একাকীই চলে গেল নিঃসঙ্গ জর্জ

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: মঙ্গল, ২৬/০৬/২০১২ - ৭:৩৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পায়ে হেঁটে রিকশা ভাড়া বাঁচিয়ে প্রায়ই সেবার কিশোর থ্রিলার, না হয় ক্লাসিক, নতুবা অনুবাদ কেনা হত প্রায়ই স্কুল জীবনে। একবার কাঙ্খিত বই না পেয়ে বেশ কিছু পুরাতন রহস্য পত্রিকা নিয়ে এসেছিলাম, বিশেষ করে একটার মলাটে অড্রে হেপবার্ণের ছবি দেখে। ঠিক মনে পড়ছে না, কিন্তু সম্ভবত সেই রহস্যপত্রিকাটির ভেতরেই ছিল গ্যালোপাগোস দ্বীপপুঞ্জের কিছু আলোকচিত্র নিয়ে দারুণ এক ফিচার। মহামতি ডারউইনের স্মৃতিধন্য দ্বীপগুলোর বিখ্যাত সামুদ্রিক গিরগিটি, সী লায়ন, উড্ডয়নে অক্ষম পানকৌড়ি, নীল পায়ের বুবি পাখি, ফ্রিগ্রেট পাখি এমনতরো প্রাণীগুলোর সাথে কচ্ছপের দুইটি ছবি। একটিতে খোলা প্রান্তরে কচ্ছপের দল, অন্যটিতে ট্যাঁঙ্কের মত অবিশ্বাস্য বিশাল আকৃতির এক একাকী কচ্ছপ! নিচে লেখা- নিঃসঙ্গ জর্জ নামের এক কচ্ছপটি পৃথিবীর বিরলতম প্রাণীদের একটি, সম্ভবত তার গোত্রের শেষ জীবিত সদস্য, প্রাণী বিজ্ঞানীরা বৃথায় সারা বিশ্বের চিড়িয়াখানাগুলো খুঁজে তোলপাড় করে ফেলছেন এর জুড়ি পাবার আশায়।

সেই প্রথম Lonesome Georgeর সাথে পরিচয়। মাঝে মাঝে তার খবর পেতাম মিডিয়াতে- খবরের কাগজে, তথ্যচিত্রে। কালের সাক্ষী বিশাল প্রাণীটা ঠিকই অসীম জীবনীশক্তির পরিচয় দিয়ে টিকেই রইল মানুষের অমানুষিকতা সহ্য করে। আমাদের বোকামি, আমাদের ধৃষ্টতা, আমাদের অহংকারের বলি হয়ে পৃথিবীর অন্যতম প্রবীণ প্রাণীটি টিকে গেল বেশ কবছরের জন্য,কিন্তু যে কোন প্রাণীর বেঁচে থাকা অন্যতম প্রধান যে উদ্দেশ্য ( অধিকাংশের ক্ষেত্রেই একমাত্র উদ্দেশ্য) তা পূরণের কোন উপায় পাওয়া গেল না।

সেই পাল তোলা জাহাজের দিনগুলির সময়ে শুনেছি নাবিকেরা প্রায় জনশূন্য দ্বীপে পানীয় জল ও খাদ্যসংগ্রহের জন্য নেমে বিনোদন নামে এক নিষ্ঠুর খেলায় মেতে উঠত, তা হচ্ছে দুইটি দলে বিভক্ত হয়ে কে কত বেশী কচ্ছপ উল্টিয়ে দিতে পারে, তখন মানুষহীন দ্বীপগুলোতে অনেক গুণ বেশী কচ্ছপ চরে বেড়াত আয়েশমত, হয়ত এক ঘণ্টার প্রতিযোগিতা চলল, কোন এক দল জিতে গেল কিছু কচ্ছপ বেশী উল্টিয়ে, তারপর?
তারপর তারা মানে মানে জাহাজে চেপে বসল। কিন্তু কচ্ছপগুলো? সেগুলো আর সোজা হতে পারবে না আপনা থেকে, তাদের কি হবে? কিছুই হবে না, তারা ক্রান্তীয় সূর্যের খরতাপে, ক্ষুধা, তৃষ্ণায় মৃত্যুবরণ করবে তিলে তিলে। এমন ভাবে কোটি কোটি কচ্ছপ খুন হয়েছে মানুষের ক্ষুধার নয়, উদ্ভট নিষ্ঠুরতার বলি হয়ে।

এমন ভাবেই সারা বিশ্বের দেশে দেশে নিষ্ঠুরতা আর বোকামোর ক্রমাগত ধৃষ্টতা দেখিয়েই চলেছি আমরা, যে প্রাণী, যে উদ্ভিদ যে অঞ্চলের নয় সেইখানে তার উপযুক্ততা কতখানি তা না বুঝেই ছড়িয়ে দিচ্ছি সারা গ্রহে। জর্জের বাসস্থান পিন্টা দ্বীপেও নিয়ে গিয়েছিলাম আমরা সর্বগ্রাসী ছাগল, যারা এই প্রজাতির কচ্ছপের খাদ্য সমস্ত উদ্ভিদ খেয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিল Chelonoidis nigra abingdoni, নামের প্রজাতিকে, এইসময় ১৯৭১ সালে এক হাঙ্গেরীয় বিজ্ঞানী অনুধাবন করতে পারেন – জর্জই তার গোত্রের শেষ বংশধর।

এর পরপরই থাকে চার্লস ডারউইন গবেষণাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়, জীবনের শেষ চারটি দশক সেখানেই জর্জ ছিল, আর তার যোগ্য সঙ্গিনীর খোঁজে বিজ্ঞানীরা দাপিয়ে বেড়িয়েছে সমস্ত পৃথিবী। অন্য প্রজাতির স্ত্রী কচ্ছপের সাথে জর্জের মিলনে ডিম উৎপন্ন হয়েছিল বটে, কিন্তু তা থেকে ছানা ফোটেনি, ফলে তার প্রজাতিকে ধরে রাখার সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হয়েই যায়।

২৪ জুন সম্ভবত হৃৎপিণ্ডের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে একাকী মারা যায় নিঃসঙ্গ জর্জ, তার বয়স হয়েছিল একশর বেশী। যদিও এর প্রজাতির কচ্ছপের আরও অনেক অনেক বছর বাঁচার কথা, কিন্তু হয়ত কোন অজ্ঞাত রোগেই নিজের সাথে সাথে সমস্ত প্রজাতিকে নিয়েই চিরবিদায় নিল জর্জ।

800px-Lonesome_George_-Pinta_giant_tortoise_-Santa_Cruz

( ছবিটি উইকি থেকে নেওয়া)

প্রিয় জর্জ,
সমস্ত মানব জাতির পক্ষ থেকে তোমার কাছি আমি ক্ষমা চাচ্ছি, জানি এই ক্ষমা প্রার্থনাতে তোমার আর কিছুই যায় আসে না, কিন্তু আমরা যে এমনই। নিজেদের দাবী করি সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী বলে কিন্তু কাজ করি সবসময়ই সবচেয়ে বোকার মত, যে ডালে বসে থাকি, সেই ডালই কাটতে থাকি গভীর মনোযোগে, নিজেদের একমাত্র বাসস্থান নীল গ্রহটিকে অপ্রয়োজনীয় দূষিত করেই চলেছি প্রতি মুহূর্ত, অথচ এই বাড়ীটি বসবাসে অযোগ্য হলে কি করব তা জানি না। জগতের সবচেয়ে নিষ্ঠুর প্রাণী আমরা, অন্য প্রাণী, অন্য প্রজাতি দূরে থাকে নিজেদের মাঝে সারাক্ষণ লড়াইয়ে লিপ্ত থাকি, কখনো ঠুনকো ক্ষমতা নিয়ে, কখনো কল্পিত অন্ধবিশ্বাস নিয়ে, শুধুমাত্র খুন করার আনন্দে আর কোন প্রাণী খুন করে কি? আমরা মানুষেরা করি, অন্য সব প্রাণীকে তো হত্যা করিই, নিজেদেরও করি।

তবুও আমাদের মাঝে অল্প কিছু মানুষ চেষ্টা করেছিল তোমাকে ধরে রাখতে, তোমার বংশধরদের এই সুন্দর গ্রহের বালুকাময় সৈকতে নিয়ে আসতে। তাদের কাজই আমাদের একমাত্র সান্ত্বনা, ক্ষমা কর আমাদের। বিদায় বন্ধু, বিদায় জর্জ---


মন্তব্য

সাইদ এর ছবি

আপনি বিশ্বাস করবেন কি না জানি না, আমি আপনার কাছ থেকে এই বিষয়ে লেখা আশা করেছিলাম।
আচ্ছা আপনি কি গ্যালাপাগোস দ্বীপে গিয়েছেন কখনও??

ভাল থাকবেন

তারেক অণু এর ছবি

না রে ভাই, এখনো যাওয়া হয় নি। ইকুয়েডরে ১৭০০ প্রজাতির পাখি থাকে, সেইগুলা আর গ্যালপাগোস দেখতে লম্বা সময়ের জন্য লম্বা হব।

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি

এমন না লিখতে হলেই ভাল

তদানিন্তন পাঁঠা এর ছবি

মন খারাপ সকালেই ফেবুতে দেখলাম আপনার স্ট্যাটাস। একটা ব্যপারে আমি একটু দ্বিধাম্বিত, যদি আলোকপাত করেন। আমার বেশ কয়েকটি পিচ্চি কচ্ছপ ছিল। তারা কিন্তু কচ্ছপের দৌড় হিসেবে যে আস্তে দৌড়ের কথা জানি তারচেয়ে অনেক বেশি জোরেই দৌড়ুত এবং উল্টে গেলে একা একাই সোজা হয়ে যেতে পারত। নাবিকদের উলটে দেয়া কচ্ছপ গুলো কী তাদের বিশাল আকার বা খোলের আকৃতির জন্য সোজা হতে পারত না এমন কিছু?

তারেক অণু এর ছবি

হতে পারে, আমাদের বাড়ীতেও কাছিম ছিল, যেগুলো ৮-১০ ইঞ্চি লম্বা ছিল সেগুলো উল্টে দলে আর সোজা হতে পারত না।

হিমু এর ছবি

কচ্ছপ উল্টে দিলে যদি আর সোজা হতে না পারে, তাহলে ক্ষুধাতৃষ্ণার আগে সে সূর্যের তাপেই মরে যাবে। কচ্ছপ সরীসৃপ, ঠাণ্ডা রক্তের প্রাণী, নিজের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মেকানিজম তার নাই।

তারেক অণু এর ছবি

সোজা হতে পারে কি আদৌ !

তাপস শর্মা এর ছবি

মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। ......

আমরা প্রতিটি মানুষ এক এক জন খুনি একদিক থেকে...

তারেক অণু এর ছবি

হ, কিন্তু সাজা তো হয় না।

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

বিদায় জর্জ।

সকালে পুরো ঘটনাটি পড়ে খুব কষ্ট পেয়েছি। আমি ঠিক জানি না তবুও একটা প্রশ্ন -আচ্ছা, ক্লোন করা যেতো না?

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

তারেক অণু এর ছবি

যেতে পারে, ডি এন এ নিয়ে রাখবে, কিন্তু সেটা কি স্বাভাবিক প্রজননক্ষমতা সম্পন্ন হবে? এইখানেই যত মুশকিল।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এইটা বলতে চাইছিলাম। ক্লোন করলে ১০০ ভাগ অবিকৃত সম্ভবত হবে না, যেহেতু এটি পুরুষ কচ্ছপ! কিন্তু ক্লোন করা যেত বোধহয়! চেষ্টা করা হয়েছে কিনা জানেন?
ডিএনএ নমুনা নিশ্চয়ই রেখে দিয়েছে!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তারেক অণু এর ছবি

তা রেখেছে, দেখা যাক পরে কি হয়।

অরফিয়াস এর ছবি

খবরটা দেখেছি, খারাপ লেগেছে, জানতাম ওর ব্যাপারে। মানুষ সব থেকে সভ্য ও বুদ্ধিমান প্রাণী, যারা এরকম বলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করে !!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু এর ছবি

এবং তারা বোকা, মহা বোকা।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

গতকাল রাতে টিভির খবরে দেখলাম, খুবই খারাপ লাগছিলো। মৃত জর্জের ক্ষুদে চোখদুটো কি যেনো বলে যেতে চেয়েছিলো। আমরা তথাকথিত সভ্যরা এইভাবে পৃথিবীর অনেক অনেক বৈচিত্র্য শেষ করে চলেছি। আমাদের দেখলে কুকুর-বাঘ-সিংহ-সাপ ভয়ে পালায়, আমাদের লজ্জা করা উচিত। মন খারাপ

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

তারেক অণু এর ছবি

মৃত জর্জের ক্ষুদে চোখদুটো কি যেনো বলে যেতে চেয়েছিলো। মন খারাপ

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বিদায় জর্জ! খারাপ লেগেছে খুব খবরটাতে। আপনার লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।

তারেক অণু এর ছবি

লিখতে না হলেই খুশী হতাম। ইয়ে, মানে...

স্বপ্নখুঁজি এর ছবি

মানুষগুলো যে কেন এত নিষ্ঠুর হয়। আর আপনি এত কিছু জানেন, অবাক লাগে। ভাল থাকবেন।

তারেক অণু এর ছবি

জানি না, আমাদের নিষ্ঠুরতার ভিতর দিয়েই যেতে হয়েছে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর, সেই কারনেও কিনা! কিন্তু তাহলে অন্যরা এমন হয় না কেন?
শুভেচ্ছা--

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

মানুষ নিষ্ঠুর তার শ্রেষ্ঠত্বের অহংকারে। আর অণুদার জানার চেয়েও বেশি অবাক হই এনার্জি লেভেল দেখে !! কোথা থেকে যে এত সময় পায়, এত এত ঘোরে, এত এত লেখে, কে জানে !!

আর হ্যাঁ, আপনাকে হাচলত্বের অভিনন্দন। দেখলেন তো আমার ভবিষ্যতবাণী মিলে গেল।

তারেক অণু এর ছবি

ভবিষ্যৎবাণী?

স্বপ্নখুঁজি এর ছবি

অণু ভাইজান, প্রদীপ্ত দা ভবিষ্যৎবাণীটা আসলে আমার হাচলত্ব নিয়ে করেছিলেন। তাঁর তো দেখি ব্যপক ভবিষ্যৎ জ্ঞান।

তারেক অণু এর ছবি

অভিনন্দন।

স্বপ্নখুঁজি এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ

স্বপ্নখুঁজি এর ছবি

ঠিকই বলেছেন , প্রদীপ্ত দা, আমিও বুঝে পাই না , অণু ভাই কেমনে কইরা এত কিছু করেন।

আপনার আন্দাজ সঠিক। হাচল তো দেখি হয়ে গেছি।
আপনাকে আবারও আনেক অনেক ধন্যবাদ

তারেক অণু এর ছবি

হেহ, যাই করতে চায়, বাকী থেকে যায়। জীবন এত ছোট ক্যানে!

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

কস্কি মমিন!

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

তারেক অণু এর ছবি

কি ঘটনা!

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

এত কিছু করার পরেও, এত মুল্লুক ঘোরার পরেও জীবন ছোট !!

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই। আর পৃথিবী অনেক বড়!

সচল জাহিদ এর ছবি

চলুক


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

তারেক অণু এর ছবি
টিউলিপ এর ছবি

খবরটা শুনে অবধি মন ভার হয়ে গেছে। মানুষের মত নৃশংস মনে হয় আর কোন প্রাণীই হতে পারে না। মন খারাপ

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

তারেক অণু এর ছবি

মনে হয় পারে না

যুধিষ্ঠির এর ছবি

এই কাহিনী জানতাম না। লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।

তারেক অণু এর ছবি

মিডিয়াতে এসেছে গত কয় দিনে

ক্রেসিডা এর ছবি

চলুক

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

তারেক অণু এর ছবি
হিমু এর ছবি

অ্যাটেনবুড়োর লাইফ ইন কোল্ড ব্লাডের শেষ প্রোগ্রাম, আরমর্ড জায়ান্টসে লোনসাম জর্জের ওপর খানিকটা আছে।

তারেক অণু এর ছবি

ডেভিডকে বুড়ো বলে আপনি আমার ধর্মানুভুতিতে আঘাতে দিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে। রেগে টং

দেখেছি এইটা , মুক্তি পাবার পরপরই।

তানিম এহসান এর ছবি

আমরা মানুষেরা করি, অন্য সব প্রাণীকে তো হত্যা করিই, নিজেদের করি।

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

এরকম বহু প্রাণীই তো চলে গেল, আমার প্রিও বাঘেরা ও চলে যাবার পথে, একদিন সব যাবে শবযাত্রায়, শুধু থাকবে মানুষ, আর থাকবে অনেক অনেক টাকা!!! সেদিন মানুষ বুঝবে যে টাকা চিবিয়ে থাকা যায়্না!!! এরকম ই বলেছিলেন এক মহান নেটিভ আমেরিকান চীফ!!

হাসান_ওনসা

তারেক অণু এর ছবি

হুম, অসাধারণ দূর দৃষ্টি সম্পন্ন কথা।

অনেক আগে পড়েছিলাম, বিশ্বের শেষ মাছ, শেষ গাছ, শেষ প্রাণীটি শেষ হয়ে গেলে তবেই আমরা বুঝব টাকা খেয়ে বাঁচা যায় না।

ক্রেসিডা এর ছবি

সেইদিন আর কি, মানুষ প্রকাশ্যে মানুষকেই খাবে!!

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

তারেক অণু এর ছবি
দিগন্ত এর ছবি

অসাধারণ লেখা, শুধু কচ্ছপ নয়, জীবজগতের অধিকাংশ প্রজাতির সাথেই যেন আমাদের শত্রুতা।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

তারেক অণু এর ছবি

হা, নাহলে এই ধর, মার, খাও কিসের জন্য।

দুর্দান্ত এর ছবি

আজদহা কাছিমের ভাগ্য শুরু থেকেই খারাপ। এর নামকরন হইতেই লাগছে তিনশ' বছর। কারন কি? এর কারন এই এতদিনে এর একটা আস্ত স্পেসিমেন লন্ডনে আনা যায় নাই। তার কি কারন? কারন হইল এর গোস্ত এতটাই সোয়াদের সে আর বলতে। ফ্রাই ও তার দলের থেইকা শুনেনঃ

তারেক অণু এর ছবি

মন খারাপ শালার মানুষের খাওয়ার গুষ্টি কিলাই।

সুমাদ্রী এর ছবি

খবরটা আল-জাজিরায় দেখে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। প্রতিদিন হয়ত কোথাও না কোথাও কোন একটা প্রজাতি শেষবারের মত নীল আকাশটার দিকে চেয়ে থেকে মরে যায়, চিরতরে হারিয়ে যায়। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও একটা ভাষার মৃত্যু ঘটছে। জর্জের জন্য রইল শ্রদ্ধা । একদিন রাপা নুইদের মত আমরাও হয়ত হারিয়ে যাব।

অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।

তারেক অণু এর ছবি

হুম, রাপা নুইরা নিজেরদের দ্বীপের সব গাছ কেটে ফেলেছিল, আমরাও ফেলছি। তারা সাথে করে নিয়ে গিয়েছিল ইঁদুর, আর আমরা তো নিচ্ছি সবকিছুই।

Guest_Writer নীলকমলিনী এর ছবি

খবরে শুনেছিলাম। লেখাটি পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। আমার নুইইয়র্ক এর বাড়ী বনের ধারে, বন থেকে প্রায়ই বেশ কয়েকটা হরিণ আসে। লনে ঘুরে বেড়ায়, আমাদেরকে প্রথম প্রথম ভয় পেলেও এখন আর ভয় পায় না।
আমাদের বাড়ীতে বেড়াতে এসে হরিণ দেখে অনেকেই প্রশ্ন করে, আপনারা হরিণ মারেন না? হরিণের মাংস খেতে খুব মজা।
এত সুন্দর একটি প্রাণীকে দেখে কি করে প্রথমেই খাবার কথা মনে হয়?

তারেক অণু এর ছবি

! জানি না, আছে মানুষ এমন, এবং আমাদের সমাজে হয়ত এই ধরনের মানুষই বেশী।

অমি_বন্যা এর ছবি

লেখা পড়ে জর্জের যে ইতিহাস জানলাম আল জাজিরায় দেখে ঠিক ওরকম কিছু বুঝিনি কারন তেমন গুরুত্ব দেয় নি। আজ লেখা পড়ে ওই নিউজের গুরুত্বটা বুঝতে পারলাম। লেখক হিসেবে এটাই মনে হয় সার্থকতা । ভাল থাকবেন অনু ভাই। আরও অনেক নতুন আর অজানা অনেক কিছুই জানাবেন সেই প্রত্যাশায় থাকলাম। লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।

তারেক অণু এর ছবি
বন্দনা এর ছবি

একটা প্রজাতির শেষ একজন হিসেবে বেঁচে থাকা ও অনেক কষ্টের নিশ্চয়।
যেসব মানুষেরা এইসব বিরল প্রজাতির প্রানীগুলাকে টিকিয়ে রাখতে অবিরত চেষ্টা করে যাচ্ছেন তাদের জন্য শ্রদ্ধায় আমার মাথা নত আসছে।

তারেক অণু এর ছবি

চেষ্টা চলছে অনেক কিছুই টিকিয়ে রাখার জন্য, দেখা যাক কতদূর পর্যন্ত সম্ভব হয়।

রংধনুর কথা এর ছবি

চলুক চলুক

তারেক অণু এর ছবি
উজানগাঁ এর ছবি

আপনার গদ্য দিন-দিন ধারালো হচ্ছে। এই লেখাটা তার একটা উৎকৃষ্ট প্রমাণ। পুরো লেখাটায় আপনার আবেগটা টের পাওয়া যায়। খুব ভেতর থেকে শব্দবন্ধ তৈরি না হলে সেটা হয় না কখনো। লেখাটা কালকে রাতেই পড়েছিলাম কিন্তু সময়াভাবে সেটা জানানো হয় নাই। এখন জানিয়ে গেলাম।

ভালো থাকবেন।

তারেক অণু এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ ভাই, আপনার নতুন ছবি কই!

ভালো থাকবেন আপনিও।

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

আমি কখনোই প্রাণি পোষার পক্ষেছিলাম না, কিন্তু "লোটা কম্বল" পড়ার পর থেকে মনে মনে আমার একটা কচ্ছপ ছিলো যার নাম বলাই। কোনো কারনে মন খারাপ লাগলে মনে মনে সেই বলাইএর সাথে কথা বলতাম। জর্জের কথা আমিও প্রথম পড়েছিলাম রহস্য পত্রিকাতে।
খুব মন খারাপ লাগছে বিশেষ করে মিডিয়াতে জর্জের মৃত্যুদৃশ্যের বর্ননা যেমন করে লিখেছে সেটা পড়ে। কী অদ্ভূত নিঃসঙ্গতায় তার সময় গুলো কেটেছিলো। কেন জানিনা, আজ ডাকলেও বলাইবাবু আসছেনা, মনে হয় তারও মন খারাপ। মন খারাপ

তারেক অণু এর ছবি

বলাই কে নিয়ে ছবিসহ একটা পোস্ট দিনে, ভাল হবে,

এ ইউসুফ এর ছবি

সব প্রাণী সব উদ্ভিদ মানুষকে সেলাম জানিয়ে অন্য গ্রহে বিদায় নিলে মানুষ খুব ভালো থাকত। 'দুঃখিত দাদা, তোমাদের জন্য এ গ্রহ বানানো, আমরা ভুল করে এসে পড়েছি, অনেক বিরক্ত করলাম। ভালো থেক...'।

এ ইউসুফ এর ছবি

আগের মন্তব্যের সাথে আর একটু যোগ করি। সব প্রাণী উদ্ভিদ যখন বিদায় নিবে, ততদিনে মানুষের বোধ বুদ্ধি আর একটু বেড়ে যাওয়ার কথা। ততদিনে প্রযুক্তি ও এগিয়ে যাবে। মানুষ শিখবে কিভাবে নিজেকে গাছ বানিয়ে সৌর শক্তি আটকানো যায়। মানুষ ততদিনে জানবে প্রতিটা প্রাণী উদ্ভিদের উপযোগিতা। কিছু মহান মানুষ নিজেদের উৎসর্গ করবে মনুষ্য জীবন বাদ দিয়ে গাছ হয়ে অথবা মাছ হয়ে। অন্যরা হুকুম তামিল করবে- 'দল, কচ্ছপ হবে; কচ্ছপ হও!'। আবার পৃথিবীতে বাস্তুসংস্থান পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হবে। আবার মানুষ গাছ কেটে কাগজ বানিয়ে টাকা ছাপবে, আবার মানুষ কচ্ছপ উল্টাবে।'
তখন ও বোধ হয় যারা মানুষ থেকে যাবে তারা বুঝবেনা আমরা সবাই এক... একই অস্তিত্ব...

তারেক অণু এর ছবি

আমরা তো জানতাম এক সময়ে, এখন সব ভুলে যাচ্ছি, বা যাবার ভান করছি,

নিটোল এর ছবি

লেখা ভাল্লাগলো। হাসি

_________________
[খোমাখাতা]

তারেক অণু এর ছবি

আমার কিন্তু লিখতে ভাল লাগে নি মন খারাপ

উচ্ছলা এর ছবি

এমন মায়াভরা লেখা অণু ছাড়া আর কে লিখবে ?

চলুক চলুক

তারেক অণু এর ছবি

আর মায়া !

ফাহিম এর ছবি

কিছু বলার নেই। দু:খ বাড়ে শুধু।

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

তারেক অণু এর ছবি

অস্বাভাবিক এর ছবি

কষ্ট লাগছে জর্জের জন্য মন খারাপ মানুষ এত নিষ্ঠুর কেন !

তারেক অণু এর ছবি

কেউ জানে না, আর এটাও জানে না এত মূর্খ কেন।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ব্যাপার না, সকল প্রাণী শেষ করে তারপর আমরা একজন মানুষ আরেকজন মানুষের মাংস খুলে খুলে খাবো...
অবশ্য সেই পর্যন্ত কেয়ামত ঠেকাতে পারলে হয়

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তারেক অণু এর ছবি

হুম,

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

দুর্ভাগ্য আমাদের। অন্যদের স্বার্থটা নাইবা বুঝলাম, নিজেদেরটা বুঝলেও তো অন্যরা ঠিক বেঁচে যেত।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

তারেক অণু এর ছবি

এতখানি বুদ্ধিমান কি হবে কোনদিন মানবজাতি!

কড়িকাঠুরে এর ছবি

কী বলা যায়...

এই দুপেয়ে- এরা এত উজবুক কেনো???
আমরা কথায় কথায় এখন বিকল্প চিন্তা করি-
বিকল্প শক্তি- বিকল্প জ্বালানি- বিকল্প আবাস- বিকল্প হ্যানত্যান- আব্দুল কুদ্দুস...
আসলকে বাঁচানো- লালন পালনে আমরা কোথায়...

দুঃখিত জর্জ ও এভাবে আরও যারা আমাদের খেলনার সামগ্রী হয়ে হারিয়ে গিয়েছে - লজ্জিত...

তারেক অণু এর ছবি

বিকল্প জীবনের কথা বাদ রাখলেন কেন!

আমরা হচ্ছি পাজী নচ্ছার, এক দেশের মানুষ খাইতে পায় না, আরেক দেশ প্যাচায়ে প্যাচায়ে হাগে। একদেশের ৩০ কোটি লোক মিলে যে দূষণ করে অন্য ১০০ দেশের ৪০০ কোটি লোক মিলেও সেইটা করে না, কিন্তু কিছু থামান যাবে না তাহলে মার্কেট লাভবান হবে না !

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

অণুদা ঠিক কতটা খারাপ লাগছে বলে বোঝাতে পারব না।

জর্জের জন্যে শ্রদ্ধা

তারেক অণু এর ছবি
আশফাক আহমেদ এর ছবি

মন খারাপ

-------------------------------------------------

ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

কষ্ট লাগছে জর্জের জন্য মন খারাপ আমাদের দেশেও মানুষ বন্য প্রানির প্রতি এমনই নিষ্ঠুর , যদিও অনেক তরুণরা এখন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে ভূমিকা পালন করছেন , আশা করি প্রাণিজগতের এই বিশাল বৈচিত্র্য সংরক্ষণে সবাই সচেতন ও উদ্যোগী হবেন ।

তারেক অণু এর ছবি

অনেক দেরী হয়ে যাচ্ছে---

অতিথি লেখক এর ছবি

কথা সত্য মন খারাপ

তারেক অণু এর ছবি

তারপরও চেষ্টা করে যেতেই হবে, শেষ পর্যন্ত।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।