মোগলাই খানাদানা - প্রথম পর্ব

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: সোম, ০৯/০৭/২০১২ - ১:০৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বসন্তকাল, ১৬৪১। দুই পর্তুগীজ পাদ্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় লাহোরের এক চমকদার প্রাসাদের গ্র্যান্ড রিসেপশন রুমের লাগোয়া ব্যালকনিতে। প্রাসাদের মালিক মোগল সাম্রাজ্যের অন্যতম কুতুব আসফ খাঁ, আরজুমান্দ বানু বেগম ওরফে মুমতাজ মহলের পিতা।

ঐ সন্ধ্যায় আসফ খাঁ আর তার বউ মহান বাদশা শাজাহানকে চাট্টি ভাত খাওয়ার দাওয়াত দিয়েছিলেন। লুকিয়ে ব্যালকনি থেকে দুই পাদ্রী এই ব্যাপক খানাদানার আয়োজন দেখতে থাকেন হাঁ করে। ঝলমল করছে সিল্কি রূপালি সোনালি জরির কাজ করা কার্পেট, চতুর্দিকে মৌমৌ করছে সুগন্ধী আতরের বাস। রুমের ঠিক কেন্দ্রে মিহি মসলিনের কাজ করা টেবলক্লথ আর তার চারধারে নানবিধ কুশন। সোনামোতির হার গলায় ঝুলিয়ে রুমে ঢুকলেন মহান মোগল সম্রাট, আগেপিছে দাসীবান্দি সহকারে। কুশনে আরাম করে বসে সকলে হাত ধুয়ে নিলেন অত্যাধিক কচি ও ততোধিক সুন্দরী দাসীদের এগিয়ে দেওয়া পানিপাত্রে।

শুরু হল খাবারের পাত্রের আগমন, একের পর এক। খাবার আনছিল ঝলমলে রঙদার সিল্কের পাজামা আর অতিস্বচ্ছ মসলিনের কুর্তা পরিহিত খোজার দল। তারা হাঁটু গেড়ে বসে থাকা কচি সুন্দরীদের হাতে সোনার বাটি চালান করছিল যেন মেয়েগুলি সম্রাটের পাত্রে ঢেলে দিতে পারে। মুসলিম বর্বরদের এইরকম টেবিলম্যানার দেখে দুই পাদ্রী ভারি মাথা চুল্কাতে লাগলো। হিসাব মিলে নাই।

খানাদানা চলে ঘন্টা চারেক। এরপরে খাবার সব চলে যাবার পরে নাচওয়ালী মেয়েরা তাদের সকল সম্পদ ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে নাচতে নাচতে ঘরে প্রবেশ করে, পার্টির সকলেই ভারি আমোদিত হয়ে উপভোগ করেন এই দুষ্টুমি। তবে শাজাহান বাদশার আসল উৎসাহ ছিল তার সামনে রাখা তিন ঝাঁকা গয়নাতে। মহান সম্রাট যখন এইসব পাথরমোতি যাচাই করতে ব্যস্ত তখন খোজারা এসে পাদ্রীদের বলে গেম ওভার, বিদেয় হও। পাদ্রীদ্বয় বিদায় নিলেন।

উপরের কাহিনী আমাদের যে পাদ্রী বলে গেছেন তার নাম ফ্রায়ার সেবাস্টিয়ান মানরিক। তার এরকম অভিজাত মুসলমানের অন্দরে ঢুকে সার্কাস দেখার কাহিনী রীতিমত অবিশ্বাস্য। প্রত্যেক প্রাসাদের অন্দর উঁচু দেয়ালে ঘেরা থাকত, তাতে পাহারাও ছিল দিনরাত। মুসলিম মেয়েরা ছিল কড়া পর্দার ঘেরাটোপে বন্দী, শুধুমাত্র পরিবারের লোক আর চাকরনফরের অনুমতি ছিল তাদের দেখার। এইরকম বিধর্মী লোকের কাছে প্রাসাদের অন্দর উন্মুক্ত করে দেবার গল্প তাই কষ্টকল্পনাই ঠেকে।

মানরিক সম্ভবত বিভিন্ন শোনা গল্প জোড়া দিয়ে উপরের কিচ্ছা বানিয়েছেন। সপ্তদশ শতাব্দীর অনেক পর্যটকেরই অভ্যাস ছিল নানান গল্পের মধ্যে নিজেকে চালান করে দেওয়া। তবে আসফ খাঁ এর সাথে মানরিকের দোস্তি ছিল ঠিকই।

মানরিক ভারতে এসেছিলেন সেই রোম হতে। পথে লাহোরে স্টপ নেওয়ার কারণ পলিটিকাল, এক পাদ্রী শাজাহান বাদশার বন্দী হয়ে ছিল প্রায় নবছর। আসফ খাঁ বাদশার অতি পিয়ারের লোক, তাকে ধরেটরে যদি কিছু হয়। মানরিক ঝানু কূটনীতিক বলতও হবে, কিভাবে কিভাবে তিনি পাদ্রীর রিলিজের ব্যবস্থা তো করেনই উপরন্তু আসফ খাঁকে তিনি এতোই প্রভাবিত করেন যে খাঁ সায়েব হুকুম দেন মানরিক যেকোন সময় বিনা বাধায় তার দরবারে হাজির হতে পারবে। এ বড় সহজ হুকুম নয়।

শাজাহান ছিলেন পঞ্চম মোগল বাদশা, পয়লা নম্বর ছিলেন বাবুর। বাবুর অর্থ বাঘ। এই বাদশা ছিলেন অষ্টম হেনরির সমসাময়িক। আজকে যেখানে উজবেকিস্তান সেখানে মধ্যযুগে ছিল ফরগনা রাজ্য, বাবুর ছিলেন এই ফরগনার রাজকুমার। ১৫ বছর বয়েসে তিনি সমরকন্দ জয় করেন, কিন্তু এই রূপসী নগর তার হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় উজবেকরা। ভগ্নমনোরথ বাবুর চোখ ফিরান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের দিকে, তারপর হিন্দুস্তানের দিকে তার নজর পড়ে।

বাবুরই প্রথম হিন্দুস্তান আক্রমণ করেননি, সেই ১৩৯৮ সালেই তার পূর্বপুরুষ তৈমুর লং দিল্লী ছ্যাড়াবেড়া করে গিয়েছিলেন। এছাড়া সেই দ্বাদশ শতাব্দী থেকেই নানাবিধ সুলতানের হাতে ভারতের বিভিন্ন অংশ শাসিত হয়। তুরস্ক, ইরান আর আফগানিস্তানের নানান লোক ভারতে ঘাঁটি গাড়ে আর নিজেদের অতি উচ্চবংশ হিসেবে পরিচয় দেয়। তারা যে এলাকায় রাজত্ব করত সেখানকার দরিদ্র লোকেরা বিশেষত অচ্ছুৎ লোকেরা কলমা পড়ে কনভার্টেড হয়ে যায় অনেকাংশে।

বাবুর বাদশা হিন্দুস্তান বিজয়ে তেমন উৎফুল্ল ছিলেন না। “হিন্দুস্তানের কোন আকর্ষন নেই”, তিনি লিখে গেছেন, “শহর গ্রাম দুটাই ভারি বিশ্রী। আমাদের সাথে তুলনা করলে এ এক পুরাই আলাদা বিশ্ব, সিন্ধু নদী পেরোলেই মাঠঘাট গাছ ফুল পাত্থর মানুষ আদব লেহাজ সবই জানি ক্যামন ক্যামন। লোকগুলি মোটামুটি ল্যাংটোই ঘুরে বেড়ায়, কোমরের কাছে কি একটা ময়লা ন্যাকড়া জড়ানো। মানুষগুলি দেখতে ভারি কুচ্ছিত, সমাজে কোন আভিজাত্য-ফাত্য নেই।” তবে হিন্দুস্তানের একটা ভাল দিক হল “দেশটা বিরাট আর সোনামাণিকও প্রচুর”।

বাবুরের একটা বিরাট অভিযোগ ছিল যে হিন্দুস্তানের খাবার একবারে যা-তা। “একটাও ভালো খাবার নাই, মাংস আঙুর তরমুজ খরমুজ কিসসু না। কোন বরফ নাই, ঠান্ডা পানি নাই, বাজারে রুটি নাই।” বাবুরের দেশে লোকজন মহা আয়োজন করে খেত, বাগদাদ হতে প্রকাশিত অনেক পুরাতন একটি মুসলিম রান্নার বইতে লিখা আছে খাওয়া হল ছয়টি আনন্দের মধ্যে সর্বোত্তম ও সর্বমহান (অন্য পাঁচ আনন্দ হল পান, কাপড়, রতি, আতর আর বাদ্যবাজনা)।

সমরকন্দে হেরে যাবার পর নানান পাহাড়পর্বতে থেকে থেকে বাবুরের অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল তিনবেলা যাযাবর ঘোড়সওয়ারদের মতন মাংস খাওয়ার। এই মাংস রান্না হত অতি সহজে ক্যাম্পফায়ারে বসে ঝলসে। ১৯২০ সালে এক ইংরেজ সিভিল সার্ভেন্টকে স্থানীয় আফ্রিদীর দল মাংস রেঁধে খাওয়ায় যার রেসিপি সেই বাবুরের সময়কার। তাকে দেওয়া হয় কাঠিগাঁথা এক টুকরা ভাজা ভেড়ার মাংস। হাত দিয়ে খুলে খুলে খেতে হয় সেই মাংস। আর্মিনিয়াস ভাম্বেরি নামের এক হাঙ্গেরিয়ান প্রফেসর ১৮৬০ সালে লিখে গেছেন সেই মাংস ভাজার রেসিপিঃ

কয় চামচ চর্বি গলানো হয় (সাধারনত ভেড়ার লেজের চর্বি) একটা পাত্রে, আর গলামাত্র তাতে ঢালা হয় ছোট টুকরা মাংস। অল্প ভাজা হয়ে এলে পরে, তিন আঙুল পরিমান পানি ঢালা হয় আর ধীরে বলক ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়। মাংস নরম হয়ে আসলে পরে গোলমরিচ আর ফালি করে কাটা গাজর যোগ করা হয়, আর সবার উপরে একস্তর চাউল। আরেকটু পানি যুক্ত করা হয়, আর চাউল ফুটে ভাত হওয়া মাত্র আগুনের ধাক কমিয়ে আনা হয়। ঢাকনা দিয়ে ঢেকে পাত্রটি রেখে দেয়া হয় গরম কয়লার উপর, ভাপে আরো সিদ্ধ হয় মাংস, ভাত আর গাজর। আধঘন্টা পরে খাবার পরিবেশিত হয় স্তরে স্তরে। সবার তলে চর্বিতে মাখামাখি ভাত, তার উপর গাজর আর সবার উপরে মাংস।

ভাম্বেরি বলে গেছেন এই রান্না অতি উপাদেয়, তবে তাসখন্দে ডিনারে একই খাবার খেয়ে জনৈক মার্কিন ডিপ্লোম্যাট বলেছেন যে খাবার “অত্যন্ত তৈলাক্ত এবং বিস্বাদ”।

চোখ ফিরাই ভারতের হিন্দু কুইজিনের দিকে। একটি চমৎকার দরবারী হিন্দু খানার রেসিপি রেখে গেছেন দ্বাদশ শতাব্দীর রাজা তৃতীয় সোমেশ্বর। তিনি পশ্চিম চালুক্য সাম্রাজ্যের রাজা ছিলেন বর্তমান মহারাষ্ট্র আর কর্নাটক অঞ্চলে। তিনি যুদ্ধটুদ্ধের বদলে চিত্রকলা বা সাহিত্যেই আগ্রহী ছিলেন শোনা যায়। রাজ্যের বিবিধ কর্নার যখন বেহাত হয়ে যাচ্ছিল তখন তিনি যুদ্ধে যোগ দেবার বদলে বই লিখা শুরু করেন। বইয়ের নাম “মানোসোল্লাস”। বইতে একজন রাজার দৈনন্দিন ব্যাপারস্যাপার অর্থাৎ শিকার, রমণ, হিরেমোতি, ডুলিপাল্কি, রাজকীয় ছাতা আর খাবারের বর্ণনা ভরা। সোমেশ্বর লিখে গেছেন যে রাজার প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর আর পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। যেমন ঝাল দৈ এ ডুবিয়ে ডালের বড়া, এলাচ দিয়ে ভাজা শুকরের গোস্ত, অথবা ঝলসানো লেজ। সোমেশ্বরের অন্যান্য কিছু প্রিয় খাবারের মধ্যে ছিল কচ্ছপ ভাজা (খেতে নাকি ভাজাকলার মতন) আর ঝলসানো ধেড়ে ইঁদুর। পাঁচ শতক পরেও এই খাবারের অভ্যাস হিন্দু রাজাগণের ছিল, দক্ষিণের বিখ্যাত বিজয়নগরের বাজারে ভেড়া, শুকর বা গরুর গোস্তের পাশাপাশি পাওয়া যেত চড়াই পাখি, ইঁদুর, বিড়াল আর টিকটিকি গিরগিটির মাংস।

সোমেশ্বর বর্ণিত ঝলসানো ধেড়ে ইঁদুরের রেসিপিঃ

কালো ধেড়ে ইঁদুর, যেগুলো মাঠে আর নদীর ঘাটে ধরা হত তার নাম ছিল মাইগ্যা। এগুলির গায়ের রোম ছাড়িয়ে গরম পানিতে ধুয়ে ঝলসানো হত লেজশুদ্ধা। তবে তার আগে পেট কেটে ভেতরের প্রত্যঙ্গাদি বের করে আনা হত, ওগুলি পৃথকভাবে কাঁচা আম আর লবণ সহযোগে রাঁধা হত। লোহার শিকে ঝলসানো হত কয়লার আগুনে, যতক্ষন না তা বাদামী রঙ ধারণ করত। ভালোমত ভাজা হয়ে গেলে পরে তার উপর লবণ, জিরা দিয়ে খাওয়া হত।

তবে মাংসভক্ষণের এই কালচার ধীরে ধীরে হটে যায় ভারত থেকে বৌদ্ধ আর জৈনধর্ম প্রসারের সাথে সাথে। সম্রাট অশোক, যিনি ভারতের সুবৃহৎ এলাকা শাসন করেন খ্রীস্টজন্মের ২৬৮ হতে ২৩১ বছর আগ পর্যন্ত, ছিলেন নিরামিষাশী। বৌদ্ধ অনুসারী অশোকের কালে তার অনুসারীরাও নিরামিষাশী হয়ে পড়ে। অশোকের কিচেনে বড় করে খোদিত ছিল “এইখানে জীবজানোয়ার হত্যা করা হয় না”।

বাবুর হিন্দুস্তানে আসতে আসতে ভারত অনেকাংশে নিরামিষভোজী হয়ে গেছে। প্রধান ভারতীয় বর্ণ ব্রাহ্মণেরা শুধু নিরামিষ খেত। তারা মাংস খাওয়া ব্যান করে দেয় কারণ জানোয়ার খেলে জানোয়ারের গুণাবলী প্রকাশ পায়। কট্টর ব্রাহ্মণেরা মাংস তো নয়ই এমনকি পেঁয়াজ রসুন পর্যন্ত ছুঁতেন না।

তবে সবক্ষেত্রে তা খাটত না। ইতালীয় পর্যটক পিয়েত্রো দেলা ভাল্লে দেখে গেছেন রাজপুতেরা, যারা কিনা অতি উচ্চ ক্ষত্রীয় বংশ, দেদারসে মাংস খেত। শিকার ছিল রাজপুতদের অন্যতম টাইমপাস। রাজস্থানী কুইজিনে আজো শিকার করা মাংসের রেসিপি পাওয়া যায়, যেমন ভাজা পেঁয়াজ, ধনেপাতা, হলুদ, রসুন আর আদা দিয়ে কষিয়ে বন্যশুকর খোলা আগুনে ঝলসানো।

তবে বেশিরভাগ ভারতীয় নিরামিশ খেত, হয় ধর্মীয় কারনে অথবা পয়সার অভাবে। জঁ ব্যাপ্তিস্ত তাভের্নিয়ে বলে এক ফরাসী জহরতওয়ালা লিখে গেছেন যে মুসলিম গ্রামে খুঁজে হয়তোবা ভেড়া, মুর্গী কি পায়রা কিনতে পাওয়া যায়, কিন্তু হিন্দুপ্রধান গ্রামগুলোয় একদম ফকফকা। পিয়েত্রো দেলা ভাল্লে গজগজ করে গেছেন যে মাছমাংস কিসুই পাওয়া যায়না ভারতে, খালি ভাত আর দুধ মাখন খেয়ে থাকতে হয়।

ষোড়শ আর সপ্তদশ সতাব্দীতে হিন্দুস্তানের অধিকাংশ লোকে খিচুড়ি বলে একটা সাধারন খাবার খেত। চাউল আর ডাল নিয়ে অল্প পানিতে ঘুটা দিয়ে তৈয়ার হত সেই খিচুড়ি, জায়গাভেদে রেসিপির কিছু এদিক সেদিক হত কারণ সব জায়গায় উৎপন্ন চাউল এক ছিল না। তাভের্নিয়ে লক্ষ্য করেছিলেন যে ভারতীয় সিপাইরা খিচুড়িতে অল্প ঘি মাখিয়ে নিত, কেউ কেউ আচার বা মাছও খেত তার সাথে। দূর্দান্ত বড়লোকের দল তাদের পয়সা দেখানোর জন্য খিচুড়িতে দিত কষে মশলা। তাভের্নিয়ে আওরঙ্গাবাদে রাজপুত্রদের জন্য রাঁধা খিচুড়ির কথায় বলেছেন, “এদের ভাত আর সব্জীতে এমন কড়া মসলা যে আমি মুখেই তুলতে পারিনি, রাজভোগ রেখে ক্ষুধার্ত পেটেই আমাকে ফিরতে হল”।

ভেনিশিয়ান নিকোলাই মানুচ্চি বলে গেছেন যে গরুর গোস্ত খাওয়া ছিল এক বিরাট পাপের ব্যাপার। আয়ুর্বেদিক বইপত্রে গরুর গোস্তকে “ভারি, গরম, তৈলাক্ত আর মিষ্ট” বলে অভিহিত করা আছে। এটি হজম করতে সময় লাগে বলে সাবধানবাণীও রয়েছে। পিছনে ফিরে আমরা যদি প্রথম শতাব্দীতে তাকাই, দেখি যে ভারতীয়রা ছিল নিয়মিত গরুখোর। মহাভারতে এমনকি বলা আছে ব্রাহ্মণেরা ভারি মজা করে গরুর তরকারি খাচ্ছেন, যদিও সেখানে আরো বর্ণনা আছে একটি গরুর যে কিনা তার আত্মীয়স্বজনদের ভয়ানকভাবে কেটে কুটে খেয়ে ফেলার জন্য অভিযোগ করছে।

বাবুর যে হিন্দুস্তান জয় করেন সেখানে গরু ছিল মহাপবিত্র প্রাণী। মানুচ্চি বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করেন যে এরা যে শুধু গোস্ত খাওয়া নিষিদ্ধ করেছে তাই নয় এরা গরুর বিবিধ প্রডাক্ট যেমন দুধ, মাখন, গোবর আর চনা মিশিয়ে শরবৎ বানিয়ে খাচ্ছে সকল রোগশোকপাপতাপ থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে। তিনি বিতৃষ্ণা নিয়ে দেখেন যে ভারতীয়রা দুই হাতে চনা ঢেলে খাচ্ছে আর সর্বাঙ্গে গোবর ঢেলে নিজেকে পবিত্র ঘোষণা করছে।

তাই মোগলের গরুখাসী খাওয়ার বাসনার সাথে সাধারন ভারতীয় খাবারের লাগল ধাক্কা। মুসলমানদের কাছে খাবার দারুন পবিত্র ব্যাপার, তাদের কুরানে বেহেস্তের খাবারদাবারের বিস্তর বর্ণনা। আর ভারতীয়দের কাছে খাবার আমোদের কিছু ছিলনা, পেট ভরলেই হল এই তাদের মনোভাব। ভালো ভালো খাবার দেবতাদের উদ্দেশ্যেই দেওয়া হত, বাকিরা খেত প্রসাদ। ঘরের কর্তাকেই মাছের মুড়োটি প্রদান করা হত, গিন্নীর পালা সবার শেষে।

যাহোক মোগলাই কিচেনে এইসব হিন্দুস্তানী মধ্য এশিয়ান আর ইরানী খাবার মিলেমিশে হল একাকার। ফলাফল মোগলাই খাবার, পরে বিদেশীদের কাছে যার সাথে ভারতীয় খাবারের কোন প্রভেদ রইল না। ভারতীয় খাবারের সাথে মোগল স্টার্টটা বাজে হলেও পরে ঠিক হয়ে গেছে। যদিও বাবুর বাদশা বাজারের খানাখাদ্যে তুমুল বিরক্ত ছিলেন, তিনি ঠিক করলেন চারটে হিন্দুস্তানী বাবুর্চি রাখা হবে। এদের কান পাকড়ে নিয়ে আসা হয়েছিল পরাজিত সুলতান ইব্রাহীম লোদির কিচেন থেকে। এই সিদ্ধান্তে পরে মহা পস্তান বাবুর। তার জীবনীতে তিনি লিখে গেছেন তিনি এক শুক্কুরবার সন্ধ্যায় খরগোশের স্টু আর জাফরানী কেতায় রাঁধা মাংস তেলেভাজা চাপাতি দিয়ে খেয়ে ভক করে বমি করে দিয়েছিলেন। খাবার বিষাক্ত, এই সন্দেহে তিনি একটা কুকুরকে সেই বমি খাওয়ান। কুকুরটিও বমি খেয়ে বমি করে দেয়।

পরে ধরা পড়ে যে পরাজিত সুলতানের মাতার ঘুষ খেয়ে চারটে বাবুর্চির একজন মাংসে বিষ মিশিয়ে দেয়। এই বজ্জাতিতে যুক্ত ছিল আরেকটি লোক, সম্রাটের নিজস্ব টেস্টার যে কিনা খাবারে বিষ পরীক্ষা করত। টেস্টারকে কেটে পঁয়ত্রিশ পিস করা হয়, আর বাবুর্চিকে জীবন্ত অবস্থায় তার গায়ের চামড়া ছিলে ফেলা হয়।

এরপরে বাবুর আর হিন্দুস্তানি বাবুর্চি রেখেছিলেন কিনা জানা যায়না। তবে আমরা জানি বাবুরপুত্র হুমায়ুনের হিন্দুস্তানি কুক ছিল। পারস্যের সম্রাটকে তিনি ভারতীয় ডিশ খাইয়েছিলেন, তা সম্ভবত ছিল খিচুড়ির মোগলাই সংস্করণ। বাংলার আফগান শাসক শের শা এর লাথি খেয়ে হুমায়ুন পারস্যে পালিয়েছিলেন। ১৫ বছর পরে তিনি আবার হিন্দুস্তান ফিরে পান, তখন তিনি বগলে ভরে নিয়ে আসেন কয়টা পারসীক বাবুর্চি। সাথে এল পারসীক কুইজিন, পাঁচ শতাব্দী আগে বাগদাদের আব্বাসীয় খলিফার আমলে যার জন্ম। এরা খাবারদাবারে অকল্পনীয় পয়সা খরচ করতো, খলিফা আল মনসুর তো খেতে খেতেই অক্কা পেয়েছিলেন। তুরস্ক, আরব, মিশর সব জায়গা থেকে বাবুর্চিরা বাগদাদে জড়ো হত, সাথে নিয়ে যেত তাদের নিজস্ব রান্নার স্টাইল।

পারসীক রান্নার কুতুবমিনার ছিল পুলাউ। সেই যে যাযাবর ঘোড়াওয়ালার দল মাংসের সাথে ভাত পাকাতো তারই রাজকীয় সংস্করন এই পুলাউ। পারস্যে বার্লি আর গম ছিল কমন, চাউল আমদানী হত ভারত থেকে। তাই ইম্পোর্টেড চালের পুলাউ ছিলো ব্যাপক আভিজাত্যের বিষয়। চালের কোয়ালিটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত আগ্রার উত্তর এলাকার চাল ছিল তাদের ফেভারিট। সেই চালের ভাত হত ঝরঝরে, লেগে ধরত না। তার বাসও ছিল চমৎকার, সারা ঘর ভরে যেত সুগন্ধে।

বাবুর্চিরা নানান রেসিপি তৈয়ার করেছিল, ফলের পুলাউ, হলুদ-জাফরান পুলাউ, মুর্গী পুলাউ (বিশেষ অনুষ্ঠানে পাকানোর জন্য) ইত্যাদি। রেসিপিভেদে যুক্ত হত পেঁয়াজ রসুন, কিসমিস কাজুবাদাম ইত্যাদি। পারসীকরা লবণ জলে ঘন্টার পর ঘন্টা চাল ভিজিয়ে রাখতো যেন রান্না হলে পরে চকচকে সাদা দেখায়। এই কড়া সাদা কালার দরকার ছিল অন্যান্য গাঢ় রঙের বিবিধ তরকারির সাথে কন্ট্রাস্ট আনার জন্য। পারস্যের এই পুলাউ দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে। তুরষ্কে একে ডাকা হত পিলাফ। স্পেনে গিয়ে এই পুলাউ সামুদ্রিক মাছ আর জাফরান মিলে হল পায়েইয়া, আর ইটালিতে মাখন মিলিয়ে পুলাউ হল রিজোট্টো।

আর ভারতে, পারস্য আর মধ্য এশিয়ার কুইজিনের সাথে হিন্দুস্তানী কায়দা মিলে পুলাউ আরেক অভাবনীয় নূতন চেহারা নিল মোগল পাকশালায়।

(পরের পর্বে সমাপ্য)

লিজি কলিংহ্যাম রচিত Curry: A Tale of Cooks and Conquerors এর কিছু অংশের ছায়ানুবাদ।


মন্তব্য

কৌস্তুভ এর ছবি

আধেক পড়েই লুল সামলাতে পাচ্ছিনা। রুমাল নিয়ে এসে তারপর বাকীটা পড়ব। খাইছে

সত্যপীর এর ছবি

রুমালে কাজ হৈতনা আস্তা টিস্যু পেপারের বক্স নিয়া বসেন।

..................................................................
#Banshibir.

আরিফুর রহমান এর ছবি

হেহে..
গলায় বীব ঝুলিয়ে পড়লুম এতোক্ষণ।

সত্যপীর এর ছবি

হো হো হো

..................................................................
#Banshibir.

নিশা এর ছবি

খিদে লেগে গেলো। অনুবাদে উত্তম জাঝা!

সত্যপীর এর ছবি

হে হে, পড়েছেন মোগলের হাতে চাল্লু

..................................................................
#Banshibir.

মুস্তাফিজ এর ছবি

১ম প্যারাতেই খিদা লাগছে। একটু খেয়ে বাকিটা পড়বো।

...........................
Every Picture Tells a Story

সত্যপীর এর ছবি

প্যারা আরো কয়টা কম দেওয়া উচিৎ ছিল মনে হয় চিন্তিত

..................................................................
#Banshibir.

ক্রেসিডা এর ছবি

এইটা হইছে একটা কামের কাম!! এত্তো রাতে এখন খাবার কই পাই!!! চরম ক্ষিধা লাগছে!! লেখা পড়ে মন ভরলো কিন্তু পেট খালি!! মন খারাপ

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

সত্যপীর এর ছবি

স্কয়ার হাসপাতালের ক্যাফে তে যান, ২৪ ঘন্টা খোলা। এরা প্যাটিস ভালো বানায়, ভোররাইতে টেস্ট আরো জম্পেশ লাগার কথা।

..................................................................
#Banshibir.

ক্রেসিডা এর ছবি

পেটে ক্ষিধা নিয়া এই ভোররাতে সবই ভালো লাগবে। বাতে গরম গরম পরাটা সাথে ডিম ভাজি যেকোন স্টেশনে গেলে পাওয়া যাবে। সমস্যা, ক্যান্টনমেন্ট এ থাকি। রাত ১১টার পর বের হওয়া বা ঢুকা বেশ ঝামেলা। মন খারাপ

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনার লেখা নিয়ে কিছু বলার নেই। সব অসাধারণ। মন্তব্য করা হয়না সবসময়।
যেটা বলতে চাই, আপনার নামের পাশে অতিথি শব্দটা দেখতে ভালো লাগে না। দ্রুত নাম ছোট হয়ে যাক, সেই শুভেচ্ছা রইল।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সত্যপীর এর ছবি

হ, রঙ্গীলা মডুদের দিলে রহম নাই। তয় আতিথ্য ভালু পাই কিন্তু, ঘরের লুকের জন্য কি আর কেউ পুলাউ বিরানি পাকায়?

..................................................................
#Banshibir.

কৌস্তুভ এর ছবি

খাইছে

কৌস্তুভ এর ছবি

হ, পীরবাবাকে দ্রুত প্রোমোশন না দিলে মডুদের কল্লা নেমে যাবে...

নুভান এর ছবি

প্রফেসর আর্মানিয়াসের রেসিপির খাবারটি সম্ভবত এখন উজবেকিস্তানের সর্বাধিক জনপ্রিয় খাবার আর ওরাও একে ডাকে প্লভ নামে। এত্ত তৈলাক্ত যে খেতে খুবই বিরক্ত লাগতো। মাংস থাকে কম, শুলের মতন লম্বা দানার চাউল, মিয়ানো গাজর আর এন্তার তেল, এক নলা হাতে নিয়ে চিপ দিলে এক ছটাক তো পাওয়া যাবেই! ও খাবার মোটেও সুস্বাদু কিছু নয়, বরঞ্চ উজবেক গুলো আমাদের রান্না পোলাও আর বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকতো সবসময়।

সত্যপীর এর ছবি

আইচ্ছা আইচ্ছা, ভালো খবর দিলেন। পুলাউ গিয়া প্লভ হইসে তাইলে?

মাংস থাকে কম, শুলের মতন লম্বা দানার চাউল, মিয়ানো গাজর আর এন্তার তেল

এখন ধরেন মাংস বেশি দিয়া, ভালো জাতের চাউল আর অল্প তেলে রানলে খাবারটা মন্দ হইতনা মনে হইতেসে। একটু লবণ জিরাও প্রয়োজন। হুমম। উচ্ছলা ম্যাডামরে কৈতে হৈব ট্রাই দিয়া পোস্ট দিতে দেঁতো হাসি

..................................................................
#Banshibir.

উচ্ছলা এর ছবি

ভাতই রানবার পারিনা ঠিক মত আর পোলাও ! খালি পানি বেশি ঢালা হয়ে যায়! তবে অত্যাধিক মনযোগ দিলে অন্যান্য জিনিস রান্না খারাপ হয় নাহ্। ভাত-পোলাও ডিপার্টমেন্ট আমার 'উনি' সামলায় আরকি হাসি

পোস্ট পড়ে যার পর নাই তৃপ্তি পেলাম। গ্রেট জব চলুক চলুক গুল্লি কোলাকুলি

কৌস্তুভ এর ছবি

কন কী? যাহোক ব্যাপার্না, ওই রেসিপি আমার হাতে পড়লেই দেখবেন... চোখ টিপি

শিশিরকণা এর ছবি

পুলাউ ই রিজোট্টো? অ্যাঁ সেইদিন মাস্টার-শেফ অনুষ্ঠানে এক ইতালিয়ান বেটা কেমন ভাব নিলো, কত কঠঠিন রান্না বলে, ভাবলাম কি না কি রান্তেছে। এক্কেরে ধোঁয়া উঠা লেখা হইছে। এখন রানতে যাইগা।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

কৌস্তুভ এর ছবি

আমি রিসোত্তো রানছি। পায়েল্লা'ও। মোটেই কঠিন না। ফেবুতে ছবি আছে। তবে অনেক সময় লাগে। ব্যাটাদের যত বায়নাক্কা...

সত্যপীর এর ছবি

খাঁটি কথা। ব্যাটাদের বায়নার শেষ নাই। বড় বড় আড়াইগজী নাম দিলেই যে খাবার মজা হয়না এইটা ওদের কে বুঝাইব?

..................................................................
#Banshibir.

গৃহবাসী বাঊল এর ছবি

কৌ: দাঃ পায়েল্লা কোনটা? আপ্নে কি স্প্যানিশ পাহেইয়া'র কথা কচ্ছেন? পাহেইয়া বেশ ভাল খাবার, কিন্তু দামটা অ মাশাল্লা। আমি জারাগোজা'র এক রেস্টুরেন্টে খাইছিলাম, ৩৮ ইউরো নিসিলো। পাঁচজন খাইছি। আহ, স্বাদটা এখনো মুখে লাইগা আছে।

সত্যপীর এর ছবি

হ হ, মাস্টারশেফের ঐ ইটালিয়ানের ভাব দেখলে মনে হয় ধইরা থাবড়াই। হুদাই ভাব নেয়। সে যতই তার নানির রেসিপির রিজোট্টো নিয়া লাফাক না কেন, দিনের শেষে ঐটা মাখন দিয়া করা জাউভাত। চিন্তা করেন আমাদের পুলাউ কি মুর্গী মুসাল্লামের রেসিপি পাইলে এরা কতনা ভাব নিত চাল্লু

কি রানলেন?

..................................................................
#Banshibir.

শিশিরকণা এর ছবি

হ! আমাদের রেসিপি দেখলে এদের পেটের রিসোট্টো চাউল হয়ে যাবে। এই যে এখন ডিম ভুনা রানতেছি তার মধ্যেই কত স্টেপ, এর থেকে বিরিয়ানী রান্ধা বরং সোজা। সব মেখে অল্প আচে চুলায় বসায় দিয়ে একটা দিবা নিদ্রা দিয়ে ফেলা যায়।
গর্ডন রামজির একটা সিরিজ আছে ইন্ডিয়াতে রান্না বাড়া নিয়ে, কোমরে লুঙ্গি কাছা মেরে ভাত তরকারি মুরগির সালুন রেন্ধে কোলকাতার রাস্তায় বেচতেছে। ঐটা দেখে এই বেটার উপর কিছুটা ইম্প্রেসড হয়েছি। লইজ্জা লাগে

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

সত্যপীর এর ছবি

হ র‍্যামজি হেলস কিচেনে খালি অভিনয় করে, অন্যান্য প্রোগ্রামে দেখা যায় লোকটা ভালো আসে।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

একলা একলা দূরে জঙ্গলের মতন জায়গায় থাকি-- এইসব শাহি খানা কৈ পামু-- ওঁয়া ওঁয়া

পথিক পরাণ

সত্যপীর এর ছবি

উপরে দেখেন দুইটা রেসিপি দিসি, একটা খাসীর আরেকটা ইন্দুরের। জঙ্গলে গিয়া দেখেন কুনটা পান, এরপর রেসিপি ফলো করেন। তখন ওঁয়া ওঁয়া ইমোর বদলে দেঁতো হাসি ইমো দিবার পারবেন।

..................................................................
#Banshibir.

কৌস্তুভ এর ছবি

হো হো হো

অতিথি লেখক এর ছবি

কৌস্তভ দা
মজা লন!!! শয়তানী হাসি

দেইখেন- একদিন আমরাও- (রিসত্তো আর পায়েল্লা খামু )

পথিক পরাণ

অতিথি লেখক এর ছবি

জালিম দুনিয়া--

মনের দুঃখে বনে আইলাম
পীরদা কয় ইন্দুর খা-- রেগে টং

তাও ভালো - বান্দর খাইতে কন নাই--

সত্যপীর এর ছবি

আহা আমি ইন্দুর কৈ খাইতে কৈলাম? কৈসি যেটা পাবেন ঐটা খাবেন. ইন্দুর বান্দর ছাড়া কিসু নাই বুঝি?

..................................................................
#Banshibir.

সজল এর ছবি

হো হো হো

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কড়িকাঠুরে এর ছবি

না খাইয়া পড়লে খিদা আর ইট্টু বেশি লাগত-

আর হ- আফনের নাম থিকা "অতিথি" উইঠা যাইক- মেহমানদারির দায়িত্ব কাঁধে বর্তাক... দেঁতো হাসি

সত্যপীর এর ছবি

কি খায়া পড়লেন?

..................................................................
#Banshibir.

কড়িকাঠুরে এর ছবি

এইতো পেটে-ভাতে বাঁচি আরকি... দিল্লি বহুত দূরে তো- খাওনের গেরান আহে মাগার খাওন আহে না- মন খারাপ

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

হাহহা, কোন চিন্তা নাই। দুই দিন আগে শবেবরাত গেছে, ফ্রিজে এখনও পোলাও, মাংস আছে। যাই, ওভেনে গরম করে নিয়ে আসি।
লেখা খাবারের বর্ণনার মতই উপাদেয় হয়েছে।

সত্যপীর এর ছবি

ফ্রিজ্ভর্তি পুলাউ কোর্মা বুঝি? ঠিকানাটা ছাড়েন তো ভাই বিশেষ দরকার চিন্তিত

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

মোগলাই বিরিয়ানি নিয়ে তপন রায় চৌধুরীর কথা মনে আছে তো- এক মানুষের জন্য এক পোয়া চাল, এক পোয়া ডাল, এক পোয়া ঘি, সাথে প্রয়োজনীয় মশলাপাতি দিয়ে অল্প আঁচে বসিয়ে দেওয়া হত। তবে এই খিচুড়ি যে বেশী খেত সঙ্গত কারণেই বেশীদিন খাবার সুযোগ পেত না! ( মানে পটল তুলত)

চলুক

অত্যধিক কচি হো হো হো

সত্যপীর এর ছবি

এক পোয়া চাল এক পোয়া ডালে এক পোয়া ঘি? ইয়াল্লা! এক পোয়া মরণ তো এইখানেই লিখা আসে.

..................................................................
#Banshibir.

রু  এর ছবি

মানুষজন ব্লগে খাবার দাবার নিয়ে কেন লিখে বুঝিনা! লেখা অসাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু হয়েছে।

সত্যপীর এর ছবি

যে পরিমাণ ঘি দিসি অস্বাস্থ্যকর না হয়া যাইব কই খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

এত্তো ভোজনপ্রীতির পরও মোঘলদের গড় আয়ূ (বাবুর আর হুমায়ুন বাদে) দেখি অ-অনেক বেশী!
বাবুর - ৪৭ বছর
হুমায়ুন - ৪৭ বছর
আকবর - ৬৩ বছর
জাহাংগীর - ৫৮ বছর
শাহ জাহান - ৭৪ বছর
আওরংগজেব - ৮৮ বছর

অবশ্য তাঁরা এই জমানায় জন্মালে ফরমালিন যুক্ত মাছ আর ফাস্টফুড খেয়েই ৪০ বছরেই হার্টএট্যাক করতো মনেহয়।

পোস্টে মাইনাস - মোঘল খাওয়া দাওয়া আংগুর ফলের মতই টক! খাইছে
রতন ভাইএর সাথে একমত, আপনার নামের পাশে অতিথি আর মানাচ্ছেনা

সত্যপীর এর ছবি

কথা সত্য, তবে আওরঙ্গজেব নিয়া একখান কথা... উনি কিন্তু ভাজাপোড়া খেতেন না। স্বঘোষিত সুফি সাধক কিনা।

..................................................................
#Banshibir.

তাসনীম এর ছবি

অতি উপাদেয় লেখা হাসি

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ তাসনীম ভাই হাসি

..................................................................
#Banshibir.

নিরবতা এর ছবি

চলুক চলুক

নাশতারান এর ছবি

অত্যাধিক কচি মানে কত কচি? চিন্তিত
লাঞ্চ করতে করতে পড়লাম। এখন হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছা করছে। মন খারাপ

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

সত্যপীর এর ছবি

এতই কচি যে বলতেও শরম লাগে ইয়ে, মানে...

..................................................................
#Banshibir.

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

বস কী দিলেন। এখন যে লুল ঝরছে, সেটার দায়িত্ব কে নেবে?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সত্যপীর এর ছবি

আমি আরো লিখার সময় ভাবলাম ইন্দুরের রেসিপি দিসি দেখে পাব্লিক কিঞ্চিৎ ছ্যা ছ্যা করবে...সবার দেখি লুল পড়তেসে। এতেই প্রমাণ হয় সব ভালো যার শেষ ভালো, ইন্দুর বিড়ালের যতই রেসিপি দেই না কেন শেষে এসে পুলাউ এর গল্প বললেই পাসমার্ক চিন্তিত

..................................................................
#Banshibir.

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ঠিকমত রানতে পারলে ইন্দুর আর চিকার মধ্যে রেসিজম করার কোন মানে আছে কন্দেহি?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সত্যপীর এর ছবি

ইন্দুর খাইনা দেইখা রেসিস্ট কৈলেন? জাফর ইকবালের কাসে বিচার দিমু কৈলাম.

..................................................................
#Banshibir.

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

জন্ম তো সবার সেই একই জায়গা থেইকা। সেই হিসাবে ইন্দুর মানুষ ভাই ভাই। ইন্দুর গরুও ভাই ভাই। এখন ভাইয়ে ভাইয়ে বিভেদ লাগানোর চেষ্টা কইরেন না পীরসাহেব। মোগলরা বড়ই ভালু লুক ছিল তারা ভাইয়ে ভাইয়ে কুনো পার্থক্য করে নাই। তারা মনে হয় বিবর্তনের বিষয়ডা ধরতে পারছিল।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সত্যপীর এর ছবি

আমি তো কবে থেকেই কৈতেসি মোগলরা ভালো লুক, তাদের দিল কাউয়ার লাদির মত সাদা। আপ্নেরা খালি ভুল বুঝেন মন খারাপ

..................................................................
#Banshibir.

সজল এর ছবি

হো হো হো

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

মন মাঝি এর ছবি

প্রথম ৫/৬ লাইন পড়েই গতকাল ক্ষ্যামা দিছি, বুঝছি এই লেখা খালি পেটে পড়া যাবে না।
অতএব আমার কিউলিনারি এ্যাডভাইজর ফিল্ড মার্শাল সিদ্দিকা কবীরের পরামর্শ মত একদম যুদ্ধপ্রস্তুতির মত প্রস্তুতি নিয়েই বসছি আজকে। এক ফোঁটা লুলও মাটিতে পড়বে না!

শুধু এই লেখাটা পড়ার জন্য সিদ্দিকা কবিরের শাহী রেজালার রেসিপি নিজের মত এডাপ্ট করে নিছি। গত রাতে ওভারনাইট থাই মাশরুম সয়া সস দিয়ে মাংস ম্যারিনেট করে নিছি, তারপর সকালে চোখ বন্ধ করে ইয়াল্লা বলে যা যা মশল্লা হাতের কাছে পাইছি সব ঢালছি। ঘি, মালাই, পোস্তদানা, পেস্তা, কেওড়া, আলুবোখারা, কিশমিশ, এলাচ, জায়ফল... সবসহ। কি যে হইছে খোদাই মালুম, কিন্তু ঘর এখন গন্ধে মৌ মৌ করতেছে। আর বেরেস্তা দেওয়া সাদা পোলাও তো আছেই।

পোলাও আর মাংস দুইটাই এখন হাতের কাছে রেডি। গরমাগরম। পড়া শেষেই খাব। হা হা...

****************************************

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ওঁয়া ওঁয়া

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সত্যপীর এর ছবি

গত রাতে ওভারনাইট থাই মাশরুম সয়া সস দিয়ে মাংস ম্যারিনেট করে নিছি, তারপর সকালে চোখ বন্ধ করে ইয়াল্লা বলে যা যা মশল্লা হাতের কাছে পাইছি সব ঢালছি। ঘি, মালাই, পোস্তদানা, পেস্তা, কেওড়া, আলুবোখারা, কিশমিশ, এলাচ, জায়ফল

ইয়া হাবিবি! দেঁতো হাসি

..................................................................
#Banshibir.

তাপস শর্মা এর ছবি

ওরে কত খাওন-দাওন রে,...... অমানুষিক।

তয় কথা হৈল, সবইতো আছে কুত্তা নাই ক্যা?

সত্যপীর এর ছবি

কুত্তা?! ভাইজান কি কুরিয়ান?

..................................................................
#Banshibir.

imam এর ছবি

ভাই ,কোরিয়ান রা কিন্তু এখন আর কুকুর এর মাংস খায় না ,আপনি পুসান বন্দর এর কিছু নিম্নবর্নের ( এই আবার আমাকে রেসিশট ভাব্বেন না ) কোরিয়ান রা ছাড়া কেউ আর অইসব কুকুর -টুকুর ধরে দেখে না ।

তানভীর এর ছবি

চলুক

ক্রনোলজি অনুযায়ী সাজালে পড়তে আরো আরাম হতো...

সত্যপীর এর ছবি

মূল লিখায় প্রথমে শাজাহানের স্ন্যাপশট এনে পরে বাবুর থেকে আরম্ভ, মাঝে আবার ফ্ল্যাশব্যাক টু দ্বাদশ শতাব্দীর ভারত তারপরে আবার হুমায়ুন। পরের পর্ব শুরু হবে আকবর দিয়ে। এই আর কি। দুর্বল একটা ক্রনোলজি আসে মনে হয়।

..................................................................
#Banshibir.

আজব প্রাণী এর ছবি

মারা গেলাম রে ঃ(

সজ এর ছবি

এখনও পান্ডবদা আসেন নাই!!??

সত্যপীর এর ছবি

মারা যাওয়ার কারণ?

..................................................................
#Banshibir.

মেঘা এর ছবি

আজকের দিনে কেন যে এই লেখা পড়লাম মন খারাপ সকাল থেকে বাসায় গ্যাস নাই তাই রান্নাও নাই। গ্যাস আসবে আসবে মনে করে আমার আব্বু যখন কিছু খাবারের খোঁজে গেছে ততক্ষণে এলাকাসুদ্ধ লোক সব খেয়ে সাবার করে দিয়েছে ওঁয়া ওঁয়া

ইঁদুর যেই রাজা খেতো সে বিশাল বড় পিশাচ ছিলো ইয়ে, মানে... তবে খিচুড়ি আর বিরিয়ানির জার্নিটা বেশ মজা লাগলো। এদিকের পুলাউ বিভিন্ন দিকে যেয়ে এতো নাম নিয়েছে এটাও খুব মজার। মেন্যু দেখে আর ভড়কে যাওয়া লাগবে না। পুলাউয়ের নামগুলো মনে রাখতে হবে।

লেখা অনেক কষ্টদায়ক হয়েছে। ক্ষুধা লেগেছে ওঁয়া ওঁয়া

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সত্যপীর এর ছবি

আমাদের বাসায় গ্যাস শেষ হয়ে গেলে খুব মজা হইত, প্রতি বেলায় হোটেলের আনা খাবার দেঁতো হাসি

পিশাচ কি ইন্দুর খায়? পিশাচের জাত মেরে দিলেন একবারে এহ!

..................................................................
#Banshibir.

মেঘা এর ছবি

হুম পিশাচ সব নোংরা জিনিস খায় ইয়ে, মানে...

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

আব্দুর রহমান এর ছবি

আমি এট্টুখানি পেটুক তো, আমার মতে এটাই আপনার সেরা লেখা। খানা-খাদ্য নিয়ে আরো লিখেন ভাইডি।

------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল

সত্যপীর এর ছবি

শরমিন্দা হইলাম আব্দুর রহমান ভাইডি।

..................................................................
#Banshibir.

অমি_বন্যা এর ছবি

হরেক রকমের খাবারের নাম শুনে খিদে না লেগে উপায় নাই। তারপরও মোরগ পুলাউ খাওয়ার কথা মনে পড়ে গেল পীর ভাই ।
গতকাল থেকে শুধু ভাবছি কখন আপনার লেখাটা পড়া যায় । রাতের খাওয়া শেষ করে পড়াটাই মনে হয় উত্তম যেহেতু খাওয়া দাওয়ার অনেক রেসিপির একটা ব্যাপার স্যাপার এখানে আছে। খাওয়া শেষ আর সেই সাথে পড়া । অনেক কিছু জানলাম ইতিহাসের । অনেক ভালো লাগলো ।

ভালো থাকবেন ।

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

কইসা মাইনাচ। ওঁয়া ওঁয়া আচ্ছা এইবারের লাইজ্ঞা লেখায় চলুক সাম্নের বার থেকে কিন্তু মাইনাচই মাইনাচ
tusqit

সত্যপীর এর ছবি

মাইনাচে মাইনাচে প্লাচোয়া যাইবোগা কৈলাম।

..................................................................
#Banshibir.

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ঐতিহাসিক ক্যারেক্টারগুলার মধ্যে বাবুরের প্রতি আমার একটা অন্যরকম টান আছে, ফারগানার মতো চুয়া রাজ্য থেকে পালিয়ে ব্যাটা কী রকম বিশাল একটা সাম্রাজ্য গেড়ে বসলো ভারতে- অহো হ, কী নিদারুণ ...

সেই বাবুরকে এমন পেটুকের পর্যায়ে নিয়ে আসায় আপনাকে ধিক্কার। পাষণ্ড আপনি মন খারাপ

তবে লেখাটা না পড়লে মিস করতাম- এমন রসালো লেখা সচলে বহুদিন আসে না দেঁতো হাসি

সত্যপীর এর ছবি

সব রাজারাণীই মোটামুটি মোটা মুটি ছিলেন কওয়া যায়, খাদকের গুষ্টি। বাবুররে দোষ দিয়া ফায়দা কি?

আসেন ভালো?

..................................................................
#Banshibir.

জুন এর ছবি

ধুস। খিদা লাগছে। এখন খাওন আনতে যাইব কেডা? রেগে টং

লেখা চমৎকার ঘিওময় হয়েছে। চোখদুটো যেত ত্যালত্যালা হয়ে গেছে পড়তে পড়তে। আর আপনার অতিথি অংশ তুলতে হলে "সাফি হুজুরের" কাছ থেকে ফুঁ নেন। হয়ে যাবে।

অটঃ প্রৌঢ়দা, পোলাও মাংস কী এখনও আছে? খুব বেশিদিনতো হয়নি শবেবরাতের। মন খারাপ

যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...

সত্যপীর এর ছবি

পেটে খেলে ব্লগে সয়।

..................................................................
#Banshibir.

কালো কাক এর ছবি

ইন্দুরের রেসিপি ছাড়া বাকিটুকু পড়লাম। লুল সামলানো কষ্টকর হয়ে পড়সে। মন খারাপ
পরের পর্ব দেয়ার আগে রেসিপি অনুযায়ী রান্না করে ছবিসহ দিবেন দেঁতো হাসি

সত্যপীর এর ছবি

পরের বার কাকের রেসিপি থাকলে ছবি দেইখা আপ্নে কষ্ট পাইতে পারেন...থাকুক ছবির কি দরকার।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

খুবই মজা পাইলাম।

সত্যপীর এর ছবি

আমিও লেইখা ব্যাপক মজা পাইসি।

..................................................................
#Banshibir.

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

পর্সি! দেঁতো হাসি

ঝলসানো ধেড়ে ইঁদুরের চেহারা মানসচক্ষে দেখতে পাচ্ছি। মাঝেমাঝে মনে হচ্ছে ইয়াক! আবার কখনো মনে হচ্ছে ভালোই তো লাগার কথা! খাইছে

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সত্যপীর এর ছবি

ইঁদুরের গিলা কলিজা কাঁচা আম দিয়া পাকানোর ব্যাপারটাও ইন্টারেস্টিং কি বলেন?

আসেন ক্যামন? বৃশ্চিকেরা লিখবেন না?

..................................................................
#Banshibir.

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

পরে।
আপাতত বড় বৃশ্চিকদের লেখা পড়ি। চোখ টিপি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সত্যপীর এর ছবি

খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

অরফিয়াস এর ছবি

কালো ধেড়ে ইঁদুর, যেগুলো মাঠে আর নদীর ঘাটে ধরা হত তার নাম ছিল মাইগ্যা।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

কিছুদিন আগে রাজস্থান গিয়েছিলাম যখন, সেখানে এক জায়গায় প্রায় ২০-৩০ রকমের পদের সাথে খাবার পরিবেশন করা হয়েছিল, সবই নিরামিষ কিন্তু অসাধারণ তার স্বাদ!! এখনও ঐ খাবারের কথা মনে পড়লে অবাক লাগে!!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সত্যপীর এর ছবি

মাইগ্যা নামটা আমারও ইন্টারেস্টিং লাগসে দেঁতো হাসি

..................................................................
#Banshibir.

অরফিয়াস এর ছবি

ঐ দেখো !! দেঁতো হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

পীর বাবা,
এইসব কি হইতাছে? "চর্বির দলা" কমানোর জন্য রাতের খয়া বন্ধ কইরা খালি পানির উপ্রে আছি, আর আপনি এইসব লুল পরা রেসিপি দিতাছেন রেগে টং

বুজছি। আপ্নারে এম্নে হবেনা। জোকার নায়েকরে দিয়ে হেদায়েত করান লাগব।

নির্ঝরা শ্রাবণ

সত্যপীর এর ছবি

রাতের বেলা খালি পানি খাইলে চলবো? অল্প কিছুমিছু খায়েন।

জোকার নায়েকরে দিয়ে হেদায়েত করান লাগব।

পীরের হেদায়েত কর্নেওয়ালা জোকার এহনো জন্মাইতে বাকি আসে শয়তানী হাসি

..................................................................
#Banshibir.

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

লেখা হিসেবে অসাধারণ। আর খাবারের বাসনায় তো মৌ মৌ। ইতিহাস খুব ভালো লেখেন পীরদা চলুক

[কালই পড়ছিলাম রসিয়ে.......]


_____________________
Give Her Freedom!

সত্যপীর এর ছবি

ইতিহাস লেখলাম কই পুরান দিনের গল্প করি এই আর কি। ইতিহাস টিতিহাস কয়া আমার পাঠক ভাগায় দিতেসেন মিয়া ধুর ইয়ে, মানে...

..................................................................
#Banshibir.

বন্দনা এর ছবি

লেখা থেকে পোলাউ এর সুঘ্রাণ বের হচ্ছে, কিন্তু ইন্দুরের রেসিপি দিয়া লেখা পচায়ে ফেলছেন গো পীরদা খাইছে

সত্যপীর এর ছবি

ইন্দুরের রেসিপি কিন্তু আসে ভালোই, নাড়িভুড়ি কাঁচা আম দিয়া রান্না করলে মজাই হওয়ার কথা চিন্তিত

..................................................................
#Banshibir.

দুর্দান্ত এর ছবি

"কয় চামচ চর্বি গলানো হয় (সাধারনত ভেড়ার লেজের চর্বি) একটা পাত্রে, আর গলামাত্র তাতে ঢালা হয় ছোট টুকরা মাংস। অল্প ভাজা হয়ে এলে পরে, তিন আঙুল পরিমান পানি ঢালা হয় আর ধীরে বলক ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়। মাংস নরম হয়ে আসলে পরে গোলমরিচ আর ফালি করে কাটা গাজর যোগ করা হয়, আর সবার উপরে একস্তর চাউল। আরেকটু পানি যুক্ত করা হয়, আর চাউল ফুটে ভাত হওয়া মাত্র আগুনের ধাক কমিয়ে আনা হয়। ঢাকনা দিয়ে ঢেকে পাত্রটি রেখে দেয়া হয় গরম কয়লার উপর, ভাপে আরো সিদ্ধ হয় মাংস, ভাত আর গাজর। আধঘন্টা পরে খাবার পরিবেশিত হয় স্তরে স্তরে। সবার তলে চর্বিতে মাখামাখি ভাত, তার উপর গাজর আর সবার উপরে মাংস।"

এই বস্তু আদতে আমাদের কাচ্চি বিরিয়ানির পূর্বপুরুষ। এখনো মধ্য এশিয়ায় এটা বেশ চালু একটা খাবার। সেখানে এটার নাম প্লোভ (Plov বা Плов), বানান যাই হোক, ওরা যেভাবে বলে সেটা শুনতে অনেকটাই আমাদের 'পোলাউ' এর মত।

"ঝলসানো ধেড়ে ইঁদুর।"

উত্তর কুমিল্লার চরাঞ্চলে প্রায় ধাড়ি ইদুরের মতই দেখতে এক ধরনের প্রানী Tragulus বা mouse deer স্থানীয়রা যাকে ফইট্টা নামে ডাকতো, তা বেশ সুলভ ছিল। আবার দাদা নাকি তার ছোটবেলায় এই বস্তু ছররা দিয়ে শিকার করেছে দিস্তায় দিস্তায়। আর এর সবচাইতে উপাদেয় রান্না ছিল আমের আচারের তেল মেখে খোলা আগুনে ঝলাসাণো।

Paella = পায়েইয়া! (পায়েল্লা না)।

সত্যপীর এর ছবি

পায়েইয়া, আচ্ছা বুঝছি। টরটিয়ার মতন। ঠিক করে দিলাম।

..................................................................
#Banshibir.

ওডিন এর ছবি

অ্যাকাডেমিক গিয়ানজামটা একটু সামলায়া উঠি, আমগো ঢাকাইয়া খানাদানা নিয়া একখানা নাতিদীর্ঘ অভিসন্দর্ভ লেখার আশা রাখি। পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

লেখা তো বরাবরের মতোই উমদা হয়েছে। হাসি

সজ এর ছবি

ফইট্টা খুব সম্ভবত খরগোশ! টাঙ্গাইলের গড় অঞ্চলে এক্ সময় ছিলএবং এই ফইট্টা নামেই পরিচিত ছিল!

সত্যপীর এর ছবি

আচ্ছা, খরগোশ। খাইসেন নাকি খাইতে ক্যামন?

..................................................................
#Banshibir.

সত্যপীর এর ছবি

ঢাকাইয়া খানাদানা নিয়া পোস্ট পড়ার লাইগা পপ্পন ফালায়া ঝালমুড়ি নিয়া গ্যালারিতে বইলাম।

..................................................................
#Banshibir.

শাব্দিক এর ছবি

একটু দেরি হয়ে গেল পড়তে, কিন্তু বাসি বিরিয়ানীর মতই ইয়াম্মি লাগল, শুধু ইঁদুরের অংশটা বাদে।

সত্যপীর এর ছবি

হ বাসী পুলাউ খিচুড়ির স্বাদই আলাদা!

..................................................................
#Banshibir.

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

(গুড়)
যাই লাঞ্চ করতে !

---------------------
আমার ফ্লিকার

সত্যপীর এর ছবি

কি খাইলেন?

..................................................................
#Banshibir.

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।