কাল রাতে অদ্ভুত একটি স্বপ্ন দেখেছি।
...............................................................
দেখলাম আমরা নতুন বাড়ি কিনেছি, আমরা মানে আমি আর আমার স্ত্রী। বাড়িটা দারুণ, অনেকগুলো ঘর একতলা দোতলা মিলিয়ে। তিনপাশ জুড়ে সবুজ ঘাসের ঘন লন, লনের প্রান্ত ঘেঁষে বেশ কয়েকটি ফলের গাছ, বাড়ির সামনের দিকে পরিপাটি ফুলের বাগান। ভূতপূর্ব গৃহস্বামীর রুচিতে আমি মুগ্ধ। নতুন বাড়িতে আমি একাই এসেছি। নিচতলার যে ঘরটায় থাকবো বলে ঠিক করেছি তার দুই দিকে বড় বড় দু’টি জানালা, জানালায় সাদা রঙের টানা ব্লাইন্ড। ব্লাইন্ড সরাতেই চোখে পড়ল মূর্তি দুটো। দুটো শ্বেত পাথরের পরী, দেখতে হুবুহু একই রকম মনে হলেও কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলেই তফাৎ টা চোখে পড়ে। পশ্চিমের পরীটা লক্ষ্মীট্যারা।
পাহাড়ের যে রহস্য- সেটা অন্য সব রহস্যের থেকে আলাদা।
বার্মার মুলমিনে থাকার সময় টের পেলাম, জীবনে আর কখনও নিজেকে এতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি আমার। কারণ ওখানে আমাকে একেবারেই দেখতে পারে না এমন লোক ছিলো বিস্তর। আমি ছিলাম ওখানকার সাব-ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার। ইউরোপীয়দের প্রতি সেখানকার মানুষের এক রকম বিতৃষ্ণা ছিলো। বড় রকমের দাঙ্গা-হাঙ্গামা করার মতো সাহস কারও হতো না বটে, কিন্তু বাজারের ভিতর দিয়ে কোনও ইউরোপীয় নারী হেঁটে গেলে তার কাপড়ে পানের পিকের দাগটা খুঁজে পাওয়া যেতো ঠিকই। আর আমি তো ছিলাম পুলিশ, নিজের গা বাঁচিয়ে আমাকে অপদস্থ করার একটা সুযোগও ছাড়েনি কেউ। একদিন ফুটবল মাঠে এক বার্মিজ আমাকে দিব্যি ল্যাং মেরে ফেলে দিলো। দেখি রেফারি ব্যাটা, সেও আরেক বার্মিজ, উদাস হয়ে তাকিয়ে আছে অন্য দিকে, দেখেইনি কিছু। ওদিকে মাঠের সব দর্শক হেসেই খুন হয়ে যাচ্ছে। এমন ঘটনা একবার নয়, বার বার হতো। যেখানেই যেতাম, দেখতাম এই হলুদমুখো লোকগুলোর ব্যাঙ্গবিদ্রূপ। সবচেয়ে শয়তান ছিলো কম বয়সের বৌদ্ধ ভিক্ষুগুলো। সারাদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে গুলতানি মারা আর ইউরোপীয় লোক দেখলেই টিপ্পনী কাটা ছাড়া যেন এদের আর কোনও কাজ নেই।
বাড়ি ফেরার পথে তোমার মৃত্যু হয়।
এটা ছিলো একটা দুর্ঘটনা। তেমন আহামরি কিছু নয়, তবে প্রাণঘাতী। ভালো ব্যাপার হলো মৃত্যুটা ছিলো যন্ত্রণাহীন। মৃত্যুকালে তুমি রেখে গেছ তোমার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে। ডাক্তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলো তোমাকে বাঁচানোর। কিন্তু লাভ হয়নি কোনো। তোমার শরীর পুরো চুরমার হয়ে গেছিলো। বিশ্বাস করো, মারা গিয়েই ভালো হয়েছে।
আর তার পরেই তোমার সাথে আমার দেখা হয়।
ভদ্রমহিলার সাথে একবার চোখাচোখি হতেই তিনি চোখ ফিরিয়ে নিলেন। আমাদের এই দৃষ্টি বিনিময় হলো খুব স্বল্প সময়ের জন্য। কিন্ত এর মধ্যেই আমার মনে হলো সেই চোখজোড়াতে দহন আছে, জ্বালাও আছে। আমি দিন পনেরো ধরে রোজ ছাদে উঠছি আর তাকে ঠিক একই জায়গায় একইভাবে বসা দেখছি। বসার ভঙ্গিটি স্থির, নিশ্চল। আমি ছাদের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে দাঁড়াই। মেইন গেটের উপরে কায়দা করে বানানো খাঁচার ফাঁকফোকর গলে বাগানবিলাস গাছটা ছড়িয়ে পড়েছে। গ
১.
আসি।
২
ভাল? চুপ। তুমি?
৩.
চলো, সময়টাকে নিজের মতো করে সাজাই।
৪
"এক দেবদূত একদা এক নগরীর উপর দিয়া উড়িয়া যাইতেছিলেন। সহসা কি কারনে জানি তাহার মনে গভীর দয়ার উদ্রেক হইল। তিনি নামিয়া আসিয়া সেই নগরীর মাথাগণের নিকট জিজ্ঞাসা করিলেন "বাপু, তোমরা আমার নিকট কিছু একটা চাহিতে পারো"। নগরীর মাথাগন গভীর ভাবে ভাবিতে লাগিলেন কি চাওয়া যাইতে পারে, এমন সুযোগ তো আর প্রত্যহ মিলিবে না। অনেক ভাবিয়া তাহারা একটি বিশেষ ধরনের মানুষ তৈরির কল চাহিলেন। সেই মানুষরা হইবেন মেধাবী, জ্ঞান চর্চ
৪।।
সবাই সবার হরিণ।সবাই সবার বাঘ। কোন পাখি ডালে বসে ছিল না।
১।।
ওরা একে অন্যের ছায়ার মত, আঠারো বছর ধরে- একসাথে হেঁটে চলেছে। চোখে স্বপ্ন, মনে প্রেরণা, হৃদয়ে জিদ। এই এদিন অবশ্যই থাকবে না। অবশেষে সেদিন এলো, ওরা দুজনে দেখলো- চোখের সামনে দুঃখের মেঘ কেটে গেছে। পায়ের নিচে টের পেল- শক্ত মাটি। ওরা নিজের পায়ে দাঁড়ালো, তারপর হেঁটে গেল দুই পথে।
২।।
অন্ধরা হাতি দেখলো।
মেয়ের ঝলমলে জামাটার দিকে তাকিয়ে মন কেমন করে ওঠে মুকুলের। খুব খুশি হয়ে উঠেছে ওর পাঁচ বছরের মেয়েটা, জামাটার মতোই ঝলমল করছে ওর মুখটা। পিঁড়ির উপর বসে মেলায় কেনা আচারটা চেটেপুটে খাচ্ছে ও। এবার পূজোয় কিছু কিনবে না কিনবে না করেও মেয়ের জন্য এই জামাটা না কিনে পারেনি মুকুল, আর কারও জন্যই কিচ্ছুটি কেনেনি।