সকাল থেকে ঝুম বৃষ্টি, চতুর্দিকে প্যাক কাদায় হাঁটাই মুস্কিল। ক্যাম্পের সবাই গোল হয়ে ভাত খেতে বসেছে মাত্র, এমন সময় আজিজ মাস্টার দ্রুত ঢুকে দলের কিশোরী মেয়েটিকে বললেন, “ঐ গাছে উইঠা দেখতো, নদীত কিসের জানি আওয়াজ পাইলাম।” ফট করে ভাত ফেলে হাত না মুছেই বাইনোকুলারটা টান দিয়ে পাঁই পাঁই ছুট লাগালো মেয়েটি, পিছল সুপারি গাছ বেয়ে বাঁদরের মত মগডালে উঠে দূরবীন চোখে দিল। কড়া বৃষ্টিতে কিছু ঠাহর করাই মুস্কিল। ভালো করে এক লহমা দেখল সে, পরমুহুর্তেই দলের দিকে ফিরে রিনরিনে গলায় চাপা চিৎকার দিল, “মিলিটারি! মিলিটারি গানবুট!”
মোহাম্মদ জবুথবু হয়ে ল্যাবের সোফায় বসে আছে। ঝিমুচ্ছে। কানাডা সরকার ইরানের দূতাবাসকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এমন দুঃসময়ে বেচারার ইরানী পাসপোর্ট হারিয়েছে, আরো হারিয়েছে কানাডার স্টাডি পারমিট। বাস্তবতার কড়াঘাতে সে মূহ্য।
আমি একটা ফোনের জন্যে অপেক্ষা করছি। এই ঘনঘোর দুঃসময়ে মোহাম্মদ নিশ্চয়ই আগের মতো বিনা নোটিশে দার্শনিকতা কপচানো শুরু করবে না। এই ভরসায় সোফার অন্য প্রান্তে গিয়ে বসলাম। মোহাম্মদের ক্লান্ত বন্ধ চোখটা মুহূর্তে খুলে গেলো। ধীরে ধীরে ঘাড়টা ঘুরালো আমার দিকে। আমি মুখে হাসি নিয়ে ভয়ে ভয়ে তাকালাম।
[justify]
ঠিক দুক্কুর বেলা ভূতে মারে ঢেলা।
আচ্ছা, দুপুরের রঙটা কেমন?
ফিকে হলুদ.. মনে হয় আরাফের। যেনো ইশকুলের পেছনদিকটার গেটে দাঁড়ানো গোলা আইসক্রিমওলার কাঠের হাতায় জমানো গুঁড়ি গুঁড়ি জলজ হলুদ।
(একটা উকুন পেটের ডাক্তারের কাছে গেল কোঁকাতে কোঁকাতে। )
ডাক্তার: নির্ঘাৎ ইফতারে ভাজাপোড়া খেয়েছেন। দাঁড়ান ঔষুধ লিখে দিচ্ছি। সকাল থেকে কয়বার পাতলা পায়খানা হয়েছে?
উকুন: গতকাল সন্ধ্যা থেকে আর পাতলা হচ্ছে না। নরমাল।
ডাক্তার: তাহলে তো ভাল হয়ে গেছেন। আমার কাছে আসলেন কেন? যান একটু আরাম করলে ঠিক হয়ে যাবে।
উকুন: না না। এমন ঔষুধ দেন যেন এটা আরো কিছুদিন থাকে।
ডাক্তার: মানে কি? ফাজলামি করেন?
- কি হল দু টাকা ফেরত দিলেন না?
- নতুন নাকি এই লাইনে? ভাড়া জানেনে না? পেপার-টেপার পড়েন? তেলের দাম কত জানেন? দু-টাকা ফেরত? অ্যা! মামাবাড়ীর আবদার পাইচেন,তাই না?
- এই ভদ্র ভাবে কথা বল। কালকেই তো গেলাম আট টাকায়, ভোলানাথে। একদিনেই দু-টাকা বাড়ীয়ে দিলি?
- ভদ্রতা শিখাবেন না, বুঝলেন? কোন বাসে কত ভাড়া নিতেছে, এইখানটায় ওগুলা আলাপ মারবেন না, বুঝচেন? না পোষাইলে নামেন গিয়া যান।
কুলুপ বাজারের কলপাড় থেইকা রহিম মিয়ার কান ধইরা নিয়া যাইতাছে ছদরুল । পাবলিকও পাছেপাছে কেউ কেউ লগেলগে যাইতাছে । কেওই এহনো জানে না ঘটনা কী । বেবাকে জিগায়তাছে, তয় ছদরুলের মুখ দিয়া খালি একটা কথাই বাইরইতাছে- “আইজকা পাইছি, মাতারির লগে পিরিতি? চুনু- পাউডার? পিরিতি ছুডাইতাছি?”