মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ৩। দ্রৌপদী। [পর্ব ৪: ঘটোৎকচ ২]

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: বুধ, ১৫/০৫/২০১৩ - ৬:৩৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হারামজাদি কুন্তীবুড়ি তার পোলাগোরে রাজা বানানের লাইগা ঠকাইছে আমারে আর আমার মায়েরে। সিংহাসনের লোভে একদিন বয়সের আমারে আমার মায়ের লগে জঙ্গলে ফালাইয়া থুইয়া নিজের পোলাগোরে নিয়া পলাইছে বুড়ি। ...হইলনি রাজা? পাইলিনি সিংহাসন? দেখ তোর রাজপুত্তুরেরা এখন ফকিরের মতো গাছের ছালবাকলা পইরা রাস্তায় ঘোরে আর তোরে পরের ঘরে খাইতে হয় ভিক্ষার ভাত...

রাগে মাটিতে লাত্থি মারতে মারতে চক্কর দিয়া যুধিষ্ঠিরের সামনে ফিরা আসে ঘটা- খালি বুড়ি হাবড়ি দাদির লাইগা সেইদিন কিছু করতে পারলাম না জ্যাঠা। বুড়ি আমার গলা জড়াইয়া ধইরা কয়- তুই আমার পয়লা নাতি। আমি তোরে মিনতি করি তুই থাম...
কুন্তীবুড়িটা সত্যই একটা হতভাগি জ্যাঠা। তার লাইগা মায়া হয়। বিয়া কইরা পাইল নামর্দ স্বামী। তারপর বারো বেটার লগে পেট লাগাইয়া তারেই আবার রক্ষা করতে হইল স্বামীর সংসার। তারপর পাঁচটা বলদা পোলারে একলা একলাই বানাইল রাজা। কিন্তু অত কিছুর পরেও বুড়া বয়সে আবার তারে গিয়া পরের ভাত খাইয়া বাইচা থাকতে হয়...

যুধিষ্ঠির আইসা ঘটার হাত জোড় করে ধরে- তোর মায়েরে কইস আমারে মাপ কইরা দিতে। তার উপরে বহুত অবিচার করছি আমরা।

দ্রৌপদী সরে যায়। সেদিন হিড়িম্বারে অপমানের সূচনাটা তার হাতেই শুরু হইছিল। যুধিষ্ঠির কথা ঘুরায়- কই। তুই না কইছিলি বৌমা আমার লাইগা পায়েস রাইন্ধা পাঠাইছে? কই দে খাই?

ঘটা খাওনের বোচকা খুলতে গিয়া দেখে পোঁটলা খুইলা পায়েসের পাতিল পাশে রাইখা গপাগপ কইরা মাংস খাইতাছে ভীম। সে ভীমের দিকে তাকায়- কই আব্বা। একটু আগে না কইলা আমার বৌয়ের হাতের রান্না খাইবা না? এখন তো দেখি চামে চামে অর্ধেকটাই শেষ কইরা ফালাইছ...

যুধিষ্ঠির হাসে- খাইব না মানে? খাওনের কথা শুইনা তোর বাপ দুর্যোধনের দেওয়া বিষও খাইয়া ফালইছিল ছোটবেলা... আর এইটা তো পোলার বৌয়ের রান্না

ভীম তাকায় না। খাইতেই খাইতেই আওয়াজ দেয়- ভালোমন্দ পাইলে দুইটা খাই। হের লাইগা খোঁটা দেওন কিন্তু ঠিক না....
- খাইবা না ক্যান? খাও। কিন্তু পোলার বৌয়ের রান্না খাইয়া তো একটু কইতে হয় ভালো কি মন্দ হইছে...
ভীম মুখে মাংস নিয়া চাবাইতে থাকে- তুই আমার পোলা হইয়া কথা কস তোর জ্যাঠার মতো। খাওনের ধরন দেইখা বুঝস না ব্যাটা রান্না কেমন হইছে?
- কিন্তু বাকি দুই কাকা তো বইসা বইসা ভাবতাছে বাপের সতিলা ভাই বইলা আমি তাগোর লাইগা কিছু আনি নাই। ...কই কাকুরা আসো খাইতে বসো... খাওয়া দাওয়া কইরা রওনা দেই
- কই যাবি?
কই যাব মানে? কইলাম না তোমাগোরে আমার বাড়ি নিয়া যামু? তোমরা আমার পোলাগোর লগে খেলবা আর সময় কাটাইবা; আর কিচ্ছু করা লাগাবো না তোমাদের। বড়ো জ্যাঠায় শিখাইব ধর্ম। আব্বায় শিখাইব মারামারি। পিছলা কাকা অর্জুন যদি ফিরা আসে তয় শিখাইব তীর ধনুক আর সহদেব কাকায় শিখাইব বিদ্যা; যদিও জানি না কী বিদ্যা সে জানে। আর নকুল কাকুর কিন্তু আমার পোলাগোর লগে কোনো কাম নাই। তুমি আমার বৌডারে একটু রূপচর্চার গাছপাতা চিনাইয়া দিবা। সে সাজতে খুব পছন্দ করে। ...কিন্তু দেইখ কাকু; রূপচর্চা শিখাইতে গিয়া আবার আমার বৌয়ের লগে কোনো লটরপটর করলে কিন্তু ভর্তা বানাইয়া ফালামু...

নকুল খাওন মুখে নিতে গিয়া থাইমা যায়- হই বেয়াদব। আমি তোর বাপের ভাই। মুখ সামলাইয়া কথা কবি...
- তোমরা রাজবংশের মানুষ কাকু; চান্সে পাইলে বৌ আর পোলাবৌয়ে তো আবার তোমাগের কোনো ফারাক থাকে না...
- কথা কম ক হারামজাদা। বাপ চাচাগো লগে কেমনে কথা কইতে হয় সেইটাও শিখস নাই
ঘটা কাকাদের খাবার তুইলা দিতে দিতে হাসে- বয়স বিশ বচ্ছর হইলে বাপবেটায় ভাই-ভাই হয়ে যায় বুঝলা কাকা? সব বিষয়েই আলোচনা চলে। দেখো না আব্বার লগে আমার কত ঠেলাঠেলি হয় তারপরেও কিন্তু সে পোলার আনা জিনিস ফালায়া দেয় নাই... তা আব্বা কইলা না তো রান্না কেমন হইছে?
- ভালৈছে
- অ্যাহ। খাইতাছে কনুই পর্যন্ত চাইটা আর কওয়ার সময় চিমটি দিয়া কয় ভালৈছে। কইলে কী হয় যে আমার বৌয়ের রান্না তোমার মা আর বৌরে রান্না থাইকা ভালা...
- তুই থামতো ঘটা। মানুষটা খাইতাছে খাইতে দে

সহদেবের কথায় ঘটোৎকচ হাসে- অহিলাবতী কয় কী জানো কাকু? কয় ভিতরে যা আছে তা কইয়া ফালানো ভালো। তাইলে কৃষ্ণের মতো ভিতরে আর কোনো বিষ নিয়া ঘুরতে হয় না
- কৃষ্ণের ভিতরে বিষ?
- হ বিষই তো। হালার বাইরে থাইকা ভিতরে বেশি কালা...
- কৃষ্ণের বদনাম করলে তোর জ্যাঠায় কিন্তু থাবড়াইব তোরে...
- থাবড়াইব। কিন্তু শিশুপালের মতো মাইরা তো ফালাইব না। হের লাইগাই তো তার সামনে গিয়া বদনাম করি না
- তুই তাইলে কৃষ্ণরে ডরাস?
- বিষাক্ত সাপ কেডায় না ডরায়?

এইবার যুধিষ্ঠির কথা ধরে- ক্যান? কৃষ্ণরে তুই ডরাস ক্যান?
- ডরাই ক্যান সেইটা তুমিও জানো জ্যাঠা। হালায় তো সামনে দিয়া মারে না। মারে পিছন থাইকা। একবার আমার লগে তার দেখা হইছিল আমার এলাকায়। আমার বাড়িত গিয়া আমার অস্ত্রপাতি আর প্র্যাকটিস দেইখা সে কয়- ভাতিজা তুই তো আমার সুমান বীর হইছস... এই কথা শুইনাই কিন্তু আমি ডর খাইলাম। কারণ কৃষ্ণ কাউরে তার সমান কিংবা তার থাইকা বড়ো বীর কওয়া মানে তার খবর আছে। আমি কইলাম- কাগু। বড়ো হই আর ছুডু হই। ভাতিজা হিসাবে তোমার কাছে আমার একটা মিনতি; তুমি যদি আমারে মারতে চাও তো সামনে দিয়া মাইর। তাইলে আমিও একটু সুযোগ পামু ফাইট দিবার। দয়া কইরা পিছন দিয়া মাইরো না আর মন্ত্রপড়া কুত্তা লেলাইয়া দিও না...
নকুল খাইতে খাইতে জিগায়- কুত্তা লেলানো কী রে?
- বুঝলা না? কৃষ্ণের কিছু চ্যালা চামুণ্ডা আছে না; যারা কৃষ্ণ যা কয় তারেই বেদ বইলা মানে? এই যেমন ধরো আমাগো অর্জুন কাকু। কৃষ্ণ যদি তারে কয়- তুই ঘটার বুকে তীর মার; তাইলে কিন্তু অর্জুন কাকা এক মুহূর্তও চিন্তা না কইরা আমার বুকে তীর বিন্ধাইয়া গিয়া কৃষ্ণরে জিগাইব- হে জনার্দন। তুমি কেন মোরে মোর ভ্রাতুষ্পুত্রের বুকে তীর বিন্ধাইতে কহিলা? তখন কৃষ্ণের রেডি উত্তর তো আছেই- তোর ভাতিজা হইলেও সে আগের জন্মে আছিল রাক্ষস। এর লাইগা তোরে কইছি তারে মাইরা ফালাইতে। এতে তোর পুণ্য হইছে... হা হা হা। সে তো আবার হগগলের পূর্ব জন্মের কাহিনী জানে। যারা তার শত্রু তারাই হয় পূর্বজন্মের রাক্ষস আর তার দোস্তরা দেবতা...

হঠাৎ ঘটার খেয়াল হয় সবাই খাইতাছে কিন্তু দ্রৌপদী নাই- ছুডু মা কই গেলা কইয়া ডাক পাড়তে দ্রৌপদী আইসা খাড়ায়- আরে তুমি খাইতাছ না ক্যান? কইলাম না এইগুলা তোমার সতিনের তৈয়ারি না। এইগুলা বানাইছে তোমার পোলার বৌ। আসো খাও
- তোর বৌ তোর বাপ কাকার লাইগা রান্না কইরা পাঠাইছে। তারাই খাউক। পাণ্ডবগো দাসিবান্দির ওইগুলা খাওয়ার কী দরকার?...

ঘটা এইবার হা কইরা একবার যুধিষ্ঠির একবার দ্রৌপদী আর একবার নকুল সহদেবের দিকে তাকায়। কী বলবে সে খুইজা পায় না। মাংস চাবাইতে চাবাইতে ভীম আস্তে আওয়াজ দেয়- মায়েরে কষ্ট দিছস। মাপ চা হারামজাদা। নাইলে কিন্তু তোর খবর আছে...

হঠাৎ ঘটা এক কাণ্ড কইরা বসে। এক ঝটকায় দ্রৌপদীরে কাঁধে তুইলা বনের মধ্যে হাঁটা ধরে। ভ্যাবাচ্যাকা খাইয়া দ্রৌপদী চিল্লায়- ওই কী করস? কই যাস?
- তোমারে তোমার সতিনের বাড়ি নিয়া যামু। স্বামী তোমারে সতিনের ভাত খাওয়ায় নাই। এইবার সতিনের পোলা তোমারে সতিনের ভাত খাওয়াইব...
- আরে কী করে। ছাড়। তোর বাপেরে ডাকলে কিন্তু অসুবিধা হইব
- বাপ-জ্যাঠা-কৃষ্ণ-কর্ণ যারে ইচ্ছা ডাকো। দেখি কে তোমারে বাচায়। সেইদিন আমারে রাক্ষুসির পোলা কইছিলা না? এইবার দেখো রাক্ষস কারে কয়?
- ছাড় বাপ। ছাড়। আমার কষ্ট হইতাছে
- আগে কও খাইবা কি না। তাইলে ছাড়–ম
- আইছ্ছা খামু নে। ছাড়...

হো হো কইরা হাসে যুধিষ্ঠির ভীম আর নকুল সহদেব। ঘটার কাণ্ড দেইখা ধৌম্যও হাসে- গোঁয়ারের একটা সীমা থাকে। কিন্তু ভীমের এই পোলটার কোনো সীমা পরিসীমা নাই। মায়েরে গালিও দিলো আবার মাপ না চাইয়া তারে খাইতেও রাজি কইরা ফালাইল...
ঘটা দ্রৌপদীরে নামাইয়া নিজে পায়েস বেড়ে দিয়ে ধৌম্যের দিকে ফিরে- চোখ দিয়া না চাইটা খাইয়া ফালাও। আব্বায় যা শুরু করছে তাতে একটু পরে হাড্ডিও পাইবা না। নাকি অপেক্ষা করতাছ যে তোমারেও তেলামু আমি?
ধৌম্য নিজেই আগাইয়া আসে- আরে না। তোর কাছ থাইকা তেল আশা করার মতো বেক্কল আমি না। পরখাউকি বামুন হইয়া যখন জন্মাইছি তখন খাওনের উপর রাগ করলে কি আর চলে? বীরের রাগ খাওনরে আগে আর ফকির-বামুনের রাগ খাওনের পর; দে খাই..

খাইতে খাইতে দ্রৌপদীর খেয়াল হয় সবাই খাইতাছে ঘটোৎকচ ছাড়া। সে জিগায়- তুই খাবি না?
- তুমি যা রানছো পরে আমি তাই খামু। তোমরা খাও
- আমিতো শাক রান্না করছি
- শাকই সই। পরে তোমরা রাজবাড়িতে চইলা গেলে জীবনে তো আর কোনোদিন তোমার হাতের রান্না খাওয়ার সুযোগ হইব না...
- তুই কিন্তু আবার আমারে খোঁচাখুঁচি করতাছস....

ঘটোৎকচ এইবার মাথা নুয়াইয়া দ্রৌপদীর পায়ের কাছে পড়ে- মাপ চাই ছুডু মা। ধইরা নেও এইডাই তোমারে আমার শেষ খোঁচা। তয় আমার বৌ অহিলা কী কয় জানো? কয় ভিতরে কথা রাখতে নাই। ভালো হোক মন্দ হোক পেটের কথা বাইর কইরা দিয়া তারপর খাইতে বসো। ভিতরে কথা চাইপা রাইখা খাইতে বসলে খাওন বদহজম হয়। তখন বুক জ্বলাপোড়া করে আর ঘুমও ঠিকঠাক হয় না। তাই সে সব সময় কয় পয়লা ভিতরের কথা সব বাইরে ফালাও; তারপরে পেট ভইরা খাইয়া একটা ঘুম দাও; তারপরে হাতে গদা নিয়া দেখো তুমার সামনে কেউ খাড়াইতে পারে কি না
- তুই মনে লয় তোর বৌয়ের সব কথা শুনস?
- আমার আর কে আছে কও যে আমারে কিছু কইব আর আমি শুনুম? আগে আছিল একলা মা। এখন বৌটা হইছে... আর তো কেউ নাই...
দ্রৌপদী হাসে- এইটাও কিন্তুক প্রায় খোঁচার কথা হইল..
- তা হইল কিন্তু এই খোঁচা তো তোমার লাগার কথা না। লাগলে লাগতে পারে তোমার স্বামীগোর....

- তোর লগে নিরালায় কিছু কথা আছে আমার
সকলে খাইতে বসলে যুধিষ্ঠির ঘটারে আড়ালে নিয়া যায়- সেই সময় তুই কর্ণরে জ্যাঠা কইয়া ক্যান ডাকলি আর আমার কাছে তার মায়ের নাম ক্যান জানতে চাইলি?
ঘটা সরাসরি যুধিষ্ঠিরের চোখে তাকায়- কর্ণ তোমার বড়ো ভাই তাই তারে জ্যাঠা কইছি আর সে তোমার মায়ের বড়ো পোলা তাই তোমার কাছে তার মায়ের নাম জানতে চাইছি...
- তুই কেমনে জানলি এইসব?
- জানছি তোমার রাজসূয় যজ্ঞের সময়। সেইদিন যখন তোমাগো বৌয়েরা কর্ণরে দিয়া আমারে খুন করানোর হুমকি দিলো তখন মনে হইল সেই লোকটার লগে একবার দেখা কইরা আসি। তার নাম আর গুণ অনেক শুনছি। তাই তারে পাইয়া একটা প্রণাম করতে গিয়া আমি টাসকি খাইলাম। দেখি তার পায়ের পাতা দেখতে এক্কেবারে দাদির পায়ের পাতার মতো। তোমাগো তিন ভাইয়ের পায়ের পাতাও তো এই রকম...

প্রণাম কইরা মাথা না তোলায় কর্ণ আমারে ধইরা তোলে। কয়- আমি তো কোনো মুনিঋষি না; এক সাধারণ সৈনিক। আমারে তুমি অত লম্বা প্রণাম করো ক্যান? তুমি কে বেটা? ...আমি কইলাম আমারে কয়েকজন কইছে যে আপনেরে দিয়া আমারে খুন করাইব। তাই ভাবলাম অত বড়ো বীররে একটা প্রণাম কইরা যাই... আমি হিড়িম্বার পোলা; দ্বিতীয় পাণ্ডব ভীম আমার বাপ....

কর্ণ আমারে জড়াইয়া ধইরা কয়- যারা কইছে তারা তোমারে আর আমারে দুইজনরেই ডরায় তাই এই কথা কইছে। তয় আমি খুনি না। যোদ্ধা। শুধু সেই যুদ্ধেই আমার হাতে মানুষ মরে যে যুদ্ধে তাদের হাতে আমারও মরার সম্ভাবনা থাকে... কেউ কইলেই যে আমি তোমারে হত্যা করুম এইটা ভুল; আমি কৃষ্ণও না; অর্জুনও না। আমি রাধাপুত্র কর্ণ... সামনাসামনি যুদ্ধ ছাড়া মানুষের দিকে অস্ত্র ধরি না আমি...

সে কথা কয় আর আমি তার পায়ের পাতা আর চোখের দিকে তাকাই- তার চোখটাও এক্কেবারে দাদির মতো... ্আমার সন্দেহ হয়। সবাই জানে এই বেডার বাবা অধিরথ কিন্তু তারে কয় দেবতা সূর্যের পোলা... তাইলে তো তার মা রাধা হইবার কথা না...

আমি কিন্তু পরে তার বাড়ি গেছিলাম তার বাবা মায়েরে দেখতে। দেখলাম বিন্দুমাত্র মিল নাই কর্ণের লগে অধিরথ কিংবা রাধার চেহারায়... তারপরে গিয়া সরাসরি দাদিবুড়িরে চাইপা ধরলাম- তোমার চেহারার লগে কর্ণের চেহারায় অত মিল ক্যান?
দাদি পয়লা গাইগুই করলেও পরে স্বীকার যাইয়া আমারে কয়- তুই কাউরে কইস না ভাই। তাইলে আবার সবকিছু লণ্ডভণ্ড হইয়া যাইব....
জিগাইলাম আর কেডা কেডা জানে? দাদিবুড়ি কয়- যুধিষ্ঠির দ্রৌপদী কৃষ্ণ ভীষ্ম দ্রোণ কৃপ ছাড়া আর কেউ জানে না। কর্ণও হয়ত না... এর লাইগা তোমারে একটু খোঁচাইলাম জ্যাঠা। দেখলাম তুমি কেমন চমকাইয়া উঠলা...
- আমি চমকামু ক্যান?
- তুমিই তো চমকাইবা। কারণ কর্ণের পরিচয় সবাই জাইনা গেলে তোমার বনবাস বেহুদা হইব। কুন্তীর বড়োপোলা হিসাবে রাজা তো কর্ণই হইব... হের লাইগা কর্ণরে তোমার এত ডর...
যুধিষ্ঠির এইবার খেইপা উঠে- তোর কি মনে হয় আমি এতটা লোভী?

- তুমি লোভী না জ্যাঠা। তয় তুমি খুব ধুরন্ধর। বুদ্ধিমান আর শক্তিমানগো মাথায় কাঁঠাল ভাইঙ্গা খাওনের লাইগা বেক্কলগিরি তোমার একটা কৌশল। তুমি ঠিকই জানো; অর্জুন ভীম কৃষ্ণ যতই লাফালাফি করুক না ক্যান; রাজ্যটা তোমারই। আর সেইটার প্রমাণ তুমি দিছ পুরা দেশটারেই পাশা খেলায় বাজি ধইরা। পুরা রাজ্য বাজি ধরার আগে তুমি কাউরে লেওড়া দিয়াও পুছো নাই। তুমি আসলে দেখাইতে চাইছ যে- আমার রাজ্য আমি পানিতে ফালামু; তোগো কী? ...তুমি বহুত ধুরন্ধর জ্যাঠা। তুমি সবাইরে বুঝাইয়া দিছ যে- কেউ যদি আমার গৌরবের ভাগীদার হইতে চাও তয় আমার দুর্দশারও ভাগীদার হইতে বাধ্য তোমরা। আমিই ঠিক করুম তোমরা রাজবাড়িতে থাকবা না জঙ্গলে থাকবা...আসোলে কুন্তী দাদির উপযুক্ত পোলাই তুমি জ্যাঠা। তোমার বাকি ভাইরা যে কাজগুলা করে সেই কাজগুলা যার ভাইবেরাদর নাই তারা বেতন দিয়া লোক রাইখা করায়। এই যেমন দ্রোণ আর কর্ণরে বেতন দিয়া রাখছে দুর্যোধন... এখন সেই কামের লাইগা তোমার ভাইয়েরা আছে তাই তুমি তাগোরে সেনাপতি কিংবা মন্ত্রী বানাইছ; না বানাইলেও তেমন কিছু যাইত আসত না...

যুধিষ্ঠির অনেকক্ষণ ঝিম মাইরা থাইকা মুখ খোলে- তোর বাপ কাকায় করে যুদ্ধ আর আমি করি রাজনীতি। ফারাকটা নিশ্চয়ই তোরে বুঝাইয়া কইতে হবে না?
- হেইডা বুঝি বইলাই তো এইসব কথা সকলের সামনে তোমারে কই না। সকলের সামনে পাশা খেলার লাইগা তোমারে খোঁচা-খাচাও দেই। কিন্তু আড়ালে আসছ বইলা কইলাম যে তুমি পুরা রাজ্য এবং ভাইবেরাদর সবার জীবনও তোমার নিজস্ব সম্পত্তি বইলা ভাবো তাই কাউরে না পুইছাই তুমি বাজি ধরছ। বাজি হাইরা একবারের লাইগও কও নাই; ফিরা যাইবার কথা... এইডা তোমার একটা অসাধারণ গুণ জ্যাঠা...

যুধিষ্ঠির ঘটার হাত চাইপা ধরে- বংশের পরবর্তী রাজা তুই। তোর লগে রাজনীতি নিয়া আলাপ করতে কোনো দোষ নই। সেইসব বিষয় বুঝবার যোগ্যতাও তোর আছে। তোরে আমি কই; কর্ণের বিষয়টা তোর বাপ কাকা কেউ জানে না। জানান ঠিকও হইব না... তোরে আমার অনুরোধ...
- হা হা হা। অনুরোধ করার দরকার নাই জ্যাঠা। আমি তো দাদিরেও আগে কথা দিয়া আসছি যে; সে যদি না কর্ণের পরিচয় প্রকাশ করে তবে আমিও করুম না
- আমিও করুম না। নিজের পোলারে মায়ে যদি স্বীকার না করে তো আমরা করুম ক্যান?
- এই কথা কইও না জ্যাঠা। দাদি তার পোলা স্বীকার করে না কিন্তু তোমার লাইগা.... তয় জ্যাঠা; কৃষ্ণ থাইকা একটু সাবধানে থাইকো
- ক্যান?
- এই হালা দুইমুখা সাপ। লেঙুর মাথা দুইটা দিয়াই ছোবল মারে। দেখলা না তোমার সভাতেই সে তার আরেক পিসির পোলার কল্লা নামাইয়া দিলো। তার স্বার্থে টান পড়লে কিন্তু তোমার মাথা নামাইতেও সে দেরি করব না। আর এখন তো সে তোমারে ছাতা হিসাবে ব্যবহার কইরা দেবতা হইতে চায়...

যুধিষ্ঠির হাসে- সে আমরে ব্যবহার করে ছাতা হিসাবে আর আমি তারে করি ঢাল হিসাবে। সে হইতে চায় দেবতা আর আমি হইতে চাই সম্রাট। দুইজনের চাওয়া কিন্তু দুইটা। রাজনীতিতে যতক্ষণ পর্যন্ত একজনের লগে আরেকজনের পানাদেনা ঠিকঠাক মতো চলে কিংবা একজনের চাওয়ার লগে আরেকজনরে চাওয়া ঠোকাঠুকি না খায় ততক্ষণ পর্যন্ত তারা বন্ধু হইতে পারে... এতে কোনো সমস্যা নাই। কৃষ্ণ রাজা হইতে চায় না; আর আমি দেবতা হইতে চাই না। তাই সে আমার লাইগা আর আমি তার লাইগা করি... হিসাব খুবই সোজা আর নিরাপদ ভাতিজা...
- কিন্তু ভবিষ্যতে কী না হইতে পারে?
- ভবিষ্যৎ সব সময়ই আন্ধা। ভবিষ্যতে যে কেউ যেকোনো সময় ভাইসা যাইতে পারে। সেইটা নিয়া চিন্তার কিছু নাই... যাউকগা। তোরে একটা কথা কই; তুই তোর বাড়ি যাওয়ার লাইগা আর চাপাচাপি করিস না
- ক্যান?
- রাজসূয় যজ্ঞের সময় দ্রৌপদী তোর মায়ের লগে কাইজা করছে। এখন তারে নিয়া আবার তোর মায়ের বাড়ি গেলে সে তা মাইনা নিতে পারব না। বহুত কষ্ট পাইয়াও বনে আইসা এখন একটু স্বাভাবিক হইছে সে। খামাখা তারে আর কষ্ট দিতে চাই না...
- ঠিক আছে জ্যাঠা। তোমার যুক্তি আমি মানি। চলো তাইলে। তোমাগো লগে আমিও তীর্থ ভ্রমণে যাই....

২০১২. ১১.১৯ সোমবার

মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ৩। দ্রৌপদী। [পর্ব ৩: ঘটোৎকচ]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ৩। দ্রৌপদী। পর্ব ২
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ৩। দ্রৌপদী। পর্ব ১
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী [পর্ব ৩]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী [পর্ব ২]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী [পর্ব ১]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ১। সত্যবতী


মন্তব্য

তারেক অণু এর ছবি
মাহবুব লীলেন এর ছবি

মহাভারতে কিন্তু একখান মাচুপিচু আছে? কই আছে তা কিন্তু কমু না

আরাফাত এর ছবি

"বুদ্ধিমান আর শক্তিমানগো মাথায় কাঁঠাল ভাইঙ্গা খাওনের লাইগা বেক্কলগিরি তোমার একটা কৌশল। তুমি ঠিকই জানো; অর্জুন ভীম কৃষ্ণ যতই লাফালাফি করুক না ক্যান; রাজ্যটা তোমারই। আর সেইটার প্রমাণ তুমি দিছ পুরা দেশটারেই পাশা খেলায় বাজি ধইরা। পুরা রাজ্য বাজি ধরার আগে তুমি কাউরে লেওড়া দিয়াও পুছো নাই। তুমি আসলে দেখাইতে চাইছ যে- আমার রাজ্য আমি পানিতে ফালামু; তোগো কী?"

অসাধারন!!

এত তাড়াতাড়ি পাব, ভাবিনি। ধন্যবাদ।

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

লীলেন্দা, আমার বন্ধুরা আপনার গত পর্ব পড়ে বলেছেন, “লীলেন রকস্‌” দেঁতো হাসি

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

মাহবুব লীলেন এর ছবি

লীলেন রকস মানে কী? লীলেনরে পাত্থর মার' নাকি ''হালায় একটা পাষাণ?

তুলিরেখা এর ছবি

প্রতিটা অংশই যাকে বলে অসাধারণ হচ্ছে। নতুন চোখে নতুন করে দেখা মহাভারত। এটা গোটা মহাভারতের পুনর্নির্মাণ করে ফেলুন, শুধু নারীচরিত্রের ছায়ায় কেন, পুরুষচরিত্রদেরও টেনে এনে গল্পটা বিস্তারিত করুন। কাহিনির গতি সেইদিকেই তো দেখা যাচ্ছে। মূল মহাভারতে যেসব চরিত্র সেভাবে তেমন বেশী বোঝা যায় না, শোনা যায় না, আড়ালে পড়ে যায়, তাদের নিয়ে বেশি করে লিখুন। যেমন ঘটোৎকচকে নিয়ে চিরকালই কৌতূহল, মূল কাহিনিতে ওকে তো শুধু দরকারের সময় ডাকে ভীম, ওর কথা সেভাবে শোনা যায় না। আবার আরেকটা অসাধারণ চরিত্র সঞ্জয়, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের বিবরণ যে শোনায় ধৃতরাষ্ট্রকে, অন্ধ রাজার একেবারে জীবনের শেষ অবধি অনাত্মীয় হয়েও এই মানুষটা সঙ্গে থাকে, এর ব্যক্তিগত জীবনও প্রায় কিছুই জানা যায় না মূল কাহিনিতে, এর কথাও শুনতে ইচ্ছে করে আপনার এই ভূমিজ মানুষের চোখে ভূমিস্পর্শী মহাভারতে।
পুরো সব লেখা হলে এইটা বই হয়ে বেরোনো উচিত।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

চলুক
সহমত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পুরোটা করার স্বপ্ন দেখি কিন্তু সাহসে কুলিয়ে উঠতে পারি না। মূলত লিখতে শুরু করেছিলাম রাজনৈতিক কুন্তীকে নিয়ে। লিখতে গিয়ে মনে হলো মহাভারতীয় রাজনীতির প্রথম রূপকার সত্যবতীকে নিয়ে কিছু না লিখলে বিষয়টা অপূর্ণ থাকে। তারপর মনে হলো মহাভারতের দুই রাজনৈতিক নারীর পাশাপাশি রাজনীতির শিকার নারী দ্রৌপদীকে নিয়েও কিছু লিখতে হয়....

এখন সেভাবেই আগাচ্ছি। মাঝখানে বনবাসে ঘটোৎকচ একটা ফ্যাক্টর; তাই তাকেও একটু ধরে যাচ্ছি... আবার কুন্তীর কাছে ফিরতে হলে মাঝখানে বেশ কিছু বয়ান না করে উপায় নাই....

০২

সঞ্জয়কে নিয়ে নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর দারুণ একটা লেখা আছে। পড়ে দেখতে পারেন।

০৩

ঘটোৎকচ ভারতীয় মহাভারতে বেশ হাস্যকর পাত্র। কিন্তু ইন্দোনেশিয়ান ভার্সনগুলোতে বেশ বড়ো হিরো

০৪

আগে কাজ আগাই। তারপরে চিন্তা করব বই নিয়ে

তুলিরেখা এর ছবি

০২।
এটা নৃসিংহবাবুর কোন বইটায় আছে ?
ওনার "মহাভারতের ছয় প্রবীণ" বলে বইটা আমার আছে, ওখানে কেবল ব্যস, ভীষ্ম, দ্রোণ, কৃপ, ধৃতরাষ্ট্র আর বিদুর---এই কয়জনের কথা বিস্তারিত করে।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কথা ঠিক। আমি গুলিয়ে ফেলছিলাম। আলাদা লেখা নয়। ছয় প্রবীণের প্রতম প্রবীণ দ্বৈপায়নের লেখার এক জায়গায় সঞ্জয়কে নিয়ে কয়েকটা প্যারা আছে। যেখানে সঞ্জয়কে তিনি চিহ্নিত করেছেন পৃথিবীর প্রথম যুদ্ধ সাংবাদিক হিসেবে। তাকে আঘাত করা- বাধা দেয়া কিংবা তার গতিবিধি নজরদারি করা দুই পক্ষের জন্যই ছিল নিষিদ্ধ...

এই অংশটার কথাই মনে হচ্ছিল আমার। পরে ঘেটে দেখলাম তা দৈপায়ন অংশের ভেতরে কয়েকটি প্যারা...

কিষান এর ছবি

সব লেখা শেষ হলে এটা বই হয়ে বেরুনো উচিত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

হউক আগে শেষ...

শ্রীকৃষ্ণ  এর ছবি

আমার নিন্দা করায় এই পোস্টে কষে মাইনাস। কল্লাটাও কাইটা ফেলতাম, শুধু সুদর্শন চক্রটা সার্ভিসিং এর জন্য মেকানিকের কাছে থাকায় বাইচ্যা গেলা।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমি আগেই খবর নিছি। হরতাল আর মহাসেনের ধাক্কায় মেকানিকের দোকান বন্ধ। তাই একটু সাহস করলাম আর কী?

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

আপনার লেখায় আমার মুগ্ধতা অনেকদিনের। প্রতিটি লেখাই পুর্বতনকে অতিক্রম করে নতুন মানদন্ড দেখিয়ে দেয়।
অসাধারণ আপনার লেখনী। হাততালি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ধন্যবাদ মাশরুম (ব্যাঙের ছাতার শুদ্ধ নাম মাশরুম না?)

আব্দুল্লাহ এ.এম এর ছবি

মাহবুব ভাই,

যে কারনে ঘটার নাম ঘটোৎকচ, সে কারনে আপনার(আমারও) নাম হতে পারে টাকোৎকচ, হাঃ হাঃ হাঃ। ওর আসল নামটা জানেন নাকি?

আব্দুল্লাহ এ.এম.

মাহবুব লীলেন এর ছবি

হ। টাকোৎকচ। এক্কেবারে খাঁটি কথা

০২

ঘটোৎকচের আর কোনো নাম পাইনি। না থাকারই সম্ভাবনা বেশি। ঘটার মা হিড়িম্বা সাঁওতাল বংশাজ মেয়ে। সাঁওতালদের মধ্যে নাম সব সময়ই বৈশিষ্ট্যসূচক হয়
সাঁওতালদের মধ্যে কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন হবার সম্ভাবনা নাই। হইলে কানাই-ই হয়

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পইড়া ফালান। মাত্র একখান বই...

সত্যপীর এর ছবি

মহাভারত নিয়া জ্ঞান শূন্যের কোঠায় তাই পড়ে সব বুঝতেছি না। মহাভারত পড়ে আবার আপনার এই সিরিজ পড়ব একদিন।

এইরকম লেখা লিখতে বিষয়ের উপর যেরকম পড়াশুনা করা লাগে সেইটার জন্য মুগ্ধতা জানিয়ে গেলাম বস। আপনে সত্যই মহামতি লীলেন।

..................................................................
#Banshibir.

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পইড়া ফালান। মাত্র একখান বই

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

পড়েছিতো। কিন্তু এত নাম এত ঘটনা মনে থাকেনা তো। চলুক

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বচ্ছরে দুইবার কইরা পড়েন তাইলেই মনে থাকব
তয় কাশিদাসী একবারের বেশি পড়া উচিত না আর কাশিদাসী পইড়া কোনো নাম মনে রাখার চিন্তা করাও ঠিক না
কারণ ছন্দ আর পদ্য মিলাতে গিয়ে কাশিদাস ইচ্ছামতো নাম আর ঘটনারে মোচড়াইছেন... এক লাইনে যখন বলেন -ওমুক আসিলো ঘোড়ায়... তিনলাইন পরেই হয়তো গিয়ে আবার বলছেন- ফিরিল গজে...

কৌস্তুভ এর ছবি

পরিস্থিতি অতি গভীর!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

লালকমল এর ছবি

ঘটোৎকচ এর একটা ছবি লাগাইয়া দেন। ছবি না দেক্লে ঘটোৎকচ যে কি মাল হেইডা ঠাহর করা মুশকিল। এখনো চোখে ভাসে পিচ্চি কালের দেখা একটা ফটো। ঘটোৎকচ এর বডির নিচে মেলা মানুষ পইড়া রইছে।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সুজন্দা ছাড়া এই ছবি কেউ আঁকতে পারব না...

লালকমল এর ছবি

মহাভারত থেকে স্ক্যান করে অ্যাড করে দেন মন খারাপ

বিধুভূষণ ভট্টাচার্য এর ছবি

মহাভারতের কথা অমৃত সমান
মাহবুব লীলেন-এ কহে শুনে পূণ্যবান।'

প্রতিটি পর্বের আগে পিছে উপরের লাইন দু'টি যুক্ত করে দেন লীলেন ভাই। কাশীরাম দাসের মহাভারত বহুবার শুনেছি--
"মহাভরতের কথা অমৃত সমান
কাশীরাম দাসে কহে শুনে পূণ্যবান।
"--- লাইন দুটি কয়েক পাতা পর পরই সুর করে পড়া হয়।
আপনার লেখা যত পড়ছি চমৎকৃত হচ্ছি। এত সুন্দর মহাভারতের যথযথ মর্যাদা দিতে প্রতিটি পর্বের আগে পিছে পড়তে চাই--
'মহাভারতের কথা অমৃত সমান
মাহবুব লীলেন-এ কহে শুনে পূণ্যবান।'

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমার কথা পূণ্যবানে শুনবে না রে ভাই
বরং পূণ্যবানের পূণ্য নষ্ট করার দোষে ইনবক্সে বহুত গালাগালি শুনি এই লেখার জন্য

বিধুভূষণ ভট্টাচার্য  এর ছবি

আমার কথা পূণ্যবানে শুনবে না রে ভাই
বরং পূণ্যবানের পূণ্য নষ্ট করার দোষে ইনবক্সে বহুত গালাগালি শুনি এই লেখার জন্য

----তার মান আপনার লেখা জবরদস্তভাবে সার্থক হইছে। চলাইয়া যান।

'মহাভারতের কথা অমৃত সমান
মাহবুব লীলেন-এ কহে শুনে পূণ্যবান।'

অতিথি লেখক এর ছবি

তাড়াতাড়ি নতুন পর্ব দেন। পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আসিতেছে

এরিক এর ছবি

লিলেন দা আপনার সিরিজটার ফ্যান অনেক দিন ধরেই, সম্প্রতি ধীরেশচন্দ্র ভট্টাচার্যের মহাভারতের নারী বইটা পড়ছি । বলা যেতে পারে দুইটা সিঙ্ক্রনাইজ করে পড়া আরকি, সুন্দর হচ্ছে সিরিজটা , আপনি সময় নিন সমস্যা নাই, কিন্তু মরার আগে শেষ করে যাইয়েন, এখনো অনেক দূর বাকি !

অতিথি লেখক এর ছবি

এত সুন্দর করে লিখে ঘুমান কিভাবে মাহবুব ভাই?

shah waez

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।