কিসের দায়ভার থেকে মুক্ত চাও
দায়ভারটা কার?
দায়ক তো তুমি, আর আমি দায়গ্রস্থ
সময়ের স্রোতে ভেসে গেছে যাহা
পড়শির কানে, টুকরো টুকরো করে
চিবুচ্ছে রক্তখেকুর দল...
কিসের টানে তুমি মুক্তি দাবী করো!
অসীম আকাশে অজস্র নক্ষত্র কোথায় তুমি
তাকাবে, পালাবে কোথায়...
বরং আমার সাথে যোগসাজসে মিশে যাও
কথা বলো কবিতার সনে ভাল লাগবে
ভালবাসবে তোমাকে। দায়, প্রতিবাদ ঘৃণা
সব ঋণের দায়ভার থেকে মুক্তপাবে আর...
দুটো দুপুর ভাঁজ করা দেরাজে,
অপরাহ্নের নিঃসঙ্গতায় তাই ন্যাপথলিনের গন্ধ।
পদ্মপানায় স্থির মাছরাঙ্গা এক,
নিঃশঙক চিত্তে ঝড়ের অপেক্ষায় -
সামান্য বর্ষণেই বুকে তুলে নেবে, কদমের ঘ্রান।
দাওয়ায় ভাসে দূরাগত দীর্ঘশ্বাস
কাকে মনে করে থেমে যায়
কার গোবর লেপা দুটো হাত।
পুরোটা উঠান জুড়ে শুধু
অলস রোদের একলা কাটাকাটি।
মেঘ আর রোদের এমন লুকোচুরি
কোন এক প্রাচীন দুপুরে
কাছে এনেছিলো তাকে, ইশার...
ভূগোল বিষয়ক
ভূগোল শিখতে গিয়ে বৃত্তের ফাঁদে পড়ে জেনেছি--সব পথই ফিরে ফিরে ধাঁধাঁ। কুটিল-জটিল যা-ই লিখে ফেলি--
লিখে ফেলি--পথিক হতে গিয়ে যে পথ হারিয়েছি ক্রোধে-- আমি তার বিন্দুমাত্র ফিরে পেতে নতমস্তকে বারবার ফিরে আসি পথে।
রহস্যলতিকা
রহস্যলতিকা, আজ বসে আছো ভেবে
তোমার ঘূর্ণনরীতি কেন্দ্রাভিমুখে ছুটে আসছে বারবার
ফলত তোমার যাপনরীতি কিছুটা স্থূল--জটিলরৈখিক
তাতে ঝুলে আছে তৈলাক্ত ভ্র...
দৌড়াই দৌড়াই...
দাঁড়া নদী দাঁড়া-
নদী সরে সরে যায়
ক্লান্ত পা পুনরায় পোড়ে
নদী ডাকে আয়...
ছুঁয়ে দেখ, মেখে দেখ, চেখে দেখ-
দৌড়াই ফের-
জলের দীঘল ছায়া, ধূ ধূ গন্ধের বালি
আঙ্গুলের ফাঁক গলে পড়ে
যেন ব্যর্থ মোহর!
স্রোতের সিন্দুকে চড়ে বেলা যায়
দীর্ঘশ্বাসের দীর্ঘ দড়ি হাতে আমি তার পিছু পিছু
দূরত্ব মেপে চলি বরাবর আর
নদীর শূন্য দাগ হয়ে থাকি...
২৭/০২/১০
সিডনি, অস্ট্রেলিয়া।
কুলদা রায়
পা দুখানি লাল। পদ্মের মতো নয়--শিমুল ফুলের মতো গাঢ়। জলের মধ্যে যতবার পা দুটি উঠছে—জলের সঙ্গে গলে গলে যাচ্ছে রঙ। টকটকে। কাঁচা।
পুরনো পুকুর। বড় বড় গাছের ডাল আর পাতা ভেদ করে যতটুকু আলো রোদ পড়ে—তাতে শান্ত ছায়া নুয়ে থাকে জলের উপর। সিঁড়িতে শ্যাওলা। ছায়াদিদি এই শ্যাওলাটুকু নেড়ে চেড়ে দেখতে দেখতে জলের বর্ণে অবাক বনে গেছে। গোল গোল মৃদু ঢেউ তৈরি হচ্ছে-- ছড়িয়ে যাচ্ছে দূরে দূরে। তা...
তোর ঘাড়ের ওই
ঘন নোনা ঘামের থেকে-
হু হু ঝেঁপে
নাকে পশে কামের ঘেরাণ!
খুব যে আমার অভ্যস্ত ওটা,
বা পরিচিত-চেনা-
তেমনটি নয় বস্তুত।
তবু, ওই যে
পয়লা দেখায় চিরচেনা লেগে যাওয়া
সুলিখিত মুখের মতোই,
মুহূর্তে বুঁদ হওয়া
অচেতন মূক সে সুখের মতোই,
যেন গতজন্মা সুগভীর ভালোবাসায় কেনা!
জন্মদেনা-রায় জ্ঞানে,
মুখবোজা দায় মেনে,
পরশের পথ বুনে,
বান বিনা এ বেলা যে
ভেসে এলো প্রেম জাতিস্মর!
আর একটু তবে ঘন হ' ...
সূর্যটা কমলা রং এর হতে না হতেই তুমি প্রস্তুত।
একবার বাবাকে, একবার মা'কে আরেকবার দাদাকে
তারপর দাদু। সবার কাছে একটাই প্রশ্ন, দেরি হলো?
তোমার কোমল শরীরটা দাঁড়াতে চায় না। তোমার পিচুটি
জড়ানো চোখে জলের ঝাপটা দিতে দিতে, ফোকলা দাঁতে
ব্রাশ ঘষতে ঘষতে, তুমি জিজ্ঞেস করো, আজও কি লেইট?
তুমি চলতি পথে বার বার প্রশ্ন করো, আজও কি শুনতে হবে
লেইট মর্নিং? নাকি আজ গুড মর্নিং এখনও রয়েছে? লাল দালানে
ঢোক...
গ্রাস
খিদা নাগে বাহে, বড্ড খিদা
দিমিতরের শোকের শোধ জন্ম-জন্মান্তরে আমরা চুকাই
ভুগে, ধুকে, মরে হেজে ভস্ম সকল
শস্য নেই? আয়রে সবাই, মাটি কেটে খাই-
ওই মাটিতে সকল ফলে, দে উদরে, দলা দলা ফেল।
ভীষণ হাসে মনাটা, খিদে পেলে বুঝি আরো হাসে
দেখ না, ছোট বোনটাও যমের দুয়ারে
তবু অকাতরে হেসেই যাচ্ছে। খিদা লাগে মনা খিদা?
অই পিছনপাকের পুকুরে পানি আছে, খাগে যা।
হিহিহি...
কিংবা শস্য আছে
আছে লক্ষ সোনালী শ...
মামুদুল্লার ব্যাটিংয়ের মতই, যতই চাপাচাপা করি না কেন, ইদানিং হাত গলে সহজে কোনো শব্দ আসতে চায় না। আসল কাহিনী আড়াল করতে সিডন্স যেমন গ্রাফ থিউরির সাহায্য নেয়, আমিও আমার স্লীমবডি কবিতার আব্রু রক্ষা করার জন্য এই ফাউ প্যাচাল পারলাম।
*****************************************************
একদিন তার ছায়া মৃত সরণির মত
ম্লান হয়ে যায়
তাকে টানে চিলেকোঠা, ভাগার, পরিত্যক্ত গুদাম।
পুরোনো মোজার মত কাবার্ডের দূরতম কোণে বসে দেখ...
যদিও দৃশ্যতঃ ভীষণ মনোহর এই ভূখণ্ড
গলিত সোনার রৌদ্রালোকে;
সুশোভন নগরীর রাজপথ, উদাত্ত সবুজ ফসলের দিগন্ত,
বহমান নদীর জমিনে পাল তোলা নৌকো
সমুদ্র সৈকতের নরোম বালুতে
প্রেমিকার আঙ্গুলের ডগায় মোহময় উচ্চারণ,
মফস্বল শহরের নির্জন কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায় অপেক্ষায়
দাঁড়িয়ে থাকা উদ্গ্রীব প্রেমিকের দু’চোখ;
সদ্য স্নান করানো শিশুর সিঁথি কাটা চুলে
জননীর অপত্য স্নেহের চুম্বন ।
সুতো ছেঁড়া ঘুড়...