
লেখা পড়ে ভালো লাগলো, এক সময় ফেলে আসা কিছু জিনিস ফিরে পাওয়া যায়, কিছু বদলে যায়, আমরা নিজেরাও বদলাই।

শুভেচ্ছা হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হুম। মানুষ মরে গেলে পঁচে যায় আর বেঁচে থাকলে বদলায়। ভাল থাকুন।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মাসুদ সজীব এর ছবি

আপনারা সুবিধার মানুষ না, খেলার সাথে রাজনীতি মেশান, চুল কাটতে গিয়ে সেটার সাথে পাপিস্থান মেশান চোখ টিপি । সময় থাকিতে লাইনে আসুন খাইছে

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

লাইনে আসতে তো চাই, কিন্তু আমার লাইন হইয়া যায় আঁকাবাঁকা, ভাল না হাতের লেখা।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।