আগের পর্ব এইখানে -
http://www.sachalayatan.com/guest_writer/46479
ফিরে দেখা - পর্ব দুই – মেলায় মেলাই খাবার
~উপক্রমণিকা~
- “হ্যালো, রিমি পালের সাথে কথা বলা যাবে?”
- “হ্যাঁ, বলছি, আপনি কে বলছেন?”
সীমান্তরেখা-১
সীমান্তরেখা-২
তৃতীয় অধ্যয়
সবেদ আলির মনে বেশ ফুর্তি ফুর্তি ভাব। সেদিনের মেঘলায় পাঁচু মাঝি দুপুরে ঘুমের আলস্যে পরাজিত হয়ে বিছানায় এলিয়ে পড়লেও পরদিন রেহায় দেয়নি ব্লাক মার্কেটরা। শুধু ব্ল্যাক মার্কেটই বা কেন, মেঘের অবগুণ্ঠন সরানো সূর্যের সোনাঝরা রোদে ঝিলিক দিয়ে উঠেছিল সবেদ আলি-হাবুডাগাদের গোত্রীয় মাথামুটের অন্নাভাবে মলিন মুখগুলোও। সেই ঝিলিকের চিহ্ন এখনো লেগে আছে সবেদ আলির চেহারায়। কিন্তু বউটার মন খারাপ নাকি শরীর খারাপ সেটা ঠাহর করে ওঠা তার জন্য পর্বত-লঙ্ঘনের মতো দুরাতিক্রম্য চ্যালেঞ্জ। একবার ভাবে জিজ্ঞেস করবে, পরক্ষণে একপশলা অভিমান এসে ভর করে মনে। খুব যে নতুন তাও নয়, নয় নয় করে ছয় মাস পার হলো, এই বয়সী দম্পতিরা কত আমোদ-আহ্লাদ করে, কিন্তু হুরমতি সেসবের ধার ধারে না। অথচ মুখরা রমনী সে।
এই দেশে আমি একটা কোঠরে থাকি। বাইরের সব কিছু ভাল মতো দেখতে বা শুনতে পাই না। উচ্চ প্রজাতির প্রাণী হিসাবে মানুষের চিন্তার মতো জটিল তার তথ্য আদান প্রদানের কৌশল। প্রধান মাধ্যম ভাষা। রান্না ঘরে ভিকি সিং বা তাওহীদ মালকনীর সাথে কী বলে তার এক বিন্দু বির্সগও বুঝতে পারি না। প্রতিদিন দুপুরের বিরতিতে ভিকি সিং খবরের কাগজ পড়ে জার্মান ভাষায়। দেশে থাকতে মালেক সওদাগরের দোকানে গিয়ে বসে থাকতাম খবরের কাগজের আশায়। ভাগা
রোদটা একেবারে ঝলসে দিচ্ছে। এতবড় আকাশ। কিন্তু একফোঁটা ছেঁড়া খোড়া মেঘও নেই। কোথাও।
মাঝে মাঝে রাগ হয়। অনেক সময় রাগটা যে কার উপর সেটা ঠিকমত বুঝি না। কাল রাতে কোন কারণ ছাড়াই চুনু ভাই মাতাল হয়ে এসে কাকে যেন বকে গেলেন। বেশ ভাল রকমের মুসলমান চুনু এবং লিচু ভাই। আমাদের মালকীনের আরো একটা রেস্টুরেন্ট আছে। সেখানে লিচু ভাই কুক। চুনু ভাই পিসসা বেকার। আমি ভিকি সিং-এর পাল্লায় পরে প্রতি রাতে গোটা তিনেক বিয়ার খাই। কিন্তু তাওহীদ ভাই কোন এলকোহল খায় না। শুনেছি লিচু ভাই খাবারের লবণ দেখেন না। ওয়াইন ঝ
পেদরুর সঙ্গে কদিন আছি। পেদরুর বাড়ি লিসবোঁয়া। সেখান একদিন জলে ভেসে এসেছিল। কেনো এসেছিল সেটা এক রহস্য। নানা বৃত্তান্ত তৈরি আছে সে রহস্যে।
দেড়েদের বটগাছে আবার ফকির বাবার আছর হয়েছে- সঙ্গে আছে কয়েকশ' জ্বীন। জ্বীনে কারো ঘাড় মটকায়নি। তবে মটকাতে কতক্ষণ! গাঁয়ের লোক তাই ভয়ে-আতঙ্কে তটস্থ। তাছাড়া ভয় পাওয়াটা আবহমান গ্রাম-বাংলার জীবনযাত্রারই অবিচ্ছেদ্য অংশ; মরণনেশা।
আমাদের ভাষায় শীত নিয়ে উল্লেখ যোগ্য কোন কবিতা, গান, সাহিত্য কিছু নেই। কিন্তু সময়টা ভীষণ কাব্যিক। কাপড়ের অভাবে ভাল ভাবে কখনো শীত উপভোগ করতে পারি নি। তবুও পিঠা-পুলি আর সবজীর বৈচিত্র্য আসলে শীতেই। এখানে শীত নিয়ে কাব্য করা নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার মানুষের পক্ষে কঠিন। তুষার নেই যে দেখে বোঝা যাবে শীত। বাইরে হলে ঠাণ্ডায় কান ব্যথা করে। চোখ নাক দিয়ে পানি পরে আপনা থেকেই। হাতমোজার ভেতরে হাত জমে যায় শীতে। আমাদের ম
শীতের শুরু হয়ে গেল আমার জন্য সেপ্টেম্বরেই। পুরানো সব জ্যাকেট-পুলওভার পড়ে কাজে যাই আসি। কিনি কিনি করে করে আর একটা জ্যাকেট কেনা হয় না। আসলে জার্মান জানি না বলে; যেখানে জার্মান বলতে হবে সেই পথে খুব একটা যাই না। এমন কী চুল কাটাতে পর্যন্ত নাপিতের কাছে যাই না। এখানে দেখি নাপিতের কোন জাত-পাত নেই। ছেলে নাপিতের চেয়ে মেয়ে নাপিত বেশী। চুল বাড়ছে বাড়ুক। মুখে বলছি; পয়সা বাঁচানোর জন্য নাপিতের কাছে যাই না। আসলে স