ঘোর লাগা মন্থর দুপুর
পল্লবহীন একটা পথের শাখা
সাঁই করে সটকে পড়েছে খাগড়ার বনে
আনসার থেকে এফবিআই সকলেই
মুখ তুলে তাকালো অরণ্যে
কানখাড়াকরা সব ঘুঘুপাখি, না-মূক না-বধির তারা;
করতলে টলমল বিষাদ
ধবধবে কাশবনে টহলরত শরত
বাতাসের ম্যাজিক কার্পেটে পেতেছি শয্যা
ঝিমুনির প্রবল প্রতাপ সমগ্রজাতিময়
শরতের বারান্দায় টুল পেতে বসেছিলো গুরু হোরহে এ্যনড্রেডে
লাতিনের গল্পগুলো জমেছিলো বেশ
১.
দাসের মতো দুঃখ নিয়ে
নিরুপায় নরহত্যা, নিরপরাধ শিশুহত্যার কাজ করে
খেতে পায় সে দেশের সৈনিকেরা!
দেশটার কাটা মুণ্ডু রাখা আছে, ভিটেমাটিহীন ভুঁইফোঁড়
এক পরজীবী রাষ্ট্রের পতাকায় মোড়া।
সেখানেই গড়ে উঠেছে এক প্রাচীর,
প্যালেষ্টিনা জাতির রক্তে ধোয়া ।
পৃথিবীর দীর্ঘতম দীর্ঘশ্বাস আর করুনতম ক্রন্দন,
এখান থেকেই শুরু।
পৃথিবীর প্রতিটি যুদ্ধ, মৃত্যুর নকশা, আঁকা হয় এখানেই।
তুমি নাকী আগুন পোষো
কাছে গেলেই পুড়িয়ে দেবে!
মিষ্টি ফুঁয়ে কে তবে আজ
চায়ের গরম জুড়িয়ে দেবে?
পোড়ার ঠোঁটে নরোম রেখে
যন্ত্রণা কে উড়িয়ে দেবে-
মনের ভুলে ফেলে আসা
চাবিটা কে কুড়িয়ে দেবে?
কপাল বেয়ে অগোছালো
চুলগুলো কে ঘুরিয়ে দেবে-
শার্টের বোতাম না লাগানোর
ভুলগুলি কে ধরিয়ে দেবে?
বুকের কাছে একটু আসার
শাসনে কে চড়িয়ে দেবে-
কষ্ট পাওয়ার নষ্ট পাথর
আয় বলে কে সরিয়ে দেবে?
সকাল এবং বিকালগুলো
প্রকারান্তরে হয়েছি বৈদেশিক
এখন আর হাত বাড়ালেই হাতে এসে
টুপটাপ বসে না পুষ্পপাপ
আমার কোনো অতীত নেই, কোনো
রথযাত্রায় নেই ফেলে আসা কোনো
শোলার টুপি, লাল শরবতী ফুল।
তোমাকে দেখেছি কতোকাল আগে
অন্ধকারের ছায়া দুই হাতে মেখে
হেঁটে আসছ ঘুম থেকে নির্ঘুম
বৃত্তের থেকে বেরিয়ে আসছ
মুমূর্ষু অন্ধকারের পাশে
জীবনের মতো, আলোর মতো
নিঃশ্বাসের মতো
আকাশের দিকে হেঁটে যাওয়া রূপকথার আশ্চর্য রোপওয়ে
কবেকার পুরনো সে বোধ
ক্ষণে ক্ষণে,
নিরবে নিভৃতে,
নিঃশব্দ চিৎকারে-
আজো জেগে থাকে মনের গহীনে।
অনেক কাল কেটে গেছে তার নাম শুধায়ে।
উত্তর আসে নি কোন।
এখন আর উত্তরের কোন প্রত্যাশা নেই।
আসলে,
কোন কিছুরই কোন প্রত্যাশা নেই।
যে জীবন চলে বাতাসের মত মৃদু-মন্দ অথবা দমকা ঝড়ো হাওয়ায়,
তার কাছে, তাকে থামিয়ে, কিছু
জানতে চাওয়ারও কোন মানে নেই।
যে বোধ কখনও ছড়ালো না ডানা,
মদের বোতল থেকে
বেরিয়ে এলে মনে হয়,
পৃথিবী দুলছে!
জানপ্রাণ বাজি ধরে,
টলতে টলতে মানুষ ও ধ্বংস
লড়ছে কুস্তি-
মদের ভেতর
এই সব নাই, সানজিদা ও আমি
এখনো খুব ভালো বন্ধু, হাত ধরে
কার্জন হলের লনে হেঁটে বেড়াই, আঙুল কেটে
চিঠি লিখি-
রক্তের সেই সব অক্ষর
যতো পুরোনো হয়
নেশার বুদ্বুদ বাড়ে, মনে হয় জাতিসংঘের
শান্তি এসে জড়ো হচ্ছে
ক্রমাগত
বেরোলেই ভয়,
লাল লাল চোখ করে
প্রেম এসে ফিরে ফিরে যাচ্ছে, বিষাদও
শোনাতে চাইছে তার সকরুন সুর
আর আমি বসে দুর-বহুদুর
যা কিছু সব টের পাচ্ছি
তবু রোজকার মতো খাচ্ছি-দাচ্ছি-ঘুমাচ্ছি।
প্রেম জানে,
আমার আছে নিজস্ব একটা ঘর
তবু সে সামলাইতে কয় পর
আমারে আকৃষ্ট করতে চায় ভোগে
সে জানে, আমি বি-বাহিত রোগে
আক্রান্ত হয়ে আছি,
বিষাদের কাছাকাছি।
প্রেমরে বলি, আমি কিন্তু ভোগবাদি নই
(যদিও সে সুযোগ এখন আর কই?)
হার্মাদ ঝড় এসে
দপ করে আকাশের পিদিম নিবিয়ে দিল।
যে গান এখনো হয়নি লেখা
সেই গান গাইছিল সন্ধ্যা
কৃষ্ণ হলো কথা, সুর হলো রাধিকা
কথা আর সুরের যুগল নৃত্যে নাচছিল সন্ধ্যা
আর আমি যাচ্ছিলাম বনের ভেতর দিয়ে একা
আমাকে ভাবতে হয়েছিল সেই সব কথা
যে সব আত্মার ভেতরে এতোকাল মীমাংসিত ছিল
তোমার হৃদয়ও ছিল মীমাংসিত
আমার পায়ের তলার মাটি এ জন্যই থেমে ছিল
আর তোমার পথ এ জন্যই ছিল অতটা দ্রুতগামী
যাকে পেছনে ফেলে যায় মানুষ
স্তব্ধ চারিদিক,ঘন কুয়াশা
পীচ ঢালা রাজপথ ধরে আমি হেঁটে চলেছি একা একা ।
খোলা চুলগুলো উড়ছে, হিম শীতল ঠাণ্ডা হাওয়া
অদ্ভুত সুন্দর কিছু মুহূর্ত,অস্পষ্ট কিছু ভাল লাগা ।
ধোঁয়া ধোঁয়া কুয়াশা আধো আলো আধো ছায়া ;
গন্তব্যহীন পথ ধরে আমার এ হেঁটে চলা ।
ঐ শিশির ভেজা নরম ঘাসের চাদরে ,
আমার কত স্মৃতি পরে রয়েছে অনাদরে ।
মনের পর্দায় উঠল ভেসে, আমার শৈশব ;
কিশোরী মনের লাজুক স্বপ্নে ঘেরা আমার কৈশোর ।