কী করে ভ্রমণ করবেন ?

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: শনি, ২৭/১০/২০১২ - ৬:৫৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সচলায়তন এবং নানা খবরের কাগজে নিজের টুকটাক অনুল্লেখযোগ্য ভ্রমণ নিতান্তই নির্লজ্জ আত্মপ্রচারের জন্য প্রকাশ শুরু করার পর থেকেই আজ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী সংখ্যক পরামর্শ যে বিষয় নিয়ে লেখার জন্য পেয়েছি তা হচ্ছে ভ্রমণ শুরু করবেন কি করে তার উপরে আলোকপাত করতে। আর যে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি তা হচ্ছে- হৈ মিয়াঁ, এত এনার্জি, সময় আর টাকা আসে কোথা থেকে? অনেক সময়ই ভেবেছি কোন এক অবসরে গুছিয়ে লিখব এই নিয়ে, কিন্তু সেই অবসর আর মিলে না, ঘুরতে গেলে সেখানে ব্যস্ততা আরও বেশী! তাই এই চটজলদি বিরতির মাঝেই জলবৎ তরলং করে একান্ত নিজের মত করেই বলি ব্যাপারখানা—

অবশ্য অনেক ভ্রমণবিদের পথপ্রদর্শকগ্রন্থ বিখ্যাত পরিব্রাজক রাহুল স্যাংকৃত্যায়নের ভবঘুরে শাস্ত্র পড়ে দেখতে পারেন, আমিও পড়েছি অনেক আগ্রহ নিয়ে। সেখানে ভবঘুরের হতে হলে প্রথমে ইচ্ছা ব্যতীত কোন কিছু প্রয়োজন নেই বলা হলেও পরে নানা অধ্যায়ে যে সমস্ত গুণাবলী আয়ত্তে আনার সুপরামর্শ দেওয়া হয়েছে ( সেলাই, রান্না, গান, নাচ, ভাষা শিক্ষা, কায়িক পরিশ্রমে অভ্যস্ত হওয়া, যে কোন পেশাকে স্বাগত জানানো) সেগুলো যথার্থই পথচলার তাগিদে শেখা থাকা অতি অতি অত্যুত্তম, কিন্তু আমার মনে হল আরে ভাই, এতই যদি সকল কাজের কাজী হব তাহলে আর ভবঘুরে হওয়া কেন? রাহুল অবশ্য খাইশুইঘুরফির টাইপের ভবঘুরের কথা বলেন নি, বলেছেন গৌতম বুদ্ধ, চার্লস ডারউইন, কলম্বাস ধরনের ভবঘুরের কথা, কিন্তু সেরকম হওয়া কি আর রাস্তায় বেরোলেই হয়! কাজেই দুনিয়া পরিবর্তনের আশাতে নয়, যুগের নায়ক হবার জন্যও নয়, কেবলই হয়ত নিজের উপভোগের জন্য কিভাবে ভ্রমণ করা যেতে পারে সেই নিয়ে একটুআধটু পাকনামি করি, চলুন মাঠে নামে যাক-

ভ্রমণের মূল কথা, এক্কেবারে প্রথম শর্ত এবং সূত্র- পথ চলার জন্য টান থাকতে হবে, সত্যিকারের ভালবাসার মত, পোড় খাওয়া সারেং-এর মনটা যেমন সমুদ্দুরে না ভাসলে খাঁ খাঁ করে, তেমনটা আপনারও করলে বুঝবেন- খবর আছে, পৃথিবী ডাকছে , এখন ঝোলা ( অধুনা ব্যাকপ্যাক) কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে পড়ার সময়।

কিন্তু কোথায় যাবেন, কেন যাবেন, কি দেখবেন?

এই উত্তর বাহির করতে হবে আপনার নিজেকেই। ছোট বেলায় এক মামা বলতেন ভাগ্নে- পৃথিবী এক আজব জায়গা- কেউ মদ বেঁচে দুধ খায়, আবার কেউ দুধ বেঁচে মদ খায়। কাজেই চাওয়া টা আপনার নিজের উপর, হতে পারে আপনি আমাদের ওডিনদার মত হিমালয় প্রেমিক- পৃথিবীর সব জায়গার চেয়ে ভুটানের কমলা বাগিচাময় উপত্যকা আর তিব্বতের গুম্ফা আপনাকে বেশী টানে, হতে পারে আপনি সারা জীবনে একবার হলেও লাগ ভেগাসে যেয়ে ক্যাসিনো খেলতে চান, ফাহিম ভাইয়ের মত হয়ত আমাজনের বৃষ্টি অরণ্য আপনাকে সবচেয়ে বেশী আকৃষ্ট করে, অথবা ধু গো দার মত মিউনিখের অক্টোবর ফেস্ট, আবার হয়ত তারেক অণু এবং সবজান্তার মত জীবনে একটাই লক্ষ্য আছে আপনার- কোন এক চাঁদনী রাতে মানস সরোবরের পাশে বসে হেঁড়ে গলায় সঙ্গীত চর্চা করা।

মূল কথা ঘোরার উদ্দেশ্য নিজের কাছে – কেউ জাদুঘর পছন্দ করে, কেউ প্রকৃতি পছন্দ করে, কেউ পানশালা পছন্দ করে, কেউ অট্টালিকা পছন্দ করে, কেউ কেউ আবার সবই একসাথে পছন্দ করে। যে নেপালে সারা বিশ্ব থেকে মানুষ আসে হিমালয় দর্শনে সেই নেপালেই লাখ ট্যুরিস্ট যায় ক্যাসিনো আকর্ষণে। কাঠমান্ডুতেই এক বন্ধুর সাথে একচোট হয়ে গিয়েছিল হলে যেয়ে সিনেমার দেখতে চাওয়ায়, বেচারার দোষ না, সে প্রেক্ষাগৃহে যেয়ে সিনেমা দেখতে চাইতেই পারে, কিন্তু তার চেয়ে নাগার্জুনের বনে যেয়ে পাখি দেখে আমার কাছে বেশী উপভোগ্য মনে হয়েছিল।

কাজেই কি দেখবেন এবং কেন দেখবেন সেটি আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।

কিন্তু জানবেন কি করে? হ্যাঁ, এই বিষয়ে জীবনের প্রথম যখন বাংলাদেশের বাহিরে গেছিলাম ( একা একা দিল্লী পর্যন্ত) তখন থেকেই আমার সাথী LONELY PLANET এর গাইড বই, সেটি একাধিক বার আসলেই জীবনরক্ষার মত তথ্য দিয়েছে বিদেশবিভূঁইতে, এখন বেশী তাড়াহুড়ো থাকলে অনেক সময় স্থানীয় গ্রন্থাগার থেকে লোনলি প্ল্যানেট, লেটস গো অথবা ডিসকভারি এমনকি ন্যাশনাল জিওগ্রাফীর গাইড বুক পর্যন্ত এনে রাখি, পরে বিমানযাত্রার সময় চোখ বুলিয়ে মূল পরিকল্পনার খসড়া করে ফেলি। তবে অবশ্যই বইয়ের চাইতেও ভাল হয় যদি স্থানীয় কোন বন্ধু থাকে ( স্থানীয় মানে সেই দেশের বা শহরের লোক বুঝিয়েছি, সেখানে বসবাসরত বাঙ্গালী নহে, বিদেশে বাংলাভাষী ভাই- বোনদের সাথে দেখা হলে অনেক ক্ষেত্রেই চোব্য-চোষ্য-লেহ্য-পেয়র ব্যবস্থা হয়ে যাবে কিন্তু তারা ভ্রমণপ্রিয় না হলে, আপনার সাথে তাদের রুচি না মিললে কতখানি জায়গা তারা ঘুরিয়ে দেখাবে সেই বিষয়ে সন্দেহ থেকে যায়। আর একটা ব্যাপার হচ্ছে, সারা জীবন তো বাঙ্গালী দেখেছেনই, অল্প কদিন না হয় বিদেশী মানুষদের সাথে মিশে সেই দেশের সংস্কৃতি-আচার- ব্যবহার সম্পর্কে জানলেন! তবে হ্যাঁ, যদি সেখানে আপনার বাল্যবন্ধু থাকে, বা এমন কেউ যার আশাতেই যাচ্ছেন সেই ক্ষেত্রে ব্যাপারটি আলাদা), সে আপনাকে এমন জায়গাতে নিয়ে যেতে পারে যার হদিশ অধিকাংশ গাইড বই পায় নি, কিংবা দিতে পারে অজানা কোন কাহিনীর পটভূমি।

অবশ্য এখন আবার নেটের যুগ চাইলেই Trip Advisorসহ বেশকিছু ওয়েব পেজ থেকে বৈকাল হ্রদ থেকে আরম্ভ করে গ্যালোপাগোস দ্বীপ পর্যন্ত কোথায় গেলে কি মিলবে, কোন হোটেলের কি ভাল এবং কি মন্দ, কোন রেস্তোরাঁয় চায়ে চিনির বদলে লবণ দেয় সবই জেনে যাবেন। আর বাংলাদেশের ভিতরে ভ্রমণ করতে চাইলেও নানা জনপ্রিয় গন্তব্যে নিয়ে লিফলেট পাওয়া যায়, তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত কিংবা ঐতিহাসিক কিন্তু অজনপ্রিয় বা প্রায় অজানা জায়গাগুলো নিয়ে এমন রেডিমেড তথ্য খুবই অপ্রতুল। সেই ক্ষেত্রে উপায় একমাত্র রবি ঠাকুরকে ডাকা- যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চল রে।

এখন একটা ব্যাপার- ভ্রমণ করবেন কার সাথে?

বছর কয়েক আগে পরিচিত এক ভাই বলেছিল চলেন সামনের ছুটিতে একসাথে কোথায় যাওয়া যাবে, কি বলেন? মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি বরাবরের মতই ভর করায় বলে ফেললাম সরাসরি- দেখেন ভাই, প্রিয় কবি শেখ সাদি বলেছেন- ভ্রমণের সঙ্গী যদি মনের সঙ্গী না হয় তবে সেই ভ্রমণ বিষবৎ! মানে আপনার পছন্দ-অপছন্দ- রুচি সম্পর্কে আমি জানি না কিছুই, রাস্তায় নামার পর খাবার সময় হলে আবিস্কার করলাম আপনি পাড় ইহুদী- শূকরের মাংস তো খানই না, পারলে যে দোকানে বিক্রি হয় সেখানের ছায়াও মাড়ান না, বা পাড় হিন্দু- দিলেন তো আবার কাবাব খাওয়ার মজা নষ্ট করে, কিংবা পাড় মুসলমান- হালাল না হলে আপনার চলে না, এখন ঘোর এই রোদের মাঝে কয়েক মাইল সেই পারফেক্ট খাবারের খোঁজে। দেখা গেল আপনি কট্টর নিরামিষভোজী আর আমি মাছের ঝোলের ভক্ত, আপনি যা খান তাতে আমার কোন সমস্যা নেই, কিন্তু আমি আপনার সামনে আপনার অপছন্দের জিনিস খেলে অসুবিধে- তাহলে কি আর আনন্দ মত ভ্রমণ করা যায়?

শুধু খাবারই নয় দেখা গেল আমি রাতে বিশ্রামের সময় আলো জালিয়ে একটু টিনটিন পড়তে বা ব্লগ লিখতে পছন্দ করি, আর অমাবস্যার আঁধার ঘরের মাঝে না থাকলে আপনার ঘুম হয় না, আমার ঘুম ভীষণ পাতলা আর আপনার নাসিকা গর্জন কুম্ভকর্ণের মত- গেলে ভ্রমণের মজা উবে!

আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ফিনিশ তরুণী নোরা হেলেনা, যতবারই বয়ফ্রেন্ডের সাথে দূরদেশে গেছে ততবারই তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে! কারণ হিসেবে নোরা বলেছে আসলে ভ্রমণে গেলেই সত্যিকার অর্থে মানুষে চেনা যায়, তুমি যদি এক ঘরেও থাক, তারপরেও বাহির হলে বুঝতে পারবে তোমাদের মধ্যকার সত্যিকারের মিল কতটুকু। বেচারীর সাথে আমার বন্ধুত্ব এখন পর্যন্ত টিকে থাকার একমাত্র কারণ মনে হয় আমরা একসাথে এখন পর্যন্ত কোথায় ঘুরতে যায় নি! কিন্তু তার কথা যথেষ্ট গুরুত্ব দেবার মত, আমারই বাংলাভাষী এক রুমমেট, যার সাথে ডর্মের ৩ বছরের জীবনে কোনদিন দুই কথা হয় নি, সেই বেচারাকে ভ্রমণ শুরুর মাত্র তিন দিনের মাথায় বলে ফেললাম আর একসাথে কোনদিন ভ্রমণের পরিকল্পনা করা যাবে না!

কাজেই, ভ্রমণের সঙ্গী সেটা হোক এক বা একাধিক, নির্বাচন করুন অত্যধিক সতর্কতার সাথে, না হলে কিন্তু গেল সবকিছু কেঁচে!

শারীরিক সক্ষমতা ভ্রমণের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ, ব্রুস লীর মত পাকানো দড়ি হবার দরকার নেই বা র‍্যাম্বোর মত পেশীমানব, কিন্তু যে জায়গায় যাচ্ছেন তা ভাল মত দেখে ফিরে আসার মত সক্ষমতা যেন আপনার অবশ্যই থাকে। যদি বান্দরবানে হাইকিঙে যান বা নেপালের অন্নপূর্ণা সার্কিটে- অবশ্যই নিজেকে প্রস্তত করবেন কয়েক সপ্তাহ ধরে হেঁটে, বা দৌড়ে বা সাইকেল চালিয়ে কোন একটা উপায়ে নিজেকে ফিট রাখবার। দেখা গেল কোন শহর ভ্রমণেই গেছেন- কুমিল্লার শালবন বিহার, প্যারিস, রোম, বেইজিং- হাঁটতে হবেই, পায়ে বা লাঠির উপরে ভর দিয়ে। মানে মানেই তার জন্য প্রস্তত থাকুন যাত্রা শুরুর আগেই।

আর ঝোলা মানে ব্যাকপ্যাক তৈরি রাখুন গন্তব্য অনুযায়ী, যেখানে যাবেন, সেই হিসেবে ব্যাগ তৈরি হবে ( কি করে ব্যাগ গোছাতে হবে এই নিয়ে জেরোম কে জেরোমের ক্ল্যাসিক Three Man in a Boatএর সেবার অনুবাদ ত্রিরত্নের নৌবিহার পড়ে নিতে পারেন, এবং তারা যে পন্থায় কাজ করে তার সম্পূর্ণ বিপরীতভাবে শুরু করুন), যাচ্ছেন পার্বত্য চট্টগ্রামে হাইকিঙয়ে- অবশ্যই সুঁইসুতো নেবেন( যদি কাপড় ছিঁড়ে যায়),লবণ অপরিহার্য ( ছড়া পেরোনোর সময় যদি জোঁক ধরে), অল্প কিছু ঔষধপত্র বিশেষ করে জ্বরের এবং সেই সাথে স্যালাইন, পৈটিক গোলযোগ দেখা দিক বা না দিক, সারা দিন ঘামার পরে বিশ্রামের সময় স্যালাইন নেহাত খারাপ জিনিস নহে। গামছা নিবেন, তোয়ালে নিবেন, কাপড় নিবেন প্রয়োজন মত, মানে দরকারের অতিরিক্ত নিলে বহন করতে হবে আপনাকেই। ও আচ্ছা, আপনি ফাঁকা ব্যাগ নিয়ে গেছেন সেখানের বাহারি পোশাক কিনে ব্যাগ ভর্তি করে বাড়ীতে নিয়ে আসার জন্য, দুঃখিত- এই ব্যাপারে ভাল জ্ঞান রাখি না! জুতো এবং স্যান্ডাল এই হিসেবে, আর দরকার মনে হলে অবশ্যই অবশ্যই টয়লেট পেপার। পানীয়ের বোতল ( কোমল পানীয় বা বিশুদ্ধ জল, অন্যকিছু নিলে নিজ দায়িত্বে), যুক্তরাজ্য নামে ভূখণ্ডে যাবেন, আর কিছু না হলেও আধ ডজন ছাতা নিয়ে যাবেন অবশ্যই!

যেখানে যাবেন সেখানের আবহাওয়া অনুযায়ী পোশাক বাছাই করা আপনার দায়িত্ব, ঠাণ্ডা, গরম, বৃষ্টিময় যেখানেই যান না কেন। সেই সাথে ভিসা নামের ইহজগতের পুলসিরাতের ব্যবস্থা কিন্তু করে নিতে হবে নিজেকেই, এই নিয়ে কথা না আর বাড়ায়।

বিদেশে গেলে সব হারিয়েন, নিজেকেও কিন্তু পাসপোর্ট আর টাকা হারিয়েন না, টাকা যদি হারানও ভাগ্যচক্রে তাহলে দয়া করে সব একসাথে হারিয়েন না, তাহলে ঘোর বিপদ!

নিরাপত্তা অবশ্যই একটা বিশাল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, প্রতি শহরেই কিছু ঝামেলার এলাকা থাকে, সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন, আর গেলেও সতর্ক থাকুন। সাথে টাকার ভাগ করে কয়েক জায়গায় রাখুন যাতে সব একসাথে খোয়া না যায়। বাংলাদেশে একা বা কয়েকজন মিলে কোন এলাকা বেড়াতে গেলে অবশ্যই ভালো মত খোঁজখবর নিয়ে যেয়েন, এই বিষয়ে নিজে যা জানতাম তার অনেকখানিই পরিবর্তন হয়ে গেছে বিগত এক দশকে, তাই এই নিয়ে আপাতত বেশী আলোকপাত করতে পারছি না।

এবং ভ্রমণের সময় অবশ্যই খেয়াল রেখেন যে শতকরা ১০০ ভাগ সফল কোন পরিকল্পনাই সাধারণত হয় না, এবং এত নিখুঁত হবার প্রয়োজনও নেই, অবশ্য বুঝে কিছুটা ছাড় দিতেই হবে- এসি বাস না হলে বাদুড়ঝোলা বাসে গেলেনই একদিন, না হয় ভিনদেশের কোন বাস টার্মিনালের বেঞ্চিতে কফির মগ নিয়ে কেটেই গেল একটা নির্ঘুম রাত- যেহেতু বাস মিস হয়ে গেছে, এক বন্ধু অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তার সেবা করতে যেয়ে না হয় একটা দিন ঘোরা বন্ধই থাকল, এগুলো মিলেই জীবন এবং ভ্রমণ।

সকল গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো মোটামুটি শেষ, এখন শেষ কথা- অর্থ সমাগম। হুম, এই বিষয়ে কথা বলার আগেই আমার বন্ধু ব্লগার অবনীল রীতিমত হুংকার দিয়ে বলছে- আগন্তক সিনেমাটি দেখে ভ্রমণের টাকা কিভাবে জোগাড় করা যায় তা জানা যাবে- এই ধরনের উচ্চমার্গীয় কথা বলা যাবে না! কাজেই কাজেই বলছি- অর্থ আপনার পকেটেই আছে, সে আপনি ছাত্র হোন বা চাকরিজীবী কিন্তু মূল ব্যাপারটি হচ্ছে আপনি ভ্রমণের জন্য কত টাকা প্রতি মাসে বা বছরের আলাদা করে বাঁচিয়ে জমা করতে পারছেন। সেইখান থেকেও কিন্তু বোঝা যায় যে ভ্রমণের জন্য আপনি কতখানি ছাড় দিতে প্রস্তত।

দেখা গেল আপনি ছাত্র মানুষ, প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের খরচ জোগাড়তো করেনই, মাঝে মাঝেই বাবা-মা কেও সাহায্য করতে হয়, এখন অর্থ সমাগম ঘটবে কি ভাবে? পথটি সহজ নয় হয়ত, কিন্তু অসম্ভব বলে কিছুই নেই- হয়ত আপনার সিগারেটের খরচ কমালে সেটা থেকে বছরে একটা ছোট ভ্রমণ হয়ে যেতেও পারে, হয়ত কোন কেনাকাটার শখকে বলি দিয়ে সেটাকে আগামী শীতের উত্তরবঙ্গকে দেখার জন্য কাজে লাগানো যেতে পারে। হয়ত রকি পর্বত বা পলিনেশিয়া আমাদের জন্য এক চাঁদ দূরত্বেই অবস্থান করে, কিন্তু সেখানে যেতে না পারলেও আমরা যেন দেশের আশেপাশেই বিশেষ করে দেশের মাঝেই নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ভ্রমণ অব্যাহত রাখি।

এই নিয়ে আমার ভ্রমণগুরু ইনাম আল হকের একটা কথা আগেও বলেছি, কথাটা এতই খাঁটি যে আরেকবার বললাম- বিবিসি থেকে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনার যেহেতু বর্তমানে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আছে সেই কারণেই আপনি এই ধরনের কাজ যেমন ভ্রমণ, পাখি দেখা, ছবি তোলা, পাহাড়ে চড়া এইগুলি করতে পারেন?

ইনাম ভাইয়ের উত্তর – দেখুন ঘোরাঘুরি তো আমি আজকে করছি না, যখন আমি ছাত্র ছিলাম, নিজস্ব সঞ্চয় ছিল না তখন থেকেই করছি। এখন বিমানে চেপে অনেক দূরে যাই , কিন্তু তখনো সুযোগ পেলেই পায়ে হেঁটে, বাসে, নৌকায়, ভ্যানে চেপে দূরের শহর, গ্রামে যেতাম। তখনো পাখি দেখতাম, কিন্তু দূরবীন, টেলিস্কোপ ছাড়াই, আনন্দটা কিন্তু পেতাম পুরোদমেই! আমাদের সমাজের অধিকাংশই মানুষকেই প্রশ্ন করুন জীবনের চাহিদা নিয়ে- সবাই বলবে চাকরি, বাড়ি, গাড়ি, সংসার। কিন্তু কয়জন বলবে, বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা আমার ঘোরা থাকতে হবে, পায়ে হেঁটে হলেও! কজন ভাবে বান্দরবানের পাহাড়গুলো আমার চড়া থাকতেই হবে! টেঁকনাফ থেকে তেতুলিয়ার সৌন্দর্য একবার হলেও দেখতেই হবে?

সেই সাথে ইনাম ভাই অনেক আগে আমাকে বলেছিলেন পৃথিবীর অধিকাংশই মানুষই কিন্তু ঘুরলেই সন্তুষ্ট হন না, সেই ঘোরা যখন অন্য মানুষ জানে তখনই তাদের ভ্রমণ যেন ষোল আলা সার্থক হয়, মানে আপনি লন্ডন গেলেই হবে না, ফিরে এসে সবাইকে বলবেন- ব্যাটা জানিস লন্ডন গেছিলাম, তার পরেই যেন ভ্রমণের সবকিছু উসুল হল! কিন্তু এই বাঁধা অতিক্রম করতে হবে আপনাকে, আপনি দেখবেন, ঘুরবেন কেবল জানার আনন্দে, ভাল লাগার আবেশে। যদি সেই ভ্রমণ নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে হয়, ছবি প্রকাশ করতে ইচ্ছে করে অবশ্যই করুন, কিন্তু সেটা যেন আপনার ভ্রমণের ইচ্ছেকে ছাপিয়ে না যায়। আমার থেকে থেকেই মনে হয় যদি ইস্টার দ্বীপে যেতে পারতাম, কিংবা মালির টিম্বাকটু, তিব্বতের মানস সরোবর- আর কেউ না জানলেও বিশ্বের সুখীতম মানুষটি হয়ে যেতাম আপনা থেকেই।

মোদ্দা কথা- অনিশ্চয়তা নিয়ে বেশী ভাববেন না, পথে নামুন, ভ্রমণের আনন্দে ভ্রমণ করুন। কিছু পেতে হলে কিছু হারাতেই হয় জীবনে।

( পোস্টটি আমাদের প্রিয় ভ্রমণ লেখক চরম উদাসের জন্য)


মন্তব্য

স্পর্শ এর ছবি

দারুণ পোস্ট! চলুক
আমি আমার ঘরকুনো মানসিকতা কাটিয়ে উঠতে পারলামনা বলেই হা হুতাশ করতে করতে জীবন যাচ্ছে। কতবার কত যায়গায় ভ্রমন করার কথা ভাবি। কিন্তু ভাবনাতেই থেকে যায়। মন খারাপ


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

তারেক অণু এর ছবি

ভাবনা গুলো বাস্তব হউক, আমেন---

মাজহার এর ছবি

এক্কেবারে মনের কথা দেঁতো হাসি

তারেক অণু এর ছবি
আউটসাইডার এর ছবি

দারুন লাগলো অণুদা। এক কথায় মচেৎকার! ভবঘুরে শাস্ত্র পড়ে ভেবেছিলাম এ জীবনে আমার আর ভবঘুরে হওয়ায় হবে না, আসলেও খুব কঠিন কাজ। ভ্রমণ সঙ্গীর কথা যা বললেন এরচে সত্যি আর হয় না, আমার জীবনের অসাধারণ একটা ভ্রমণ মাটি হয়ে গিয়েছিল ভুল সঙ্গীর কারনে। আমার মনে হয় ভুল সঙ্গীর চেয়ে সঙ্গী না থাকা শ্রেয়। ভ্রমণ একাও করা যায়।

তারেক অণু এর ছবি

সহমত, একা ভ্রমণের একটা আলাদা মজা আছে, আর গ্রুপে গেলেও অন্য ধরনের মজা।

তবে একা ভ্রমণ করলে নতুন বন্ধু যেমন জোটে, তেমন স্থানীয়দের সাথে মেলামেশা বেশী হয়।

ম্যাক্সিমাস এর ছবি

দুর্দান্ত লাগলো... একদম মনের কথা বলেছেন মশাই! গুরু গুরু
কেরিয়ার কেরিয়ার করে জীবনটা কে এরকম ভাবে দেখতেই ভুলে গেছি... ওঁয়া ওঁয়া

তারেক অণু এর ছবি

জীবনই সবচেয়ে বড় ক্যারিয়ার!

অতিথি লেখক এর ছবি

অণু দা,আপনার লিখা টা পড়ে আমার ইচ্ছা টা কে আবার একটু ঝালিয়ে নিলাম ।এবার দেশে গেলে কয়েকটি জায়গায় যাব প্ল‌্যান করে রেখেছি ।দুই মাসে যত টুকু ঘুরা যায় ।আপনাকে হিংসা লাগে অণু দা !ইশ !লোকটা কত কিছু দেখেছে !!!
আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকুক ।

আলেক সাই

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই ঘুরতে থাকুন, এবং জানাতে থাকুন। শুভকামনা

মামুন এর ছবি

ভাই শুরু করে দিলাম,আজ থেকেই টাকা জমানো শুরু,সামনে বছর সমুদ্র আর পাহাড় দেখতেই হবে.......

তারেক অণু এর ছবি
আব্দুল্লাহ এ.এম এর ছবি

ভাই, আপনার এই সুখপাঠ্য ভ্রমনোপদেশের পুরস্কার হিসেবে আপনাকে আপনার এক দোস্তের কথা বলি। দু-আড়াই বছর আগে একদিন রিকসায় উঠলাম মিরপুর দশ নম্বর গোল চক্করে, মিরপুর এক নম্বরের দিকে যাব। সামান্য কিছুদূর যাবার পর চালক আমাকে অনুরোধ করে বললো আমি যেন তাকে পথ চিনিয়ে নিয়ে যাই। মনে মনে প্রমাদ গুনলাম, নিশ্চয়ই আনাড়ি চালক, কখন কিসের সাথে লাগিয়ে দেয় কে জানে। প্রশ্ন করে জানলাম চালক হিসেবে সে আনাড়ি নয়, তবে ঢাকায় নতুন, রাস্তাঘাট তেমন চেনে না। বাড়ী রংপুরে, তার ঢাকা আসার কারন জেনে ভিরমী খাওয়ার জোগার। ভেবেছিলাম উত্তরবঙ্গের অভাবী মানুষ, একটু বেশী উপার্জনের আশায় ঢাকা এসেছে। আসলে তা নয়, এসেছে রাজধানী শহরটাকে ভাল করে দেখতে। গরীব মানুষ, পয়সা খরচ করে ঢাকা দেখার সাধ্য নেই, তাই রিক্সা চালায়। ঢাকাও দেখা হলো, জীবিকাও নির্বাহ হলো। কয়েকমাস পর আবার চলে যাবে অন্য কোন শহরে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের অর্ধেকের বেশী জেলায় সে এভাবে কিছুদিন কাটিয়েছে। বাংলাদেশ দেখা শেষ হলে একই পদ্ধতি ব্যবহার করে ভারত ভ্রমনে বের হবে। রাহুল সাংকৃত্যায়নের এরকম সাক্ষাত অনুরাগীর দেখা পেয়ে একবার ভাবলাম তার শিষ্যত্ব গ্রহন করে ফেলি। কিন্তু তা আর কিভাবে হবে, আমি তো অনেক আগেই নানা রকম অলঙ্ঘনীয় বাধায় জড়িয়ে গেছি।

তারেক অণু এর ছবি

কি দারুণ অভিজ্ঞতা! উনার ছবি আছে নাকি?

আব্দুল্লাহ এ.এম এর ছবি

সে মুহুর্তে একটা কারনে খুবই ঝামেলায় ছিলাম, হয়তো সে জন্যই এই বিষয়টির গুরুত্ব সে সময় অনুধাবনও করতে পারি নাই। যদি পারতাম, তাহলে শুধু ছবি নয়, আজীবন তার সাথে যোগাযোগ রক্ষার একটা ব্যবস্থাও হয়তো করতে চেষ্টা করতাম।

তারেক অণু এর ছবি

তাহলে সেটি নিয়ে যতটুকু মনে পড়ে, লিখে ফেলেন, খুব ভাল হবে।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

নমস্য লোক দেখি গুরু গুরু

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

চলুক

ম্যাক্স ইথার  এর ছবি

ভ্রমন সঙ্গীর ব্যাপারটা আসলেই গুরুত্বপূর্ণ। পুরো ভ্রমনের স্বাদ অনেকখানি নির্ভর করে সঙ্গীর উপর। আমি ট্রিপ এডভাইজর ব্যাবহার করে অনেক উপকৃত হয়েছি।

তারেক অণু এর ছবি

আসলেই, রেডি হন লাদাখের জন্য , ২০১৬

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সব দেশ আর সব জায়গাইতো বাড়িতে বসে টিভিতে দেখা যায়; অত হ্যাপার কী দর্কার?

তারেক অণু এর ছবি

হ, এই কারণেই তো একসময় হিমালয় থেকে সুন্দরবন তাফা তাফা করছেন তাই না?
নিজে গেরস্থ বলে অন্যদেরও গেরস্থ দেখতে চান, লীলেন দা? শয়তানী হাসি

কাজি মামুন এর ছবি

সব দেশ আর সব জায়গাইতো বাড়িতে বসে টিভিতে দেখা যায়; অত হ্যাপার কী দর্কার?

হাসি
যখনই অণু ভাইয়ের ভ্রমন কাহিনি পড়ি, একটা আফসোস নিঃশ্বাস বেরিয়ে আসে, ইস্‌, আমি যদি এ জায়গাতে যেতে পারতাম! তবে কারো কারো আমার এমন হয় নাকি যে, জায়গাটা সম্পর্কে কৌতূহল ছিল, অনূ ভাইয়ের সুন্দর সচিত্র বর্ণনা পড়ে জানা হয়ে গেল, সুতরাং, পরবর্তি ভ্রমন লিস্ট থেকে এ জায়গাটা বাদ দেয়া যেতে পারে?

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই বাদ দিয়েন না। আমার লেখাতে আর কি আসে, আসল জায়গা বহু গুণে শ্রেয়

অতিথি লেখক এর ছবি

বাদ দেয়ার প্রশ্নই উঠে না, অণু ভাই। সত্যি বলতে কি, আমার যাওয়ার সামর্থ্য বা সুযোগ নেই। সুযোগ থাকলে আপনার বর্ণিত সব জায়গায় যেতাম। লীলেন দার মন্তব্যটা খুব মজার লেগেছিল। তাই ওমন মন্তব্য করেছিলাম। আপনার এই লেখাটা খুব প্রয়োজনীয়। দেশের সাইটগুলো ভ্রমনে তো কাজে লাগাতে পারব!

তারেক অণু এর ছবি
সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

আসলে ভ্রমণে গেলেই সত্যিকার অর্থে মানুষে চেনা যায়, তুমি যদি এক ঘরেও থাক, তারপরেও বাহির হলে বুঝতে পারবে তোমাদের মধ্যকার সত্যিকারের মিল কতটুকু

এই কথাটা শতভাগ সত্যি।

তারেক অণু এর ছবি

ঠিক

চরম উদাস এর ছবি

আমার কিভাবে ভ্রমণ করবেন / How to travel like Tareq Onu রিলিজ দেয়ার আগেই দেখি আপনে ওরিজিনাল ভার্সন বাজারে ছেড়ে দিলেন খাইছে ।আবশ্য আমি আমারটা অনেকদিন ধরে ঝুলায়ে রাখছি, আর কয়েকদিন পর ছেড়ে দিব। লেখা দারুণ চলুক

তারেক অণু এর ছবি

এখনই দেন, দুইটাই একসাথে নীড়পাতায় থাকলে দারুণ জমবে কিন্তু!

অর্ক এর ছবি

বাকি সবকিছুই চেষ্টা করলে পারা যায় এবং ক্ষেত্রবিশেষে করেছিও। কিন্তু ভিসার ব্যাপারটা কোনভাবেই আমার হাতে নেই বলে মনে হয়

তারেক অণু এর ছবি

ভিসা একটা অভিশাপ

অরফিয়াস এর ছবি

সব ধরনের সঙ্গীর সাথে ঘোরার অভিজ্ঞতা আছে আমার। তবে এটা আমি মানি, "যদি হয় সুজন, তেঁতুল পাতায় নয়জন"। মনের মতো ভ্রমণসঙ্গী না হলে ঘোরার আনন্দ মাটি। এরকম হয়েছিল আগ্রা হয়ে রাজস্থান যাওয়ার সময়। প্রচন্ড বিরক্তিকর ভ্রমণ ছিলো সেটা। তবে বান্দরবন, রাঙামাটি কিংবা উত্তরবঙ্গে যাওয়ার সময়গুলোতে যেভাবেই হোক ভালো সঙ্গীই পেয়ে গিয়েছিলাম। ভারতের দক্ষিনে ঘুরে বেড়ানোর সময় সাথে ছিলো পুরনো দুই বন্ধু। এছাড়াও বাকি যে যে জায়গায় গেছি ভালোই কেটেছে সময়। ঘটনা দুর্ঘটনা মিলিয়ে খারাপ না অভিজ্ঞতা। তবে যাযাবরের মতো ভবঘুরে হয়ে ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছা আছে অনেকদিনের জন্য। জীবনে একবার করা হবেই সেটা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু এর ছবি

"যদি হয় সুজন, তেঁতুল পাতায় নয়জন" এই কথা বলার পরে কে যেন বলল- নাইন সাম! অ্যাঁ

অরফিয়াস এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু এর ছবি

সে কি ধু গো দা ছিল? খুঁজে দেখতে হবে-

সত্যপীর এর ছবি

ধুগোদাই।

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

সে কোথায়?

ধুসর গোধূলি এর ছবি
তারেক অণু এর ছবি

একা না ৯ জনে?

ধুসর গোধূলি এর ছবি
তারেক অণু এর ছবি

বাংলায় বলেন মিয়াঁ, আরবি ক্যান!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সাধু সাধু সাধু

তারেক অণু এর ছবি

সাধু সাবধান!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

লেখাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিশেষকরে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্যে। ভ্রমণের প্রতি আমার দূর্বার আকর্ষণ থাকলেও আলাদা করে ভ্রমণ করার মতো সময়ে কুলিয়ে উঠতে পারিনা। সুতরাং ভ্রমণ যেটুকু হয় তা কাজের পাশাপাশি হয়ে যায়। তবে একা ভ্রমণ করা আমার কাছে বেশ ক্লান্তিকর ঠেকেছে।

ঠেকে শিখে আপনার একটা সাজেশন রিপিট করি। ভুলেও কখোনো ওয়ালেট এবং পাসপোর্ট পকেটের বাইরে রাখবেন না। যদিও পকেট থেকে বের করতে হয়, কাজ সারা হলে সাথে সাথে আবার পকেটে ঢুকাতে ভুলবেন না।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ, খুব দরকারি টিপস।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ভ্রমণসঙ্গীর সাথে তিক্ত ও মধুর উভয় প্রকারের অভিজ্ঞতায় আছে। চলুক

তারেক অণু এর ছবি

আহাহা, সেগুলো জানান আমাদের, দরকার হলে নাম গোপন রেখে!

মন মাঝি এর ছবি

চলুক
দারুন দরকারী একটা লেখা!

আমার নিজের কয়েকটা উপলব্ধি ও অব্জার্ভেশনের কথা মনে পড়ে গেল। একটু বিস্তারিত বললে আশা করি কিছু মনে করবেন না, বা ওস্তাদের উপর ওস্তাদির চেষ্টা বলে মনে হবে না।

ভ্রমণসঙ্গী নির্বাচনের বিষয়ে আপনি যা বলেছেন তা অক্ষরে অক্ষরে সত্যি। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। আপনি যেসব পয়েন্টে পার্থক্যের কথা বলেছেন, সেগুলি তো বটেই, তবে আমার মনে হয়েছে একটা মূল বিষয়ে ভ্রমণসঙ্গীদের মধ্যে মানসিক ঐক্য বা কম্প্যাটিবিলিটি একদম অপরিহার্য। আর তা হলো, ভ্রমণার্থীরা তাদের ভ্রমণ থেকে ঠিক কি চান ও কিভাবে তা চান সে ব্যাপারে নিজেদের কাছেই পরিষ্কার থাকা এবং সে ব্যাপারে অন্য ভ্রমণসঙ্গীদের সাথেও একটা স্পষ্ট বোঝাপড়া থাকা দরকার।

যেমন ধরুন, কারও কাছে হয়তো ভ্রমণের উদ্দেশ্য হচ্ছে যত বেশি সম্ভব নতুন দেশ, স্থান, দৃশ্য, মানুষ, ইত্যাদি দেখা। আবার কারও কাছে স্রেফ কর্মব্যস্ত জীবনের গৎবাঁধা টায়ারিং রুটিন থেকে বেরিয়ে নতুন পরিবেশে গিয়ে একটু 'রিলাক্স' করা - বেশি 'দেখাদেখি' বা দেখাদেখি করতে গিয়ে বেশি দৌড়ঝাঁপ করা নয়। এখন এই দুই টাইপের মানুষ একসাথে ভ্রমণে বেরুলে কিন্তু বিশাল ভেজাল বেঁধে যাবে। আবার যারা দেখাদেখি করতে চান তাঁদের মধ্যেও পার্থক্য আছে। কেউ কেউ ধীরেসুস্থে তারিয়ে তারিয়ে, চেখে চেখে, নতুন অভিজ্ঞতাগুলি অনুভব ও উপভোগ করতে চান। এ ব্যাপারে তাঁরা খুব বেশি তাড়াহুড়োর পক্ষপাতি নন। আবার অন্যদিকে অনেকে চান সীমিত সময় ও অর্থের মধ্যে যত দ্রুত যত বেশি সম্ভব নতুন দৃশ্য বা অভিজ্ঞতা গলধকরণ করতে। অত সব চাখাচাখি বা অনুভূতিপ্রবণতার ধার তারা ধারেন না। ফাস্ট-ফরোয়ার্ড মোডটাই তাদের প্রেফার্ড মোড। এই আস্তে চল আর দ্রুত চলর দল একসাথে হলেও বিরাট সমিস্যা!

কেউ কেউ আছেন নতুন জায়গায় গিয়ে স্থানীয় বা ভিনদেশি বা ভিন জায়াগার মানুষের সাথে আলাপ করতে বা বন্ধুত্ব পাতাতে বেশি আগ্রহী। আর নতুন মানুষের সাথে আলাপ পাতাতে বা 'জমিয়ে' ফেলতেও তাঁরা দারুন দক্ষ। প্রাকৃতিক, ঐতিহাসিক বা কোন জড়বস্তুর দৃশ্য-টৃশ্য ততটা নয়, বরং জীবন্ত মানুষই এদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। আবার এর উল্টোদিকে আরেক দল আছেন - পূর্বঅপরিচিত মানুষের ব্যাপারে যাদের কোনই আগ্রহ নেই - বিদেশি, বিভাষী, বা বিধর্মী হলে তো কথাই নেই। বা আগ্রহ থাকলেও তা খুবই কম বা তারা সেটা পেরে উঠেন না। এরা আলাপ পাতাতে বা মিশতেও খুব একটা দড় না। এরা নতুন জায়াগায় গিয়ে নিজেদের চারপাশে একটা অদৃশ্য দেয়াল তুলে ফেলেন - যেটা টপকে মানসিক ভাবে তাঁরা নিজেরাও বেরুতে পারেন না আর বাইরের মানুষেরাও ভিতরে ঢুকতে পারে না। নতুন পরিবেশের মানবিক ডাইমেনশনের সঙ্গে এরা মনে হয় ঠিক এম্প্যাথাইজ ও কমিউনিকেট করতে পারেন না। এদের চোখ আর দেহটা ভ্রমণে যায় বটে, কিন্তু মনটা সাথে করে কতটা যায় আর কতটা বাড়িতেই পড়ে থাকে, সে ব্যাপারে সন্দেহ থেকেই যায়। এনাদের বেশি আগ্রহ থাকে প্রাকৃতিক, ঐতিহাসিকসহ অন্যান্য 'নিষ্প্রাণ' দ্রষ্টব্য বিষয়গুলির প্রতি। আর স্থানীয় মানুষ বা জীবনযাত্রার প্রতি আগ্রহ দেখালেও, সেটা অনেক সময়ই 'জাজমেন্টাল' দৃষ্টিকোণ থেকে - প্রকৃত আগ্রহ থেকে নয়। এই দুই টাইপের ভ্রমণসঙ্গী এক হলেও সমস্যা হয় আগ্রহের পার্থক্যের কারনে।

এর মধ্যে আরেক দল আছেন ভ্রমণের সময় নানারকম এক্টিভিটি, বিশেষত ফিজিকাল এক্টিভিটিতে ব্যপক আগ্রহ এবং এ ব্যাপারে তাঁদের সক্ষমতাও উচ্চ পর্যায়ের। এখন এই দলের মধ্যে ভালমন্দ নতুন নতুন পদের খাওয়াদাওয়াসহ হাওয়া খেতে আর হাওয়া (হয়তো তরলও) খেতে খেতে আড্ডাবাজি করা আর স্রেফ ফাঁকতালে আরাম করে নতুন কিছু দেখা যাদের মূল উদ্দেশ্য, তারা পড়ে গেলেও ব্যপক সমিস্যা।

উপ্রের প্রায় সবগুলি ইনকম্প্যাটিবল পরিস্থিতিতেই আমি পড়েছি! চূড়ান্ত ম্যাডেনিং ও ফ্রাস্ট্রেটিং থেকে শুরু করে চরম রিডিকুলাস - প্রায় সব অভিজ্ঞতাই হয়েছে। দেঁতো হাসি

সবশেষে, আরেকটা জিনিষ মনে হয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হল - মানসিক ফ্লেক্সিবিলিটি ও এডাপ্টিবিলিটি। ভ্রমণসঙ্গীদের মধ্যে ছোটখাটো বিষয়ে পার্থক্য হবেই। গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে না চাইলে এবং কিছুটা মানিয়ে নেয়ার এটিচ্যুড থাকলে, এই পার্থক্যের সবকিছুরই 'গুরুত্বপূর্ণ' হয়ে ওঠার আসলে দরকার নেই। অল্প সময়েরই তো ব্যাপার! এটা না পারলে আসলে শেষমেশ নিজেরই ক্ষতি ও লোকসান।

ফ্লেক্সিবিলিটি ও এডাপ্টিবিলিটিটা বাহ্যিক পরিবেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আপনি লিখেছেন,

শতকরা ১০০ ভাগ সফল কোন পরিকল্পনাই সাধারণত হয় না, এবং এত নিখুঁত হবার প্রয়োজনও নেই

১০০ ভাগের থেকে একটু শুধু নয়, কপাল খারাপ থাকলে একটা বিরাট অংশই বিফলে যাওয়া অসম্ভব নয়। ধরেন একটা নতুন জায়গায় অনেক কষ্টে, অনেক দিনের জমানো পয়সা খরচ করে আপনি গেছেন অনেক উচ্চ ধারণা বা প্রত্যাশা নিয়ে। কিন্তু গিয়ে দেখলেন, আপনি যা ভেবেছিলেন তার ধারে কাছেও না সেটা। হয়তো এক্কেবারে উলটা। তখন কি করবেন আপনি? বাস্তবে আসলে তখন কিছুই করার থাকবে না। নিজের উপ্রেই রাগে দুঃখে নিজেরই চুল ছিঁড়া ছাড়া। কিন্তু এমনটা করা আসলে নিজেরই লস্‌ পুরোপুরি। তার চেয়ে বরং ব্যাপারটাকে পজিটিভলি নিয়ে, সব ভ্রমণই সফল হয় না দুয়েক'টা মিসফায়ারও করে এটা উপলব্ধি করে, কিভাবে এই পরিস্থিতি থেকেও রিকাভার করা যায় - কিভাবে এর মধ্যেও ভ্রমণটাকে কিছুটা হলেও সাফল্যমণ্ডিত করা যায় সেই চেষ্টা করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তবে এক্ষেত্রেও যদি ইনকম্প্যাটিবল ভ্রমণসঙ্গী থাকে যার পজিটিভ মানসিকতা নাই - তাহলে অবশ্য আপনার রক্ষা নাই। আপনি শ্যাষ! লস্ট! আমার এমনটা হয়েছিল সিনাই মরুভূমিতে গিয়ে। মুসা নবী এখানে গিয়ে লস্ট হয়েছিলেন, আমিও এক অর্থে লস্ট হয়েছিলাম। এই ভেবেই এখন একটু আত্নতৃপ্তি পাওয়ার চেষ্টা করি, নইলে ঐ অংশটুকুর কথা ভাবলে এখনো "৳@#!#৳@৳%@#‍"-টাইপের অনুভূতি হয়। হাসি

****************************************

তারেক অণু এর ছবি

দারুণ বলেছেন, চমৎকার! খুব ভাল লাগবে আপনি নিজেও নানা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা লেখা দিলে।

হিমু এর ছবি

আমার কিন্তু মনে হয়, প্রতিটি ভ্রমণে সবচেয়ে মূল্যবান অর্জন ঐ আপসোসগুলো। পরে সময় নিয়ে চিন্তা করলে এই আপসোসগুলো থেকে অনেক কিছু চেনা যায়, বিশেষ করে নিজেকে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

দামী একটা কথা বলেছেন হিমু। আপসোস বিভিন্ন কারনে হতে পারে- অ-সমমনা সঙ্গী, প্রতিকূল পরিস্থিতি, ইত্যাদি। আমরা সাধারণত নিজের আসন্তষ্টির জন্যে সঙ্গী বা পরিস্থিতিকে দায়ী করে থাকি। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্নও হতে পারে। এমন হতে পারে যে আমি আমার সঙ্গীর সাথে মানিয়ে নিতে পারিনি বা অতিরিক্ত প্রত্যাশা পুরন না হওয়ার হতাশা, ইত্যাদি। ব্যাক্তিগতভাবে আমি প্রতিটি ভ্রমণ শেষে চিন্তা করি কি করলে আমার ভ্রমণটি আরও উপভোগ্য হতো এবং পরবর্তীতে সেটা করার চেষ্টা করে থাকি। আরেকটা বিষয়- ভ্রমণে গেলে সবসময় অপরের দ্বারা কি কি ভাবে বিরক্ত হলাম তা নিয়ে গবেষণা করি কিন্তু আমার কারনে অপরে কি কি ভাবে বিরক্ত হলো বা হতে পারে সেটা নিয়ে কখোনোই ভাবিনা!

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

তারেক অণু এর ছবি

চলুক একমত হিম্ভাই।

ওডিন এর ছবি
স্যাম এর ছবি

চলুক

মন মাঝি এর ছবি

আপনার কথাটা বহুলাংশেই সত্যি। নিজের ক্ষেত্রেও এমন উপলব্ধি হয়েছে আমার। বাংলাদেশেরই সেণ্ট মার্টিন্স আর বগা লেক/বান্দরবানে যেতে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতা ও অভিজ্ঞতা-পরবর্তী আত্নোপলব্ধি হয়েছে আমার। তবে সম্ভবত সব ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য না। কোন কোন আক্ষেপজনক অভিজ্ঞতা হতে পারে যেখানে নিজের সম্পর্কে নতুন বা গুরুত্বপূর্ণ কোন উপলব্ধির হয়তো তেমন কোন স্কোপ থাকে না। আবার এটাও ঠিক, উপ্রে রাতঃস্মরণীয় যেমনটা বলেছেন, "ভ্রমণে গেলে সবসময় অপরের দ্বারা কি কি ভাবে বিরক্ত হলাম তা নিয়ে গবেষণা করি কিন্তু আমার কারনে অপরে কি কি ভাবে বিরক্ত হলো বা হতে পারে সেটা নিয়ে" আমরা অনেক সময়ই ভাবিনা! - নিজের বেলায় এই জিনিষটাও কোন কোন ক্ষেত্রে অনেক পরে টের পেয়েছি। হাসি

****************************************

তারেক অণু এর ছবি
নিশিতা এর ছবি

হাততালি

তারেক অণু এর ছবি

এত তালি কিসের? ঘুরতে বেরিয়েছেন নাকি?

কড়িকাঠুরে এর ছবি

হুম... দারুণ- হাততালি

মাঝে মাঝেই এক ভাইয়া বলে কথাটা- "সঙ্গী ছাড়া ভঙ্গী হয় না"... যে কাজে যারে প্রয়োজন আর কী...

শিরোনাম দেখেই মনে হইছে- এইটা কী হইলো! উদাস'দার তো এখন 'কী করে হাসি হাসি মুখ নিয়ে সহ্য করবেন" লিখতে হবে... খাইছে

তারেক অণু এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি
না না চ উ দার লেখা রেডি, আইলো বইলা!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আয়া পড়েন। অক্টোবর ফেস্টের পবিত্র ময়দানে তোবারকের গেলাস হাতে নিয়া আকাশ বাতাস প্রকম্পিত কইরা আউফ দ্দীণূ কইয়া দ্দীণূ হুজুরের হায়াত বৃদ্ধি কইরা আসি।

তারেক অণু এর ছবি

ফ্রাঙ্কফুর্টের বইমেলাও সেই সময়ই! দেখা যাক-

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুণ একটা গাইডলাইন পাওয়া গেল। অনেক দরকারি লেখা অনু দা।

ইনাম ভাইয়ের উত্তর – দেখুন ঘোরাঘুরি তো আমি আজকে করছি না, যখন আমি ছাত্র ছিলাম, নিজস্ব সঞ্চয় ছিল না তখন থেকেই করছি। এখন বিমানে চেপে অনেক দূরে যাই , কিন্তু তখনো সুযোগ পেলেই পায়ে হেঁটে, বাসে, নৌকায়, ভ্যানে চেপে দূরের শহর, গ্রামে যেতাম। তখনো পাখি দেখতাম, কিন্তু দূরবীন, টেলিস্কোপ ছাড়াই, আনন্দটা কিন্তু পেতাম পুরোদমেই! আমাদের সমাজের অধিকাংশই মানুষকেই প্রশ্ন করুন জীবনের চাহিদা নিয়ে- সবাই বলবে চাকরি, বাড়ি, গাড়ি, সংসার। কিন্তু কয়জন বলবে, বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা আমার ঘোরা থাকতে হবে, পায়ে হেঁটে হলেও! কজন ভাবে বান্দরবানের পাহাড়গুলো আমার চড়া থাকতেই হবে! টেঁকনাফ থেকে তেতুলিয়ার সৌন্দর্য একবার হলেও দেখতেই হবে?

দারুণ উত্তর। চলুক

অমি_বন্যা

তারেক অণু এর ছবি

শুভেচ্ছা-

সবজান্তা এর ছবি

লেখাটা দুর্দান্ত লাগলো অণু ভাই।

আরেকটা ব্যাপার প্রায়ই দেখি আজকাল- মানুষের হা হুতাশ। শুরুতে খারাপ লাগতো, যখন কেউ ফেসবুকে বলতো, আহারে অমুক জায়গায় যাইতে পারলাম না। কিন্তু পরে দেখলাম, কিছু লোক আসলে এইভাবে বলতেই পছন্দ করে। যখন সত্যিকারের ঘোরার সুযোগ আসবে, তখন এদের নানারকম কাজের কথা মনে পড়বে, নানা ব্যস্ততা আসবে। কিছু ব্যস্ততা সত্যিই উপেক্ষা করা যায় না, কিন্তু অধিকাংশ ব্যস্ততাই কিন্তু আসলে প্রায়োরিটির ব্যাপার। আপনার কাছে ঘোরাঘুরির প্রায়োরিটি কতোটা উপরে, তার উপরেই কিন্তু নির্ভর করে আপনি সেই ব্যস্ততাগুলিকে উপেক্ষা করতে পারবেন কিনা। যখন সুযোগ আসে, তখন দেখা যায় এই লোকগুলি নানা বাহানায় পিছলায়া যায়। এখন বিরক্ত লাগে এই কাজগুলি দেখলে।

আপনি আমার চে কয়েক কোটি গুন বেশি ঘুরছেন, কাজেই আপনার পোস্টে কিছু অ্যাড করার ধৃষ্টতা না দেখাই- তবে একটা জিনিস আরেকবার বলি- একই মানসিকতার লোক ঘুরতে যাওয়াটা ভীষণ জরুরি। হয়তো পুরোপুরি এক হবে না, কিন্তু বেসিকটা এক থাকা জরুরি। নাহলে অযথা মনোমালিন্য হয়, দুই পক্ষেরই মেজাজ খারাপ হয়।যেমন আমার মনে হয় খাওয়া দাওয়া নিয়ে একটু বাছবিচার কম করাই ভালো। আপনি তো বারো মাস ঘরে বাইরে ভাত, ডাল, মাংস, ডিম এগুলি খেয়েই কাটাচ্ছেন। খুব কি ক্ষতি হবে যদি আপনি হিমালায়ের উপরে কোন শহরে যেয়ে কয়টা দিন মনের মতো আলু ভর্তা না পান ? কিংবা শুধু মোমো খেয়ে একটা বেলা পার করে দিতে ? কিন্তু অনেকেরই আবার খাওয়া দাওয়াতে অনিয়ম একদম সহ্য হয় না। ভাবনার মিল থাকাটা তাই ভীষণ জরুরি।

আমি একদিক দিয়ে সৌভাগ্যবান যে আমি যাদের সাথে বেশিরভাগ সময় ঘুরেছি, তাদের মানসিকতা চমৎকার। এদের মধ্যে একজনের কথা উল্লেখ করতেই হবে। একচোখা ওডিন সাহেব। ঘোরাঘুরি করার জন্য এমন পারফেক্ট মানুষ আমি কম দেখছি- পরিবেশ পরিস্থিতি যেমনই হোক, উনি সব কিছুতেই অ্যাডজাস্ট করে ফেলেন। আর আমাদের কোঞ্চিপার ঘোরাঘুরির কথা তো বাদই দিলাম, ঈর্ষায় অনেকে জ্বলে পুড়ে যাবেন দেঁতো হাসি

আশার কথা হলো, বাংলাদেশিরা এখন অনেক বেশি ভ্রমনপ্রিয় হচ্ছে। এখন সামর্থ্য যেমনই হোক, সবাই বছরে অন্তত একবার ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও মোটামুটি বছরে কয়েকটা ট্যুর করেই। হয়তো ভ্রমনের মানসিকতা সবার পরিপক্ক হয়নি- এখনো অনেকেই সুন্দরবনে যেয়ে চিপসের প্যাকেট ফেলে, পিকনিক পার্টির মতো হইচই করে পশু-পাখি সব দশ মাইল দূরে পাঠিয়ে দেয়, কিন্তু আমার মনে হয়, এইটাই শুরু। আস্তে আস্তে জনগণ লাইনে চলে আসবে দেঁতো হাসি

অনেক লম্বা কমেন্ট করলাম। ঘোরাঘুরি বিষয়ক পোস্ট দেখে আবেগ সামলায়া রাখতে পারি নাই গড়াগড়ি দিয়া হাসি

অটঃ মানস সরোবরের ব্যাপারটা নিয়া কিন্তু আমি ড্যাম সিরিয়াস। ফেসবুকে বাকি আলোচনা চালাবো।

তারেক অণু এর ছবি

কিসের লম্বা, আরও বিস্তারিত কমেন্ট করেন! চমৎকার বলেছেন।
ওডিন সাহেবের সাথে তো লাদাখ ফিক্সড হয়েই আছে, চাইলে চলে আইসেন! সেখান থেকে ভুটান যাওয়া যেতেও পারে-

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

চলুক

ওডিন এর ছবি

মানস সরোবর যাইতে হইলে ইসকনে যোগ দিতে হইবে। কারণ পিলগ্রিমেজ ভিসা ছাড়া মোগো বাংলাদেশিগো তিব্বতের ধারেকাছে যাইতে দ্যাবে না গো মনু।

লাইনে আসবা নাকি? শয়তানী হাসি

খেকশিয়াল এর ছবি

হ, মুস্তাফিজ ভাই কইছিল

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

তারেক অণু এর ছবি

লাইনে আসুন-

আকরামুল হক এর ছবি

মানস সরোবরের সাথে কি কৈলাসও ঘুরে আসবেন? শুধু পিলগ্রিমেজ ভিসার ব্যাপারটা জানতাম না। ইয়ে, মানে...

তারেক অণু এর ছবি

অতিথি লেখক এর ছবি

সচলে প্রথম কমেন্টটা আপনার এই লেখাটিতে করলাম।

-সাইফুজ জামান

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ, আশা রাখি আপনার মন্তব্য এবং লেখা নিয়মিত পাব।

সিয়াম এর ছবি

আমার একটা ছোট প্রশ্ন আছে।
আপনি কয়টি দেশে ভ্রমন করেছেন (ইউরোপের দেশগুলো বাদে)?

তারেক অণু এর ছবি

কোন সময় গোণা হয় নাই ভাই, আর আমার কাছে মনে হয় আমাদের দেশ একটাই- পৃথিবী।

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

আর আমার কাছে মনে হয় আমাদের দেশ একটাই- পৃথিবী

খুব চমৎকার কথা অনুদা! খুব কম মানুষই পৃথিবীটাকে নিজের দেশ ভাবতে পারে। কিন্তু সেটা আসলেই খুব জরুরী।

আসলে ঘুরাঘুরির জন্য ঐ যে আপনি বলেছেন ঘোরার মানুসিকতা সেটা খুব প্রয়োজন।
ঠিক মত অনুভবের ক্ষমতা থাকলে খুব দূরে নয় আমাদের আশে পাশেই, প্রতিটি নদ, নদী, খাল, বিল, পাহাড়, পর্বত এগুলোর যে আলাদা আলাদা বৈচিত্র্য তা চোখে পরে। ইদানিং তো এক শ্রেণির মানুষ হয়েছে, শুধু বিভিন্ন জাইগায় পা দেই আর ফেসবুকে ছবি আপলোড করে- নিজে ঘুরে দেখার চাইতে মানুষকে জানানোর আগ্রহটাই বেশি। এটা যেন একটা প্রেসটিজ ইস্যু,
নিজে কি দেখলাম তা না- কয়টা জাইগা ঘোরা হল, সেগুলো বিখ্যাত কিনা, মানুষ কতটা বাহবা দিল, এইসব হাবিজাবি আর কি।
মনের শান্তির জন্য, ভিতরকার তাগিদের জন্য ঘোরা, এখনও হয়ত শিখিনি আমরা !
আর সঙ্গী নির্বাচন, আপনি তো বলেই দিয়েছেন।

পোস্ট খুবই চমৎকার, উত্তম জাঝা!

চলুক ঘোরাঘুরি, চলুক লেখালিখি হাততালি

সুনীলের পায়ের তলায় সর্ষে ছিল, হুমায়ূনের খড়ম- আর আপনার কি আছে, ঠিক ঠিক মতন কোন দেখি দেঁতো হাসি

তারেক অণু এর ছবি

আসলে ঘুরাঘুরির জন্য ঐ যে আপনি বলেছেন ঘোরার মানুসিকতা সেটা খুব প্রয়োজন।
ঠিক মত অনুভবের ক্ষমতা থাকলে খুব দূরে নয় আমাদের আশে পাশেই, প্রতিটি নদ, নদী, খাল, বিল, পাহাড়, পর্বত এগুলোর যে আলাদা আলাদা বৈচিত্র্য তা চোখে পড়ে
চলুক

সত্যপীর এর ছবি

মনে করেন ফরমুলা ওয়ান চ্যাম্পিয়ান আইসা যদি বক্তিতা দেয়, "ভাইসকল, শুন কিভাবে রেসে গাড়ি চলাইবা। স্টিয়ারিং হুইলওলা সিটে বইস। চাবি ঘুরাও, ডাইনে বাঁয়ে আয়না সেট কর। এরপর ব্রেক চাইপা গাড়ি গিয়ারে নেও। আস্তে আস্তে ব্রেক ছাড়ো এবং ডাইনেবাঁয়ে দেইখা খুপ সাপধানে গাড়ি ছাড়ো। রাস্তা ডাইনে ঘুরলে স্টিয়ারিং ডাইনে ঘুরাও, বাঁয়ে ঘুরলে বাঁয়ে। সামনে গাড়ি দেখলে ওভারটেক কর, তয় সাপধানে। একটা একটা করে সব গাড়ি কাটায় আগাও, দেখবা তুমিও হইছ ছ্যাম্পিয়ন।"

আপনের পোস্ট হইসে সেরাম। শুইনা গেলাম আর কি।

..................................................................
#Banshibir.

রংতুলি এর ছবি

চলুক হো হো হো

শামীম এর ছবি

হো হো হো

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

তারেক অণু এর ছবি

হ, ছ্যাম্পিয়ন হবার মন্ত্র বোঝার জন্য শুভেচ্ছা।

স্যাম এর ছবি

হো হো হো চলুক

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি
সাবেকা  এর ছবি

চমতকার পোষ্ট, ভ্রমণসঙ্গী নিয়া কথাগুলো সবচেয়ে দামি হাসি

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

ভীষণ দরকারী গাইড লাইন অণুদা। আন্তরিক ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা। অতি মনোযোগ দিয়ে পড়ছি আর পয়েন্ট টুকে রাখছি।


_____________________
Give Her Freedom!

তারেক অণু এর ছবি

টুকে রেখেন না গো কবি, বেরিয়ে পড়েন সময় সুযোগ হলে ( বিশেষ করে বিয়ের আগে হবু-র সাথে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থাকা দরকার)

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

লইজ্জা লাগে খাইছে

দেড় বছর ঘুরাঘুরি অফ আছে তয় এর আগে কিন্তু আমিও ন্যানো-তারেকাণু ছিলুম হুঁউঁউ দেঁতো হাসি


_____________________
Give Her Freedom!

তারেক অণু এর ছবি

তা তো বটেই, তা তো বটেই-

রংতুলি এর ছবি

উপকারী পোস্ট! অনেক অনেক ধন্যবাদ!

আপনার বন্ধুটির জন্য করুণা হলো। ভ্রমণে গেলেই ব্রেক-আপ! অর্থাৎ সে ভ্রমণের মাধ্যমে সম্পর্ক যাচাই করছে, এই বিষয়টা ভয়ঙ্কর লাগলো আমার কাছে!

আলকেমিস্টে একটা লাইন ছিলো এরকম- "The secret of happiness is to see all the marvels of the world, and never to forget the drops of oil on the spoon."

জানিনা কেন, এই লাইনটা আমার মনে গেঁথে গিয়েছিলো। আমার কাছে মনে হয়, হয়তো শুধু চোখ দিয়ে পৃথিবী দেখাটাই আসল কথা (বা পূর্ণ তৃপ্তিদায়ক) না। ইচ্ছা, সময়, সুযোগ, অর্থ এগুলো ছাড়াও আসল বিষয় হলো সম্পর্ক ও দায়িত্ব। এগুলো অনেক বড় ফ্যাক্ট। পৃথিবীর ঐশর্যগুলো তখনই নিজের কাছে পূর্ণতা পায় যখন এর প্রতিটার সঠিক ব্যাল্যান্স করা যায়।

তারেক অণু এর ছবি

না না, সে কিন্তু ভ্রমণ দিয়ে যাচাই করে নি, ব্যাপারটা হচ্ছে ভ্রমণে গেলে সে নিজেদের মধ্যকার অমিলগুলো সহজেই খুঁজে পেয়েছে।

ইচ্ছা, সময়, সুযোগ, অর্থ এগুলো ছাড়াও আসল বিষয় হলো সম্পর্ক ও দায়িত্ব। এগুলো অনেক বড় ফ্যাক্ট। পৃথিবীর ঐশর্যগুলো তখনই নিজের কাছে পূর্ণতা পায় যখন এর প্রতিটার সঠিক ব্যাল্যান্স করা যায়।

দায়িত্ব এবং সম্পর্ক সম্পর্কে কি বোঝাতে চাইলেন সেটা পরিষ্কার করে বললে ভাল হত- ভবঘুরেদের দায়িত্ব কোন সমাজের প্রতি কোন অংশেই কম নয়, রাহুলের বইটি পড়লে দেখবেন সে সমাজের সকল উন্নতির জন্য ভবঘুরেদের কাজকেই সাধুবাদ দিয়েছে। ফ্যাক্ট জিনিসটাও কিন্তু রিলেটিভলি ব্যক্তিগত- অনেকেই চায় নিজের সংসার, সন্তানদের নিয়ে সুখ- অনেকেই আবার চায় নিজের আলাদা সংসার না গড়ে, বিশ্বটাকেই সংসার হিসেবে দেখে সাধ্যমত পৃথিবীর কাজে আসতে। আপনার কেনিয়া নিয়ে লেখাটির সেই ভদ্রলোকের কথাই ধরুন- যে সেই ন্যাশনাল পার্কটি স্থাপন করেছিল । আমার হিসাব সোজা- কারো ক্ষতি না করে আপনার যেটা ভাল লাগে সেটাই করুন, কিন্তু কোন কিছুর উপকারে আসলে সেটি আরও ভাল।

মুস্তাফিজ এর ছবি

অত ভ্রমণের দরকারটা কী?
দ্বিজেন্দ্রলাল রায় পড়েন নাই?

নন্দ বাড়ির হ'ত না বাহির, কোথা কি ঘটে কি জানি;
চড়িত না গাড়ি, কি জানি কখন উল্টায় গাড়িখানি,
নৌকা ফি-সন ডুবিছে ভীষণ, রেলে 'কলিসন' হয়;
হাঁটতে সর্প, কুকুর আর গাড়ি-চাপা পড়া ভয়,
তাই শুয়ে শুয়ে, কষ্টে বাঁচিয়ে রহিল নন্দলাল
সকলে বলিল- 'ভ্যালা রে নন্দ, বেঁচে থাক্ চিরকাল।'

...........................
Every Picture Tells a Story

তারেক অণু এর ছবি

আহহা, আর বাহিরে যাওয়া হবে না মন খারাপ

তিথীডোর এর ছবি

নন্দ বাড়ির হ'ত না বাহির, কোথা কি ঘটে কি জানি;
চড়িত না গাড়ি, কি জানি কখন উল্টায় গাড়িখানি,
নৌকা ফি-সন ডুবিছে ভীষণ, রেলে 'কলিসন' হয়;
হাঁটতে সর্প, কুকুর আর গাড়ি-চাপা পড়া ভয়,
তাই শুয়ে শুয়ে, কষ্টে বাঁচিয়ে রহিল নন্দলাল
সকলে বলিল- 'ভ্যালা রে নন্দ, বেঁচে থাক্ চিরকাল।'

হায় শৈশব...

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তিথীডোর এর ছবি

আগে বাসা থেকে অদরকারে বেরুতেই চাইতাম না।
এখন ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে খালি পালাতে মন চায়। খাইছে

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তাপস শর্মা এর ছবি
তারেক অণু এর ছবি
ওডিন এর ছবি

আরেকটা ব্যাপার প্রায়ই দেখি আজকাল- মানুষের হা হুতাশ। শুরুতে খারাপ লাগতো, যখন কেউ ফেসবুকে বলতো, আহারে অমুক জায়গায় যাইতে পারলাম না। কিন্তু পরে দেখলাম, কিছু লোক আসলে এইভাবে বলতেই পছন্দ করে। যখন সত্যিকারের ঘোরার সুযোগ আসবে, তখন এদের নানারকম কাজের কথা মনে পড়বে, নানা ব্যস্ততা আসবে। কিছু ব্যস্ততা সত্যিই উপেক্ষা করা যায় না, কিন্তু অধিকাংশ ব্যস্ততাই কিন্তু আসলে প্রায়োরিটির ব্যাপার। আপনার কাছে ঘোরাঘুরির প্রায়োরিটি কতোটা উপরে, তার উপরেই কিন্তু নির্ভর করে আপনি সেই ব্যস্ততাগুলিকে উপেক্ষা করতে পারবেন কিনা। যখন সুযোগ আসে, তখন দেখা যায় এই লোকগুলি নানা বাহানায় পিছলায়া যায়। এখন বিরক্ত লাগে এই কাজগুলি দেখলে।

চলুক

এইজন্য আমি এখন লোকজনকে সাধা ছেড়ে দিছি । গতবার লাদাখ যাওয়ার সময়েই বুঝতে পারলাম। মন খারাপ

যাই হোক, আমাদের প্রিয় ঘণু'দাকে অসংখ্য ধন্যবাদ- লেখাটার জন্য। কোলাকুলি কয়দিন ধরেই আমরা আলাপ করছিলাম এইরকম একটা লেখার কথা নিয়ে।

আলাপ তো অনেক বিষয় নিয়েই হইছে- তবে আমি টেকাটুকার বেপারটা নিয়ে ইট্টু আলাপ করি। আরে মিয়াভাইয়েরা- টেকাটুকা কুন বিষয় না। একটা বাটার জুতার বাক্সে সুযোগ পাইলেই পঞ্চাশ একশো পাঁচশ টাকা ফেলতে থাকবেন। কায়দা করতে পারলে আরো বেশি। বুড়ি নানুদের সেবাযত্ন করবেন, পাশের বাসার আন্টির বাজারটা আগায়া দিবেন। উৎসব পার্বণে মুরুব্বিদের দেখলেই ঝাপিয়ে পড়ে সালাম করবেন। বছরে তিনটার বেশি শার্ট মানুষের লাগে না, ওইদিকে কিপ্টা হইবেন। সামদাদোতে মাসে একবার 'সুশি'ত না হয়া ছয়মাসে একবার খান। টেকাটুকার যোগাড় হয়ে যাবে।

আরেকটা বেপার হইলো ছুটির বিষয়টা। আমি খুচরা ছুটি নিই না। সব জমিয়ে রেখে লম্বা করে একটা ছুটি নেই। তারপরেও মাঝে মাঝে 'প্যাট ব্যথা করে হাসপাতালে যামু না' বলে ভোগলামি করে ঘরে বসে হেলো থ্রি খেলতে ইচ্ছে করে না যে তা না, কিন্তু আসন্ন ভ্রমণের কথা ভেবে ওই আলসেমি করার ইচ্ছাটাকে টুঁটি চেপে মেরে ফেলতে হয় আরকি। কি আর করা মন খারাপ

আরেকটা বেপার ঘণুদা বাদ দিলেন, ব্যাগ আর জুতার বেপারটা। কোথাও ঘুরতে গেলে একটা ভাল ব্যাকপ্যাক আর ডেপ্যাক, আর হাঁটার জুতা অতিআবশ্যক। এইগুলার জন্য কিপটামি করা যাবে না। ভিবজিওর কালারের সুয়েটার আর অদ্ভুতুড়ে শর্টস না কিনে আমার মনে হয় ব্যাগ আর জুতোর পিছনে খরচ করা উচিত। নেপাল থেকে ২০১০ এ কেনা আমার নকল নর্থফেইস এর ব্যাকপেক আর ডাফেল ব্যাগ নেপাল ভুটান লাদাখ সিলেট চি্টাগাং কক্সবাজার ময়মনসিংহ তে পেলেন টেরেন বাস জিপ ঘোড়ার গাড়ি আমার পিঠে চড়ে ঘুরেও মাশাল্লাহ ভালোই সার্ভিস দিচ্ছে হাসি

তারেক অণু এর ছবি

টেকাটুকা কুন বিষয় না। একটা বাটার জুতার বাক্সে সুযোগ পাইলেই পঞ্চাশ একশো পাঁচশ টাকা ফেলতে থাকবেন। কায়দা করতে পারলে আরো বেশি। বুড়ি নানুদের সেবাযত্ন করবেন, পাশের বাসার আন্টির বাজারটা আগায়া দিবেন। উৎসব পার্বণে মুরুব্বিদের দেখলেই ঝাপিয়ে পড়ে সালাম করবেন। বছরে তিনটার বেশি শার্ট মানুষের লাগে না, ওইদিকে কিপ্টা হইবেন। সামদাদোতে মাসে একবার 'সুশি'ত না হয়া ছয়মাসে একবার খান। টেকাটুকার যোগাড় হয়ে যাবে। লেখা -গুড়- হয়েছে গুল্লি

আপনে মিয়াঁ একটা পিস! দারুণ বলেছেন পুরো মন্তব্য- এখন রেডি হন- লাদাখ নিয়ে লিখতে হবে

খেকশিয়াল এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

আর ব্যাটা যা ভাগ! তোদের আগে থেকে মানস সরোবরের ধারে ফুটবল খেলার স্বপ্ন দেখি, ইস্কনের সদস্য হইয়া হইলেউ যামু দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

তারেক অণু এর ছবি

তোরে তো আইতেই কইছি- তুই নিজে থেকেই আমতা আমতা না না করতাছস হো হো হো

অরফিয়াস এর ছবি

মানস সরোবর মানস সরোবর করে করে সব আমার সুপ্ত স্বপ্নটাকে চাগিয়ে দিচ্ছে। রেগে টং "বুড়ো আংলা" পড়ার পর থেকেই যে আমি ওখানে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি !! ওখানে একদিন হেড়ে গলায় গান আমি গাইবোই। শয়তানী হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু এর ছবি

হেঁড়ে গলায় গান গেও না, ভেঙ্গে গলা যেতেও পারে!

আচ্ছা গান গেলে একা একা কিন্তু, অন্য শুনিয়ে গাওয়া যাবে না

খেকশিয়াল এর ছবি

কই আইতে কইলি? ফিনল্যান্ড? আমি তো মানস সরোবরের কথা কইলাম চিন্তিত

আর আইতে কইলে আমার নাম গেলো কো? রেগে টং

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

তারেক অণু এর ছবি

ফিনল্যান্ড আসার দরকার নাই, মানসেই চল।

হিমাদ্রী হেমচন্দ্র এর ছবি

যাক ! এত দিনে লিখেছিস ।

তারেক অণু এর ছবি

এইতো

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

চমৎকার অণু'দা চলুক
ট্রিপ অ্যাডভাইসর ওয়েবসাইট-টা আসলেই খুবই কাজের
(মূলত পশ্চিমা দেশগুলোতে) ভ্রমনের সময় যদি টেকনোলোজির সুবিধা নেয়া যায় (স্মার্ট ফোন, জিপিএস ইত্যাদি) তাহলে ছোটখাট ট্যুর আজকাল কোন ব্যাপারই না - শুধু দরকার একটু সময় আর সদিচ্ছা।

তারেক অণু এর ছবি

ঠিক ঠিক, তবে সদিচ্ছা আর ছাড় দেওয়ার মন থাকলে সব দেশেই ঘোরা সম্ভব

অতিথি লেখক এর ছবি

অনুদা, চমৎকার হয়েছে লিখাটা। আমার খুব দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার স্বপ্ন নেই, বিশাল এক কাশবন গিয়ে হঠাৎ আকাশের দিকে তাকিয়ে অবাক হওয়ার মত আনন্দ হয়তো কোন বিখ্যাত জায়গায় গিয়েও পাওয়া যাবে না। বিশাল আকাশ দেখার মত আনন্দ, মেঘের রঙ বদলাতে দেখার মত আনন্দ - ভাললাগা তো নিজের কাছে।
আপনার জন্য শুভকামনা।
-লাবণ্যপ্রভা

অতিথি লেখক এর ছবি

আশ্চর্য! আমার ও দেখি এক স্বপ্ন । অবশ্য কিছুদিন আগেই আমি মিরপুর ডিও এইচ এস এ গিয়ে কাশফুলের এক গাদা ছবি আর কিছু দুর্লভ মুহূর্ত সঙ্গে করে নিয়ে এলাম। বিদেশ ভ্রমণের ইচ্ছে আমারো আছে । তবে ভ্রমণ সঙ্গী আর বাসার বিধিনিষেধ এর কারণে হয়ে উঠছে না । তবে আমি অপেক্ষায় আছি । একদিন আমারো সুযোগ আসবে যদি বেঁচে থাকি ।

কাদম্বরী

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই

তারেক অণু এর ছবি
সং  রাজা এর ছবি

স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রতিক্ষায় আছি । আপনার তথ্য গুলোর জন্য গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

তারেক অণু এর ছবি

স্বপ্ন সত্যি হবেই-

অতিথি লেখক এর ছবি

রমণের সঙ্গী যদি মনের সঙ্গী না হয় তবে সেই ভ্রমণ বিষবৎ

একদম খাটি কথা। ভুল সঙ্গী নির্বাচনের বাস্তব অভিজ্ঞতা পেয়েছি একবার।
চলুক

তারেক অণু এর ছবি

ইয়ে, ভ্রমণ কিন্তু, রমণ না !

Guest_Writer নীলকমলিনী এর ছবি

অনেক কিছু জানা গেল। দূরের ভ্রমনে প্ল্যান করে যাওয়া খুব দরকার। কিন্তু মাঝে মাঝে হুট করে এক প্রস্ত কাপড় আর তুথ ব্রাশ নিয়ে একদিনের ভ্রমনও মন্দ নয়। অনেক সময় দেখা যায় আমরা দূরে দূরে বেড়াতে যাই, কিন্তু বাড়ীর কাছের অনেক কিছু দেখিনা।
তোমার টিপস এর জন্যে ধন্যবাদ।

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই, একদিনের ভ্রমণও দারুণ! খুবই পছন্দ করি।

অতিথি লেখক এর ছবি

অণুদা, লেখাটা লাজবাব! সবচেয়ে বেশি করে জাগিয়ে দিলেন ভ্রমণের আশা - যে আশা বড় তীব্র। রাজশাহীর তীব্র শীতের জানুয়ারীর কথা মনে পড়ছে। শিরে সংক্রান্তি, নির্ঘুম রাত্রি- অর্থাৎ প্রফেশনাল পরীক্ষা; বাইরে কুয়াশায় সাদা, ঘর সিগারেটের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। তার মধ্যে সাধ হোল, মুরগী ঝলসে খাবার। পরীক্ষা পেরিয়ে গেল, ছাত্রত্ব ঘুচে গেল, হারালো না শুধু সেই হাওয়ার রাত, কুয়াশার চাদরে ঢেকে আগুনের উষ্ণতা অনুভবের আকাংক্ষা, প্রকৃতির বুকে লীন হয়ে, ঘাসের মত বেঁচে থাকার আকাংক্ষা। এই রকম ছোট-খাটো আবেগ নিয়েই আমার ভ্রমণচেতনা।

নির্ঝর অলয়

তারেক অণু এর ছবি

পরীক্ষা পেরিয়ে গেল, ছাত্রত্ব ঘুচে গেল, হারালো না শুধু সেই হাওয়ার রাত, কুয়াশার চাদরে ঢেকে আগুনের উষ্ণতা অনুভবের আকাংক্ষা, প্রকৃতির বুকে লীন হয়ে, ঘাসের মত বেঁচে থাকার আকাংক্ষা। এই রকম ছোট-খাটো আবেগ নিয়েই আমার ভ্রমণচেতনা। দারুণ বলেছেন।

অমিত এর ছবি

লেখাটা চমৎকার লাগল।
এই লোকের কথাও অনেকটা আপনার মত, পয়সা ব্যাপার না, ইচ্ছাটাই আসল।

তারেক অণু এর ছবি

কোন সন্দেহ নেই-

পরী এর ছবি

নিঃসন্দেহে চমৎকার একটি পোষ্ট।
কয়েকটা জায়গায় মনের মতো কিছু কথা বলেছেন। যেমন, একসাথে ভ্রমনে গেলেই মানুষ চেনা যায়। এখন পর্যন্ত যেখানে যেখানে গিয়েছি, কারো না কারো সাথেই আমার আর পরেরবার ভ্রমন করা হয়নি। আবার খাবার-দাবার নিয়েও অনেকের নাক সিটকাতে দেখে শেষে বলেই ফেলেছিলাম, "অমন পুতু পুতু মার্কা মন নিয়ে আর যাই হোক আমাদের সাথে ঘুরতে এসো না, কক্সবাজার গিয়ে হোটেল বুকিং করে ঘুমাও।" হেটে হেটে ক্লান্ত হলে পাহাড়ি ঝর্নার পানি, রাস্তার খাবার ইত্যাদি যা পেয়েছি খেয়েছি। আসলে ভ্রমন করার জন্য টাকা যেমন দরকার তেমনি দরকার ভ্রমন স্থান ও পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলার মতো সুস্থ মন মানসিকতা।

তারেক অণু এর ছবি

সহমত চলুক

নিলয় নন্দী এর ছবি

আপনার পোস্ট আর সত্যপীরের ছ্যাম্পিয়ন মন্তব্য দুইটাই সেইরাম।
হাততালি

তারেক অণু এর ছবি

সত্যপীর একটা অভিশাপ খাইছে

স্যাম এর ছবি

চমৎকার !
ভিসা আসলেই একটা অভিশাপ!
বেশিরভাগ কথাই আপনার সাথে মিলে গেল -
কোন কোন সময় কিন্তু মূল গন্তব্য এর চাইতে অপেক্ষাকৃত ছোট বাধাগুলো বড় হয়ে উঠে - যেমন কেওক্রাডং এ উঠার চাইতে আমার কাছে কঠিন লেগেছে বগা লেকের আগের শার্প স্লোপ টা -

তারেক অণু এর ছবি

হ, এরেই বলে নাগা মরিচ, সাইজে ছোট্টা কিন্তু ঝাল বেশী!

ভিসামুক্ত বিশ্ব হবে একদিন, কিন্তু কতদিনে তা জানি না

CannonCarnegy এর ছবি

দারুন লেগেছে। পীরবাবার কমেন্ট গুল্লি

তারেক অণু এর ছবি

পীর মুক্ত বিশ্ব চাই!

মেঘা এর ছবি

ঠিক আছে আমিও তাহলে এখন থেকে চক্কেট না খেয়ে টাকা জমাবো। তারপর বাড়ি থেকে বের হয়ে যাবো। চলুক

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

তারেক অণু এর ছবি

চক্কেট না খেলে সেই টাকাতে কহা কহা মুল্লুক পর্যন্ত ঘোরা হয়ে যাবে! সাবাস।

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন পোস্ট।মাঝে মাঝে আমার ও ইচ্ছে করে হারিয়ে যেতে মন চায়। গুরু গুরু

তারেক অণু এর ছবি

আমারও ইয়ে, মানে...

জুন এর ছবি

হেহ! বিয়া করেন নাই তো। আগে করেন তারপর বুঝবেন যে টাকা কেম্নে জমে; আর কিয়ের জন্য জমে। মন খারাপ

যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...

তারেক অণু এর ছবি

তাহলে বিয়ের দরকার কি অ্যাঁ শয়তানী হাসি

জুন এর ছবি

কিন্তু আমরা যারা কইরা ফালাইছি? মন খারাপ

যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...

তারেক অণু এর ছবি

বৌ নিয়ে ঘোরা শুরু করেন!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ছাত্রজীবনে যে স্পীডে ঘুরতে শুরু করেছিলাম, পেশাগত জীবনে তাতে ব্যাপক ধ্বস নামলেও এখনো জীবনের সবচেয়ে প্রিয় শখ হলো দেশভ্রমণ। অনেক দেশ বাকী রয়ে গেছে। চাকরী সংসার এই সবে ইস্তফা দিয়ে হলেও বেরিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে। বছরে টানা এক মাস ছুটি পেলে ছেড়ে দিতাম অন্য অনেক কিছু। আমাজন, ক্যারিবিয়ান, দক্ষিন প্রশান্তমহাসাগর........বিচিত্র ব্যাপার হলো আমি যেসব জায়গায় যেতে চাই তারেকানু সেসব জায়গা ঘুরে এসে পোষ্ট দেয়। খারাপ লাগে না তখন। না গিয়েই দিব্যি ঘুরে আসা হয়। যেসব জায়গায় জীবনেও যাওয়া হবে না তার উপর দিয়ে গুগল আর্থের রোলার চালাই। ইচ্ছে তবু মরে না একদণ্ডও। ভিসামিসার ঝামেলা যদি না থাকতো এতদিনে পায়ে হেটেও ঘুরে আসতাম অনেকগুলো না দেখে দেশ। এক যুগ আগে বিশ্বনাগরিক হবার জন্য ওয়ার্ল্ড সিটিজেন পাসপোর্টের ফরম পুরন করতে লেগেছিলাম। সেই পাগলামিগুলো এখনো মিস করি।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তারেক অণু এর ছবি

এই পাগলামিগুলোই তো জীবনের অক্সিজেন, এগুলো না থাকলে বাঁচব কিভাবে!

রেডি হন, দেশের মধ্যে ঘোরাঘুরি হবে ফেবুতে।

মাজহার এর ছবি

আগ্রহের চেয়ে কান্না আসছে বেশি। জীবনের তিন-তিনটা দশক শুধু আগামীকাল কিভাবে চলব, সেই চিন্তায় পার হয়ে গেল!

এনিওয়ে, এখনও নিশ্চয় সামনে বেশ কিছু বছর পাব, প্রথম এবং প্রধান চেষ্টা থাকবে বেড়িয়ে পড়ার। কিন্তু অন্যের তরে বাঁচবার সাধটুকু বিসর্জন দেব কিভাবে সেটিও ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।

তারেক অণু এর ছবি

এনিওয়ে, এখনও নিশ্চয় সামনে বেশ কিছু বছর পাব, প্রথম এবং প্রধান চেষ্টা থাকবে বেড়িয়ে পড়ার। গুল্লি উত্তম জাঝা!

মসীলক্ষণ পণ্ডিত এর ছবি

নোরা হেলেনার সাথে পুরোপুরি একমত (আসলে ভ্রমণে গেলেই সত্যিকার অর্থে মানুষে চেনা যায়, তুমি যদি এক ঘরেও থাক, তারপরেও বাহির হলে বুঝতে পারবে তোমাদের মধ্যকার সত্যিকারের মিল কতটুকু) !

তারেক অণু এর ছবি
নাসিফ  এর ছবি

ভাইয়া কালকে থেকে বান্দরবন যাবার জন্য মাথা চড়া দিয়ে উঠছিলো, কোন এক কারনে আজকে যেতে পারি নাই। কিন্তু আপনার এই লেখাটা পড়ার পর নিজেকে কিভাবে থামিয়ে রাখি বলেন। না দু একদিনের মধ্যেই বের হয়ে পড়তে হবে।

তারেক অণু এর ছবি

গেছিলেন?

অতিথি লেখক এর ছবি

অণুদা, আমি ঠিক জানিনা, কীভাবে যেনো ঘোরার টাকা যোগার হয়েই যায়।
হয়তো অপ্রতুল। কিন্তু ঘুরে আসা যায়।
বেশি ভাবলে, ঘোরার আনন্দ মাটি হয়।
তাই ভবঘুরের মতো হটাত বেরিয়ে পড়তে খুব ভালোলাগে।
ঠিক আপনার মতো হাসি
-- ফয়সাল সিকদার

তারেক অণু এর ছবি

পথে নামলে জোগাড় হয়ে যায়ই ভাই

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।