পুরাকালে মানবজাতির অংশ হিসেবে বিজ্ঞানীরাও ধর্মের মতন নানান দল-উপদলে বিভক্ত ছিলেন। তাঁরা গবেষণা করতেন আলাদা। চৌর্যবৃত্তির ভয়ে সহজে কেউ গবেষণা প্রকাশ করতেন না। এর ফলে বিভিন্ন সময়ে যে ঝামেলা হয়নি তা না। এক ক্যালকুলাসের উদ্ভাবন নিয়েই নিউটন আর লিবনিজের মাঝে বেশ একটা ঝগড়া ছিল। নিউটন সুন্নী হওয়াতে আর লিবনিজ শিয়া হওয়াতে তৎকালীন সময়ে সম্মান পেয়েছিলেন নিউটন। (এখানে বিশিষ্টার্থে ব্যাবহৃত শিয়া-সুন্নী পদযুগলের সাথে ধর্মতত্ত্বের যোগসূত্র নাই, পরিসঙ্খ্যানের আছে।) যা হোক, আমাদের মূল কাহিনী নিউটনের অনেক পরের সময়ের যতদিনে আইনস্টাইন জন্মেছেন, পড়াশুনা করেছেন এমনকি প্যাটেন্ট অফিসে একখানা কেরানীর চাকরিও জুটিয়ে ফেলেছেন।
সেই আমলে মানুষ সহজে পুরানো বিশ্বাসের বিপক্ষে যেত না। তাই মাইকেল ফ্যারাডে নামের এক বৈজ্ঞানিক যখন বিদ্যুৎ আর চুম্বক সম্পর্কে নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কিছু সূত্র দাঁড় করান, সেটা অনেকেরই পছন্দ হয়নি। ইউ হ্যাভ টু বুঝতে হবে, যে তখন বিদ্যুতের যুগ কেবল শুরু হচ্ছে। এমন টিপি দিলেই রেডিমেড বিদ্যুতের যুগ এসেছে অনেক পরে। কার্ল ফ্রিডরিশ গাউস এবং আন্দ্রে অ্যাম্পিয়ার ইনারাও তখন বিদ্যুৎকে টুকটাক গণিতের ভাষায় প্রকাশ করার চেষ্টা করেন। তবে সকলেই আলাদা আলাদা ভাবে।
এই সকলকে একসাথে করেন বিজ্ঞানী ম্যাক্সওয়েল। তিনি গোটা কয়েক গাণিতিক সমীকরণের মাঝে বিদ্যুৎ আর চুম্বকের নানান অবস্থা লিখে ফেলেন। বিদ্যুৎ দৌড় দিলে কি হবে, দাঁড়ালে কি হবে, চুম্বক বসে থাকলে কি হবে, নড়লে কি হবে ইত্যাদি বিভিন্ন ঘটনার সে এক অনুপম সাহিত্য- তবে গাণিতিক ভাষায়। প্রকৃত সমীকরণ ছিল কয়েক গণ্ডা। শেষমেশ তাদেরকে নামিয়ে আনা হয় চারটিতে। পদার্থবিদ্যা কিংবা প্রকৌশল বিদ্যার যাঁরাই ইলেক্ট্রোডাইনামিক্স পড়েছেন তাঁরা এর সঙ্গে বিলক্ষণ পরিচিত। এমনিতে ম্যাক্সওয়েল সমীকরণের চেহারা কতকটা পুরাণের ঘটোৎকচ কিংবা হিড়িম্বার মতন। আবু ইউসুফের মেশিন দিয়ে কোমল করবার পর তার চেহারা কেমন হয় তা নিচের ছবিতে দেখুন।
তা, এই হিড়িম্বা কিংবা ঘটোৎকচকে আপাতত না ঘাঁটাই। আমরা বরং আবার আপেক্ষিক তত্ত্বে ফিরি। আপেক্ষিক তত্ত্বে দু’খানা জিনিস খুব গুরুত্বপূর্ণ, 'কর্তৃকারক' আর 'অধিকরণ কারক'। অর্থাৎ, ঘটনা ‘কে দেখছে’ আর ‘কোথায় ঘটছে’ এই দু’খানা প্রশ্নের উত্তর না দিলে সটান চাপাতির কোপ। কে দেখছে এই প্রশ্নের সাথে সংশ্লিষ্ট হলেন “দর্শক বা Observer”। আর কোথায় ঘটছে এই প্রশ্নের সাথে সংশ্লিষ্ট হল “স্থির প্রসঙ্গ কাঠামো বা Inertial Reference Frame”। আগে মানুষ ভাবত ঘটনা একভাবে ঘটলেই হল, আমার মাথা ঘামিয়ে কাজ কি? আইনস্টাইন এসে কড়া এক ধমক দিয়ে জানিয়ে দিলেন সেটি আর হচ্ছে না।এখন, স্থির প্রসঙ্গ কাঠামো নামটা বেশ খটমটে বৈকি। সোজা ভাষায় একে ‘স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানের স্থান’ বলা চলে। অর্থাৎ, এই স্থানে কোনও ‘ঘটনা’ ঘটবে এবং বিজ্ঞানীরা বা ‘দর্শক’ তা দেখতে পারবেন। এই যেমন ধরেন, পুরান ঢাকার হোসেনী দালান হল গিয়ে “প্রসঙ্গ কাঠামো”, আর আমি-আপনি সবাই হলাম “পপকর্ণ হাতে দর্শক”। আর ঘটনা? ওটার কথা না বলাই ভাল। সে যাক গে, প্রসঙ্গ কাঠামোর মূল কথা হল স্থিরত্ব। কিন্তু, কার মাপে? সেটাই আপেক্ষিকতার শুরু।
আপনি যদি একটা ট্রেনে উঠে বগির ভেতরে উর্ধশ্বাসে পেছনে, অর্থাৎ ট্রেনের গতির উল্টোদিকে দৌড় দেন তখন কি হবে? সাধারণ যাত্রীরা ভাববে আপনি হেমায়েতপুরের যাত্রী, স্টেশন মিস করেছেন। পিচ্চি-পাচ্চাদের মাথা হয় পরিষ্কার। তারা উচ্চস্বরে মাকে জিজ্ঞাসা করবেঃ “আম্মু, ওই আঙ্কেলের কি পিসু পেয়েছে? হি হি হি!” আর বৈজ্ঞানিকের হাতে পড়লে, তখন? সাধু সাবধান! বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা, পুলিশ ছুঁলে সাতান্ন ঘা। আর বৈজ্ঞানিক ছুঁলে? সেটা বৈজ্ঞানিকের মর্জিমাফিক। তাঁরা নির্ঘাৎ খাতা-পেন্সিল নিয়ে আপনাকে প্রাচীনকালের সমাধিরক্ষক স্ফিংসের মতন জেরা করতে বসবেন। যদি তিনি ডাঃ জাকির নায়েক কিংবা ডঃ শমসের আলীর মত স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানের বিজ্ঞানী হন, তাহলে তেমন সমস্যা নেই। কিন্তু সহীহ বিজ্ঞানী হলে নির্ঘাত জিজ্ঞাসা করবেন- “কোথা থেকে?”
কি বুঝলেন? অর্থাৎ, জিজ্ঞাসা হল- “কোথা থেকে দেখতে হবে?” ট্রেনের ভেতরে কেউ যদি আপনার সাফাই সাক্ষী হন তাহলে উনি বলবেন আপনি ট্রেনের বগির পেছনপানে উদ্বাহু হয়ে দৌড়চ্ছিলেন। অর্থাৎ, বগি স্থির, আপনি অস্থির। আপনার সাফাই সাক্ষী যদি পাকিস্তান থেকে আসে? তাহলে নির্ঘাত আপনি এখন কাশিমপুর কারাগারে রসিকতা করছেন। আর, আপনার সাফাই সাক্ষী যদি রেললাইনের পাশে দাঁড়িয়ে থাকে? তখন তিনি বলবেন আপনি মোটেই দৌড়চ্ছিলেন না। আপনি একই জায়গায় দাঁড়িয়ে চার্লি চ্যাপলিনের মতন হাস্যকর ভাবে দৌড়ের মূকাভিনয় করছিলেন, আর ট্রেন ট্রেনের মতন দৌড়ে সামনের দিকে যাচ্ছিল। এখন উপায়? এই রকমের ঘটনা ঘটেছিল ম্যাক্সওয়েলের একটি সূত্র ব্যাবহার করতে গিয়েও। দু’ভাবে দেখলে একই ঘটনা হয়ে যাচ্ছিল দু’রকম। তখন আইনস্টাইন এসে বিজ্ঞান জগতের গ্র্যান্ড মুফতির মতন একখানা ফৎওয়া জারি করলেন। বিজ্ঞানিরা তো আর ফৎওয়ায় বেত্রাঘাত কিংবা কঙ্করাঘাত করেন না। তাঁরা করেন পেপারাঘাত, অর্থাৎ তিনি প্রকাশ করে ফেললেন জ্বলজ্যান্ত একখানা গবেষণাপত্র। অবশ্য, লোরেনৎস নামে আরেক বিজ্ঞানী সেই ঝামেলা মেটানোর একটি গাণিতিক পদ্ধতি আগেই উদ্ভাবন করে ফেলেছিলেন। কিন্তু সেটা তখন এতটাই উদ্ভট মনে হয়েছিল, যে তিনি নিজেই সন্দিহান ছিলেন। সেই পদ্ধতিটির নাম “লোরেনৎস রূপান্তর”। বিজ্ঞানী লোরেনৎসের কাহিনী আরেকদিন বলব।
আগের পর্বে আমরা আইনস্টাইনের বিখ্যাত আপেক্ষিক তত্ত্বের একটি স্বীকার্য জেনেছিলাম- ‘আলো সবসময় একই হারে দৌড়ের ওপর থাকে।’ এ তত্ত্বের অপর স্বীকার্যটি বলছেঃ “কোনও স্থির প্রসঙ্গ কাঠামোয় পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রগুলো একই রকম থাকবে।” অর্থাৎ, একটি প্রসঙ্গ কাঠামোয় যদি পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র মোতাবেক মুজাহিদ কিংবা সাকার ফাঁসি হয়, ঐ কাঠামোর সাপেক্ষে একই গতিতে ছুটে চলা অন্য কাঠামোতেও পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র মোতাবেক তাদের ফাঁসিই হবে। পাকিস্তান থেকে সাক্ষী আনিয়েও কাজ হবে না, হোসেনী দালান ধ্বসিয়ে দিলেও কাজ হবে না। আফসোস, “মানুষ” পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র মোতাবেক চলে না। চললে এত হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-ক্রিশ্চান-ইয়াহুদী জাতের কিংবা শিয়া-সুন্নি-আহমদিয়া/ব্রাহ্মন-চন্ডাল/ক্যাথলিক-প্রোটেস্টান্ট/হীনযান-মহাযান উপজাতের ঝামেলা থাকত না। মানুষ হয়ে উঠত কেবলই মানুষ।
২৫.১০.২০১৫
পৃথিবী, সৌরজগৎ
পুনোৎসর্গঃ
আগের পর্বে সত্যপীর ফৎওয়া দিয়েছিলেন সোফির নামোল্লেখ করে উৎসর্গপত্র রচনা করতে। পীরের আজ্ঞা শিরোধার্য বিধায় এই পর্বে সেই বকেয়া আবদার মেটালাম। হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-ক্রিশ্চান-ইহুদী কবলিত, মনুষ্যবিরল এই কন্টকাকীর্ণ পৃথিবীতে নবাগতা ‘সোফি’ কেবলই ‘মানুষ’ হয়ে বেড়ে উঠুক এই আশীর্বাদ করি।
কৃতজ্ঞতাঃ
১। ম্যাক্সওয়েলের ছবিসূত্রঃ মহাজ্ঞানী উইকিপেডিয়া
২। সমীকরণের ছবিসূত্রঃ Introduction to Electrodynamics, D. J. Griffiths, Prentice-Hall 1999, P-326
মন্তব্য
বিউটিফুল!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
লেখা উপাদেয় হইসে। একখান অপ্রাসঙ্গিক কথা জিগাইতে মন চায়। ফ্যারাডে নাকি বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলার বিদ্যুৎ আবিষ্কার মারিয়া দিয়াছিলেন মানে কপিপেস্ট উইদাউট কপিরাইট করিয়াছিলেন? কিছু জানেন নি?
ফাহমিদুল হান্নান রূপক
ফ্যারাডের মৃত্যু হয়েছিলো ১৮৬৭ সালে। টেসলার জন্ম ১৮৫৬ সালে। একটু গুগল করলেই এই জিনিসগুলো সামনে চলে আসে, তখন আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
দুঃখিত, এডিসনের কথা লিখতে গিয়ে ফ্যারাডের কথা লিখে ফেলেছি। বিজ্ঞানযাত্রায় টেসলার উপর এই লেখাটা পড়ে আসলেও চমকে গেছি। তাই ভাবলাম এইখানে আলোচনা হলে হয়ত আরেকটু খোলাসা হত।
ফাহমিদুল হান্নান রূপক
হিমু ভাই যদিও কইছেন, তবু এট্টু কিলিয়ার করি। আপনি মনে হয় এডিসন আর ফ্যারাডেতে প্যাঁচ লাগায়া ফালাইছেন। নিকোলা টেসলার সাথে বিয়াপক গ্যাঞ্জাম আছিল টমাস আলভা এডিসনের। ঐ আমলে এডিসন ছিলেন সুন্নী, আর টেসলা শিয়া। গিয়াঞ্জাম আছিল এসি আর ডিসি কারেন্ট নিয়া। তয়, আইনস্টাইন চাহেন বা না চাহেন- ওপরওয়ালা পাশা খেলিয়া যাহাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান করেন এবং যাহার কাছ হইতে ইচ্ছা ক্ষমতা কাড়িয়াও লন। আজকের দুনিয়ায় ব্যাবহারগত দিক থেকে সবাই টেসলার মুরীদান।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এডিসন লোকটা বিজ্ঞানের বড় গুণ্ডে।
আমরা ছোটো ক্লাসে এডিসনের জীবনী একটা অধ্যায় হিসেবে পাঠ্যবইতে পড়েছিলাম। সেখানে অনেক গোল গোল মিষ্টি কথা লেখা ছিলো। লোকটা যদি এখনো পাঠ্যবইতে টিকে থাকে, তাহলে শিক্ষা মন্ত্রকের সাথে যোগাযোগ করে তাকে বাদ দিয়ে তার জায়গায় টেসলাকে ঢোকানো প্রয়োজন।
এডিসনকে বিজ্ঞানী না বলে বলা উচিৎ ল্যাবরেটরি ডিরেক্টর। ব্যবসাবুদ্ধি পাকা ছিল বলে তাঁর কারখানায় যেসব যন্ত্রপাতি বানানো হত, সেগুলি তিনি নিজের নামে পেটেন্ট করাতেন। এডিসনকে তুলনা করা যায় স্তিভ জবসের সঙ্গে - দুজনকে ঘিরেই একটা মিথ গড়ে উঠেছে।
Emran
Emran
টেসলার কথা প্রথম পেয়েছিলাম উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে, পদার্থবিদ্যায়। অর্জিত জ্ঞানঃ "চৌম্বক ক্ষেত্রের এস.আই. একক টেসলা।" ১২ বছরে টেসলা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক ভাবে অর্জিত জ্ঞান এই এক লাইন।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
মনে আছে, একবার এডিসনের জীবনের এক করুন কাহিনী (তাঁর মায়ের কাছে স্কুলের শিক্ষকের চিঠি) পড়ে বেশ খানিকটা কেঁদেছিলুম।
তথ্যসূত্র কি রেডিওনান্নামুন্না.কম?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এডিসনের কথা তো আমিও পড়েছিলুম ক্লাসের বইয়ে। পরে বোধহয় মুক্তধারার একটা বইয়েও পড়েছিলাম - ঐ যে কাজের ছেলেকে বেলুন বানানোর চেষ্টাটা। এডিসন পরিচিত বলে যখন টেসলার সাথে দ্বন্দ্বের কথা জানলাম, তখন টেসলাকে ভিলেন মনে হচ্ছিল! পরে বিস্তারিত জেনে আমি তো টেসলার ভক্ত হয়ে গেছি!
____________________________
এইজন্যই পিছন পাগল পিছনের কথা ভুলবার মানা করে
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আর তাদের এই গিয়াঞ্জামকে নাম দিসে ওয়ার অব কারেন্ট!
____________________________
হ, আপনার উত্তর সঠিক হয়েছে,
কিন্তুক আমগো ওয়ার অব ডুবসাঁতার থাইমা গেল কেনু?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আসেন না ওয়ার অব ডুবসাঁতারের পাশাপাশি ওয়ার অব আপেক্ষিকতা শুরু করে দিই!
মানে সেই রকোম -
হোঁদল রাজা বললো ডেকে
বুদ্ধু রাজা আজকে থেকে
করবো না আর যুদ্ধবাজি
তুই যদি ভাই থাকিস রাজি! --- ইত্যাদি ইত্যাদি
____________________________
হোঁদল রাজা খেপলে পরে, ওরে-
বোতল ভাজা করবে মেরে-ধরে!
সাতান্ন-বার পেঁদিয়ে ঠারে ঠারে,
অনুভূতির, আঘাত দেবে, ঘাড়ে।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কার্ল ফ্রিডরিশ গাউস - যার নামে গাউসুল আযম দরগা শরীফের পত্তন।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আর গাউসিয়া মারকেট।
একটা আধ্যাত্মিক সাইফাই গপ্পের আধখানা প্লট মাথায় আসতেছে।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হাসিব্বাই, কার্ল ফ্রিডরিশ গাউস এটিই কি ছহীহ উচ্চারণ?
(আসল উচ্চারণ জানা নেই, একেক স্যার একেকভাবে পড়াতেন।)
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হ, ঐটাই সহিহ উচ্চারণ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
বদলে দিলুম
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
গাউস আঙ্কেলের নামটা অরিজিনালি Gauß। শেষের বেটার মতো দেখতে অক্ষরটা হলো ss। আঙ্কেল সইসাবুদ দিতেন এইভাবে,
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
উনি কি আসলেই এই স্বাক্ষর পরপর দু'বার করতে পারতেন?
ব্যাংকের কেরানিরা ট্যাকাটুকা তোলার সময় আটকে দিত না?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এই সিগনেচারটা তার ১৭ বছর বয়সে ডিজাইন করা। তখন তারে কেউ চিনতো না। চেনার পরও নিশ্চয়ই এই সইটাই দিতো সে সবজায়গায়।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এখানে গাউসের একটা চিঠি আছে। ওটার তিন নাম্বার দেখলে বুঝবেন এই লোক এইরকম সিগনেচার হাটেমাঠেঘাটে প্রডিউস করতে পারতো।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ডরাইলাম
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
লাফাং
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নেন্, ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণ নিয়া একটা মজার গল্প পড়েন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পাণ্ডবদা,
ঢুকতে পারলাম না, দ্বাররক্ষী সাড়ে আট ডলার সম্মানী চায়
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
দিয়া দেন
আমি সাধাসিধা বঙ্গ সন্তান, ডলার কইত্তে পামু!!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
মতিঝিলে মানি এক্সচেঞ্জগুলায় পাইবেন।
..................................................................
#Banshibir.
নামের মধ্যে মতিওয়ালা জায়গা'র কথা শুনলে ডর করে।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সত্যপীরের কাছে ধার নেন।
আমার আবার ঈমান দুব্বল! পীর-ফকিরের ট্যাকাটুকায় বিশ্বাস নাই।
কাউন্টারে দিলাম, তারপর দেখা গেল সাদা কাগজ হয়ে গেছে- তখন?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এই ন্যান স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, আন্তর্জাতিক মানের লিঙ্ক, কোন ট্যাকাটুকা লাগতো না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
, বোধহয় এই গল্পটাই নাটক বানিয়ে জাফর ইকবাল গং মঞ্চস্থ করেছিলেন।
তাঁর আত্মজৈবনিক রঙিন চশমায় এমন একটি ঘটনার উল্লেখ ছিল মনে পড়ে।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
অসাধারণ...
স্বয়ম
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
একটা প্রায় প্রাসঙ্গিক মন্তব্য করি,
সচলের হোম পেজে পোস্ট প্রিভিউতে দেওয়া ম্যাক্সওয়েল এর ছবিটা দেখে এই পুরোন কথাটা মনে পড়ল। ম্যাক্স ওয়েলের জন্ম ১৮৩১ সালে, সে তার সূত্রগুলো প্রকাশ করে ১৮৬১-১৮৬২ সালে। তার মানে ৩০ বছর বয়সে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে বেশিরভাগ বিজ্ঞানীই তাদের যুগান্তকারী কাজগুলো এইরকম ইয়ং বয়সেই করেছেন। কিন্তু বিজ্ঞানীদের নিয়ে বা তাদের আবিষ্কার নিয়ে প্রকাশিত বেশিরভাগ লেখাতেই তাদের ছবি হিসাবে দেওয়া হয় বুড় বয়সের ছবি। ছোটো বেলায় এসব দেখে দেখে, মনে করতাম বড় বিজ্ঞানীমাত্রই বুঝি বুড়ো। ওরকম উস্কু খুস্কু চুলদাড়িতে পাঁক না ধরলে কি আর বিজ্ঞানী হওয়া যায়।
অনেক পরে জেনেছি, উস্কু-খুস্কু আইনবুড়ো, যখন তার রিলেটিভিটির সুত্র আবিষ্কার করে তখন বেশ পরিপাটি যুবক ছিলো!। মাথা আচড়িয়ে শার্ট ইন করে দুচারজন গার্লফ্রেণ্ড নিয়ে ঘুরত। যাই হোক, আমার মনে হয় বিজ্ঞানের লেখায় বিজ্ঞানীরা যে বয়সে তাদের সেরা কাজটি করেছেন সেই বয়সের ছবি দেওয়া উচিত। এতে বাচ্চা-কাচ্চারা বিজ্ঞানের সাথে আরো বেশি রিলেট করতে পারবে। বিজ্ঞানের 'আনকুল-ফ্যাক্টরটা' কমবে। মানুষের ভুল ধারণাও ভাঙবে যে বিজ্ঞানীমাত্রই বুড়ো নয়। বরং তুখোড় বিজ্ঞানীরা মূলত তরুণ!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
কথা সত্য, অভিদার কোনও একটা বইতে গ্রাফসহ একটা পরিসংখ্যান ছিল- "২৬-৩০ বছর বয়সে মানুষের গড় সৃজনশীলতা সর্বোচ্চ" এই মর্মে। একটা সমস্যা হল, কেউই সম্ভবত ঐ বয়সে বিখ্যাত হয়না, তাই ঐ বয়সের ছবিও সহজে পাওয়া যায় না। পুরান আমল হইলে তো আরও না।
পরবর্তীতে ছবি দেবার সময় ব্যাপারটা মাথায় রাখব, যদি খুঁজে পাওয়া যায়।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হেঃ হেঃ ! যতই সুকুমার স্টাইল ধরেন, আর রেলগাড়ি চালান, আপেক্ষিকতা আপেক্ষিকতাই, হাওয়া মিঠাই নয়। নায়ক ছাড়া আর তো কোন গতি দেখি না।
কোন নায়কের কথা কন? নায়ক ডাকতর? ভারতের?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
জী জনাব। আপেক্ষিকতা তো ছাড়, সৃষ্টিকর্তা এই জগতের কোন কিছুই তাঁর সাথে পরামর্শ ছাড়া সৃষ্টি করেন নাই।
উনি আমার প্রিয় স্ট্যান্ডাপ কমেডিয়ান।
বিজ্ঞান একটা অত্যধিক সিরিকাস বিষয়।
এর সাথে স্ট্যান্ডাপ কমেডি মেশাবেন না।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আমাদের দেশের পদার্থ বিজ্ঞানের বই এভাবে লেখা হলে নিশ্চই কারো পরীক্ষার আগে প্রশ্নের জন্য ছুটতে হত না।
বেশ মজার।
বেশি বেশি স্বপ্ন দেখা ভাল না, বাহে!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ভ্যালা রে, সাক্ষী, বেঁচে থাক চিরকাল!
দেবদ্যুতি
আমি দেশোদ্ধারে নামলাম কবে শুনি??
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আপনি আমার বিজ্ঞান সমস্যা উদ্ধারে নেমেছেন, আমি মন খুলে দোয়া করলাম, আর আপনি রাগলেন? নাকি আপনার রাগ আপেক্ষিক?
দেবদ্যুতি
নেকনিয়তে কৈলে ঠিকাছে, একটা ছড়ার সাথে মিল পাইতাছিলাম কিনা!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
মিল তো কতকিছুর সাথে কতকিছুর থাকে। ঐ যে কইলেন না চাল আর চালতা এক নয়!
দেবদ্যুতি
এমনে আত্মঘাতী গুল খাইয়া ফালাইলাম!
ভাবতেছি, আন্নে লুক্টা আসলে সুবিধার না!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ক্যালিডোস্কোপ-১৩ আর ঈশপের গল্প (১২১-১২৫) এর কি হল?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
৬ এ সাক্ষী যদি সত্যানন্দ হয় তবে কী হবে?
লেখা বরাবরের মত জম্পেশ হয়েছে - বরাবরের মত বলে গেলাম।
____________________________
'সাক্ষী' আর 'সাফাই সাক্ষী' কি এক হল?
বরকে কি আপনি বরকন্দাজ বলেন? চাল কিনতে গিয়ে চালতার খোঁজ করেন?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
____________________________
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আপনি যে কিকরে এমন সহজে বিজ্ঞান নিয়ে লেখেন সে কেবল আপনিই জানেন। হা-পিত্যেশ করে বসে রইলাম পরের লেখার জন্য।
কুরনিশ।
----------------------------------------
ইচ্ছে মত লিখি
http://icchemotolikhi.blogspot.in/
বিজ্ঞান ব্যাপারটা তো সোজাই। কিছু পাপিষ্ঠ মাস্টার আর কিছু তথাকথিত কুলাঙ্গার বইলেখক খামাখাই এই পাটিসাপটার মতন সোজাসাপটা সুস্বাদু জিনিসটা নিয়া বাসী জিলিপির মত প্যাঁচ বানায়।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আপনি বিজ্ঞানের সাথে ধর্ম মিশায়েছেন, তার উপর সুন্নিনাভূতি তে আঘাত করেছেন, দেখি আপনার নামে ৫৭ ধারা ঠুকে দেওয়া যা কিনা :- ?
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এই লেখাগুলো যে কি ভালো হয়েছিল!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
নতুন মন্তব্য করুন