বছরখানেক পর দেশে। বন্ধু শাজাহানের শান্তিনগরের বাসায় ভুড়িভোজন হলো। তারপর গল্প করতে করতে বিকেল অতিক্রম। এবার ফেরার পালা। রিকশা নিলাম একটা। সেটি বারবারই আটকে যায় ট্রাফিক জ্যামে। আমি নিজের ভাবনায় নিমগ্ন থেকেই এদিক সেদিক তাকাই। পুব-পশ্চিমে উড়াউড়ি, কাছের মানুষ, দূরের মানুষ, ঢাকার রাস্তাঘাট- রাজনীতি, এগুলোই তো পরবাসী জীবনের নাইয়র ভাবনা। এরই মাঝে সামনের রিক্সা থেকে এক লোক বলে উঠলেন,
অলভিয়া বন্দরে ভিড়ছে জাহাজ।
মিউনিখ থেকে রওয়ানা হয়ে বোডেন লেক পেরিয়ে সুইজারল্যান্ড। সেখান থেকে আরও চারশো কিলোমিটার দক্ষিণে ইতালির সমুদ্রবন্দর জেনোয়া। গাড়িপথে বাড়ি থেকে সর্বসাকুল্যে ৬৩০ কিলোমিটার।
১) দেউল্লা রাজাকার ও এক জল্লাদ
প্রিয় বন্ধু রতিকান্ত, যে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পথ পাড়ি দিয়ে দেশটি স্বাধীন হয়েছে, পৃথিবীর ইতিহাসে এর নজির আর নেই। এটি আমার নয়, আমার শিক্ষকের মতিন মওলার কথা। ষাটের উপরে বয়েস তার। বুদ্ধিদীপ্ত, শানিত চেহারাটি কঠিন জীবনযাত্রা ও নির্দয় সময়ের কশাঘাতে ম্রিয়মাণ হলেও চোখদুটো উজ্জ্বল। মতিন মওলা এখানকার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। হঠাৎই কোনো কারণ না দেখিয়ে ছাটাই করা হয়ে তাকে। এখন আশে পাশের ছ
প্রিয় বন্ধু রতিকান্ত, খৎনার কাজটি কী করে হল, তার বিশদ বর্ণনা দিতে চাই না আর। এটুকুই বলতে পরি যে, আমার তেইশ বছর বয়েসে আমার জন্যে এর চাইতে অসম্মানজনক ঘটনা আজ অবধি ঘটেনি। এর মানসিক ও শারীরিক কষ্টের জের কাটাতে সপ্তাহ দুয়েক ঘরেই শুয়ে বসে কাটাতে হয়। দবির খুব দেখাশোনা করে আমার, গোলাপজান এসে রান্না করে দিয়ে যায়। এই বয়েসে খৎনার কথা শুনে মৌলবি সাহেব বেশ অবাক হয়েছিলেন। তবে দবির যে কারণ দর্শায়, সেটি শুনে আর ক
প্রিয় বন্ধু রতিকান্ত, আজ দবির একটি বিশাল বাক্স কাঁধে হাঁপাতে হাঁপাতে ঘরে আসে। আমাকে দেখে একগাল হেসে সেটি টেনেটুনে নিয়ে ঢুকে বসার ঘরে। অর্থপূর্ণ দৃষ্টিতে একবার তাকিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। বসার ঘর থেকে নানা ধরনের ঠুকঠাক শব্দ ভেসে আসে। দবিরের এই ধরনের কাণ্ডকারখানা এতদিনে চেনা হয়ে গেছে। তাই কিছু না বলে নিজের ঘরে চলে যাই। বিছানায় বসে ডুবে যাই নিজের ভাবনা চিন্তার অতল গভীরে। অনেকক্ষণ পর দবির আসে
প্রিয় বন্ধু রতিকান্ত,
এবার তোমাকে লিখতে অনেকটা দেরী করে ফেললাম। ছয়শ বছর পরের পৃথিবীতে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে বিভিন্ন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্যে এই বিরতির দরকার ছিল হয়তো। এর মাঝে অনেক ঘটনা অকস্মাৎ ঘটেছে, অনেক কিছু নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ীই করতে পেরেছি। এখানকার রীতিনীতিও কিছুটা বুঝতে শিখেছি। তারপরও বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে।
প্রিয় বন্ধু রতিকান্ত,
প্রিয় বন্ধু রতিকান্ত,
প্রিয় বন্ধু রতিকান্ত,
আমাদের অভিযান আপাততঃ সফল। কোনো সমস্যা ছাড়াই গন্তব্যস্থল অবধি পৌঁছাতে পেরেছি। সময়যানটি চলার কয়েক মিনিটের মাঝেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। জেগে ওঠে মাথায় সামান্য যন্ত্রণা অনুভব করলেও তা সহ্যের ভেতরেই আছে। কোথাও বসে বড়ো চিঠি লেখার সুযোগ নেই, তাই সামনের চিঠিতে বিস্তারিত জানাতে পারব বলে আশা রাখি।
ইতি
তোমার বন্ধু রামকুমার
------------------------