গড়পড়তা খাটো বাঙালীর চেয়ে তিনি বেশ দীর্ঘই ছিলেন। কিন্তু দেহের দৈর্ঘ্যের চেয়ে তাঁর হৃদয়ের প্রশস্ততা ছিল আরো অনেক বেশী। তিনি বিপ্লবী ছিলেন না, কিন্তু বিদ্রোহের জ্বলন্ত আগুন ছিলেন।
এমনই কোনো এক শীতের রাতে শহীদুল জহির চলে গিয়েছিলেন। আমি দেখি এই হাওয়া-বাতাসের রাতে আচমকা আজ জহির ঢুকে পড়েছেন আমার বেডরুমে। শোনাচ্ছেন এক আশ্চর্য শৃগালের কথা। কোনো-কোনো পূর্ণিমার রাতে সেই চতুর শৃগাল কেমন করে তাঁর লেখায় শব্দ জুড়ে দিয়ে যেত! কিংবা তাঁর স্বপ্নের ভেতর আটকা পড়া মানুষগুলো, যারা অতীত থেকে ভবিষ্যতে, ভবিষ্যত থেকে অতীতের দিকে তেড়ে যেতে-যেতে যে বিভ্রম তৈরী করতো সেসব কথা।
আমার এক Naysayer (কিংবা বাংলায় ন্যায় সেয়ার!) বান্ধবী আছেন। তিনি কিছুতেই এই হ্যাপি নিউ ইয়ারের উদযাপনের কারণ বুঝতে পারেন না।
"আরে তারা কি বুঝতে পারে না তাদের জীবন থেকে একটা বছর চলে যাচ্ছে, এইটা গাধা উদযাপন করার কি আছে! দরকার হলে কান্নাকাটি কর!"
(যদিও তার জন্মদিনের বেলায় এই যুক্তি খাটে না দেখা গেছে। বরং জন্মদিনে শুভেচ্ছা কম হলে গভীর মন খারাপের আভাস পাওয়া যায়!)
পুরো এক বছর পর লিখছি।
সেই উত্তাল শাহবাগের লাখো ব্যানারের একটি।
পূর্বজন্মে আমি ছিলাম শুঁয়োপোকা । বেগুন গাছের পাতার নিচে ছিল আমার বাস । ঢেঁড়সে কামড় বসিয়ে আমার রসনা তৃপ্ত হতো। অতঃপর দুর-গাছ পরিক্রমায় শ্রান্ত আমি, ঢেঁড়সেরই পাতার নিচে একটু গড়িয়ে নিতাম। দুর কোন শিমের পাতায় খুঁজে পেতাম আমার প্রাণেশ্বরী। জনান্তিকে বেজে উঠত মহা-মিলনের সুর; পাতারই বাঁশী দিয়ে - "আমি পরাণের সাথে খেলিব আজিকে মরণ-খেলা; নিশীথ-বেলা"। বোধ করি রিপু-চক্রের বাধ্য আমি লোভ করেছিলাম অন্য কোন ফলে। ধ
৩১শে মে, লে, সন্ধ্যা ৫.৩০
২৮ শে ডায়রী লিখেছি। আজ ৩১শে মে। মাঝে দুটো দিন আর আজকের অর্ধেক কেমন হুস করে বেরিয়ে গেল। হুস করে বলতে যে খুব ব্যস্ততার মধ্যে গেছে তা নয়। এই দু দিনে কী দেখলাম যেটা সবচেয়ে ছোট করে বলতে গেলে যে শব্দবন্ধ ব্যবহার করা যায়, তা হল ভয়ঙ্কর সুন্দর।
২৮ শে মে,২০১৬, কার্গিল, রাত ন’টা
তারিখটা দেখার জন্য মোবাইলের পর্দার দিকে চোখ রাখতে হল। অবশ্য এমনটাই তো হওয়ার কথা। স্বপ্নের ভ্রমণে কে আর খামখা তারিখ নিয়ে মাথা ঘামাতে যায়। এমনিতে কাজের দিনগুলোতে প্রাত্যহিকটার সওয়ারী হয়ে আসে একের পর এক তারিখ। সপ্তাহ। মাস। বছর। সাধারণত একটি তারিখ আরেকটির নির্মম পুনরাবৃত্তি হয় বেশীরভাগ সময়। শুধু হেডলাইনগুলো পালটে যায় নিজের মত করে।
সিটে বসার কিছুক্ষণের মধ্যেই চোখজোড়া ঘুমের ভারে প্রায় লেগেই যাচ্ছিল। এমন সময় সামনের সিটে রাখা হাতের দিকে নজরটা যায়। বিশেষ করে ঘড়ির দিকে। অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, সেটা নষ্ট।