রিকশাওয়ালা

নাশতারান এর ছবি
লিখেছেন নাশতারান (তারিখ: সোম, ১২/০৩/২০১২ - ১১:৪৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রিকশা ছাড়া ঢাকা আমি কল্পনা করতে পারি না। দুদিন পরপর ঢাকার যানজট নিরসনে এখানে ওখানে রিকশা চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। তখন আমি বিপদে পড়ি। বাসের দরজায় পা ঠেকানোর জায়গাটুকুও না পেয়ে দীর্ঘপথ যখন হেঁটে চলি, পাশ দিয়ে শাঁই শাঁই করে ছুটে চলা গাড়িগুলো তাদের ফাঁকা সিটে ঠাঁই দেয় না আমাকে। সিএনজিওয়ালা ঢাকার নব্য নবাব। পায়ের উপর পা তুলে গলাকাটা দাম হাঁকতে ওস্তাদ। পকেটে কড়ি থাকলেও নবাবদের মর্জিমাফিক গন্তব্যে না গেলে তাদের দাক্ষিণ্য পাওয়া অসম্ভব। গাড়ি আর সিএনজির জঙ্গল ঠেলে হেঁটে হেঁটে এগুতে হয় তখন। রিকশাওয়ালারা গলিঘুপচি দিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে দক্ষ হলেও তারা এক অর্থে অপাঙক্তেয়। ছোটবড় নির্বিশেষে তাদের তুইতোকারি করা যায়, গালি দেওয়া যায়। শুনেছি বিসিএস ভাইভাবোর্ডে সন্তোষজনক জবাব না পেলে প্রশ্নকর্তারা বলেন, "রিকশাওয়ালাদের ক্লাসের উত্তর দিবা না।"

গালভরা গালিগালাজের বাইরে রিকশাওয়ালা ক্লাসের কোনো সার্বজনীন বৈশিষ্ট্য আছে কি না জানা নেই আমার। রিকশাওয়ালাদের সাথে আমার সম্পর্ক বেশ ভালোই। সময় এবং ক্ষেত্রবিশেষে খরচ বেশি লাগলেও রিকশায় চড়তে ভালো লাগে আমার। মন উদাস হলে হাঁটতে বের হই। হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হয়ে রিকশায় চেপে হাওয়া খেতে খেতে বাসায় ফিরি। রিকশা থামিয়ে রিকশাওয়ালা মামাকে নিয়ে রাস্তার পাশে চা খেতে বসি। এক মামা আমাকে পিরিচে ঢেলে গরম চা খাওয়ার কৌশল শিখিয়েছেন।

প্রচণ্ড গরমে একবার নীলক্ষেত থেকে হলে ফেরার সময় এক বোতল কোক কিনেছিলাম। রিকশাওয়ালা মামাকে বললাম, "মামা, কোক খাবেন? বোতলে মুখ লাগাই নাই।"

মামা নির্লিপ্ত কণ্ঠে বললেন, "আপনি হাতে নিয়ে বসেন। নিতেসি একটু পরে।"

আমি ভালোমানুষের মতো কোকের বোতল হাতে ধরে বসে থাকলাম।

কিছুদূর যাওয়ার পর বললেন, "কোক কি ঠাণ্ডা?"

আমি ব্যস্তকণ্ঠে বললাম, "জ্বি মামা, ঠাণ্ডা।"

তিনি আমার হাত থেকে কোক নিয়ে ধন্য করলেন আমাকে।

আরেকদিন সন্ধ্যায় মিরপুর রোড ধরে বাসায় ফিরছি। আসাদ গেটের এক মিষ্টির দোকানে রিকশা থামিয়ে ইন্দ্রাণীভোগ কিনলাম বাসার জন্য। রিকশায় বসে মামাকে সাধলাম। সংকোচ করছিলেন তিনি। আমার সাধাসাধিতে নিলেন। খেতে খেতে গল্প করলেন আমার সাথে। জানতে চাইলেন আমি কী খেতে ভালোবাসি। রাস্তার পাশে ফলের দোকানে থেমে খুব সাধলেন, "চলো তোমারে একটা কমলা কিনে দেই।" তার হৃদয়ের আর্দ্রতায় সিক্ত হলাম আমি।

এক বিক্ষিপ্ত সন্ধ্যায় হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। ক্ষ্যাপাটে বসের জরুরি তলব এলো। গুলশান যেতে হবে। সময় তখন প্রায় আটটা। কল্যাণপুরে রিকশা দেখতে লাগলাম। রিকশাওয়ালা মামা বুদ্ধি দিলেন সিএনজি নিতে। কারণ গুলশান পর্যন্ত রিকশা যেতে দেবে না।

আমি বললাম, "আমার রিকশায় যেতে ইচ্ছা করছে।"

মামা একটু ভেবে বললেন, "আচ্ছা, মহাখালী পর্যন্ত চলেন। এরপর টেম্পো বা বাস নিতে হবে।"

এরপর আগারগাঁ থেকে বিজয় সরণী যেতে যেতে প্রতিটা বাসকে পাশ কাটানোর আগে তিনি জিজ্ঞেস করলেন বাস গুলশানে যাবে কি না। গুলশানগামী কোনো বাসে আমাকে তুলে দিয়ে তিনি নিশ্চিন্ত হতে চান। মাঝপথে নামিয়ে দিলে তিনি ভাড়া কম পাবেন জেনেও আমার নিরাপত্তা নিয়েই তিনি চিন্তিত। "রিকশাওয়ালা ক্লাস"-এর একজম মানুষের আন্তরিকতায় আমি বোকার মতো কৃতার্থ বোধ করি।

আরেকদিনের কথা। বেশ রাত করে বাসায় ফিরছি। আলাপে আলাপে রিকশাওয়ালা জানলেন আমি প্রকৌশলী। জানতে চাইলেন আমি কী কী শিখেছি। তার স্বপ্ন তিনি একটা বলাকা (বিমান) তৈরি করবেন। এর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা খুব জরুরি বলে মানেন না তিনি। তার ভাষায়, "আপনারা তো পড়ালেখা করেন টাকা কামানোর জন্য। শেখার জন্য করেন না।" তার ধারণা সম্পূর্ণ মিথ্যেও তো নয়। তার বিমান তৈরির স্বপ্ন পূরণ হবে না হয়ত, তাও তার স্বপ্ন দেখার স্পৃহায় মুগ্ধ হয়েছিলাম।

দুমাস আগে এক সন্ধ্যায় রিকশা থেকে নেমে ভাড়া দিতে গিয়ে দেখি ওয়ালেট উধাও। রিকশাওয়ালা মামাকে বললাম। পথে কোথাও পড়েছে কি না দেখতে তিনি পুরোটা পথ ফিরিয়ে নিয়ে এলেন আমাকে। না পেয়ে উনার মোবাইল নাম্বার রাখলাম। বললাম পরের দিন ফোন দিয়ে ওইখানে গিয়ে ভাড়া মিটিয়ে দেবো। তারপর একই পথে হেঁটে হেঁটে আরেকদফা খুঁজতে লাগলাম। মামা আমার পাশে রিকশা চালাতে চালাতে বললেন, "চলেন আমি দিয়া আসি।" বললাম, "না মামা, আমি হেঁটে হেঁটে দেখতে চাচ্ছি।" তাও তিনি আমার পাশে পাশে রিকশা চালিয়ে গেলেন। অন্ধকার পথে একা ছাড়তে চাচ্ছিলেন না আমাকে। পরদিন যথাস্থানে ডেকে এনে উনাকে যাওয়া-আসার ভাড়া মিটিয়ে দিই। উনি জানতে চাইলেন পরে ওয়ালেট পেয়েছিলাম কি না। উনার উদ্বেগে কোনো খাদ ছিলো না।

সরকারের বদান্যতায় আজ সকালে কল্যাণপুর থেকে রিকশায় করে গুলশানে আসতে পারলাম। বিজয় সরণী দিয়ে যেতে যেতে রিকশাওয়ালা মামা বললেন, "আপনার কাছে মোবাইল ফোন আছে না?"

"জ্বি, আছে।"

"একটু কথা বলতাম। আমার ভাইয়ের ভ্যান আছে তো। তারে বলতাম রাস্তাঘাট অনেক ফাঁকা। ভ্যান নিয়া বাইর হইলে কামাই হইত।"

"ঠিক আছে। পৌঁছে কথা বলে নিয়েন।"

গন্তব্যে পৌঁছে আমার ফোনে ভাইকে খবর পৌঁছে দিলেন তিনি। ভাড়া মেটানোর সময় বললেন, "আপনি দুই টাকা রাইখা দেন।"

অপ্রত্যাশিত প্রস্তাবে একটু অবাক হই আর তার সততায় মুগ্ধ হই। গালভরা হাসি নিয়ে অফিসে ঢুকি।

সবসময় যে এমন দারুণ অভিজ্ঞতা হয় তা না। বেশ লোমহর্ষক অভিজ্ঞতা হয়েছিলো একবার। আমার মা ছিলো সাথে। পলাশী থেকে শাহবাগের দিকে যাচ্ছিলাম। রিকশাওয়ালা শম্বুকগতিতে রিকশা চালাচ্ছেন। মাঝেমাঝে আবার থেমে যাচ্ছেন। আমরা বলছি আরেকটু জোরে চালাতে। তাতে তার মধ্যে বিশেষ কোনো বিকার দেখা গেল না। চারুকলার দেয়ালঘেঁষে ফুটপাথে কিছু ব্যাগ বিক্রি হচ্ছিলো। আমি রিকশা থামাতে বললাম। তাতেও তার মধ্যে বিকার নেই। আম্মু বললো, "ভাই, আপনি কি অসুস্থ?"

এবার তিনি মুখ ফেরালেন। গনগনে ভাটার মতো লাল চোখ পাকিয়ে শান্ত কণ্ঠে বললেন, "পাগল চেনেন? পাগল? আমি পাগল!"

আমরা কালবিলম্ব না করে ভাড়া মিটিয়ে নেমে পড়লাম।

হয়ত তিনি আসলেই অপ্রকৃতিস্থ ছিলেন, কিংবা হতে পারে মাতাল ছিলেন। আমার আর সব অভিজ্ঞতার ভিড়ে এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনাই বলতে হবে। রিকশাওয়ালাদের মধ্যে ক্ষুদ্রতা, শঠতা, ক্রূঢ়তা দেখিনি এমন নয়। ওসব তো সুশিক্ষিত পরিশীলিত ভদ্রসমাজেও নেহায়েত কম দেখিনি। তাই রিকশাওয়ালা ক্লাসের কেউ নই বলে গর্ববোধ করতে পারি না। কেউ হতভাগ্য বলে রিকশা চালান আর আমি ভাগ্যবান বলে রিকশায় চড়ি। এর বেশি পার্থক্য চোখে পড়ে না আমার।


মন্তব্য

তাসনীম এর ছবি

চমৎকার লাগলো।

আমার বুয়েট সময়কালে পলাশী মোড়ে এক রিকশাওয়ালা প্রতিদিন দুপুরে রিকশা নিয়ে বসে থাকত। চেহারার মিল দেখে আমি তার নাম দিয়েছিলাম নির্মলেন্দু গুন। লোকটা কোন জায়গায় যেতে রাজি হতো না। যেকোন জায়গার নাম শুনলেই বিরস মুখে অন্যদিকে তাকিয়ে জবাব দিত, "যামু না..."। শুধু আমি একা নই, অনেকেরও একই অভিজ্ঞতা হয়েছে গুনের সাথে।

এই ভাবে পুরো বুয়েট জীবন প্রায় শেষ হলো। চূড়ান্ত ফলাফল বের হওয়ার অল্প একদিন আগে আমি পলাশীর মোড়ে গুনকে জিজ্ঞেস করলাম যে সে নিউমার্কেট যাবে কিনা। নির্বিকার চেহারায় একই জবাব দিল সে। আমি এরপর হাহাকার করে উঠলাম। বললাম যে আমি এই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাচ্ছি, গত পাঁচ বছর চেষ্টা করে আপনার রিকশায় উঠতে পারি নি। আপনি যেখানে যেতে যান আমি সেখানেই যাব...তবু আপনার রিকশায় আমি উঠতে চাই। নির্মলেন্দু গুনের মুখে মনে হয় একটু হাসি ফুটেছিল...বলল উঠেন...পলাশী থেকে নিউমার্কেট...জীবনের ছোটখাট বিজয়গুলোর মূল্য তুচ্ছ নয়।

মানুষের অনেক হতাশা থাকে, অনেক অসমাপ্ত কাজ থাকে...ওই লোকের রিকশাতে না চড়লে আমার অসমাপ্ত কাজের তালিকার এন্ট্রি আরও একটা বেশি থাকত।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

নাশতারান এর ছবি

বাহ! দেঁতো হাসি

পলাশীর এক রিকশাওয়ালা আছেন বেশ বয়স্ক, এলোমেলো লম্বা সাদা চুল। আমরা বলতাম কবি মামা। আমার অবশ্য কখনো তার রিকশায় চড়ার সুযোগ হয়নি।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নামুস এর ছবি

এই মামাকে এখনও দেখা যায়। আমি প্রথম দিকে বেশ কবার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে পরে আর ওনাকে কখনও জিজ্ঞেস করিনি যে উনি যাবেন কি না? আমার ধারণা উনি শুধু ক্যাম্পাসের মধ্যে শিক্ষকদের ছাড়া আর কাউকে ওনার রিক্সায় উঠান না।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

নির্মলেন্দু গুণের রিক্‌শায় একবার চড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। একদিন কী ভেবে যেনো তিনি আমাকে পলাশী থেকে সুদূর ধানমণ্ডী পনের নাম্বারে নিয়ে যেতে রাজী হয়েছিলেন। অবশ্য আমাকে গন্তব্যে নামিয়ে তিনি অন্য কোন যাত্রী ধরার চেষ্টা না করে প্রাণপনে রিক্‌শা চালিয়ে ফেরত গিয়েছিলেন। গুণ বাবু ছাড়া আরো একজন ছিলেন যিনি সব সময় ক্লিন শেভড, ধোপদুরস্ত। উনার রিক্‌শায় চড়ার সৌভাগ্য হয়নি। অশ্বিনীকুমার এনাদের রিক্‌শায় চড়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন দীর্ঘ পাঁচ বছর, কিন্তু সফলকাম হন নাই। তাদের সরল উত্তর ছিল, "অহন বিশ্রাম লইতাছি, রিশ্‌কা চালাইতে পারুম না"।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ ষষ্ঠপাণ্ডব। মন্তব্য পড়ে অপরজনের কথাও মনে পড়ল।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

ভাগ্যবান নয়, ভাগ্যবতী। জেন্ডার ডিসক্রিমিনেশন করলে হবে!
আর, ইন্দ্রানীভোগ জিনিসটা কী? আমের নাম?

দময়ন্তী এর ছবি

ইন্দ্রানীভোগ, শিবানীভোগ এগুলো তো একেকরকমের মিষ্টি| ভারী ভাল খেতে

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

নাশতারান এর ছবি

আমি ভাগ্যবান। জেন্ডার ডিসক্রিমিনেশন করলে হবে!

মিষ্টির দোকান থেকে কিনেছি যখন, মিষ্টিই হবে নিশ্চয়ই।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

ওহো, মিস্টির দোকানের তথ্যটা চোখ এড়ায়ে গেছিলো, আর মস্তিষ্কে গোপালভোগ ঘুরতেছিলো! আপনে 'খিরমোন' খাইছেন?

নাশতারান এর ছবি

বলতে পারছি না। আমি খুব একটা মিষ্টিবিলাসী না। তবে অন্য কোনো নামে খেয়ে থাকতে পারি। দেখতে কেমন?

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

'ক্ষীরমোহন'। 'রস', মীনাবাজার (ধানমণ্ডী সাতাশ), বিক্রমপুর সুইটস (কলাবাগান)-এ খোঁজ করলে পাবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মরুদ্যান এর ছবি

একটা স্মৃতি এখনো আমাকে আর আমার স্ত্রীকে অনেক নাড়া দেয়। একবার রোজার ঈদে রিকশায় উঠার পর খেয়াল করলাম রিকশা ওয়ালা ঠিক স্বাভাবিক না। আমার বউ জিজ্ঞেশ করল, ভাই আপনার কি কোন সমস্যা হচ্ছে? পরে বুঝলাম শারীরিক অক্ষমতা সত্ত্বেও তিনি রিকশা চালাচ্ছেন প্রচন্ড মনের জোরে। আমাদেরকে বললেন আমরা যাতে অন্য রিকশা না খুঁজি, উনি ঠিকঠাক আমাদের পৌঁছে দিবেন। দেখতে প্রচন্ড কষ্ট হলেও উনার অনুরোধ রাখলাম। গন্তব্যে পৌঁছে ভাড়ার চেয়ে কিছু বেশি টাকা ওনাকে দিলাম, এর চেয়ে বেশি কিছু করা সম্ভবপর হয়নি মন খারাপ

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

একবার এক রিক্‌শা থেকে নামার পর খেয়াল করলাম চালকের বাম হাতের পাঞ্জা কাটা - গামছা দিয়ে ঢেকে রাখেন। আরেকবার একজনকে দেখলাম তার দুই পায়ের পাতাই কেমন যেন আলগা মতো। একজনকে দেখেছিলাম যিনি কেবল রাতে রিক্‌শা চালান - দিনের আলো সহ্য করতে পারেন না বলে।

এমন মানুষেরা যখন রিক্‌শা চালানোর মতো কঠিন শ্রমের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন, তখন শক্ত-সমর্থ মানুষকে ভিক্ষা করতে দেখলে প্রচণ্ড রাগ হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দময়ন্তী এর ছবি

দারুণ লাগল পড়তে|

এই রিকশা কি সাইকেল-রিকশা?
কলকাতায় একটা অমানুষিক জিনিষ চল --- মানুষে টানা রিকশা| চড়লে মনে হয় চলমান মঞ্চে উঠে যাচ্ছি| অনেকবার এই রিকশা উঠিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, কিন্তু এইগুলো অধিকাংশই চালায় বিহারীরা| ওদের লবির জোর মধ্য কলকাতায় সাংঘাতিক| ফলে ওখান থেকে ওঠানো যায় নি|

আমি থাকি কলকাতার অপেক্ষাকৃত নতুন এলাকায়, এখানে সাইকেল রিকশাই চলে| মোটামুটি মুখ চেনা হয়ে গেছে সকলেরই| নতুন কোন রিকশায় উঠলেই অবধারিত প্রথম প্রশ্ন 'আপনের কি নিজের ফেলাট? না ভাড়া?'| হাসি

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

নাশতারান এর ছবি

সাইকেল-রিকশা। এই রিকশা চালানোও ভীষণ শ্রমসাধ্য ব্যাপার। একবার চেষ্টা করেছিলাম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

পথের ক্লান্তি এর ছবি

হাহাহা!
আপনার রিকশাওয়ালা ভাগ্য ভাল হয়ত। কিন্তু রিকশামামাদেরও একালের ছোটখাট জমিদার বললে খুব ভুল হবে না:-/
তবে হ্যা, কখনও কখনও অনেককে বেশ আন্তরিক দেখি। ক্ষেত্রবিশেষে মামাদের সাথে অনেক সময় চা, সাথে টা-ও খাওয়া হয়।

নাশতারান এর ছবি

আমাদের রাজার রাজত্বে সবারই তো রাজা হওয়ার কথা। রিকশাওয়ালারা জমিদার হলে তো ভালো।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নজমুল আলবাব এর ছবি

ঢাকার রিক্সাওয়ালাদেরকে আমার মাসুদ রানার মতো মনে হয়। বাবারে বাবা, কেমন সাই সাই করে, প্যাচ কেটে এরা চলতে পারে।

লেখাটা চমৎকার লাগলো

নাশতারান এর ছবি

দেঁতো হাসি
হ ভাই। একেকজনের রিকশায় উঠলে মনে হয় কোনো ভিডিও গেইম খেলছি। বিশেষ করে রাত নয়টার পর যখন ভিআইপি রোড খুলে দেয়, রিকশাগুলো উড়ে উড়ে চলে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নজমুল আলবাব এর ছবি

রিক্সা চড়ার অভ্যাস নাই আমার। ঢাকায় গেলেই শুধু চড়া হয়। তুমি খেয়াল করে দেখতে পারো তখন, আমি কেমন বীর প্রুষের মতো হুড ধরে থাকি। দেঁতো হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

রিকশায় চড়তে আমার বরাবরই ভালো লাগে খুব। মাঝে মাঝে খারাপ অভিজ্ঞতা হয়, তবে বেশিরভাগ সময়ই ভালো হয়। তখন সামান্য বেশি ভাড়া দিতেও গায়ে লাগে না।

গতকাল বিকালে আগারগাঁ থেকে মিরপুরের রিকশা খুঁজলাম। একেকজন ইচ্ছামতো ভাড়া হাঁকাচ্ছিল। কেউ ৬০ টাকা, কেউ আরও বেশি। বিরক্ত হলাম খুব। একজনকে বলেই ফেললাম, মানুষের বিপদ দেখলে কি আপনাদের ঈদের আনন্দ শুরু হয় নাকি? এরপর হাঁটা ধরলাম। হেঁটে কাজীপাড়া পর্যন্ত আসার পর একটা রিকশা নিতেই হলো। পায়ে আরামদায়ক জুতা না থাকায় হাঁটতে খুব কষ্ট হচ্ছিল, পায়ে ফোস্কাও পড়েছিল। যে রিকশা পেলাম একটা, বেশ বয়স্ক লোক। সে কাজীপাড়া থেকে মিরপুর-১১ পর্যন্ত ৪০ টাকা চাইলো। ৩০ বললাম। রাজি না। তারপর ৩৫ টাকা চেয়ে বললো যে এই পাঁচটা টাকা নাহয় চেয়েই নিচ্ছে সে। এমনিতে লোকটার ব্যবহার ভালো লেগেছিল, তাই তার রিকশাতেই উঠে পড়লাম। টুকটাক গল্পও হলো। নামার পর ভাড়া দেয়ার পর সে আবার "আল্লাহ হাফেজ" বলে বিদায়ও নিলো।

লেখাটা ভালো লাগলো পড়তে।

নাশতারান এর ছবি

প্রথমবার পোস্ট করার পরে আরো তিনটা ঘটনা যোগ করলাম। আমার যে কত গল্প রিকশাওয়ালাদের নিয়ে!

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ভালো লাগলো।

অনেকদিন আগে, সচল শুরুর আগে অন্যব্লগে মুর্শেদ ভাইও রিক্সা নিয়ে ২/৩ পর্ব লিখেছিলেন। সচলে একটা পেলামঃ http://www.sachalayatan.com/mahbub/1608

তারেক অণু এর ছবি

সুন্দর, সাবলীল লেখা, মনে হচ্ছে ছায়া ঢাকা পীচ ঢালা পথে রিকশায় চলেছি।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

খুব ভালো লাগল ।
রিকসাওয়ালাদের সাথে ব্যবহার দেখে অনেক মানুষের সম্বন্ধে আমি ধারণা করতে পেরেছি ।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

লেখাটা পড়তে খুব ভালো লাগলো।

এবিএম এর ছবি

বেশ ভালো লাগল লেখাটা। প্রানবন্ত।

কেউ হতভাগ্য বলে রিকশা চালান আর আমি ভাগ্যবান বলে রিকশায় চড়ি। এর বেশি পার্থক্য চোখে পড়ে না আমার

অসাধারন।

তাপস শর্মা এর ছবি

ভাল্লাগছে। রিক্সা চলার এমন অনেক অভিজ্ঞতা আমারও আছে। সত্যি বলতে ভালোর চেয়ে খারাপের অভিজ্ঞতা নেহাত কম। ওদের সাথে গল্প করতে সত্যিই ভালো লাগে। ইনফেক্ট ওরা অনেক সময় এত সুহৃদ আচরণ করেন।

নাশতারান এর ছবি

আমি খুব একটা আলাপী নই। গল্প খুবই সামান্য হয়। রিকশা চালানো খুবই শ্রমসাধ্য কাজ। আমি গল্প জুড়ে দিলে উনারা খুব একটা খুশি হবেন বলেও মনে হয় না। নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিলেই যথেষ্ট। হৃদ্যতাটুকু বাড়তি পাওয়া।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ভালো লাগলো।
রিকশা আমার প্রিয় যান। রিকশায় চড়লে আশেপাশের মানুষজনকে অনেক দারুণভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায় কিন্তু!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

বন্দনা এর ছবি

অসাধারন লাগলো বুনোদি। রিকশা্টাকে আমি কি যে ভীষণ রকমের মিস করি। অনেক সময় ইচ্ছে করে বিকেলের বুয়েটের বাস মিস করতাম, বিকেলের ঝিরঝিরে বাতাসে রিকশা করে বাড়ী ফিরবো বলে।

দুর্দান্ত এর ছবি

১। ১৯৯৩-৯৪ সালে ধানমন্ডি থেকে বিশ্ববিদ্য়ালয়ের রিক্সাভাড়া ছিল ১২-১৫ টাকা। যদি একজন রিক্সাশ্রমিক সেই যাত্রায় ২০০০ বার পেডেল মেরে থাকেন (আরো বেশী হওয়ার সম্ভাবনা বেশী) তার প্রতিবার পেডাল করার মজুরি ছিল ০.০১ টাকার মত। একই সময়ে নীলক্ষেতে ১টা এফোর কাগজের এক দিকে সিংগেল লাইনে কম্পোজ করতে ১২-১৫ টাকা লাগতো (প্রিন্ট খরচ আলাদা)। নীলক্ষেতের সেই কম্পোজার মেরেকেটে ১০০০ বার কিবোরডে চাপ দিয়ে সেই পাতা কম্পোজ করতো কিনা আমি নিশ্চিত না। কিন্তু এই ১০০০ এর ভিত্তিতে কম্পোজারের একবার আংগুলিহেলনের মজুরিও ০.০১ টাকার কাছাকাছিই ছিল। ঢাকার রিক্সাশ্রমিক ও নীলক্ষেতের কম্পিউটার কম্পোজ শিল্পীদের গড় শিক্ষাগত যোগ্য়তার তফাত নিয়ে আমার কোন ধারনা নেই। কিন্তু কম্পিউটার কম্পোজ ও ঢাকার রাস্তায় রিক্সাচালনা করতে বুদ্ধিমত্তার চাহিদার খুব বেশী তারতম্য় হবার কথা নয়।

নীলক্ষেতের কম্পোজ বাজারদের খোজখবর নেয়া হয়নি অনেকদিন। ঢাকার রিক্সাভাড়াও অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু জানতে ইচ্ছা করে, সেই এক প্য়াডাল = এক কিবোরডের চাপ - এই দুইয়ের আনুপাতিক সম্পরকে কোন পরিবরতন এসেছে কিনা।

২। "ইন্দ্রাণীভোগ" দেখতে/খেতে কেমন?

নাশতারান এর ছবি

১। দেড় যুগে রিকশাভাড়া অন্ততপক্ষে চারগুণ হয়েছে। কম্পিউটার কম্পোজ শিল্পীদের পারিশ্রমিক একই হারে বেড়েছে কি না জানা নেই।

২। ইন্দ্রাণীভোগ ছানা দিয়ে তৈরি, ঈষৎ চ্যাপ্টা ও উপবৃত্তাকার। দৈর্ঘ্যে ইঞ্চি তিনেক, প্রস্থে ইঞ্চিখানেক হয়ে থাকে (ময়রাভেদে হেরফের হতে পারে)। উপরিভাগে মালাই ও মাওয়া দেওয়া থাকে। স্বাদ পরিমিত মিষ্টি (ফিকে না, কড়াও না), ঈষৎ রসালো (রসগোল্লার মতো রস চুপচুপে না)। খেতে খুবই ভালো। দেঁতো হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কম্পিউটার কম্পোজের খরচ বিশেষ বাড়েনি। সেই হিসাবে উনারা রিক্‌শাচালকদের চেয়ে পিছিয়ে পড়েছেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

রিক্সা আমার অন্যতম প্রিয় একটা যান। প্রতিদিন অফিস করার জন্যে আমাকে রিকসায় চড়তে হয়। উত্তরা ১১ নাম্বার থেকে বিএনএস, তারপর আবার বনানী পোস্টঅফিস থেকে ৩ নাম্বার রোড খাজাবাবার বাড়ির সামনে। এই পথেই আবার ফেরা। ভালোই লাগে। আমি কোনওদিন রিক্সায় ভাড়া ঠিক করে উঠিনা। ঠিকঠাক ভাড়া থেকে একটু বেশিই দিয়ে দেই। কোনও রিক্সাওয়ালা আরও বেশী দাবী করলে সেটাও দিয়ে দেই তবে সাথে দুটো ঝাড়িবর্ষণ করতে ছাড়িনা।

তবে সম্প্রতি অনেক রিক্সাচালক নতুন একটা সিস্টেম ধরেছে। ভাড়ার পাশাপাশি এরা আবার বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে যাত্রীর কাছ থেকে সাহায্য চায়। কেউ কেউ আকষ্মিক ফুপিয়েঁ, কেউবা আবার ভেউ ভেউ করে কেঁদে ওঠে। বোনের অপারেশন, বাবা-মায়ের চিকিৎসা, বোনের বিয়ে, নামাজ পড়ার লুঙ্গি কেনা, ইত্যাদি। আমার ঢাকায় অবস্থানকালীন গড়ে প্রতি সপ্তাহেই একবার এরকম মামা'র দেখা মেলে। উত্তরা এলাকাতেই এই মামারা বেশি এবং এরা প্রায় সকলেই বাংলাদেশের একটা নির্দিষ্ট এলাকার মানুষ।

কিছু কিছু রিক্সাচালক মামাকে দেখেছি অনেক সতর্ক হয়ে, ডানে বাঁয়ে দেখে রিক্সা চালায়। আবার কেউ কেউ একদমই বেপরোয়া। গাড়ির বাম্পারে মেরে দিতেও দ্বিধা করেনা যেখানে একটু সতর্ক হলেই এটা এড়ানো যায়। মামাদের সবথেকে বেশি রাগ বড়লোক এবং গাড়িওয়ালাদের উপর।

কয়েকদিন আগে বনানীতে একটা শ্রীলঙ্কান মেয়ে তার সহকর্মীর সাথে অফিস থেকে বেরিয়ে ধুমপান করতে করতে হেঁটে যাচ্ছিলো। আমার রিক্সাওয়ালা মামা তা দেখে বেশ জোরেশোরেই একটা বাজে কথা বলে উঠলে। প্রথমেই কষে এক তাড়া লাগালাম তুই তুকারী করে। তারপর আস্তে আস্তে বোঝালাম যে এসব করলে আমরাই ছোট হই। হয়তো বিদেশিনী তোমার ভাষা বোঝেনি কিন্তু তুমি যে তাকে ইঙ্গিত করে কিছু বললে, তা সে ঠিকই বুঝেছে। সে কিন্তু তার ভূল বুঝলো এবং আমার কাছে প্রতিজ্ঞা করলো যে আর কখোনো কোনও 'ফরেনিয়ার'কে 'ব্যাঠ সাউন' দেবেনা।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নাশতারান এর ছবি

ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে অনুনয় বিনয় আমিও দেখেছি। কদিন আগে গুলশানে হাঁটছি আর এক রিকশাওয়ালা আমার পিছে পিছে রিকশা চালিয়ে এসে তার বোনের বিয়ের নিয়ে বিলাপ করতে লাগলেন। এসব ক্ষেত্রে পারতপক্ষে কিছুই বলি না।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

রিকশা নিয়ে অনেক অম্ল মধুর স্মৃতি আছে, সময় করে পরে কখনো লিখবোনে। আপাতত মমতাজের গান শুনেন, পরেরবার রিকশায় উঠলেই গাওয়া শুরু কইরেন।

আরে ও রিকশাওয়ালা, তুই ধীরে ধীরে চালা, আমি বলবো তোরে মনে কত জ্বালাআআআআ ...

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমি ঐ গানটা খুঁজলাম বুঝলেন চউ ভাই, ঐ যে যেইটায় এক বালিকার রিকশায় ফেলে যাওয়া বই ফেরত দিয়ে রিকশাওয়ালা মন জয় করে নেয় বালিকার... চ্রম একটা গান কিন্তু! এইখানে বুনোকে দেয়ার জন্যে খুঁজলাম, পাচ্ছি না... গানের কথা বা গাতকের নাম মনে নাই। মন খারাপ

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

পাইসি!! জিএমটির সৌজন্যে সেইইইই বিখ্যাত গাআআন! শোনেন মন দিয়ে, দেখেনও -
দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

চরম উদাস এর ছবি

জটিল গান হাসি)। সবাই দেখি রিকশাওয়ালার প্রেমে পাগল। আমাদের এক পরিচিত রিকশাওয়ালা ছিল, তার কাছ থেকে নিয়ে আমি আর আমার মেঝ ভাই মাঝে মধ্যে রিকশা চালাইতাম। একদিন আম্মা দেখে কি ঝাড়ি মন খারাপ

মাহবুব রানা এর ছবি

দারুন গান তো! পুরাই 'জীবনমুখী' প্রেমের গান।

সত্যপীর এর ছবি

কিছুদূর যাওয়ার পর বললেন, "কোক কি ঠাণ্ডা?"

সাব্বাস।

সিএনজিওলার নবাবীর বহু আগে থেকে রাস্তায় রিকশার আধিপত্য, ওরা কিন্তু ইচ্ছা করলেই ওরকম করতে পারত ভাড়া নিয়ে। তা তারা করেনি। রিকশাওলাদের দিল বড় আছে।

রিকশা নিয়ে লিখা ভারি চমৎকার লাগলো।

..................................................................
#Banshibir.

প্যাপিরাস এর ছবি

রিকশাওয়ালাদের সাথে রিকশাভাড়া নিয়ে তর্ক কখনো হয় নাই। এমন ও দিন গিয়েছে, এদের অনেকেই উল্টা-পালটা কথা বলে ৫-১০ টাকা বেশি নিয়েছে। প্রথম যেদিন নটরডেম কলেজে যাই, আমাকে এক রিকশাওয়ালা রাস্তার এপাশ থেকে (কমলাপুর স্টেশন থেকে যে রোডটা এসেছে, সেটার মোড় থেকে) ওপাশে ১০ টাকা বলে এপারে নিয়ে আসে। বোকা বনে যাই। কিন্তু টাকাটা দিয়ে দেই।

একটা কথা বলতেই হয় রিকশাওয়ালাদের ভাড়া আজকাল বেড়েছে, কিন্তু এদের চিন্তাধারা, কিংবা এদের প্রতি আমাদের চিন্তাধারার কোন পরিবর্তন হয়েছে কি?

লেখাটা দারুন লেগেছে।

তারানা_শব্দ এর ছবি

আমি তো আগেই বলছিলাম সবাইকে, রিক্সাওয়ালাকে বিয়ে করাটা খারাপ হবে না

লেখা মুচমুচে হয়েছে, আমার তো এখন রিক্সায় উঠতে ইচ্ছা করতেসে মন খারাপ(

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

উপরে দেখ, গান দিয়েছি, শুনতে আর দেখতে ভুইলো না! দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

নিঃসঙ্গ গ্রহচারী! এর ছবি
নাশতারান এর ছবি

ধন্যবাদ।
লেখাটা পড়ে মজা পেলাম। দেঁতো হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

পুেপ এর ছবি

হায় রিকসা।
কি মনে করায় দিলেন আপু,????????
বনানী থেকে সনির আখ্রা,যাত্রাবাড়ী __" ২০০৭ থেকে চলমান" রিকশার উপরেই আছি!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
পুরা বই লেখা যাবে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১৯৯৫-৯৬ সালে আওয়ামী লীগের অসহযোগ আন্দোলনের সময়ঋক্‌শা করে পলাশী বাজার টু নারায়ণগঞ্জ চাষাঢ়ার মোড় যেতে হয়েছে বহুবার। ঢাকার বাইরে এমন লম্বা রিক্‌শাভ্রমণের অভিজ্ঞতা আছে আরো বেশি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মুস্তাফিজ এর ছবি

রিকসা মিস করি।

(তোমার লেখায় যে ভিডিয়োটা দেখাচ্ছে তাতে যে রিকসাওয়ালার ছবি সেই ছবি তুলেছে অপু, বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনীয়ার। http://www.flickr.com/photos/chayashikari/3385110187/ )

...........................
Every Picture Tells a Story

Guest_writer নীলকমলিনী এর ছবি

আমি আজিমপুর থেকে থেকে সায়েন্স এনেক্স এ যেতাম দুই টাকা দিয়ে (৭৬ থেকে৮০)। ফাঁকা রাস্তায় দুই বান্ধবী হুড ফেলে হাওয়ায় ভেসে বাসায় ফিরে যেতাম ক্লাস শেষে। একা থাকলে হুড তুলে। গরমের দিনে রিক্সাওালাকে শরবত ,কখনো তরমুজ দিতাম। দূরে কোথাও গেলে ভাড়া নিয়ে দামাদামি করিনি। আমাদের অনেক পয়সা ছিল না কিন্তু ওদের প্রতি মমতা ছিল।

এখন যখন মাঝে মাঝে দেশে যাই খুব ভালবাসি রিক্সায় চড়তে ,কিন্তু ঠিক করে বসতে পারিনা বলে ভয় লাগে।
ঢাকার বাইরে গেলে চড়ি। ওদের প্রত্যাশার বেশি ভাড়া দেই।
বুনোর সাথে আমার অনেক মিল আছে, লেখাটি পড়তে পড়তে আমার বিশ্ব বিদ্যালয় জীবনে ফিরে গেলাম।
সুন্দর লেখাটির জন্য বুনো কে ধন্যবাদ।

নাশতারান এর ছবি

যারা পড়েছেন ও মন্তব্য করেছেন (অথবা করেননি) তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। রিকশা নিয়ে সবার নানারকম অভিজ্ঞতা জেনে মজা পেলাম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

জি.এম.তানিম এর ছবি

দারুণ লেগেছে লেখা...

হাততালি

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।