অনেক ক্ষণ ধরে আমি এই বিশাল রুমটাতে একলা আছি। মাঝখানে একজন বামুন টাইপ লোক এসে সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা দেখে গেছে । তীব্র ফিনাইলের গন্ধ পাচ্ছি । কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো কাজ শুরু হয়ে যাবে ।
মাথার উপর একটা বিশাল ফ্যান ঘড় ঘড় শব্দ করতে করতে ঘুরে যাচ্ছে।যতটা না বাতাস পাওয়া যাচ্ছে তার চেয়ে শব্দই বেশী হচ্ছে । রুমের দেয়ালে চুনকাম করা। সেখানে এক কোণায় দেখতে পেলাম লাল কালিতে বড় বড় করে লেখা
ব্যস্ত সমস্ত নগরীতে সকাল হয়েছে বেশ খানিকটা আগেই, শহর ঘুমায়না, শহর জেগে থাকে তার বাড়ন্ত সুসময়ের সন্ধিক্ষণে এমনকি তার ধংসাস্তুপের মর্মর ধবনি শোনার আগ পর্যন্ত সে জেগে থাকবে। সুতরাং শহরের ঘুম ভাঙ্গার প্রশ্নই ওঠে না, বরং এই বনসাই আর বারান্দার মানিপ্ল্যান্ট পরিবেষ্টিত শহরে পাখি বলতে যে কেবল কাক ই অবশিষ্ট আছে তা আশে পাশে তাকালে স্পস্টই বোঝা যায়। শহরের সবচে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তা প্রান বিবর্জিত আবার
আজকাল কৌতুক করতেও ভয় ভয় লাগে কেমন যেন! সবার যে অনুভুতি প্রবণ মন,কে কোন্ দিক দিয়ে আঘাত পেয়ে বসে বোঝা মুশকিল। তারপরও ভাবলাম বলে ফেলি একটা নিরীহ গোছের কৌতুক,কিই আর হবে! আসলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবীতে শুরু হওয়া আন্দোলনের বর্তমান অবস্থা দেখে কয়েকদিন ধরেই এই গল্পটা মাথায় ঘুরছিল-
[justify]‘চাঁদের কলঙ্ক নাই, সব দোষ মানুষের মনে, বুঝলা নীলাম্বর!’বলে অস্থি-পাঁজর কাঁপিয়ে কাশতে থাকেন ধরমপুরের মৌলবি বাড়ীর ছোট মিয়া রহমত মাতুব্বর। নীলাম্বর অধিকারী বিরক্ত মুখে বলেন, ‘তোমারে কতবার বললাম তুলসীপাতা, মধু আর আদা মিশায়ে খাও, নাকি তুলসী পাতায় সমস্যা!’ রহমত মাতুব্বর ছোট-খাট বিষয় নিয়ে কোনদিন দুইবার ভাবেন-নি কিন্তু আজকে নীলাম্বর অধিকারী’র শেষ কথাটিতে তিনি সরাসরি তাকালেন তাঁর ছেলেবেলার
মতি সাহেব বড়ই ফাঁপড়ে আছেন! দুই পক্ষের চাপাচাপিতে একেবারে চিড়েচেপ্টা অবস্থা। তার বিশাল বক্ষও শুকিয়ে চিমসে মেরে গেছে। আগে তিনি বক্ষ যেন না বুঝা যায় সেজন্য শার্টের নিচে টাইট স্যান্ডু পড়তেন। অথচ এখন টি-শার্ট পড়েই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ তাকাচ্ছেও না। এটা অবশ্য একটা ভাল ব্যাপার। কিন্ত ঝামেলা লেগেছে অন্যখানে! গতকাল রাতে এক সুললিত কন্ঠের নারী ফোন করে বলল-“মতি ভাই,ভাল আছেন?”
(এক ধরনের ছোটো গল্প আছে যেগুলো বুক পকেটে দু টাকার নোটের সাথে ভাঁজ করে রেখে দেয়া যায় সাবলীল, হুট করে সকাল বা বিকেলের এক কাপ চা এর সাথেই পড়ে ফ্যালা যায় অল্প সময়েই। এই গল্পগুলোকে আমি বলি 'পকেট গল্প' এটা সেরকম ই এক পকেট গল্প )
[justify]
তেতলার চিলেকোঠা বরাবর জানালা, মুখোমুখি ছাদ।
ছাদের এক কোনে ভাঙা বালতিতে গজানো আমের চারাগাছ, জোরালো সবুজ পাতা।
গোড়ায় দু-চারটে ঘাস, রোদে পোড়া, লালচে। একটা নোংরা টিস্যুপেপার, বাতাসে উড়ে এসেছে হয়তো।
নিরিবিলি চিলেকোঠাটা আসলে রিডিংরুম।
ছেলেটার সামনে ফাইনাল, তাই রাতজাগা।
আবার সাতসকালে ওঠা।
গীতবিতান, পাড়ার গানের ইশকুল।
বাবার শখে মেয়ের শেখা, ছোটবেলা থেকেই।
আমার ক্লাশমেট শওকত ''স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই''- এই নামে একটা উপন্যাস লিখেছিল । এ সাহিত্যকর্মটি নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন ছিল । সে লেখক হিসাবে নাম কামাবে । শত শত কপি বিক্রী হবে । আর সবচেয়ে বড় কথা কালো চশমার সেই মেয়েটি তার প্রতি আকৃষ্ট হবে । যাকে কোনভাবেই পথভ্রষ্ট করানো যাচ্ছিলনা ।
ইদানীং মুমিন সাহেব খুব পেরেশানের মধ্যে আছেন। কারণ উনি বেশ কিছুদিন হয় উনার ধর্মানুভূতি খুঁজে পাচ্ছেন না। ধর্মানুভূতি খুঁজতে খুঁজতে হয়রান হয়ে পড়ার পরে বাধ্য হয়ে এলাকার বড় হুজুরের কাছে গেলেন। হুজুর সব শুনে বললেন আপনাকে প্রথমে তওবা করতে হবে, তারপর আমি একটা তাবিজ দিব সেটা ভিজিয়ে প্রতিদিন তিন গ্লাস পানি খাবেন। এভাবে সাতদিন খাওয়ার পর তিনটা ছাগল নিয়ে মাজারে এসে শিন্নি দিতে হবে। ছাগলের রঙ কালো হতে
আলিনগর আর কালীনগর পাশাপাশি। আলিনগরে দশজনে আটজনই হোসেন। সবাই হোসেন এইটা বলা অবশ্য ঠিক হল না, কেউ হোসেন কেউ হুসাইন কেউ হুসেন। নানান তরিকার বানান। যে যার পদবী মেনে চলে, পদবী খুব ভারি জিনিস আলিনগরে। হোসেন ছাড়া সেখানে আছে কিছু আহমেদ, আর গুটিকয় খান কিংবা রহমান। ও না থাকার মতই। আলিনগরে হোসেনই জাতীয় পদবী।