ভারতীয় আগ্রাসন, মৌসুমি প্রতিবাদ ও আমাদের ভন্ডামি

স্বপ্নহারা এর ছবি
লিখেছেন স্বপ্নহারা (তারিখ: রবি, ২২/০১/২০১২ - ৩:০০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমরা বাংলাদেশিরা ব্যক্তিগতভাবে ভীষণ বিপ্লবীঃ ব্যক্তিগত জীবনে সেই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ বাথরুম ইচ্ছামত নোংরা করে ব্যবহার করা থেকে শুরু করে উড়োজাহাজের চাকায় চড়ে সাতসমুদ্র পাড়ি দেয়া সবকিছুতেই বিস্তৃত। আগে এই ধরনের বিপ্লবীদেরকে তাদের কাছের লোকগুলো ছাড়া তেমন কেউ চিনতো না- কারণ সত্যিকারের বীর সবার চোখের আড়ালে রয়ে যায়; ইনারা সত্যিকারের স্বদেশপ্রেমী- একদম নন্দলালের মতোই ইস্পাত-কঠিন এদের প্রতিজ্ঞা। অবশ্য ব্যক্তিগত জীবনে শুধুমাত্র স্বার্থে আঘাত না লাগলে এরা প্রকাশ্য হতেন না খুব একটা; আগেকার দিনে এরা পাড়ার দোকানে বিবিসি আর ভয়েস অফ আমেরিকা শুনে চা খেতে খেতে বিশ্বরাজনীতি, দেশের রাজনীতির অবস্থা, ধান-চালের দাম, ইরাক যুদ্ধ ইত্যাদি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করার পর মিষ্টিমুখ করতেন ইংল্যান্ডের রাণীর পুত্রবধূর চরিত্র বিশ্লেষণ করে। এভাবে এই বিপ্লবীরা বন্ধুমহলে জ্বালাময়ী কথাবার্তা বলেই ক্ষান্ত দিতেন- অন্যদিকে শুধু কিছু মাথানষ্ট-বেকুব-আবেগপ্রবণ পোলাপাইন রাস্তায় নেমে বা ভার্সিটিতে বা পাড়ায়-পাড়ায় অন্যায়ের প্রতিবাদ করতো- আত্মাহুতি দিত। কিন্তু এদের গোণাতে খুব একটা ধরার নিয়ম নাই কারণ এরা সামনে থেকে লড়াই করে-এদের কারো কারো নাম লোকে জানলেও এদের গুরুত্ব কম-এরা সত্যিকারের বীরপ্রজাতির কেউ নাঃ যুদ্ধক্ষেত্রে সবার আগে কারা শত্রুর কাছে মারা যায়? পদাতিকরা। দাবা খেলায় কারা সবার আগে এগিয়ে যায়? বোড়েরা। রাজা কিন্তু একদম তার শান্তির নিরাপদ জায়গাটিতে বসে থাকে। একদম নিজের উপর আক্রমণ না হলে রাজা কি এগিয়ে গিয়ে শত্রুর গৃহে হানা দেয়? দেয় না। রাজার কাজ শুধু জায়গায় বসে গাঁইগুঁই করা। ব্যক্তিগত জীবনে তাই "আমরা সবাই রাজা"-এই ভাব নিয়েই এই বিপ্লবীরা চলতেন।

এখন দিন বদলিয়েছে। কিন্তু এই রাজাদের রাজত্ব এখনো আছে- এদের বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা এখন অবশ্য আরও প্রকাশ্য। ফেসবুক আর ব্লগের সুবাদে এই সত্যিকারের সাহসী-বীর-রাজারা এখন তাদের বিপ্লব জনে জনে ছড়িয়ে দিতে পারেন। এখন বিপ্লব করা অনেক সোজা, ফেসবুকে আর ব্লগে অহরহ প্রতিনিয়ত বিপ্লব হচ্ছে...আজকে আবুলের পেট খারাপ- চল বিপ্লব করি, আজকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে- চল বিপ্লব করি, আজকে রিক্সাওয়ালা ২ টাকা ভাড়া বেশি নিয়েছে- চল বিপ্লব করি। এই বিপ্লবে আমরা সকলেই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে অংশ নেই, সকলেই অহরহ বিপ্লব করে ফেলছি- আজ সকালে আমি এক বিপ্লবের ডাক দিলাম তো দুপুরেই আমার পাশের বাসার মেয়ে আরেক বিপ্লবের ডাক দিল- আমিও তাতে সহমত প্রকাশ করলাম। এই বিপ্লব চলতেই থাকে, চলতেই থাকেঃ কিছু বোড়ে এইসব বিপ্লব বেশি সিরিয়াসলি নিয়ে মারা পড়ে- আর আমরা আমাদের নিরাপদ-সুসংহত রাজত্বে বসে বিপ্লবীর ভাষণ দিতে থাকি। আমরা রাজা- আমাদের রাস্তায় নামা কিংবা বোড়ে হওয়া সাজে না; আমরা সবাই সৌদি রাজপুত্র- দুনিয়ার যত আইন আছে সব অন্যের জন্য। আমার কাজ শুধুই ডাক দেয়া- পালন করার দায়িত্ব ফালতু-মূল্যহীন লোকগুলার। "আসেন সবাই আজকে আম খাওয়া বন্ধ করি। আমি তিনদিন আম খাই নাই- আরও দুই দিন খাবো না; কারণ, আমের ভেতর পোকা। আমি নীরব বিপ্লবী-তিনদিন ধরে বিপ্লব করছি! অন্যরা সবাই- আম খাওয়া বন্ধ করুন।"- এইরকম একটা বিপ্লবের ডাক দিয়ে আমের ঝুড়ি নিয়ে আম খেতে বসি। এই গোত্রভুক্ত আমরা প্রায় সবাইঃ শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত-সুবিধাবাদী-মধ্যবিত্ত-উচ্চবিত্ত...সবাই। নিজের জীবন থেকে উদাহরণ দেইঃ দিনে একসময় তিন প্যাকেট বিড়ি ফুঁকতাম, কিন্তু ছোট ভাইয়ের বন্ধু কাউকে বিড়ি ফুঁকতে দেখলেই ধরে "থাবড়া" দিতে ইচ্ছা হতো- বুঝাতাম, "শোন ভাইয়া, বিড়ি খাওয়া ভাল না।"

এইরকম বিপ্লবের আরও কিছু উদাহরণ সাম্প্রতিককালে ফেসবুক-ব্লগগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এইরকম বিপ্লবের মূল কারণঃ বিএসএফ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষদের হঠাৎ করেই (?!) যেন দুই-তিন দিন ধরে মেরে ফেলছে অথবা নির্যাতন করছে! (এইরকম গত বছরও করেছিল, ফালানী নামের এক মেয়েকে মেরে ফেলেছিল- ফেসবুকে দেখেছি, হুঁ হুঁ। এইরকম আর কাঁহাতক সহ্য হয়! তখনও কিন্তু বিপ্লব করেছিলাম ফেসবুকে!) তাই আমরা মৌসুমি আবেগে ভর করে গলা ফাটিয়ে বলছি, "ভারত রাজ নিপাত যাক- আজ থেকে ভারতের 'সব' পণ্য ব্যবহার করা 'চিরতরে' বন্ধ"! অবশ্য কাল যদি শাহরুখ খান/ক্যাটরিনা কাইফ বাংলাদেশে আসে, তখন আমরা তাদের জুতার সুখতলা চেটে দিয়ে বলবো, "শাহরুখ/ক্যাটরিনা সারা দুনিয়ার, তারা ভারতের প্রোডাক্ট না। শাহরুখ/ক্যাটরিনার সাথে (সাথে আরও পড়ুনঃ হিন্দি সিরিয়াল/বলিউড মুভি) পলিটিক্স মেশাবেন না।" কেউ কেউ আরেকদফা এগিয়ে বলবেন, "শাহরুখ/ক্যাটরিনা মুসলমান/মুসলমান-ব্রিটিশ, ভারতীয় না।" ঠিক যেমন উনারা বলেন, "ক্রিকেটে পাকিস্তান সাপোর্ট করা উচিত, কারণ তারা আমাদের চেয়েও বেশি মুসলমান। খেলার মধ্যে রাজনীতি/ধর্ম মেশাবেন না।" এই যেমন কিছুদিন আগে পরিচিত-প্রগতিশীল এইরকম একজন যিনি পাকিস্তানী পণ্য বর্জনের আহ্বান করেন প্রায়শই, পাকিস্তানী প্রোডাক্ট বলে সেজান জুস খাননা, তিনি ঢাকা বাণিজ্যমেলায় পাকিস্তানী পণ্য কিনে গর্বিত-মুগ্ধ হয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন।

আমরা, মানে এই ধরনের বিপ্লবীরা, একটু কম স্মৃতিশক্তির অধিকারী। বিএসএফ এর নির্যাতন-হত্যা কিন্তু কম দিন ধরে চলছে না! আমার বাংলাদেশের সীমান্তে বেশ কয়েকবার যাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা আমাদের থেকে আলাদা- দুই পাড়ের মানুষরা বেশ সৌহার্দ্যে বসবাস করে; কেউ কেউ পণ্য এপার-ওপার ব্যবসায় জড়িত; কেউ কেউ দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সহযোগিতায় মানুষও এপার-ওপার করে থাকে। কিন্তু সবকিছুর উপরও, বাংলাদেশের দিকের মানুষদের সবসময় ভয়ে থাকতে হয়! কখন ওপাড়ের কারও একটু শিকার বা সই প্র্যাকটিস বা একটু মাতলামি বা একটু মজাক করতে ইচ্ছা হয়- নদীতে গোসল করার সময়ও একটা চোখ নদীর ওইপাড়ে রাখতে হয়। এইরকম অনেকদিন থেকেই ঘটে আসছে, বেশিরভাগই আমাদের চোখের আড়ালে রয়ে যায়...প্রতিবছর বিএসএফ দ্বারা যতগুলো নির্যাতন-হত্যা পত্রিকাতে আসে, আসল সংখ্যাটা তার চেয়ে আরও অনেক অনেক বেশি...এর কিয়দংশও দেখতে চাইলে, অগ্রজ সচল ধুসর গোধূলির এই ডাটাবেজটি দেখে আসতে পারেন। সচলে ধুসর গোধূলির লেখা পড়ে অনেকেই পিঠ চাপড়ে দেই, কিন্তু কখনো খেয়াল করিনা তার প্রতিটি কমেন্টের নিচের সিগনেচারটিতে কী লেখা আছে!

আমাদের মধ্যে আবার কেউ কেউ আছেন, যাদের এই ভারতবিরোধী এই বিপ্লব অনেকদিনের (কারও কারও সেই ১৯৭১ থেকেই) কিন্তু তা কাঁঠালপাতার সাথে সম্পর্কিত। "পাকিস্তান থাকলে বাংলাদেশের লোকদের উপর ভারত এরকম অত্যাচার করতে পারতো? পারতো না। ভারত খারাপ, কারণ তারা মালাউন। ভারত খারাপ, কারণ পাকিস্তান ভাঙলে তাদের লাভ; সেজন্যেই তারা স্বাধীনতার সময় আমাদের সহায়তা করেছিল- পুরোটাই নিজের স্বার্থ! বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এখন ভারত চালায়। সেজন্যই হিজবুত তাহরীর এর সেনারা বিদ্রোহ করেছিল। আফসোস, সেটা সফল হয় নাই। আগে বিডিআর যখন ছিল, তখন বিএসএফ বিডিআর দেখলেই প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলতো! এখন এই সরকার ভারতের তাবেদার-পুতুল সরকার বিএসএফ এর স্বার্থে বিডিআর ধ্বংস করে দিয়েছে!"

আরেকদল বিপ্লবী মনে করেন, ভারত আমাদের বন্ধু-তারা আমাদের স্বাধীনতা পেতে সাহায্য করেছে। তাদের কাছে আমরা ঋণী। মাঝে মাঝে এমন হতেই পারে। আর দুনিয়ার সকল বড়ভাই একটু-আধটু চড়-চাপড় মেরেই থাকে। এখন ভারতের সাথে সম্পর্ক ভাল হচ্ছে। এইসব অঘটন সাজানো কিংবা অনেকদিন ধরেই হচ্ছে; এখন সেগুলো মিডিয়ায় তুলে এনে একদল জামাতি ফায়দা লুটতে চায়। উনাদের মতানুসারে, যে ডাক্তার সন্তানের জন্মদানে সহায়তা করেছেন, সেই ডাক্তার আমার বউ-সন্তানকে সারাজীবন ধর্ষণের অধিকার পেয়ে গেছেন!

এই দুই দল বিপ্লবীদের প্রতি আমার কথাঃ ভাইয়েরা, আপনারা মনে হয় ভুল দেশে আছেন এবং মীরজাফরের যে ভয়ংকর রোগটি ছিল সেটা আপনারও আছে। সেটা সারান নাহলে আপনার নিজের প্রিয় দেশটিতে ফেরত যান (এর মধ্যে কতিপয় মন্ত্রী-আমলা-উপদেষ্টা ও বিরোধীদলীয় নেতারাও আছেন)। আমরা জাতিগতভাবে খুব দুর্ভাগা, দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন রপ্তানিযোগ্য বেজন্মা-হারামখোর-মীরজাফর তৈরি হয় বাংলাদেশে... "নিজের দেশের কে কত ক্ষতি করতে পারে (সহজ বাংলায় "পুটু মারতে পারে")-এর উপর কোনো অলিম্পিক হলে বাংলাদেশ মনে হয় সবগুলো পদক নিয়ে আসতো। এই যেমন ধরুন, "টিঁপাইমুখ বাঁধ" বা "সীমান্তে বিএসএফ এর হত্যা-নির্যাতন" এসবের জন্য আমাদের সবার লড়াই করার কথা ভারতের বিরুদ্ধে। সেখানে আমাদের লড়াই করতে হয়, আমাদের স্বজাতি বলে পরিচয়দানকারী কিছু ক্ষমতাধর মীরজাফরের বিরুদ্ধে!

সে যাই হোক, আমরা বুঝে গেছি, আমাদের সরকার নপুংসক-ধ্বজভঙ্গ-নতজানু। তারা সীমান্তের এই হত্যা বন্ধে মিনমিন করে দুয়েকটা কথা বলেছেন; আর দেশের মানুষকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, এইসব সীমান্তবর্তী লোকগুলা মরাই উচিত-এরা চোরাকারবারী-গরীবস্য গরীব। সরকার এদের দায় নিতে রাজী নয়- কারণ সেটা আবার ভারত-বাংলাদেশের সদ্য গড়ে ওঠা প্রেমে-বন্ধুত্বে ভাঙন ধরাতে পারে। আর সরকারের একজন নগণ্য নাগরিককে রক্ষার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। সমস্যা হচ্ছে, আমরা কেউ কেউ ভারতকে যতই আমাদের প্রেমে গদগদ মনে করি না কেন, তাদের কাছে আমরা আসলে "ফালতু ডিসপোজেবল বস্তু"।

তাই আমরা আজ ভয়ংকর রাগে রাগান্বিতঃ হাতের কাছে বিএসএফ পেলে এখনই আট-দশটাকে শুইয়ে দিতাম। সেটা যখন পারছি না, তাই মহাসমারোহে বিপ্লবের ডাক দিচ্ছিঃ "আজ থেকে 'সব ধরনের ভারতীয় পণ্য' বর্জন করুন সবাই, আমি অনেক দিন আগে থেকেই চিরতরে ভারতীয় পণ্য বর্জন করেছি"। কিন্তু সমস্যা হল, ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বানকারীদের প্রথম সারির অনেকেই বেশ মারাত্মক ধরনের রাজা! জান দেব তবু মান দেবনা- অসম্ভব শক্ত তাদের প্রতিজ্ঞা। সবাইকে সবধরনের ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়ে জ্বালাময়ী স্ট্যাটাস ও পোস্ট সহযোগে বিপ্লব করে ফেলার আধঘন্টা পরই তারা "বেস্ট হিন্দি সং এভার" টাইটেল দিয়ে আরেকটা বৈপ্লবিক পোস্ট দিয়ে দেন। উনারা দিতেই পারেন, উনারা রাজা- উনারা যুদ্ধের ডাক দেবেন, পালন করবেন অন্যরা। এই বিপ্লবীদের অনেকেই কিন্তু ভারতীয় সিনেমা (আরও নির্দিষ্ট করে বললে হিন্দি সিনেমা) ছাড়া দেখেন না, হিন্দি গান ছাড়া কো্নো গান খুব একটা শোনেন না, বাসায় হিন্দি ছাড়া আর কোনো চ্যানেল চলে না, দেশে বসেই হিন্দিতে কথা বলেন বা কথায় কথায় হিন্দি ব্যবহার করেন আর বিদেশে হলে ভারতীয়-পাকিস্তানী লোক দেখলেই হিন্দি-উর্দুতে বাৎচিত করে জাতে ওঠেন, গোপনে ভারতীয় পর্ন দেখেন অথবা ভারতীয় সাইটগুলোতে ধুমায়া ব্রাউজ করেন, বিয়ে থেকে শুরু করে সুন্নতে খৎনা সহ যেকোন কিছুর শপিং করেন ভারতে, চিকিৎসার জন্য ভারতে যান, বেড়ানোর জন্যও ভারতই শ্রেষ্ঠ গন্তব্য, আর চোরাপথে ভারতীয় গরু বা পেঁয়াজ-ডাল-ডাইল বা যেকোন জিনিস আসা কমে গেলে সরকারের চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করেন, ভারতীয় পশু ছাড়া কোরবানি দেন না (মনে আছে গত কোরবানি ঈদের কথা? ভারতীয় গরু আসা একটু টাইট দেয়াতে সরকার পতনই হয়ে যাচ্ছিল), ভারতীয় স্টাইলেই জামাকাপড়-শাড়ি-গহনা পরেন...তারপর বিএসএফ একটা কিছু করলে/টিঁপাইমুখ বাঁধ তৈরি হওয়ার উপক্রম হলে মিনিট পনেরোর একটা ভারত বিরোধী উত্তেজনা বোধ করেন আর গজরাতে থাকেন, "শালার ইন্ডিয়া, মালাউনরা দেশটাকে শেষ করে দিল!" এইসব স্টান্টবাজির দেশপ্রেম/স্বজাতিপ্রেম বেশ কাজেরঃ নিজের বিবেকের কাছে পরিষ্কার থাকা যায়- দেশপ্রেমের উদাহরণ হয়ে থাকা যায় (নিজেও তার মধ্যে পড়ি)।

সেই বিপ্লবের বাণীতে অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের দেশের মানুষ ব্যবহার করে এমন কিছু তালিকা খুঁজে পেলাম- এক, দুই, তিন, চার এবং পাঁচ

এসব পণ্যের তালিকা দেখে শিউরে উঠলাম, লজ্জায় মাথা নত হলো, আর নিজের উপর ভীষণ রাগ হলো- কারণগুলো পরে বলছি। এই তালিকার বাইরে আরও হাজারো জিনিস আছে। যারা আজ থেকেই চোখ বন্ধ করে চিরদিনের জন্য ভারত-ভারতীয় পণ্য বর্জন করছেন তাদের প্রতি সন্দেহ জাগল- হয় এরা মহামানব নাহলে এরা বিপ্লবী রাজা- উনাদের এতে মানসিক সমর্থন আছে, কিন্তু এইসব পালন করা উনাদের দায়িত্ব না। কেউ কেউ অতিবিপ্লবীঃ এই মুহূর্ত থেকে ভারতের সবকিছু চিরতরে বা ভারতকে চিরতরে বর্জন করছেন কিন্তু ভেবে দেখছেন না তারা কতবড় মিথ্যা বলছেন। যে কাপড়টি তিনি পড়ছেন তার তুলা হয়তো ভারত থেকে আসা, যে ট্রেন-বাস-সিএনজি তে তিনি চড়ছেন সেটি হয়তো ভারতীয়, যে কোম্পানিতে চাকরিটি তিনি করছেন সেটি হয়তো ভারতীয় কো্নো মালিকের, যে পেঁয়াজ সহযোগে গরুর ভুনা তিনি খেলেন সেটিও ভারতীয়, তেন্ডুলকারের যে চারটি দেখে তিনি তালি দিলেন সেটিও একজন ভারতীয়র ব্যাট থেকে আসা...অন্যদিকে, আমরা যারা প্রবাসী, তাদের কাছে ভারতীয় মুদি দোকান অনেক আকাঙ্ক্ষিত; ভারতীয় রেস্টুরেন্ট অনেক প্রিয়। যে কলিং কার্ডটা ব্যবহার করে দেশে ফোন দিচ্ছি, সেটিও অনেক ক্ষেত্রেই ভারতীয়। এই ব্যাপারগুলো মাথায় আসতেই ভয়ে গা শিউরে উঠলো!!! ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ-আধিপত্যবাদের এই নগ্ন রূপটি হঠাৎ করেই ধরা পড়লো যেন!!! বিস্তারিত জানতে এই পোস্টে চোখ রাখুন।

বিদেশের কথা বাদ। শুধু বাংলাদেশেই বহুবছর ধরে আস্তে আস্তে সুচিন্তিতভাবে ভারত আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে, ধীরে ধীরে দখল করে নিচ্ছে সবকিছু। একসময় জুজুর ভয় শুনতামঃ ভারত সৈন্য পাঠিয়ে বাংলাদেশ দখল করে নেবে, মসজিদে-মন্দিরে উলুধ্বনি শোনা যাবে। সেটা করার যৌক্তিক কোনো প্রয়োজন আমি দেখছি না! একটা দেশ সামাজিক-রাষ্ট্রীয়-অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক-পরিবেশগত-কৃষিগত ভাবে ভারতের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে (বা পড়েছে)। আর আমরা সেটা চোখের সামনে দেখেও কিচ্ছু টের পাইনি, বা টের পেতে চাইনি। সেটা আস্তে আস্তে শুরু হয়েছে আকাশ সংস্কৃতির মাধ্যমে স্লো পয়জনিং করেঃ প্রথমে বিলাসদ্রব্য তারপর ধীরে ধীরে সবকিছুর (অপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের) চাহিদা তৈরি করে। একটা সময় ছিল বাঙালি মধ্যবিত্তের ড্রয়িংরুমের বিলাস দ্রব্যের আধিক্যের চেয়ে আদর-আতিথেয়তার মাধ্যমে যাচাই হতো তার সামাজিক অবস্থান, যখন ভারতের ত্রিপুরা-পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বাংলাদেশের নাটক দেখার জন্য হাঁ করে বসে থাকতো, যখন বাংলাদেশের তিব্বত স্নো বা পাটের ব্যাগ ভারতীয়দের কাছে অনেক আকাঙ্ক্ষিত ছিল! আর এখন আমরা বছরে দুই হাজার কোটি টাকার উপরে ভারতকে দেই শুধু তাদের চ্যানেল দেখার আশায়। কে বলে বাংলাদেশ গরীব?!!

এই অবস্থায় সামাজিক প্রতিযোগিতা-শো অফের কারণে গত কোরবানির ঈদের সময় যখন ভারতীয় গরু আসা বন্ধ হলো, মানুষের মাথায় আগুন লেগে গেল! ভারতীয় লেহেঙ্গা-শাড়ি ছাড়া দেশে একটা বিয়ে বা একটা সামাজিক অনুষ্ঠানও হয় কিনা (মধ্যবিত্ত-উচ্চবিত্ত সমাজে) আমার সন্দেহ আছে...মনে পড়লো, একবার যখন দোকানে দোকানে ভারতীয় শাড়ি ধরা শুরু করলে দোকানীরা ধর্মঘট শুরু করেছিল! মানুষজনও ক্ষেপে গিয়েছিল, "ফাইজলামি, ইন্ডিয়ান শাড়ি-কাপড় ছাড়া চলবে কেম্নে?" কিছুদিন আগে দু-এক দিনের জন্য ভারতীয় চ্যানেল বন্ধ থাকায় অনেক ক্যাবল ব্যবসায়ীর ব্যবসা হুমকির মুখে পড়ে গিয়েছিল। কেউ কখনো ভারতে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছেন? গেলে জানবেন, আপনি বাংলাদেশ থেকে এসেছেন শুনলে তারা কী চমৎকার ব্যবহার করেন। বাংলাদেশের ডাক্তারদের সাথে ভারতীয় ডাক্তারদের একটাই পার্থক্যঃ তারা আপনাকে সময় দেন এবং মিষ্টি করে কথা বলেন। আজকাল দেশের বিয়েতে অনেক জাঁকজমকের সাথে অনেক রিচুয়াল দেখি- সেগুলোও ভারতীয় আমদানি। এইভাবে ভারতের চতুর কৌশলে আজ বাংলাদেশ নিজের শিল্প-কৃষি-সংস্কৃতি-কৃষ্টি বিসর্জন দিয়ে ভারতের দেখানো পথে চলছে- দেশের লোক কোমরের লুঙ্গি মাথায় বেঁধে ইজ্জতদার হচ্ছেন। অনেকে বলছেন হিন্দি চ্যানেল বন্ধ করে দিতে। দিন...দেশের গৃহিনীরা এবং স্কুল-কলেজ-ভার্সিটির মেয়েরা কুড়াল হাতে রাস্তায় নেমে আসবে। অবশ্য আজকাল বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোতে নিয়মিত হিন্দি গান-ছবি-অনুষ্ঠান দেখানো হয়। দেশের পত্রিকার প্রতিদিন অন্তঃত অর্ধেক পাতা বরাদ্দ থাকে ভারতের নায়ক-নায়িকা-গায়ক-গায়িকারা কী করলেন তার উপর।

এখন দেশের সরকার নপুংসক বলে জনগণও কি নপুংসক? আমরা কি ভুলে যাচ্ছি না, সরকারের নপুংসকতার-দুর্নীতির-নতজানুতার দায় দেশের নাগরিকদের উপরও বর্তায়। সরকারের ব্যর্থতা/অন্যায় পুষিয়ে দেয়ার দায়ও কিন্তু দেশের নাগরিকদেরই (উদাহরণ হিসেবে বলা যায় স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমেরিকান সরকারের অন্যায়ের প্রতিবাদ আমেরিকানরা বেশ প্রবলভাবেই করেছিল।) এখনকার এই অবস্থা, বিএসএ্ফ এর হত্যা-নির্যাতন বেড়ে চলার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী মনে হয় আমরাই। নিজেরা কখনো সেভাবে শক্ত করে একযোগে কো্নো প্রতিবাদ করেছি? রাস্তায় নেমে কোনো মিছিল করেছি এর প্রতিবাদে? দেশ-বিদেশের মিডিয়াতে প্রচার হয় এমন কোনো প্রতিবাদ কি করেছি? নিজেদের সবসময় অসহায়-নির্যাতিত-পাল্টা আঘাত হানার ক্ষমতাহীন হিসেবে উপস্থাপন করার কারণে যখন তখন যে কেউ তো ইজ্জতের উপর হাত দেবেই- সাত চড়ে রা' না করলে, আরও হাজার চড় খেতেই হবে। এখন নিজেদের সক্ষমতার প্রমাণ আমরা কীভাবে দিতে পারি? ফেসবুকে-ব্লগে বিপ্লবের মাধ্যমে? সবসময় আমরা যেরকম করে এসেছিঃ রাজা হিসেবে বসে থেকে মৌসুমি-হুজুগে বিপ্লবের ডাক দিয়ে?

সত্য বলতে, আপনার প্রতিবাদটি তখনই ফলপ্রসূ হবে আপনি যদি আপনার মৌসুমি আবেগ-ক্ষণিকের রাগ-ধর্মতত্ত্বের আলোচনা-কন্সপিরেসি থিওরি বা অন্ধ ভারত-বিরোধিতার বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে এসে, শুধুমাত্র নিজের দেশের জন্য-নিজের দেশের সম্মানের জন্য-নিজের অধিকারের জন্য, আপনার জীবনের একটিবারের জন্য হলেও (মনগড়া-মিথ্যা) বিপ্লব বা সামাজিক স্টান্টবাজি ছেড়ে-আপনার রাজত্ব ছেড়ে মন থেকে সব "বোড়ে"দের সাথে মিশে একসাথে চিৎকার করে বলেন, "আমি সীমান্তে বিএসএফ এর হত্যার (এবং টিঁপাইমুখ বাঁধ তৈরির) প্রতিবাদে একটি দিনের জন্য (যতটুকু সম্ভব) সব ভারতীয় পণ্য বর্জন করলাম" এবং সেই প্রতিজ্ঞাটা একটি দিন-শুধুমাত্র একটি দিনের জন্য সততার সাথে পালন করেন। শুধু একটু খেয়াল করে, বাংলাদেশের যেসব কিছু ভারতের তৈরি হওয়া সত্ত্বেও এখন বাংলাদেশের সম্পত্তি (যেমন সিএনজি), সেগুলো ব্যবহার করা বন্ধ করবেন না। শুধু সেই একটি দিন, আপনার এলাকার ডিশের লাইনে কোনো ভারতীয় কিছু চলবে না, আপনি কো্নো হিন্দি গান শুনবেন না, আপনি কোনো ভারতীয় সাইটে যাবেন না, ভারতীয় দোকান-রেস্টুরেন্টে খরচ করবেন না, ভারতীয় কো্নো পণ্য সেদিন কিনবেন না, অন্ধের মত বর্জন না করে নিজের বুদ্ধি ব্যবহার করুন- যতটুকু সম্ভব প্রাণপণ চেষ্টা করুন। ইউটিউবে সেদিন ভারতীয় গান দেখলে আপনার প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ হবে কী না সেটা আপনিই বুঝে নিন।

অগ্রজ সচল হিমু ভাই একটি দিন ঠিক করে দিয়েছেন। চলুন আগামী পয়লা মার্চ সবাই মিলে একযোগে আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জনের দিন হিসেবে পালন করি। অনেকের প্রশ্ন কেন মাত্র একটি দিন, কেন পুরো মাস নয়? অথবা কেন মার্চের এক তারিখ, কেন আজ থেকেই নয়? এর কারণঃ এই দিনটি আমরা চাই সারা দেশের প্রতিটি মানুষ জানুক-প্রতিটি মানুষ পালন করুক; সারা বিশ্বের যেখানে যত বাংলাদেশী আছেন সবাই মিলে পালন করুন- এই দিনটিকে দেশের সকল মিডিয়া-সকল পত্রিকা-সকল বন্ধুমহলে ছড়িয়ে দিন; সেজন্যেই এই সময়টুকু দরকার। আর সবচেয়ে বড় যে ব্যাপারটিঃ আমাদের এই বর্জন কর্মসূচী সারা বিশ্বের মিডিয়াকে জানাতে হবে- ভারতীয়দের জানাতে হবে। আপনার একার ফেসবুক বিপ্লবে সেটা খুব একটা দ্রুত কার্যকরী কিছু হবে না। কিন্তু বাংলাদেশের ১৫ কোটি মানুষ যখন একযোগে- সারা বিশ্ব জুড়ে এই প্রতিবাদটি করবে তখন সেটা ভারতকে যে ধাক্কা দেবে সেটা অনেক অনেক শক্তিশালী। আর আপনি-আমি সাধারণ মানুষ এক ধাক্কায় হিমালয়ের চূড়ায় ওঠার আশা করতে পারি, কারও কারও পক্ষে সেটা সম্ভবও। কিন্তু সবাই মিলে একসাথে আস্তে আস্তে ধাপে ধাপে হিমালয়ের চূড়ায় ওঠাটা অনেক বেশি কার্যকরী-অনেক বেশি অর্থবহ-অনেক বেশি বাস্তব। ভারতের সাথে বন্ধুত্ব আমরা চাই, সেই বন্ধুত্ব হবে সমান-সমান বন্ধুত্ব; সেই বন্ধুত্বের সম্মান-মর্যাদা ভারতকে দিতে হবে। নাহলে আমরাও ধাক্কা দিতে জানি- আমরা আর চুপ থাকবো না।

এর মানে এই নয় যে সেই একটি দিন পালন করে আমরা পরদিন থেকে আবার যেখানে ছিলাম সেখানে ফেরত যাব। তা নয় কিন্তু। আপনি এই দিনের পর থেকে আস্তে আস্তে ভারতীয় পণ্য ব্যবহার-ভারতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে সরে আসবেন (যতটুকু সম্ভব)। যদি এরপর আর কোনদিন বিএসএফ কোনো অন্যায় করে-ভারত কোনভাবে আমাদের সম্মানহানিকর বা অন্যায় কিছু করে, আমরা এভাবেই একটি দিন ঠিক করে ভারতকে ধাক্কা দেব-বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেব। এটা কিন্তু হিমালয়ে ওঠার প্রথম পদক্ষেপ...মাত্র শুরু। ধীরে ধীরে আমরা দেশ থেকে ভারতীয় পণ্যের উপর নির্ভরতা, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, অন্যায়ভাবে টিঁপাইমুখ বাঁধ তৈরির প্রতিবাদ-প্রতিরোধ শুরু করবো- সবাই মিলে; একটা দেশের ১৫ কোটি লোক মিলে একযোগে ধাক্কা দিলে-গর্জে উঠলে পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই আমাদের ঠেকাবে। পারবো না?

******
১লা মার্চের এই প্রতিবাদের উদ্দেশ্যে দুইটি ভিডিও যুক্ত করে দেয়া হলো- অনুগ্রহ করে ছড়িয়ে দিন।

বাংলায়ঃ

ইংরেজিতেঃ


মন্তব্য

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

স্বপ্নহারা এর ছবি

ধন্যবাদ!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

লেখা চ্বম হৈছে উত্তম জাঝা! । শেয়ার করলাম ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

স্বপ্নহারা এর ছবি

ঠিকাছে, ধন্যবাদ ভাইয়া!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

অকুতোভয় বিপ্লবী এর ছবি

আমরা বাংলাদেশিরা ব্যক্তিগতভাবে ভীষণ বিপ্লবীঃ ব্যক্তিগত জীবনে সেই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ বাথরুম ইচ্ছামত নোংরা করে ব্যবহার করা থেকে শুরু করে উড়োজাহাজের চাকায় চড়ে সাতসমুদ্র পাড়ি দেয়া সবকিছুতেই বিস্তৃত।

চলুক

------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।

স্বপ্নহারা এর ছবি

হ, আমিও বিপ্লবী!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

এলোমেলো মেঘ এর ছবি

আমি প্রথম কমেন্ট করছি না বুঝতে পারছি না. তবে খুব সত্য আর চিরন্তন মনে হচ্ছে. বিশেষ করে একটা কথা তো আমার মনে হলো এর চেয়ে বড় সত্য তো মনে হয় আমি আমার থিসিস পেপার লেখার সময় ও পড়ি নাই. 'বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মান এর রপ্তানি যোগ্য মীরজাফর এর জন্ম দিচ্ছে সবচেয়ে বেশি'.
আমি কিছুক্ষণ হলো ফেসবুক এ একটা প্রতিবাদ গ্রুপ ওপেন করেছি. .বাসায় ফোন করে আমার ইচ্ছা টা প্রকাশ করব.তবে ওরা মানবে কিনা সেটা আমি জোর দিয়ে বলতে পারি না. আমি আমার মত যথাসাধ্য চেষ্টা করব এটা বলতে পারি.

স্বপ্নহারা এর ছবি

চেষ্টাটা জোর করে নয়, আমাদের মন থেকে হওয়াটা জরুরি।

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

১লা মার্চ হুট করে একদিন 'কোনোমতে দাঁত চেপে' ভারতীয় প্রোডাক্ট বর্জন করার দিন না হোক। বরং, সেটা হোক স্বতস্ফুর্ততায়, আত্মোপলব্ধি থেকে। এবং ১লা মার্চ হোক আমাদের প্রতিবাদের শুরু, শেষ নয়। সেইজন্যই, মাঝের এতোগুলো দিন।

স্বপ্নহারা এর ছবি

আমিও সেটাই বলি। গায়ের জোরে বা স্টান্টবাজির বর্জন না, আমরা চাই মন থেকে করা কন্সট্রাকটিভ বর্জন।

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

কুটুম এর ছবি

ভারতীয় আগ্রাসন, মৌসুমি প্রতিবাদ ও আমাদের ভন্ডামি মন খারাপ

নাশতারান এর ছবি

পারতপক্ষে ভারতীয় পণ্য ব্যবহার করি না। সিনেমা-সিরিয়াল তো বাদই। ভারতীয় পণ্যের রমরমা বাজারে হিন্দি সিনেমা-সিরিয়ালের অনেক বড় অবদান আছে। ভারতীয় চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখে বাজারে ছোটেন এমন বাংলাদেশির সংখ্যা অনেক। ভারতীয় পণ্যের উপর অগাধ আস্থাশীলেরা মিছেমিছি ভার্চুয়াল বিপ্লবেও অংশ নেন না। একদিনের বর্জন অনেকেই করবেন জানি। তাও খুব একটা ভরসা পাই না। পোস্টটা পড়ে নিজের পুরোনো একটা লেখা দেখাতে ইচ্ছা হলো।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

স্বপ্নহারা এর ছবি

কেউ কেউ নেন কিন্তু। ফ্যাশন হিসেবেই...

লেখাটা পড়েছিলাম...আমারও মনের কথা

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

দ্রোহী এর ছবি

ওদিকে আমে-দুধে মিশে যাচ্ছে আর মাঝখান দিয়ে আপনে এসে ফোঁড়ন কাটেন? কারণ দর্শাও নোটিশ জারি হইলো বলে!

স্বপ্নহারা এর ছবি

মন খারাপ

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

দ্যা রিডার এর ছবি

চলুক তাই যেন হয় ...

স্বপ্নহারা এর ছবি

তাই যেন হয়...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

ধূসর জলছবি এর ছবি

হিন্দি সিনেমা সিরিয়াল দেখিনা ,ভারতীয় শাড়ি, চুরি ও পছন্দ করিনা,শাহরুখ, ক্যাটরিনা কে নিয়েও বিন্দুমাত্র উল্লাস নেই আমার, তাই আমার ধারনা ছিল আমি ভারতীয় পণ্য পারতপক্ষে ব্যবহার করি না ,ভারতকে বর্জন করা আমার জন্য সহজ। কিন্তু আপনার দেয়া তালিকা দেখে রীতিমত ভয় লাগছে । এত বিশাল আগ্রাসন !! কিভাবে এর ভিতর থেকে বের হব আমরা । নিজের কাজিন বোন গুলোকে সামান্য সিরিয়াল দেখার ঝোঁক থেকে বের করাতে আমার গলদঘর্ম হতে হয়্‌, এত কিছু থেকে কিভাবে সরে থাকব আমরা? হতাশ লাগছে ।আপনার আর এটা কথা খুব বেশী ভাল লেগেছে , আমি নিজেও এরকম বেশ কিছু মানুষ পেয়েছি যারা হিন্দি গান শুনতে শুনতে ভারতীয় আগ্রাসনের উপর ফেবুক স্ট্যাটাস দেয়। এদেরকে আমি ঘৃণা করি বলে স্ট্যাটাস দেয়ার পর আমাকে তারা ডিলিট করে দিয়েছে, কিন্তু এর বেশী কিছু করতে পারিনি,পারিনা।

স্বপ্নহারা এর ছবি

ঘৃণার কিছু নেই, শুধু হিপোক্রেসির এর একটা লিমিট আছে। একবারে ওঠা যাবে না, আস্তে আস্তে কমিয়ে দিলেই হবে। বিশ্বায়নের এই যুগে ব্যাপারটা ১০০ ভাগ সম্ভব নাও হতে পারে (প্রবাসীদের জন্য আরও কষ্টকর), তবু যতটা সম্ভব...আর সেটা মন থেকে সততার সাথে করতে হবে...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

অদ্রোহ এর ছবি

ধীরে ধীরে আমরা দেশ থেকে ভারতীয় পণ্যের উপর নির্ভরতা, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, অন্যায়ভাবে টিঁপাইমুখ বাঁধ তৈরির প্রতিবাদ-প্রতিরোধ শুরু করবো- সবাই মিলে; একটা দেশের ১৫ কোটি লোক মিলে একযোগে ধাক্কা দিলে-গর্জে উঠলে পৃথিবীর কোন শক্তি নেই আমাদের ঠেকাবে।

সহমত...

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

স্বপ্নহারা এর ছবি

সেটাই আমাদের বুঝতে এবং বিশ্বাস করতে হবে...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

অপলা এর ছবি

যদিও ভারতীয় জিনিস পত্র ছাড়া ভালো ই চলে যাচ্ছে, যদিও বলতে পারছি না তিন বেলা চায়ের চিনি দেশী না বেদেশী। আমার ব্যক্তিগত অভিমত, ভারতের পররাষ্ট্র নীতিকে আমরা হিংসা করতে পারি, তাদের মতো নীতি নির্ধারক আমাদের নেই, তা যোগ্যতার দিক বিবেচনা করে হোক বা দেশ প্রেম এর বিবেচনায় হোক তা মেনে নিতে লজ্জা থাকার কথা না। আর লজ্জা হলে, তাদের বর্জন করে আমাদের কিছু ই হবে না। সেটা ভারত বলে কথা না। এটা যেকোন দেশের বা প্রতিষ্ঠানের সাথে কথোপকথনের সময় ই সত্য। আমাদের পররাষ্ট্র নীতি যদি ' ।।।।' খাওয়ার উদ্দেশ্যে হয়, সবাই দিয়ে যাবে।।।।।।

স্বপ্নহারা এর ছবি

একটা দেশের উপর এতটা ডিপেডেন্সি ভাল নয়! সেটাও খেয়াল রাখতে হবে...নাহলে দিন কে দিন দয়ার উপর থাকার পরিমাণ বাড়তেই থাকবে...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

পদ্মজা এর ছবি

এই যুগে কেউ ঢাক-ঢোল বাজিয়ে সৈন্য সামন্ত নিয়ে দেশ দখল করেনা। সাংস্কৃতিক আর অর্থনৈতিক আগ্রাসনে বাংলাদেশ অনেক আগেই দখল হয়ে গেছে। কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে দিয়েছে মুক্ত বাজার অর্থনীতি।
নিজের দেশী তাঁতের কাপড় এর স্থান নিয়েছে বিদেশী কাপড়।
আমরা সবাই কিন্তু একসময় লালবাগের তেল মাথায় দিতাম। তাহলে এখন কেন প্যারাস্যুট দেই?
আমরা এয়ারোমেটিক কস্মেটিক্স যখন নিত্যনতুন উন্নতমানের কস্মেটিক্স তৈরী শুরু করলো তখন কেন ল্যাকমে'র পণ্য কেনা শুরু করলাম?

আমরা জ্ঞান পাপী।

স্বপ্নহারা এর ছবি

আমরা অতিরিক্ত বিলাসী...আসলেই জ্ঞানপাপী...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

তদানিন্তন পাঁঠা এর ছবি

১ মার্চ শুরু হোক। একদিনে হবে না সবাই জানে। সম্পূর্ণ ভাবে হতে হতে হয়তো আমরা অনেকেই কবরে চলে যাব। তবে দেশীয় বিকল্প আছে যেগুলোর সেসব পণ্য অন্য সব দেশেরগুলোই আস্তে আস্তে বাদ দিতে হবে আমাদের। আজকে ইন্ডিয়া আছে আমাদের বর্ডারে, কিন্তু চীনারাও কি তিব্বতের ব্যাপারে কম দেখিয়েছে? আমাদের বর্ডার ওদের সাথে হলে আমাদের সাথেও করত। শুভ সূচনার শুরুটা ১ দিনের ভারত বর্জন দিয়েই হোক।

স্বপ্নহারা এর ছবি

এভাবেই শুরু করতে হবে...এখনও যদি চোখ না খুলে তো কবে খুলবে? যেদিন ভারতের দয়ায় আমাদের বাঁচামরা নির্ভর করবে?!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

রানা মেহের এর ছবি

আপনার লেখাটা চমতকার লাগলো।
লক্ষ লক্ষ বিপ্লব থেকে এরকম একটা লেখা অনেক বেশি শক্তিশালি।
হিন্দি ফিল্ম পারতপক্ষে দেখিনা। সিরিয়াল প্রশ্নই ওঠেনা। ভারতের ক্রিস্প কিংবা ক্রিমে বিন্দুমাত্র কৌতুহল নেই। গান কিছু শুনি।তার থেকে বেশি আগ্রহ ভারতীয় নাচে।
ভারতের দুটো পন্যে আর্থিক সেবা দেই। লন্ডনে তাদের রেস্টুরেন্টে খাওয়া আর তাদের দোকানের শপিং।
এ দুটো পরিহার করে চলবো যতটা সম্ভব। পুরোপুরি পারবো বলতে পারছিনা পারিবারিক আর সামাজিক কারণে।

আমদের দেশটা একটা দুর্ভাগা দেশ। কিছুই আমাদের নয়। কিছু অংশ পাকিস্তানের কিছু ভারতের

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

স্বপ্নহারা এর ছবি

বিদেশের চেয়েও আমি দেশের এই নির্ভরশীলতা নিয়ে বেশি চিন্তিত। এই প্রতিবাদে দুইটা কাজ হবে, একঃ চোখের সামনে দেখতে পাবো আমরা ধীরে ধীরে নিজেদের কতটা পঙ্গু করে ফেলছি; দুইঃ ভারতের অন্যায়ের একটা প্রতিবাদ হবে- কাজ হবে কি হবে না সেটা পরের বিষয়। চেষ্টাটা করতে দোষ কোথায়!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

ওডিন এর ছবি

সবাইকে সবধরণের ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়ে জ্বালাময়ী স্ট্যাটাস ও পোস্ট সহযোগে বিপ্লব করে ফেলার আধঘন্টা পরই তারা "বেস্ট হিন্দি সং এভার" টাইটেল দিয়ে আরেকটা বৈপ্লবিক পোস্ট দিয়ে দেন।

দুর্দান্ত্ বলেছেন! পুরো মিলে গ্যালো সিনারিওটা! আমি এরই মধ্যেই অন্ততপক্ষে দুইজনকে দেখলাম ফেসবুকে হিমু ভাইয়ের লেখাটা শেয়ার দিতে (যাদের কেউই সচল পড়েন বলে জানা নেই, হয়তো অন্য কোথাও থেকে লেখাটার খোঁজ পেয়েছেন) তার একজনই একটু পরে একটা ধুমধাড়াক্কা হিন্দি সিনেমার গানের ইউটিউব লিঙ্ক শেয়ার করছেন!

যাই তাঁর ওয়ালে এই লেখার লিঙ্ক সেঁটে আসি শয়তানী হাসি

ধূসর জলছবি এর ছবি

চলুক

স্বপ্নহারা এর ছবি

জীবন থেকে নেয়া হাসি

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

অতিথি লেখক এর ছবি

ইরাকে বোমা হামলা হলে ইঙ্গ-মার্কিন পণ্য বর্জন করি, তিব্বেতে চীনা আগ্রাসনের খবর শুনে মুখের খাবার(চাইনিজ) উগড়ে দেই আর বি.এস.এফ পাছায় দুটো ডলা দিলে "মালাউন" বলে গালি দিয়ে "ভারতীয় চ্যানেল" পাশ কাটিয়ে চলে যাই। আর ডিসেম্বরে পাকিস্তানি পণ্য একটু লুকিয়ে-চুরিয়ে কিনি। দু'দিনের দুনিয়ায় আক্ষরিক অর্থেই "দু'দিনের প্রতিবাদ" দেখিয়ে নিজেকে দেশপ্রেমিক আর প্রগতিশীলদের কাতারে সামিল করে বিমলানন্দে চায়ে চুমুক দেই।
সবাই আবার সব ডাকে সাড়া দেন না, ডানহাতিরা যেমন চট করে কুর্তা বা পেশওয়ারই আতর ফেলে দিতে পারেন না, বামহাতিরা তেমনি "রাশান ভদকা" কাছেই রাখেন। আর শাহরুখদের না দেখলে ভাবি/বউদিদের ঘুম না হলে কি বা আর করা যাবে? কাহাতক আর আফিমের কৌটা দূরে রাখা যায়?
"আহা! করছে ওরা করুক না, তোমার অত হাঁকডাক দিয়ে লাভ কি?"- ছাপোষা মধ্যবিত্ত থেকে ের চাইতে বেশী আশা করলেই বুঝতে পারব, আপনি আসলে "প্রবাসী", দূর থেকে হাত দেখিয়েই দায় সারতে চান।
এই হরেক রকম বর্জনের একটা ভালো যোগসাজশ আছে। কোনক্ষেত্রেই(যেকোনো একটি বর্জনের পর নতুন পণ্যের লিস্টিতে) বাংলাদেশ নেই। দেশী পণ্যের প্রতি এই অ্যালার্জি আমাদের অবচেতন মনে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। অবশ্য এটা আমাদের "বিদেশ- প্রীতি" নেশার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। এ নেশার জালে আমরা নিজেরাই নিজেদের সঁপে দিয়েছি, এক্ষেত্রে "বিদেশী প্রভু" কিংবা "নীতিনির্ধারকদের" দোষ চাপানোর স্কোপ থাকলেও তা কোনভাবেই ৫০% এর বেশী না।

আর ঘৃণার বিষ বাষ্প ছড়ানোর চাইতে নিজের দেশকে, দেশের মানুষ- মাটিকে ভালবাসা অনেক সহজ, বাস্তবিক আর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হবে।
মার্চ ০১ এর প্রোগ্রাম সফল হোক, "স্বদেশী" আন্দোলনের রূপ নিক।

স্বপ্নহারা এর ছবি

মার্চ ০১ এর প্রোগ্রাম সফল হোক, "স্বদেশী" আন্দোলনের রূপ নিক।

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

উচ্ছলা এর ছবি

পুরো ব্যাপারটিতে আপ্নার চিন্তা ভাবনার সাথে পরিচিত হয়ে ভাল লাগল।

দারুন লিখেছেন।

স্বপ্নহারা এর ছবি

ধন্যবাদ। আপনার সব লেখাই মন দিয়ে পড়ি, ভাল লাগে!- সময়ের অভাবে কমেন্ট করা হয় না।

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

মাহ্‌মুদ এর ছবি

১ মার্চ আর কিছু না হোক, শুধু যদি কেবল টিভিতে সব ভারতীয় চ্যানেল বন্ধ করে তার পরিবর্তে টিভিতে একটা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া যেত ভারত বর্জন এর ব্যাপারে তাহলে বাসার আম্মু- আপুরা (আমিও তো, স্টারওয়ার্ল্ড , এইচ বি ও দেখি ) একদিনের জন্য হলেও সচেতন হয়ে কিছু ভাবনার খোরাক পেতেন, কারণ, এটা তো সত্যি , প্রায় প্রতি পরিবার এ তিন ভাগের দুই ভাগ সদস্য (মা, ভাবী, চাচী, পরিচারিকা) ভারতীয় চ্যানেল এই বিনোদন খুজে পান, কর্তা সারাদিন কর্মক্ষেত্রে থাকেন আর এই আমার মত শিক্ষিত তরুণ অন্তর্জাল নিয়ে থাকি, ফেবু তে অনেক স্ট্যাটাস দেই, কিন্তু সরাসরি আম্মু, আপু, ভাবী কে বলতে সঙ্কোচ বোধ করি একদিন এর জন্য ভারতীয় চ্যানেল/পন্য বর্জন করতে।

স্বপ্নহারা এর ছবি

সহমত। কিন্তু অন্যব্যাপারগুলোতেও নির্ভরশীলতা কমানোটা খুব জরুরি...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

বিলাস এর ছবি

ক্ষণকালের আবেগের চাইতে আসলে প্রকৃত উপলব্ধিই অনেক বেশি প্রয়োজন। লেখায় উত্তম জাঝা!

ফাহিম হাসান এর ছবি

ক্ষণকালের আবেগের চাইতে আসলে প্রকৃত উপলব্ধিই অনেক বেশি প্রয়োজন।

চলুক

স্বপ্নহারা এর ছবি

সেটাই আমি বলতে চাই সবসময়! একটা সুচিন্তিত প্রতিবাদ হাজারো অগোছালো বিপ্লবের চেয়ে উত্তম!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

ধ্রুবনীল এর ছবি

গুরু গুরু

কল্যাণ এর ছবি

গুল্লি গুরু গুরু ঘেঁয়াও...

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

মাসুম এর ছবি

আপনারে স্যালুট ! লেখায় উত্তম জাঝা!

সাফি এর ছবি

চমৎকার লিখেছেন। এরকম একটা সংঘবদ্ধ ধাক্কার প্রয়োজন আছে। ব্যবসায়ীদের শক্তি অনেক। এয়ারটেল যদি ব্যবসা করতে যেয়ে সমবেত ধাক্কা খায়, আর কারণ হিসেবে সীমান্তের আচরণ আসে তাহলে অবশ্যই তারা এর বিরুদ্ধে নিজের দেশে উচ্চকিত হবে।

স্বপ্নহারা এর ছবি

আমার আইডিয়াও সেটাই। প্রতিটা দেশ কন্ট্রোল করে কর্পোরেটরা। ধাক্কাটা সেখানে যত বড় আকারে দেয়া যাবে তত কাজ হবে। অগোছালো ভাবে একশ জন-দুইশ জন মিলে ব্যাপারটা ছাড়িয়ে ছিটিয়ে করলে কোন কাজ হবে না। এখন কেউ কেউ সংশয় প্রকাশ করছেন, বলছেন কিছুই হবে না। আমাদের দিক থেকে যদি চেষ্টাটা করি সংঘবদ্ধভাবে, এর এফেক্ট পড়তে বাধ্য। কিছু হবে কি হবে না সেটা নিয়ে চিন্তা না করে, একটা দেশের উপর এতটা নির্ভরশীলতা কতটা ভয়ংকর সেটা উপলব্ধি করা প্রয়োজন। মূল কথা একটাই, একটা সুচিন্তিত মিলিত ধাক্কা দেয়াটা বুঝিয়ে দেবে আমরা ক্ষিপ্ত- ভারতেরও বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করার ইচ্ছা আছে বলেই মনে হয়।

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

বাপ্পীহা‌য়াত এর ছবি

চলুক চলুক

১০০ ভাগ সহমত

চিলতে রোদ এর ছবি

আমার মনের কথাগুলো বলার জন্যে আপনাকে কিভাবে ধন্যবাদ দেব বুঝতে পারছিনা...

শুধু... স্যালুট! গুরু গুরু

স্বপ্নহারা এর ছবি

ধন্যবাদ।

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সচল জাহিদ এর ছবি

চলুক

একটা ভিডিও প্রেজেন্টেশন বানালে কেমন হয়? খুব তাড়াতাড়ি মানুষের কাছে এই কথাগুলো পৌছানো যায় সেক্ষেত্রে।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

স্বপ্নহারা এর ছবি

হ্যাঁ, আমাদের আরও কার্যকরী নানা আইডিয়া লাগবে...এবং সেগুলা বড় আকারে করতে হবে।

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

দীপ্ত এর ছবি

ভিডিওটা কি ইংরেজিতেও করা সম্ভব? তাহলে প্রবাসী বাংলাদেশীরা নিজের সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে সেটি প্রকাশ করতে পারে। কারণ আমাদের প্রতি অন্যায় যে ঘটছে সে তো আমরা জানিই, কিন্তু সারা পৃথিবীকে জানান দরকার। প্রবাসীদের যেহেতু অন্য দেশের মানুষের সাথে মেলামেশা বেশী। তাদের জানানোর খাতিরে ইংরেজি দরকার। খুব বড় কিছু হবে না হয়তো, কিন্তু দুইটা দেশ শান্তিতে পাশাপাশি থাকার পরও এভাবে সীমান্তে হত্যা কার্যক্রম চলে আসছে, এটা যে অস্বাভাবিকতা এটা পৃথিবীর অন্য প্রান্তের মানুষের জানা প্রয়োজন।

উচ্ছলা এর ছবি
স্বপ্নহারা এর ছবি

ইংরেজিতেও করছি। আপনিও হাত লাগান...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

ঝুমন এর ছবি

এই অবরোধের সাফল্যের ব্যাপারে যে শঙ্কা দেখা যাচ্ছে সেটাই হোক আমাদের নির্লজ্জ্বতা দূর করার হাতিয়ার।

হিমু এর ছবি

উচ্ছলা এর ছবি

নির্মাতাকে স্যালুট। ফেইসবুকে শেয়ার করলাম এই আশায় যে, হয়তো ইন্ডিয়ার প্রেমে মশগুল প্রবাসী বাঙালীদের একটুখানি হুঁশ হবে।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

স্বপ্নহারা এর ছবি

এটা ইংরেজিতে করাচ্ছি।

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

করা হলে লিংকটা এখানেও দিয়েন স্বপ্নহারা ভাই।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

স্বপ্নহারা এর ছবি

হ্যাঁ, লেখায় যোগ করে দিলাম!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

স্বপ্নহারা এর ছবি

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

স্বপ্নহারা এর ছবি

এটাও লেখায় যোগ করে দিলাম!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

দীপ্ত এর ছবি

বর্জন দিয়ে শুরু হোক, আর এর শেষ হোক নিজেরাই নিজেদের অধিকতর যোগ্য, অধিকতর আত্মনির্ভরশীল করে তোলার মাধ্যমে। ব্যক্তি পর্যায়ে প্রত্যেক মানুষ যখন নিজের সর্বোচ্চটুকু বিনিয়োগ করবে দেশের জন্যে (যেমন ধরুন আমি যদি ডাক্তার হই তাহলে এমন কেউ হতে চেষ্টা করি, যার চিকিৎসায় আস্থা রেখে মানুষকে ভারতে যেতে না হয়, যদি শিক্ষক হই তাহলে বাচ্চাদের দেশপ্রেমের কাহিনীগুলো গল্পচ্ছলে বুঝিয়ে বলি, যদি গবেষক হই তাহলে দেশের রুপকথা-উপকথা বা যাত্রাপালার ইতিহাসটা পড়ে দেখি, কিভাবে নিজেদের সংস্কৃতির ব্র্যান্ড গড়ে তোলা যায় তা নিয়ে ভাবি ইত্যাদি) তখন আর এই যে দ্বিধা যে ভারতীয় পণ্য ব্যবহার না করলে আমাদের দিন চলবে কেমন করে তাতে আর থাকতে হবে না। এই ধরনের উদ্যোগের ফল পেতে সময় লাগে অনেক, তাই মাঝখান দিয়ে যদ্দূর পারি ওদের পণ্য/ সেবা ছাড়াই চলতে চেষ্টা করতে পারি।
ভারতের কি কি পণ্য আমরা ব্যবহার করি দেখে আঁতকে উঠলাম, এত লম্বা লিস্ট । মন খারাপ

স্বপ্নহারা এর ছবি

সহমত। বোধোদয়টা জরুরি...এই প্রসেসে সময় লাগবে কিন্তু ফল পাওয়া যাবে নিশ্চিত!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

তাপস শর্মা এর ছবি

বিশ্লেষণটা খুবই ভালো লাগল দাদা। আপনি প্রতিটি বিষয় যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করলেন দেখে লেখাটির প্রতি চলুক চলুক চলুক

স্বপ্নহারা এর ছবি

ধন্যবাদ দাদা...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

মুহাম্মদ আশরাফুল আলম এর ছবি

অবশেষে বলা যায় ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের মৌসুমি প্রতিবাদ আমাদের ভন্ডামির চেহারায় নতুন মাত্রা দান করল। কিন্তু ১ মার্চ এর ভারত বন্ধ এর লেখাটা পড়ে আমি যে গতকাল এয়ারটেল সিম বন্ধ করা থেকে শুরু করে কম্পু হতে সব রকম ভারতীয় সিনেমা ও গান ডিলিট করে দিলাম !!!
আপনার লেখাটা পড়ে নিজেকে কেমন যেন ভন্ড ভন্ড লাগছে । অথচ ভাল মানুষ বলেই এতদিন আমি আমাকে চিনতাম।

চিলতে রোদ এর ছবি

পুরা লেখা না পড়িয়া চেঁচাইতেছেন ক্যানো???

স্বপ্নহারা এর ছবি

একটু বুঝিয়ে বলবেন ভাইয়া ঠিক কী বলতে চাইছেন? আমরা সেই ভন্ডামিটা ছেড়ে একটা সর্বস্তরের প্রতিবাদ চাইছি...দুদিন পর আবার একজন মরবে, আমরা ক্ষেপে লাল হয়ে যাব আর কিছুক্ষণ পর ভুলে যাবে এতে কাজের কাজ কি কিছু হবে? করেছেন ভাল করেছেন...আর ফিরিয়ে আনবেন না। নির্ভরশীলতা যতটা কমাতে পারা যায় ততই আমাদের জন্য ভাল...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

মুহাম্মদ আশরাফুল আলম এর ছবি

আপনার সাথেতো দ্বিমত করিনি।
নিজেকে (দের) নিয়ে আসলে ভীত আমি। কিছুদিন আগে সোনাবরুর জন্যও ক্ষেপে উঠেছিলাম সবাই মিলে।

স্বপ্নহারা এর ছবি

হ! মন খারাপ

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

guesr_writer rajkonya এর ছবি

আমরা খেলার মধ্যে রাজনীতি মেশাই না বলে পাকিস্তান সাপোর্ট করি। আর ইন্ডিয়াকে সাপোর্ট করি না, কারণ তারা মুসলিম নয়। কিন্তু সারাদিন ঘরের টিভিতে ইন্ডিয়ার নায়ক নায়িকাদের সিনেমা না দেখলে মন ভরে না!

স্বপ্নহারা এর ছবি

মন খারাপ

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

নাসিম মাহ্‌মুদ এর ছবি

দেশ যখন নির্লজ্জ আর বেহায়াদের হাতে বন্দী—স্বপ্নালুতাই যেখানে প্রতিনিয়ত প্রতিবাদের ভাষা—সত্য প্রকাশে যখন ভীষণ দ্বিধা—তখন এমন একটা বস্তুনিষ্ঠ লেখা পড়ার সুযোগ হল। সত্য স্বীকারে আমার দ্বিধা নেই, আমার নিজের ভেতরেও বেশ একটা অস্পষ্টতা ছিল, এই লেখাটি পরে অনেক পরিষ্কার হল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, শুধু এ জন্য নয় যে লেখাটি ভাল, বরং এ জন্যেও যে আপনি আমাদের (নিজেদের) দুর্বল দিকটিকে পরিষ্কার করে চিন্তাশীল সকলকে বিষয়টি আরও পরিষ্কার করে দিয়েছেন। বিপ্লবের আবেগ বা উচ্ছ্বাসের সাথে সাথে সত্যের নির্মল উপলব্ধি ও সমান জরুরী।

স্বপ্নহারা এর ছবি

বিপ্লবের আবেগ বা উচ্ছ্বাসের সাথে সাথে সত্যের নির্মল উপলব্ধি ও সমান জরুরী।

চলুক

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

Aries এর ছবি

গুল্লি....১ মার্চ এর ভারত বন্ধ.....বর্জন দিয়েই শুরু হোক
চলুক

স্বপ্নহারা এর ছবি

শুরু হোক...ছড়িয়ে পড়ুক...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

গোলাম মোস্তফা এর ছবি

অনেকদিন আগে ইচ্ছে ছিলো একদিন বি এস এফ এর হাতে খুন হওয়া কোন লাশ নিয়ে গিয়ে বসে পড়বো ইন্ডিয়ান এম্বেসীর সামনে এরপর কি হয় দেখা যাবে...এই বর্জন কে একটা রূপ দিতে হবে। পহেলা মার্চ ভারতীয় দূতাবাসের সামনে এই বর্জন মর্মে একটা ইংরেজী ও একটা বাংলায় ব্যানার নিয়ে কিছু মানুষ প্রতিবাদ জানাক।

হিমু এর ছবি

দূতাবাস এলাকায় চ্যান্সারি পুলিশ কোনো সমাবেশই করতে দেবে না।

লোক দেখানো ব্যানার-সমাবেশের তো দরকার নাই। যে যার জায়গায় বসেই তো বর্জনের কাজটা করতে পারে। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের রোজগারে কমতি পড়লে দূতাবাস আপনা থেকেই জানবে।

mousumii এর ছবি

উত্তম জাঝা! .!!!!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।