মোর দুর্মর দুর্ভাগ্যগুলি-----

অনিকেত এর ছবি
লিখেছেন অনিকেত (তারিখ: মঙ্গল, ১০/১১/২০০৯ - ১:৪৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজ থেকে হাজার বছর আগে যখন আমার জন্ম হয়েছিল, তখনই আমার সাথে আরো একটা জিনিস এই পৃথিবীতে চলে এসেছিল-- আমার দুর্ভাগ্য। তারপর আমরা দুইজন প্রায় একসাথেই বড় হয়েছি এই পৃথিবীর পথে ঘাটে। মুস্কিল হল---এখন আমি বুড়ো হচ্ছি কিন্তু আমার সেই যমজ ভাই দুর্ভাগ্যের মুখে বয়েসের কোন ছাপ নেই। এখনো সে বেশ মসৃন চেহারার যুবক।

অনেককেই দেখেছি জন্ম থেকে কোন আঁচিল, জুড়ুল বা এই জাতীয় কোন রকম জন্মদাগ শরীরে বয়ে নিয়ে বেড়াতে। আমার জন্মদাগ হল আমার দুর্ভাগ্য। বেশ কিছুটা বড় হবার পরে বুঝলাম---শুধু আমি নই, এ আমার পারিবারিক ঐতিহ্য। আমার পরিবারের (বাবার দিকের অংশে) কারোরই কোন কিছু সহজে হয় নি। আমার বাবা, বেচারা শৈশবেই পিতৃহারা। দরিদ্র মা নানা দিকে চেয়ে-চিন্তে বেচারাকে বড় করেছেন। সেই বড় হবার পথটাও যথারীতি কণ্টকাকীর্ণ। নানা জায়গায় ঠোক্কর খেতে খেতে শুধু মাত্র 'হাল-ছেড়ে-না-দেবার' বদ অভ্যেসের কারণে বেচারা শেষমেশ মোটামুটি সফল ভাবেই চাকুরী জীবন শেষ করেছেন। এখন বৃদ্ধাবস্থায় যখন তাঁর একটা শক্ত সবল কাঁধের বড্ড প্রয়োজন, প্রয়োজন কিছু স্বস্তির হয়তবা কিছুটা বিলাসের, দুর্ভাগ্য তাঁর---সন্তান হিসেবে পেয়েছেন আমাকে। সকল দায়-দায়িত্ব থেকে পালিয়ে বেঁচে আছি প্রবাসে।

শুরুর দিকে খুব মন খারাপ করতাম। দেখতাম আমার আশে-পাশের সবার যে কোন জিনিস কত অনায়াসে হয়ে যায়। কেবল আমার বেলায় যত গন্ডগোল বাঁধে। সকল দুর্ভোগ কেবল আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ার অপেক্ষায় ওঁত পেতে থাকে।

কিছু ছোট ছোট উদাহরন দেই, বুঝতে পারবেনঃ

ঘটনা-১) তখন বুয়েটের শহীদ স্মৃতি হলে থাকি। এমফিল নামক একটা উৎকট জিনিস করার চেষ্টায় আছি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হয় বুয়েটে নয় আনবিক শক্তি কমিশনে কাজ করছি। বিকেলে ট্যুশনি। সেটাও দেখার মত। বুয়েট থেকে রিক্সা করে নীলক্ষেত। সেখান থেকে টেম্পু করে ফার্মগেট। সেখান থেকে আবার টেম্পু করে গুলশান দুই। সেখান থেকে রিক্সা করে বারিধারা।আসতে যেতে দুই ঘন্টা। পড়াতাম দুই ঘন্টা। তো যারা বুয়েটে ছিলেন এবং শহীদ স্মৃতি হলের সাথে পরিচিত আছেন---তারা জানেন যে বুয়েটের কাক গুলো কী রকম বিচ্ছু!! সত্যি বলছি!!। বুয়েটের মত এমন দুঃসাহসী বদ কাক আমি আর কোথাও দেখি নি। কাক এমনিতেই বেশ ডাকাবুকো ধরনের পাখি। মানুষের কাছাকাছি থাকতে থাকতে মানুষ সম্পর্কে লাজ-ডর-ভয় সব হারিয়েছে। আর বুয়েটের গুলো কী রকম করে জানি টের পেয়েছে যে তারা দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের 'নিজস্ব' কাক। তাই তাদের ভাবই আলাদা। আমাদের হলে ঢোকার পথটা নানান গাছে ছাওয়া।পথের দুইপাশে ছায়া দেয়া এই ছায়াবীথি গুলো দেখে ভাবে মজলেই মরেছেন। ওইগুলো আসলে বিশাল ফাঁদ। আপনি যদি একটু দূর থেকে সতর্ক ভাবে গাছের তলা পর্যবেক্ষন করেন, তবে দেখতে পাবেন প্রতিটা গাছের তলায়
বায়স-কুলের পুরীষ সজ্জা!! তাও আবার যেমন তেমন নয়---একেবারে Binomial distribution এর Bell curve! আমাদের মধ্যে যারা ঘাগু মাল, তারা ঠিকই জানতেন যে ঐ জায়গাগুলো আসলে মরণ-ফাঁদ। ওইসব জায়গা দিয়ে গিয়েছেন কী মরেছেন----গাছের নানান ডালের ফাঁক থেকে চোরাগুপ্তা হামলা চালাবে বায়স-কুল---সোজা বাংলায়, আপনার মাথায় 'হেগে' দেবে!!! দুয়েকবার মাথায় কাকের 'ইয়ে' পড়ার পর, আমার বুদ্ধি গজাল! আমি এখন ঘরে ফিরি এঁকেবেঁকে। Bell curve গুলো সতর্ক ভাবে এড়িয়ে। কাকগুলোও দেখা গেল কেমন করে জানি আমার এই ফন্দিটা ধরে ফেলল এবং কোন এক কারণে খুব অপমানিত বোধ করল। বোধকরি তাদের কোন গোপন মিটিং-এ আমাকে দোষী সাব্যস্ত করা হল এবং এই মর্মে ফতোয়া জারী করা হল যে, আমাকে যখন যেখানে পাওয়া যাবে......আমার উপর 'ইয়ে' করে দিতে হবে! আমি স্বভাবতই এদের এই রকম কোন হঠকারি সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে একেবারেই অবহিত ছিলাম না। ফলে যা হবার তাই হল। আমি গাছের তলাগুলো এড়িয়ে গেলেও তারা উড়ে এসে 'ইয়ে' ছুঁড়ে দিয়ে চলে যেত---যেমন করত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বোমারু বিমানগুলো। আমি ১৯৯৬ সালে ১৯৪৩ এর দুঃস্বপ্নময় দিন কাটাতে শুরু করলাম। আপনারা হয়ত ভাবছেন---এতে করে তোমার আলাদা করে দুর্ভাগ্যের কথা তো কিছু টের পেলাম না।

আছে আছে......সব তো এখনো বলিনি, মশায়।

আমরা সাধারনত শুক্কুর বারে শেভ করে যার যার সবচাইতে ভাল কাপড়-চোপড় পরে 'হাকুল্লা' গিরি করতে বেরুতাম। এই শব্দটির সাথে যারা পরিচিত আছেন তাদের নতুন করে কিছু বলার নেই। যারা জানেন না তাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি---আমরা যারা হলে থাকতাম, তারা নিয়ম করে প্রতি শুক্কুর বার নানা কমিউনিটি সেন্টারে হানা দিতাম---অবশ্যই বিনা নিমন্ত্রনে। উদ্দেশ্য সুসজ্জিত নারী দর্শন এবং তারচেয়ে জরুরি ----কিছু সুখাদ্য ভক্ষন। আমাদের বেসবাস দেখে আমাদের উদ্দেশ্য বোঝা মুস্কিল ছিল। অশিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা সফলতার সাথে খেয়ে বেরিয়ে গেছি। তবে দুয়েকবার সন্দেহগ্রস্ত লোকজনের ধাওয়া খাইনি---এইটা বললে নেহাৎ মিথ্যে বলা হবে।

যাই হোক এইরকমই এক শুক্কুর বারে আমরা পাঁচ বন্ধু বেরুচ্ছি হাকুল্লা গিরি করতে। গায়ে সুগন্ধী মেখে। কড়া ইস্ত্রি করা শার্ট-প্যান্ট। সদ্য সদ্য শেভ করা গালে সূর্যের আলো পিছলে যাচ্ছে। সেদিন হল থেকে বেরিয়েই কেন জানি মনটা কুডাক ডাকা শুরু করল। কিন্তু এসব নেহাৎ কুসংস্কার ভেবে বুকে বল এনে হাটা শুরু করলাম বন্ধুদের সাথে। এখন দৃশ্যটা কল্পনা করুন। পাঁচটি লোক। তাদের দুইজন সামনে, তিনজন পেছনে (২-৩ ফর্মেশান)। শেষের তিনজনের মাঝের জন আমি। আমি দুরু দুরু বক্ষে এগুচ্ছি আর ভাবছি কোনমতে বিপদ এড়িয়ে যেতে পারলেই বাঁচোয়া। হলের রাস্তার প্রায় আধাআধি পথ গিয়েছি এমন সময় ঘটনাটা ঘটল। হঠাৎ করে টের পেলাম আমার মাথার উপর ঈষদুষ্ণ অর্ধ-তরল কিছু উর্ধালোক হতে নিপতিত হয়েছে।এবং সেই অর্ধ তরল বস্তুটি এই মুহুর্ত্তে আমার কপাল বেয়ে নিম্নদিকে ধাবমান। আমি বিনা-বাক্য ব্যয়ে হলের দিকে দৌড় দিলাম। বন্ধুরাও ফিরে এল আমার সাথে। শুনলাম তারা বলাবলি করছে----এর কপালটা দেখ, আমরা এতজন আর ইয়ে পড়ল কিনা ওর মাথায়??!! যাই হোক, ঘরে ফিরে সোজা চলে গেলাম গোসল খানায়। পাশের রুমের মুস্তাফিজ ভাই দেখলাম বারান্দায় বসে পত্রিকা পড়ছেন। তিনি জানতেন যে আমরা রোজ শুক্কুর বারে কী করি। তিনি তাবলীগী ভাব ধারার বলে এইসব কাজে যোগ দেন না। তিনি সপ্রশ্ন তাকাতেই আমার মাথার দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করলাম। তিনি ব্যাপারটা বুঝে হে হে হে করে হাসতে লাগলেন। যাক, গোসল করে, মনের মাঝে গা ঘিনঘিনে ভাবটা খানিকটা দূর করার জন্যে 'সেন্টে'র বোতল গায়ে উজাড় করে দিলাম। দিয়ে মনে হল গন্ধের চোটে নিজেরই নাড়িভুড়ি বেরিয়ে আসার জোগাড়। বন্ধুরা বাইরেই অপেক্ষা করছিল। আমি কাছাকাছি আসতেই তাদের সবার নাক একসাথে কুঁচকে গেল।একজন বলল, বোতল পুরা খালি করে ফেলেছিস মনে হয়!! ভাল ভাল,তোর কল্যানে আইজ যদি পুরা একটা খালি টেবিল জোটে--- হে হে হে ---

হল থেকে বেরিয়ে বড়জোর দশ কদম গেছি---বিশ্বাস করবেন না বললে (কারন আমার নিজেরই এখনো বিশ্বাস হয় না)আবার ঘটল ঘটনাটা!!!

হ্যা বন্ধুগন, আবার কাউয়া এসে আমার মাথায় 'ইয়ে' করে গেল।

মনে হল এইবার পরিমানেও বেশ খানিকটা বেশি। সবাই তাজ্জব! বন্ধুরা হাসবে, না কাঁদবে বুঝতে পারছে না। গেটের দারোয়ান দেখলাম মাড়ি বের করে হাসছে। আমি ক্লান্ত স্বরে বললাম, আজ আর যাব না রে, তোরা যা। ঘরে যখন ফিরছি, তখন শুনলাম মুস্তাফিজ ভাই উচ্চকন্ঠে বলছেন, কী মিয়া? কাউয়ায় আবার হাগসে???

ঘটনা-২)

এইটা আমার একেবারে সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা।

জুলাইয়ের ২৫ তারিখ রাত। রাত বারোটায় আমার 'জর্মদিন' পালন করা হবে বলে শুনেছি। মনে মনে বেশ উল্লসিত। যদিও বাইরে ভাব দেখাচ্ছি এইসবে আমি খুবই বিরক্ত ও বিব্রত। যাই হোক। সাইফের বাসায় হাজিরা দিলাম রাত এগারোটার দিকে। প্রজাপতিকে আগেই বলে দিয়েছিলাম 'কোন কিছু' যেন করা না হয়। এদিকে মনে মনে ভীষন উদবিগ্ন--আসলেই যদি কিছু না করে!! তাইলে তো পুরা ধরা!! যাই হোক উৎকন্ঠা চেপে বসে রয়েছি কাঁত হয়ে--কারণ ঘাড়ে সামারা চড়ে বসেছে। এরই মাঝে দেখি প্রজাপতি একটা দারুন সুন্দর মোড়কে করে কী একটা উপহার এনে রাখল। হাসিমুখে বলল, আমি কিন্তু এদের সবাইকে 'না' করেছি। কিন্তু এরা কেউ কিন্তু আমার কথা শুনে নাই। এই পর্যন্ত শুনেই সাইফ হৈ হৈ করে উঠল---আমি কিন্তু কিস্যু করি নাই, সব এই প্রজাপতির কাজ! প্রজাপতির দেয়া উপহারটা খুলে রীতিমত অবাক হয়ে গেলাম। আমি আমার নিজের দিকে তাকিয়ে আছি একটা মগের ভেতর থেকে!!! মানে, একটা দারুন সুন্দর মগে আমার ছবি প্রিন্ট করা। তাতে আমার সম্পর্কে কিছু 'আশা'-র বাণী শোনানো হয়েছে। আমার আপ্লুত অবস্থা দেখে প্রজাপতি বলল, আসল জিনিস তো এখনো দেখেনই নি। সাইফ দেখি আবার কটমট করে তাকাল প্রজাপতির দিকে। প্রজাপতি দারুণ একটা কেক তৈরী করেছে। সেইটা কাটার ইন্তেজাম করছি। এরই মাঝে দরজায় বেল। ঘড়িতে বাজছে ১২টা ১ মিনিট। দরজা খুলতেই ঘরে প্রথমে ঢুকল কিছু বেলুন, পেছনে পেছনে কেক হাতে আমার বন্ধু শ্রীনি, বন্ধুপত্নী প্রিয়া। মানুষের এমন প্রাণঢালা ভালবাসা পেয়ে অভ্যস্ত নয় আমার চোখ, আমার মন...কাজেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টায় দ্রুত কেক কেটে ফেললাম। কেক খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে ইতিউতি চাইছি---কোথায় আমার সেই 'আসল' জিনিস!!

কেক খাওয়া সারা হলে, সবাই গোল হয়ে আড্ডা দিচ্ছি এমন সময় প্রিয়া শুরু করল প্রশ্নোত্তর পর্ব। আমাকে বলা হল--আমার জন্মদিন উপলক্ষে আমাকে একটা 'গিফট' দেয়া হয়েছে। প্রশ্নটা হল, গিফটটা কী?
আমি দশটা প্রশ্ন করতে পারব যেগুলোর উত্তর 'হ্যাঁ বা না' হতে হবে। এই দশ প্রশ্নে যদি বের করতে না পারি কী সে উপহার, তাহলে সেইটা ফিরিয়ে নেয়া হবে। শর্তের এই অংশটি নেহাৎ ভয় দেখানোর জন্য সেইটা নিশ্চিত। কিন্তু তারপরও বেশ কোমর বেঁধে নেমে পড়লাম উপহার উদ্ধারের আশায়। আটটা প্রশ্ন করে যা জানতে পারলাম সেটা হল এই---'উপহার'টা নাকি এক সপ্তাহ আগেই আমাকে দেয়া হয়েছে। আমি সেইটা নাকি এই এক সপ্তাহ ধরেই ব্যবহার করছি। আমি তো পুরো তাব্দা খেয়ে গেলাম। ঘটনা কী?

যাইহোক পরের ঘটনা ছোট্ট করে বলে দিই---জানা গেল, শ্রীনি আর সাইফ মিলে আমার গাড়িতে বসিয়েছে একটা দারুন স্পীকার সিস্টেম!! এরা দুইজনেই বহুদিন ধরে ঘ্যান ঘ্যান করছিল আমি কেন আমার গাড়ির স্পীকার বদলাই না। তাদের কথা হল, আমি যেহেতু মিউজিক নিয়ে এত উৎসাহী, আমার গাড়ির স্পীকার অন্তত কিছুটা হলেও যেন আমার সেই উৎসাহের সাথে সঙ্গতি পূর্ণ হয়। আমি ছুটির দিনে বেশ বেলা পর্যন্ত ঘুমাই। এই দুই জন আমার সেই ঘুমের সুযোগ নিয়ে চুপি চুপি আমার গাড়ি খুলে ঘন্টা দুয়েক পরিশ্রম করে বসিয়েছে আমার জন্যে কেনা সেই স্পীকার গুলো।

এই পর্যন্ত শুনে বুঝলাম, কেন এই গত কয়দিন ধরে আমার গাড়িতে গান শুনে আরাম পাচ্ছিলাম এত। আমি আরো ভেবেছি এইটা আমার নতুন এমপিথ্রি প্লেয়ারের বদৌলতে!! আমি একছুটে নীচে চলে গেলাম। রাত বারোটার নিস্তব্ধতা চিরে শ্রীকান্তের গলায় আওয়াজ উঠল---বন্ধু তোমার পথের সাথী কে চিনে নিও......

আনন্দে চোখে আমার পানি চলে এল।

যারা এতটুকু এসে বিরক্ত হয়ে ভাবছেন---আরে ব্যাটা, তোর 'আনন্দে চোখে পানি চলে' আসার কাহিনী কে শুনতে চায়? 'আসল' ঘটনা বল।

আসল ঘটনা ঘটল সাইফের বাসা থেকে ফেরার পথে। সুনসান রাস্তা। জন-মনিষ্যির চিহ্ন পর্যন্ত নেই। আমার গাড়িতে আমি আর শ্রীকান্ত। শ্রীকান্ত তখন পুরোনো দিনের গান ধরেছেন। শ্যামল মিত্রের গাওয়া, "যদি কিছু আমারে শুধাও..."। এই অবস্থায় হঠাৎ রিয়ার ভিউ মিররে দেখলাম আলো ঝলমল ইন্দ্রপুরীর ইশারা!

মামু---!!!!!

না, আমাদের প্রিয় সচল মাহবুব মুর্শেদ নন।
ইনি আমাদের সবার অপ্রিয় 'মামু' অর্থাৎ পুলিশ।

আমার মুখ থেকে ইংরেজীতে আক্ষেপ বেরুলো--'You got to be kidding me..!!'

আমার জন্মদিনের রাতে পুলিশেরা ধাওয়া খাব?? টিকিট খাব??!!!
আমি জানি আমার পেছনে ফেউ এর মত লেগে থাকা দুর্ভাগ্যের কথা। কিন্তু ইয়ার্কির একটা সীমা থাকা উচিত। গাড়ি রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে বসে রইলাম। শ্রীকান্তের গলা টিপে বন্ধ করে দিয়েছি। বন্ধু তোমার পথের সাথী কে...হুহ...!

পুলিশ অফিসার এসে জানালার পাশে দাঁড়ালেন। বেশ সদাশয় চেহারা। খানিকটা ভীতও মনে হল। কুশলাদি জিজ্ঞেস করার মাধ্যমে আলাপ শুরু হল। ভদ্রলোক প্রথমেই ভদ্র গলায় জানতে চাইলেন আমি মাতাল কি না। আমি আমার বিখ্যাত হে হে হে হাসি দিয়ে বললাম জ্বী না, আমি ওই রসে বঞ্চিত। পরে আলাপ আরেকটু গুরুতর দিকে মোড় নিল। তিনি খুব সহজ গলায় আমার লাইসেন্স রেজিষ্ট্রেশান চাইলেন এবং আমাকে সীটে 'টাইট মাইরা' বসে থাকতে বলে চলে গেলেন। যারাই রাস্তায় এইভাবে মামুর সাথে দেখা করেছেন, তারা জানেন, ব্যাটারা গাড়িতে কাগজ পত্র নিয়ে গিয়ে সাধারনত আধা ঘন্টার একটা ঘুম দেয়। এর মাঝে আপনার অবস্থা কেরোসিন। আজকের মামুটি দেখা গেল বেশ তড়িৎকর্মা। খানিক বাদেই ফিরে এসে শুধালেন, তোমাকে কেন দাঁড় করিয়েছি জানো?
মাথা বিস্তর চুলকে বললাম, আমি তো আসলে স্পীডিং করিনি বলেই জানি। আমি নিশ্চিত ৫০ এর উপরে উঠিনি। মামু হেসে বললেন, একেবারে সত্যি কথা। তবে মুস্কিল হল, তুমি ৫০ এ চালাচ্ছিলে ৩৫ এর রাস্তায়!!!
--ওহহহ......
--- এই প্রসঙ্গে আরো একটা কথা তোমাকে না বলে পারছি না, তুমি কী জানো যে তোমার লাইসেন্স expire করেছে??
---যাহ, কী সব নন্সেন্স! লাইসেন্সর মেয়াদ ফুরোলে তো আমাকে মেইল করে জানানোর কথা! আমি কোন মেইল পাই নি।
--- হুমম, আমার এখানে দেখতে পাচ্ছি তোমার লাইসেন্স ফুরিয়েছে এক সপ্তাহ আগে!!

এইবার আমার আর আসলেই কিছু বলার নেই।

মামু কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল। আমি হড়বড় করে বললাম, তুমি কিছু বলার আগে, আমি একটা কথা কি তোমাকে বলতে পারি?

---হ্যাঁ, হ্যাঁ, নিশ্চয়ি...
--- আসলে আজ না, আমার জন্মদিন...!!!
--- আরে তাই নাকি?? শুভ জন্মদিন...দেখো আমি খুবই দুঃখিত তোমার জন্মদিনে এই কাজটা করতে যাচ্ছি বলে। কিন্তু আমি নিরুপায়। আমি তোমাকে দুইটা টিকিট দিলাম---একটা স্পীডিং এর আর আরেকটা হল লাইসেন্স ছাড়া চলাচল করার জন্যে। আর তুমি কোথায় থাকো? কাছেই?

আমি মাথা নাড়লাম।
--তাহলে চল আমি তোমাকে এগিয়ে দিয়ে আসি। লাইসেন্স ছাড়া তোমার রাস্তায় চলাফেরা করা ঠিক না।

বাসায় পৌঁছে যখন বিদায় নিচ্ছি, তখন মনে হয় লোকটার মনে কিছুটা দয়ার উদ্রেক হল। ডেকে নিয়ে বলল, শোন তুমি অমুক তারিখে কোর্টে যেও। গিয়ে সেখানে নিজেকে Not guilty ঘোষনা করবে।

শুনে আমি চমৎকৃত হলাম। পুলিশ অপরাধীকে বলছে নিজেকে 'নিরপরাধ' দাবী করতে!! সত্য যুগ কি তবে এসেই গেল???

এদিকে পুলিশ বলে চলেছেন, তো কোর্ট এরপরে তোমাকে আরেক দিন যেতে বলবে। সেদিন আমি ওইখানে থাকব। তুমি বিচারকের সাথে দেখা করার আগে আমার সাথে দেখা করবে...বুঝেছ? আগে আমার সাথে দেখা করবে। তখন তুমি যদি দেখাও যে তোমার লাইসেন্স-টাইসেন্স সব ঠিক -- তখন আমি তোমার এই টিকিট গুলো খারিজ করার ব্যবস্থা করব।

লোকটা তাহলে খুব একটা খারাপ নয় দেখছি। যদিও জন্মদিনের রাতে টিকিট খাওয়াটা ঠিক হজম করতে পারছি না। তারপরও লাইসেন্স ছাড়া স্পীডিং রত অবস্থায় পেয়েছে---ধরে যে জেলে নিয়ে যায় নি, সেই অনেক।

পরের দিন যখন এই গল্প লোকজনকে বললাম, তারা সবাই প্রথমে একচোট হাসল। পরে জানাল, আমি নাকি আসলেই 'ভাগ্যবতী'।

যাই হোক, সময় মত কোর্টে গেলাম। নিজেকে নির্দোষ দাবী করলাম।
কোর্ট আমার বাসার ঠিকানা নিল। নিয়ে বলল, এই ঠিকানায় তোমার চিঠি পাঠানো হবে। ওইদিন এসে তুমি বিচারকের সাথে দেখা করার আগেই......

---জানি জানি, অফিসার আমাকে বলেছে।

তারপর দিন যায়, মাস যায়। আমি চিঠির অপেক্ষা করি।
মাঝে মধ্যে সাইফ কে খোঁচাই, বস, এখনও তো আসল না।
সাইফ হাত নেড়ে বলে, আরে মিয়া আসবে আসবে।

শেষ পর্যন্ত আসল। তবে যে চিঠির অপেক্ষা করে ছিলাম, সেইটা নয়।
যেটা এল, সেটা হল আমার নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা। এইমর্মে আমাকে অবহিত করা হয়েছে যে, কোর্টে অনুপস্থিত থাকার কারনে আমার নামে পরোয়ানা জারী হয়েছে। অতি সত্ত্বর যেন আদালতে গিয়ে আত্ম সমর্পন করি।

আরে মুসিবত, আমি তো হাজিরা দেবার জন্যে কবে থেকেই উন্মুখ হয়ে আছি। কিন্তু ডাক তো পেলাম না। বুঝলাম এই চিঠিও হাপিস হয়েছে।

আমি মোটামুটি নিশ্চিত, আমার পরিবারে কারো নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা এই প্রথম জারী হল। তাও বিদেশে।

আমি কিঞ্চিত গর্বিত বোধ করতে লাগলাম এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও।
যাক একটা কাজের কাজ হয়েছে......

খবর শুনে প্রজাপতি খুব এক্সাইটেড। আমাকে বলল, আপনাকে গ্রেফতার করতে আসলে ওরা কি ক্যামেরা-ট্যামেরা নিয়ে আসবে??

শ্রীনি বলল, তুমি এক কাজ করো, ৯১১ এ ফোন করে......

---ওদের বলি যে আমি বাসায় আছি, এখানে থেকে যেন তুলে নিয়ে যায়?? তার বাক্য সম্পূর্ণ করি আমি।

শ্রীনি দাঁত বের করে হাসে।

আজ সকালে গিয়ে কোর্টে হাজিরা দিয়েছি। সাথে ছিল নিত্য সহচর সাইফ। আমাকে বলা হল, ব্যাপার না। সামনের বছর জানুয়ারীতে আসার জন্যে। আরো বলা হল এইবার যেন মিস না করি।

আমি কাগজ-পত্র গুছিয়ে বেরুতে বেরুতে বললাম, সেটা নিয়ে চিন্তা করো না। এইবার ২৪ ঘন্টা আগে থাকতেই কোর্টের দরজায় থানা গেড়ে বসে থাকব......


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ভীত বালিকা সাহস করে বলি,'কেবলি বিষাদের সুর তবু কি যে ভালো লাগা....'

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ, অতিথি।
ভাল থাকুন
পরের বার নামসহ লিখুন......

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

সচলের প্রথম জেলখাটা মেম্বার হিসাবে অনিকেতদাকে অভিনন্দন ... আশা করি জেলখানায় বসেও আমাদের নিত্যনতুন লেখা দিয়ে মুগ্ধ করবেন দেঁতো হাসি
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা হা

জেলখাটা অনি মিয়ার পক্ষ থাইকা সুবেইচ্চা----!!

সচল জাহিদ এর ছবি

বস বুয়েটের কাক থুক্কু কাউয়ার কথা মনে করাইয়া দিয়া বিয়াপক মজা দিলেন। একবার এক মিলাদে যাচ্ছি। বয়লার (নজরুল হল) থেকে ভালমত গোসল কইরা আত গোলাপ মাইখা বাইর হইয়া মসজিদের সামনের রাস্তায় আইতে না আইতেই কপালের ডান দিকে ইষৎ উষ্ণ অনুভব করতেই বুঝলাম ঘটনা কি হইছে !!

লেখাটা ভাল লাগল সব সময়ের মত।

----------------------------------------------------------------------------
zahidripon এট gmail ডট কম


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ জাহিদ ভাই

রেশনুভা এর ছবি

আপনার তো ভাগ্য বেজায় ভালো দেখতেছি। দেঁতো হাসি

অনিকেত এর ছবি

হে হে হে ...তা আর বলতে......

সাইফ তাহসিন এর ছবি

অনিকেতদা, বোমারু কাকের গল্প পড়ে হাসতে হাসতে জান শেষ, আর আপনার কথাটা কতটা সত্যি সেটা বুয়েট ছাড়াও প্রায় ঢাকা মেডিকেল সহ আশেপাশের কিছু এলাকার লোকে খুব ভালো করেই জানে। ঢাকা মেডিকেলে গাড়ি নিয়ে রাখলে কালো রঙ সাদা বেগুনি ছোপ হয়ে যাইত কাকের ইয়েতে।

আর টিকেট খাবার ঘটনা কি বলব, আপনে যেখানে টিকিট খাইসেন, সেখানে আমি একই গতিতে রোজ গাড়ি চালাই, আপনাকে ধরেছে, আসলেই তার জন্যে দূর্ভাগ্য ছাড়া অন্যকোন ব্যাখ্যা দাড় করানো যায় না। তবে চিঠি না পাওয়ায় আপনাকে ফোন করতে নিরুৎসাহিত করার দোষটা কিন্তু প্রায় পুরোপুরি আমার। আশাকরি জানুয়ারীর ২৭ তারিখে এই ঝামেলা থেকে ছুটকারা পাওয়া যাবে।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস

বর্ষা এর ছবি

জেলবাস আনন্দদায়ক হউক। এই নিয়ে আরেকটা পোষ্ট দিয়েন পারলে। সাইফ আপনার দেয়া মগের ছবি দিয়েছিলো ফেইসবুকে, তখন হইতেই জানি মগ কাহিনী। আপাতত বলে যাই লেখা ভালো লেগেছে।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ বর্ষা

_প্রজাপতি এর ছবি

অনেকদিন পর কোন লেখা পড়ে এভাবে হাসলাম। আপনার ব্যাড লাক আসলেই খারাপ।

কিন্তু জেল দর্শন করে আসলে আপনার দুর্ভাগ্য হওতো আপনাকে ছেড়ে অন্য কারো উপর আক্রমন করতো। যাক আশা করি আগামী জন্মদিন আপনার এত বেশী বৈচিত্র্যময় না কাটুক সেই কামনা করি।

-----------------------------------------------------------------
ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...

ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...

অনিকেত এর ছবি

মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ প্রজাপতি!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

অনেক মজা পেলাম পড়ে হো হো হো

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ, শুভাশীষ দা'

স্নিগ্ধা এর ছবি

ইসসসস, লেখাটা পড়ে মনটা কীইইইই যে খ্রাপ হলো ....... ওঁয়া ওঁয়া

অনিকেত এর ছবি

মাইনষে আপ্নেরে কুটনি বুড়ি কি আর এম্নে এম্নে কয়...??

স্নিগ্ধা এর ছবি

পাব্লিকলি লেখা উচিত হচ্ছে না জানি, কিন্তু এরকম মিলে গেসে যে না বলেও পারতেসি না - আমার একটা খালাতো ভাই আমাকে ডাকেই 'কুটনী বুড়ি' বলে দেঁতো হাসি

আচ্ছা, এটাতে কি আমার দুস্কু পাওয়া উচিত? চিন্তিত

অনিকেত এর ছবি

আমার একটা খালাতো ভাই আমাকে ডাকেই 'কুটনী বুড়ি' বলে

-হে হে হে, আমি ঝানতাম, আমার ববিষ্যতভানী বৃতা যেতে পারে না---

ধুসর গোধূলি এর ছবি
সাইফ তাহসিন এর ছবি

কারো মনে হয় কাগজ শেষ হয়ে গিয়েছিল বাসায়, তাই মেইল বক্স থেকে কাগজ চুরি করেছে চোখ টিপি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিকেত এর ছবি

@ ধু গো

আবার জিগায়...
আমি যেখানে থাকি বস, সেইখানে আমি একমাত্র Hot stud চোখ টিপি । কাজেই বুঝে দেখ, যারা আশে পাশে থাকে তাদের গড় বয়েস কত।

যারা অঙ্কে ও অনুমানে কাঁচা তাদের চুপি চুপি বলে দিচ্ছি----ওদের গড় বয়েস ৬০+

মামুন হক এর ছবি

জেলের তালা ভাঙবো
অনিকেত ভাইকে আনবো!

অনিকেত এর ছবি

আসার সময় ফুলের মালা নিয়া আইস কিন্তু---
অনেক দিনের শখ, জেল থেকে বেরুব গলায় ফুলের মালা নিয়ে...

আলমগীর এর ছবি

লাইসেন্স ক্যামনে এক্সপায়ার হলে গেল? চিঠি পান নাই?
জেলে কবে যাইতেছেন?

অনিকেত এর ছবি

চিঠি পান নাই?

সেইটাই আলোচ্য অংশে কবি বলতে চেয়েছেন।
চিঠি হাপিস হয়ে গেসিল।

আর জেলে যাবার আগে সবাইরে জানায়াই যামু
টেনশন নিও না----

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

আপনার জেলবাসের অভিজ্ঞতা সুখের হউক, এই কামনা করছি! দেঁতো হাসি
......................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

অনিকেত এর ছবি

আহা!!

আমার শুভানুধ্যায়ীদের শুভ কামনা পেতে পেতে চোখ ফেটে কোক পড়ছে----

আমি 'কিতজ্ঞ' রইলাম...'আম্রন কিতজ্ঞ'

তুলিরেখা এর ছবি

শেষে সবাই আপনেরে জেলে পাঠাতে চায়? হায় হায়।
তবে সব জেল তো আর খারাপ না! এই যেমন ধরুন না কেন-
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মূলত পাঠক এর ছবি

কী আর বলি, আমার এই সব ব্যাপারে আপনারই মতো দশা, তাই যতো মজা করেই লিখুন, বাকিরা হাসলেও আমার হাসি পেলো না। সবার একটা করে রাশি হয়, আমার বন্ধুদের মতে আমার নাকি কুত্তা রাশি। আপনার দেখি কাউয়া রাশি।

বরং চলেন একটা কিছু করি, শান্তি স্বস্তয়ন গোছের (স্ত-এ য-ফলা লাগানো যায় না ক্যান?)।

ভ্রম এর ছবি

হাহা... তাও তো মেয়াদ ফুরানো লাইসেন্স। গত বছর কোনরকম লাইসেন্স ছাড়াই বেশ কয়েকবার গাড়ি নিয়ে বের হয়েছিলাম তবে শেষবার পুলিশের ধাওয়া খেয়ে বিশাল কাহিনী করে এসেছি দেঁতো হাসি

জেলে যাওয়ার আগে লাইসেন্সটা রিনিউ করে নিয়েন দেঁতো হাসি

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

এতো সুন্দর করে লিখেছেন অনিকেত, পড়ে দুঁখ কি পাবো, খানিকক্ষণ হাসলাম - যথারীতি মাড়ি বের করে দেঁতো হাসি ... এইরকম

ভালো থাকুন, এইরকম দুই একটা ঘটনা আরো্ ঘটুক সেই প্রার্থনা করতে গিয়েও নিজেকে সম্বরণ করলাম হাসি

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা , থ্যাঙ্কু আরেফীন ভাই---
আমাদের লুদমিলা কেমন আছে?
তার জন্যে অনেক ভালবাসা...

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

হাসি অনেক ভাল লাগছে যে এখনও অনেকেই লুদমিলার খোঁজ নিচ্ছে, অনেক ভাল আছে সে। আপনাদের মতন চাচ্চু থাকলে খারাপ থাকার উপায় খুঁজেই পাবে না!

আপনার ভালবাসা যথাস্থানে পৌছে দিলাম।

নৈষাদ এর ছবি

অনিকেত ভাই, প্রথমে বিষাদের সুর থাকলেও পুরোটা পড়তে মজা লাগল।

শুধুমাত্র জানার জন্য; ইউএসএতে কি আমাদের দেশের ড্রাইভিং লাইসেন্সের মত তারিখ থাকে না? মেইলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়? 'হাকুল্লা' নামের যে প্রক্রিয়াটার ব্যাপারে লিখলেন তা কি সত্যি? নাকি মজা করে লিখলেন?

অনিকেত এর ছবি

মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ নৈষাদ!

এখানে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যাপার-স্যাপার DMV( Department of Motor Vehicle) নামের একটা প্রতিষ্ঠান দেখা-শোনা করে। তারা সাধারনত লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ হবার আগে উদ্দিষ্ট চালক কে মেইল করে জানায়। আমার ক্ষেত্রে মেইলটা হাপিস হয়ে গিয়েছিল কোন ভাবে।

আর হ্যাঁ, হাকুল্লা গিরি একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, মেডিক্যাল কলেজের হলের ছাত্রদের সপ্তাহান্তে ভাল খাবার-দাবার জোটানোর একটা 'কমন প্র্যাক্টিস' (ইচ্ছা করেই বাংলা পরিভাষাটা লিখলাম না) ছিল। আমি যে সময়কার কথা বলছি---সেটা ১৯৯৬-৯৭ এর দিকের।

এখনকার খবর জানিনা।

তুমি যদি এখনো হাকুল্লাগিরিতে অংশ না নিয়ে থাকো (বয়েসে ছোট ধরে নিয়ে তুমি তুমি করছি কিন্তু), তাহলে আর দেরী না করে একবার করে ফেল।

ভাল কথা---ধরা পড়ে মাইর খাইলে আমার কিন্তু দোষ নাই-- হে হে হে --

নৈষাদ এর ছবি

অনিকেত এবং সাইফ ভাতৃদ্বয়, ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যাখ্যার জন্য ধন্যবাদ।

আমাদের বিআরটিসি কিন্তু অন্যরকম। লাইসেন্সের প্রক্রিয়ার জন্য লাইনে দাঁড়াতে পারেন, আবার গাড়িতে বসে থাকতে পারেন, বিআরটিসির লোকজন এসে আপনার স্বাক্ষর ইত্যাদি নিয়ে যাবে...। প্রয়োজনে অফিসে বসেই সম্ভব...।

দীর্ঘনিঃশ্বাস... হাকুল্লাগিরিতে অংশগ্রহণ আর হয়ত সম্ভব না...। অবাক হচ্ছি ব্যাপারটা কখনো শুনিনি... (কত অজানারে...)

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ড্রাইভিং লাইসেন্সে তারিখ থাকে, কিন্তু সেটা আসলে দেখতে মনে থাকে না, তবে ডিএমভি থেকে চিঠি দেয় নবায়ন করার দরকার পড়লে। যারা রেসিডেন্ট বা সিটিজেন, তাদের একবারে ৫-১০ বছরের জন্যে লাইসেন্স দেওয়া হয়। কিন্তু বিদেশিদের লাইসেন্স দেওয়া হয় I-20 এর ভিত্তিতে, তাই কিছুদিন পর পর গিয়ে গিয়ে নবায়ন করা লাগে। ডিএমভি যাওয়া একটা পেইন, গেলে এক বেলা পুরাই নষ্ট হয়, তাই কেউ দেওয়ালে পিঠ না ঠেকা পর্যন্ত সেখানে যায় না। অনিকেতদা মনে হয়, দেওয়ালে গর্ত খুড়ে বসে থাকার প্ল্যানে ছিলেন দেঁতো হাসি

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

শাহান এর ছবি

"জেল থেকে বলছি" নামে একটা সিরিজ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিছিল, হইল না ... দেঁতো হাসি

অনিকেত এর ছবি

এখনো সুযোগ আছে---
নজর রাখুন জানুয়ারীতে, সচলায়তনের নীড়পাতায়...!!

ফাহিম এর ছবি

১। জেল খেটে তো একেবারে ত্যাগী নেতা হয়ে গেলেন অনিকেত দা...

২। লেখা অত্যন্ত উপাদেয় হয়েছে।

=======================
ছায়ার সাথে কুস্তি করে গাত্রে হলো ব্যাথা!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

অনিকেত এর ছবি

১। হে হে হে ---সব আপনাদের দোয়া---
২। ধন্যবাদ বস...

আহির ভৈরব এর ছবি

অনিকেতদা, কী আর বলব, সহমর্মিতা জানিয়ে গেলাম।

জেলে যদি নেহাৎচলেই যান, তাহলে জেলের গ্রিল ধরে একটা "জন্ম থেকে জ্বলছি" টাইপ গান গেয়ে হিরু-মার্কা ভিডিও তোলার সুযোগ হেলায় হারাবেন না।
-----------------------------------------------------
আর কিছু না চাই
যেন আকাশখানা পাই
আর পালিয়ে যাবার মাঠ।

-----------------------------------------------------
আর কিছু না চাই
যেন আকাশখানা পাই
আর পালিয়ে যাবার মাঠ।

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা ---উত্তম প্রস্তাব
কিন্তু আম্রিকার জেলে বাংলা গান ঠিক জুইত হবে না---
তারচেয়ে বরং ৫০ পয়সা'র Candystore গান গাইতে পারি---ভিড্যুর কাল্লু এক্সট্রাদের কোন অভাব হবে না জেলে...

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

নটরডেমে থাকতে বন্ধুচিপায় পড়ে হাকুইল্ল্যা পার্টি হইছিলাম। আহ! চুরি করে খাওয়ার মজাই আলাদা!

জেলবন্দীজীবনের ব্লগ পোস্টের জন্য অগ্রিম 'এক আকাশ ভরা নক্ষত্র' দিয়ে রাখলাম দেঁতো হাসি
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

অনিকেত এর ছবি

আহা, আরেকজন সহ অপরাধী--থুক্কু সচল পাওয়া গেল যে হাকুল্লা গিরি করেছে---হাত মেলাও বস...

ভুতুম এর ছবি

পরের তারিখ মিস দিয়া জেলের ভাত (আম্রিকায় কি ভাত দিবে?) খেয়ে আসুন না, এমন সুযোগ কি সহজে জোটে?

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

অনিকেত এর ছবি

আম্রিকায় কি ভাত দিবে?

হা হা হা ---এইটা একটা মৌলিক প্রশ্ন করেছ ভুতুম!
আমি খোঁজ নিচ্ছি।
যদি ভাত না দেয়, তাহলে স্ট্রেইট বলে দেব যে আমি জেলে যাচ্ছি না...

ওডিন এর ছবি

সকল দুর্ভোগ কেবল আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ার অপেক্ষায় ওঁত পেতে থাকে।

আমারো মনে হয় একই অবস্থা- কখনো কি শুন্সেন যে ধর্ম আর ভূগোলে কেউ ৭৯ করে পাইসে? আর ফিজিক্সে ১৫৯??
আর বায়সকুল ত আছেই-পিচ্চিকালে একবার রাজহাঁসের আক্রমনের শিকার হয়েছিলাম। পুরা হড়ড়! সবাই হাসলেও সেইজন্য আমি হাসতেসি না। আশা করি আপনার এইসব ঝামেলা সহজেই মিটে যাবে। জেলজুলুমের সম্ভাবনা থাকবে না। 'অন্ধকারাগারের দিনলিপি' টাইপের ব্লগ পড়তে চাই না।

---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

অনিকেত এর ছবি

আহারে বস ওডিন
এক তুমিই আমার দুঃখটা বুঝলা...

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

খুবই ভালো চেষ্টা, অনিকেত'দা। আরেকটু হলে প্রায় বিশ্বাসই করিয়ে ফেলেছিলেন যে আপনার ব্যাড লাক আমার চাইতেও খারাপ। কিন্তু নাহ্, শেষ রক্ষা করতে পারলেন না। হাসি

আইরনির ব্যাপার হলো, আপনার দুর্ভাগ্যের গল্পগুলো খুব উপভোগ্য হয়েছে। এমন গল্প আরও শোনান। দেখা যাক, পরের বার সত্যি সত্যিই বিশ্বাস করাতে পারেন কিনা হাসি

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা ......
থ্যাঙ্কু বস।

তোমার লেখা যে বড় মিস করি
ছোটখাট একটা রিভিউ অন্তত দাও----

নিবিড় এর ছবি

অনিকেত দা আপনার যমজ ভাইয়ের কাহিনী পড়ে কেন যে আনন্দ পেলাম দেঁতো হাসি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

অনিকেত এর ছবি

হে হে হে --বেশি আনন্দ পাইও না মিয়া
শেষে আমার যমজ ভাইরে তোমার দিকে পাঠায়া দিমু--

তখন বুঝবা ঠেলা...

ইশতি এর ছবি

অসামান্য মজা পেলাম, ভাইয়া। এত বেশি না হলেও টুকটাক দুর্ভাগ্যের সাথে পরিচয় আছে। তবে, একটাই প্রশ্ন আমার। লাইসেন্স তো জন্মদিনে এক্সপায়ার করে বলে জানতাম। গ্রেফতারী পরোয়ানা মোবারক হোক। হাসি

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আরে খাইসে, আপনে তো বস আমার মতই পাব্লিক। আমি যতবার নয়া স্কুলে গেসি এইরকম কিসু না কিসু হইসেই।
... উইলস লিটল ফ্লাওয়ারে প্রথমদিন গিয়া কাদার মাঝে আছাড় খাইলাম। বাংলাদেশ রাইফেলসে গিয়া কাকের হাগা পাইলাম প্রথম দিন... !! বা..!!.

আপনে বুয়েটিয়ান জাইনা সুখ পাইলাম। আরো একটা পাইলাম... !!!
______________________________________________________

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

হিমু এর ছবি

আপনার গল্পের সমাপ্তি তো সুখের। আমি ভাবসিলাম কোর্ট থেকে বের হবার সাথে সাথে মাথায় কাক হাইগা দিবে বুঝি। হতাশই হইলাম একটু দেঁতো হাসি

ভালো কথা, জেলের রুটিফুটি ভক্ষণের আগে ঘটক পশুদার মাজারে শিরনি চড়ান। পাত্রী রেডি। একবার দাগী আসামী হয়া গেলে কিন্তু পশুদাও ফেল মারবে, আগেই জানায়া রাখি।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আমি ভাবসিলাম কোর্ট থেকে বের হবার সাথে সাথে মাথায় কাক হাইগা দিবে বুঝি।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি
সর্বনাশ, আমি ছিলাম পাশে মন খারাপ , কাকে হাইগা দিলে খবর আছিল আমার। এইখানে কাকের যা সাইজ, গোসল হইয়া যাইত হো হো হো
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

তানবীরা এর ছবি

পরে জানাল, আমি নাকি আসলেই 'ভাগ্যবতী'।

আসলেই

**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

অনিকেত'দা আম্রিকায় জেল খাইটাই দেশে আইসা ভোটে দাঁড়াইবেন। আমরা আপনার নির্বাচনী জনসভায় বলব, "দূর্ভাগ্যে বেপরোয়া, পক্ষীকুলের মহব্বতে বলীয়ান, ইসলামের বন্ধু, আম্রিকার শত্রু, আম্রিকার কাফেরী আঈনকে বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শনকারী, বিদেশী শত্রুদের দ্বারা বারবার(!) কারানির্যাতিত, শাহসূফী হযরত অনিকেত ভাইকে কাউয়া মার্কায় ভোট দিয়া..." দেঁতো হাসি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা -----

রানা [অতিথি] এর ছবি

হাকুল্লাগিরি করতে শুনে সত্যিই অবাক হলাম। ব্যাপারটা ঠিক তোমার সাথে মেলাতে পারছি না অনেক চিন্তা করেও (এ কারণেই মন্তব্যে দেরি হলো)। যতই এডভেন্চারের অজুহাত দাও, মুখে যতই "বড় বড়" কথা বল, তোমার উচ্চ আত্মমর্যাদার সামান্যতম বিচ্যুতি হবে এমন কাজ তুমি করেছো ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না (বিনা দাওয়াতে খাবারই তোমার জন্য যথেষ্ট অন্তরায়, তার মাঝে সম্ভাব্য মার-খাবারের কথাটাও ধরছি এতে)। ব্যাপারটা কাব্যার্থে আনোনি তো?

তোমার লেখার নতুন সুর দেখে ভাল লাগলো। মান বরাবরের মতই অসাধারণ, বলাই বাহুল্য । তবে শুনেছি বাংলায় যতি চিহ্ন নিয়ে অনেক নতুন কিছু হচ্ছে তার খবর তুমি রাখছো না। দেশ থেকে নতুন ধারাপাত আনিয়ে নিও।

অনিকেত এর ছবি

হে হে হে ---
না হে না, আমাকে ওতটা নীরস ভাবার কোন কারন নেই।
ওই সময়টা ছিল হাকুল্ল্যা গিরির। আপাত নিরানন্দ 'বিস্বাদ' জীবনে একটু স্বাদু উত্তেজনার সমাগম। তাই ব্যাপারটা বিপদজনক হলেও বন্ধুদের সাথে মিলে করার আনন্দওটাও কিন্তু কম নয়।

যদি কখনো এক যোগে দেশে যাই, তোমাকে নিয়ে হাকুল্ল্যা গিরি তে বেরুব।
ওয়াদা রাহা......

রানা [অতিথি] এর ছবি

তোমাকে "নীরস" ভাবিনি। তোমাকে "নীরস" ভাবার দুঃসাহস তোমার শত্রুরও নেই (কাকগুলোও জানে তুমি রস বোঝ)।

আহ! বিয়ে বাড়ি, মানুষের কলরব, খাওয়া-দাওয়া, কবুল দর্শন/শ্রবণ, সম্মিলিত হাত তুলে দোয়া, কান্নাজড়ানো বিদায় দেখা, তারপর রাতে রিক্সায় চড়ে ঢাকার রাজপথ-অলিগলি হয়ে বাসায় ফেরা । অথবা আব্বা-আম্মার সাথে সুবোধ ছেলের মতো একসাথে ফেরা। আমার স্যুটপরা আব্বা আর কাতানপরা আম্মা। তুমিতো সব মনে করিয়ে দিলে।

তবে দোস্ত আমাকে নিয়ে বেরুনোর অপেক্ষা করলে জীবনে আর হাকুল্ল্যাগিরিতে বেরুনো নাও হতে পারে। আমার অপেক্ষা করো না।

অনিকেত এর ছবি

বিয়ে বাড়ি, মানুষের কলরব, খাওয়া-দাওয়া, কবুল দর্শন/শ্রবণ, সম্মিলিত হাত তুলে দোয়া, কান্নাজড়ানো বিদায় দেখা, তারপর রাতে রিক্সায় চড়ে ঢাকার রাজপথ-অলিগলি হয়ে বাসায় ফেরা । অথবা আব্বা-আম্মার সাথে সুবোধ ছেলের মতো একসাথে ফেরা।

---আসলেই কী চেনা চেনা এইসব দৃশ্যগুলো, তাই না?
মাঝে মাঝে বড় অবাক লাগে এ ভেবে যে একসময় আমরা নিজেরাও এইসব দৃশ্যেরই অন্তর্গত ছিলাম-----অথচ আজ একেবারে কল্পলোকের গল্পের মত শোনায়---

আর বস, আমি অপেক্ষায় রইব--
কোন একদিন সবাই মিলে যাব, যাবই যাব-----

যুধিষ্ঠির এর ছবি

আমি কিন্তু হাসি নাই। অন্যের দুঃখে হাসার মত পাষণ্ড আমি না। আমি মোটেও হাসতেছি না কিন্তু!

খালি মডুদের কাছে অনুরোধ, জেল থেকে ফিরে আসার পর যেন আপনার নামের পাশে ব্রাকেটে [দাগী আসামী] টাইপের একটা টাইটেল লাগানো হয়। "জেল থেকে আমি বলছি" বা "আমি কেন আসামী" ("স্বামী কেন আসামী" হিট বাংলা সিনেমার অনুকরণে) সিরিজ শেষ না করা পর্যন্ত ওই টাইটেল বলবৎ থাকবে আশা করছি। দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

হাকুল্লা গিরির কথা এই প্রথম শুনলাম ।

সদ্য সদ্য শেভ করা গালে সূর্যের আলো পিছলে যাচ্ছে। খাইছে

এদিকে মনে মনে ভীষন উদবিগ্ন--আসলেই যদি কিছু না করে!! হো হো হো

আহা ! এভাবে যদি লিখতে পারতাম !!

বুনোহাঁস

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।