অনেকদিন আগের কথা, কোন এক দৈনিক পত্রিকার সাপ্তাহিক ক্রোড়পত্রের পাঠক কলামে কোন এক মহোদয় ব্যক্তি "চোরে-চোরে মাসতুত ভাই" এর ইংরেজী অনুবাদ করেন, "থিফ থিফ আর কাজিন", কাথাটা মনে রাখার মতই ছিল। আজ অনেকদিন পর কারও কারও জীবনের সাথে এর কিছু মিল খুঁজে পেলাম। লিখতে বসে অনেক ঘটনাই হয়তো চলে আসবে যার কোন মানে হয় না, কিংবা যার অনেক মানে হয়। শুরুতেই বলে নেয়া ভাল, আমার লেখায় অনেকগুলো অসঙ্গতির আ...
মফস্বলের যে কলেজে সে পড়ায় সেখানকার তাবত ছাত্রীই বোধকরি তার প্রেমে পড়ে একবার, হয়তো পাশ করে যাবার বহুদিন পর, অলস দুপুরে তাদের কারো কারো হঠাত মনেও পরে --কাঁচা পাকা চুল, কালো ভারী ফ্রেম, কিংবা পাঞ্জাবীতে ক্যাপস্টানের দাগ।
তবু হৈ্মন্তী পড়াতে গ্যালে মনে তার, কেন যে শুধু তোমারই মুখ ভেসে ওঠে বারবার, কে জানে!
নাহ, বড় কোন কবি সে হয় নাই, সে জানে, শুধু কষ্ট এঁকে কেউ বড় কবি হয়না, তবু কেন সে ল্যাখে ...
লোকটির নাম সামছু। ছামছু বা সামসু হল না কেন, ছোটবেলা থেকেই এ প্রশ্নের তেমন কোন সদুত্তর দিতে না পারলেও সবসময়ই শুনতে হয়েছে এই প্রশ্নটা। সরকারি চাকরিজীবি বাবার সূত্রে পাওয়া তার চাকরিটাও সরকারি। সব বাবা-মায়ের মতই তার বাবা-মায়ের ইচ্ছে পূর্ণ হয়েছে, পদমর্যাদায় সামছু তার বাবার চাইতে উপরে। বাবা সালেক মোল্লা রেলওয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তা, তার সন্তান হিসেবে সামছু মিঞার তৃতীয় শ্রেণীর...
আশির দশকের একদম শেষ থেকে নব্বইয়ের দশকের মাঝ পর্যন্ত বুয়েটে পড়তাম। হলে না থাকলেও বুয়েট জীবনে হলের সাথে যোগাযোগ থাকা অতি বান্থনীয়। পড়াশুনা ছাড়াও আড্ডা, মদ্যপান এবং "ইয়ে" চলচ্চিলের কারনে নিয়মিত হ্লবাসী না হলেও মাঝে মাঝে হলে থাকতে হয়। আমিও থেকেছি মাঝেমাঝে। একটা জিনিসের চল ছিল তখন, সেটা হোল রাতে বাতি নিভিয়ে বন্ধুপ্রতিম দুই হলের গালি বিনিময়, যেটাকে আন্তঃ হল গালি প্রতিযোগিতা বলা হত। ...
সবিতা, বাড়িতে একলা দরজাটা আছে।
অঋণী গৃহস্ত গেছে জলের ধারে, শাপলাফুল ভেজে আজ ভোজন হবে।
সবিতা, জানালাগুলো মায়ামায়া খোলা।
জানালারা কথা বলতে জানে, জানালারা কথা শুনে।
একটা কমলাগাছ দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায়। কলম করা, বনসাঁই। কমলাগাছ বাতাস হাতড়ায়।
দরজা উঁকি দিতে গিয়ে খুলে যায়।
চুরচুর।
সবিতা, অইটা কী জানো? টিকিটিকি। গৃহস্ত বাড়ির নিরব দর্শক।
টিক-টিক-টিক।
বাহ্! এমন শো-পিস সবাই আজকাল খর...
কৃপাহত্যার বলিরেখা ফুটেছে বেওয়ারিশ ত্বকে,
লোমকূপে দ্বিতীয় প্রণয়ের সোঁদা গন্ধ;
মৃত্যু চাই।
বকুলফুলের বনে। বাষ্পীয় সময় উবে
যায়, জলদাগ তুলে রাখে দেয়াল। রঞ্জনের
সকল উপাদান তোমার হাতে তুলে দিলাম চকিত। কেবল
আমার
অঘোর
মৃত্যু
চাই।
০
মেহগনি বাকলে রোদ লেগে চিকচিক করছে। রাখাল মাঠের ওম খুঁড়ে খুঁড়ে তুলে নিয়ে বাড়ি ফিরে- তাহার নাম খড়। তাহার থলের ভিতরে বাতাসের বাঁধুনি।
ওই, তোমার গাঁয়...
[justify]মাধবী যখন প্রথম আমাদের বাসায় আসল, আমরা দুবোন ওকে দেখে বেশ একটু নাক কুঁচকেছিলাম। লাল লাল চুল, নোংরা জামা, নাক-কান ফুটা করে সুতার দুল পরা, আর গায়ে একটা বিচিত্র গন্ধ। কিছুদিনের মাঝেই মা ওকে মানুষ করে ফেলল। গা থেকে সরষে ফুল, লক্ষীর পাঁচালী, নবান্ন টপাটপ ঝেড়ে “ কিউ কি সাস ভি কাভি বহু থি” তে ট্রান্সফার হয়ে গেল। পরভাষা ওকে কাঁদায়, হাসায়। বাংলা লেখা শেখাতে গেলেই নতুন কিছু বর্ণের সৃষ্টি হ...
[justify]
আজিমপুর সরকারি আবাসিক এলাকার আধা খ্যাঁচরা মাঠে রাতে জ্যোৎস্না নামে। গুটিসুটি মেরে হামাগুড়ি দেয়। উবু চোখে তাকায় তিন নম্বর বি বাড়ির চার তলার বারান্দায় হুইল চেয়ারে বসে থাকা দাদীর চোখ বরাবর। দাদী অবলীলায় জ্যোৎস্না হজম করে ওচা ঢেঁকুর তোলে। সুহার্তো বারান্দার আরেক কোনায় সিগারেটে টান দিতে দিতে প্রায় অন্ধকার প্রাগৈতিহাসিক আকাশের দিকে তাকিয়ে ধোঁয়ার গোল্লা ওড়ায়। একবার দাদীর ম...
[justify]“গঙ্গারামকে পাত্র পেলে? জানতে চাও সে কেমন ছেলে?”-স্কুলের অ্যানুয়াল ফাংশনে লাল সাদা চেকের সেই ফ্রকটা পরে ঝুটি নেড়ে নেড়ে আবৃত্তি। ফ্রকটার কথা মনে আছে তোলা ছবি দেখে। এরপর বাসায় কেউ আসলেই বাবা বলতো- ঐ ছড়াটা বলে দাওতো, মা- “মন্দ নয় সে পাত্র ভাল, রঙ যদিও বেজায় কাল”- আদিবা বলতে চায় কী না চায় তা না শুনেই দাঁড় করিয়ে দিত টেবিলের ওপর। এখন যেমন যেতে চায় কী না চায় তা না শুনেই শুক্রবার বিকাল চার...
বাসে বাসে ভিক্ষা করে ‘মজলুম’। বিহারী। দুই’পা নেই। বয়স পঞ্চান্ন হবে কিন্তু মুখের গড়ন, পেশীবহুল দু’হাত আর অপেক্ষাকৃত কাঁচাপাকা চুলে বয়স অনেক কম মনে হয়। ভিক্ষার পয়সায় খেয়ে দেয়ে সে ভালোই আছে। সৈয়দপুর থেকে নিয়ে এসে জুম্মইন্না তাকে ঢাকায় ভিক্ষার ব্যবসায় নামিয়ে দিয়েছিলো। সারাদিনের আয় থেকে ৩০ টাকা জুম্মইন্নারে দিতে হয়। সাথে থাকে ময়না নামের এগারো বছরের একটি বাঙালি মেয়ে। বাস থামলে, জ...