গভীর রাতে গ্রামের বাড়ির কাঠের জানলায় ছন্দ করে দুবার টোকা দেবার খটখট শব্দ। রিনা ঘুমনোর জন্য কেবলই শুয়েছিল। কিন্তু, এই শব্দ তার কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। সে বিচলিত হয়ে তারাতারি উঠে পড়ল। জানালা খুলল। নিঝুম অন্ধকারে চারিদিকে ঝি ঝি পোকার শব্দ।
রিনা, কেমন আছো ?
ভাল। এতরাতে তুমি ? ভিতরে আসো।
না। আসতে পারব না। তোমার কথা মনে পড়ল। তাই তোমাকে দেখতে আসলাম। বাবু কি করে ?
আসাম রাজ্যের সর্বপশ্চিমের মহুকুমা সদর এই ধুবড়ি। ধুবড়ি এলাকার দক্ষিণ পাশ নদীবিধৌত সমতল এলাকা, উত্তর ও পূর্ব এলাকা পাহাড়ি অসমতল। দেশ বিভাগের পর জহিরদের বাড়ি বগড়িবাড়ি এলাকাটি পড়ে গোয়ালপাড়া জেলার ধুবড়ি মহুকুমা এবং বিলাসীপাড়া থানার অধীনে। পরে অবশ্য এই ধুবড়িকে জেলা ও বগড়িবাড়ির নিকটবর্তী 'মহামায়া'কে থানা ঘোষণা করা হয় এবং বগড়িবাড়িকে এর অধীন করে নেয়া হয়। বাঙালি মুসলমানদের জনপ্রিয় নেতা মওলানা ভাসানী ধুবড়ির
-এই জহির, এই জহির ওঠ্, এই সন্ধ্যাবেলায় এমন ডাইকা ঘুমাইতাছিস্ ক্যান?
তার বয়সী সব ক্লাসমেটরাই ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে গেছে। অমল, দীপেন, কৃষ্ণা, মঙ সবাই যাচ্ছে ক্লাস করতে। একমাত্র সেই পারে নাই। কেন পারে নাই এর উত্তর নিয়ে সে ভাবছে আজ সারাদিন। যতই ভাবছে ততই তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে তার চিন্তার রেখা। সে ভাবনা বিস্তৃত হচ্ছে শৈশব, কৈশোর ছাপিয়ে সুদূর জন্মসূত্রে। একই প্রাইমারি স্কুল, হাই স্কুল বা কলেজে যাদের সাথে লেখাপড়া করেছে সে তারা আজ ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট, শুধু সে-ই না। অ
সীমান্তরখা-১, সীমান্তরখা-২, সীমান্তরখা-৩
ব্যাপারটা বুঝতে পারলেন না মোজাম দেড়ে। বিরক্ত হলেন বিডিআরদের ওপর। তবু দরজা খুলতে হলো।
‘কী ব্যাপার, এতো রাতি দরোজা খুইলে নিলে কেনো গা?’ বিরক্তি উগরে দিলেন খাকি পোশাকের বিডিআর জওয়ানদের ওপর।
‘চাচা,’ মুখ খুলল এক জওয়ান। ‘সারগর্তটা কি আপনার?’
‘হ্যাঁ, আমার বৈকি।’ মোজাম দেড়ের দ্বিধাহীন জবাব। ‘তা...?’
‘মানে, আপনার সারগর্তে খুঁড়ে আমরা ছ’বস্তা চিনি পেয়েছি। ওগুলো বোধহয় আপনার।’
রাগে লাল হয়ে উঠল মোজাম দেড়ের কৃষ্ণবরণ মুখমণ্ডল। কোনোমতে নিজেকে সামলে বললেন, ‘আমার বাড়ির চাকর-বাকরাও বিলাক করে না, এ কথা মুখ থেইকে ছাড়ার আগে একবার আমার সম্পক্যে খোঁজ-খবর করা উচিৎ ছিল তুমাদের।’
প্রিয় বন্ধু রতিকান্ত, যে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পথ পাড়ি দিয়ে দেশটি স্বাধীন হয়েছে, পৃথিবীর ইতিহাসে এর নজির আর নেই। এটি আমার নয়, আমার শিক্ষকের মতিন মওলার কথা। ষাটের উপরে বয়েস তার। বুদ্ধিদীপ্ত, শানিত চেহারাটি কঠিন জীবনযাত্রা ও নির্দয় সময়ের কশাঘাতে ম্রিয়মাণ হলেও চোখদুটো উজ্জ্বল। মতিন মওলা এখানকার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। হঠাৎই কোনো কারণ না দেখিয়ে ছাটাই করা হয়ে তাকে। এখন আশে পাশের ছ
প্রিয় বন্ধু রতিকান্ত, খৎনার কাজটি কী করে হল, তার বিশদ বর্ণনা দিতে চাই না আর। এটুকুই বলতে পরি যে, আমার তেইশ বছর বয়েসে আমার জন্যে এর চাইতে অসম্মানজনক ঘটনা আজ অবধি ঘটেনি। এর মানসিক ও শারীরিক কষ্টের জের কাটাতে সপ্তাহ দুয়েক ঘরেই শুয়ে বসে কাটাতে হয়। দবির খুব দেখাশোনা করে আমার, গোলাপজান এসে রান্না করে দিয়ে যায়। এই বয়েসে খৎনার কথা শুনে মৌলবি সাহেব বেশ অবাক হয়েছিলেন। তবে দবির যে কারণ দর্শায়, সেটি শুনে আর ক
প্রিয় বন্ধু রতিকান্ত, আজ দবির একটি বিশাল বাক্স কাঁধে হাঁপাতে হাঁপাতে ঘরে আসে। আমাকে দেখে একগাল হেসে সেটি টেনেটুনে নিয়ে ঢুকে বসার ঘরে। অর্থপূর্ণ দৃষ্টিতে একবার তাকিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। বসার ঘর থেকে নানা ধরনের ঠুকঠাক শব্দ ভেসে আসে। দবিরের এই ধরনের কাণ্ডকারখানা এতদিনে চেনা হয়ে গেছে। তাই কিছু না বলে নিজের ঘরে চলে যাই। বিছানায় বসে ডুবে যাই নিজের ভাবনা চিন্তার অতল গভীরে। অনেকক্ষণ পর দবির আসে
প্রিয় বন্ধু রতিকান্ত,
এবার তোমাকে লিখতে অনেকটা দেরী করে ফেললাম। ছয়শ বছর পরের পৃথিবীতে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে বিভিন্ন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্যে এই বিরতির দরকার ছিল হয়তো। এর মাঝে অনেক ঘটনা অকস্মাৎ ঘটেছে, অনেক কিছু নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ীই করতে পেরেছি। এখানকার রীতিনীতিও কিছুটা বুঝতে শিখেছি। তারপরও বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে।
প্রিয় বন্ধু রতিকান্ত,