টক ঝাল মেহিকো – পর্ব ১

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: শনি, ০৭/০৪/২০১২ - ১২:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১ম পর্ব এইখানে।

মেক্সিকো সিটিতে নতুন বছরের প্রাক্কালে আমাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে বুকে টেনে নিল দুইজন, একজন আমার মেক্সিকান ভাই ইসাইয়াস সেরণা, যার সাথে দুই বছর আগে শেষ দেখা হয়েছিল এথেন্সের রাস্তায় এবং অপর জন্য অ্যাজটেক বৃষ্টি দেবতা টিলালক, মনের সুখে গোটা শহরকে ভিজিয়ে চলেছে তো চলেছেই, সেই সাথে বিটিভির সংবাদের মত আছে বজ্রসহ ঝড়! শুনলাম গত দুই সপ্তাহে এমন রুদ্র নাচ আর নাচেনি টিলালক, কিন্তু আজ মনের সুখ মিটিয়ে তাথৈ তাথৈ করেই যাচ্ছে। কালবৈশাখীর দেশের মানুষ, এমন ঝড়কে থোড়াই কেয়ার করি! আকাশ ভাঙ্গা বৃষ্টিকে সাথী করেই খুঁজে বের করলাম বিশ্বের সবচেয়ে বড় শহরটির ( ইদানীং অবশ্য বলা হচ্ছে টোকিও সবচেয়ে বড়) এক প্রান্তে অবস্থিত আমাদের হোটেল।

এখানে আসাটা অবশ্য হঠাৎ করেই যেমন ঘটে নি তেমনি খুব সহজও হয় নি, গত দুই বছর ধরেই ইয়াইয়াসের সাথে নিরবিচ্ছিন পত্র চালাচালি চলছিল ল্যাতিন আমেরিকার ভ্রমণের সব খুঁটিনাটি নিয়ে, সেই সাথে মূল সমস্যা তৈরি করেছিল মেক্সিকান অ্যাম্বাসী- তারা জানাল ভিসা দিতে তাদের বিশেষ সমস্যা আছে যেহেতু আমার পাসপোর্টটা খুব সন্দেহজনক ধরনের সবুজ! সেই সাথে জানিয়ে কৃতার্থ করল যে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা থাকলে মেক্সিকোর ভিসা লাগে না ! কি আজব, আমেরিকা যাচ্ছি না তো, তাহলে তো তাদের অ্যাম্বাসিতেই যেতাম, যেতে চাইছি আমেরিকার চেয়ে অনেক অনেক গুণে বৈচিত্রময় দেশ মেক্সিকোতে।

আবার ফ্যাঁকড়া, প্রায় পনের ধরনের কাগজ চাইল, তার মধ্যে নিজের নাম যে পুলিশের কালো রেকর্ডে নথিবদ্ধ নেই তার প্রমাণ পর্যন্ত ছিল, এতেও শেষ নয়, নিজে উপস্থিত থেকে নাকি ভিসার জন্য নিয়মরক্ষার ইন্টারভিউও দিতে হবে, তাদের মহা ব্যস্ততার মাঝে অনেক ঝামেলা করে ২৮ ডিসেম্বর দুপুর এগারটায় ২০ মিনিটের সময় দিয়ে ধন্য করল। অথচ তার পরের দিনই যাত্রা শুরু, প্লেনের টিকেট কাটা আছে চর মাস আগে থাকে, কি মুশকিল! গেলাম সেখানে ব্যাকপ্যাক ভর্তি নিজের মেক্সিকোতে পালিয়ে না যাবার পক্ষের প্রমাণ নিয়ে ( মেক্সিকোর উত্তর সীমান্তকে ব্যবহার করে কোটি কোটি মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে, যে কারণে এত কড়াকড়ি) , সব দেখে দুই আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে রেটিনা স্ক্যান করানোর পর জানানো হল তারা আমাকে ভিসা দিতে অপারগ!

অধিক শোকে মানুষ পাথর হয়, আমি বরফের নিচে জমাট বাঁধা শোকের হিমালয় হয়ে গেলাম, অনেক কষ্টে কোঁকাতে কোঁকাতে কারণ জিজ্ঞাসা করতেই জানাল যেহেতু আমার বিমান টিকিটে লেখা আছে যাবার গন্তব্য মেক্সিকো সিটি কিন্তু ইউরোপে ফিরে আসব ব্রাজিলের রিও থেকে, মানে অন্য দেশ থেকে, তাই তারা ভিসা ইস্যু করতে পারবে না! শেষমেশ অনেক নাটকের পরে ভিসা অফিসার মহিলা কৃতার্থ করে জানাল, তাদের পক্ষে ৯০ দিনের জন্য ট্রানজিট ভিসা দেওয়া সম্ভব!

তখন আর কোন রকম তর্কের সময় নেই, পরের দিন ফ্লাইট! তাই সই, কিন্তু মুশকিল হয়ে গেল গাড়ীতে মেক্সিকো ভ্রমণের মাঝে আমাদের গুয়াতেমালা আর বেলিজ যাবার কথা পাকাপাকি হয়ে আছে, এখন ট্রানজিট ভিসা নিলে মেক্সিকো থেকে একবার বেরোলেই আবার প্রবেশের জন্য নতুন ভিসা নিতে হবে, আবার একই ফ্যাঁকড়া! আচ্ছা, পরেরটা পরে দেখা যাবে, এখনের নগদটা নিয়ে নিই, এইভাবেই শেষ হল সেই মহাভিসারণ! ( অন্য দেশের গুলোর কথা যথাসময়ে আসবে)

পরদিন সকালেই সেই হোটেলের মালিক আমাদের জন্য গরম গরম নাস্তা ও কফি পরিবেশনের সাথে সাথে ধীরগতির ইংরেজিতে অনেক অনেক দশক আগে তার ইউরোপ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বয়ান করলেন, সেই সাথে বিলুপ্ত কিছু দেশের নাম বললেন যেগুলো তার যাওয়া হয়েছিল- যুগোস্লাভিয়া, চেকস্লোভাকিয়া!

409569_10151266268705497_608590496_23108697_997361924_n

অমায়িক ভদ্রলোক পই পই করে বলে দিলেন সাবধানে চোখ-কান খোলা রেখে ঘুরতে! বিশ্বের সবচেয়ে অপরাধপ্রবণ শহরগুলোর মধ্যে এটি একটি। বিশেষ করে সাথে ক্যামেরা নিয়ে ঘোরা মহা ঝুঁকিপূর্ণ।

ট্যাক্সিতে ওঠার পরপরই চোখে পড়ল জানালায় সাঁটা ড্রাইভারের পরিচয়, ঠিকানা, লাইসেন্স নং সহ বিশাল ছবি সহ এক পোস্টার আকৃতির কাগজ! ইয়াইয়াস মহা ঘোড়েল ছোকরা, সে বলল এমন পরিচয়পত্র না থাকলে সে এই ট্যাক্সিতে উঠত না, কারণ মেক্সিকো সিটির সিংহভাগ অপহরণই হয় ভুয়া ট্যাক্সির সাহায্যে! কি গেরো রে বাবা! কিন্তু আমাদের অপহরণ করবে কেন? কারণ পর্যটক দেখলেই তারা বুঝতে পারে যে অন্তত এদের কাছে রাহা খরচ হিসেবে কিছু মালকড়ি পাওয়া যাবে!

কিছু বিশেষ বিশেষ স্থান দেখার মানসে বেরিয়েছিলাম সাহস করে এই মহানগরীতে, কিন্তু পরক্ষণেই মনে হয় এখানে সবকিছুই গভীর মনোযোগে অবলোকনের মত, বিশেষ করে পাতাল রেলে উঠে সেই ধারনাটা আরও অনেক দৃঢ় হল। পাতাল রেল চলা শুরু করার সাথে সাথেই শুরু হল বিচিত্র বাদ্যযন্ত্র হাতে এক গায়ক-বাদকের আগমন, মিনিটখানেক সেই করতালের মতো জিনিসটি বাজিয়ে গান গেয়ে পরে সন্মানী চাইতে আসল, তারপর আসল এক চিরুনি বিক্রেতা, তার পণ্যের গুনাগুণ বর্ণনা করতে করতে কেবল মুখে ফেনা তুলতে বাকী রাখল, কথার ফুলঝুরি যে সে ভালই ফোঁটাতে পারে তার প্রমাণ পাওয়া গেল গোটাকতক চিরুনি বিক্রি হওয়ায়।

এর মধ্যে পরের ষ্টেশন চলে এসেছে, এতক্ষণ যাত্রীদের কাতারে বসে থাকা দুইটি ফুটফুটে বাচ্চা মেয়ে দাড়িয়ে সবার কাছে কাছে একটা চিরকুট রেখে যেতে গেল, তাতে দেখি লেখা আছে তারা আর্থিক সমস্যার কারণে বাড়ী ভাড়া দিতে পারছে না, সাহায্যের আকুল আবেদন জানিয়ে লেখা খানকতক শব্দে মন ভীষণ আদ্র হয়ে উঠল ঠিকই, কিন্তু সাথে সাথে মেজাজ চটে উঠল সেই বাবা-মার ওপর যারা এমন দেবশিশুদের অন্যের অনুগ্রহ ভিক্ষার জন্য এই জনসমুদ্রে ছেড়ে দিয়েছে।

ততক্ষণে চলে এসেছেন দুই সিডিওয়ালা, নিঃসন্দেহে পাইরেটেড সিডি! বেশ শৃঙ্খলার সাথে প্রথমজন আগে তার সিডি বাজালেন কয়েক মুহূর্ত, ঝাকানাকা রক টাইপের গান, সেই সিডি বিক্রি শুরু করতেই অন্যজন তার পুরনো দিনের ক্ল্যাসিকাল গানের সিডি বাজানো শুরু করল, হুলিও ইগলেসিয়াসের গমগমে কণ্ঠে সারা মহাবিশ্ব আচ্ছন্ন হয়ে উঠল খানিকক্ষণের জন্য ( তিনি গায়ক কাম অভিনেতা এনরিক ইগলেসিয়াসের বাবা, ল্যাতিনের কিংবদন্তী ), সিডি বিক্রি থেমে যেতেই পরের ষ্টেশনে উঠে এল মলমওয়ালা!

ঠিক যেন বাংলাদেশের কোন মুড়ির টিন সার্ভিস, একের পর এক ক্যানভাসাররা হেঁকে যাচ্ছে পণ্যের দ্রব্যগুণ, ঘর্মাক্ত কলরবে মুখর চারিপাশ, কিন্তু মোটামুটি শৃঙ্খলা বজায় আছে সবখানেই।

IMG_0212

মনে হল জীবন মেলার মাঝখানে এসে পড়েছি, চারিদিকে কত ক্ষুদে ক্ষুদে ঘটনা ঘটে চলেছে অবিরাম- অভিমানী প্রেমিকার মান ভাঙ্গাতে ব্যস্ত অসহায় প্রেমিক, গাঢ় ঘুম ভেঙ্গে অফিস যাবার পথে হাই তুলতে তুলতে বিরক্তি প্রকাশ করছে কোন পৌঢ়, কিশোরের দলের তুমুল তর্ক চলছে নিজের পছন্দের গায়িকা নিয়ে, চোখের কোণে আশাভঙ্গের ছাপ নিয়ে বসে আছেন রেড ইন্ডিয়ান বৃদ্ধা, কত আবেগের বহিঃপ্রকাশ, ঘটনার ঘনঘটা, একজন লেখক মনে হয় একবেলা মেক্সিকো সিটির পাতাল রেলে চাপলেই যত লেখার খোরাক পাবেন তা কাগজে এঁকে দিব্যি কয়েক সপ্তাহ চলতে পারবেন। আচ্ছা, এই জন্যই কি বিশ্বের জীবিত শ্রেষ্ঠ লেখক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ অন্য মহাদেশে জন্ম নিয়ে, প্রায় সারা পৃথিবী ঘুরে এসে এখানেই স্থায়ী আস্তানা গেড়েছেন? যাতে অফুরন্ত গল্পের ধারণার কোন অভাব না হয় কোনদিনই!

মার্কেজ নিশ্চয়ই এখন আর পাতাল রেলে ভ্রমণের বিলাসিতা করার সুযোগ পান না খ্যাতির ভিড়ে আর সময়ের অভাবে, তারপর তার তারুণ্যের উম্মাতাল দিনগুলোর কিছু সময় তো এই শহরেই কেটেছে, হয়ত কিছু অমর গল্পের ধারণা তার এসে ছিল এইখান থেকেই।

আমাদের হাতে সময় বরাবরের মতই অপ্রতুল, বিশেষ করে নববর্ষ উদযাপনের জন্য যেতে হবে দূরের ভেরাক্রুজ রাজ্যে, সেই তালেই চরকির মত কিছু স্থান ঘুরে সব জাদুঘর দর্শন এযাত্রা মুলতুবি রেখে যাওয়া হল অ্যাজটেকদের প্রাচীন শহর তেওতিহুয়াকান দর্শনে।

ফেরার পথে ঘটল এক আজব ঘটনা, মিলিটারির এক বিশেষ দল খামোখা বাস এক পাশে দাড় করিয়ে সবাইকে নেমে রাস্তায় দাড়াতে বলল কাঠফাটা রোদের মাঝে! একি মগের মুল্লুক নাকি! আরামের বাস থেকে নেমে রোদের মাঝখানে? হাতে অস্ত্র থাকলেই যে মানুষের বুদ্ধি লোপ পায় তাতো আর নতুন কিছু না! শাপ-শাপান্ত করতে করতে বাস থেকে নেমে অন্যদের সাথে লাইনে দাড়িয়ে থাকতে থাকতে এমন অনুসন্ধানের কারণ শুনলাম- মাদক! সারা ল্যাতিন আমেরিকা থেকে আসা টন টন মাদক মেক্সিকো হয়েই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে, তাই উত্তর সীমান্তে যেমন কড়াকড়ি তেমন দেশের মাঝেও থেকে থেকেই তল্লাশি চালানো হয় সব ধরনের যানবাহনে!

IMG_0210

বিশাল এই শহর, পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে নানা উপত্যকার মাঝে ঘটেছে নানা দিকে বিস্তার, মেক্সিকো সিটির কুখ্যাত দূষিত বাতাসের এটিও একটি কারণ, চারিদিক পাহাড় ঘেরা হওয়ায় বাতাস সহজে সঞ্চালিত হয়ে স্থান পরিবর্তন করতে পারে না, আর উপত্যকার গভীরে থেকে বাহির হওয়া মেঘের পক্ষেই মুশকিল, বাতাস তো কোন ছার! ( তবে যন্ত্র দিয়ে মেপে দেখা গেছে ঢাকার বাতাসের তুলনায় মেক্সিকো সিটির বাতাস প্রায় দূষণহীন!)

IMG_0207

একটা জিনিস খুব বেশী মাত্রায় অবাক করেছে মেক্সিকোতে তার হল ওয়্যারলেস ইন্টারনেটের প্রাচুর্য, যে কোন জায়গায়- একটু ভাল রেস্তোরাঁয়, ক্যাফেতে, সব হোটেল- হোস্টেলে এমনকি দুরপাল্লার বাসগুলোতেও! যখন গোধূলিলগ্নে চলুলা শহরের বাসে চেপে শহর ছাড়িয়ে যেতে যেতে আকাশ দখল করে রাখা বরফ ঢাকা জীবন্ত আগ্নেয়গিরি পোপোকাতেপেটেলের জ্বালামুখ দিয়ে বেরুনো ধুয়োর অবশ করা সৌন্দর্য দেখছি, পাশের আসনে ইসাইয়াস ইতিমধ্যে ইন্টারনেটের সন্ধান পেয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে!

আরও কয়েক মিনিট সূর্যবিদায়ের আগ পর্যন্ত মোহময়ী আগ্নেয়গিরিকে আগুনরঙা বরফাচ্ছাদিত অবস্থায় দেখে হাতে মিনি ল্যাপটপে মনোযোগ দিলাম। সব জায়গায় ওয়্যারলেস ইন্টারনেটের এই ব্যবহার খুবই প্রশংসনীয় এবং অবাক করা, কারণ ইউরোপে এখনো এর এতটা চল ঘটে নি, গেল বছরই জার্মানির প্রায় সব হোস্টেলেই নগদ নারায়ন বিসর্জন দিয়েই তবে নেটের ব্যবহার করা গেছে।

কয়েক ঘণ্টা পরে চলুলা শহরে প্রবেশের প্রাক্কালে ইয়াইয়াস জিজ্ঞেস করল, জানালার বাহির কি দেখতে পারছ? তাকিয়ে দেখি অনেক উঁচুতে বেশ নান্দনিক এক সফেদ ক্যাথেড্রাল কৃত্রিম আলোয় ঝকঝক করছে, মনে হচ্ছে নিজের আপন আলোয় উদ্ভাসিত। বললাম, পাহাড়ের মাথায় এক বিশাল গির্জা। সেও বলল, ঠিক আছে, কাছে গেলেই বুঝবে সেইটা আসলে কি।

এই প্রসঙ্গে আমার ফিরে যেতে হবে কয়েকশ বছর আগে যখন সাগর পাড়ি দিয়ে স্প্যানিশ লুটেরার দল হানা দিয়েছে অ্যাজটেকদের ভূমিতে, যাদের আকাশ ছোঁয়া লোভ নিয়ে কবি পাবলো নেরুদা লিখে গিয়েছেন-

এ দেশটাকে যারা হামলা চালিয়ে দখল করেছে -- দানবের মত উঁচু কর্দিলেরা পাহাড় ডিঙিয়ে, আমেরিকার রুখো কর্কশ মাটির উপর ঘোড়া চালিয়ে, ওরা খুঁজেছে, শিকার করেছে। আলু, শিম, কালো তামাক, সসেজ, গম, ডিম- যা পেয়েছে হাঙরের মত ভয়ানক খিদের আক্রোশে সমস্ত সাবাড় করে ফেলেছে- এমন মারাত্নক খিদের নজির পৃথিবীতে আর নেই- ওদের ক্ষুধার্ত মুখ দিয়ে চিবিয়ে খেয়েছে সব ধরনের ধর্ম, সব ধরনের জাত, গিলে খেয়েছে পিরামিড, শেষ করে দিয়েছে প্রাচীন দেবদেবতার মূর্তি।---- ওদের সঙ্গে আনার বস্তার মধ্যে ওদের তৈরি এরকম মূর্তিই কিছু ছিল। ওরা কোথাও কিছু রাখেনি--- জমি জিরেত চেঁছে ছুলে সাফ করে দিয়েছে-----।

সেই মূর্খ সাম্রাজ্যবাদীদের লোভী ধর্মান্ধ নেতা হারনান কর্টেয অ্যাজটেকদের পিরামিড এবং দেবদেবীর মূর্তি দেখে ক্ষোভে, উপহাসে, বিরক্তিতে ফেটে পড়ে, যদিও সে ভুলে গেছিল তাদের প্রতিটি উপাসনালয়ে এমন কিছু মূর্তিরই ভজন করা হয় সবসময় ( অবশ্য তখন বলা হয়েছিল কর্টেয মূলত নরবলি ঠেকানোর জন্য এমনটি করেছে)।

এই অসভ্যদের দ্বীনের পথে আনার জন্য ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের ধ্বজাধারী কর্টেয প্রথমেই ছলে বলে কূট কৌশলে সমস্ত বাধাপ্রদানকারীদের কচুকাটা করে ঘোষণা দিল এইখানে তারা ৩৬৫টি গির্জা স্থাপন করবে, বছরের প্রতিটি দিনের জন্য একটি! আর চলুলা শহরে স্থাপিত সমগ্র আমেরিকার সর্ববৃহৎ পিরামিডটির চূড়ার ধ্বংস করে সেখানেই বানাল এক কদর্য ক্যাথেড্রাল! সেই পিরামিডটি ছিল মিশরের খুফুর পিরামিডের পরে মানুষের তৈরি ২য় বৃহত্তম পিরামিড।

ভাবতেই ঘৃণায় সারা শরীর রি রি করে উঠল, কতখানি উম্মাদ, বিবেকহীন, নির্বোধ হলে মানুষ এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে? আসলে ইয়াইয়াস বাসের জানালা দিয়ে পাহাড়ের মাথায় অবস্থিত যে ক্যাথেড্রালটি আমাকে দেখিয়েছিল সেটিই সেই অ্যাজটেক পিরামিডের মাথায় অবস্থিত কুৎসিত ইতিহাসের সাক্ষী স্থাপত্য। ( ছবিটি বাধ্য হয়েই নেট থেকে নিতে হল, সেই পিরামিডের বিশালত্ব অনুভব করার জন্য)

Mexico.Pue.Cholula.Pyramid.03

পিরামিডটি এতই বিশাল ছিল যে প্রথম দর্শনে সবাই মনে করে ক্যাথেড্রালটি আসলে পাহাড়ের মাথাতেই অবস্থিত। আর এই অঞ্চলে কর্টেযের স্বপ্ন অনুযায়ী ঠিক ৩৬৫টি গির্জা না হলেও ২০০টি গির্জা স্থাপন করা হয় যদিও এই দুইশ গির্জাতে প্রতিনিধিত্বকারী সন্ত বা অ্যাঞ্জেলের সংখ্যা ছিল ৩৫৬টি! প্রতিদিনের জন্য একটি!

আঁধার ঘনিয়ে আসায় সেই বিশাল পিরামিডটির ছবি আর তোলা হল না, তার বদলে গাড়ী নেবার জন্য যাওয়া হয় ইয়াইয়াসের চাচার বাড়ীতে।

অল্প সময়ে বিশাল দেশটির অনেকগুলো রাজ্য দেখা হয়েছিল আমাদের, সেই দেশটি নিয়ে সেখানে অবস্থানরত অবস্থায়ই খেমোখাতায় লিখেছিলাম The Best thing about Mexico is the Mexicans! কি যে উষ্ণ হৃদয়ের আর রঙিন চরিত্রের অধিকারী এখানকার প্রতিটি মানুষ। সর্বদা প্রাণপ্রাচুর্যে মুখর, কর্মব্যস্ত আর কিছু না হলে মুখের কথার ফুলঝুরি তো আছেই! মেতে আছে সংগ্রামময় জীবনের আগামীর ফুল ফোটাবার সৃষ্টি সুখের উল্লাসে। আর আপনি কোন বাড়ীতে যাওয়া মানে গরম খাবার প্রস্তত সবসময়ই! রিপিট- সবসময়ই!

401666_10151180382000497_608590496_22829366_1490815157_n

এমন ভাবেই আমাদের ঘিরে ধরল ইয়াইয়াসের চাচা-ফুফুসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা, টেবিল ভর্তি ছিল নতুন বছরকে বরণ করার উৎসবের জন্য নানা মুখরোচক খাবারে, সেই সাথে ঈষদুষ্ণ পানীয়। নানা গালগল্প জুড়ে দিলেন তারা বাড়ীর ছেলেদের কাছে পেয়ে, হ্যাঁ, সেই কয়েক মুহূর্তের মাঝেই আমিও তাদের পরিবারের একজন হয়ে গেছি।

385802_10151126280720497_608590496_22610176_1378982525_n

তাদের মাঝে দুইজনতো পারলে তখনই হাঁড়িকুঁড়ি,ব্যাগ,বস্তা গুছিয়ে আমাদের সাথে ল্যাতিন আমেরিকা ভ্রমণে বাহির হন, দেশের বাইরে যাওয়া হয় নি তাদের, বিশেষ করে আমরা পেরু যাব শুনে হৈ হৈ করে উঠে বললেন আমাদের সমস্ত রান্না, পরিষ্কার, বাজারের দায়িত্ব তাদের! সদাহাস্যরতা এই অ্যাডভেঞ্চার মনস্কদের একজনের বয়স ৭০ ছুই ছুই, কিন্তু তাকেই দেখলাম রান্নাঘরে সবচেয়ে বেশী ব্যস্ত।

যদিও হাতে সময় খুব কম, সেই রাতেই গাড়ী নিয়ে রওনা দিতে হবে ভেরাক্রুজ রাজ্যে পুয়েবলা শহরে, তবুও ভিনদেশের অচিন আকাশের নিচে সেই পারিবারিক আড্ডা উপভোগ করে চললাম পুরো মাত্রায়—
( চলবে)


মন্তব্য

চরম উদাস এর ছবি

চলুক
আমরিকা আয়া পরেন, আমি আছি আরো অনেকদিন। আপনেরে নিয়া ভ্রমণ কইরা ভ্রমণকাহিনী লিখব বিশাল দেঁতো হাসি

তারেক অণু এর ছবি

আসব , আসব, কিন্তু আপনের কাহিনীর চরিত্র হতে , ওরে বাবা, পাগল না পেট খারাপ!

ভ্রমণ হবে, কিন্তু ভ্রমণকাহিনী হবে না!

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
তারেক অণু এর ছবি
আবুল এর ছবি

চমত্কার! হাততালি

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

শিকাগো আইসা পড়েন। হাসি

তারেক অণু এর ছবি

দাঁড়ান, আগে শিকাগো হোপ সিরিয়ালটা দেখে একটু হোপ নিই দেঁতো হাসি

আসব, একেবারে আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত ছুয়ে যাব, দেখা হবে নিশ্চয়ই।

যাযাবর এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম চলুক

তারেক অণু এর ছবি
ইয়াসির এর ছবি

আমার এবং আমার স্ত্রীর খুব জানার ইচ্ছা, আপনি আসলে কি করেন? আই মীন, জীবিকার জন্য। আমরা ছাপোষা মধ্যবিত্তরা বছরে একটা হলিডে ট্রিপ আয়োজন করতে হিমশিম খাই, সেখানে আপনি ঘুরেই চলেছেন।

লেখার কথা আর বললাম না, বরাবরের মতই, অণু রূপীয় হাততালি

তারেক অণু এর ছবি

কেন রে ভাই, ইনকাম ট্যাক্স অফিসের সাথে যোগাযোগ আছে নাকি দেঁতো হাসি

ঘুরতে ভাল লাগে তো, তাই অন্য অনেক কিছু পাশ কাটিয়েই সেটা করতে থাকি।

ইয়াসির এর ছবি

আমরাও সেরকম ধারণা করেছিলাম, ব্যাপারটা সিক্রেট কিছু একটা হবে। সাধারণত স্পাই থ্রিলারে যেটা পড়ি, আপনার কি সেরকম কোন কোড নেম আছে? না না সেটা প্রকাশ করতে বলছি না, হ্যাঁ বললেই বুঝব আছে হাসি

তারেক অণু এর ছবি
মন মাঝি এর ছবি

TA9 ? চোখ টিপি

****************************************

তারেক অণু এর ছবি

নাকি ০০৯ !

শিশিরকণা এর ছবি

মন ভরে বেড়াইতে চাইলে প্রথম বুদ্ধি হচ্ছে ভ্রমণ ব্যাবসায়ীদের সাপ্লাই করা চোথা ফলো না করা। এরা আপনার গাট থেকে মালকড়ি খসানোর বহুত ব্যাবস্থা করে রেখেছে, এবং ঘুরে ফিরে সেসব জায়গাগুলোকেই দর্শনীয় বলে প্রচার করবে। বাজেট কমাতে চাইলে একটা ভালো বুদ্ধি হইল স্থানীয় লোকের সাথে আগাম খাতির জমায় তাদের আতিথ্য গ্রহণ করা ( তারেক অনু পদ্ধতি), আর অসামাজিক মানুষ হইলে স্রেফ একটা গাড়ি আর জিপিএস জোগাড় করে আল্লাহ ভরসা বলে রওনা দেন। ভালো দেখার জায়গা যেখানে পর্‍্যটন ব্যাবসার দাপট কম।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

ইয়াসির এর ছবি

গাড়ি আর জিপিএসই ভরসা

তারেক অণু এর ছবি

চলুক প্যাকেজ ট্যুর আমি দুই চোখে দেখতে পারি না, ব্যাটারা মহা ধড়িবাজ।
জিপিএসের বদলে এখনো ম্যাপ ব্যবহার করতে ভাল লাগে, একটা আলা আকর্ষণ আছে, সেই সাথে পথ হারিয়ে অন্য কোথাও গেলেও নতুন অভিজ্ঞতা হয় দেঁতো হাসি

আর স্থানীয়দের সঙ্গে মিশতে পারাটা অপরিহার্য, পয়সা বাঁচানোর জন্য নয়, সেই জায়গাটার আসল জীবনযাত্রার সাথে পরিচিত হবার জন্য।

শিশিরকণা এর ছবি

হারানোর জন্য তো জিপিএস লাগে না। হারানো শেষ হইলে আবার কলুর বলদের জীবনে ফিরতে লাগে। প্যাকেজ ট্যুর তো দূরের কথা, আমার হাইওয়ে ধরে কোনখান থেকে কোনখানে যাইতেও ভাল্লাগে না।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

তারেক অণু এর ছবি

সত্য, তবে জার্মান হাইওয়েতে গাড়ী চালানোর জন্য আমি আছি সবসময়! স্পিড লিমিট নাই তো ! দেঁতো হাসি

শিশিরকণা এর ছবি

http://www.couchsurfing.org/ এইটা মনে হয় আপ্নের কাজে লাগবে। ফাও ফাও থাকা খাওয়ার সুযোগ, খালি একবার গিয়ে পড়তে পারলে হয়।
নাকি মার কাছে মাসীর গল্প করতেছি?

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

তারেক অণু এর ছবি

খাওয়া ফাও অ্যাঁ তাতো হবার কথা নয়! এমনিতে এটি বেশ জনপ্রিয় ইউরোপে, কিন্তু অংশ নিতে হলে নিজের বাড়ীতেও অতিথি রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

মাহমুদ.জেনেভা এর ছবি

আপনি নিজে চমৎকার মানুষ তাই সবার কাছে ভালো ব্যবহার পান
ঘুরে যান সুইজারল্যান্ড, আপনি আসলে আপনার সাথে স্কেনডিনেভিয়ার দিকে যাব

তারেক অণু এর ছবি

আসব, এর আগের বার জেনেভা বাদ গেছে, বিশেষ করে মুজতবা আলীর লেখায় জেনেভা লেকের কথা পড়ে শুধু সেখানে যেতে ইচ্ছে করত এক কালে।
আপনি সুবিধেমত চলে আসেন।

বন্দনা এর ছবি

আমার আম্রিকার ভিসা ২০১৫ পর্যন্ত আছে, আবার যাবেন নাকি মেক্সিকোর দিকে, গেলে আমারে এক্টূ ডাক দিয়েন অনুদা।যেই কাহিনী শোনালেন তাতে একলা যাবার ভরসা পাইনা।

তারেক অণু এর ছবি

কেন! নিরাপদই তো,

যত সমস্যা সবই কিন্তু উত্তরে, যাব তো বটেই, জানাব।

আনোয়ার এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি
প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

'অণু'বীক্ষণ ভাল লাগল।

বরাবরের মতই চমৎকার। চলুক

তারেক অণু এর ছবি

ইস, এই নামটা শুনতে শুনতে স্কুল জীবনে কাল ঝালাপালা হয়ে যেত রেগে টং

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

শয়তানী হাসি দেঁতো হাসি

তারেক অণু এর ছবি
সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

কত অজানারে,,,,,,,,,,,,,,,,,পড়ে দারুণ উপভোগ করলাম। এই তো বেঁচে থাকার আনন্দ!

তারেক অণু এর ছবি

আহা, কি আনন্দ এই বেঁচে থাকা।

মুস্তাফিজ এর ছবি

আমাদের এদিকটাও খারাপ না। ভ্যাঙ্কুউভার টু টরেন্টো বাই রোড হবে নাকী?

...........................
Every Picture Tells a Story

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই হবে, যে কোন গ্রীষ্মে চলে আসছি কানাডাতে, আপনি কোন শহরে আছেন মুস্তাফিজ ভাই?
আর ইউকন কিন্তু যেতেই হবে!

নজমুল আলবাব এর ছবি

মেক্সিকো সিটিতে নতুন বছরের প্রাক্কালে আমাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে বুকে টেনে নিল দুইজন, একজন আমার মেক্সিকান ভাই ইসাইয়াস সেরণা, যার সাথে দুই বছর আগে শেষ দেখা হয়েছিল এথেন্সের রাস্তায় এবং অপর জন্য অ্যাজটেক বৃষ্টি দেবতা টিলালক, মনের সুখে গোটা শহরকে ভিজিয়ে চলেছে তো চলেছেই, সেই সাথে বিটিভির সংবাদের মত আছে বজ্রসহ ঝড়!

আহারে আমার মাসুদ রানারে!!! দুইন্যার সব খানে তেনার খাতিরের লোক, ভাই বিরাদর, শালা-শালিতে ভত্তি এক্কেরে। হালায় পুরাই ফাউল।

(পরের পর্ব জলদি)

তারেক অণু এর ছবি

ভাই বিরাদর মাত্র রে ভাই, শালা-শালির শখ নাই !
মাসুদ্রানা হলে তো সব জায়গায় সোহানা, রেবেকা, রূপাতে ভর্তি থাকত! তয়, আশা আছে এখনো চোখ টিপি

নজমুল আলবাব এর ছবি

হেইয়া যে নাইক্কা তা কেমনে বুঝি??? কাজী আন্নার হোসেনের মতো আমারে লগে রাখলে সেইসব গপ বাইর হয়্যা আসতো। এখনতো মাসুদ্রানা নিজে নিজেরে গোসল দিয়া পবিত্র ঘটমার শুধু বর্ণনা দিচ্চে। তখন এরাম হইতো না। আনবার হোশেনের দয়িত্ব দিয়া পরের ভ্রমণে আমারে নিয়োগ দেওয়ার তীব্র আন্দোলন জানাইলাম।

তারেক অণু এর ছবি

শয়তানী হাসি তিষ্ঠ ক্ষণকাল !
হৈ মিয়া ভাই, এইটা কি কামসূত্রের জায়গা নাকি! এইটা ব্লগ, ম্যাক্সিমাম ভ্রমণ না হয় প্রেমের কোবতে লেখা যায় !

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

পড়লাম। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

তারেক অণু এর ছবি

আসিতেছে--

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তারেক অণু এর ছবি

ফাঁকিবাজ মন্তব্যকারীদেরও একটা তালিকা লটকানো দরকার শয়তানী হাসি

তাপস শর্মা এর ছবি

এদিকে আসার অপেক্ষায় আছি বিরাদর।

আর লেখাতো বরাবরের মতোই উত্তম ঝাঝা। হাসি

তারেক অণু এর ছবি

দেরী হবে, কিন্তু আসব! ডু ফুর্তি!

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আপনার লেখা অনেকদিন ধরে ধরে খালি পড়ে পড়ে যাই, মন্তব্য করি না হিংসায় (ব্যাটা ফাউল, ধড়িবাজ)।

এই লেখাটা আমার পড়তে খুব ভাল্লাগসে, বিশেষ করে আলবাব ভাই যেটা কপি করে দিসেন- সেটা। পড়েই মনে হচ্ছিলো স্পাই থ্রিলার। চোখ টিপি

যাক, পরের পর্বগুলার জন্যে এদ্দম রেডি আছি। দৌড়াক।

তারেক অণু এর ছবি

দৌড়াচ্ছি, মানে দৌড়ের উপরে আছি! উড়ব কবে?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

অসম্ভব ভালো লাগে ভ্রমণ কাহিনী পড়তে। সময়াভাবে অনেকসময় পড়া হয়ে ওঠেনা। এটি পড়ছি। দারুণ লাগছে। ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম, সেই সাথে দুইটা অনুরোধ করি:

১। জানি, ব্লগে হয়তো এত বিস্তারিত লেখা সম্ভব না, তাই আরেকটু বিস্তারিত করে অবশ্যই বই আকারে প্রকাশ করুন। এরকম ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছ থেকেই ভ্রমণের উপর বই হওয়া উচিত।

২। ক্যাথিড্রালের ছবিটি আপনি লিখেছেন নেট থেকে নেয়া। কিন্তু সেটি আপনি আপনার ফ্লিকারে আপলোড করেছেন। ব্যাপারটা আমার মতে ঠিক হলোনা। তাই সম্ভব হলে প্রকৃত ফটোগ্রাফারকে ক্রেডিট দিন হাসি

অনেক ধন্যবাদ।

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ দাদা,
আসলে ফ্লিকারে আপলোড করলে কি আসল ফটোগ্রাফারের নামসহ প্রকাশ করব! বাধ্য হয়ে কিছু ছবি নেট থেকে নিয়ে হচ্ছে, বিশেষ করে নানা লেখক সংক্রান্ত আর প্রাণী জগতের, কিন্তু অবশ্যই পূর্ণ কৃতিত্ব আলোকচিত্রগ্রাহকের। আরো সতর্ক হতে হবে-

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আপ্নে ভুলেও জর্মন্দেশে আইসেন না কৈলাম। বিরাট মোটা নাইলনের দড়ি ইজ কামিং বাই টাইটানিক শিপ। আপনেরে পাইলেই খাষ্টাঙ্গের পায়ার লগে বান্ধুম। তারপর, হে হে হে, আপনের ছদ্মবেশ নিয়া বালিকাদের ক্রোড়ে লুলবর্ষণ করে যাবো অবিরত, অবারিত।

সাফি এর ছবি

ভাই দঁড়ির হাদিয়ার ব্যাপারে যদি কোন সাহায্য লাগে আওয়াজ দিয়েন। ভিক্ষা কইরা হলেও দঁড়ি ফান্ডে কিছুমিছু দিব কইলাম।

তারেক অণু এর ছবি

খট্বাঙ্গের সাথে পলান্ন থাকবে কি !

ধুসর গোধূলি এর ছবি

পলান্ন থাকবে নারে পাপিষ্ঠ, কিলান্ন থাকবে। একটা কিলান্ন ফান্ড খুলে দিবো। সেখানে সবাই মুক্তহস্তে কিল দান করবে তাড়েকাণুর জন্য। সাফি হবে সেইটার সাংগঠনিক প্রয়োগকারী।

তারেক অণু এর ছবি

নাহ, জার্মান থেকে নাৎসিবাদের মৃত্যু হয় নি এখনো---
আপনই ভাগেন তো মুরব্বি, তখন তো খুব আমার বদলে রতন ভাইয়ের পক্ষ নিলেন, এখন আম, ছালা, বাগান সব ফুড়ুৎ !

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আপনে আছেন আম্রকাননের ফুড়ুৎ নিয়া। ঐদিকে যে রত্না মডুর আম্রকাননের মালীই ফুড়ুৎ, সেইটা দেখবেন না? তার বিগত দুয়েকদিনের খোমাখাতাসমগ্র খিয়াল করেন, খুউব খিয়াল করেন। টের পাইবেন।

এখন, এমতাবস্থায় ছালা নিয়া তার বাসার নিচে হাজির হৈয়া আমের হিস্যা চাইলে আমি ইটপাটকেলের শিকার হৈলেও হৈতে পারি জনাব।

তারেক অণু এর ছবি

হ, দেখছি তো, অবস্থা গুরুতর মনে হয়!

না মুরব্বী, কাসেল আরেকবার আসতেই হচ্ছে, আপনার এইরাম রসেভরা ভাষা আয়ত্ত না করতে পারলে আলী সাহেবে চ্যালা হওয়া দুরাশা !

সাফি এর ছবি

চিন্তা করে দেখলাম না লাগে দঁড়ি না লাগে কিছু। আমি আর সিমন বা দুইজনের কেউ একজন উনার উপরে বইসা পরলেই তো হইলো, নট নড়ন নট চড়ন।

তারেক অণু এর ছবি
উচ্ছলা এর ছবি

তোমার লেখা পড়লে হিংসায় আমার হৃদযন্ত্রের ক্রীয়া বন্ধ হয়ে মরার উপক্রম হয়। তাই এখন তোমার লেখা আর পড়িনা।

তারেক অণু এর ছবি

মানে মানে বলতে চাইছ আমি মানুষ খুন করতে পারি মন খারাপ

ধুসর গোধূলি এর ছবি
তারেক অণু এর ছবি

ইয়ে, মানে, তা তো একটু আধটু, মানে এই বিষয় নিয়ে কথা বলার দরকার কি!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

মেক্সিকো মানেই মনে হয় কঠিন একটা জায়গা। কঠিন মানুষদের বসবাস। আসলে কি সেরকম?

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তারেক অণু এর ছবি

কি কাকতাল! কেবল এই ব্যাপারটি নিয়ে লেখা শেষ করলাম, পরপরই দেখি আপনের মন্তব্য! পরের পর্বে আসিতেছে--

কালো কাক এর ছবি

২টা মিল পেলাম দেশের সাথে মেক্সিকোর
১। চিরকুট দিয়ে বাসে ছোট শিশুদের ভিক্ষা করা।
২। ওয়্যারলেস নেট কানেকশন।
১টা মিল পেলাম হলিউডের মুভির সাথে মেক্সিকোর
১। অপরাধপ্রবণ এলাকা
১টা মিল পেলাম তারেকণুর লেখার সাথে এই লেখার
১। একদম ফাট্টাফাট্টি চোখ টিপি

তারেক অণু এর ছবি

(গুড়)

নিলয় নন্দী এর ছবি

প্রথম ছবিটা ভাল্লাগছে। এরেই কয় বত্রিশ পাটি।
পিঠে পাখনা লাগান থাক্লে মানুষ এমন খুশিই থাকে !
দেঁতো হাসি দেঁতো হাসি দেঁতো হাসি

তারেক অণু এর ছবি

দেঁতো হাসি দাঁত কিন্তু ২৮টা ! আক্কেলগুলো ফেলে দিয়েছি হিমালয় যাবার আগে!

সৌরভ কবীর  এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

২৮ দাঁতের হয়েও যা লিখছেন, ৩২ ঠিক থাকলে না জানি কি হতো!!
খুব ভালো।

-----------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক আগের লেখা আপনার! কিন্তু পড়ে যে কী আরাম পাচ্ছি!

-এস এম নিয়াজ মাওলা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।