মগবাজারে কোন এক জায়গায় টিউলিপ বলে এক সেলুন ছিল। ওইখানে আব্বা আমাদের তিন ভাইকে চুল কাটাতে নিয়ে যেতেন যখন আমি একবারে ল্যাদাবাচ্চা। মনে আছে ওরা প্রতিবার ছোট একটা রঙিন কার্ড দিত, একপিঠে দোকানের নামধাম অন্যপিঠে ক্যালেন্ডার। আমাদের তিন ভাইতে তুমুল ফাইট চলতো ঐ মহামূল্যবান কার্ড নিয়ে। তখন স্কুলে যেতাম একটা স্টীলের পেনসিলবক্স নিয়ে, উপরে সুপারম্যানের ছবি আর হিম্যানের স্টিকারওয়ালা। ঐ পেনসিলবক্সের ভিতর জায়গা হত কার্ডের। কোনদিন ক্যালেন্ডার দিনতারিখ দেখার জন্য ব্যবহার করেছি বলে মনে পড়েনা, দিন-তারিখ দেখার তেমন দরকারও হতনা। শুধু মাথায় থাকতো স্কুল বৃহস্পতিবার হাফ আর শুক্রবার পুরো ছুটি। ওইটে জানার জন্যে বালকের ক্যালেন্ডার প্রয়োজন নেই।
পরে আমরা মুভ করি হাতিরপুলে ফ্রি স্কুল স্ট্রিট বলে একটা গলিতে। মগবাজার দূর হয়ে যায় দেখে নিউমার্কেটে আব্বা নিয়ে যেত চুল কাটাতে। আজিমপুর গেট দিয়ে ঢুকে বাঁদিকে হাঁটলে হাতের ডাইনে ছিল ফেয়ার ডিল (অথবা এঞ্জেল স্টেশনারি, প্রতারক স্মৃতি বড় জ্বালাচ্ছে) নামে একটা খাতা পেনসিলের দোকান, তার ঠিক পাশেই সেলুন। একটু অদ্ভুত দোকান, সামনের অর্ধেক ছিল ঘড়ির দোকান, আর ভেতরের হাফ সেলুন। দোকানটা আমি ঢাকা থাকতেই উঠে গিয়েছিল। ঐ সেলুনে আমরা চুল কাটিয়েছি অন্তত দশ বছর, প্রথম প্রথম আব্বার সাথে পরে একাই। নাপিতেরা নিজেরা কথা বলতো উর্দুতে, মনে আছে একবার আমি একা চুল কাটাতে বসেছিলাম আর ওরা একজন আরেকজনকে বলছিল, “ইয়ে উও তিন লেড়কা কা এক না?”
পরে বুঝেছি ওরা বিহারী। বইপত্রে ৭১ নিয়ে লিখায় বিহারীদের নিয়ে ভয়ংকর সব কথা লিখা আছে, একথা প্রমাণিত সত্য যে তারা যুদ্ধাপরাধী। কিন্তু বালক আমার সাথে সেই ভয়ংকর বিহারীদের পরবর্তী জেনারেশন যে কি অপূর্ব ব্যবহার করতো ভোলার নয়। ফর্সা করে মাঝবয়েসী এক নাপিত নিয়মিত আমার চুল কাটতো, সে আমার চুলের খুস্কি নিয়ে খুব বিরক্ত হয়ে বকা দিত ঠিক যেন আমি তার পরিবারের লোক। দেয়ালজোড়া আয়নার সামনে আমার মাথা নিয়ে বলতো, দেখ বেটা চুলের কি অবস্থা। দুইদিন পরপর শ্যাম্পু দিবা আর নিয়মিত চুলে তেল দিবা। মাথায় তেল দেবার বিষয়টি আমার বাসায় অপরিচিত, চুলে তেল দেয়া মেয়েদের কাজ বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। এখনও কিছুটা।
ভার্সিটিতে উঠে উত্তরা চলে যাই। নয় নম্বর সেক্টর। ২০০০ সালের কথা, আদমশুমারীতে উত্তরা তখনও সহনীয় পর্যায়ে ছিল। টিউশনি করে খাই, বাসা থেকে টাকা নিতে লজ্জা লাগে। তাই উত্তরায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দোকানে ঢুকে বিশ তিরিশ টাকা খসিয়ে চুল কাটাতে গায়ে লাগতো। আব্দুল্লাপুরের কাছে এখন যেখানে সোহাগের (অথবা গ্রীন লাইন, প্রতারক স্মৃতি) কাউন্টার তার পাশ দিয়ে একটা সরু গলি গেছে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে, ঐ গলিতে একটা ভয়ানক সস্তা সেলুন। দরজা নেই, খোলা সেলুন। তিনটে চেয়ার, মূল খদ্দের আশপাশের দোকানের লোক আর নিম্ন মধ্যবিত্ত। ওইখানে চুল কাটানো শুরু করি। দশ টাকা চুল কাটা, পাঁচ টাকা শেভ। আমি ঢাকায় যত জায়গায় শেভ করেছি ওরা গাল দুইবার আর নাকের নিচে গোঁফের জায়গাটা একবার কামাতো। এই আব্দুল্লাপুরের সেলুনের সিনিয়র নাপিত গোঁফও দুইবার কামাতো। তারপর ফিটকিরি (ফিটকিরিই তো বলে নাকি?) বা ড্রাই আইস দিয়ে গাল ঘষে দিত। ভারি শিরশির করতো। ঐ দোকানটা ছিল একটি ফ্যামিলি বিজনেস। উত্তরবঙ্গের ঠাকুরগাঁয়ের হিন্দু ফ্যামিলি। সিনিয়র নাপিত তার ছোট ভাই, ভায়রা আর চাচাতো ভাই নিয়ে সেলুন চালাতো। দোকানের পাশেই ছিল ঢাকা উত্তরবঙ্গ দূরপাল্লার শস্তা বাসের কাউন্টার, ঈদের আগে ওইখানে চুল কাটাতে গেলে শুনতে পেতাম ওরা বুকিং দিচ্ছে কাউন্টারে। কাঁঠালবোঝাই বাস, দুর্গন্ধময় সিট, কাঁচহীন জানালা। কখনো কখনো সিটের চেয়ে বেশি টিকেট বিক্রি হওয়া নিয়ে তুমুল মারপিট লাগতো। সব মিলিয়ে এক নরক গুলজার। তবু ঐ বাসে পঞ্চাশ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে রাখতো সেলুনের নাপিত, আর আমার গালে শেভের ক্রীম মাখাতে মাখাতে বলতো তার ছোট মেয়েটির জন্য লাল জামা কিনতে যাবে সে বিকেলে টঙ্গীবাজার।
ক্যানাডায় আসার পর চুল কাটাতে বিশ ডলার লাগে দেখে বিরাট ভয় পেয়েছিলাম। লম্বা চুল রেখে দেয়ার ধান্দা করলাম, টাকাও বাঁচল ফ্যাশনও হল। দুঃখের বিষয় মাথার চুলের ঘনত্ব অনিয়মিত হয়ে পড়ছিল জায়গায় জায়গায়, ফলে চুল পাইকারি লম্বা হওয়ার বদলে এইখানে এক আঙুল ওইখানে দেড় আঙুল লম্বা হয়ে ঝুলতে লাগলো। এখানে সেখানে উঁকি দিচ্ছিল হালকা তালু। বিশ্রি অবস্থা। তার উপর নতুন যন্ত্রনা কানটুপি। যতই লম্বা চুল টেরি কাটি না কেন বের হলেই পরতে হয় ভারি কানটুপি আর চুলের সেটিং এর তেরোটা। ছোট চুলে কানটুপি পরার ভারি আরাম। অতএব মনের দুঃখে সেলুন যেতে হল। এইখানে সেলুন সব দেখি ইউনিসেক্স, ছেলে মেয়ে একসাথে কাটে। ছেলে নাপিত জিনিষটাও রেয়ার কমোডিটি, মূলত মেয়ে নাপিত। ইয়াং মেয়েই বেশি। চুল কাটার মেশিন নিয়ে বিপজ্জনক ঘনত্বে দাঁড়িয়ে তারা চুল কাটে। তবে দুঃখের বিষয় চুল কাটার সময় চশমা খুলে রাখতে হয়, আর চশমা ছাড়া আমি আদৌ কিছু দেখিনা। জীবন দুঃখময়।
প্রথম যেদিন টরোন্টোয় চুল কাটাই নাপিত ছিল এক চৈনিক নারী। ভারি মিষ্টি হেসে সে জিজ্ঞেস করলো কত নম্বর সাইজ চাই, তিন চার নাকি পাঁচ? মানুষ আকাশ থেকে পড়ে আমি মহাকাশ থেকে পড়লাম, তিন চার পাঁচ আবার কি। সে বুঝাল এক হল আর্মি কাট, অতএব আমার কি চাই তিন চার নাকি পাঁচ? অংক আমার চিরকালের শত্রু, তবু মনে হল অংকে এম বি এ করলেও এই প্রশ্নের উত্তর জানা কঠিন। যদি ধরেও নেই এক আর্মি কাট, দুই কি? ঠিক কতটুকু বাড়লে দুই? শুধু বেস জানলেই হবে না ইউনিটও জানা জরুরী। ভাঙা ভাঙা ইংরেজীতে চৈনিক সৈনিকের কাছে ঐ প্রশ্ন করা বৃথা, বাংলা জানা কাউকেও ঐ প্রশ্ন বুঝিয়ে বলতে আমার ঘাম ছুটে যেত। তাই বরং বললাম মিডিয়াম সাইজ। নাপতেনী আমার দিকে শুন্য দৃষ্টিতে কিছুক্ষন তাকিয়ে মাথা ঝাঁকিয়ে বললো, ওকে ফাইভ। কাটা হল ফাইভ। খারাপ না। মিডিয়ামই। আজও চুল কাটতে গেলে আমি চার বা পাঁচ সাইজ কাটাই।
এখানে চুল কাটা যন্ত্র নির্ভর। সাইজমত কাটার দিয়ে ঘ্যাঁস ঘ্যাঁস করে মাথার দুই পাশ কাটে এরা, আর তালুর ঠিক ওপরে চিরুনী কাঁচি। যেমনটি আগেই বলেছি, মূলত তরুণী নাপিত এখানে। স্টুডেন্ট অথবা ইমিগ্রান্ট, চাকরি পেলেই কেটে পড়ে অন্য কোথাও। তাই এদের কাজে যত্ন পাওয়া কঠিন। পেশাদার নাপিত শুধুমাত্র দামী “স্যালন” এ পাওয়া যায়, মূল্য অমূল্য। আমি সেই ঢাকা শহরের দশ টাকার সেলুন খোঁজা মানুষ, আমার চুল কাটানো দিয়ে কথা। সুগন্ধময় স্যালন দিয়ে আমি করবো কি। আলী সাহেবের ট্যুরিস্ট গ্রুপ একবার মিশরে আটকা পড়ে খাবার দোকান খুঁজছিল কাইরো শহরে, একটি দোকান পাওয়া গেল কিন্তু ফরাসী মেম নোংরা দোকান দেখে কিন্তু কিন্তু করছিলেন। আলী সাহেব বলেছিলেন, মাদাম স্বীকার করছি চেয়ার টেবিল নোংরা। কিন্তু আমরা তো চেয়ার টেবিল খেতে যাচ্ছিনা, খেতে যাচ্ছি খাবার। খাবার ময়লা না হলেই হল। আমারও সেই কথা, ফর্সা চেয়ার টেবিল দিয়ে হবে কি চুল ঠিকমতো কাটলেই হল।
যাহোক, বলছিলাম যত্নের কথা। পনেরো বিশ পঁচিশ তিরিশ যত ডলার দিয়েই আমি চুল কাটাই এখানে আমাকে সেই নিউমার্কেটের বিহারী নাপিত অথবা ঠাকুরগাঁয়ের সিনিয়র নাপিতের মত যত্ন নিয়ে কেউ চুল কাটেনা। একবার অটোয়া রিডো সেন্টারের সেলুনে আমার পরে এসে এক কাস্টমার ঢুকে গিয়েছিল দেখে কিছু বলতে গিয়েছিলাম, সুবেশী রিসেপশনিস্ট (জী হ্যাঁ, সেলুনে এরা রিসেপশনিস্টও রাখে, গুলশান মার্কা কারবার) রূঢ়ভাবে বলেছিল অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে। ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল আব্দুল্লাপুরের সেলুনে, সিট খালি হতেই আমি বেঞ্চি থেকে উঠেছিলাম কিন্তু কোত্থেকে এক মস্তান দোকানদার এসে বললো তার বিরাট তাড়া এখনই শেভ করে দিতে হবে। ছোকরা নাপিত তাকে নিয়ে নিল, আমি কিছু না বলে চলে যাচ্ছিলাম। সিনিয়র নাপিত অসহায়ের মত আমার দিকে ছুটে এসে বলেছিল দাদা রাগ করসইন? দাদা রাগ করসইন? থাকেন দাদা এক মিনিট, আমার হৈ গেসে দাদা। সময় লাগবো না দাদা রাগ করসইন?
রাগ করি নাই দাদা। ভাল থাকেন যেখানেই থাকেন। কত দেশে চুল কাটাইলাম দাদা আপনেরে দিলাম ফার্স্ট প্রাইজ।
মন্তব্য
ইশ! আপনি কী সুন্দর করে লেখেন! আমি তো দিনে দিনে আপনার লেখার ভক্ত হয়ে যাচ্ছি।
আমার এমন কোন স্মৃতি নেই চুল কাটার। খালামনিই কেটে দিত।
খালামনির কেটে দেওয়ার স্মৃতিটাই কম কি? লিখে ফেলুন পড়ি
..................................................................
#Banshibir.
অসাধারণ লিখেছেন।
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
থ্যাঙ্কু ভাইয়া।
..................................................................
#Banshibir.
সত্যি এই লাইনটা অসাধারণ...... এক দম মন ছুয়ে গেল... মনে পরে গেল সেই পুরান দিনের কথা...
চমৎকার বর্ণনা দিলেন। খুব ভাল লাগল। ১৫ ডলার দিয়ে চুল কাটিয়েছিলাম, কী বাজেভাবে কাটে চুল!! দেশের সাথে তুলনা করলে পাশ নাম্বার দেয়া যায় না এদেরকে।
নাহ পাশ নম্বর দেওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। ইংরেজীতে ভুলভাল ঝাড়িও দিতে পারিনা মেনে নিতে হয় আরকি
..................................................................
#Banshibir.
অদ্ভুত হলেও সত্য যে মন্ট্রিয়লে বেশির ভাগ সেলুনেই ছেলেরা চুল কাটে, চাইনিজ সেলুন এর একটা বিশাল প্রবলেম হচ্ছে এরা মেশিনে চুল কাটে , আর আমি ছোট করে চুল কাটালে (মেশিনে কাটলে প্রতি বারই ছোট হয়ে যায়) দেখতে লাগে চোরের চাইতেও খারাপ, বাধ্য হয়ে তাই বেশী টাকা দিয়েই নন-চাইনিজ দোকানে কাটাই, রাশিয়ান ললনা চুল কাটে এমন দোকান খুজে বের করছি, ভালই লাগে
লাগারই কথা
..................................................................
#Banshibir.
অসাধারণ লাগল আপনার স্মৃতিচারণ...
..................................................................
#Banshibir.
চুল কাটা নিয়েও লোকের কতরকম অদ্ভূত স্মৃতি।
হাহা ঠিক।
..................................................................
#Banshibir.
ভাল্লাগছে আপনার ব্লগর ব্লগর। আমার দেশ যতই খারাপ হোক, দেশের সবকিছুতেই মায়ের মমতা মাখানো, সেটা এখানকার মেকি ভদ্রতা আর তকতকে মেশিনে কোথায় পাব?
এখন কোথায় আছেন কানাডাতে?
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
খাঁটি কথা। সোনার বাংলা। আমি লোভী মানুষ ডলারের জন্য পড়ে আছি, খুব লজ্জার কথা।
মিসিসাগায় থাকি ভাইয়া।
..................................................................
#Banshibir.
লেখাটা খুব ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ সুহান ভাই।
অফ-টপিকঃ সুহান নামটা শুনলেই মনে হয় জাফর ইকবালের পুরোনো সাইন্স ফিকশন গল্পের নায়ক বুঝি
..................................................................
#Banshibir.
আমারও প্রায় একই অভিজ্ঞতা। সারাজীবন বিশ তিরিশ টাকায় কাটাই। আমেরিকা তে দেখি ১৫ -২০ ডলার।পুরা চার মাস পর প্রথম চুল কাটাই। তাও নাম্বার ২ দিয়ে।
এক অ্যাকাডেমি (চুল কাটা শেখায় ) এর খোজ পাই ।ঐখানে সোমবার শিক্ষা নবিশ রা চুল কাটে । একেবারে খাঁটি আমেরিকান তরুণীর পাল্লায় পরেছিলাম। যাই হোক ৯ ডলার (৬ ডলার প্লাস টিপস) এ কাজ সারি।
নাম্বার দুই? বলেন কি? মাথা তো কদমছাঁট করে দেয়ার কথা।
অ্যাকাডেমিতে নবিশদের দিয়ে চুল কাটান ভয় লাগেনা আপনার? সাহস আছে বটে। আমার তো মনে হয় ভুলে বুঝি কানের লতিটাই ফেলে দেবে
..................................................................
#Banshibir.
আমাদের বাসায় আমরা একটা চুলকাটা মেশিন কিনেছি। বাসায় চারজন থাকি। সবাই মোটামুটি এক্সপার্ট হয়ে গেছি। এমনকি আশপাশের লোকজনও মাঝে মাঝে আসে চুল কাটাতে আমাদের বাসায়
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
বেড়ে ব্যবস্থা। আমি ভারি ঢিলা লোক ওসব আমাকে দিয়ে হবে নাহ।
..................................................................
#Banshibir.
লাইসেন্স করে ফেললেই হয়, আমরাও তাহলে আসতাম।
...........................
Every Picture Tells a Story
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
জার্মানিতে ১০-১৫ ইউরোতে চুল কাটাই, যদিও গত ৬ মাস ধরে চুল বড় করছি এই জন্য চুল কাটানো হচ্ছে না। কোনো ধুলা-বালি নেই তাই ভাবলাম চুল বড় করার এটাই উপযুক্ত জায়গা।
এখানেও তাই, একবার এক নাপতেনী কে দেখে এতই প্রেমে মজেছিলাম ইচ্ছা করেছিল টাকা থাকলে প্রতিদিন এর কাছে চুল কাটাতে আসতাম
লেখা খুব ভালো লেগেছে।
নাপতেনি আর শেফ মেয়েদের আমার ভারি ভয়, ছুরি কাঁচি দাও বটি নিয়ে ডেইলি কারবার...তেড়িবেড়ি করলেই ঘ্যাচাং করে দেওয়ার সম্ভাবনা।
..................................................................
#Banshibir.
সুন্দর লেখা। আমার অভিজ্ঞতাও অনেকটা আপনার মতন। দশ টাকা দিয়ে বিজনের দোকানে চুল কাটিয়ে অভ্যেস। কোরিয়াতে যাবার পর ভার্সিটির পাশে একটা সেলুন ছিলো ইউনিসেক্স, ওখানেও যুবতি মেয়েরা চুল কাটায়, স্বভাবতই বিপজ্জনক ঘনত্বে আর চুল কাটা শেষে শ্যাম্পুও করে দেয় মুল্য - ১০ ডলার । আমি ছাত্র মানুষ, ১০ ডলার মানে আমার কাছে অনেক, এক বড় ভাই বললেন ভার্সিটির পেছন দিকে এক বুড়ো আছেন উনি পাঁচ ডলারে চুল কাটেন, ওনার কাছে যেতে; গেলাম। শেষে দেখি উনি আমাকে এমন ভাবেই কেটে দিলেন, মাথার একপাশে চুল বেশী আরেক পাশে কম আর পোলাপাইন তো আছেন পেইন দিতে। শেষ পর্যন্ত আমার রুমমেট ইন্দোনেশীয়ান ছেলেকে দিয়ে (ওর কাছে মেশিন ছিলো) কোন রকম সাইজ করে নেই চুল। পরে কানে ধরেছি, একবেলা লাঞ্চের টাকা বাচিয়ে হলেও মাথার সন্মান বাচানো বেশী জরুরী।
ধুর বুড়া মিয়ার কাছে আপনের যাওয়াই ভুল হইসে। একবেলা কি এক সপ্তাহের টাকা বাঁচিয়েও যুবতী নাপিত দিয়ে চুল কাটিয়ে নিন। সঙ্গ খুবই ইম্পর্টেন্ট ব্যাপার, লোহা দোষে সঙ্গ ভাসে
..................................................................
#Banshibir.
খুব সুন্দর লেখা। চলুক।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
থ্যাঙ্কু।
..................................................................
#Banshibir.
ভালো লেগেছে আপনার লেখা ...........মজা পেয়েছি ................
মজা দেবার জন্যই লিখা, নেন
..................................................................
#Banshibir.
লেখাটা ভালো লাগলো
..................................................................
#Banshibir.
লেখাটা ভালো লাগলো
সউদি আরবে অবশ্য বাংলাদেশের মত কিছু নাপিত আছে
বাংলাদেশী কিছু ইন্ডিয়ান আর আছে কিছু পাকি
তবে বাংলাদেশী নাপিতদের আচরন বাংলাদেশের নাপিতদের মতই
আর হজ্ব এর সময়(মিনাতে) অনেকেই সাময়ীক নাপিত হয়ে ,কিছু বেশী কামাইবার জন্য
সাময়িক নাপিত হওয়ার ব্যাপারটা জটিল।
..................................................................
#Banshibir.
একলাফে ব্যাক্তিগত ইতিহাস।
নিউমার্কেটের ঐ বিহারী সেলুন এখনোও আছে। আমার ভাই হাফপ্যান্টকালে ঐ সেলুনে চুল কাটাতো।
আমার চুল কাটানোর ইতিহাস বেশি দিনের না। কারণ আমার মাথার ঘন চুল আরও ঘন কাল হবে এই আশায় আমার দাদা প্রতি বছর আমাকে ধরে নিয়ে ন্যাড়া করে দিতো। বিশাল বেল মাথা নিয়ে আমি অনেক দিন ঘুরে বেড়িয়েছি।
লেখা
আজ্ঞে হ্যাঁ, দিলাম লাফ। কি আছে দুনিয়ায়।
ঠিক ঐ বিহারী সেলুনটাই আছে? হাফ ঘড়ির দোকান হাফ সেলুন? এঞ্জেল স্টেশনারীর পাশে? মনে হল দেখেছি দোকানটা উঠে গেছে। হতে পারে।
আমার মাথা কয়বার ন্যাড়া করা হয়েছিল। অতি লজ্জায় পড়েছিলাম, এমনিতেই দেখতে খারাপ তার উপর চুল নাই
..................................................................
#Banshibir.
ভাল্লাগ্লো। । আমি আর্মি কাট চুলই কাটি। ছোটবেলা থেকেই... বাড়ির ভেতর একটা ট্রেডিশন ছিল। তাই সে অভ্যেস এখনো যায়নি, এখনো তা বহাল তবিয়তেই আছে।
ডাকঘর | ছবিঘর
আর্মি ছাঁট আমারে একবারে মানায়না
..................................................................
#Banshibir.
হাত তো না, পুরাই মধু (গুড়) (গুড়) (গুড়)
আপনার গল্প বলার ঢং দেখে মুগ্ধ হলাম, ভাই।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
বিরাট শরমিন্দা করলেন ভাই
..................................................................
#Banshibir.
ছোটবেলা থেকে একজনের কাছেই চুল কাটাতাম, জীবনদা; তারপর বাসাবো ছেড়ে পুরনো ঢাকায় গৌরাঙ্গ দা; এখন কাজের চাপে কত জায়গায় চুল কাটাতে হয় কিন্তু জীবনদা আর গৌরাঙ্গদার হাত মাথায় এলে যেভাবে চোখে ঘুম নেমে আসতো তা আর হয়না। এখন থাকি মগবাজারে, টিউলিপে মাঝেমাঝে চুল কাটাই
রাগ করসুইন - এটা আমাদের কিশোরগঞ্জের ভাষা। আপনার লেখার হাত দারুন ..
আহ, টিউলিপ এখনো আছে তাহলে? চমৎকার। আমার জন্যে একটা পকেট ক্যালেন্ডার নিয়ে আইসেন।
..................................................................
#Banshibir.
কাদের ক্যালেন্ডার? টিউলিপের? করেছে কিনা জানিনাতো। কোথায় নিয়ে আসবো বলেন, দরকার হলে লোক দিয়ে পাঠিয়ে দেবোনে।
..................................................................
#Banshibir.
পীরবাবা অন ফায়ার!
অলওয়েজ
..................................................................
#Banshibir.
(গুড়)
চমৎকার লাগল, সেই সাথে মনে পড়ে গেল নাপিতের দোকানে যাবার স্মৃতিগুলো!
facebook
অংকে এম বি এ মানে কী? ফাইন্যান্স মেজর? তাহলে চিমটি!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বললাম আর কি। কোন মানে নাই।
ফাইন্যান্স মেজর না দাদা, একোনোমিক্স। তাও চিমটি দিলাম
..................................................................
#Banshibir.
ভালো লাগলো।
'আলী সাহেব বলেছিলেন, মাদাম স্বীকার করছি চেয়ার টেবিল নোংরা। কিন্তু আমরা তো চেয়ার টেবিল খেতে যাচ্ছিনা, খেতে যাচ্ছি খাবার। খাবার ময়লা না হলেই হল।'
কথাটা আলী সাহেব বলেন নাই, বলেছিলেন আবুল আসফিয়া।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
বুকে আসেন ভাই, আবুল আসফিয়া। ঠিক কথা, কতদিন পর নামটা শুনলাম। আসফিয়া ভাইয়ের আড়াই গজ লম্বা একটা নাম ছিলনা, ওইটা যেন কি?
..................................................................
#Banshibir.
ভালো লাগলো।ঠাকুরগাঁও এর মানুষ আমি। বিহারিরা এইখানে অনেক সংখ্যায় থাকে। ভালো চুল কাটে। আমি তাদের একজনের কাছে পুরো স্কুলজীবন চুল কাটিয়েছি।
বিহারিরা অনেক সংখ্যায় ঠাকুরগাঁয়ে থাকে? জানা ছিল না।
..................................................................
#Banshibir.
আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলেছি,আশেপাশের জেলাগুলো থেকে বেশিই থাকে।
একদম ছোটবেলায় হিন্দু নাপিত এসে চুল কেটে দিয়ে যেত। আমরা ছাদে বসতাম, এক এক করে নাপিত তার দুপায়ের হাঁটু দিয়ে আমাদের কানের দুপাশে চেপে রেখে চুল কাটতো।
অনেকদিন চুল কাটাই না, এখানে এসে মাথায় চুল কমে যাচ্ছে, কয়দিন পর আর চুল কাটার প্রয়োজনই থাকবেনা।
...........................
Every Picture Tells a Story
ভেবেই মজা লাগছে, দুই হাঁটুর মাঝখানে মাথা চেপে এক লোক আমার চুল কাটছে।
..................................................................
#Banshibir.
এই ছেলেটা তো দারুন ভাল লেখে ! আমি কেমন 'হা' করে তরতরিয়ে একটানে এর লেখা পড়ে যাই !!
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
এই আর কি
..................................................................
#Banshibir.
আমরা ছিলাম পাঁচ বন্ধু। সুজনের খোমাটাই কান্দুইন্যা টাইপের। আমাদের মধ্যে সেই প্রথমবার খেউরি করতে গিয়ে মদন হইলো। তারে যখন জিজ্ঞেস করা হলো, কতো নাম্বার মাইট? সে তরতরিয়ে জবাব দিলো, দুই। ব্যস, ঘরের বারান্দা থেকে দেখি রাস্তা দিয়ে সুজন কান্তে কান্তে আসে। আমরা বাকিরা ঘরের ভেতরে যার কাছে যা কিছু আছে নিয়া লুঙ্গি কাছা মারি, 'কোন হুমুন্দির পুতে তোরে মারছে খালি নামডা ক। আইজকা হোতায়ালামু না অরে!'
সুজন কান্দোইন্যা মুখেই একটা কাষ্ঠ ভেটকি দিয়া কয়, অক্করে হাইরালচেরে অক্করে হাইরালচে। পরবর্তী পাক্কা এক মাস সে মাথা থেকে টুপি খোলে নাই।
আমার গাঢ় বন্ধুত্ব হয় খুব কম মানুষের সাথে। তাঁদের মধ্যে, হিসাব করে দেখলাম দুয়েকজন বাসচালক থাকলেও নাপিতের সংখ্যাই বেশি। তাঁদের একজন মানিক, মানিক শীল। ফাইভ থেকে তার সাথে আমার চুলের পরিচয়। স্কুল থেকে ফেরার পথে জমিয়ে আড্ডা হতো তার ওখানেই। বড় হয়েছি সময়ের হাত ধরে। মানিকই আমার প্রথম দাঁড়ি কামিয়েছে। আমি যেবার প্রথম প্রবাসে যাই, ভেউ ভেউ করে কান্তেছিলো বলদটা। যেবার গেলাম, দেখে আবার কান্না। যত্ন করে চুল কেটে দিলো, দাঁড়ি কামিয়ে দিলো। মানিকের বাবাকে কাকা ডাকতাম, আমাকে দেখে দৌড়ে গিয়ে পরিমল ঘোষের বিখ্যাত দই-চমচম এনে দিলো।
এখানে এসেও কেমন কেমনে জানি আমার এক নাপিতের সাথেই দোস্তি হয়ে গেলো। এর নাম খালেদ। মধ্যপ্রাচ্যের। আচরণে, চেহারায় অসম্ভব অমায়িক। প্রথম প্রথম ওর আর আমার, দুইজনের ভাষা জ্ঞানই প্রায় দিগ্বিজয়ের কাছাকাছি ছিলো। কী করে যে কী বুঝাইতাম, আর সে যে কেমনে বুঝতো সব, আলাপে সেইসব উঠে এলে এখনও খ্যাখ্যাঠ্যাঠ্যা করে হাসি।
মাশাল্লা আমার চুলের যে মডেল। কতো নাপিতরে যে ফোরটিন জেনারেশন তুইলা গাইল পারছি, তার ঠিকানা নাই। জীবনে বহু নাপিতের কাছে চুল কাটাইছি। কিন্তু এই দুইজনকে আমার কাছে চুলের শিল্পী মনে হয়।
আপনের লেখার শেষের ৫-৭টা লাইন পুরাই ছিঁড়াবিড়ালাইলো!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হায় হায়রে করসেন কি। দুই?!!
হ দেশের মানুষগুলা বড় খাঁটি।
..................................................................
#Banshibir.
আপনার লেখার ভক্ত হয়ে যাচ্ছি।
খুব সুন্দর লেখা।
চলুক।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
আপনার এই লেখায় হিংসায় মন্তব্য করি নাই, কারনঃ
ছোটবেলায় শুনশান দুপুরে যখন অতীশ দীপঙ্কর রোড ধরে রিকশা যখন ঝড়ের বেগে চলতো, একটা জায়গায় দেয়ালের গায়ে একটা আয়না লাগানো ছিলতো। বাতাসে আয়না দুলতো, আয়নার ভিতরের পৃথিবী দুলতো।সেই আয়নায় মুখ দেখার শখ ছিল অনেকদিন। দুপুরে নাপিত ভাই থাক্তো না দেখে আমার বুঝতে অনেকদিন লেগেছিল যে অইটা একটা সেলুন। বহুদিন আমার কেটেছে সেই আয়নার রহস্য ভেবে।
রিক্তা
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
-আমি চুল কাটাই সাইন্স ল্যাবরেটরির কলেজ স্ট্রিটের গলির এক দোকানে ৯৮থেকে কাটাচ্ছি যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি। তখন কাটাতাম ১৫টাকা দিয়ে। এখন ৫০টাকা! লোকগুলা বড়ই ভালো! সুন্দর করে কেটে দেয়। গিয়ে বলতে হয় না কিরম চুল কাটবে।
-
---------------------
আমার ফ্লিকার
অটোয়া তে থাকা হয় নাকি ভাই?
নতুন মন্তব্য করুন