দেশে বিদেশেঃ পন্ডিতমশাই

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: রবি, ২৭/০৫/২০১২ - ১২:২০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার ছাত্রজীবন কেটেছে দুর্বিষহ যন্ত্রণার ভিতর দিয়ে। পিতামাতা উভয়েই শিক্ষক, আমি কোনদিন বাসায় গিয়ে বলতে পারিনাই যে টিচার আমাকে নাম্বার দেয়নাই। তারা দুজনেই হাঁ হাঁ করে ঝাঁপিয়ে পড়তেন আমার উপর, টিচার নাম্বার দিবেনা ক্যানো হ্যাঁ? তুমি কিছু লিখতে পারোনাই তাই নাম্বার পাওনাই ইত্যাদি ইত্যাদি। আপনারা সকলেই জানেন ক্লাস টেস্টের খাতা অভিভাবককে দিয়ে সাইন করিয়ে আনাটা ফরমালিটি মাত্র, অভিভাবক মাত্রেই উচিৎ চুপচাপ সই করে খাতা আবার ছেলেমেয়েকে ফিরিয়ে দেয়া। আমার পিতা তা না করে পুরা ছয়পাতা কষা অংক পড়তেন, তারপরে সই করতে করতে গম্ভীর স্বরে বলতেন, “পনেরোতে তিন দিল কেন বুঝলামনা, শুণ্য দেওয়া উচিৎ ছিল। সরল অঙ্কের উত্তর দুইশ পঁচাশি বাই সাতশ আঠাশ কিভাবে হয়।” পাষন্ড পৃথিবীর নির্মমতায় বালক সত্যপীরের চোখে তখন পানি।

আল্লাপাকের অশেষ রহমত আমার পিতাকে আমি শিক্ষক হিসেবে পাইনি। রক্তজল করা গম্ভীর প্রকৃতির শিক্ষক যাকে বলে তিনি তাই। মনে আছে একবার ছোটবেলায় আব্বার সাথে হেঁটে ডিপার্টমেন্ট থেকে টিচার্স লাউঞ্জে যাচ্ছিলাম, পথে এক ছাত্র আব্বাকে সালাম দিল। আব্বা মাথা নেড়ে উত্তর দিলেন। এবার ছেলেটি জিজ্ঞেস করল, স্যার পরীক্ষার খাতা কি দেখেছেন? আব্বা উত্তর দিলেন হুঁ দেখেছি। সে জিজ্ঞেস করলো, ইয়ে স্যার কেউ কি ফেল করেছে? আমি অবাক হয়ে ছেলেটির দিকে তাকালাম, নির্ঘাত ফার্স্ট ইয়ার, এখনো আব্বাকে চিনেনাই। আব্বা বললেন হুঁ করেছে। এইবার ছেলেটি জিজ্ঞেস করলো, স্যার পরীক্ষা দিয়ে ফেল করেছে নাকি পরীক্ষা না দিয়ে ফেল করেছে?

আমি মনে মনে ছেলেটির জন্য দোয়া পড়া শুরু করে দিলাম। মৃত্যুপথযাত্রী লোকের জন্য দোয়া করা সুন্নত। আব্বা গম্ভীর স্বরে ধমকে উঠলেন, পরীক্ষা না দিয়ে ফেল করে কিভাবে হ্যাঁ? এতক্ষণে ছেলেটি একটি খাঁটি বুদ্ধিমানের কাজ করলো, ইয়ে স্যার জ্বী স্যার ওকে স্যার স্লামালিকুম স্যার বলতে বলতে উল্টোদিকে ছুট লাগালো।

দুইটি দুর্ধর্ষ শিক্ষকের সন্তান হিসেবে শিক্ষক কোয়ার্টার এলাকায় শিক্ষক পরিবেষ্টিত হয়ে বড় হওয়া একটি খারাপ ছাত্রের জন্য অত্যন্ত পীড়াদায়ক ব্যাপার। আমি অনেক ছোটবেলায় ঠিক করেছিলাম যাই হই শিক্ষক হবোনা। সদাশয় আল্লাপাক আমার দোয়া মঞ্জুর করেছেন, অনার্স মাস্টার্স পরীক্ষায় এত সি ভরিয়ে দিয়েছেন যে শিক্ষক হিসেবে আমাকে উল্লাপাড়া হাইস্কুলেও নিবেনা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির ফাউন্ডেশন কোর্সটি নিতেন কামরুন নাহার তসলিম ম্যাডাম। এই শিক্ষিকাটি না পড়ালে অল্প যা অর্থনীতি বুঝি তাও বুঝতাম না। তার পড়ানোর স্টাইলটি ছিল অসাধারন, ক্লাসে এসে “এই ছেলেরা চুপ কর এখন আমরা পড়বো অমুক থিওরি” বলে চেঁচামেচি করে ক্লাসে নিরবতা আনার চেষ্টা না করে অনুচ্চ স্বরে পড়ানো শুরু করে দিতেন। সারা ক্লাস চুপ করে যেত নিমেষে। বই থেকে অল্প অল্প করে বুঝিয়ে বুঝিয়ে তিনি চমৎকারভাবে ক্লাস কন্ট্রোলে আনতেন আবার মুন্সিয়ানার সাথে সবচাইতে বলদ ছাত্রটির মাথাতেও পেরেক ঠুকে ঢুকিয়ে দিতেন তাত্ত্বিক ধারণাগুলো।

তার পাশাপাশি গাণিতিক অর্থনীতি পড়াতেন এক ছোকরা ম্যাডাম। কামরুন তসলিম ম্যাডাম শাকিব আল হাসান হলে এই ম্যাডামটি ছিলেন লোটাস কামাল। জনগনের হাসির পাত্র। ঢাবি প্রথম বর্ষ অর্থনীতি ক্লাসে ক্যালকুলাস শেখানো সহজ কর্ম নয়, ক্লাসে একই কাতারে বসে আছে বিজ্ঞান মানবিক ও বাণিজ্য শাখা হতে আগত ছাত্রছাত্রী। কারো অ্যাডভান্সড ক্যালকুলাস করা আছে, কেউ কেউ ইন্টিগ্রাল সাইনই চেনেনা।সুতরাং ম্যাডাম যখন চারপাতা জোড়া প্রুফ করাচ্ছেন যা আধ পাতায় এঁটে যায়, তাই দেখে আমরা ভারি পুলকিত হয়ে হাসতাম। একবার ম্যাডাম আমাকে দাঁড় করান, বলেন “এই ছেলে, থার্ড বেঞ্চ মিডল, দাঁড়াও।” আমি গুণলাম এক দুই তিন, আমারই বেঞ্চ। ডাইনে বাঁয়ে তাকালাম, দেখি দুই দিকেই লোক। তারমানে আমিই থার্ড বেঞ্চ মিডল। ম্যাডাম ধমক দিলেন, হাসছ কেন? আমি হাসি চাপার প্রাণপণ চেষ্টা করে বললাম হাসিনাই ম্যাডাম। তখন তিনি বললেন, রোল কত তোমার? সেদিন ক্লাসের দ্বিতীয় দিন, তখনো আমার রোল নম্বর পাইনি। ম্যাডাম বললেন নাম কি তোমার? তখন হল এক মজার কান্ড। যেমনটি বলছিলাম, তখনো সবাই নতুন আমরা কেউ কারো নাম তেমন জানিনা, আমার সামনে এক ছেলে বসে ছিল তার নামও ইমতিয়াজ। ফলে আমি ম্যাডামকে আমার নাম বলে দিতেই সামনের ছেলেটি লাফ দিয়ে আতঙ্কিত হয়ে বলতে থাকে “এই! এই!! আমার নাম কয়া দিসে!!! আমার নাম কয়া দিসে!!!”

ইকোনোমি অফ বাংলাদেশ কোর্সটি নিতেন আকাশ স্যার। টুপি পরা ছোটখাট মানুষটি একজন আদর্শ শিক্ষক। তিনি কোন নির্দিষ্ট বই ধরে পড়াতেন না, জিয়া রেজিম এরশাদ রেজিম প্রাইভেটাইজেশন ইত্যাদি পড়াতে গেলে প্রয়োজনীয় বইয়ের সংখ্যাও নিতান্ত অপ্রতুল। তাই তিনি ঘেঁটে ঘেঁটে জার্নালের আর্টিকেল, বইয়ের চ্যাপ্টার, পরিসংখ্যান চার্ট ইত্যাদি মিলিয়ে মিলিয়ে পড়াতেন। অন্যান্য কিছু রামছাগল শিক্ষকের মত সেই উনিশশো তিপ্পান্ন সালের চোথা বছর বছর পড়াতেন না তিনি মোটেই, তার চোথা প্রতিবছর আপডেট হত। পড়াতেনও গল্পের মতন করে, এখানে এটা হয়েছে ওখানে ওটা হয়েছে, এই হল পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার খসড়া আর দশ বছর পরে এই তার পরিসংখ্যান। কিছুই তিনি চাপিয়ে দিতেন না, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি কি মনে করছেন তা না বলে বরং জিজ্ঞেস করতেন আমাদের কি মনে হয় কি করা উচিৎ ছিল ইত্যাদি। তিনি গ্রুপ গ্রুপ করে প্রতিটি ছাত্রের সাথে টিএসসিতে লাঞ্চ করতেন বছরে একবার, খেতে খেতে চলত নানান বিষয়ে আলোচনা। তিনি প্রত্যেককে জিজ্ঞেস করতেন কেন পড়ছি কি আমাদের উদ্দেশ্য। ঢাবিতে এরকম আচরন আর কেউ করে বলে শুনিনি, থাকলেও নিশ্চয়ই হাতে গোণা।

আরেকটি দুর্দান্ত শিক্ষক ছিলেন বারকাত স্যার। উনার একটা মজার ব্যাপার, প্রতিটি ছাত্রকে তিনি আপনি করে বলতেন। এই লোকটি যেরকম পন্ডিত সেইরকমই রসিক। ক্লাসে এসে চেয়ারে বসে তিনি শুরু করতেন, “আজ হল সোমবার। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আমেরিকায় সোমবারেই আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। সব গাধার মতন খাটে, তাই উইকেন্ড শেষে সোমবার সকালে ভাবে উফ আবার কাজে যেতে হবে ধুর এই জীবনই আর রাখবোনা”। আমরা যখন হাসিতে মত্ত তখন তিনি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সেরে ফেলেছেন, আমাদের অ্যাটেনশন কেড়ে নিয়েছেন। এরপরে তরতর করে কেটে যেত এক ঘন্টা ক্লাস। নোট নেবার তেমন প্রয়োজন হতনা, তার কথাগুলো মনে এমনিতেই গেঁথে যেত।

আমি অনার্সের পর বাইরে যাবার ধান্দা করি যখন তখন রেফারাল দরকার হয়েছিল। ঢাবির শিক্ষকের চেহারা দেখার মতন হয় যখন তাদের দরজায় কেউ রেফারেলের জন্য গিয়ে দাঁড়ায়। হ্যাঁ হ্যাঁ বাবা পরে আসো সময় নাই কাজ করছি রেজাল্ট কি তোমার বাপের নাম কি দেশের বাড়ি কই কোন ভার্সিটিতে যাবা কেন যাবা ইত্যাদি নানান ভড়ং। বাপ একখান সইই তো চাইসি তোর মেয়ের ভালোবাসা তো চাইনাই। পড়াতে পারুক না পারুক সইয়ের বেলা এরা বড় হুঁশিয়ার। যাই হোক, তার মধ্যে যখন কোন শিক্ষক বলেন ভাই আমার লিখার সময় নাই আপনি লিখে আনেন লেটার আমি সই করে দিব তখন তাকে আলাদা করে চেনা যায় বইকি। কথাটি আমাকে বলেছিলেন বারকাত স্যার।

আরেকজন শিক্ষক এরকম আমাকে অপ্রত্যাশিত ভালো রেফারেল দিয়েছিলেন। তিনি বুড়ো মানুষ, ক্লাসে এসে যখন বলতেন “হ্যাঁ আজকে আমরা পড়ব উকুন’স ল” তখন আমরা হাসতে হাসতে গড়াগড়ি, তিনি ভয়ংকর ক্রুদ্ধ হতেন আর মাথা নেড়ে বলতেন না না বাবা এটা ঠিক না তোমরা মন দিয়ে পড়ো না কেন। তাকে নিয়ে নানান গল্প প্রচলিত ছিল, আমাদের এক বন্ধু কলাভবনের দোতলায় একবার তাকে সেলাম দেয়াতে তিনি উচ্ছসিত হয়ে পিঠ চাপড়ে বলেছিলেন “কি ভাই, ভালো আছেন তো?” আমাদের বন্ধুটি পালিয়ে বাঁচে। অথবা তাকে দেখা গিয়েছিল কলাভবনে রুমের দরজায় চাবি ঢুকিয়ে তালা খোলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন করেই যাচ্ছেন, দরজা আর খোলে না। আসলে তার রুম ঠিকই ছিল কিন্তু তিনি তিনতলার বদলে দুইতলার রুম খোলার চেষ্টা করছিলেন।

এই লোকটি দূর দূর করে তাড়িয়ে নেবার বদলে আমাকে ভেতরে বসিয়ে রেফারেল লেটার লিখতে বসলেন। এই ডিকশনারী টানেন, তো এই ঘ্যাঁস ঘ্যাঁস করে মাথা চুল্কে নেন, আর বিড়বিড় করে বলেন হি পাসড উইথ...কি যেন...ওই যে...পাসড উইথ...ওইযে কি যেন একটা কথা আছে না হ্যাঁ, বলে আমার দিকে তাকান। আমি ইংরেজীর কি ছাতা জানি, আমি বললাম ইয়ে স্যার কোন কথাটা। তিনি খুবই বিরক্ত হয়ে বললেন আরে একটা কমন ফ্রেজ, পাসড উইথ...ফ্লাইং কালার্স! আহা, দ্যাটস রাইট, পাসড উইথ ফ্লাইং কালার্স। এইরকম নানান সুন্দর কথা দিয়ে ভর্তি চমৎকার একটি রেফারেল লেটার তিনি আমাকে দিয়েছিলেন। উনি রিটায়ার করেছেন শুনেছি। স্যার ভালো থাকুন যেখানেই থাকুন, দুনিয়ায় ভালো মানুষের সংখ্যা নিতান্তই কমে যাচ্ছে দিন দিন।

অটোয়া তে চান্স পাবার পর দেখা গেল কোর্স বেছে নিতে কোঅর্ডিনেটরের কাছে যেতে হয়। গেলাম। স্যারকে আমি আর আমার বউ দুই নয়া ছাত্র বললাম স্যার এই হইল আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ড, এই এই কোর্স আমরা অনার্সে করেছি। তিনি কইলেন হুঁ। আমরা আরো বললাম স্যার আমাদের জীবনের লক্ষ্য এই আমরা এই এই সেক্টরে কাজ করতে চাই। তিনি কইলেন হাঁ। তারপরে গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন দেখ এই কোর্সটা বেশ ভালো, এই কোর্সটা মন্দ নয়, ঐ কোর্সটাও ভালো, এইটা...এইটা নতুন কোর্স। ভালোই হবার কথা। এই যে কোর্সটা, এইটার শিক্ষক বিলাত ফেরত। খুব নামকরা জার্নাল লিখিয়ে। আর এই কোর্সটা টিভিতে, বাসায় বসেও করতে পারবে। বাকিগুলাও বেশ ভালো কোর্স।

আমি আর আমার বউ ঘাড় চুল্কালাম কিছুক্ষন। সবই ভালো তো নিমু কোনটারে পাগল? সুকুমার রায়ের একটা ছড়া আছে ভালরে ভাল। সেইখানে তিনি ফিরিস্তি দিয়েছেন যে সবই ভালো। আসল ও নকল, গানের ছন্দ বা ফুলের গন্ধ, পোলাও কোর্মা বা মাছপটলের দোর্মা, কাঁচাপাকা, টাক অথবা টিকি, মেঘ মাখানো আকাশ অথবা ঢেউ জাগানো বাতাস ইত্যাদি সবই ভালো। তারপরে তিনি ফিনিশিং দিচ্ছেন এই বলে যে, “কিন্তু সবার চাইতে ভাল--পাউরুটি আর ঝোলা গুড়”। আমাদেরও এরকম ক্ষীণ আশা ছিল যে তিনি সবার শেষে বাৎলে দেবেন ঠিক কোন কোর্সটা পাউরুটি আর ঝোলা গুড়। দুঃখের বিষয় তিনি ঐপথে হাঁটলেন না, সব ভালো বলেই তিনি খালাস। সবাই কি আর সুকুমার রায়?

ইকোনমেট্রিক্স পড়াতেন এক মাঝবয়েসি মহিলা, ডে ক্যাথলিন। অসম্ভব অসম্ভব ভদ্র একটি মানুষ, মহিলা বিনয় মজুমদার যাকে বলে। নম্র স্বরে ধৈর্য্য ধরে তিনি সবচাইতে বেকুব প্রশ্নটিও মন দিয়ে শুনতেন, তারপরে বুঝিয়ে দিতেন কিভাবে কি কোথায় অথবা কেন। তবে এই মহিলাটিই ক্লাসে ঢুকে একবারে পাল্টে যেতেন। ঢুকেই যা পড়াচ্ছেন তাই লিখছেন, ইকুয়েশনের পরে ইকুয়েশন। বোর্ড ভর্তি হয়ে যেত, মুছে আবার শুরু। সচলে গুল্লি বলে একটা ইমো আছে, ভয়ালদর্শন একটি নেকড়ে অটোম্যাটিক অস্ত্র নিয়ে দাঁতমুখ খিঁচিয়ে ঠ্যা ঠ্যা ঠ্যা ঠ্যা করে গুলি করে যাচ্ছে। এই ম্যাডামও সেইরকম কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ইকুয়েশনের ব্রাশফায়ার শুরু করে দিতেন। আমরাও সমানে তুলে যাচ্ছি নোট। কেউ বুঝে তুলছি, কেউ না বুঝে তুলছি। কী মাথা চুল্কে তুলছি, কেউ নাকের পানি মুছতে মুছতে তুলছি। কেউ তুলবো কিনা ভাবতে ভাবতে তুলছি, কেউ তুলে কি হবে তাই ভাবতে ভাবতে তুলছি। তুলেই চলেছি। ম্যাডাম আবার না বুঝে রসিকতাও করতেন, পনেরো মিনিট পর পর থেমে অমায়িক কন্ঠে জিজ্ঞেস করতেন, এনি কোয়েশ্চেন? ক্লাসে তখন পিনপতন নিস্তব্ধতার বড়ভাই চিনিপতন নিস্তব্ধতা, একদানা চিনি পড়লেও তা শোনা যাবে। অটোয়ার ফেব্রুয়ারী মাসের ভয়ংকর ঠান্ডায় সকাল আটটার ক্লাসে শার্টপ্যান্ট যে উল্টো করে পরে আসিনি এই তো অনেক, এরপরে ইকোনমেট্রিক্সও বুঝতে হবে এ তো ভয়ানক নিষ্ঠুর আব্দার।

অটোয়ার ছাত্র হিসেবে একই শহরে কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়েও ক্লাস নেওয়া যায়। ঐখানে একটা কোর্স নিয়েছিলাম ম্যাক্রো অ্যাসপ্যাক্টস অফ ট্যাক্সেশন বলে। শিক্ষকটির নাম ভুলে গেছি, কিন্তু তিনি ছিলেন ক্যানাডিয়ান বারকাত স্যার। অসম্ভব রসিক লোক, বিজনেস সাইকেল চার্ট পড়ানোর সময় একটি তিনি বোঝাতেন, “মনে করো, তুমি স্কলারশীপ পেয়েছো এত ডলার, এরপরে তোমাকে ঐ দিয়ে চালাতে হবে দুই সপ্তা। তোমাকে এত টাকা বিয়ারের জন্য আলাদা রাখতেই হবে, কারন উইকেন্ডে পার্টি না করলে আর কিসের ছাত্র। তারপরে ধর গার্লফ্রেন্ড বাবদ এত, পরীক্ষার আগে রাত জেগে থাকার জন্য বা বীয়ারফেস্টে অ্যালকোহলের সাথে মিশানোর জন্য কিনে মজুদ রাখতে হবে এত টাকার রেডবুল, এছাড়া বিশ সেন্টের নুডলস প্যাক কিনে কাবার্ড ভরিয়ে রাখতে হবে লাঞ্চের জন্য। এইবার হাতে থাকল এত টাকা। এই হল সেভিংস। এইবার ব্যাপারটা ব্যক্তিপর্যায় থেকে সামাজিক পর্যায়ে চিন্তা করি...” ইত্যাদি বলতে বলতে এবার কঠিন থিওরি বুঝানো শুরু হয়। এই থিওরিটাই যদি অন্য কেউ বুঝাতো তাহলে এরকম পেরেক গাঁথা হয়ে ঢুকত না।

শিক্ষকতা কঠিন কর্ম। তাকে হতে হবে আলী সায়েবের মত জ্ঞানী, রাস্তার পাশের দাদের মলম বিক্রেতার মত শোম্যান, মার্ক টোয়েনের মতন বিজ্ঞ, চরম উদাসের মতন রসিক এবং বাংলাদেশের সাধারন মানুষের মতন ধৈর্য্যশীল। যারা শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নেন তাদের বেশিরভাগই দায়ে পড়ে, বা একটি মানসম্মত চাকরি হিসেবে নেন। কিন্তু তার ভিড়েই লুকিয়ে থাকে জ্বলজ্বলে তারার মত কিছু অসাধারন পন্ডিতমশাই যারা ছাত্রদের জীবন দাঁড় করিয়ে দেন আক্ষরিক অর্থেই। আমাদের স্কুলে ভাইস প্রিন্সিপাল ছিলেন নুরুদ্দিন বলে একজন স্যার, তার ক্লাস আমি বেশি পাইনি। কিন্তু মনে আছে একবার ক্লাসে ঢুকে তিনি জিজ্ঞেস করেছিলেন, আজকের চ্যাপ্টারটা কে কে বুঝেছ? ভালো ছাত্ররা হাত তুলল। এইবার তিনি বললেন, গুড। তাহলে আমি এবার বাকিদের বুঝিয়ে দিচ্ছি ব্যাপারটা।

এই হল প্রকৃত শিক্ষক, যিনি ক্লাসের সর্বশেষ ছাত্রটির দিকে মনোযোগ দেন।


মন্তব্য

বনের রাজা টারজান এর ছবি

এমন শিক্ষকের বড় ই অভাব সোনার এ বাংলাদেশ এ।

সত্যপীর এর ছবি

খালি সোনার বাংলাদেশে না সবজায়গাতেই রে ভাই। ভালো জিনিষ দুনিয়ায় অল্পই।

..................................................................
#Banshibir.

জ.ই মানিক এর ছবি

আপনের তো দেখি ঘরের শত্রু কী ভীষণ-বিভীষণ! দেঁতো হাসি
শিক্ষক যদি না হয় শিক্ষাগুরু, ফ্যাকড়া বাঁধে ভীষণ।
এবং মানুষের মাঝেই কিছু দেবতার বসবাস। বিনম্র শ্রদ্ধা, সেইসব ঋষিতুল্য শিক্ষাগুরুদের।

লেখা? চরমেরও অধিক।

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ।

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

এই হল প্রকৃত শিক্ষক, যিনি ক্লাসের সর্বশেষ ছাত্রটির দিকে মনোযোগ দেন। গুল্লি

(গুড়)
কিন্তু আপনি কেন তাহলে পরমার্থের উপরে মনোযোগ না দিয়ে চটলেন শয়তানী হাসি

সত্যপীর এর ছবি

ওরে নারে, আবার পরমার্থ!! মাপ চাই, জীবনানন্দের কবিতায় বিগ ব্যাং থিওরি বুইঝা আর কাম নাই ইয়ে, মানে...

..................................................................
#Banshibir.

ধুসর জলছবি এর ছবি

আপনার ছোটবেলার পরিস্থিতি তো খুবই ভয়ানক । খাইছে
এরকম অসাধারণ অল্প কিছু শিক্ষকদের জন্যই এখনও এদেশে শিক্ষাব্যবস্থা টিকে আছে।
চলুক চলুক চলুক

সত্যপীর এর ছবি

আর বইলেন না ভাই ভয়ংকর পরিস্থিতি হেহে খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

চলুক

স্মৃতিকাতর হলাম।

আর একটা কথা- "বাপ একখান সইই তো চাইসি তোর মেয়ের ভালোবাসা তো চাইনাই। " শিক্ষকদের নিয়ে এই পোস্টে এতো ইতিবাচক দৃষ্টিভংগি এসেছে যে এই লাইনটা যাচ্ছে না। বাক্যটা নিয়ে আরেকবার চিন্তা করা যেতে পারে মনে হয়!


_____________________
Give Her Freedom!

সত্যপীর এর ছবি

দরজা থেকে যখন খাড়া ভাগিয়ে দিচ্ছিলো তখন ঠিক ঐ কথাটাই ভেবেছিলাম মনে মনে, "আপনার মেয়ের ভালোবাসা চাইনাই" এরকম ভাবিনাই। সুতরাং বাক্যটি বদলে দিলে আমার সঠিক মনের ভাব কি হয়েছিল তাই নিয়ে ঠিক বলা হলনা। তাই রেখেই দিলাম যেরকম আছে। পোস্টে সকল শিক্ষকের প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক নয়। শিক্ষক অনেক রকম।

ধন্যবাদ।

..................................................................
#Banshibir.

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

ঠিকাছে বুঝলাম।


_____________________
Give Her Freedom!

সত্যপীর এর ছবি

দেশে গেলে ফ্রি ঝালমুড়ি খাওয়ানোর ডিল মনে আছে তো?

..................................................................
#Banshibir.

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

এখনো আমার ঐ পোস্টের স্বাদ মনে লেগে আছে, বিশেষত এ আরণেই দেশ বিদেশের সিরিজের নতুন পোস্ট দেখা মাত্রই লগিন করেছি। দেঁতো হাসি

মনে আছে দিব্যি মনে আছে। অণুদা, উদাসদা, পীরদা আপনাদের এই দেশটায় দেখতে বড্ড মুঞ্চায়...........


_____________________
Give Her Freedom!

ক্রেসিডা এর ছবি

সুন্দর লিখেছেন। ভালো লাগলো।

কোন শিক্ষক যদি লেখে এরকম: দেশে বিদেশে বান্দর স্টুডেন্ট; আমার নাম চউলা আইবো। ইয়ে, মানে...

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

সত্যপীর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

..................................................................
#Banshibir.

তাপস শর্মা এর ছবি

ক্যালকুলাস, অ্যাডভান্সড ক্যালকুলাস, ইন্টিগ্রাল সাইনইজোড়া প্রুফ, বিজনেস সাইকেল চার্ট কি বস্তু তা বুঝলাম না। মন খারাপ আমার বারো কক্ষে পড়ার সময় অর্থনীতি ছিল। হালায় আমি এম্নেই ম্যাথসে গবেট তারুপর বদ একটা স্যারের চক্করে পইড়া নিছিলাম সাবজেক্ট। ভাগ্য ভালো এটা আমার এডিশন্যাল সাবজেক্ট ছিল। নইলে সারছিল। ফাইন্যালে এক প্যাপারে- ৫৮ আরেক প্যাপারে- ৪৯ পাইয়া আর ২য় বার এই সাবজেক্ট নিয়ে কলেজে পড়ার গাটস দেখাইনি। খাইছে

যারা শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নেন তাদের বেশিরভাগই দায়ে পড়ে, বা একটি মানসম্মত চাকরি হিসেবে নেন।

বড্ড খাঁটি কথা বললেন। হয়তো আমিও একদিন তাই করব। বা বলা চলে করতে যাচ্ছি...... শিক্ষকতা করা আমার এইম ছিল না।

...... লেখাটা খুব ছুঁয়ে গেছে।

সত্যপীর এর ছবি

সাব্বাস, শিক্ষক হওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে গর্মাগরম পোস্ট দিয়েন কিন্তু।

..................................................................
#Banshibir.

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আমার শিক্ষকভাগ্য ভালো। খুবই ভালো। তাঁদের প্রতি মুগ্ধতার কল্যাণেই অনেকটা, আমি শিক্ষকতা করেছি, ভাবিষ্যতেও করতে চাই। আপনার লেখাটা ভালো লাগল।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সত্যপীর এর ছবি

পৃথিবীতে এক্সপ্রেসিভ শিক্ষক খুব প্রয়োজন, যারা শুধু জানবেই না বিতরণেও সমান পটু হবে। আপনার শিক্ষকতার মানসিকতাকে সেলাম।

..................................................................
#Banshibir.

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

বেস্ট ইন টিচিং = বেস্ট ইন স্টুডেন্ট লারনিং। দু:খজনক হলেও ছাত্র-ছাত্রীরা কতটুকু শিখলো তার দিকে নজর খুব কম শিক্ষকেরই থাকে।

লেখা ধারুণ লাগছে।

সত্যপীর এর ছবি

ঠিক কথা। এটা যে আর দশটা পেশার চেয়ে একটু ভিন্ন তা অনেকের মাথায় থাকেনা। আবার এই কারণেই ভালো শিক্ষকের মূল্য শতগুণ বেড়ে যায় কিন্তু, স্কেয়ারসিটি ইনক্রিজেস ডিমান্ড চিন্তিত

..................................................................
#Banshibir.

অমি_বন্যা এর ছবি

অনেক শিক্ষক দেখেছি ৪০ মিনিট সময় কেন জানি যেতে চাইতো না আবার অনেকের ক্লাস কেন ৮০ মিনিট হল না এই আক্ষেপ নিয়ে শেষ হয়ে যেত। এটাই একজন শিক্ষকের সার্থকতা। আজ সংখ্যায় এনারা যদিও অনেক কম। তারপরও ব্যবসা না হয়ে শিক্ষাদানই হোক শিক্ষকদের ব্রত এই কামনায় করছি।

ইমতিয়াজ ভাই,আপনার স্মৃতি চারণ অনেক ভাল লাগলো একেবারে এক নিমিষেই পড়ে ফেললাম।

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ অমি ভাই।

..................................................................
#Banshibir.

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

পুরনো একটা ব্যথা নতুন করে চাগিয়ে দিলেন। স্কুল লাইফে বিতর্কের স্ক্রিপ্ট লিখতে সাহায্য করার ফাঁকে নর্থ সাউথের নামকরা বিতার্কিক ও ইকোনমিক্সের ছাত্র মোখলেস ভাই ইকোনমিক্সের পোকা ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন মাথায়। এইচএসসির পরে ঘ বিভাগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে স্বপ্নকে জয় করার শপথ নিয়েই শুরু করেছিলাম ক্লাস। তখন কামরুন নাহার তাসলিম ম্যাডামের ক্লাস পেয়েছিলাম। উনার কাছ থেকে সবক নেয়া স্যামুয়েলসনের প্রথম দিকের চ্যাপ্টারগুলো কপচে এখনো কত তর্কের বৈতরণী পার হচ্ছি। সত্যিই ভাল পড়াতেন। ম্যাথ পড়াতেন নাঈমা নুসরাত। যেমন সুন্দরী (তখন তাই মনে হত, এখন চেহারা মনে নেই) তেমনি কড়া। আপনি কি উনার কথাই বলেছেন? রত্না আপা মাত্র অস্ট্রেলিয়া থেকে ব্যাক করেছেন। ফাকরুল ভাইয়ের এক্স ওয়াইফ হওয়ায়, বিতার্কিক হিসেবে রত্না 'আপা' ডাকতাম। আর বাকিরা যারা ম্যাডাম ডাকত তারা ঈর্ষান্বিত হত হো হো হো । আহা সেই ইকোনমিক্স! ছয়মাস ক্লাস করার পরে বাবা মা ঘাড় ধরে পাঠিয়ে দিল বাংলাদেশের প্রত্যন্ততম একটা মেডিকেল কলেজে- ডাক্তার না হলে নাকি আত্মীয় স্বজনের কাছে মুখ থাকছেনা। একনম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ১৩ নম্বর মেডিকেল কলেজে চলে যেতে হল। প্রেমিকার সাথে চটাচটি করে তাকে একটা শিক্ষা দিতে নিজেও রোমান্টিক হিরো সেজে চলে গেলাম, স্বপ্নের সাবজেক্ট আর কৈশোর থেকে ভালোবেসে ফেলা শিক্ষাঙ্গন পেছনে ফেলে। মন খারাপ

২০১০ এ আপনার ভার্সিটিতে গিয়েছিলাম, আমার একটা মাল্টিকান্ট্রি রিসার্চ প্রজেক্টের ফাইনাল রিপোর্ট শেয়ারিংয়ের জন্য। আমার প্রথম পিএইচডির সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল অটোয়া ইউনিভার্সিটিতে। প্রফেসর রন লাবন্তের আন্ডারে। অবশ্য আমার বর্তমান ডক্টরাল স্টাডিজের রেফারিও উনিই হয়েছেন। অনেক সুন্দর ক্যাম্পাস, আর সুন্দর শহর। আপনার সাথে পরিচয় থাকলে ঘুরে দেখা যেত হাসি

সত্যপীর এর ছবি

ঘ বিভাগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ? বাপরে আপ্নে দেখি কামেল লুক।

..................................................................
#Banshibir.

সাফি এর ছবি

আপনি কি গভঃ ল্যাবের ৯৮ ব্যাচের তৌফিক ভাই?

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

হায় হায়, এইভাবে হাটের মধ্যে মাইক লাগানর কি দরকার হাসি ? হ্যাঁ। ল্যাব ৯৮। 'তৌফিক ভাই' বলছো, ধরে নিচ্ছি আমার জুনিয়র, 'তুমি' করে বলছি। আমি কি তোমাকে চিনি? মেইল দিতে পার:

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

নাজমুন নাহার রত্মা হচ্ছেন আবৃত্তিকার-রাজনৈতিক নেতা আহকাম উল্লাহ্‌'র প্রাক্তন স্ত্রী, ফাকরুল ইসলাম চৌধুরীর নয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

ধন্যবাদ সংশোধনীর জন্য। লেখার পর আমারো সন্দেহ হচ্ছিল। উনারা যখন বিতার্কিক হিসেবে অলরেডি প্রতিষ্ঠিত তখন আমি মাত্র উঠতি। সে হিসেবে রত্না আপা স্নেহ করতেন। ২০০১ সাল থেকে কারো খবর জানিনা।

তিথীডোর এর ছবি

পনেরোতে তিন দিল কেন বুঝলামনা, শুণ্য দেওয়া উচিৎ ছিল। সরল অঙ্কের উত্তর দুইশ পঁচাশি বাই সাতশ আঠাশ কিভাবে হয়।

খাইছে হো হো হো

এই হল প্রকৃত শিক্ষক, যিনি ক্লাসের সর্বশেষ ছাত্রটির দিকে মনোযোগ দেন।

চলুক
সেটাই। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সত্যপীর এর ছবি

হাসেন ক্যা রেগে টং সব সরল অংকের উত্তর এক হওয়ারই বা মানেটা কি রেগে টং

..................................................................
#Banshibir.

তানজিম এর ছবি

আর কইয়েন না ভাই, রিকমেন্ডেশন চাইতে গিয়ে একবার নাকাল হবার দশা। তবে ভাল অভিজ্ঞতাও আছে।
এই লিখা ভাল হইসে(বেশিরভাগই হয় দেঁতো হাসি )
অট: আমাদের ব্যাচের একজন ঢামেক থেকে ইকনোমিক্সে গিয়েছিল আপনি কি সেই ব্যাচের?

সত্যপীর এর ছবি

আপনার কোশ্চেনে একটু আটকায় গেলাম, যতদূর মনে পড়ে একটি মেয়ে এসেছিল ঢাকা মেডিক্যাল থেকে কিন্তু শিওর না। হঠাত এই কথা আপনার মনে হইলো ক্যান বলেন তো?

..................................................................
#Banshibir.

তানজিম এর ছবি

আপনি ইকোনমিক্স বলাতে এই কথাটাই মনে হইল, কারণ আমাদের এখানে ২/৩ মাস ক্লাস করেই সে চলে যাওয়াতে অনেকেই অবাক হয়েছিল, আপনিও কি সেই ব্যাচের? সে পরে ইকোনমিক্সে কেমন করেছিল আর জানা হয় নাই।

বন্দনা এর ছবি

আমার ছোটবেলায় মাস্টারমশায় ছিলেন আমার ছোটমামা, কয় নিয়মে একএক্টা অঙ্ক করা যায় সেটা শিখাতে গিয়ে আমার মাথার তার বেড়াছেড়া লাগিয়ে দিত মন খারাপ । আর আমার বাবা রেজাল্ট কার্ড সাইন করার আগে আগের টার্মের চেয়ে কত কম পেয়েছি, হায়েস্ট মার্কের চেয়ে কত কম পেয়েছি এই গবেষনা করে সেটিসফেক্টরী হলে তবেই সাইন করতেন। বোঝেন এইবার ছোটবেলা থেকে কিরম পুলসিরাত পার হইতে হইতে এই এতদূর আসছি। আমার মত পুলসিরাত পার হওয়া এক দুই পিস দেখলে আমার বেশক লাগে, কেমন যেন আপন আপন লাগে।

সত্যপীর এর ছবি

পুলসিরাতের কথা আর বইলেন না বন্দনাপু, বিরাট ফাঁড়া পার করে আসছি স্কুল লাইফে। এতগুলি সাট্টিফিকেট কিভাবে যে যোগাড় হইল ভাবতে অবাক লাগে। কিছুই শিখিনাই কিন্তু কাগজে লিখা আসে আমি কতকিসু জানি খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

ইকবাল হোসেন এর ছবি

সত্যপীর ভাই, অটোয়া ইউনি তে আছি। আপনার সংগে পরিচিত হতে পারলে দারুণ লাগবে। লেখাতে, পাঁচ তারা।

সত্যপীর এর ছবি

অটোয়া ইউনি তে আমি আর নাই, এখন আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে হা হা হা। পড়াশুনা খতম!

..................................................................
#Banshibir.

নীড় সন্ধানী এর ছবি

পনেরোতে তিন দিল কেন বুঝলামনা, শুণ্য দেওয়া উচিৎ ছিল। সরল অঙ্কের উত্তর দুইশ পঁচাশি বাই সাতশ আঠাশ কিভাবে হয়।

আমার সরল অংকের উত্তরগুলোও সেরকম হতো। সরল অংকের মতো রসিকতা গাণিতিক দুনিয়াতে দ্বিতীয়টি নেই। হো হো হো

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সত্যপীর এর ছবি

সরল অংকের উত্তর সবসময় ১ হয় এইটা আমার আগেই বুঝা উচিৎ ছিল মন খারাপ

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

গাণিতিক সমস্যাটির নাম হচ্ছে 'সরল কর' বা 'সরল করণ'। সুতরাং এখানে আপনাকে একটা অত্যন্ত জটিল গাণিতিক এক্সপ্রেশন দেয়া হবে, যেটা সরলতম পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। ফলাফল ২৮৫/৭২৮ আসলে সরল করণ হয় না বলেই এতে "শূন্য" প্রাপ্য হয়। শিক্ষক সেখানে ৩/১৫ দিয়ে থাকলে খুবই উদারতা দেখিয়েছেন বলতে হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর এর ছবি

ওঁয়া ওঁয়া

..................................................................
#Banshibir.

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

আমার জীবদ্দশায় একবারই সরল অঙ্কের উত্তর ১ হয়েছিল, এস এস সি তে। অন্য সময় আগে নিচেয় ১ লিখে তারপর অংক করতে বসতাম। হাঃ হাঃ হাঃ
তবে একটা বিষয়ে আমি একটু সুখে ছিলাম, বাবা-মা দুইজন শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও আমারে কেউ পড়তে বলত না। আমি নিজের মন মত পড়তাম (এই জন্যেই হয়ত রেজাল্ট ভালো হয়নি।)। আর কোনমতে ২০ এর মধ্যে রোল রাখতে পারলেই খুশি ছিলাম।

লেখা পড়ে খুব ভালো লেগেছে। শিক্ষকতা পেশা হিসেবে নিইনি, কিন্তু পছন্দ করি এই মহান পেশাকে।

সত্যপীর এর ছবি

যাক আলহামদুলিল্লাহ, এসএসসিতে ভালো মার্কস পাইসেন তাইলে। সাব্বাস।

..................................................................
#Banshibir.

রংধনুর কথা এর ছবি

চলুক চলুক

অদৃশ্য এর ছবি

আসলেই পৃথিবীর সব ইউনিতেই ভাল শিক্ষকের অভাব। ইউবিসি তেও আমার মনে হয়েছে মাত্র তিনজন শিক্ষক চরম পড়ান। দুঃখের বিষয় যে তারমধ্যে একজনের টেনিউরশিপ হইলো না কারণ সে রিসার্চে তত আগ্রহী ছিলেননা।

আর ডি ইউ এর যে ছোকরা ম্যাডাম এর কথা বলতেসো, এখনকার পোলাপানদের কাছে শুনি যে সাইন্সের ছাত্রদের প্রথম ১৫ দিন ক্লাসে আসতে না করার পুরান অভ্যাস তার এখনো আসে !‍

চরম উদাস এর ছবি

চলুক
আঙ্গুল দেখায়ে বিদায় নিলাম। পরে কমু নে ঘটনা। আমি শিক্ষক হিসেবে কত আসাম ছিলাম সেই গপ্প খাইছে

সত্যপীর এর ছবি

হাত ব্যথা হয়া যাইব নামান। গপ্প শুনার জন্য গরম মাখনযুক্ত পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব্বি খুব্বি মজা আর ভাল লাগল।

সত্যপীর এর ছবি

হাসি

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার শিক্ষকদের অনেক অনেক সশ্রদ্ধ সশ্রদ্ধ সালাম।

আমার বাবাও শিক্ষক,এই রক্তজল ,গম্ভীর টাইপ এ আরকি। হাসি

সত্যপীর এর ছবি

তাই?

..................................................................
#Banshibir.

তানিম এহসান এর ছবি

আপনার নিজস্ব লেখাগুলোতে উইট অনেক বেশি থাকে, ভাল লাগে। লিখতে থাকুন, শুভকামনা হাসি

সত্যপীর এর ছবি

অনুবাদে হাতপা বাঁধা থাকে কিছুটা। কি আর করা, মারাত্মক কোন মৌলিক লিখার বুদ্ধিও আমার নাই, তাই এরকম আবজাব স্মৃতিচারণই ভরসা খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আপনার নিজেরও ধারণা নাই, আপনার আবজাব টাইপ লেখাগুলো কি অসাধারণ লাগে পড়তে!
সত্যি। হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

তানিম এহসান এর ছবি

চলুক

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

শিক্ষকতা কঠিন কর্ম। তাকে হতে হবে আলী সায়েবের মত জ্ঞানী, রাস্তার পাশের দাদের মলম বিক্রেতার মত শোম্যান, মার্ক টোয়েনের মতন বিজ্ঞ, চরম উদাসের মতন রসিক এবং বাংলাদেশের সাধারন মানুষের মতন ধৈর্য্যশীল।

(গুড়)

---------------------
আমার ফ্লিকার

সত্যপীর এর ছবি

চাল্লু

..................................................................
#Banshibir.

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

লেখা ভাল্লগসে! দেঁতো হাসি আমিও অনেক মারদাঙ্গা টিচার পাইসি! সেইগুলার গল্পও মনে হয় একাধিকবার করে ফেলসি। তাই আর কইলাম না! দেঁতো হাসি

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

সত্যপীর এর ছবি

আমি নয়া আদমী পুরান লিখা বেশি পড়িনাই, আপ্নের সচলগ ধরে পড়তে হবে।

..................................................................
#Banshibir.

সাইদ এর ছবি

নাহ ভাই আপনার কথা হয় নাই, আমার বাবার কাছে সই করা ফরমালিটি ছিল না। প্রতিবারই বেদম প্রহারসহ খাতা সই হত। এটা দশম শ্রেণী পর্যন্ত কোনরূপ বিরতি ছাড়াই হত।
আর রেফারেন্স লেটারের কথা কী বলব কোন শিক্ষক আমাকে রেফারেন্স লেটার দেয়ার যোগ্য মনে করেন নাই। তাই নিজের রেফারি নিজেই হয়ে গেছিলাম। মানেয় এক কথায় চুরি। যদিও শিক্ষকদের রেফারেন্স কতটুকু গুরুত্বপুর্ণ এটা নিয়ে আমি সন্দিহান। সম্ভবত পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিষ্ঠান গুলো বুঝে গেছে আমাদের রেফারেন্স লেটার আরোহণ করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে

সত্যপীর এর ছবি

একদম রেফারেন্স জাল করে জমা দেওয়ার ঝুঁকি আসে, বেঁচে গেসেন ভাই।

..................................................................
#Banshibir.

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

“পনেরোতে তিন দিল কেন বুঝলামনা, শুণ্য দেওয়া উচিৎ ছিল। সরল অঙ্কের উত্তর দুইশ পঁচাশি বাই সাতশ আঠাশ কিভাবে হয়।” হো হো হো
দারুণ, দারুণ এবং দারুণ লাগলো আপনার এই স্মৃতিচারণ। দেঁতো হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সত্যপীর এর ছবি

অনেক, অনেক এবং অনেক লজ্জা পাইলাম শিমুলাপা লইজ্জা লাগে

..................................................................
#Banshibir.

তারানা_শব্দ এর ছবি

পনেরোতে তিন দিল কেন বুঝলামনা, শুণ্য দেওয়া উচিৎ ছিল। সরল অঙ্কের উত্তর দুইশ পঁচাশি বাই সাতশ আঠাশ কিভাবে হয়।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

এই হল প্রকৃত শিক্ষক, যিনি ক্লাসের সর্বশেষ ছাত্রটির দিকে মনোযোগ দেন।

আমি এমন হতে চাই। হাসি

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

সত্যপীর এর ছবি

হয়ে যান ঝটপট!

..................................................................
#Banshibir.

সাত্যকি. এর ছবি

নীড়পাতায় প্রিভিউ পড়ে সেই যে দাঁত বের করলাম, এক্কেরে লিখার শেষপর্যন্ত মনিটরের সামনে দন্তপ্রদর্শনী চলতেই থাকলো।

সত্যপীর এর ছবি

হেঃ হেঃ, তাইলে আমার লিখা ক্লোজাপ টুথপেস্টের অ্যাডে ব্যবহার করি কি বলেন?

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি এর ছবি

গুরু গুরু

সত্যপীর এর ছবি

অ্যাঁ

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখার শিরোনাম দেখে প্রথমে আমার পণ্ডিতমশাই সিরিজের কথাই মনে পড়লো। পড়ে পুরো লেখা পড়ে ভালো লাগলো।

এরকম মজার স্মৃতিচারণ আরো পড়তে চাই।।।

সত্যপীর এর ছবি

নিশ্চয়ই ভাই। অনেক ধন্যবাদ।

..................................................................
#Banshibir.

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ভাল্লাগছে বস

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সত্যপীর এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস, সাড়াশব্দ কমায় দিসেন আজকাল...সব ঠিকঠাক?

..................................................................
#Banshibir.

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

এমনে সব ঠিকঠাক আছে। থিসিস লিখতেছি তো, মন্তব্য লেখা তাই খুব একটা হচ্ছে না, লেখা পড়ি, রেটিং মারি তারপর সটকে পড়ি। উইল বি ব্যাক সুন দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

Sonia এর ছবি

Hi Imti,
I hope you are doing great. Sorry I can’t write in English as I am at work now. You made me nostalgic and surprised as well. Never thought that...........this is You. Ami shobshomoy tomar lekha pori but “Shatyapeer” j tumi ta bujhini......... Ki j bhalo lagche bole bojhate parbo na....specially Du ar smriti gulo mone pore gelo......miss those days. Lekhata pore ak jholokei tomake chine fellam....shathe tomar osposhto chobitao akhon onek sposhto hoye uthlo..........khub bhalo lekha.......jodio shei kobe fele asha Du ar jonno monta kharap hoye gelo..... Barakat Sir ar kotha aktu na bollei noy. Ami jokhon take call kori baire ashar por..... j sir amar reference lagbe...uni thik amontai helpful chilen.....jodio ato bochor por phone a amake chenar kono karoni chilo na.....হাসি

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ সোনিয়া, ভালো আছো?

..................................................................
#Banshibir.

Sonia এর ছবি

Naima Nusrat Madam k chinte aktuo koshto hoy na.....lekhata pore....Toufique tomake ami chinte perechi.......tumi chile 1 yr junior...RMC te chole gesla jotodur mone pore....হাসি

এ. এম. আনিসুল হক এর ছবি

শিক্ষক নিয়ে আমার ভালো-মন্দ দুই ধরনের অভিজ্ঞতায় আছে| সেইদিকে না গিয়ে, আমার এক শিক্ষকের করা একটা করুন কমেন্ট এর কথা বলি| কম্পিউটার সাইন্স থেকে পাশ করার পর, ২০০৬ সালে আমাদের বিভাগীয় প্রধানের কাছে গিয়েছিলাম রেফারাল নেয়ার জন্য| আমি যেটা লিখে নিয়ে গিয়েছিলাম সেটা স্যার কিছুটা শুদ্ধ করে দিচ্ছিলেন; আচমকা জিজ্ঞাস করে বসলেন, বেতন কত পাও? আমি তখন ২১,০০০ এর মত পাই.... স্যার আমার উত্তরের অপেক্ষা না করেই বললেন, "যদি আমাদের (প্রফেসর) চেয়ে কম পাও তাহলে বুঝবা চাকরিটা ঠিক হই নাই"! আমি পরে জানতে পেরেছিলাম স্যারদের 'বেসিক' বেতনটা (অর্থাৎ, বাসা ভাড়া, চিকিত্সা .... এইসব বাদে) আসলেই আমার চেয়ে কম ছিল| সমাজে আমরা শিক্ষকদের এই মূল্যায়ন করি .... আর কমেন্টটি করেছিলেন আমার বিখ্যাত শিক্ষক, প্রফেসর মুহম্মদ জাফর ইকবাল!

সত্যপীর এর ছবি

মন খারাপ

..................................................................
#Banshibir.

শাব্বির আহমদ এর ছবি

বাইশের শেষ নাকি তেইশের শুরু? এমন একটা বয়সে একদম পেশাদার শিক্ষক হয়ে গেলাম। আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ কিছুদিন আগে বললেন, "আমরা একাল-সেকাল দু' কালেই মার খেয়ে গেলাম।" সেকালে শিক্ষকদের হাতে, একালে ছাত্রদের হাতে। নকল করতে নয়া দেওয়ার অপরাধে (!!!) ছাত্ররা গাড়ি চাপা দিয়ে মারেনি এই আমার ভাগ্য। কয়েকবার জানে বেঁচে গেছি। ফোনে হুমকি, সামনাসামনি গালিগালাজ তো ডালভাত। ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি টাইপ অবস্থা। আমার সুছাত্রদের অভিভাবকদের কথা নাই বললাম। একজন আল্লাহ প্রদত্ত কল্লাটাই পছন্দ করেছিল নেবার জন্য। কিন্তু তাও ছাড়িনি শিক্ষকতা।

নামাজ পড়তে ওজু করছি। পা ধোয়াটা বাকি। এদিকে পানি নাই। ইতি উতি খুঁজছি কোন ট্যাপে পানি পাবো, হঠাত অনুভব করলাম আমার পায়ে কেউ আজলা করে পানি ঢেলে দিচ্ছে, আমার ছাত্র। যখনই দুঃখ পাই, শিক্ষকতা ছেড়ে দেব চিন্তা করি, সেই ছাত্রটির কথা মনে পড়ে দুঃখ ভুলে যাই।

ধন্যবাদ সত্যপীর। সুন্দর লেখার জন্য।

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকেও। ভালো থাকুন।

..................................................................
#Banshibir.

কুমার এর ছবি

এহেম এহেম হো হো হো

সত্যপীর এর ছবি

গলায় খুসখুস করে? আদা চা খান চোখ টিপি

..................................................................
#Banshibir.

নিশা এর ছবি

পীর ভাইয়া, আপনি আমাদের বিভাগের জেনে খুব ভালো লাগছে। আমি ঢাবি থেকে এম এস করেছি দুই বছর আগে। নাঈমা আপা কিন্তু এখন আর ম্যাথ পড়ান না, public finance পড়ান। আর আকাশ স্যারের Economy of Bangladesh কোর্স টা থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছিলাম। আমি এখন ক্যালগেরী ইউনিতে আছি। আপনি যদি কখনো বেড়াতে আসেন, দেখা হলে খুব ভাল লাগবে। আপনার ইতিহাস সংক্রান্ত লেখা গুলো খুব ভাল লাগে সবসময়।

অতিথি লেখক এর ছবি

নিশা খুব মজা লাগছে এখানে economics এর সবাই কে পেয়ে। economics এর অনেক পুরনো পাপী ই তাহলে এখানে আছে দেখছি।হা হা হা। শুধু ফাকিবাজ আর খাতায় নাম লেখান ফাহিম কে এখানে দেখছি না।

সত্যপীর এর ছবি

এডমন্টন গেছি ক্যালগেরি যাওয়া হয়নাই। যেতে হবে সময় করে।

মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ নিশা, ভালো থাকুন হাসি

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

ইমতি আমি ভাল আছি হাসি

সোনিয়া

ধুসর গোধূলি এর ছবি
সত্যপীর এর ছবি

ধইন্যবাদ ধুগোদা, আছেন ভালো?

..................................................................
#Banshibir.

ইয়াসির এর ছবি

খুবই চমৎকার লাগলো আপনার স্মৃতিচারণ। আমার ব্যক্তিগত জীবনে অসামান্য কিছু শিক্ষকের দেখা পেয়েছি, যারা আসলেই গাধাকে মানুষ বানাতে পারতেন, তাঁরা আচার ব্যবহারেও ছিলেন অনুকরণীয়। সেইসব শিক্ষকদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ ইয়াসির ভাই।

..................................................................
#Banshibir.

সামি  এর ছবি

ইমতিয়াজ ভাই, আপনি অর্থনীতি বিভাগে কততম ব্যাচ এ ছিলেন? আমি ৪র্থ বর্ষে (২০০৮-০৯ সেশন,৮৮তম ব্যাচ), এখনো সব একই রকম আছে মোটামুটি! লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো!

আলতাইর এর ছবি

এক্সাম এর খাতা নিয়া বাড়ীতে ঢূকার লগে লগে ২টা শার্ট পইরা ফেলতাম। তারপরে বাপের সাইন নেয়ার পালা। তা সেইটাও আরেক মহাভারত। বাপের সামনে থাকতো খাতা, ডান হাতে কলম/ক্যাল্কুলেটর আর বাম হাতে ধরা থাকতো আমার কান! এখনো ডান কান ইক্টু বড়!

আর শিক্ষকদের কথা কি কমু? আমার সৌভাগ্য- তাঁরা আমার শিক্ষক। তাঁদের দুর্ভাগ্য- আমি তাঁদের ছাত্র!!!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।