মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী। পর্ব ৮ [দ্রোণ]

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: বুধ, ৩১/১২/২০১৪ - ১১:০১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বড়ো বেঘোরে অসম্মানের মরা মরলেন দ্রোণ। নিজের শিষ্য তার চুলের মুঠায় ধইরা তলোয়ার দিয়া মাথাটা আলগা কইরা ফিককা ফালাইল কুরুক্ষেত্রের মাঠে। শত শত লাশের ভিড়ে শেষ পর্যন্ত তার নিজের পোলায়ও শেষকৃত্যের লাইগা খুইজা বাইর করতে পারল না দ্রোণের দেহখান...

এই মরাটাই কুরুক্ষেত্রে একমাত্র ব্রাহ্মণের মরণ। মানুষটা জন্মাইছিল বিদ্বান পরিবারে; সাক্ষাত ঋষি অঙ্গিরার বংশে। বৃহস্পতি তার পিতামহ; পিতা ভরদ্বাজ। কিন্তু কী জানি কী কারণে বিদ্যা শিক্ষা মুনি ঋষিগিরি কিংবা পুরোহিতের কাম টানে নাই তারে। হইতে পারে তার শৈশবের দারিদ্র্য তাড়না। বাপ ভরদ্বাজ থাকতেন অন্যের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে। শীতে পোলারে শীতবস্ত্র দিতে পারতেন না বইলা রাখতেন মাটির মটকার ভিতরে ঢুকাইয়া। সেই মটকা বা দ্রোণে ঢুইকা শৈশব পার করলেও সারাজীবন দারিদ্র্যচিহ্ন দ্রোণ নামটাই হইয়া উঠে তার পরিচয়। বড়ো হইবার পর তার মনে হইল ঋষিপুত্র ব্রাহ্মণ হইলেও রাজা হওয়া যায়। সামনে তার আদর্শ আছিলেন জমদগ্নিপুত্র পরশুরাম; যিনি একাধারে ঋষি রাজা যোদ্ধা আর অস্ত্র বিশারদ...

বাপের টোলে পঠনপাঠন ছাইড়া তিনি গিয়া অস্ত্রে দীক্ষা নেন পরশুরামের ডেরায়। অস্ত্রবিদ্যা বহুত শিখলেও দারিদ্র্য তখনো তার পিছু ছাড়ে নাই; তখন হইছে তার দ্বিমুখী জ্বালা। বিদ্যাশিক্ষা করা ব্রাহ্মণ থুইয়া তারে না ডাকে কেউ পুরোহিতের কামে; পরশুরামরে থুইয়া না আসে কেউ তার কাছে অস্ত্রশিক্ষা নিতে। অবস্থা তার এমইন হইল যে একমাত্র পোলা অশ্বত্থামারে এক ফোটা দুধ দিতে না পাইরা খাওয়াইতেন ঘোল। তো এই অবস্থায় হঠাৎ তার মনে হইল ছুডুকালের সখা আর বাপের টোলের সতীর্থ দ্রুপদ এখন পাঞ্চালের সম্পদশীল রাজা...

বৌপোলা নিয়া তিনি তার কাছে হাজির হইয়া কন- দোস্ত। ছোটবেলা আমরা যা পাইতাম দুই বন্ধুতে আধাআধি ভাগ কইরা খাইতাম। তো তোমার এখন যে রাজ্য আছে তার আদ্ধেক আমারে দেও...

- বেকুবে কী কয়? ছোটবেলার মিঠাইমণ্ডা ভাগাভাগি আর রাজ্য ভাগাভাগি কি এক?

দ্রুপদ তারে খেদাইয়া দিলে বৌবাচ্চা নিয়া তিনি আইসা আশ্রয় নেন হস্তিনাপুর রাজ্যের কুলগুরু তার শালা কৃপাচার্যের ঘরে। এই সময়টাতে ভীষ্ম তার নাতিগো লাইগা ভাবতাছিলেন অস্ত্রশিক্ষার কথা। কৃপাচার্যের সুপারিশে ভীষ্ম তারে মাস্টারির চাকরি দিলেন আর তিনি খালি দ্রোণ থাইকা হইয়া উঠলেন গুরু দ্রোণ কিংবা দ্রোণাচার্য...

রাজবাড়ির চাকরিতে ভালোই দিন যাইতেছিল তার। রাজকীয় বেতন ভাতার বাইরে আশপাশের তরুণদের শিক্ষা দিয়া উপরি ইনকামও নেহাত মন্দ আছিল না তার। খানাদানা আর সম্মান সবই একলগে পাইবার কারণে হস্তিনাপুরের গদির নিকট তার আনুগত্যও ছিল প্রশ্নের অতীত। কোনোদিনও তিনি ধৃতরাষ্ট্রের কোনো কথায় যেমন রা করেন নাই; তেমনি পোলাদের যে কাণ্ডে ধৃতরাষ্ট্র নিশ্চুপ থাকছেন গুরু দ্রোণও সেই দৃশ্য না দেইখাই থাকছেন সর্বদা। যাদের লগে হস্তিনাপুরের শত্র“তা কিংবা সামান্য রেষারেষি ছিল; তাদের কারো পোলারেই তিনি জীবনে গ্রহণ করেন নাই নিজের অস্ত্র শিক্ষার স্কুলে...

এমনকি নিষাদরাজা হিরণ্য ধনুর পোলা একলব্যরে তিনি ফিরাইয়া দিবার পরেও যখন গুরুকুলের বাইরে দূর থাইকা শিষ্যগো লগে দ্রোণের কারিগরি দেইখা সে নিজের চেষ্টায় এক ভালো তিরন্দাজ হইয়া উঠল তখন হস্তিনাপুরের রাজবাড়িরে খুশি রাখার লাইগা তিনি একলব্যের বুড়া আঙুলটাই কাইটা ফালাইলেন যাতে সে জীবনেও আর কোনোদিন তীর চালাইতে না পারে। কারণ তিনি জানতেন আর্য জন-জাতির হাতে নিজেদের ভিটামাটি হারানোর ক্ষোভে এই পঞ্চম বর্ণের আদিবাসী জাতি নিষাদেরা বরাবরই ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়ের জাতিগত শত্রু। দ্রোণের পক্ষে কোনোদিনও ভীষ্ম-ধৃতরাষ্ট্ররে বোঝানো সম্ভব হইব না যে কেন একলব্য কুরুপাণ্ডব থাইকা বড়ো তিরন্দাজ হইয়া উঠল তার দেখাদেখি...

রাজকীয় চাকরি হারাইয়া না খাইয়া থাকার ডর তারে যেমন সারা জীবন অনুগত কইরা রাখছে হস্তিনাপুর গদির তেমনি নিজের পোলারে রাজা বানাইবারও একমাত্র অবলম্বন হিসাবে তিনি সারাজীবন নিজেরে অনুগত রাখছেন হস্তিনাপুর গদির। তিনি বিশ্বাস করতেন ধৃতরাষ্ট্রের পরে দুর্যোধনই হবে রাজা; তাই তার সমস্ত কোয়ালিশনই ছিল ধৃতরাষ্ট্র পোলাদের সাথে। যদিও তিনি শিষ্যগো মাঝে গর্ব করতেন অর্জুনরে নিয়া; বিশ্বাস করতেন যুধিষ্ঠিররে আর মুখে ছ্যা ছ্যা করলেও বিপদে ভরসা করতেন কর্ণের উপর...

হস্তিনাপুরের গুরুকুলে যখন তার পয়লা ব্যাচের শিক্ষা সমাপ্ত হইল তখন তিনি তার সকল শিষ্যের কাছে সম্মিলিতভাবে গুরুদক্ষিণা চাইয়া বসলেন জীবন্ত দ্রুপদ- দ্রুপদরে বন্দী কইরা আমার কাছে আইনা দেওয়াই হইব তোমাদের গুরুদক্ষিণা...

শত কুরু- পাঁচ পাণ্ডব আর কর্ণ। এই একশো ছয়জন একলগে একপক্ষ হইয়া জীবনে মাত্র একবারই যুদ্ধযাত্রায় গেছে; আর তা গেছে দ্রোণের খায়েশ পূরণ করতে...

শিষ্যরা দ্রুপদরে ধইরা আইনা দিলো আর মুক্তিপণ হিসাবে আদ্ধেক রাজ্য নিয়া নিজের পোলারে তিনি বানাইয়া ফালাইলেন দক্ষিণ পাঞ্চালের রাজা। ...কিন্তু তার পোলার তো কোনো রাজনৈতিক মিত্র নাই; দ্রুপদ যে থাবা দিয়া আবার তার রাজ্য ফিরাইয়া নিব না তার কী গ্যারান্টি? সেই গ্যারান্টি তিনি পাইলেন আবার সেই ধৃতরাষ্ট্রের কাছে; দুর্যোধনের কাছে আর তার বিনিময়ে সারাজীবন কুরুপক্ষে বান্ধা থাকলেন আনুগত্যের শিকলে...

ধৃতরাষ্ট্র আর দুর্যোধন তারে বহু কিছু দিছে। ধৃতরাষ্ট্র তারে দিছেন মন্ত্রীর পদ। দুর্যোধন তারে দিছে পাশায় জিতা পাণ্ডব রাজ্য ইন্দ্রপ্রস্থের রাজত্ব আর ভীষ্ম মরার পর কুরুপক্ষের প্রধান সেনাপতির পদ...

কিন্তু যুদ্ধে যে মানুষটার কোনো অভিজ্ঞতাই নাই; তিনি যুদ্ধে যোগ দিছেন নিজের রাজ্য আর পোলার রাজত্ব টিকাইবার খাতিরে। যদি কুরুপক্ষ হাইরা যায় তবে তার নিজের ইন্দ্রপ্রস্থ তো যাবেই; সাথে সাথে জামাইগো নিয়া এক থাবায় দ্রুপদ ফিরাইয়া নিব তার পোলার দক্ষিণ পাঞ্চাল...

তিনি সেনাপতি হইবার পর পরিকল্পনা আর নেতৃত্বের অভাবে কুরুপক্ষের যুদ্ধ পুরাই আউলাঝাউলা হইয়া উঠে। যতদিন তিনি নেতৃত্ব দিছেন ততদিনই খালি একটার পর একটা প্রতিজ্ঞা করছেন আর বদলাইছেন কিন্তু কোনোটাই ঠিকমতো করতে পারেন নাই। আর অন্যদিকে পাণ্ডবেরা ধুমায়ে পিটাইছে কৌরব বাহিনীরে এই কয়দিন। এই কয়দিন তিনি ডরাইয়া দিন থাকতে যেমন যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা কইরা দিছেন তেমনি দুর্যোধনরে কিছু একটা দেখাইবার লাইগা রাত্তিরে যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নিছেন- বিরতি না দিয়া টানা যুদ্ধ করছেন; কিন্তু কিছুতেই কোনো ফল আসে নাই কৌরবগো পক্ষে; উল্টা নিজের কপালে জুটছে শিষ্য দুর্যোধনের অকথ্য অপমান...

তার সেনাপতিত্বের পাঁচ দিন একমাত্র যে বুদ্ধিমানের কামটা তিনি করছেন; তা হইল সর্বদাই সবার পিঠ বাচাইবার লাইগা কর্ণরে কভারে রাখা; না হইলে হয়তো চারপাশ থিকা ঘিরা ধইরা পাণ্ডবেরা কৌরবগো পিটাইয়া তক্তা বানাইত অতদিনে...

চৌদ্দ নম্বর দিন জয়দ্রথ মরার পর রাত্তিরের যুদ্ধে কর্ণের হাতে ঘটোৎকচ মরায় পাণ্ডবপক্ষের কমান্ডের চেইন পুরাটাই ভাইঙা পড়ে যুধিষ্ঠিরের আবেগে। জীবনে মাত্র একবার কৃষ্ণের উপর প্রকাশে ক্ষেইপা উঠে যুধিষ্ঠির- ধিক কৃষ্ণ। ধিক। এই পুরা যুদ্ধটা তেরো বছর দেরিতে হইছে শুধু যেই কর্ণের ভয়ে; তেরোটা বছর ধইরা অর্জন যেখানে প্রস্তুতি নিছে কর্ণের মোকাবেলার; শুধু যে কর্ণরে ঘায়েল করার লাইগা তুমি নিজে হইছ অর্জনের সারথি; সেইখানে কিনা তুমি না পাঠাইলা অর্জুনরে; না গেলা নিজে কর্ণের সামনে; ঘটোৎকচ পোলাটারে তুমি মরতে পাঠাইলা কর্ণের হাতে...। ধিক কৃষ্ণ ধিক...

ঘটোৎকচ মরায় বুক চাপড়াইয়া কান্দে যুধিষ্ঠির- যে পোলাটায় বাপ কাকা জ্যাঠার এক ফোটা আদর খাদ্য কিংবা সুরক্ষা কোনোদিনও পায় নাই; তবু বনবাসের কঠিন দুর্দিনে বাপ কাকার মালপত্র টানা; এমনকি নিজের সৎমায়েরে কান্ধে নিয়া পর্বত পার করার বেগারটারও দিছিল বিনা প্রশ্নে; যার বাহিনীটাই ছিল আমাদের পয়লা সম্বল; সেই ঘটোৎকচ মরায় তুমি দুর্যোধনের মতো খুশিতে লাফাও? ধিক কৃষ্ণ ধিক...

পাণ্ডবপক্ষের যুদ্ধটা পুরাটাই কৃষ্ণ-যুধিষ্ঠিরের পরিকল্পনা আর অর্জুন-কৃষ্ণের পরিচালনা। জীবনেও কেউ কৃষ্ণের উপর যুধিষ্ঠিররে ক্ষ্যাপতে দেখে নাই। এই ক্ষেপা যুধিষ্ঠিরের সামনে যাইতে কৃষ্ণ ডরায়। অন্য কেউ সাহস করে না কিছু কইতে; পয়লা পোলা হারাইয়া ভীম বইসা থাকে হাঁটুতে মুখ গুইজা আর যুধিষ্ঠির নিজের বর্ম ঠিকঠাক করে- ঠিকাছে কৃষ্ণ। তুমি নিরাপদ দূরত্বে থাইকা নিজের আর অর্জুনরে জান বাচাও আমিই যাই। একটার পর একটা পোলাপানের মরণ দেখার থাইকা কর্ণের হাতে মইরা যাওয়াই বহুত ভালো আমার...

যে যুধিষ্ঠির তেরো বচ্ছর ঘুমায় নাই কর্ণের ভয়ে সে আইজ রওয়ানা দিছে কর্ণের লগে যুদ্ধ করতে। কৃষ্ণ অনুমান করে এইটা শুধু ঘটোৎকচের মৃত্যুই না; ঘটোৎকচের ছোট পোলা বর্বরিকের মৃত্যুর কারণেও যুধিষ্ঠির মনে মনে ক্ষেপা কৃষ্ণের উপর। ঘটার ছোটপোলা বর্বরিক এই বয়সেই ঋষি হিসাবে বহুত সুখ্যাত ছিল। যুদ্ধ কৌশলে সে সবাইরে ছাড়াইয়া গেছিল একলগে তিনটা তীর ছোঁড়ার কৌশলে। একবারে ধনুক টান দিয়া লক্ষ্যে তিন তিনটা বাণ ছুঁড়তে পারত বইলা তিনবাণধারী নামে এরই মাঝে সে বিখ্যাত ছিল। ...এতে পাণ্ডবগো সুবিধাই হইবার কথা ছিল। কিন্তু এই তিনবাণধারী বর্বরিকেরে তার মা অহিলাবতী ছোটকালে কইছিল সর্বদা দুর্বলের পক্ষে থাকতে সেজন্য সর্বদাই হারুপাট্টির পক্ষে থাকতে থাকতে এক্কেবারে ঋষি হারু কি সহায় হইয়া উঠছিল সে...

যুদ্ধ শুরুর আগে যখন সৈন্যসামন্তের কমান্ড ঠিক করা হয় তখন এই হারু কি সহায় বাধাইল ঝামেলা- মোর মায়ে মোরে কইছে বরাবর দুব্বলের পক্ষে থাকতে...

কৃষ্ণ তারে নিরালায় নিয়া জিগায়- তা তুমি কেমনে দুব্বল আর সবল ঠিক করবা নাতি?
বর্বরিক কয়- যুদ্ধে পয়লা আমি কারো পক্ষই নিমু না। খাড়াইয়া দেখব কারা হাইরা যাইতাছে। তারপর সেই হারুপাট্টির লগে গিয়া যোগ দিমু...
কৃষ্ণ কয়- আইচ্ছা মনে করো যে যুদ্ধ শুরু হইবার পর দেখা গেলো তোমার বাপ-দাদার দল পাণ্ডবপক্ষ হাইরা যাইতাছে; তাইলে তো তুমি গিয়া পাণ্ডবপক্ষে যুদ্ধ করবা। ঠিক কি না?
বর্বরিক কয়- হ ঠাকুরদা। এক্কেবারে ঠিক। এইটাই আমার ফিলসফি- দুব্বলের পক্ষে থাকা; এইটা মোরে মোর মায়ে শিখাইছে...
কৃষ্ণ কয়- তোমার মা খুব বুদ্ধিমান নারী; ভালো জিনিসই শিখাইতে চাইছে তোমারে; কিন্তু মনে হয় গুলাইয়া ফেলাইছ তুমি। ...তো নাতি; তিরাতিরিতে যেহেতু তোমার সুমান কেউ নাই। তো ধরো গিয়া তুমি পাণ্ডবপক্ষে আধাবেলা যুদ্ধ করলে তোমর মাইর খাইয়া কুরুপক্ষ আবার দুব্বল হইয়া পড়ব। তখন তুমি কী করবা?
- তখন আমি পাণ্ডব পক্ষ ছাইড়া দুব্বল কুরুপক্ষে যামু...
- তারপর কুরুপক্ষ থাইকা তোমার মাইর খাইয়া যখন আবার পাণ্ডবরা দুব্বল হইয়া পড়ব তখন?
- তখন আবার পান্ডবপক্ষে আসুম
- তারপর আবার কুরুপক্ষ দুব্বল হইলে তাগো পক্ষে?
বর্বরিক কয়- হ। তাইতো হিসাব

কৃষ্ণ হাসে- এই হিসাবে চললে তো যুদ্ধের শেষে তুমি ছাড়া যেমন জীবিতও থাকব না কেউ; তেমনি বিজয়ীও হইব না কেউ। দুই পক্ষের সবাইরে মরতে হইব তোমার কেরামতি তীরে...
- মরলে মরব। কারণ জয়-পরাজয় বাচা-মরা এইগুলা আমার দেখার বিষয় না। আমার দেখার বিষয় হইল আমি বরাবর দুব্বলের পক্ষে আছি কি নাই...

এমন বেকুব ষাঁড় যুদ্ধের লাইগা বড়োই মুশকিল। তার বাপ ঘটোৎকচ যতই তক্ক করুক না কেন পাণ্ডবগো নিকট তার আনুগত্য প্রশ্নের অতীত। ঘটার বড়ো পোলা অঞ্জনপর্বাও বাপের মতো। কিন্তু ছোটপোলা বর্বরিক অসাধারণ তিরন্দাজ হইবার পাশাপাশি অতি শিক্ষিত হইয়া বাধাইল গন্ডগোল। যুদ্ধের মাঠে অনিয়ন্ত্রিত কিংবা অতি স্বতন্ত্র মিত্র শত্রুর থাইকা ভয়ানক; যার ফলাফল এরই মাঝে পাইতে শুরু করছে দুর্যোধন। তার পক্ষে বহুত বড়ো যোদ্ধা আছেন; কিন্তু সকলেই চলেন নিজস্ব এজেন্ডায়। নিজের অহংকারে এইরমাঝে দুর্যোধনরে যুদ্ধে ঠেইলা দিয়া ঘরে বইসা তামাশা দেখতে আছে কর্ণ। কে জানে পরে বাকিরা কী করে। ...কিন্তু পাণ্ডবপক্ষে সেইটা হইতে দেয়া যাইব না...

ঘটোৎকচের পোলা হারু কি সহায় তিনবাণধারীর ঋষি বর্বরিকরে আর কেউ দেখে না কোথাও। কৃষ্ণ তার কাটা মুন্ডুটা উঁচু এক পাহাড়ের উপর রাইখা আইসা কয়- ঋষিসাব বাপদাদাগো বিজয় কামনায় স্বেচ্ছায় আত্মবলিদান দিয়া পাহাড়ের উপর বইসা নিরপেক্ষভাবে যুদ্ধ দেখার সিদ্ধান্ত নিছেন...

কেউ কিছু কয় না। কিন্তু যুধিষ্ঠিরের মনে হয় বেকুব নাতিটারে অন্য উপায়েও হয়ত যুদ্ধ থেকে সরানো যেত...

কৃষ্ণ আর অর্জুনরে উপর ক্ষেইপা যুধিষ্ঠির রওয়ানা দেয় কর্ণরে মারতে; হাঁটে আর বকবক করে- এখন পর্যন্ত দ্রোণ কিংবা কর্ণের বিষয়ে কারো কোনো মাথাব্যাথা নাই। অথচ তারাই সবচে বড়ো শত্রু। যুদ্ধ যা করার তা একলাই করতাছে ভীম। অভিমন্যু মারা যাওয়ায় আমিও কষ্ট কম পাই নাই। কিন্তু তাই বইলা জয়দ্রথের পিছনে কেন অতবড়ো প্রতিজ্ঞা? অভিমন্যুরে হত্যা করছে দুঃশাসনের পোলা। জয়দ্রথরে মাইরা কী লাভ হইল কৃষ্ণ কিংবা অর্জুনের?

একেতো কর্ণের দিকে যুধিষ্ঠিরের রওয়ানা দেওয়ায় পাণ্ডবপক্ষ পুরাটাই বেকুব তার উপরে তারা উতলা হইয়া উঠে যখন দেখে কৃষ্ণরে খুইজা পাওয়া যাইতাছে না কোথাও। অর্জুন খাড়াইয়া একবার যুধিষ্ঠিররে দেখে আরেকবার সারথিবিহীন রথের দিকে তাকায়...

যুদ্ধ বাদ দিয়া পাণ্ডবপক্ষ হায়হায় করে আর গোস্বায় গোঁৎ গোঁৎ কইরা হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ যুধিষ্ঠির শোনে- খাড়াও। বেকুবি করতাছ ক্যান?

কৃষ্ণ দ্বৈপায়নের গলা। কৃষ্ণ ধইরা আইনা কৃষ্ণ দ্বৈপায়নরে খাড়া কইরা দিছে ক্ষ্যাপা যুধিষ্ঠিরের সামনে...

দ্বৈপায়ন যুধিষ্ঠিররে আটকাইয়া কন- আইজ ঘটোৎকচ না মরলে অতক্ষণে অর্জুনরে মরণ কান্দনে যে তোমার বুক চাপড়াইতে হইত এইটা বোঝো? বড়ো শত্রুরে একলা ঘায়েল করা যায় না। ধাপে ধাপে অনেকের সম্মিলিত চেষ্টাতেই কাবু হয় বড়ো বড়ো শত্রু। ঘটোৎকচ মরার আগে কর্ণরে বড়ো রকমের ঘায়েল কইরা গেছে; এখন অর্জুন যুদ্ধ করলে তারে পরাজিত করা সম্ভব...বুঝছ?

কৃষ্ণ আইসা তার রথের লাগাম ধরে কিন্তু পাণ্ডবপক্ষে আর কেউ সেই রাত্তিরে যেমন যুদ্ধের কথা ভাবে না; তেমনি কুরুপক্ষও ঘটা মরার আনন্দে কিছু লাফাইয়া যুদ্ধের চিন্তা বাদ দেয়। টানা এক দিন এক রাইতের ক্লান্তিতে দুই পক্ষই যে যেখানে পারে ঝিমায়। আর কুরুক্ষেত্রের মাঠে পাগলা খোজা খুইজা দুর্যোধন শেষ পর্যন্ত ডেরায় আইসা দেখে নাক ডাকাইয়া ঘুমাইতাছেন সেনাপতি দ্রোণ...

দুর্যোধন ঝাঁকি দিয়া তারে জাগাইয়া খেক খেক কইরা উঠে- ঘুমান ক্যান? ঘুমাইয়া কী সুযোগটা ছাড়ছেন আপনি জানেন? ঘটা মরায় বেসামাল পাণ্ডবগো উপর যদি আপনি আক্রমণের নির্দেশ দিতেন তবে যে অতক্ষণে যুদ্ধ শেষ হইয়া যাইত এইটা বোঝেন?

দ্রোণ চোখ ডলেন। দুর্যোধন ঝাড়ি লইতে থাকে- ঘুমান ঘুমান। ব্রাহ্মণের তো আবার সবকিছু উপরে খাওন আর আরাম। নাক ডাকাইয়া ঘুমান। তারপর কাইল সকালে পাণ্ডবরা যখন বিশ্রাম কইরা তাগড়া হইব তখন গিয়া আপনে তীর দিয়া তাগো বগল চুলকাইয়া দিয়েন....

দুর্যোধনের ধাতানি খাইয়া ঘুম ফালইয়া দ্রোণ চিক্কুর লাগান- যুদ্ধ কিন্তু বিরতি হয় নাই। আক্রমণ...
দুর্যোধন কয়- হ। ঘরে বইসা আক্রমণ কইলেই আক্রমণ হয়...হালার অকম্মা বামুন; খালি ভড়ং

দ্রোণ আর অপমান গায়ে মাখেন না। নিজের বর্মটর্ম পরতে পরতে কন- তোমারে আমি কথা দিলাম; সমস্ত পাঞ্চালগো না মাইরা বর্ম খুলব না আমি...
দুর্যোধন কয়- আপনে তো ডেলি ডেলি নতুন পণ করেন আর দিনের শেষে পয়দা করেন ঘোড়ার আন্ডা। যাউক গা; পাণ্ডবগো তো কিছু করতে পারবেন না; এখন পাঞ্চালগো কিছু করতে পারলেও একটা কামের কাম হয়...

দুর্যোধনের কাছে প্যাদানি খাইয়া দ্রোণ সূর্য উঠার আগেই চান্দের আলোতে বিরাট আর দ্রুপদরে মাইরা ফালান। কিন্তু তারপর অন্ধকারেরই তার সামনে আইসা খাড়ায় ভীম আর দ্রুপদের পোলা ধৃষ্টদ্যুুম্ন। ভীম ধৃষ্টদ্যুুরে কয়- আইজ বাপের শেষকৃত্যের চিন্তা করবা নাকি প্রতিশোধ নিবা সেইটা এখন তোমার ভাবনার বিষয়...

পনেরো নম্বর দিন সূর্য উঠার পর দুর্যোধন গিয়া পড়ে বাল্যবন্ধু আর সতীর্থ সাত্যকির সামনে। দুর্যোধন কয়- দোস্ত কী দিন আছিল আর কী দিন আসলো রে ভাই। তুমি আর আমি কত খেলাই না একলগে খেলছি আচার্যের ঘরে আর হাটে মাঠে। কিন্তু কী থাইকা কী যে হইল; আইজ তুমি আর আমি অস্ত্র লইয়া মুখামুখি খাড়া। তুমি কি কইতে পারো বন্ধু আমাদের খেলার দিনগুলা কই গেলো আর কেনই বা শুরু হইল এইসব যুদ্ধ? আর যেসব কিছুর লাইগা এই যুদ্ধে জড়াইছি আমরা তা পাইলেই বা কী লাভ হইব আমাদের?
সাত্যকি কয়- সকল আকাম কুকাম সাইরা এখন আর আফসোস কইরা কী লাভ? খেলাঘরের বয়সে খেলা করছি; এখন যুদ্ধের মাঠে যা করার তাই করা ভালো। আসো...

দ্রুপদ মরার পর পাঞ্চালরা এমনিতইে কিছুটা মনমরা হইয়া আছে তার উপর দ্রোণ আইজ পুরাটাই ক্ষেপা পাঞ্চালগো উপর। কৃষ্ণ অর্জুনরে কয়- দ্রোণরে থামাইতে হবে। পোলা অশ্বত্থামার মরার সংবাদ তার কানে দিতে পারলে তিনি বেদিশা হইয়া উঠবেন। তুমি তার কানে অশ্বত্থামার মৃত্যুসংবাদ পৌছাইবার ব্যবস্থা করো....
অর্জুন কয়- ছি ছি ছি। এমন মিছা কথা কইয়া যুদ্ধ জয়ের থাইকা পরাজয়ই তো ভালো...

কিন্তু অর্জুনের যুক্তিতে পাত্তা দেয় না কেউ। সকলে এই বিষয়েও একমত হয় যে যুধিষ্ঠির যদি কথাখান কয় তবে বিনা প্রশ্নে দ্রোণ তা বিশ্বাস যাইবেন। কিন্তু যুধিষ্ঠিরের আবার সত্য বলার বাতিক আর সুনাম দুইটাই আছে। সে মুলামুলি করে- এক্কেবারে ঠাডা মিছা কেমনে কই কৃষ্ণ? একটা ব্যবস্থা করো না যাতে সংবাদটাও গুরুর কানে দেওয়া যায় আর আমার সত্য বলার সুনামটারও ক্ষতি না হয়...

কৃষ্ণ কয়- মালবরাজ ইন্দ্রবর্মার একটা হাতির নাম অশ্বত্থামা। ভাই ভীম; যানতো; ইন্দ্রবর্মার হাতি অশ্বত্থামারে গদা দিয়া শুয়াইয়া আসেন...

ভীম ইন্দ্রবর্মার হাতি অশ্বত্থামারে মাইরা দ্রোণের নিকট গিয়া দেয় চিক্কুর- অশ্বত্থামারে শুয়াইয়া ফালাইছি হোহ হো...

দ্রোণ কাইপা উঠেন। হাত শিথিল হয় তার। মিথ্যা বলায় ভীমের গলা কাপে না জানলেও কথাখান ফালাইয়া দিতে পারেন না দ্রোণ। যুদ্ধ থুইয়া তিনি দৌড়ান যুধিষ্ঠিরের কাছে- বাপ। আমি জানি মইরা গেলেও তুমি মিছা কও না। ভীমে যে কইল সে অশ্বত্থামারে মাইরা ফালাইছে; তুমি কওতো বাপ কথাখান কি হাছা?

কৃষ্ণ আইসা খাড়ায় যুধিষ্ঠিরের পিছনে; হালায় না আবার সত্য বলার বাহাদুরি নিতে যায়। কৃষ্ণ কানে কানে কয়- মনে রাইখেন দ্রোণ আরো আধাবেলা যুদ্ধ করলে কিন্তু আমাগো খবর আছে। যেমনে যা কইছি তেমনে তা কন...

ভীম আরেকপাশ থাইকা যুধিষ্ঠিররে গুতা দেয়- জীবন রক্ষার লাইগা মিথ্যা কইলে পাপ হয় না। বাইচা থাকাই সবচে পুণ্যের কাম। যেরাম পরিকল্পনা হইছে সেরামই কইবা কিন্তু। ...আর সবচে বড়ো কথা হইল আমিতো হাতি অশ্বত্থামারে সত্য সত্যই মারছি। কৃষ্ণ যেমন শিখাইয়া দিছে; তেমনি খালি কও- হ। অশ্বত্থামা মইরা গেছে...

যুধিষ্ঠির আমতা আমতা করে। কৃষ্ণ আর ভীম তারে চাইপা ধরে। দ্রোণ তাকাইয়া আছেন যুধিষ্ঠিরের দিকে- তুমি না কইলে আমি বিশ্বাস যামু না যে অশ্বত্থামা মইরা গেছে ভীমের গদায়...

আরেকবার কৃষ্ণ আর ভীমের দিকে তাকাইয়া; ঢোক গিলা দ্রোণের দিকে চোখ রাইখা চিক্কুর দিয়া যুধিষ্ঠির কয়- অশ্বত্থামা মইরা গেছে গুরু...। তারপর একটু থাইমা আস্তে আস্তে কয়- তবে সেইটা একটা হাতি...

পরের কথাটা দ্রোণের কানে যায় না। যুধিষ্ঠির কৃষ্ণ আর ভীমের দিকে তাকায়- তোমরা যা কওয়াইতে চাইছিলা তাও যেমন কইলাম তেমনি শেষের কথাটা জুইড়া দিলাম যাতে আমারে কেউ মিথ্যুক না কয়...

দ্রোণ আউলা হইয়া উঠেন। অশ্বত্থামা মইরা গেলে কার লাইগা এইসব?

ধৃষ্টদ্যুুম্ন আর ভীম সবেগে আক্রমণ শানায় দ্রোণের দিকে। ধৃষ্টদ্যুম্নের তীরে রথ থাইকা মাটিতে পইড়া যান দ্রোণ। ভীম কাছে গিয়া দেয় গালি- হালা লোভী ছোটলোক বামুন। এক পোলারে রাজা বানাইবার লাইগা বহুত আকাম করছ তুমি। এইবার মিটাইবা হিসাব...

রক্তাক্ত দ্রোণ মাটিতে পইড়া সাহায্যের আশায় কর্ণ দুর্যোধন কৃপ কইয়া চিল্লাইতে থাকেন আর বিশাল এক তলোয়ার বাগাইয়া ধৃষ্টদ্যুুম্ন দৌড়াইতে শুরু করে দ্রোণের দিকে। পিছন থাইকা হায় হায় কইরা উঠে অর্জুন- ধৃষ্টদ্যুুম্ন। দোহাই গুরুরে মাইরো না; তারে জীবিত বন্দী করো কিন্তু মাইরো না গো ভাই....

ধৃষ্টদ্যুুের তলোয়ার দেইখা মাটিতে মাথা নামাইয়া গলা লুকান দ্রোণ কিন্তু একহাতে চুলের মুঠা ধইরা তার টানটান গলায় অন্যহাতে তলোয়ার চালাইয়া মাথাটা আলগা কইরা ফালায় দ্রোণশিষ্য ধৃষ্টদ্যুুম্ন...

দ্রোণের মৃত্যুতে ধৃষ্টদ্যুুম্নর উপর অশ্বত্থামা ক্ষেপে বাপের চুলের মুঠা ধরায় আর অর্জুন ক্ষেপে গুরুরে মারায়। দ্রোণের মৃত্যুতে যুধিষ্ঠিরের উপর অশ্বত্থামা ক্ষেপে মিছা কথা কওয়ায় আর অর্জুন ক্ষেপে শেষ বয়সে আইসা খালি জয়ের লাইগা কলঙ্ক মাখায়। দ্রোণের মৃত্যুতে অশ্বত্থামা ক্ষেইপা শুরু করে পাগলা মাইর আর অর্জুন ক্ষেইপা বসে থাকে হাত পা গুটাইয়া...

যুধিষ্ঠির আইসা সবাইরে ডাইকা কয়- মহাপাপ মহাভুল হইছে আমাদের। আমরা আমাদের মহান শুভাকাঙ্ক্ষী গুরুরে মাইরা ফালাইছি; যিনি দূত সভায় পাঞ্চালীর প্রশ্নে মুখ ঘুরাইয়া নিছিলেন। যিনি অভিমন্যু হত্যার পরিকল্পনা করছিলেন। ধৃষ্টদ্যুুম্ন; তুমি বহুত করছ ভাই; এইবার তোমার সেনা নিয়া তুমি বাড়ি ফিরা যাও। সাত্যকি তুমিও বাড়ি ফিরা যাও তোমার লোকজন নিয়া। কৃষ্ণ যা করে করুক আমি গুরুমারা পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে ভাইবেরাদর নিয়া আগুনে ঝাঁপ দিমু। এতে অর্জুন খুশি হইব। আমাদের গুরুমারা পাপ খণ্ডন হইব...

যুধিষ্ঠির অর্জুনরে শুনাইয়া শুনাইয়া এইসব কথা কয় আর কৃষ্ণ গিয়া সকল সৈনিকরে কয় অস্ত্র ফালাইয়া দিতে। কৃষ্ণের কথাটা ভীম ধরতে পারে না তাই গদা নিয়া খাড়াইয়াই থাকে। কৃষ্ণ গিয়া ভীমের গদা হাত থিকা ফালাইয়া কয়- দ্বৈপায়নের নিয়ম মনে নাই?

ভীম বুইঝা চোখ তুইলা দেখে তার বুক বরাবর তীর ধইরা বেকুব হইয়া থাইমা গেছে অশ্বত্থামা- পাণ্ডবরা অস্ত্র ফালাইয়া বইসা থাকলে সে আক্রমণ করে কেমনে?

অশ্বত্থামা ফিরা যায় আর ভীম কয়- হ। দ্বৈপায়ন ঠাকুরের নিয়মগুলা বেশ কামের...

মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী। পর্ব ৭ [কর্ণ ৩]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী। পর্ব ৬ [কর্ণ ২]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী। পর্ব ৫ [কর্ণ]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী। পর্ব ৪
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ৩। দ্রৌপদী। পর্ব ৮
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ৩। দ্রৌপদী। পর্ব ৭
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ৩। দ্রৌপদী। পর্ব ৬
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ৩। দ্রৌপদী। পর্ব ৫ [ঘটোৎকচ ৩]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ৩। দ্রৌপদী। [পর্ব ৪: ঘটোৎকচ ২]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ৩। দ্রৌপদী। [পর্ব ৩: ঘটোৎকচ]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ৩। দ্রৌপদী। পর্ব ২
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ৩। দ্রৌপদী। পর্ব ১
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী [পর্ব ৩]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী [পর্ব ২]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী [পর্ব ১]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ১। সত্যবতী


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এই মাসে কি বাকি সব পর্ব পাওয়া যাবে? নাকি বাকিটুকু রূপালী পর্দায়?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

হ স্যার। সক্কল পর্বই এইমাসে পাওয়া যাবে; আর পুস্তক আকারে পরের মাসে

এক লহমা এর ছবি

চলুক। পড়ে যাচ্ছি।
"অশ্বত্থামা ফিরা যায় আর ভীম কয়- হ। দ্বৈপায়ন ঠাকুরের নিয়মগুলা বেশ কামের..." - হ, হেইডাই! যুগে যুগে দ্বৈপায়ন ঠাকুরদের নিয়মগুলা যারা যত ভাল কইর‍্যা নিজেগ কামে লাগাইতে পারে তারাই তত বেশী জয়ের মুখ দেখে।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

হ। নিয়মতো কামে লাগাইবার লাইগাই। বেকুবেরা নিয়ম মুখস্থ করে আর বুদ্ধিমানেরা নিয়ম কামে লাগায়

দময়ন্তী এর ছবি

১)"দ্রোণ তারে খেদাইয়া দিলে বৌবাচ্চা নিয়া তিনি আইসা আশ্রয় নেন হস্তিনাপুর রাজ্যের কুলগুরু তার শালা কৃপাচার্যের ঘরে। '

এখানে প্রথম নামটা দ্রুপদ হবে মনে হচ্ছে।

২) "দুর্যোধনের ধাতানি খাইয়া ঘুম ফালইয়া দ্রোণ চিক্কুর লাগান- যুদ্ধ কিন্তু বিরতি হয় নাই। আক্রমণ।।।
যুধিষ্ঠির কয়- হ। ঘরে বইসা আক্রমণ কইলেই আক্রমণ হয়।।।হালার অকম্মা বামুন; খালি ভড়ং"

এখানে দ্বিতীয় বাক্যের শুরুতে দুর্যোধন হবে মনে হয়।

৩) আম্রিকা এখন লাখে লাখে কোটিতে কোটিতে 'দ্রোণ' বানিয়ে বসতির পর বসতি সাফ করে যাচ্ছে। ওদিকে আমাজন বলছে দ্রোণ পাঠিয়ে দশতলার জানলায় অর্ডারি বই পৌঁছে দেবে দিনের দিন।
লক্ষ্যে মিস হয় না, এই অর্থেই সম্ভবতঃ দ্রোণ নামটা নিয়েছে এরা।

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ধরিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ। ১ আর দুই ঠিক করে দিলাম

০২
ভালো জিনিস বের করেছেন তো। দ্রোণ-ড্রোন; এই মিলটাতো আগে খেয়াল করি নাই

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

যথারীতি পাঁচতারা

____________________________

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।