আমাদের বাড়িতে একটা মাত্র ঘর। সেই এক ঘরের বাড়িতে আমরা সবাই থাকি, খাই। এক ঘরের এই বাড়ির একটা দরজা, জানলা দুটো। একটাতে ভারী পর্দা ঝুলে আরেকটার কপাটে কালিমাখা। জানলাগুলো বন্ধই থাকে। তবু আমাদের একা রেখে বড়রা দূরে গেলে বারবার সেগুলোকে পরীক্ষা করে দেখা হয় বন্ধ আছে কিনা। তখন দরজা খোলাও বারণ। কারণ চোরের উপদ্রব খুব বেশি আর বাইরের ধু ধু মাঠে ঝড়ের হাওয়া ওঠে যখন তখন। সে ধুলোবালি ঘরে ঢুকে নোংরা করে দিতে পারে। আ
মাঝেমাঝে মনে হয় এই জীবনে আর নতুন করে লেখালেখি করার দরকার নেই। যা যা লিখেছি গত দুই তিন বছরে সেগুলো সময়ে সময়ে একবার করে কপি পেস্ট দিয়েই বাকি জীবন কাটিয়ে দেয়া যাবে। অদ্ভুত এক দেশ আমাদের। এখানে একই ঘটনা বারেবারে হয়, ঘটনার পর একই নাটকও বারেবারে হয়। নাটকের কুশীলবের একটু অদলবদল হয় কিন্তু বাকি সবই একইরকম। উদাহরণ দিয়ে বলি। প্রথমে দুই বছর আগে রাজীবের মৃত্যুর পরে লেখা থেকে একটা অংশ কপি পেস্ট করি -
[i]
(১)
বসে ছিলাম ছায়াবীথির সামনে তৈরি বাংলা একাডেমির মাচায়। আমি আর ইমতিয়াজ আহমেদ। লম্বা-চওড়া এক ভদ্রলোক এলেন। পরামাণুর গহীন নিসর্গে বইটা কিনে ইমতিয়াজ ভাইয়ের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘স্যার একটা অটোগ্রাফ প্লিজ!’ এরপর আমি একটু অনমনষ্ক, কে না কে! ওদিকে নজর দিলাম না। হঠাৎ একটা কথা কানে এলো, ‘আমি অভিজিৎ।’
২৮ বর্গমিটারের একটা ঘর। সেটাই আমার অ্যাপার্টমেন্ট। একজন মানুষের বেঁচে থাকতে যা কিছু লাগে সব আয়োজন এর মাঝেই। একটা দেয়াল কাঁচের। সেটাই জানালা। পর্দা সরিয়ে দিলে, কনকনে শীতে কুঁকড়ে যাওয়া গাছগুলোকে ঝড়ো বাতাসের সাথে যুঝতে দেখা যায়। কিছু ছাত্রহোস্টেলের শ্যাওলা ধরা ছাদ চোখে পড়ে। তার মাঝে মাঝে বয়লারের ধোঁয়া বের হবার চিমনি। বৃষ্টির পানি জমে আছে এখানে সেখানে। এরকম একটা অ্যাপার্টমেন্টেই কি মারা গেছি
শুক্রবার সকালে আউট পেশেন্ট ক্লিনিক, বসে বসে অনেক কিছু ভাবছিলাম। অন্য দিনের চেয়ে আজ স্কেজুল বেশ হালকা। গত কয়েক দিন প্রচণ্ড শীত পড়ায় অনেক রুগী শেষ মুহূর্তে এপয়নমেন্ট ক্যানসেল করেছেন। খুব ধীরে সুস্থে সবাইকে দেখছি আজ। শেষ রুগীটি প্রথমবারের মতো আমাকে দেখাতে এসেছেন। তার সাথে কথাবার্তা শেষ করে ল্যাব স্লিপ লিখছি, তিনি হঠাৎ জানতে চান,
-ডক, তুমি কোন দেশের?
আমেরিকার শ্বেতাঙ্গ প্রধান ছোট্ট এই শহরতলীর অনেক রুগীকেই আমার তামাটে গায়ের রং, ঘন বাদামী চুল, এবং বিশেষ টানযুক্ত ইংরেজী উচ্চারণ খুব কৌতূহলী করে তুলে, বুঝতে পারি। অনেকে ভদ্রতা করে জিজ্ঞেস করেনা না। আবার অনেকে প্রথম দিন-ই জিগ্যেস করে ফেলেন। আমি পাল্টা জানতে চাইলাম,
-তোমার কি মনে হয়? ও একটু ভেবে বলে,
-ইন্ডিয়ান
-না, আমি ইন্ডিয়ান না।
শিকারের শখ অনেকের, কিন্তু সাহস হাতে গোণা কয়েকজনের। যদিও শিকারের আত্মরক্ষার তেমন কোন উপায় নেই, তবুও বন্দুকের রিকয়েল কিংবা গুলির আলগা ফুলকি ছুটে পেলব ত্বকে দাগ বসিয়ে দিতে পারে। কিংবা কোমল মনের কেউ নিষ্ঠুর বলে ভর্ৎসনা করতে পারে। ইত্যাদি নানা ভয়ে বেশিরভাগ শিকারপিয়াসু দূরে দাঁড়িয়ে অন্যের শিকার দেখে ভিকারিয়াস আনন্দ পায়। তবে কেউ কেউ শিকারের দেহ নিথর হয়ে এলে লোকলজ্জা ও অস্ত্রের ভয় কাটিয়ে উঠে। তারাও অংশ নি
১।
মেলায় স্টলগুলোর সামনে দিয়ে একবার ঘুরে এসে শমশের সাহেব যারপরনাই বিরক্ত হলেন। জনসমাগম ভালো, কিন্তু প্রধান অতিথির কোনও চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। জনা বিশেক স্টল, তার সামনে শ-খানেক মানুষ। বিজ্ঞান মেলায় এর চেয়ে বেশি আর কে আসবে? দু’জন বাদাম ওয়ালা ঘুরে বেড়াচ্ছে ইতস্তত। ব্যাবসা মনে হয় ভালোই। এক কোনায় একজন গ্যাস বেলুন বেচছে। বিজ্ঞান মেলা তো নয়, যেন ফাল্গুন উৎসব। যত্তসব। তিনি মুখ ভার করে গেটের পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেন। দু’টোর সময় মেলা উদ্বোধন করার কথা ছিল। চারটা বাজে, এখনো প্রধান অতিথির খবর নেই। হাসিবকে একবার ফোন করে দেখবেন নাকি ভাবলেন। থাক, আগে কর্নেল ব্যাটা আসুক।
সোয়া চারটার সময় মাঠের মাঝখানে একটা সুদৃশ্য গাড়ি এসে থামল। কর্নেল সেয়ানা ভারিক্কি চালে গাড়ি থেকে নামলেন। রাগে তার মুখ থমথম করছে। শমশের সাহেব প্রমাদ গুনলেন। ছোটবেলা থেকেই সেয়ানার রাগ মারাত্মক। তিনি তাড়াতাড়ি তার বন্ধুর গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন।
“ব্যাটা”, ফিসফিস করে বললেন কর্নেল, কিন্তু গর্জনের মত শোনা গেল, “নিমন্ত্রণ দাও প্রধান অতিথির, কিন্তু গাড়ি পার্ক করার একটা জায়গা রাখোনা আশেপাশে। খুঁজতে খুঁজতে জান কাবার হয়ে গেল। জানো না, আমি লেট করাটা একদম পছন্দ করি না? ব্লাডি সিভিলিয়ান কোথাকার! “
৭১ সালে পাকিস্তানি সৈন্যরা রাস্তা-ঘাটে লুঙ্গি খুলে বাঙ্গালীর মুসলমানিত্ব যাচাই করত। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরে আজকাল আর পাকিস্তানি সৈন্য লাগেনা কিছু হলে নিজেরাই লুঙ্গি খুলে দেখায় কে কত বড় মুসলমান। একটা ভাল জিনিস শিখিয়ে গেছে পাকিস্তান।