আলোচনা পোস্টঃ অণুগল্পের বিষয় - বিস্তৃতি এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
লিখেছেন আনোয়ার সাদাত শিমুল (তারিখ: মঙ্গল, ২২/০৪/২০০৮ - ১:৪৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সচলায়তনে অণুগল্প ই-বুক সংকলনের জন্য লেখা আহ্বানের পোস্টে একজন অতিথি লেখক প্রশ্ন করেছিলেন – “টেস্ট, ওয়ানডে'র পর যেমন টুয়েন্টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট.. "অণু গল্প" ও কি বাংলা গল্পে ওরকম নতুন কোন ধারা সংযোজনের চেষ্টা?”

খানিকপরে সচল মুজিব মেহদী বলেছেন – “...অণুগল্প চর্চার ইতিহাস বাংলাভাষায়ও খুব অল্পদিনের নয়। বনফুল (১৮৯৯-১৯৭৯)-এর বিস্তর গল্প এই ধারার। তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত গল্প 'নিমগাছ'ও কিন্তু একটা অনুগল্পই। তখন এসবকে অণুগল্প বলা হয় নি। তাঁর গল্পগুলো আয়তনে ছোট কিন্তু উপন্যাসের ব্যাপ্তি ওর মধ্যে পুরে দেয়া আছে-- ইত্যাদি বলা হতো। তাঁর একটা গল্পের নাম 'সংক্ষেপে উপন্যাস'। এটা অবশ্য আয়তনে একটু বড়ো-- দেড় পৃষ্ঠা।খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, অণুগল্পকে অন্য বিভিন্ন নামে ডাকার রেওয়াজও আছে। যেমন মোহাম্মদ রফিক একে বলেন 'উপমাগল্প', চৌধুরী জহুরুল হক বলেন 'চোঙাগল্প', হুমায়ুন মালিক বলেন 'কাব্যগল্প', জাহেদ মোতালেব বলেন 'বিচ্ছুগল্প', আমি বলি 'পুঁচকেগল্প'।"

অণুগল্প ই-বুকের প্রস্তাবক-প্রকাশক অমিত আহমেদকে জিজ্ঞেস করেছিলাম – অণুগল্পকে তিনি কীভাবে সংজ্ঞায়িত করবেন। অমিত আহমেদ ৫০০ শব্দের একটি সীমারেখা টেনেছেন। পরে ‘দিয়াশলাই’ মুখবন্ধে – ফিফটিফাইভ-ফিকশন, ড্রাবল, সিক্সটিনাইনার্স টাইপ লেখাগুলোর উল্লেখসহ সংশ্লিষ্ট সাহিত্য ইতিহাস টেনে অণুগল্পকে একটি ছাঁচে ফেলার চেষ্টা করেছেন।

লেখা আহবান পোস্টে সচল সংসারে এক সন্ন্যাসী ৫০০ শব্দে অণুগল্প সংজ্ঞার সাথে খানিক দ্বিমত ছিলেন, তিনি বলেছেন – “অণুগল্প নামটায় আমার খুব একটা সায় নেই। "অণু" শব্দটি শুনলে যে-আকারটি ভেসে ওঠে অন্তত আমার মনে, ৫০০ শব্দের গল্প সেই তুলনায় অনেক বড়ো।“

বইয়ের নাম প্রস্তাবনা নিয়ে মন্তব্যে সচল আরিফ জেবতিক বলেছেন – “অনুগল্প অনেকটা হাউয়াই মিঠাইর মতো ; খেতে কষ্ট নেই ,মুখে দিলেই অনায়াসে গলে যায় , কিন্তু স্বাদ লেগে থাকে অনেক্ষন ।“

এই অণুগল্প ই-বুক ‘দিয়াশলাই’ প্রকাশনা-সম্পাদনার সাথে জড়িত থেকে অমিত আহমেদ, কনফুসিয়াস এবং আমি পরে মেইলে – জিটকে অণুগল্প বিষয়ে নিয়ে আরো আলাপ করেছি, আমাদের মনে হয়েছে সচলায়তনে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলাপ হতে পারতো। বিশেষ করে, সংকলনের জন্য পাওয়া লেখাগুলো পড়তে গিয়ে আমরা খেয়াল করেছি লেখকরা অণুগল্প ধারণাটি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করছেন। ৫০০ শব্দের গন্ডিতে সীমিত থাকলেও বিষয়-বিস্তৃতি-গভীরতায় অনেকক্ষেত্রে গল্পগুলোকে সমগোত্রীয় করা যায় না। কয়েকজন লেখক গল্পের সাথে মেইলে আলাদা করে এমনটিও লিখে দিয়েছিলেন – ‘অণুগল্প ব্যাপারটি নিয়ে আমি এখনো স্পষ্ট নই’। এবং আমরা সংশ্লিষ্ট তিনজন এ নিরেট বাস্তবতার সাথে একমত হয়েছি।

বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়েছে – যখন সচল মুহম্মদ জুবায়ের ‘দিয়াশলাই’-এর গল্পগুলি : এক পলকে একটু দেখা পোস্টে প্রকাশিত গল্পগুলোকে পরমাণু, অণু, স্বয়ংসম্পূর্ণ, বনসাই– এরকম শ্রেণীতে ভাগ করে ‘অণুগল্প’ সংজ্ঞাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়েছেন। তিঁনি বলেছেন – “আমি যা বুঝি তা অনেকটা এরকম: পরিসরে অবশ্যই ছোটো, কিন্তু এতে থাকতে হবে পাঠককে সচকিত করে তোলার মতো কিছু একটা। থাকবে তীব্রতা ও তীক্ষ্ণতা। তীরের মতো ঋজু ও লক্ষ্যভেদী। স্ফুলিঙ্গের মতো জ্বলে ওঠা কোনো অনুভূতি। কোনো ধোঁয়াশাময় বর্ণনা নয়। হয়তো স্কেচ, কিন্তু স্পষ্ট দাগে আঁকা। অল্প কথায় অনেক কথা বলে যাওয়া, তবে পাঠককে যেন বোঝার আশা জলাঞ্জলি দিতে না হয়।“

এর বাইরে “পাঠপ্রতিক্রিয়া ।। 'অস্তিত্বের অন্ধকার'-শোহেইল মতাহির চৌধুরীর অণুগল্প” পোস্টে আমরা দেখেছি সচল হাসান মোরশেদ, মুজিব মেহদী এবং শোহেইল মতাহির চৌধুরীর কিছু মন্তব্য প্রতিমন্তব্য।

ঠিক এ অবস্থানে থেকে -
সম্মানিত সচল ব্লগার/লেখকদের কাছে জানতে চাইবো – অণুগল্প নিয়ে কে কী ভাবছেন? অণুগল্পের শরীর – দৈর্ঘ্য – প্রস্থ –পরিসীমা অথবা বিস্তৃতি-গভীরতা অথবা ‘অন্যকিছু’ কেমন হয় কিংবা হওয়া উচিত? এক কথায় – অণুগল্প নিয়ে আপনার মতামত জানান। পরিপূরক কিংবা সম্পূরক মতামতে আলাপ এগিয়ে যাক। পোস্টে নাম ধরে আমন্ত্রণ জানাতে গেলে গুরুত্বপূর্ণ নাম ভুলে যাওয়ার সম্ভবনা থাকবে ব্যাপক। তাই সবাইকে, যাঁরা 'দিয়াশলাই'য়ে লিখেছেন বা লিখেননি, সচলের সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি খোলামেলা আলাপে। বিষয় – অণুগল্প।

শুভেচ্ছা।


মন্তব্য

ধুসর গোধূলি এর ছবি
অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

যে গল্পের অর্থ বুঝতে গল্পকে অণুবীক্ষণের নিচে ফেলে অনুর্ধ ৩ দিনযাবত পর্যবেক্ষণ করতে হবে, তাকে অণুগল্প বলা যেতে পারে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

শুরুতে ৩ জন ব্লগারকে ইয়াদ করি। (আরো করা হবে, এবং সবাই এরকম ডাকাডাকি করতে পারেন চোখ টিপি )

১) সংসারে এক সন্ন্যাসী
২) সুমন চৌধুরী
৩) হিমু;

আপনারা তিনজনই অতিক্ষুদ্র গল্প লিখেন, এবং রসাত্মক হয়। মাঝে মাঝে তাতে বেদনা-বিদ্রুপও লুকায়িত থাকে।
এক্ষেত্রে প্রচলিত 'কৌতুক/চুটকি/জোকস' থেকে 'অণুগল্প'কে আপনারা কীভাবে আলাদা করে দেখবেন বা আদৌ আলাদা করার দরকার আছে কি? প্রাসঙ্গিক মতামত...

আরিফ জেবতিক এর ছবি

অণুগল্প টার্মটা যতোদূর মনে পড়ে গিয়াস ভাইই প্রথম ব্যবহার করেছিলেন "পাঠক ফোরাম" এর পাতায় । এর আগে কোথাও এই নামকরন আমার চোখে পড়ে নি । কারো কাছে তথ্য থাকলে অবগত করলে খুশী হব ।

নামকরন পরে হলেও , এ ধরনের গল্পের ব্যবহার অনেক আছে । বনফুল এই ধারায় গুরু । তার প্রায় সবগুলো গল্পই আজকের বিচারে অণূগল্প ।

আমার মনে হয় ছোটগল্পের যে সংজ্ঞা রবিঠাকুর ব্যবহার করেছেন ( শেষ হইয়াও হইল না শেষ ) সেই সংজ্ঞা অণুগল্পের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য ।
একই সাথে গল্পে টুইস্ট ব্যবহারের যে কৌশল আছে , সেটাও অণূগল্পে আশা করি ।

সাদামাটা গল্প হিসেবে অণূগল্পকে দেখতে প্রস্তুত নই ।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ধন্যবাদ, আরিফ ভাই।
আমি ভাবছিলাম - আপনার 'পাঠক ফোরাম' সম্পাদনার অভিজ্ঞতা থেকে অণুগল্প বিষয়ে আরো খানিক শুনতে চাইবো।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ফাইজলামি সংজ্ঞা: অণু নামধারী তরুণীদের দ্বারা লিখিত গল্পকে অণূগল্প বলে।
বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা: গল্পে শুধুই কেবল অণু থাকিবে... কোনও পরমাণু থাকিতে পারিবে না।
ব্যাকরণিক সংজ্ঞা: প্রশ্নপত্রে যে বাক্যগুলোর ভাব সম্প্রসারণ করিতে দেওয়া হয় সেগুলোকে অণুগল্প বলিয়া অভিহিত করা যায়।
এইটা কিন্তু হইতে পারে... কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে... এইটাই একটা গল্প হইতে পারে... সেই গল্পের সম্প্রসারণে আমরা দেখবো নায়িকা নায়করে বলতেছে আমারে ফুল আনিয়া না দিলে তোমারে বাদ দিয়া আমি করিমের লগে সম্পর্ক পাতুম... তখন নায়ক রহিম বীরদর্পে আগায়ে যায় কমল তুলিবারে... কিন্তু সেইখানে গিয়া দেখে অনেক অনেক কাঁটা... সে ভয় খায়... বার দুই চেস্টা কইরা তারপরে কয়... ধুর শালা... পারুম না... তুই যা গা করিমের লগে... আমিও তাইলে বিলকিসের লগে সম্পর্ক পাতি... সে ফুল চায় না... দুই ট্যাকা দিলেই খুশি...

তবে আমার ফারুক ওয়াসিফের অণুগল্পগুলা ভালো লাগছিলো বেশ... দিয়াশলাই এখনো পড়া হয় নাই... ভাবতেছি আজকাই পইড়ে ফেলবো।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

যা বলছেন, ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে;)
'দিয়াশলাই' পড়ে আবার কিছু বললে খুশী হবো।

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

বাকিদের লেখা পড়ে দেখি, এরপরে চোথা মারা যাবে।
আপাততঃ আপনার আহ্বান শুনতে পেয়েছি, সেটা জানান দিলাম হাসি

___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

তীরন্দাজ এর ছবি

থাকুক না অণুগল্প পাঁচশো শব্দের মাঝেই সীমাবদ্ধ! ক্ষতি কি? বাকীটা লেখকদের হাতে ছেড়ে দিলে তো হলো! আর কোন সংজ্ঞার দরকার আছে বলে আমার মনে হয়না।

আমরা অনেক সময় সংজ্ঞাবদ্ধতার বেড়াজালে নিজেদের বন্দী করে ফেলি বড্ডো সহজেই। এতে স্বকীয়তাকে বিসর্জন দিতে হয় অনেকখানি।

**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনেকাংশে একমত প্রিয় তীরু'দা।
সংজ্ঞার জটিলতায় না গিয়ে, আপনি যে 'স্বকীয়তা'র কথা বললেন, অণুগল্পের 'স্বকীয়তা' কেমন হয়/হওয়া উচিত বলে মনে করছেন?

ধন্যবাদ ।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

চলুক আলাপ আলোচনা।
মনোযোগী শ্রোতা বইসা আছি।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

অণুগল্প একপ্রকার ফাঁকিবাজি।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ঠিক।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

তড়িৎ খাবার হিসাবে বাদাম কি একেবারে ভালো লাগে না, @ বলাই'দা চোখ টিপি

রায়হান আবীর এর ছবি

আমিও খালি শুন্তেছি...
---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।

ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

অতিক্রুদ্রাকৃতির গল্প অবশ্য গত শদেড়েক বছরের মধ্যে চেখভও লিখেছেন। আরো পেছনে গেলে মুখে মুখে প্রচলিত ঈশপ,বীরবল, নাসিরুদ্দিন হোজ্জা, গোপাল ভাঁড়ের নামে প্রচলিত গল্পগুলিও এই তালিকায় পড়বে। আকার যদি মানদন্ড হয় তবে কাফকা আসেন এক নম্বরে। সমস্যা হচ্ছে এই গল্পগুলো শেষ পর্যন্ত একধরণের ছোটগল্প। ছোটগল্পের শর্ত বা গঠণ উপাদানের মধ্যেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তার বাস। আজকে যেসব গল্পকে আমরা অণুগল্প বলছি সেগুলো একধরণের ফুড়ুৎ প্রতিক্রিয়া রেখে যায়, যেটা একই সাথে ছোটগল্পে থাকাও জরুরি। সুতরাং অমিত আহমেদ যে শব্দের সীমারেখা টেনেছেন, দৃশ্যত ছোট গল্পের সাথে অণুগল্পের তার বাইরের অন্য পার্থক্য বের করা শক্ত।

তবে আমার কেমন মনে হয় যেসব গল্প শেষ হতেই, অ্যা!/ও/ধ্যাৎ/হায়হায়/হুম/কছ কি! প্রতিক্রিয়া একেবারে রিফ্লেক্স অ্যাকশানে বেরিয়ে আসে সেগুলোই মোক্ষম অণুগল্প।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অমিত আহমেদ এর ছবি

"অণুগল্প" টার্মটা গিয়াস ভাই-ই জনপ্রিয় করেছিলেন। এর আগে টার্মটা ব্যবহৃত হয়েছে কি-না আমার জানা নেই। "দিয়াশলাই" প্রকাশের আগে অণুগল্পের ধারণাটি নিয়ে সামান্য পড়ালেখা করেছিলাম। যা জেনেছি তা এখানে শেয়ার করা যায়।

আন্তর্জাতিক প্রকাশকরা ইদানিং শব্দ সংখ্যা ধরেই অণুগল্প (সর্বোচ্চ ২০০০ শব্দ, সাধারণত সর্বোচ্চ ১০০০ শব্দ), গল্প (২০০০ শব্দ থেকে সর্বোচ্চ ১০০০০ শব্দ), উপন্যাসের (১০০০০ শব্দের উপরে) ভেদ করেন।

প্রথাগত অণুগল্পকারেরা সাধারণত একটি ফরম্যাট অনুসরণ করে অণুগল্প রচনা করে থাকেন। সে ফরম্যাট অনুযায়ী হিমু ভাইয়ের "হাতিসোনা" একটি সফল অণুগল্প। তাই সে গল্পটি মাথায় রেখেই ফরম্যাটটি আলোচনা করা যাক -

১) গল্পের প্লটটা হতে হবে এমন যা সীমিত শব্দের মধ্যে প্রকাশ করা যায়। বড় প্লট অণুগল্পে আঁটানোর চেষ্টা করাটা একটা বদঅভ্যাস।

২) প্রথম প্যারাতে ছোট্ট করে পেক্ষাপট বর্ণনা। হাতিসোনায় যেমন, আমার বয়স তখন আট, ওর নয়...

৩) পেক্ষাপট বর্ণনার পর পরই কাহিনীতে চলে যাওয়া। কাহিনী শুরু হবে কোনো কিছুর মাঝ খান থেকে। হাতিসোনায় যেমন, সেদিন বিকেলেই খেলার মাঠে বুক ঠুকে এগিয়ে গেলাম। ‘হাতিসোনা, তুমি ক্রিকেট খেলবে আমাদের সাথে?’...

৪) লোকেশনের বর্ণনাটা হতে হবে পোক্ত। এক লাইনেই যেন একটা ধারণা পাওয়া যায়। এখানে ট্রিক হলো চেনা লোকেশন ব্যবহার। যেটা নিয়ে বেশি বর্ণনা দেয়া লাগবে না। যেমন হাতিসোনায়, বই কিনতে গিয়েছিলাম, পাশের ছোট্ট পেস্ট্রির দোকানটায় ও আর ওর মা বসে কফি পানে ব্যস্ত।

৫) লেখা জুড়ে এমন একটা টানটান ভাব থাকতে হবে যেন পাঠক গল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত কল্পনা করতে থাকে শেষটা কি হতে যাচ্ছে। সফল অণুগল্পকার শেষে একটা টুইস্ট রেখে দেবেন। যেনো পাঠক শেষে এসে একটা ধাক্কা খায়। এ কথাটিই বদ্দা তাঁর কমেন্টে বলেছেন, "...যেসব গল্প শেষ হতেই, অ্যা!/ও/ধ্যাৎ/হায়হায়/হুম/কছ কি! প্রতিক্রিয়া একেবারে রিফ্লেক্স অ্যাকশানে বেরিয়ে আসে..." হাতিসোনার শেষে যেমন দেখি, "মেজদাকে শুধু বাড়ি ফিরে বললাম, ‘হাতিরা ভোলে না।’"

এর পরেও কিছু ট্রিক আছে। যেমন ধরা যাক লেখায় ঐতিহাসিক কিংবা জনপ্রিয় কিছুর রেফারেন্স। এতে লেখার আকার কমে। যেমন আমি লিখলাম, "লোকটাকে দেখে সুমো পালোয়ানের কথা মনে আসে।" এই এক লাইনের লোকটার দৈহিক বর্ণনা দেয়া হয়ে গেলো।

তবে এই প্রথার বাইরেও ইদানিং অণুগল্প লেখা হচ্ছে সেটা অন্তর্জালে ব্যস্ত পাঠকদের জন্য। কাজের ফাঁকে চট করে একটা গল্প পড়ে নেয়া যায়, এটাই প্রধান কারণ। তাই সব ধরনের পাঠকদের কথা মাথায় রেখেই নানান ফরম্যাটের অণুগল্প লেখা হচ্ছে। তাদের অবস্থান তীরন্দাজ ভাইয়ের মতো, "থাকুক না অণুগল্প পাঁচশো শব্দের মাঝেই সীমাবদ্ধ! ক্ষতি কি? বাকীটা লেখকদের হাতে ছেড়ে দিলে তো হলো..." যেমন "দিয়াশলাই" থেকে মাশীদ আপুর "অণু-পরমাণু" গল্পটির উদাহরণ দেয়া যায়। উপরে বর্ণিত ফরম্যাটের বিন্দুমাত্র অনুসরণ করা না হলেও আধুনিক অণুগল্পকাররা এটাকে অণুগল্পই বলবেন।


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

হিমু এর ছবি

আমি মুশকিলেই পড়লাম। অণুগল্প লেখার ব্যর্থ চেষ্টা করে রেহাই পেয়ে যাবো ভেবেছিলাম, কিন্তু সম্পাদক শিমুল হান্টার হাতে তাড়া করেছেন আবারও।

আমার কাছে মনে হয়, গল্প যদি হয় সাতাশ বছর বয়েসী যুবতী, ছোট গল্প যদি একুশ বছরের তরুণী হয়, তাহলে অণুগল্প হচ্ছে পনেরো কি ষোলো বছরের কিশোরী (যদিও জিজ্ঞাসার উত্তরে আসে, বায়ো কি তেয়ো, মা বলে আয়ো কম)। অর্থাৎ, গল্পে যা যা কিছু পাওয়া যায়, তার সব অণুগল্পে আশা করা ঠিক নয়, আবার খেয়াল না করলে অণুগল্প বেড়ে ছোটগল্প হয়ে যায়। অণুগল্প হচ্ছে আঁটোসাঁটো, ছোটখাটো, কিন্তু ... একেবারেই অন্যরকম হাসি!


হাঁটুপানির জলদস্যু

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍সাহিত্য বিষয়ে কোনও পড়াশোনা নেই। তাই যা এখন লিখবো, তা একান্তই আমার ধারণাপ্রসূত অথবা অনুমানজাত। অজস্র অণুগল্প পড়েছি আমি। সংগ্রহেও আছে যথেষ্ট পরিমাণ।

ছোটগল্প, উপন্যাস বা কবিতার সুনির্দিষ্ট কোনও সংজ্ঞা নেই বলেই আমি জানি। থাকা সম্ভবও, বোধ হয়, নয়। তাই অণুগল্পের সংজ্ঞা নিধারণের উদ্যোগ না নেয়াটাই উচিত হবে।

নাম যেহেতু অণুগল্প, তাই আকারের ব্যাপারটা অবশ্যই উপেক্ষণীয় নয়। তবে কতো শব্দের মধ্যে তা সীমাবদ্ধ রাখতে হবে, সেই বাধ্যবাধকতার প্রসঙ্গে না গিয়ে বলি: আমার মনে হয়, অণুগল্পের আকার হওয়া উচিত এমন, যাতে একজন গড় পাঠক তা পড়ে ফেলতে পারেন তিরিশ-চল্লিশ সেকেন্ডের মধ্যে হাসি

অণুগল্পের শরীর হবে নির্মেদ, বাহুল্যবর্জিত। শেষে থাকবে হয় কোনও টুইস্ট অথবা এমন কোনও বাক্য, যা পাঠককে ভাবাবে/হাসাবে/মনোকষ্ট দেবে।

কৌতুকের সঙ্গে অণুগল্পের মূল পার্থক্য কী? অনুভব করতে পারি, বলতে পারি না। আকারে অনেক কৌতুকের চেয়ে ক্ষুদ্রতর হলেও নিচের গল্পটিকে কৌতুক বলা কি উচিত হবে?

মোটর সাইকেল

একটা মোটর সাইকেলের স্বপ্ন ছিলো ইভানত্সভের। বন্ধুরা একটা মোটর সাইকেল উপহার দিলো তাকে।

এর পর বহুদিন হা-হুতাশ করলো ইভানত্সভ। কাউকে কাছে পেলেই অভিযোগের সুরে বলতো:
- আমাকে আমার স্বপ্ন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে!

আর লেকচার দিতে পারবো না। এইসব গুরুগম্ভীর কথা বলতে গিয়ে মাথা ব্যথা শুরু হয়ে গেছে আমার। হালকা চরিত্রের মানুষের ধাতে সয় না এমন ভারি কথাবার্তা। হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি একগামী পুরুষ। একমাত্র নারীদের ভালোবাসি চোখ টিপি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

আমি এখনও বুঝছিনা ঠিক কিভাবে মার্জিন টানা যায় ,,, আপাতত পড়ি অন্যদেরটা
তবে তীরুদার কথাটা ভালো লাগলো ,,, চলতে থাকুক, দেখি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় ,,,এটাইতো সাহিত্য
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

বদ্দা, হিমু ভাই, সন্ন্যাসীজিকে অনেক ধন্যবাদ তাঁদের মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

অমিত আহমেদের সংযুক্তিও গুরুত্বপূর্ণ।

যারা শুন্তেছেন, এতোক্ষণ, এবার তাঁরা কিছু বলবেন কি?

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ব্যক্তিগতভাবে আমার পছন্দের দুটি অণুগল্প 'বউ বাটা বলসাবান', লিখেছেন নজমুল আলবাব।
আরেকটি '...অতঃপর!' - লিখেছেন নিঘাত তিথি।

এবার এ দু'জনের মতামত চাইবো।

আলবাব ভাইঃ
আপনি যদিও স্বীকার করেন না যে আপনি অণুগল্প লিখেন, আপনি বলতে চান - আপনি কেবল গল্পই লিখেন। সেটাকে অণু করতে চান না। কিন্তু পাঠক হিসাবে আমার (এবং আরো অনেকের) মনে হয় - অণুগল্প হিসাবে আপনার বেশ কিছু গল্প মানিয়ে যায়। 'দিয়াশলাই' আলোচনা পোস্টে জুবায়ের ভাইও এমনটি বলেছেন।
বউ বাটা বলসাবান, বিভিন্ন মিতভাষণ - গল্প দুটি আকারে খুবই ছোট, বিষয়ে সুগভীর। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ। আপনি আপনার এ ২টি গল্প নিয়ে সুনির্দিষ্ট মতামত দিন। পোস্টে প্রস্তাবিত অণুগল্প বিষয়ে আপনার ব্যাখ্যা কী?

_
নিঘাত তিথিঃ
আপনার '...অতঃপর!' গল্পটি অনেক বড় হতে পারতো। কিন্তু তা না করে আপনি এমন অল্প কথায় মুঠোবন্দী করলেন কেনো? অণু হওয়াতে গল্পের তেজ বেড়েছে নিঃসন্দেহে। কিন্তু - অণুগল্পে নেয়ার প্রধান কারণ কী? 'দিয়াশলাই'এ প্রকাশিত 'বন্ধু'ও পাঠক প্রিয় হয়েছে। আমার মনে হয়েছে 'বন্ধু' বড় গল্পের উপাদানে ভরপুর ছিলো। কিন্তু, এটিও আপনি অণু করেছেন।
প্রশ্নঃ - অণুগল্প লেখার সময় আপনি কী কী খেয়াল রাখেন, কৌশল কী?
অন্যের লেখা অণুগল্প পড়তে গিয়ে পাঠক হিসেবে আপনার প্রত্যাশা কী থাকে?

দু'জনকেই আগাম ধন্যবাদ।

নিঘাত তিথি এর ছবি

আমার "...অতঃপর"কে প্রিয় তালিকায় রেখে এবং মাঝেসাঝেই তার উল্লেখ করে শিমুল আমাকে বড়ই বিব্রত করেন।

শিমুলের প্রশ্নগুলোর উত্তর সামগ্রিকভাবে বলছি।
আমার কিশোরবেলার একটা বড় সময় কেটেছে "ভোরের কাগজ"এর "পাঠক ফোরাম" নিয়ে মাতামাতি করে। সেই সময়েই "অণুগল্প" শব্দটি প্রথম জানলাম, এই শব্দটি গিয়াস ভাইই প্রথম চালু করেছিলেন বলে মনে পড়ে। পাঠক ফোরামে ফিচার লেখারও খুব চল ছিলো। খুব স্বাভাবিকভাবে ভীষন প্রভাবিত ছিলাম "পাঠক ফোরাম" এবং পরে "বন্ধুসভা"য়। তো যখন লিখালিখির খানিক সাহস করলাম, দেখা গেলো সেই প্রভাব ভালোভাবেই আছর করলো। লিখতে গেলে অণুই হয়, বড় হয় না। এইভাবে শুরু।
"...অতঃপর" লিখেছিলাম ২০০২ সালে নিজেদের একটা পত্রিকার (যুযুধান) জন্য। গল্পের কোন সীমাবদ্ধ আকার ছিলো না, তবু সেই অণুগল্পই লিখে ফেললাম। তবে আমার অণুগল্প লেখার পেছনে একটা ব্যাপার কাজ করতো যে খুব টানটান বা তীব্র কিছু লিখতে চাইতাম কেন যেন। পরপর কয়েকটা গল্পে এবং অন্য যাই লিখতে গিয়েছি তাতে এমন হয়েছে যে, আমি অনেক কিছু লিখে ফেলেছি, তারপর ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থেকে সেটাকে কেটেছেটে এমন কিছু করতে চেয়েছি যাতে বক্তব্যটা থাকে কিন্তু বাহুল্যটা বাদে। "...অতঃপর"-এ ওই সময়কার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন ভালোই প্রভাব ফেলেছে, যেজন্য এত বাদ দিয়েও অনেক বাহুল্য থেকে গেছে, আরো টানটান হতে পারতো।

তো সামান্য যা কিছু লিখি তাতে এই "অল্প কথায় বেশি বলা" ভাবধারায় আমি খুব বেশি আচ্ছন্ন হয়ে আছি এখনও। তবে এটাকে একটা সময় পর্যন্ত খুব ভালো কিছু মনে করলেও এই মুহুর্তে নিজের খুব বড় ধরনের সীমাবদ্ধতা মনে হয়। সাহিত্যের একটি অন্যতম বড় সৌন্দর্য সম্ভবত স্বার্থক-সুন্দর বর্ণনা, গল্প বা উপন্যাস এবং তার লেখক, এই সব কিছুকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যায় যা। কাছের মানুষ কনফুসিয়াসের বর্ণনা আমি মুগ্ধ হয়ে পড়ি। মনে হয় শুধু কাটছাট করলেই দারুণ কিছু হয়ে যায় না, সেটা একটা ধরণ; তবে তার বাইরে আরো অনেক বড় সৌন্দর্য আছে...এইসব ভেবে অনেক দিন থেকেই ঠিক করে আছি, এরপরে বড় কিছু লিখার চেষ্টা করব। ঠিক সেই সময়েই অমিত-শিমুল-কনফুসিয়াসের "অণুগল্প" প্রোজেক্টে লেখা আহবান পেয়ে মনে হলো অণু দেখি আমাকে ছাড়ে না। "অণুগল্প"র প্রতি পুরনো ভালোবাসা থেকেই আরেকবার চেষ্টা করেছি, তার ফলশ্রুতিতেই "বন্ধু"। শিমুলের মতে "বন্ধু" বড় গল্পের উপাদানে ভরা ছিলো, যদিও আমার মূল বক্তব্য ছিলো গল্পের শেষ প্যারাটি। সেইটুকু বলার জন্যই বাকি অংশের অবতাড়না।

নিজে লিখতে গিয়ে যা ভাবি অন্যের "অণুগল্প" পড়তে গিয়েও প্রথমেই তাই আশা করি, যেন কাঠামোগতভাবে একটি গল্প হয়, অণু করতে গিয়ে যেন "না-গল্প" হয়ে না যায়! এটিই বড় প্রত্যাশা, যেন অণুগল্পের অপব্যবহার না হয়। তারপরে একেকজন একেকভাবে লিখেন নিজস্বতায়। তবে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে যেমন, একটি বড়গল্পকে যেন জোর করে অণুতে আঁটানো না হয়, এটা গল্পের সর্বনাশ করে দিতে পারে। অণুগল্পে একটা আলাদা চমক থাকতেই হবে বলে অনেকেই মনে করেন, আমার কেন যেন এরকম কোন আশা নেই। বরং অল্পে যা বলা হলো তা তীব্র হলেই আমি খুশি।
এই তো।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

শেখ জলিল এর ছবি

বিখ্যাত বিখ্যাত সব অণুগল্প লেখিয়েদের মন্তব্য থেকে খুঁটিনাটি অনেক কিছু জানলাম। ভবিষ্যতে আমাকে অণুগল্প লেখায় উৎসাহিত করবে।
ধন্যবাদ শিমুল।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আপনি কিছু বলবেন না, জলিল ভাই!

নজমুল আলবাব এর ছবি

গল্প, যা আমি লিখার চেষ্টা করি ( যদিবা হয়) তা নিয়ে ভাবনা, ভঙ্গি এবং অন্যান্য মতামত একাধিকবার প্রকাশ করেছি ইতিমধ্যে। শেষবার বলেছি জুবায়ের ভাইয়ের পোস্টে

বউ বাটা বলসাবান আমার নিজেরও প্রিয় একটা গল্প। হ্যা গল্প। অনুগল্প নয়। এ নিয়েও নতুন কিছু বলার নাই। আস্তা একটা পোস্টই আছে, সেই পোস্টেই বিভিন্ন মিতভাষণ নিয়াও কথা বলেছি। এখন আবার বলতে বসলে চর্বিত চর্বণ হবে। অন্যে এমন করলে কষে গাইল দেই। সুতরাং আমি সেই কাজ করব কেন?

আমি বরং গল্প অনুগল্প এই টার্মে থাকি।

কিছু একটা বলতে চাই। সেটা মুখে হতে পারে, লিখেও হতে পারে। এখন আমি যা বলতে চাই তা কিভাবে বলব? হতে পারে গদ্যে। গদ্য মানে গল্পই ধরলাম। আমি একটা গল্প বলতে চাই তাহলে। গল্পটা হল একটা পরিবারের। গল্পটা একজন তরুণী বধুর। এইসবই আটপৌরে পরিচিত উপাদান। সেই মেয়েটার বিয়েতে তার বাবা যৌতুক দিতে পারেনি ভাল করে। নতুন সংসার তাকে মাপছে আসবাবের মাপে। এই বিষয়গুলোত খুবই পরিচিত আমাদের কাছে। যারা বাংলা পড়েন তাদের কাছে। আর আমি লিখছি বাংলায়। এই অঞ্চলের মানুষ টে বল্লে টেংরা বুঝে ফেলে। সুতরাং তাকে কেন বলে দিতে হবে মেয়েটা বড় কষ্টে আছে। সেটাতো সে বুঝেই যাচ্ছে। এখন এই সময়ে এসে, একটি মেয়ে কি চেষ্টা করেতে পারেনা এতসব ঝামেলা নিয়েও সংসারে মানিয়ে নিতে... করবে মনে হয়। মেয়েরা চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের সে চেষ্টা সবসময়ই আলোর মুখ খুঁজে পায়না। পত্রিকা খুললেই খবর পাওয়া যায়। যৌতুক কিভাবে কেড়ে নেয় একেকটা প্রাণ। কিভাবে ভেঙে যায় সংসার। এই যায়গায় এসে নজমুল আলবাব আর এগুতে পারেনা। সে ভয়ানক দুর্বল চিত্তের মানুষ। চমৎকার এক তরুনীকে মেরে ফেলতে কিংবা তার সংসার ভেঙে দিতে সে ব্যার্থ হয়। তবে যেহেতু পাঠকের জন্য লেখাটা দাড় করানো হয়, তখন তাকে কিছুটা দায় দিয়ে দিতেই হয়। বাবা পাঠক, জননী আমার, বন্ধুগণ আপনারা যা ইচ্ছা তাই করুণ। মেয়েটারে মারুন, কাটুন নয়ত তাড়িয়ে দিন আমার কিচ্ছু করার নাই। আমি সরে যাই নিরাপদ দুরত্বে। তবে এও বলে যাই মেয়েটারে বাঁচাতে হলে আপনাকে প্রথমেই বাবার জুতা, মায়ের সাবানের সমান গুরুত্ব যাতে মেয়েটা পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে! এখন যদি নারিবাদীরা সাবানের লগে মানুষের তুলনায় ক্ষেপে যান আমার কিছু করার নাই। যেদিন আপনারা সংস্কার করতে পারবেন এইসব ধারণার সেদিন আলবাব, শিমুল এবং তার মতো নিরিহ কলমবাজেরা আর এভাবে তুলনা করবেনা কথা দিলাম। তো এই পর্যায়ে থেমে গেলাম বলে যদি গল্পটারে কেউ অনু ট্যাগ লাগিয়ে দেয়, দিক। আমার আপত্তি নাই। গল্পটা বুঝতে পারছেনতো আপনি? ট্যাগ লাগানো মানুষ, আমি কিন্তু চাই আপনি গল্পটা বুঝুন। আর ফাঁকে বলি আপনার ট্যাগ কিন্তু আমি মানিনা। আমি গল্প লিখেছি। সেটা পরমানু, অনু কিংবা বড় কিছুই নয়। শুধুই গল্প। বেয়াড়া আমারে বলতেই পারেন। আব্বা সবসময় বলে আমি গোয়ার। শব্দটা এখন ভোতা হয়ে গেছে আমার কাছে হাসি

আমি বাচালের মত বকে যাচ্ছি খেয়াল করছেন আপনারা? কিন্তু গল্পগুলোতে এভাবে বলিনা কেন? এই প্রশ্ন আসতেই পারে। ভদ্র সচলেরা আমার, কি করব বলেন, আমি লিখতে চাই কিন্তু পারিনা। শব্দ আমার চেয়ে শত মাইল দুরে পালিয়ে যায়। এমন সময় হয়ত অন্যরা শব্দের পেছন পেছন দৌড়ে দরকার হলে চীন দেশেও যেতে পারেন। কিন্তু আমি পারিনা। আমার এত দম নাই। আমার ৮০ সিসি মোটর সাইকেলেরও নাই। তাই আমার গল্প থেমে যায়। পরিচিত শব্দ, যারা সবসময় আমাকে ঘিরে থাকে তাদেরকে আর তাদের ডাকে সাড়া দেয় যেসব আড়ম্বরহীণ দুরাগত শব্দ আমি তাদের নিয়েই খেলি, গল্পের ঘর সংসার গড়ি।

শব্দ সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়টাও আমার কাছে আরোপিত কিছু একটা মনে হয়। অমিত আহমেদ তার মন্তব্যে দেখলাম গল্প উপন্যাসের আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণী শব্দ সংখ্যা উল্লেখ করে দিয়েছেন।

আমি অংক করতে পারিনা। একবার অংক পরীক্ষায় ১০০ এর মাঝে ০৬ পেয়েছিলাম। সারা বছরে একবারই অংক পরীক্ষায় পাশ করতাম। সেটা বার্ষিক পরীক্ষায়। ৩৫ থেকে ৪৫ এর মধ্যে থাকতো আমার নাম্বার। আমার জীবনের সবচে আনন্দের মূহুর্তের একটা হলো মেট্রিক পরীক্ষায় অংক পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়া। আমি যখন বুঝলাম পাশ করে ফেলব। কি শান্তি। আর কোনদিন অংক পরীক্ষা দিতে হবেনা এই কথা ভেবে আমি স্কুলের মাঠে নেচেছি। তিন সত্যি দিয়ে বলছি, আমি নেঁচেছি। নাঁচ দেখে স্কুলের স্যাররা হেসেছেন। এখন সেই আমাকে যদি কেউ বলে শব্দ গুনে গুনে লিখতে হবে তাইলেতো বিপদ। ভাই আমি মাপ চাই। এই জীবনে আমার আর লেখক হওয়া হবেনা মন খারাপ

শব্দের এই হিসাব মানলে রবীন্দ্রনাথের চার অধ্যায় 'র কি হবে? লাল সালু? কিংবা বাঁকা জল। ইমদাদুল হক মিলনের এই ৪৮ পাতার বইটাই যে আমার সবচে প্রিয় হয়ে আছে একযুগ ধরে। জানিনা বাবা, ভাবতে ভাল লাগছেনা।

আচ্ছা কবিতায়তো মহাকাব্য বলে একটা বিষয় আছে। গল্পে আছে অনু, পরমানু, মাইক্রোস্কোপিক, বড় গল্প নানা টার্ম। উপন্যাসেও কি এমন আছে। থাকলে খোয়বনামা কি মহাপোন্যাস তকমা পাবে? কিংবা প্রথম আলো? আলোচনা ভিন্নখাতে নিতাছিনা কিন্তু...

ধন্যবাদ সবাইকে।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

নিঘাত তিথি, আলবাব ভাই - দু'জনকেই ধন্যবাদ।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা তাঁদের মন্তব্যে এসেছে। সম্পূরক প্রসঙ্গে আরো কথা আসতে পারে।

আপাততঃ কনফুসিয়াসের কাছে প্রশ্ন রাখছি -
অণুগল্প বিষয়ে আমার ধারণা ছিলো - ছোট/বড়্গল্প বিষয়-বিন্যাসে আরো ছোট হয়ে আসবে, যেমন ছোট গল্পের প্রতি প্যারা অণুগল্পে এসে এক লাইন হয়ে যাবে। বক্তব্য থাকবে একই রকম। পাঠকের কাছে একই ইমেজ যাবে, তবে ক্ষেত্র বিশেষে পাঠকের স্বাধীনতা থাকবে নিজের মতো করে গল্পের পরিণতি বা অন্য বিষয় সাজিয়ে নেয়ার।
কিন্তু আপনার 'বনসাই' পড়ে মনে হয়েছে - ছোট/বড় গল্পের হঠাৎ এক ঝলক কিংবা এক অংশ এসে অণুগল্প হয়ে উঠতে পারে। এর আগে অনেক কিছু হয়তো ঘটে যেটা অণুগল্পে এসে পাঠক জানতে আগ্রহী হয় না। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?
সাথে অন্যান্য প্রসঙ্গে - - -

তারেক এর ছবি

অফলাইনে নিয়মিত পড়ছি এ পোস্ট। পোস্ট রিলেটেড কিছু বলতে গেলে নিশ্চিত ভজঘট পাকিয়ে ফেলবো। আমার এ বিষয়ে আসলেই কোন ধারণা নাই। তারচেয়ে প্রিয় লেখকদের দৃষ্টিভঙ্গি পড়তেই ভাল্লাগছে বেশী। চলুক। দেখি কনফুদা কি বলেন হাসি
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

কনফুসিয়াস এর ছবি

আমি যেটা বুঝলাম, শিমুল মুশকিলে ফেলতে খুব ওস্তাদ। সংকলনে দিতে হবে বলে অনেক কসরত করে একটা অণুগল্প লিখবার চেষ্টা করেছি। সম্পাদকদের শ্যেন দৃষ্টি এড়িয়ে সেটা দিয়াশলাইয়ে ঠাঁই পেল দেখেই আমি খুশি। কিন্তু এখন যদি আবার সেটা নিয়ে আলাপ চালাতে হয়, তবে তো ধরা খেয়ে যাবো!
অণুগল্প, আসলে, ঠিক আমার কম্মো নয়। আমি বেশী কথার মানুষ, খুব অল্প করে গুছিয়ে কিছু বলতে পারি না, কোন সাধারণ ছোট কথা বলতে গেলেও আমি সাতকান্ড রামায়ন ফেঁদে বসি। এ কারণে অণুগল্পের কলেবরে একটা গল্পকে ঠিকঠাক আঁটানো আমার জন্যে বেশ কষ্টসাধ্য।
অণুগল্প বলতে কি বোঝায়- এটা নিয়ে এর মধ্যে অনেকেই নানা অভিমত দিয়েছেন। আমার আর নতুন কিছু যোগ করার নেই। কিন্তু আমি ঠিক এই কথায় একমত নই যে, অণুগল্পে বড় গল্পই বিষয় বিন্যাসে ছোট হয়ে আসবে অথবা প্রতিটা প্যারার বক্তব্য এক লাইনে চলে আসবে। আমার বরং মনে হয়, অণুগল্প হবে একটা বিদ্যুতচমকের মতন একটা কিছু। খুব ছোট একটা জায়গায় হঠাৎ করে তীব্র আলো ফেলার মত। একটা গল্পের ছোট একটা অংশ, যেখানে পূর্ণাংগ কোন গল্পের আমেজ থাকবে না, শুরু বা শেষ থাকবে না, পড়তে পড়তে হুট করে গল্পটা চোখের সামনে থেকে নেই হয়ে যাবে, আর তখন বদ্দার কথামতন, মুখ থেকে একাকখরী কোন অনুভুতি বেরিয়ে আসবে!
বনসাই- আমার মতে- অণুগল্প হিসেবে একেবারেই সফল নয়। আমার নিজের ফর্মূলা অনুযায়ীও এটা ঠিক সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। যেটা চাইছিলাম, শুরুহীন-শেষহীন একটা গল্প, সেটা আমি করতে পারিনি। গল্পের মাঝে বর্ণনার মতন একটা আমেজ চলে এসেছে আপনাতেই, যেটা পাঠকের ভাবনাকে এই গল্পের পূর্বের ও পরের ঘটনার কাছে নিয়ে যাবে, এটা আমার মতে- অণুগল্পে হওয়া একেবারেই উচিৎ নয়।
অণুগল্পের ভবিষ্যত বেশ ভাল, দিয়াশলাই বেরুবার পরে সচলায়তনে পাঠক এবং লেখকদের উচছাস সেরকমই আভাস দিয়েছে। তো পাঠকগ্রুপে বসে আমি ভবিষ্যতেও অনুগল্পের অনুরাগী হয়ে থাকবো, সন্দেহ নেই। কিন্তু ২য় অর্থ্যাৎ লেখকগ্রুপে থেকে আমি তার জন্যে- সম্ভবত একরাশ শুভকামনার বাইরে তেমন কোন অবদান রাখতে পারবো না।
শিমুলকে এই আলচনা পোস্টের জন্যে সাধুবাদ জানাই।

-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

প্রিয় কনফু, টু দ্য পয়েন্ট আলাপের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
নোট রাখলামঃ

অণুগল্প হবে একটা বিদ্যুতচমকের মতন একটা কিছু।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

যদি ইতিমধ্যে এই আলোচনা তামাদি না হয়ে যায়, তাহলে আমার দু পয়সা দু যোগ করি সবিনয়েঃ
বড়কর্তা তো ছোটগল্পের সার্বজনীন সংজ্ঞা দিয়ে ফেলেছেন বহু আগে- 'হইয়াও হইলোনা শেষ' । তাহলে অনুগল্পের সংজ্ঞায়িত রূপ কি হতে পারে? এমন না যে তখনো অনুগল্পে তখনো লেখা হয়নি । কিন্তু বড়কর্তা বা তার সমসাময়িক সময়ে আলাদা করে সম্ভবতঃ 'অনুগল্প ' ক্যাটাগরাইজ করা হয়নি ।
এখন আমরা দেখি,বনফুলের অনেক গল্পই উৎকৃষ্ট অনুগল্প,মানে আমরা এখনকার পাঠকরা যে গল্পকে অণুগল্প বলছি সেসব নহু আগেই লেখা হয়েছে ।
মনে পড়ে ভোরের কাগজ পাঠক ফোরামের পাতায় গিয়াস ভাই ই প্রথম এই টার্ম ব্যবহার করেছিলেন । এরকম আরো কিছু মজার টার্ম ছিলো তখন -এক দু লাইনের পাঠকদের চিঠিকে বলা হতো-'ঊনপত্র'

মুলধারার সাহিত্যে যদি কোনদিন 'অণুগল্প' টার্ম প্রতিষ্ঠা পায় সেদিন যেনো গিয়াস আহমদের নামটা বিস্মৃত না হয় ।
পাঠক ফোরাম ও পরের বন্ধুসভার পাতায় গিয়াস ভাইয়ের সম্পাদনায় সাপ্তাহিক যেসব ফিচার প্রকাশিত হতো, এখন বুঝতে পারি তার মধ্যে অনেকগুলোতেই উৎকৃষ্ট অণুগল্পের মালমশলা ছিলো । আফসোস, সেই সময়ের নিজের লেখাগুলো এবং বন্ধুদের লেখাগুলোকে ও বড় অবহেলায় হারিয়ে ফেলেছি ( কি আর করা তখন তো আর সচলায়তন ছিলোনা!) । আফরিন আহমেদ,শর্মিষ্ঠা বিশ্বাস,সুমন সুপান্থ, সুমন্ত আসলাম, ফারহানা শাম্মু, নজমুল আলবাব এদের প্রায় সকলের লেখাগুলোই এ পর্যায়ের ছিলো ।

অনেক আলোচনা,চুলচেরা বিশ্লেষন হয়ে গেছে । যদি পুনরাবৃত্তি হয় ক্ষমাপ্রার্থী ।
আমি সহজভাবে অণুগল্প বলতে আকারে ছোট(নির্দিষ্ট কত শব্দ? এটাকে ফ্লেক্সিবল রাখতে চাই) সেই গল্পকে বুঝি যা ছোট বলেই খন্ডিত কিংবা আংশিকঅসম্পুর্ন নয় , অণুর মধ্যে যেমন পদার্থের সকল বৈশিষ্ট বিদ্যমান তেমনি অণুগল্পের মাঝে ও থাকবে পুর্ণগল্পের পুরো শক্তিমত্তা সেই সাথে বিস্তারের সমুহ সম্ভাবনা ।

'মায়িশার আম্মার সাথে দায়িত্বশীল দুপুর'
-সংকলনভুক্ত এই গল্পে আমার কিছু ফাঁকিবাজী আছে । এটা আলাদা কোন গল্প নয় । আমার যে উপন্যাস গত বইমেলায় প্রকাশ হবার কথা ছিলো সেই 'শমন শেকল ডানা'র একটি অংশ মাত্র । নিজের লেখা উপন্যাস লেখার সময় তীব্র আবেগ এবং ঝোঁকের বশে লিখেছি,প্রকাশ না হওয়ার অবসরে পড়ছি এবার সময় করে সমালোচকের ভঙ্গীতে ।
পড়তে গিয়ে দেখলাম কথিত উপন্যাস কিংবা বড়গল্পের মধ্যে আসলে কয়েকটি গল্প আছে । এই গল্পগুলো প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা সম্পুর্ন গল্প হয়ে উঠার সম্ভাবনা আছে আবার সবগুলো পরস্পর সন্নিহিত হয়ে আরেকটা নিজস্ব গল্প ও হয়ে যেতে পারে ।

এটা হতে পারে অনেকটা অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং এর মতো । প্রত্যেকটা আলাদা আলাদা অবজেক্ট, প্রত্যেকের সোল আইডিন্টিটি , এট্রিবিউট থাকবে, মেইন ফাংশন দিয়ে কল করে আবার আলাদা স্বয়ংসম্পূর্ন প্রোগ্রাম ও হতে পারে ।

জুবায়ের ভাই তার বিখ্যাত আলোচনা পোষ্টে প্রতিটি গল্প নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষন করেছেন । আলাদা করে ধন্যবাদ জানানো হয়নি । এইখানে জানিয়ে গেলাম ।

আর আনোয়ার সাদাত শিমুলের প্রতি কৃতজ্ঞতা, দায়িত্ব নিয়ে এই আলোচনা শুরু ও সঞ্চালনের জন্য ।
শিমুল শুরু না করলে নিঃসন্দেহে আমরা সাধারন পাঠকেরা গুরুত্বপুর্ন মন্তব্যগুলো থেকে বঞ্চিত হতাম ।

----x----
...অথবা সময় ছিলো;আমারই অস্তিত্ব ছিলোনা

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

স্বপ্ন দেখবো বলে দুহাত বাড়িয়ে ব্লগে কখনো হতাশ হইনি। অগ্রজ সচলরা আমার শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। সবিনয় কৃতজ্ঞতা প্রিয় মোরশেদ ভাই, আপনার কাছ থেকে এরকম কিছু কথাই আশা করছিলাম। আলোচনা তামাদি হয়নি, আপনার মন্তব্যে হীরন্ময় হয়েছে আরো। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

শেষে সবার প্রতি শুভেচ্ছা-ভালোবাসা, আপনাদের মতামত-অবস্থান বিশ্লেষণে অণুগল্প নিয়ে উপকারী কিছু কথা এ পোস্টে উঠে এসেছে। সবাই ভালো থাকুন!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।