হরেন ডাক্তার বেঞ্চিতে বসে পা দোলাচ্ছিল। তার ময়লা ধুতির খুঁটটা গড়ায় মাটির মেঝেতে। নুরু গ্লাস ধুতে ধুতে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। একটা লোক পা দোলাতে দোলাতে কান চুলকায় কিভাবে? ডান কান চুলকানো শেষ। হরেন ডাক্তার পাখির পালকটা বাম হাতে নেয়, তারপর আবার পা দোলায় আর কান চুলকায়। নুরু এগিয়ে গিয়ে চায়ের কাপটা হরেন ডাক্তারের সামনের টেবিলে রাখে, ‘বিস্কুট দিতাম?’
দড়ি ধরে টানতে টানতে শামলীকে নিয়ে উঠোনে ঢোকে কাশেম। প্যন্টের দড়িটা ওর কখন ছিঁড়ে গেছে, কোমড়ের কাছটা টেনে এনে বাঁধতে থাকে একসাথে। এই ফাঁকে শামলী উঠোনের কোনে ফুলগাছে মুখ গুঁজে দিতে যায়। কাশেম দৌড়ে গিয়ে গলার দড়িটা হাতে তুলে নিয়ে ফিরে আসে, ‘ও খালা, শামলীকে এই ধারে বেন্ধে দেব না গোয়ালে তুলে রাখব?’
‘গোয়ালেই তুলে রাখ বাবা,’ শানুর আম্মা বারান্দা থেকে হাত নাড়েন।‘আবু ভাই পরে ধোঁয়া দিয়ে আসবে যা।’
*
তুমি বাড়ীর পথে ছিলে, যখন তুমি মারা যাও।
গাড়ীতে ছিলে, ভেঙ্গেচূড়ে পড়েছিলো তোমাকে নিয়ে। তোমার স্ত্রী আর দুই সন্তান রয়ে গেলো। মারা গেলে। সাদা এপ্রনের ওরা সব করেছিলো, যা কিছু করা যায়- কিন্তু। খুব করে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিলে তুমি, যেমন তোমার গাড়ীর সব কাঁচ, কিংবা সব স্বপ্ন তোমার। বিশ্বাস করো তোমার চলে যাওয়াই ভালো ছিলো সব থেকে।
তারপর, আমাকে দেখলে তুমি। আমি, তুমি।
- ফাহিম হাসান
ইশকুলেতে বলেন টিচার হঠাৎ করে কান ধরে-
আমি নাকি বদলে গেছি লাউয়াছড়ার বান্দরে।
অবাক হয়ে আয়নাতে মুখ দেখে দেখে হলাম শেষ
গায়ে মুখে কোথাও তো নেই বানরজাতির খয়েরী কেশ।
পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি লেজের কোন চিহ্ন নেই
আমার আমি, সবার মতন, দেখতে লাগে যেই কী সেই!
পাড়ার বড় ভাইবোনেরা পড়েন যারা কলেজে,
তুখোড় তারা বিজ্ঞানে ও সব ধরনের নলেজে।
বলল তারা বানর আছে মিরপুরেরই ...
মানুষ, কিংবা
যখন বিরুত বৃক্ষ হবার পথ খুঁজছে,
চাইছে আকাশ কেবল তারই ওপর উপুড় হোক-
তার কাছে সহসা উন্মোচিত হয় সকল মানুষের মানব-মুখোশ।
বিবর্তনের শিখরে দন্ডায়মান সে প্রাণির মুখ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়ে
আর তারা এক এক করে হয়ে ওঠে প্রতি প্রজাতির প্রতিনিধি স্বরুপ।
বিরুত আশ্চর্য হয়, তাকিয়ে দেখে আকাশও অদ্ভূত।
সে দেখে, সময়ের ব্যবধানে স্নেহ-মমতার মূর্তিময় আকর
কি করে হয়ে ওঠে জ্বলজ্যান্ত মাক ...
আইভরি কোস্টে তখন সন্ধ্যা ৭টার একটু বেশি বাজে। আবিদজান শহরের এক প্রান্তে, বিমানবন্দরগামী রাস্তার আলোগুলো জ্বলে উঠেছে। কালো রঙের বিএমডব্লিউটার চালক বুঝতে পারেন তিনি ভুল পথে চলে এসেছেন। ঠিক রাস্তায় উঠতে হলে তাকে এখন যেতে হবে উলটো দিকে। তবে কথা হল এ সড়কে গাড়িঘোড়ার গড় গতি ঘণ্টায় ৭০ কিমি। সাতপাঁচ ভেবে তিনি সামনে তাকান। না, বিপরীত দিক থেকে কোন গাড়ি আসছে না। রিয়ার ভিউ আয়নাতেও তেমন নি...
শেষমেষ যেতেই হলো দেশে । আজ যাব কাল যাব করে কখনযে অনেকগুলো বছর কেটে গেছে টের পাইনি । কারন যে কিছু নেই তা নয় : মনেহয় প্রতিষ্ঠা, পেশা মাথার ভেতরে খুব ভাল করে জেকে বসেছিল, তাই সময়ের চলে যাওটা ঠাহর করতে পারিনি । যাইহোক অনেক সময়, অর্থ ব্যায় করে অবশেষে দেশে যাওয়া হলো, কমকরে একটা মাস সেখানে কাটানো গেল, এটা অনেক পাওয়া- কোনকিছু দিয়ে তাকে পরিমাপ করা যবেনা । যথাসময়ে কানডায় ও ফিরে আসলাম সপরিবারে । ...
১
ধূর! এই কামলাগিরি আর ভালো লাগে না।
দিন শেষে বাড়ি ফিরতে ফিরতে তমাল নিজের মনেই কথাটা ভাবছিলো আর গালি দিচ্ছিলো নিজের ভাগ্যকে। কেন যে সুখে থাকতে ভুতে কিলায় মানুষকে!! কি কুক্ষনেই না ডিবি টা করেছিলো!!!
আবু ভাইয়ের পরামর্শটা ভেবে দেখছে। ভালই মনে হচ্ছে। চার বছরের চুক্তি। থাকা খাওয়া, পড়াশোনা সব খরচ ওদের। উপরি হিসাবে আছে বেতন, বেনিফিটস্ । বাবা –মাকেও একটু সাহায্য করতে পারবে। বাসায় এখনও ...
চার - (শেষ কিস্তি)
তারুর বিয়ের পর থেকে কিনা কে জানে রীনারা তিনবোন বা পাড়ার অন্যান্য আবিয়াত মেয়েগুলি হয় তো বিয়েশাদীর স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। এইবার তো রীনাও পাক্কা ধরে নিয়েছিল পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফিরলে আম্মা তার ঠিক হওয়া বিয়ে দিয়ে হজ্বে করবে। প্রতিবার বিয়ের কথা হলে তাকে এই কথাই শুনতে হয়। এইবার রীনাও এক রকম কনর্ফাম মনে করেছিল- কারণ এই ছেলে তো গত দুইমাসে দুইবার তাকে দেখতে ঢাকা এসে ঘুরে ...