ভিসুভিয়াসের জ্বালামুখ থেকে

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৫/১০/২০১২ - ৭:১০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

424629_10152175639150497_1360373568_n

স্কুল জীবনের ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণীতে ভূ-গোল নামের এক বিষয় জীবনে যুক্ত হল, ভূ মানে পৃথিবী আর গোল মানে তো রাউন্ড মানে গোল! গোল পৃথিবীর সমস্ত বিষয়-আসয় নিয়ে জানার চেষ্টা চলতে থাকল তখন থেকেই- সমভূমি কাকে বলে, মালভূমি কি, বিশ্বে কত ধরনের পর্বত আছে, ভূমিকম্প কেন হয়, মহাদেশগুলো তৈরি হল কি করে এমন অনেক কিছুর সাথে আগ্নেয়গিরি! যে পাহাড় থেকে মাঝেই মাঝেই আগুনের রূপ নিয়ে গরম পাথর বাহির হয়, তাদের নাম আবার লাভা। জানলাম বিশ্বে তিন ধরনের আগ্নেয়গিরি আছে - মৃত, সুপ্ত এবং সক্রিয়। নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে একটার সমস্ত লাভার ভাণ্ডার শেষ হয়ে গেছে, অন্যটার শেষের পথে, কিন্তু হঠাৎ হঠাৎ লাভা বমি করে জানান দেয় যে- বেঁচে আছি, আর সক্রিয় আগ্নেয়গিরির কাজকর্মে তার ধারে কাছে ভিড়তে পারবেনা না।

সেই সাথে মুখস্থ করা হল কিছু আগ্নেয়গিরির নাম বিশেষ করে মনে আছে জাপানের ফুজিয়ামা এবং ইতালি ভিসুভিয়াস। সেই প্রথম পরিচয় ভিসুভিয়াস নামটির সাথে, এর কয়েক মাস পরেই পড়া হল সেবা প্রকাশনীর বদৌলতে লর্ড লিটনের লেখা লাস্ট ডেইজ অফ পম্পেই, ভূমধ্যসাগর তীরের পম্পেই নামের সেই সমৃদ্ধ নগরীর জীবনযাত্রার বর্ণনা খোদাই করা ছিল সেখানে ভিসুভিয়াসের লাভাস্রোতের মূর্তিমান অভিশাপ হয়ে নেমে আসার আগ পর্যন্ত। কি ভয়ংকর হতে পারে কোন আগ্নেয়গিরি পাদদেশে বাস করা, বিশেষ করে যদি তার জ্বালামুখ থেকে নিয়মিত বিরতিতে ধোঁয়া বেরোতে থাকে! নানা পত্রপত্রিকা পড়ে পরের বছরগুলোতে জানলাম ২০০০ বছর আগেই ভিসুভিয়াসের অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ধ্বংস হয়ে গেছিল পম্পেই সহ পাঁচটি শহর। তারপরও কয়েকবার ক্ষেপে উঠলেও তেমন প্রলয়ঙ্করী রূপ দেখা যায় নি এখন পর্যন্ত, নতুন ভাবে গড়ে উঠেছে পম্পেই, এরকুলান্যো শহর, সেই সাথে আছে কাছের মহানগরী নেপলস।

155280_10152185909480497_1963379244_n

বারকয়েকই চিন্তা করেছি আগ্নেয়গিরি চড়ার, বিশ্বের উচ্চতম মৃত আগ্নেয়গিরি কিলিমাঞ্জারো চড়বার পরিকল্পনা প্রতি সামারেই হতে থাকে, কিন্তু পেছাচ্ছে নিয়মিত, টোকিও গেলেই ফুজিয়ামা চড়ার সমস্ত বন্দোবস্ত পাকা হয়ে আছে, কিন্তু টোকিও যাওয়াও হচ্ছে না, ফলে দাঁড়ানো হচ্ছে না ফুজিয়ামার তুষারাবৃতশৃঙ্গেও। এদিকে আমাদের সৌরজগতের সর্বোচ্চ পর্বতটাও কিন্তু একটা আগ্নেয়গিরিই, মঙ্গল গ্রহের অলিম্পস মন্স মাউন্ট এভারেস্টের তিনগুন উঁচু, আমাদের গ্রহে হলে অক্সিজেনে ছাড়া সেখানে আরোহণের সামর্থ্য কারোই হত না, কিন্তু মঙ্গলে যাবার উপায় আপাতত পাওয়া যাচ্ছে না বলেই এই মাসের ২য় সপ্তাহে ভিসুভিয়াসের পাদদেশের নেপলস শহর ভ্রমণে সময় মনে হল দিগন্ত জুড়ে দাড়িয়ে থাকা ভয়াল ভয়ংকর সুন্দর সুপ্ত আগ্নেয়গিরিটাতে আরোহণের চেষ্টা করলে কেমন হয়? কেমন লাগবে সেই জ্বালামুখের কিনারে দাড়িয়ে কন্দরের টগবগে লাভা দেখতে? নিজেকে কি জুল ভার্ণের জার্নি টু দ্য সেন্টার অফ দ্য আর্থ বইয়ের চরিত্রের মতই মনে হবে? বলি করে করে, সেখানে না যাওয়া পর্যন্ত!

408747_10152188279085497_1712039939_n

চলুন তাহলে, ঘুরে আসি ভিসুভিয়াসের জ্বালামুখ থেকে, আর যাবার আগে কয়দিন হাঁটাচলা করে ফিটনেস বাড়িয়ে নিন, সকালে সেদ্ধ ডিমের সাথে শসা খেয়ে একা একা ঘরে থেকে গন্ধকের গন্ধে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করুন ( খবরদার, সাথে কাউকে নিবেন না, নিলেও সাথীর অকথ্য গালাগালির জন্য তারেক অণুকে দায়ী করা চলবে না, হুম), মাঝে মাঝে ওয়াকিং স্টিক নিয়েও পায়চারি করতে পারেন। প্রস্তত? চলুন তাহলে --

৯ অক্টোবর সকালেই নেপলস থেকে ট্রেন যাত্রা শুরু হল প্রাচীন শহর এরক্যোলানোর উদ্দেশ্যে, সেখানে রেলষ্টেশন থেকেই ভিসুভিয়াসের দোরগোঁড়ায় যাবার বাহন পাবার কথা। কিউবার প্ল্যায়া হিরণের কাছে ক্যারিবীয় সাগরতলের অপূর্ব রঙিন অভিজ্ঞতার কথা খেয়াল আছে হয়ত আপনাদের এই পোস্টের কল্যাণে, সেইবারের মতই অতল সাগরের তলদেশ থেকে পাহাড় চূড়া ছোবার অভিযানে সাথী হয়েছে ফিনল্যান্ডের তরুণী সারা এসকেলিনেন।

vintique_image

সেই সাথে ষ্টেশনে জোটা কয়েকজনের সাথে চেপে মাইক্রোবাস ধরনের বাহনে চেপে যাত্রা শুরু হল ভিসুভিয়াস ন্যাশনাল পার্কের উদ্দেশ্যে। শহর ছাড়ার পর থেকেই সাদা মেঘের ভেলাদের নোঙর ফেলার বন্দর ভিসুভিয়াসের চূড়া দেখা গেল, বছরের এই সময়টা নাকি মেঘময়ই থাকে, তবে আজ অবস্থা কিছুটা ভাল। সূর্যের উপস্থিতি বোঝা যাচ্ছে থেকে থেকেই, এখন আশা যেন শিখরে পৌঁছানোর পরে মেঘের ভেলাদের অনুভব না করতে হয়!

536516_10152185909735497_666567382_n

১২৮১ মিটার ( ৪,২০৩ ফুট) উচ্চতার আগ্নেয়গিরিকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে ১৩৫ বর্গ কিলোমিটারের ভিসুভিয়াস ন্যাশনাল পার্ক, দূর থেকেই বোঝা যায় চূড়ার কাছে যেমন যেন চকচকে লালচে পাথরের ঢাল কিন্তু খানিক নিচ থেকেই ঘন সবুজের জঙ্গল। সেই বন চিরেই ঘুরে ঘুরে উপরের দিকে চলে গেছে পীচ ঢালা রাস্তা,

269445_10152212550685497_1522787780_n

লালচে মাটি, কেমন যেন সুড়কি মেশানো মনে হল, কয়েক জায়গায় কালো পাথরের বিশাল বিশাল স্তূপ, হাজার বছর আগের লেলিহান লাভা এখান পর্যন্ত এসেই জীবনীশক্তি হারিয়ে পরিণত হয়েছে পাষাণী অহল্যায়।

1110_10152180588425497_213262166_n

কিন্তু তার উপরেই এখন সবুজের সমারোহ, বিশাল বিশাল গাছ গজিয়ে ছেয়ে ফেলেছে সেই বিভীষিকাময় স্মৃতিকে। এই বনে যে হরিণের দর্শনও মিলতে পারে তা জানা গেল পথের পাশের সাইনবোর্ডে।

60370_10152212550620497_993312644_n

এক জায়গায় গাড়ী থামিয়ে গাইড দেখাল সবুজ বন দলে চলে যাওয়া পাথর নদীকে, ভিসুভিয়াসের শেষ লাভা উদগীরন ঘটেছিল ১৯৪৪ সালে, তখন নাকি এই পর্যন্ত এসেই তার সমস্ত তর্জন-গর্জন উবে গিয়েছিল, ধিকিধিকি আগুন জ্বলা তপ্ত লাভা পরিণত হয়েছিল কঠিন শিলাতে, নিশ্চিন্ত হয়েছিল অগণিত মানবজীবন। এখনও সবসময় ব্যপক নজরদারী করা হয় ভিসুভিয়াসের উপরে, বলা তো যায় না- পাগলী যদি খেপে যায় ২০০০ বছর আগের মত? অবশ্য খেপলে তার সেই ক্রোধ থেকে কি করে রক্ষা পাওয়া যাবে সে নিয়ে অবশ্য সবাই সন্দিহান।

986_10152180588765497_421238703_n

পথের বাঁকে পাহাড় আর বনের ফাঁকে দূরের নেপলস শহর দেখা গেল, সাথে সুনীল ভূমধ্যসাগর, এমনিই কি আর নেপলসের রূপ নিয়ে বলা হয়- নেপলস দেখার আগে মারা যেও না!

374047_10152176163880497_446514060_n

গাড়ী নিয়ে গেল ঢালের গায়েই কিছুটা ছড়ানো মত জায়গায় সেখানেই গাইড তার যান সহ অপেক্ষা করবেন দেড় ঘণ্টা, এর মাঝেই আমাদের জ্বালামুখ ছুয়ে ফিরে আসতে হবে। সেই পার্কিং প্লেসের পাশেই টিকেটঘর, ৭ না ৮ ইউরোর জানি টিকেট ( কদিন আগে এক তথ্যচিত্রে দেখলাম আফ্রিকার এক দেশে, সম্ভবত কঙ্গোতে, জীবন্ত আগ্নেয়গিরি দেখতে টিকেটের দাম করা হয়েছে ২৫০ ডলার, নিরাপদ দূরত্বে দাড়িয়ে লাভার স্রোত বেরোতে মানে নতুন ভূমির জন্ম হতে দেখা যাবে), সেটার পরপরই মূলফটক পেরিয়ে লালমাটির রাস্তা চলে গেছে ঢাল বেয়ে উপরের দিকে, প্রথমেই দেখি লাঠি ভাড়া করার সুব্যবস্থা আছে! কেনাও যেতে পারে!

36553_10152212550565497_492648941_n

অবশ্য লাঠিয়ালরা তাদের দিকে ভ্রুক্ষেপও না করাকে মোটেও সুনজরে দেখল না, ভাব খানা এমন- যাওনা এমন গটগটিয়ে, দেখব কতক্ষণ পার এক দমে! কিন্তু ওদের কি করে বোঝায় যে মামুর বুটারা- এই ১২০০ মিটারের পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উঠতে যদি লাঠি ব্যবহার করি, তাহলে তো কেউ পাসতেই পারবেহেনা( চিনতেই পারবে না),আর নিজের কাছেই কেমন কেমন লাগবে- তারচেয়ে যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ- পদব্রজই ভরসা ভবঘুরের।

223255_10152185911000497_1476254727_n

বেশ ছড়ানো পথ, রেলিং দেয়া আছে, এঁকে বেঁকে উঠে গেছে শিখর পর্যন্ত। ঢালের দিকে নজর গেলেই লাল মাটি, লাল পাথর, লাল কাঁকরের রাজত্ব, কিন্তু সবকিছু ছাড়িয়েই চোখে আরাম বুলিয়ে যাচ্ছে কঠিন পাথর ভেদ করে ফোটা ফুলের গুচ্ছ, বা গাছের দল। আসলেই, খানিকটা সময় পেলেই প্রকৃতি কি চমৎকার ভাবেই না প্রায় সমস্ত আঘাতই সামলে নেয়।

486954_10152185910850497_1757545782_n

29343_10152212550500497_890544026_n

দূরের নেপলস যেন লুকোচুরি খেলতে লাগল সাদা মেঘের ফাঁকে ফাঁকে, এদিকে আমাদের ছোঁয়ার প্রতিযোগিতা লাগিয়েছে যেন কালো কালো মেঘের দলেরা, কিন্তু সুখের কথা- এখন পর্যন্ত তাদের বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ার লক্ষণ দেখা দিচ্ছে না, দিলেই কেলেঙ্কারির একশেষ!

375866_10152201261665497_1777979106_n

জোর কদমে চলে চূড়ার কাছাকাছি পৌঁছে অবশেষে মনে হল ধোঁয়ার দেখা পেলাম, কিন্তু হা হতোস্মি! এ তো মেঘ! ফিনফিনে ঢাকাই মসলিনের মত মেঘেরা পাক খেয়ে ঘুরছে যেন আগ্নেয়গিরির চারপাশে,অবশ্য পরের কয়েকদিনেও ভিসুভিয়াসের দেখা কোন সময়ই সম্পূর্ণ মেঘমুক্ত অবস্থায় মেলেনি, হতে পারে শরতে এমনটাই হয়, যে কারণে এত উপরে উঠেও ঝকঝকে নীল ভূমধ্যসাগরের দর্শন মিলল না মেঘদূতদের কারণেই।

কিন্তু ভিসুভিয়াসের কুখ্যাত জ্বালামুখ তখন আমাদের সামনে, কেবল একটি রেলিংয়ের ব্যবধান! এরপরেই ঢাল নেমে গেছে নানা ধরনের শিলাস্তর নিয়ে কেন্দ্র পর্যন্ত, অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম জ্বালামুখের কন্দরেও সবুজের ছোঁয়া, বিশেষ করে একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতেই বেশ কিছু গাছ চির উন্নত মম শির হয়ে দাড়িয়ে আছে সগর্বে! অবশ্য অনেক মৃত আগ্নেয়গিরিরই জ্বালামুখে জল জমে সেটি নয়নাভিরাম হ্রদে পরিণত হয়, যাদের বলা হয় আগ্নেয় হ্রদ। কিন্তু এমন পর্যায়ের যেতে মনে হচ্ছে ভিসুভিয়াসের দেরী আছে।

389524_10152210617840497_1137920580_n

আমার ক্যামেরার এবং সারার সাহায্যে টুকটাক ফটোসেশন চলল, তার একটি তো আপনারা এই পোস্টে দেখেছেনই। ছবি তোলার সময়ই প্রথম বারের মত নিচের এক প্রান্তে ধোঁয়া চোখে আসল! সত্যিকারের আগ্নেয়গিরি ধোঁয়া! সেখানে ভূমির তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডের বেশী! মাটি মনে হয় ফুটছে টগবগ করে, কতটা উত্তপ্ত হলে শিলা থেকে ধোঁয়া বেরোতে পারে!

559612_10152210617175497_1039888466_n

উৎক্ষিপ্ত লাভা নয়, আগুনের ফুলকি নয়, সোনারঙা নিভু নিভু পাথর নয়, সেই অল্প ধোঁয়ার উৎসেই যে কি রোমাঞ্চের সৃষ্টি করল মনে তা পুরোপুরিই অলেখ্য। শুধু মনে হল, এবার যদি বাবা ভিসুভিয়াস একবার ফুঁসে ওঠে আপন মর্জি মত ব্যস – অমরত্ব ঠেকায় কোন দেবতা!

156680_10152184635025497_1782208163_n

253090_10152180588015497_1857410216_n

গত দুই হাজার বছরে মোটমাট ৭৯ বার অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছে ভিসুভিয়াসে, কিন্তু কোনটাই ৭৯ খ্রিস্টাব্দের মত বিশাল ছিল না, এবং বাকী কোনটাই ঐটার মত মানবসমাজের ক্ষতিসাধনও করে নি। ইউরোপের নানা দেশে তো বটেই এমনকি এখানের ধোঁয়া ১২০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ইউরোপ- এশিয়ার মিলনস্থলের ইস্তাম্বুলের আকাশ পর্যন্ত দখল করে নিয়েছে মাঝে মাঝে!

559589_10152188279445497_717380045_n

তবে ভূতাত্ত্বিকদের ( আমাদের দ্রোহীদার মত) গবেষণায় জানা গেছে আল্পস পর্বতমালার জন্ম যে কারণে হয়েছে, ভূপৃষ্ঠে ভিসুভিয়াসের উদ্ভবও সেই একই কারণে- আফ্রিকা মহাদেশীয় প্লেটের সাথে ইউরেশীয় মহাদেশের প্লেটের সংঘর্ষ। তাপ-চাপের কারণে উদ্ভূত চিত্র- বিচিত্র শিলার দেখা মিলল জ্বালামুখের চারপাশে ( এই নিয়ে যে কোন প্রশ্ন থাকলে মন্তব্যে পাঠান- উত্তরদাতা হিসেবে দ্রোহীদা বস্তুনিষ্ঠ উত্তর দিতে বদ্ধ পরিকর) ।

375953_10152180606205497_1914325445_n

528604_10152182928830497_62250473_n

425822_10152182929010497_1084334383_n

566_10152184635095497_843434438_n

যে এলাকায় সবচেয়ে বেশী ধোঁয়ার দেখা মিলল, মনে হল সুযোগ পেলেই চট করে বারবিকিউ সেরে ফেলতে পারব ১ মিনিটে, সেখানেই দেখি ক্ষুদের পাখির দল নির্ভয়ে নীড় পেতেছে, যদিও বংশ-কুল-জাত ঠাহর করবার আগেই তারা পুচ্ছ ঝাঁকিয়ে হারিয়ে গেল গহ্বরের নিচের দিকে।

581540_10152191149455497_412131547_n

আর পাওয়া যাচ্ছিল গন্ধকের কটু গন্ধ, একেবারে রসায়নল্যাবে পাওয়া পচা ডিমের গন্ধের জমজ ভাই। কেমন অদ্ভুত ধরনের এক বিশাল গহ্বর, মনে হল এর নিজস্ব কোন সত্তা আছে। ক্রুর, ভয়ংকর, নিষ্ঠুর সেই অন্ধ জ্বালামুখ বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর দানবের মতই যেন অপেক্ষা করছে অবশ্যম্ভাবী কোন পরিণতির!

253114_10152184635110497_2108083936_n

527358_10152210616290497_486282183_n

সেই ধোঁয়াশাময় নির্জনে পরিবেশে অবশ্য ভিনগ্রহ না হলেও জুল ভার্ণের কোন উপন্যাসে পৌঁছে গেছি তা নিয়ে সন্দেহ ছিল না বিন্দুমাত্রও।

536414_10152185910165497_904530879_n

253122_10152185910745497_203537700_n

জ্বালামুখের এক কিনারে নানা স্মারক চিহ্ন কেনার দোকান, সেখানে রোদ্রকরোজ্জল আগ্নেয়গিরিটির ভিউকার্ড যেমন ছিল, তেমনি ছিল নানা ধরনের , নানা বর্ণের পাথর! প্রবল তাপে ও চাপে কি করে এক মৌল অন্য মৌলতে রূপান্তরিত হয় তার যেন একটা প্রদর্শনী হয়ে গেল ছোট টেবিলেই!

577037_10152184634970497_2004991324_n

550130_10152214397110497_557282984_n

523600_10152214397005497_1026789222_n

182547_10152214396855497_836435174_n

এর পরপরই নিচে নামার রাস্তা, কিন্তু জানা গেল সেটি নেমে গেছে পর্বতের অন্য প্রান্তে, আমাদের যানের কাছে নহে! সেখানে যেতে হলে যেই রাস্তা দিয়ে এসেছি সেইখান দিয়েই ফিরতে হবে, একটু ঝুঁকি নিয়ে অবশ্য জ্বালামুখটির ভিতর দিয়ে গেলে শর্টকার্ট হতেও পারে, কিন্তু রেলিং টপকালেই হয়ত হা রে রে রে রে রে করে তেড়ে আসবে ইতালিয় প্রহরীর দল। এমনিতেই একবার একটু ভিতরে ঢুঁকে ধোঁয়ার ছবি তুলতে যেয়ে বিপদে পড়তে যাচ্ছিলাম, তাই মানে মানে চললাম নিচের পথে। এবারে গন্তব্য- এরক্যুলানো শহর।

483049_10152185909295497_1034883496_n

( এই পোস্টটি জনপ্রিয় কিন্তু আপাতত ফাঁকিবাজ ব্লগার, নামী ভূতাত্ত্বিক, ভূমিকম্পবিশেষজ্ঞ এবং প্রিয় মানুষ দ্রোহী দার জন্য।

প্রিয় দ্রোহী দা- আমি খাস দিলে পৃথিবীর কাছে প্রার্থনা করি- আপনি যেন সারাজীবন টয়লেটে নিজের একান্ত আরামের সময়টুকু প্রাইভেসি সহকারে অতিবাহিত করতে পারেন, বৌ- বাচ্চার তখন যেন অবশ্যই অবশ্যই দরজায় তবলা বাজানো কসরত করার মতি না হয় এবং বুড়ো পৃথিবীটাও যেন তখনকার মত ভূমিকম্প না ঘটিয়ে শান্ত থাকে, আমেন! )


মন্তব্য

মুস্তাফিজ এর ছবি

একটু আগে ক্রেসিডার কবিতা পড়ে এখানে ঢুকলাম, সেকেন্ড লাস্ট ছবিটা দেখে ক্রেসিডার রেস্তোরা মনে হচ্ছে বার বার। ছবিগুলা মেনু আর পাথর গুলা খাবার। হো হো হো

আরো একমাস পরে, তোমার সাথে দেখা
সেম রেস্তোরা, সেম মেনু, সেম
চেয়ার টেবিলে

...........................
Every Picture Tells a Story

তারেক অণু এর ছবি

মন খারাপ ভোর সাড়ে টার সময় এটা কি রকম রসিকতা মুস্তাফিজ ভাই ! অ্যাঁ
নাহ, ভ্যাঙ্কুভার আসতেই হবে চোখ টিপি

মুস্তাফিজ এর ছবি

ভ্যাঙ্কুউভারে এলে তো খুশি হবারই কথা আমার। এই আসার কথাটা কি আবার রসিকতা নাকি?

...........................
Every Picture Tells a Story

তারেক অণু এর ছবি

নাহ, সামনে সামারের শেষ দিকে আম্রিকা আসলে, একবার কানাডা ঢু মারব না? তখন আমি, আপনি, সুজন্দা, আরও যারা যারা আছেন, সবাই মিলে রসিকতা করব! শয়তানী হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই অশান্ত কবি সহ খাইছে

ধুসর গোধূলি এর ছবি

অলিম্পস মন্সে ওঠার আগে যেমনেই হোক, সেখানে একটা বুদ্ধমূর্তি রাখার ব্যবস্থা কৈরেন। আর নেক্সটটাইম ভিসুভিসুতে গেলে দুই কেজি দেশী আলু নিয়া যাইয়েন। ১০০ ডিগ্রির কথা শুনে আমার প্রথমেই যেটা মনে হৈছে, সেখানে আলু ফেললে কতো তাড়াতাড়ি সেটা পোড়া হয়ে খাওয়ার যোগ্য হবে! চিন্তিত

তারেক অণু এর ছবি

সাথে লবণ? নাকি ভাবছেন লবণ সেই সমুদ্র মন্থন করে আমারেই তৈরি করে নিতে হবে? মেম্বর কো?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

মেম্বর কুরবানীর গরু কিনতে গেছে গাবতলীর হাটে। একটু আগে ইন্টেল মারফত জানতে পাল্লাম, মেম্বর গরুর গলা ধরে হেলে দুলে গানের স্টিল ভিডিও বানাচ্ছে, 'তু জো মেরা ম্যায়না হোতি মে জো তেরা তোতা... খুলি গগনমে উড়তা দুনো, ডরনা কিসিকো হোতা...' গানের তালে তালে।

তারেক অণু এর ছবি

'তু জো মেরা ম্যায়না হোতি মে জো তেরা তোতা... খুলি গগনমে উড়তা দুনো, ডরনা কিসিকো হোতা...' গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি মেম্বর কি একা, নাকি পুত্র-পরিবার সহ?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

এই প্রশ্নটা আমিও করছিলাম, আমার ইন্টেলও করছিলো। মেম্বর সাফ জবাব দিয়েছেন, হেমচন্দ্র বাবুর ভাষায়, 'দারা-পুত্র-পরিবার, তুমি কার কে তোমার...!'

তারেক অণু এর ছবি

হ, টয়লেট করার সময় একা থাকাই ভাল, কি কন!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

মেম্বর একটি অভিশাপ। ইন্টেল আরও জানিয়েছে, হাগনকুঠিতে বসে বসে মেম্বর পুরানা দিনের হিন্দি গানে টান মারে, 'আজা রে, ও মেরে দিলবার আজা... দিল কি পিয়াস বুঝা যা রে...'

তারেক অণু এর ছবি

গানটা কি বর্জ্যের উদ্দেশ্যে? গড়াগড়ি দিয়া হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ভূগোল অংশ দিয়ে ভিসুভিয়াসের সাথে পরিচয় এবং ক্যাডেট ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার প্রেপ নিতে যেয়ে আরো অনেক আগ্নেয়গিরির নামের সাথে পরিচয়। গ্রীসের সান্তরিনির যেখানটায় ভলকানিক ইরাপশন হয়েছিল সেই এলাকাটা ঘুরে দেখেছি, হয়ত কোন এক সময় ভিসুভিয়াসও দেখা হয়ে যাবে, ছবির সাথে সাবলীল বর্ণনা আপনার লেখার বিশেষ বৈশিষ্ঠ্য।

দিবাকর

তারেক অণু এর ছবি

সান্তোরিনির লেখা দিয়ে ফেলেন, ছবিসহ, দারুণ হবে-

অতিথি লেখক এর ছবি

সচলে নিয়মিত হবার চেষ্টা করতেছি, লিখে ফেলবো শীগ্রই হাসি

দিবাকর

তারেক অণু এর ছবি
বাপ্পীহায়াত এর ছবি

দুই নাম্বার ছবিটা খুবই পছন্দ হইছে

আচ্ছা, আপনি কি ভিসুভিয়াসে উঠা প্রথম বাংলাদেশি?
(যদিও কোথাও দাবি করেননাই, তারপরও উকিল/টুকিল লাগলে আউয়াজ দিয়েন শয়তানী হাসি )

তারেক অণু এর ছবি

আশা করছি আমি ভিসুভিয়াসে ওঠা শেষ বাংলাদেশী, মানে ১৭ কোটি জনতা ওঠার পরে আমি উঠেছি, এমনই অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় আমাদের জাতি! আশা করতে দোষ কি?

মণিকা রশিদ এর ছবি

ওই টিশার্টটা কোনোদিন নিলামে উঠাইলে আগেভাগে আমায় জানায়েন।আপনের ভ্রমণ সঙ্ক্রান্ত পোস্ট আমি চোখ বুঁজে পড়ে চলে যাই।মন্তব্য দেয়ার জন্য যে সময় লাগে সেটুকুও থাকা হয়না ভয়ে। এবং সেই দায় আমার না! চোখ টিপি

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

তারেক অণু এর ছবি

হুম, পড়ে কোথায় চলে যান মণিকাদি, জাতি জানতে ইচ্ছুক?

নিলামে তুলব বলছেন? খাইছে

স্যাম এর ছবি

চলুক চলুক
অণুদা ঐ বস্তুটা কি? নীচের থেকে ২ আর ৪ নম্বর ছবিতে টেবিলের উপর-----গাছের ডাল / গুড়ির ক্রস সেকশন বা মাংসের রোল এর মত দেখতে ---

তারেক অণু এর ছবি

ভাল বলেছেন! দেখে মনে হচ্ছে গুড়ি, কিন্তু আসলে হয়ত কোন পাথর, দ্রোহীদা আসুক, তাপ্পর উত্তর মিলবে।

স্যাম এর ছবি

দ্রোহীদা কেন? সেও ছিল নাকি ঐ টেবিলের সামনে - কোথায় যেন পড়লাম দ্রোহীদা গাবতলির হাটে! চোখ টিপি দেঁতো হাসি

তারেক অণু এর ছবি

সারাজীবন কী হাটেই থাকপে! সে কি ব্যাপারির টেন্ডার নিছে নাকি !

তানিম এহসান এর ছবি

ঘুরে আসলাম ভিসুভিয়াসের জ্বালামুখ থেকে, বুঝলেন হে প্রিয় উড়ন্ত ঘুড়ি হাসি

তারেক অণু এর ছবি

বুঝলাম

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

উদ্ভিদেরা কেমন বেয়ারা-নাছোড়বান্দা! উচ্চতা বা উচ্চ তাপমাত্রা কোন কিছুরই পরোয়া করতে চায় না। একটু সুযোগ পেলেই সবুজ বা সবুজ থেকে লাল-নীল-হলদে-বেগুনী কী অবলীলায় ফুটিয়ে দেয়। রোগা রোগা হাত-পা ছুঁড়তে থাকে। আরেকটু সুযোগ পেলে ঝোপঝাড়ে মাতিয়ে তোলে।

নিয়াপলিটানরাও দেখি উদ্ভিদদের মতোই। উঁচু পাহাড়ে, প্রচণ্ড গরমেও তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তারেক অণু এর ছবি

জীবন জিনিসটাই এমন, কে জায়গাতেই যান কিছু না কিছু আছেই- গাছ, পাখি, সরীসৃপ, স্তন্যপায়ী নিদেন পক্ষে অণুজীব!

শুধু নিয়াপলিটানরাই নয়, এক ইতালিয়ান আমাকে দাঁত বের করে বলেছিল ফ্রাঙ্কফুর্টের বইমেলাতে- উই ইতালিয়ানস, উই সেল এভটিথিং!

তাপস শর্মা এর ছবি

কিছুই বলার নাই। তাই স্রেফ একটা অভিনন্দন কোলাকুলি

তারেক অণু এর ছবি
পরী এর ছবি

সকালে একবার পড়লাম। এখন আবার একবার পড়তে এলাম মন্তব্য করার জন্য। পড়তে পড়তে নিজেই একবার ঘুরে এলাম স্বপ্নে (আমি তো আর তারেক অনু না যে চাইলেই লাফ মেরে যেখানে খুশি চলে গেলাম মন খারাপ তাই স্বপ্নেই ঘুরি আপনার লেখা পড়ে। হাসি ) আরও অনেক অনেক বিস্তারিত লেখা চাই আর সাথে অবশ্যই ছবি।
আমার কোলের কম্পুটারে কেন জানি কুনু ইমু কাম করতেছে না, তাই শেষে গুড় দিয়া গেলাম। নিজ দায়িত্তে গ্রহন করিবেন। হাসি

তারেক অণু এর ছবি

সব বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র! চোখ টিপি

অরফিয়াস এর ছবি

৪ নাম্বার ফটুখানা দেখ রে !! গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু এর ছবি

ক্যান, কি অয়ছে! ধইরা ঠুয়া দিয়া দিমু... আবে অইম তুই হাসতাছস ক্যান? ( চক্ষু খুইল্যা গুঁটি খেলুম, গুঁটি) চক্ষু খুইল্যা গুট্টি খেলুম, গুট্টি...

অতিথি লেখক এর ছবি

ছবির সীমান্ত দিয়ে কারুকার্যটাও সেই! যুগলের তাকিয়ে তো নজরুলের 'মোরা আর জনমে' গানটার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে খাইছে

সৌরভ কবীর

তারেক অণু এর ছবি
অরফিয়াস এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি দেঁতো হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগলো অনু দা। ছবি আর বর্ণনা চমৎকার হয়েছে। চলুক

অমি_বন্যা

তারেক অণু এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- লেখা কোথায়, আফ্রিকা নিয়ে?

অতিথি লেখক এর ছবি

আসবে শীঘ্রই চোখ টিপি

অমি_বন্যা

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আগ্নেয়গিরি, পাহাড়র আর বালিকাদের আশেপাশে গেলেই দেখি আপনার দাঁত সব বের হয়ে পড়ে চিন্তিত

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ফাহিম হাসান এর ছবি
স্যাম এর ছবি

চলুক চলুক

তারেক অণু এর ছবি

কেন না !

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

মনে হল ভিসুভিয়াস ঘুরে এলাম। তবে হেলিকপ্টার নিয়ে উপর থেকে একটা ছবি তুলতে পারলে পুরাটা বোঝা যেতো। ওখানে কি হেলিকপ্টার রাইড নেই?

একটা পরামর্শ। লেখার সাথে সাথে ছবি ঠিক আছে, কিন্ত ছবির নীচে ছোট ক্যাপশন থাকলে অনেক সুবিধা। যেমন--

তারেক অণু এর ছবি

আছে নিশ্চয়ই, কিন্তু মেঘলা আবহাওয়ায় যেয়ে সুবিধের হত না।

ফাহিম হাসান এর ছবি

ভিসুভিয়াসের নাম শুনলেই গা ছমছম করে উঠে। দারুণ একটা ট্রিপ দিলেন দেখি!

তারেক অণু এর ছবি

ছমছম পোস্ট আসিতেছে-

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

একটা ছবি ক্যাননের বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ড হতে পারে। আবার সেই ছবিটাই ক্লোজ আপ টুথপেস্টের বিজ্ঞাপন হতে পারে হাসি

তারেক অণু এর ছবি

কই! কেউ তো যোগাযোগ করছে না !

দ্রোহী এর ছবি

১.
আমারে উৎসর্গ করার নাম দিয়ে তো চামে ফিনিশ তরুণীর সাথে ঘুরে এলেন! মিয়া ট্যাক্স দিসেন?

২.
মনির গোধুলি হইতে সাবধান। সে একজন অতিশয় বাটপার ব্যক্তি। তার সাথে বেশি ঘনিষ্ট হইয়েন না। সুযোগ বুঝে সে আপনাকে তার ইতালিয়ান মাফিয়া শ্বশুরের কাছে বেচে দেবে।

৩.
আমারে সাক্ষী রেখে মহাদেশের লড়াচড়া নিয়া যে কথাগুলা কইলেন তার সবই মিথ্যা কথা। আপনে আমার মতো একজন বুজুর্গ ব্যক্তিকে সাক্ষী মেনে এইসব কথা ক্যামনে বলতে পারলেন?

ভিসুভিয়াসের আসল ঘটনা অন্যরকম। জায়ান্টরা চারিত্রিক দিক থেকে ছিল মনির গোধুলির মত ফাউল এবং বাটপার কিসিমের। খেয়াল করলে দেখবেন দুইদিন পর পর জম্মনবাসী সচলেরা মনিরের উপর ক্ষেপে উঠে। তখন মনির প্রাণরক্ষার্থে তার শ্বশুর ইতালির বিখ্যাত মাফিয়ার আস্তানায় দিয়ে গা ঢাকা দেয় কয়েকদিনের জন্য। তো জায়ান্টদের বাটপারিতে অতিষ্ট হয়ে দেবতারা ঠিক করলো জায়ান্টদের পুটু মারা দেয়া দরকার। তখন দেবি অ্যাথিনা ভালকান জায়ান্ট এনসেলাডাসকে সিসিলিতে আর দেবতা ভালকান এনসেলাডাসের ভাই মাইমাসকে ইতালিতে গাইড়া ফালায়।

এইভাবে সিসিলিতে আগ্নেয়গিরি এটনা আর ইতালিতে ভিসুভিয়াস তৈরি হইছে। এনসেলাডাস আর মাইমাসের পিঠে চুলকানি হইলে তারা মাটিতে ঘষা দিয়া চুলকানির কাম সারে। তখন বলদ পাবলিকে মনে করে ভূমিকম্প হইতেছে।

মাঝে মধ্যে তারা যখন পাদু দেয় তখন আগ্নেয়গিরির মুখ দিয়ে ধুমা বাইর হয়। আপনের লাস্ট ছবিটাতে যে ধুমা দেখতেছেন ওইটা আসলে মাইমাসের পাদু।

আর যখন তেনারা নাম্বার টু করেন তখন অগ্ন্যুৎপাত হয়। তেনারা নাম্বার টু করলে তার পরিণাম কী হয় সেটা তো পম্পেইতে দেখেই আসছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছে মনির গোধুলি নাম্বার টু করলে নাকি ক্লাস্টার বোমায় বিধ্বস্ত হইলে কোন জায়গার অবস্থা যেমন হয় টয়লেটের অবস্থা নাকি সেইরকম হয়।

এই কথাগুলা কিন্তু একটাও বাটপার মনিরের মতো চাপাবাজি না। আমার কথা বিশ্বাস না হইলে ভার্জিলের ইনিয়াড পইড়া দেখেন। চোখ টিপি

তারেক অণু এর ছবি

মাঝে মধ্যে তারা যখন পাদু দেয় তখন আগ্নেয়গিরির মুখ দিয়ে ধুমা বাইর হয়। আপনের লাস্ট ছবিটাতে যে ধুমা দেখতেছেন ওইটা আসলে মাইমাসের পাদু। গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

মনির নামে কেউ নেই! মিয়া উত্তর দ্যান পাঠকের

রংতুলি এর ছবি

তারেক অণু সাগরের তল, পাহাড়ের চূড়া, ভিসুভিয়াসের জ্বালামুখ ছেনে তামাম দুনিয়া (নিচ থেকে উপর, এসপার থেকে ওসপার) তামা তামা করে অবশেষে নিজে প্রমাণ করল যে দুনিয়াটা বাস্তবেই গোল! দেঁতো হাসি

চার নাম্বার ফটোটায় এক সুখি পরিবার, পাঠকের চক্ষুও গোল গোল, আহা!

তারেক অণু এর ছবি

দুনিয়া তো গোল না, কমলালেবুর মত চ্যাপ্টা!

পরিবার, ফাজিলের গাছে, নিজের লেজ কাটলে সবারই লেজ কাটতে ইচ্ছে করে, না?

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

চলুক চলুক
লেখা, ছবি আর ভিসুভিয়াস অনেক লেখা -গুড়- হয়েছে
এর পরে কোথায় যাচ্ছেন অনুদা?

তারেক অণু এর ছবি

শুভেচ্ছা,
লেখাতে কোথায় যাব বলতে পারছি না, আর বাস্তবে বাংলাদেশ।

কড়িকাঠুরে এর ছবি

ভিসুভিয়াস বিয়াপক ছ্যাঁকা খাইছে মুনে অয়... মন খারাপ

তারেক অণু এর ছবি
সত্যপীর এর ছবি

সবই বুজছি

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি
সত্যপীর এর ছবি

কাল রাইত থেকে দেখতেসি চোখটিপ মার্তেসেন, থামেন মিয়া। ব্যথা করে না?

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি
ধুসর গোধূলি এর ছবি

চোখ টিবি মারে? ক্রাইম মাস্টর গোগোজাহানরে খবর দিমু?

তারেক অণু এর ছবি

আপনারে একটা মেসেজ দিছি, দেখেন তো। আচ্ছা অক্টোবর ফেস্টে যাবার না আপনের খুব শখ?

সত্যপীর এর ছবি

কাইল সারারাইত চোখটিপ মার্সে ধুগোদা, এহন গত কয় ঘন্টা খালি এদিকোদিক চায়। এই লুক মানুষ না আমি কয়া দিলাম। ডাকেন আপনের গোগোমাস্টর।

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

না না, চাল্লু আমি এখন ঘুমাচ্ছি।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

ডাকতে হবে না, এরে ধরে ক্রাইম মাস্টর গোগোজাহানের সাথে টক-শো তে বসায়া দেন। চোখই যদি না থাকে, টিবি মারবো কী দিয়া!

তারেক অণু এর ছবি
নিবিড় এর ছবি

পম্পেই এর কথা প্রথম পড়ছিলাম সেরা সন্দেশে। তা এই সেই দাগী আসামী ভিসুভিয়াস তাইলে হাসি

তারেক অণু এর ছবি

ঠিক, পম্পেই নিয়ে আবার পোস্ট দিব সময় পেলেই-

মিতু ভিঞ্চি এর ছবি

জুল ভার্ণ পড়ে পড়ে আমার ও এরকম কোন জায়গায় যাওয়ার শখ হয় মাঝে মাঝে।আপনার পোস্টের মাধ্যমে সেই জায়গায় ঘুরে আসলাম।থ্যাঙ্কু ! গুরু গুরু

তারেক অণু এর ছবি

শখ পূরণ হয়ে যাবে অবশ্যই।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

ভয়াবহ দেখি!! চলুক


_____________________
Give Her Freedom!

তারেক অণু এর ছবি

আপাতত শান্ত, কিন্তু খেপলেই ভয়াবহতম!

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

১৯*১০ + ৬ = ১৯৬; আর ৪ খান পোস্ট দিলেই দুই শতক রান করার গৌরব অর্জন করবেন আমাদের কিংবদন্তি প্রিয় উড়ন্ত ঘুড়ি তারেক অণুদা। এই রান হাকাতে উনি সময় নিয়েছেন (নিবেন) মাত্র ১৬ মাস তথা ৪৮০+- দিন। প্রতি পোস্টে গড় মন্তব্যসংখ্যা ১০০ (আনুমানিক)। স্মরণকালের ইতিহাসে এমন আকাশচুম্বী রেকর্ডধারী সর্বজন-প্রিয় ব্লগার আর নাই মনে হয়। হাততালি


_____________________
Give Her Freedom!

তারেক অণু এর ছবি

লইজ্জা লাগে

৪৮০ দিন সময় নিছে কিন্তু আমার জন্য না, ফ্যাসিবাদী মডুরা নীড়পাতায় লেখা আইতে দেয় নাই, অনেক সময় লেখা পাঠানোর জন্য ৩/৪দিন অপেক্ষা করতে হয়ছে! সব বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

বর্ণনা ও ছবিগুলোও দারুণ হয়েছে। আর যুগল ফটোটাতো এই পোস্টের জন্য আবশ্যক ছিলনা। ওটাকি জনগণের ঈর্ষাভাবকে প্রকট করবার মানসে... চলুক

তারেক অণু এর ছবি

না না, কি কথা! ঐ ফাজিল ধু গো দা আর নজু ভাই বলল একটা ফটুক দেবার জন্য, আর কিছু না!

ভালো আছেন আশা করি।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো নিজের মধ্যে থাকাই ভাল, নয়কি?
ভাল আছি। ভাল থাকুন।

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

আমিও ঘুরি আপনার সাথে সাথে ---পড়ে----স্বপ্নে ।অণু ভাই ,আপনি টের পান না ?

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই!

জুন এর ছবি

আসেন দেশে। ভিসুভিয়াসের মতো ধোঁয়া উঠা ভাপা পিঠা খায়ামুনে। ছবিগুলা আগেই ফেবুতে দেখছি। তাই আর কিছু কইলাম না। লেখা বরাবরের মতোই। তবে অল্পে সারলেন মনে হইল।

যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...

তারেক অণু এর ছবি

ধোঁয়া উঠা ভাপা পিঠা, লেখা -গুড়- হয়েছে দিয়া ! আহা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।