[justify]
চাকরির বয়স প্রায় এক বছর ছুঁই ছুঁই। অ্যানুয়াল ইভ্যালুয়েশন দেখে টেখে খেদিয়ে দেয় কিনা সেই টেনশনে ডেইলি দু'বার করে কোমায় যাই। হিসেব করে দেখলাম, সচলেও শেষ লেখার বছর ঘুরতে চলেছে প্রায়। ছুটির দিন, জামাই-ও বিদ্যাশ, এলা একটু হুদাই গ্যাঁজাই তাইলে, কী কন?
সাত বছর আগের এই দিন আমার জীবনটা আলো করে জীয়ন আমাদের কোলে এসেছে। এখনও কথা বলতে শিখেনি। কিন্তু এখনও সে আমাদের জানের টুকরা। তার বন্ধু নেই একজনও। কিন্তু সে আমাদের বেস্ট ফ্রেন্ড, আমাদের পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু। আমাদের এই যাত্রা দীর্ঘ, আর পথ বন্ধুর। তবু আশা হারাবার কিছু নেই। কারণ আমরা জানি, সংসার সাগরে দুঃখ তরঙ্গের খেলা আশা তার একমাত্র ভেলা।
৮ই নভেম্বর ২০১৬
বাড়ী ফিরতে ফিরতে প্রায় পৌনে আটটা, এর মধ্যেই দেখি অফিসের লীডারশিপ গ্রুপটায় লোকজন উত্তেজিত, কি না 'প্রধানমন্ত্রীজি ভাষণ দেনেওয়ালে হ্যাঁয় রাত আট বাজে টিভি পর'। ধ্যাত্তেরি, দিতে থাকুক, ভেবে গুরুত্ব দিই নি। ওবাবা সমানে টুংটাং মেসেজের ঝড়। খুলে দেখি সব ৫০০ আর ১০০০ টাকার নোট মাঝরাত থেকে বাতিল ব্লা ব্লা ব্লা। প্রথমেই মাথায় এল আর সিগনালে রবীন্দ্রসংগীত বাজানোর আদেশে আমরা কিনা পশ্চিমবঙ্গের ওনাকে মহম্মদ বিন তুঘলকের সাথে তুলনা করেছিলাম। তারপর আলমারীর ড্রয়ার হাঁটকে দেখলাম যা খুচরো আছে তাতে এক্ষুণি এটিএমে গিয়ে লাইন দিতে হবে না। যাক আপাতত নিশ্চিন্ত। শনিবারে দেখা যাবেখনে
“...অনেক দিন দেখা হবেনা, তারপর একদিন দেখা হবে।
দুজনেই দুজনকে বলবো, 'অনেক দিন দেখা হয় নি'।
এইভাবে যাবে দিনের পর দিন, বত্স়রের পর বত্স র।...”
-তারাপদ রায়
গড়পড়তা খাটো বাঙালীর চেয়ে তিনি বেশ দীর্ঘই ছিলেন। কিন্তু দেহের দৈর্ঘ্যের চেয়ে তাঁর হৃদয়ের প্রশস্ততা ছিল আরো অনেক বেশী। তিনি বিপ্লবী ছিলেন না, কিন্তু বিদ্রোহের জ্বলন্ত আগুন ছিলেন।
এমনই কোনো এক শীতের রাতে শহীদুল জহির চলে গিয়েছিলেন। আমি দেখি এই হাওয়া-বাতাসের রাতে আচমকা আজ জহির ঢুকে পড়েছেন আমার বেডরুমে। শোনাচ্ছেন এক আশ্চর্য শৃগালের কথা। কোনো-কোনো পূর্ণিমার রাতে সেই চতুর শৃগাল কেমন করে তাঁর লেখায় শব্দ জুড়ে দিয়ে যেত! কিংবা তাঁর স্বপ্নের ভেতর আটকা পড়া মানুষগুলো, যারা অতীত থেকে ভবিষ্যতে, ভবিষ্যত থেকে অতীতের দিকে তেড়ে যেতে-যেতে যে বিভ্রম তৈরী করতো সেসব কথা।
আমার এক Naysayer (কিংবা বাংলায় ন্যায় সেয়ার!) বান্ধবী আছেন। তিনি কিছুতেই এই হ্যাপি নিউ ইয়ারের উদযাপনের কারণ বুঝতে পারেন না।
"আরে তারা কি বুঝতে পারে না তাদের জীবন থেকে একটা বছর চলে যাচ্ছে, এইটা গাধা উদযাপন করার কি আছে! দরকার হলে কান্নাকাটি কর!"
(যদিও তার জন্মদিনের বেলায় এই যুক্তি খাটে না দেখা গেছে। বরং জন্মদিনে শুভেচ্ছা কম হলে গভীর মন খারাপের আভাস পাওয়া যায়!)
পুরো এক বছর পর লিখছি।
সেই উত্তাল শাহবাগের লাখো ব্যানারের একটি।