গরমের এক দীর্ঘ বিকেলে জাবেদ দের বাড়ীর পাশের খোলা যায়গায় এক দল ছেলে পুলে ক্রিকেট খেলছে। ইট দিয়ে বানানো স্ট্যাম্প আর কাঠের বানানো ব্যাট , টেনিস বলে টেপ মেরে তাদের খেলা ধূলা। প্রায় প্রতিদিনই তাদের এই আসর বসে। মহা উৎসাহে , ঘামে ভিজে চুপ চুপ হয়ে তারা রান নেয়, ফিল্ডিং করে, বোলিং করে, মাঝে মাঝে নিজেদের মধ্যে বিস্তর ঝগড়া চলে আবার। আর রাস্তা দিয়ে আসা -যাওয়ার সময় কিছু উৎসুক জনগণ খানিক দাঁড়িয়...
ছোটটাকে কোলে গুঁজে, বড় মেয়েটাকে পথের ওপর দিয়ে অনেকটা হেঁচড়াচ্ছিল সেলিনা। এ পথ তার চেনা নয়। তার পথের রঙ নরম সবুজ। এ পথ শক্ত কালো রঙ এর।
এখানে মানুষের মুখ কুয়াশায় তৈরি। ঠান্ডা আর অস্বচ্ছ। কিন্তু সেলিনার খুব বিপদ! তাই বদ্ধ ঘরে আটকে পড়া পাখির মত দেয়ালে বার বার বাড়ি খাওয়া, অদম্য প্রাণশক্তির অসহায় ক্ষয়।
“আমার স্বামীরে দেখসেন? উনার নাম আব্দুর রাজ্জাক।”
শহরে কেউ কাউকে চেনে না।
“এই ...
চারটার সময় হঠাৎ বেল বাজার শব্দে বিছানা থেকে উঠে আসলেন রোকেয়া। এ সময়ে তিনি ঘুমান না কিন্তু বিছানায় একটু শুয়ে থাকেন। দুই বার বেল বাজার আওয়াজে তিনি নিজেই উঠে এলেন। এসময়ে বাড়িতে কেউ আসে না। তিনি বের হতে হতে দেখেন ময়না দরজা খুলছে।
দরজার ঐ প্রান্তে সুন্দরী একটি মহিলা দাঁড়িয়ে। মহিলার পড়নে হাল্কা গোলাপি রঙের সালোয়ার কামিজ। মাথায় সুন্দর করে ওড়না দিয়ে ঢাকা। মহিলার গায়ের রঙ ফর্সা। রো...
সন্ধ্যার আকাশ জুড়ে পাষাণ তারাদের মেলা দেখতে দেখতে একই আকাশের নীচে কোথায়, কোন দুরতম জানলায় অস্পষ্ট মুখের আদল বদলাতে বদলাতে কার চেহারায় স্থির, তার হদিস এই জন্মে আর নাই জানা হলেও, এইটুকু হাতড়ে হাতড়ে পাওয়াই যায়, সাইকেলের বয়স ছিলো ষোলো, দুই বেণীর তখন সবে মাত্র তেরো...মাথা পাগল হাওয়ায় হাওয়ায় সেই মাফলার উড়ে যাবার কিছুদিন আগে শেষবারের মতো গ্রামে এসেছিলো দুরদেশী যাত্রাদল...দুই বেণীর রজঃপা...
[justify]
খুব হালকা লাগছে; একেবারে পালকের মতন। ঝিরঝিরে ঠান্ডা বাতাসে ক্লান্তি, অবসাদ গুলো দূর হয়ে যেতে চায়। মনে করতে পারছি না এরকম আনন্দময় অনুভূতি শেষ কবে হয়েছিল। আচ্ছা আজ তো কোন নেশা জাগানিয়া তরল পেটে পড়েনি। না কী পড়েছে? তারপর শুরু হয়েছে অস্থির মনটাকে ফুরফুরে করে তোলার জারণ-বিজারণ। ধুর ছাই, কিছুই মনে করতে পারছি না। তার চেয়ে ঢের ভালো আকাশ দেখা। গাঢ় কালচে রঙে ছোপ ছোপ ধূসরতা। মিটমিটে তা...
যাক,বাড়িটা হচ্ছে শেষপর্যন্ত... রায়হানসাহেব খুব তৃপ্তমনে ভাবেন, একটা সন্তুষ্টির আভা তাঁর চোখেমুখে ছড়িয়ে পড়ে!সারাজীবনের কষ্টের ধন এই বাড়ি,নিজে সরকারী চাকরি করেছেন মাঝারি গোছের.. কখনো বাম হাতে রোজগারের কথা ভাবেননি, আয়েশা খাতুনও সেটা নিয়ে অনুযোগ করেননি...জীবনে তাঁর ইচ্ছে ছিলো একটাই,একদিন না একদিন নিজেদের মাথা গোঁজার একটুখানি ঠাঁই হবে.. তা প্র/ফান্ডের টাকা কড়িগুলোই তো...
মনে আছে, প্রথম যেদিন তোমরা আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে উঠেছিলে, আমি সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছিলাম। না, তোমাকে ওঠার জায়গা দিতে নয়, তোমাকে দেখে। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম, তাতে সামনের কিছু চুলের গোছা লেপ্টে ছিল। গলায় ওড়না ঝুলিয়ে দুই হাতে একটা বড় বাক্স নিয়ে তুমি উঠছিলে। ঘর্মাক্ত ও পরিশ্রমে মুখ লাল হয়ে যাওয়া একটা মেয়েকে এত সুন্দর লাগতে পারে তা তখনো আমার জানা ছিল না।
এরপর প্রতিদিনই ...
[justify]
বিশাল এক প্রাচীন মসজিদ।মসজিদ বাড়ির সামনে বিশাল উঠান, শ্যাওলা ধরা ইঁটের দেয়াল দিয়ে চারদিক ঘেরা। গভীর রাত, কিন্তু অমানিশা নয়।
মসজিদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে সরু গলির দুরত্বে ভাগ করা প্রাচীন এক মৃতনগরী।
গলির দু ধারে বাড়ি গুলো নকশা কাটা, কাঠের বারান্দায় নিপুণ হাতের জাফরির কাজ; লাল ইঁটের, স্তব্ধ, নিশ্চুপ।
চির রাত্রির জগতে বাস এই নগরীর।
তবু আঁধার নেই, আর বাড়িগুলো লাল, ধূসর ইঁটের।
ত...
হয়তো বেশি না। মাত্র ৬ মাস । এই ৬ মাসে বদ্লে গেছে অনেক কিছু। শিক্ষা জীবন শেষে মুখোমুখি বাস্তব জীবনের। সবাই কমবেশি ছড়িয়ে পড়ছে, সেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি করবে। আজ হয়ত শেষ দেখা কিংবা আবার দেখা হবে। কে জানে..... সময় বেশি নেই, জরুরী কিছু কাজ বাকি, কাল বাদে পরশু এই শহরের ভোর হবার আগেই চলে যাবে সে। অথচ তার কোন পাত্তা নেই, এক ঘণ্টা হয়ে গেল। এইভাবে আর কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যায়। বলল তিনট...
আশফাক সাহেব প্রতিদিন ভোরে নিয়ম করে হাঁটেন। একা না, সাথে দু’চারজন সাঙ্গপাঙ্গ বা দেহরক্ষী গোছের লোকজন থাকে। জাঁদরেল ব্যবসায়ী, সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানো, বড়ো বাপের ছেলে আশফাক সাহেব রাজনীতিতেও খুব ঝানু খেলোয়াড়। পরপর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সব ঠিকমতো চললে অদূর ভবিষ্যতে স্থানীয় রাজনীতির গণ্ডি পেরিয়ে তাকে জাতীয় মঞ্চেও খেলতে দেখা যাবার কথা। এমনিতে যদিও মাটির মানুষ।...