ইদ্রাকপুর কেল্লা : কালের সাক্ষী

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ১৪/১১/২০১১ - ৩:৫৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইদ্রাকপুর কেল্লা মুন্সীগন্জ শহরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মোঘল স্থাপত্য। বাংলার সুবাদার ও সেনাপতি মীর জুমলা ১৬৬০ খ্রীস্টাব্দে বর্তমানে মুন্সীগন্জ জেলা সদরে ইছামতি নদীর পশ্চিম তীরে ইদ্রাকপুর নামক স্থানে এই দুর্গটি নির্মান করেন। তৎকালীন মগ জলদস্যু ও পর্তুগিজ আক্রমণের হাত থেকে ঢাকা ও নারায়নগন্জ সহ সমগ্র এলাকাকে রক্ষা করার জন্য ইদ্রাকপুর কেল্লা নির্মিত হয়। ইদ্রাকপুর কেল্লা তৈরিতে ৮২ মি. * ৭২ মি. আয়তাকার ইট ব্যবহার করা হয়েছে।

SDC15302

SDC15309

সুরঙ্গ পথে ঢাকার লালবাগ দুর্গের সাথে এই দুর্গের যোগাযোগ ছিল বলে একটি জনশ্রুতি প্রচলিত আছে। সুউচ্চ প্রাচীর বিশিষ্ট এই দুর্গের প্রত্যেক কোনায় রয়েছে একটি বৃত্তাকার বেষ্টনী। দূর্গাভ্যন্তর থেকে শত্রুর প্রতি গোলা নিক্ষেপের জন্য প্রাচীরের মধ্যে অসংখ্য চতুষ্কোনাকার ফোঁকর রয়েছে।

SDC15258

একমাত্র খিলানাকার দরজাটির অবস্থান উত্তর দিকে। মূল প্রাচীরের পূর্ব দেয়ালের মাঝামাঝি অংশে ৩৩ মিটার ব্যাসের একটি গোলাকার উঁচু মঞ্চ রয়েছে। দুর থেকে শত্রুর চলাচল পর্যবেক্ষনের জন্য প্রায় প্রতি দূর্গে এই ব্যবস্থা ছিল। এই মঞ্চকে ঘিরে আর একটি অতিরিক্ত প্রাচীর মূল দেয়ালের সাথে মিলিত হয়েছে। দূর্গের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সূদৃঢ় করার জন্য এটি নির্মিত হয়েছিল।

SDC15297

SDC15251

SDC15253

SDC15264

SDC15282

SDC15285

SDC15288

মোঘল স্থাপত্যের একটি অনন্য কীর্তি হিসেবে ইদ্রাকপুর দূর্গটি ১৯০৯ সালে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষিত হয়। মুঘল স্থাপত্যশৈলীর নির্দশন ইদ্রাকপুর কেল্লার বেহাল দশা বিরাজ করছে। এর জৈলুস এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। বেহাল দশার কারণে এটি দেখতে এসে মানুষ হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে।

SDC15264

SDC15295

এটিকে পযর্টন কেন্দ্রের আওতায় নেয়া হয়েছে। কিন্তু পযর্টন আকর্ষনের জন্য কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা এখানে নেয়া হয়নি। এর ফলে এটি ভেতরে নোংরা অবস্থা বিরাজ করছে। অযত্নে ও অবহেলার কারণে প্রাচীন এ কেল্লাটির ভেতরে চতুর্থ শ্রেণীর কিছু কর্মচারী বসবাস করছে। এখানে ঠাই নিয়েছে আবার এনএসআইর অফিস। কেল্লার ছাদে অবস্থান করছে একটি বড় ঘর। এর চালা বর্তমানে খুলে খুলে পড়ছে। কিন্তু এর মেরামতে সরকারের কোন নজর নেই।

SDC15274

এইভাবেই কি হারিয়ে যাবে আমাদের ইতিহাস??

তথ্য সূত্র:
উইকিপিডিয়া
মুন্সিগঞ্জের খবর

আমার অন্যান্যঃ
রাঙ্গামাটির পথে লো...
বান্দরবন-১: নীলগিরির পথে লো...
বান্দরবন-২: নীলাচল ও অন্যান্য..
অবশেষে কক্সবাজার...

লালকমল


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ফটোডকু ভালো হয়েছে।

লালকমল এর ছবি

ধন্যবাদ।

তারেক অণু এর ছবি

এমন পোস্ট আরো চাই, সারা দেশের আনাচে কানাচে থেকে।।

লালকমল এর ছবি

হ ভাই। আমরা দিমু দেশের আনাচ কানাচ আর আপ্নে দিবেন বিদেশের আনাচ কানাচ চোখ টিপি

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

সুন্দর


_____________________
Give Her Freedom!

লালকমল এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

নিটোল এর ছবি

পোস্ট ভালো পাইলাম। হাসি

_________________
[খোমাখাতা]

লালকমল এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

উচ্ছলা এর ছবি
লালকমল এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

কালো কাক এর ছবি

ভাল লাগ্লো।
কিন্তু ঢাকা থেকে কিভাবে যেতে হয় , পরিবেশ কেমন (মানে সিকিউরিটির কোন সমস্যা আছে কীনা), একদিনে ঘুরে আসা সম্ভব কীনা এগুলো বললে উপকার হতো।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

কেল্লাটা একদম মুন্সীগঞ্জ শহরের মাঝেই। ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জ যাবার জন্যে নারায়নগঞ্জ হয়ে যেতে পারেন, নতুন চীন-মৈত্রী সেতু পেরিয়ে তাহলে শহরে ঢুকবেন। তবে আমার মনে হয় ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ে ধরে যাওয়া ভালো, কারণ নারায়নগঞ্জ থেকে রাস্তাটা ভালো না আর ছুটির দিন ছাড়া জ্যামের কারণে পৌঁছুতে অনেক বেশি সময় লাগতে পারে।
একদিনেই ঘুরে আসতে পারবেন।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কালো কাক এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি

মূর্তালা রামাত এর ছবি

ছবিগুলো ভাল হয়েছে। একদিন যেয়ে ঘুরে আসার ইচ্ছা থাকল।

মূর্তালা রামাত

শাব্দিক এর ছবি

চলুক দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া

লালকমল এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

বন্দনা এর ছবি

ঢাকার এত কাছে এত সুন্দর একটা জায়গা।ছবিগুলা বেশ সুন্দর।

লালকমল এর ছবি

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া হাসি

আশালতা এর ছবি

একটা ছবি বোধ হয় দুবার এসেছে। তবে আমাদের হারাতে বসা ইতিহাস তুলে আনা পোস্ট দেখলেই ভীষণ ভালো লাগে, সাথে কষ্টও হয়। এগুলো যদি সত্যিই ঠিকমত সংরক্ষণ করা যেত। ইশ।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

লালকমল এর ছবি

একটা ছবি বোধ হয় দুবার এসেছে

না বোধ হয় হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

পূজোর ছুটিতে ঘুরে আসলাম। বেশ ভালো লেগেছে। কেল্লার সামনের পুকুরের স্বচ্ছ পানিতে মাছের খেলার ভিডিও করেছি। হাসি পুকুরের ঐপারে উঁচু লালচে প্রাচীরের ঐটা কিন্তু জেলখানা ছিলো। আর কেল্লার প্রাচীরের মাঝখানে ভেতরের অংশে ঐ ঘরগুলাতে এখন আর্কিওলোজি ডিপার্টমেন্ট থেকে যাকে দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছে, তিনিই পরিবার নিয়ে থাকেন। শুনলাম এর আগের বয়স্ক ভদ্রলোক নাকি প্রাচীরের উপর থেকে পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছেন!

আমার কাছে মনে হয়েছে তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো সংরক্ষিত হচ্ছে অন্যান্য আরও অনেক জায়গার থেকে। ওডিনদা'র একটা মজার ভ্রমণকাহিনি আছে এবারের নববর্ষের ই-বই 'ভ্রমণীয়' তে ইদ্রাকপুর কেল্লা ভ্রমণ নিয়ে। সেখানে বা আলাপেই কখনো ওডিন'দা বলেছিলেন যে কেল্লার অনেকখানি খননকাজ করে মেরামত করা হয়েছিলো নাকি এক সময়ে, যা কোন একটা বড় ভূমিকম্পে আবার ধ্বসে যায়, এখন বিস্তারিত মনে পড়ছে না।

ভ্রমণ-ছবি পোস্টে চলুক

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কালো কাক এর ছবি

হুম পড়লাম। যেতে হবে। দেঁতো হাসি ধন্যবাদ সার্চ দ্যা খোঁজটা দেয়ার জন্য।

লালকমল এর ছবি

ধন্যবাদ নতুন তথ্য দেওয়ার জন্য। পুকুরের ছবি তোলার আগেই ক্যামেরার চার্জ শেষ হয়ে গেছিলো।

তানিম এহসান এর ছবি

ভালো লাগলো। এই কেল্লাটির গঠন বৈচিত্র মনে হয় সেই সময়কার অন্যান্য কেল্লার চাইতে একটু আলাদা। যেতে হবে।

লালকমল এর ছবি

গেলে ভালোই লাগবে আশা করি। ধন্যবাদ।

মুস্তাফিজ এর ছবি

"ইদ্রাকপুর কেল্লা তৈরিতে ৮২ মি. * ৭২ মি. আয়তাকার ইট ব্যবহার করা হয়েছে।"

৮২মি. মানে মিলিমিটার?

...........................
Every Picture Tells a Story

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।