আমার রুবি রায়

অনিকেত এর ছবি
লিখেছেন অনিকেত (তারিখ: শুক্র, ২০/০৫/২০১১ - ৫:৩১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ দী-ঈ-ঈ-ঈর্ঘ পোষ্ট!

আমার ছোটবেলাটা কেটেছিল এই পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর বাড়িটায়!
সিলেটের এম সি কলেজের প্রিন্সিপালের বাংলো আমার দেখা এই পৃথিবীর সবচাইতে চমৎকার বাড়ি।
ছোট্ট একটা টিলার উপর একটা বিশাল একতলা বাড়ি। বাড়িটা ঘিরে কত কত নাম-না-জানা গাছের সারি। একটা ছোট্ট পাকদন্ডী টিলাটার গা বেয়ে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে উঠে গেছে বাড়িটার দিকে। নিশুত রাতে সেই পাকদন্ডী বেয়ে হাঁটতে বেরুলে মাঝে মাঝেই গা শিরশির করে উঠত। দারুণ গ্রীষ্মের দুপুরে বাড়িটার প্রশস্ত বারান্দায় অলস দুপুর ঘুমুতে আসত। বারান্দা থেকে হাত-বাড়ানো দূরে একটা পেয়ারা গাছ। সেটা ছাড়িয়ে গেলে কেবল ফুলের বাগান। কত কত ফুল! সন্ধ্যে বেলাটা ছিল আমার সবচাইতে প্রিয়। পশ্চিমের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে সূর্যদেবকে বিদায় জানাতাম। দেখতাম সারা দিনের ক্লান্তি সাথে নিয়ে সূর্য দূরের ঐ মাঠটার পেছনের নীল কুয়াশার চাদরে ডুবে যাচ্ছেন। শীতের দিনের সকাল-বিকেল দুইটাই ছিল অসাধারণ। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসার আগে এক ছুটে বাড়ির বাইরে যাওয়া। বারান্দায় স্যান্ডেল রেখে এসে খালি পায়ে ভোরের শিশির ভেজা ঘাসে পা রাখা। মনে হত ঘাসেরা যেন ছোট ছোট হাত বাড়িয়ে আলতো করে জড়িয়ে ধরছে আমার পায়ের পাতাটাকে পরম মমতায়। বিকেলে দেখতাম পাহাড়ের চূড়া থেকে সূর্যের অস্তাগমন। পাহাড়ের চূড়া থেকে যে সূর্যাস্ত না দেখেছে--তাকে বলে বোঝানো যাবে না সেই অপার্থিব সৌন্দর্যের কথা।

সেই বাসায় যখন আমি আমার স্বপ্নের মত দিন কাটাচ্ছি--তখন একদিন আমার 'সুখের ঘর' 'অনলে পুড়িয়া গেল'। একটু পরিষ্কার করি বিষয়টা। মহানায়ক উত্তমকুমারের তিরোধান উপলক্ষে একটা ক্যাসেট বেরিয়েছে তখন। নাম খুব সম্ভবত 'মহানায়ক উত্তমকুমার স্মরণে'। উত্তম অভিনীত সব ছবির উত্তম-মধ্যম-অধম গান আর কিছু কিছু সংলাপ নিয়েই ক্যাসেটটা। অতি উত্তম! কিন্তু আমার সুখের ঘরে আগুন লাগল কী করে? আগুনটা লাগল ক্যাসেটের 'এ' পিঠের শেষে এসে পিঠ ঠেকতেই! যারা আমার মত ক্যাসেট শুনে শুনে বড় হয়েছেন (এখনকার পুলাপানরা তো কথায় কথায় সিডি/এম্পি৩ প্লেয়ার ঝেড়ে দেয়) তারা জানেন প্রায় সব ক্যাসেটের শেষের দিকে একেবারে অবধারিত ভাবে কিছু 'ফিলার' মিউজিক দেয়া থাকত। বড়জোর দুই-তিন মিনিটের। উত্তমকুমারের সেই ক্যাসেটের 'এ' পিঠের শেষে এমনি ছিল একটা দুই মিনিটের মিউজিক। যন্ত্র সঙ্গীত। আমার সুখের ঘরে আগুন ফুঁকে দিল ঐ দুই মিনিটের গানটাই। প্রথমবার শুনেই ধরাশায়ী। দ্বিতীয়বার শুনে প্রায় পঞ্চত্বপ্রাপ্তিযোগ হবার অবস্থা। যারা কিন্তু দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছেন---তাদের কাছে পরিষ্কার করি, গানটা আসলেই আমার 'প্রাণ' কেড়ে নিয়েছিল। মুস্কিল হল এইটা একটা মিউজিক ট্র্যাক। আসল গানটা নেই। মনে একটা ক্ষীন আশার আলো জ্বলে উঠল। হয়ত অপর পিঠে গানটা থাকতে পারে!! হ্যাঁ তেমন কপাল করে এসেছি কি না আমি!! ওই ক্যাসেটের ফিতার প্রতি সেন্টিমিটার আঁতিপাতি করে খুঁজেও এই গান পাওয়া গেল না। সবকিছু ছাপিয়ে রাগটা গিয়ে পড়ল বাবার উপরে। ক্যাসেটটা তিনিই এনেছিলেন কিনা। আমার মনে হতে লাগল--গত সপ্তাহে ব্যাডমিন্টনে তাকে হারিয়ে দেয়ায় এই শাস্তি তিনি আমাকে দিচ্ছেন। অবশ্য ভদ্রলোক ঘোরতর আপত্তি জানালেন আমার এহেন হাইপোথিসিসে। আমার রাগটা আরো বাড়ল যখন বাবা বললেন যে, এই গানটা আসলে তিনি শুনেছেন----কিন্তু কথাটা মনে করতে পারছেন না। এইদিকে দিনকে দিন আমার অবস্থা খারাপ হতে লাগল। সারা ক্যাসেট বাদ দিয়ে কেবল ঐ শেষের দুই মিনিট শুনি। আহা, আহা, কী যে চমৎকার সুর! সারাদিন গানটা গুনগুন করি। মাঝে মাঝে নিজের বানানো কথা বসাই, সেইটে শুনেই উলটো নিজেই নিজেকে শাসাই---আরেকবার যদি এমন করেছিস তো-----!!!

আমার পুড়ন্ত ঘরে ঝরঝর করে আগুন নেভানো বৃষ্টির পানি পড়ল--- এক বৃষ্টির দিনে!
ইস্কুল থেকে ফিরছিলাম। পথে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামল। রিকশাওয়ালা বলল সে নাকি কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। একটু বৃষ্টি ধরে এলে যাওয়া যাবেখন। আমরা আশ্রয় নিলাম এক বইয়ের দোকানে। কিশোর ভারতীর নতুন সংখ্যা এসেছে কিনা সেইটার খোঁজ নিতে যাব---এমন সময় শুনলাম রেডিওতে বেজে উঠল সেই সর্বনেশে গান! আমার ঘরপোড়া গান! এবং আবারো কেবলি মিউজিক!! আমি হয়ত বেশ লম্বাচওড়া একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়েছিলাম যেটা শুনে দোকানের মালিক সপ্রশ্নে তাকিয়ে রইলেন আমার দিকে। বললাম, এই গানটার কথা খুঁজছি আজ হাজার বছর হয়। আমার স্কুল ইউমিফর্মের দিকে ভ্রুঁ কুঁচকে তাকিয়ে হাজার বছরের হিসেবটা ঠিক মেলাতে না পেরে ভদ্রলোক যেন আনমনেই বললেন---ফুঃ, এইটা এত খুঁজতে হয়? এইটাতো সবাই জানে---মনে পড়ে রুবি রায়!
বৃষ্টি ধরে এল।
রিকশাওয়ালা তাগাদা দিল।
কিছু কাস্টমার মার মার কাট কাট করে তেড়ে এল।
কিন্তু আমি দোকানদারকে কেবল একই প্রশ্ন করে যাচ্ছিলাম---আপনি নিশ্চিত তো? আপনি আসলেই জানেন তো? সত্যি বলছেন তো???
বহুদিন পর পাহাড় বেয়ে বাসায় ফেরাটা আমার কাছে ক্লান্তিকর লাগল না।
পরের সপ্তাহটা খুব ব্যস্ততায় কাটল। সিলেটের সব ক্যাসেটের দোকানে ঘোরাঘুরি করা হল। নানান দোকান থেকে যাচাই বাছাই করে করে গানটির আসল পরিচয় নিরূপন করা হল। জানলাম আসলে গানটির গায়ক রাহুল দেব বর্মণ। শুধু তাই নয়--গানটির একটি হিন্দী ভার্সন আছে---মেরি ভিগি ভিগি সি। সেটা গেয়েছেন কিশোর কুমার--আমার ছেলেবেলার হিরো! রাহুলের গানেরও ভক্ত ছিলাম আমি। তার 'যেতে যেতে পথে হল দেরী' গানটা যে কতবার করে শোনা---সেটার ইয়ত্তা নেই। কিঞ্চিত অভিমানও হল রাহুলের উপর। ব্যাটা, এইটা যে তোমার গান সেটা আগে বলে দিলে কী এমন ক্ষতি ছিল? পরে নিজেই নিজেকে সান্ত্বনা দিলাম এই ভেবে যে রাহুল দেবের সাথে আসলে ঠিক নিয়মিত যোগাযোগ নেই আমার---ইন ফ্যাক্ট রাহুল দেবের সাথে ক্যাসেটের মলাটে, পত্রিকার পাতায় দেখা হয়েছে। এই পর্যন্তই। এইসব ভেবেচিন্তে শেষে রাহুলকে ক্ষমা করে দেয়াটাই মনস্থ করলাম। ক্ষমাই মাহুতের লক্ষণ!!

যাই হোক, গানটা (এইবার বাণী সমেত) বগলদাবা করে বাড়ি ফিরলাম। ক্যাসেট প্লেয়ারের ভেতর থেকে হাওয়ায় উড়ে গেলেন উত্তমকুমার---এন্টার দ্য রাহুল দেব!

হা হতোস্মি!!

একি শুনি দাসী মন্থরার ---থুড়ি--রাহুলের মুখে! যে গানটার সুর এতদিন জানা ছিল---জানা ছিল না কেবল কথা। যে কথার লাগিয়া আমার বুকে বাজিয়া ছিল এত ব্যথা---সেই কথার এই হাল?? কে না কে রুবি রায় আর তাকে নিয়ে রাহুল দেব কান্নাকাটি করছেন! তারচেয়ে বড় কথা---গানটার মিউজিক কম্পজিশান উত্তমকুমারের ক্যাসেটে শোনা কম্পোজিশানের চেয়ে আলাদা! আমার 'অতি উন্নত' মস্তিষ্ক অচিরেই বের করে ফেলল কারণটা---খুব সম্ভবত এইটা হিন্দী গানটার ট্র্যাক। মোটের উপর সুরের আদলটা ঠিক থাকলেও প্রিল্যুড আর ইন্টারল্যুড একেবারেই আলাদা। যাচ্চলে! এখন আবার হিন্দীটা খুঁজে বের করতে হবে। ততক্ষণে আমার ব্যগ্রতার ঘোড়ার মুখে রাশ পড়েছে। ভাব্লাম হিন্দীটা না পাওয়া পর্যন্ত বরং এইটেই সই। নাই মামার চেয়ে---

সেই ক্লাশ এইট থেকে রুবি রায় আমার সাথে রয়ে গেছেন। পরে এক সময় হিন্দী ভার্সনটা শোনা হয়েছিল। নিঃসন্দেহে কিশোর কুমারের সেরা ক'টি গানের মাঝে একটি ঐ গানটা। কিন্তু কেন জানি রাহুলের ভার্সনটাই সেঁটে রইল গায়ে। আর আজ বুঝি---কারণটা ছিলেন রুবি রায়!

রুবি রায় এক চিরন্তন মানস প্রতিমা। আমাদের সবার ভেতরে একজন রুবি রায় আছেন। আমি চোখ বুঁজে বলে দিতে পারি-- এমন কোন ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাবে না---যে তার কৈশোরে রুবি রায়ের প্রেমে পড়েনি। হয়ত তার নাম রুবি রায় ছিল না--হয়ত নাম ছিল রুম্পা, টুম্পা, স্বর্ণা, ঝর্ণা কিংবা মুক্তি। কিন্তু ভিন্ন নামের আড়ালে তারা সকলেই ছিলেন আসলে রুবি রায়। রুবি রায় আমাদের কৈশোরের অবধারিত প্রেম। রুবি রায় আমাদের অনেকেরই প্রথম প্রেম। অনেকের প্রথম প্রেমের সমাধি। তার সাথে আমাদের পরিচয় হয়েছে কখনো ইস্কুলে বড় বোনের ক্লাসে বোনকে কলম দিতে গিয়ে। কখনো রুবি রায় ছিলেন আমাদের পাশের বাসার সেই ঝলমলে আপু যার হাসিতে কাঁচের শার্সিতে টোল পড়ত। কখনো রুবি রায় ছিলেন কলেজের বড় আপু। কখনো রুবি রায় পাড়ায় রবীন্দ্র জয়ন্তীতে সব বাচ্চাদের রিহার্সেল করানো ব্যস্তবাগীশ এক উচ্ছল ঝর্ণা। রুবি রায় কখনো আমাদের অংক দেখিয়ে দেন। কখনো আমাদের বলেন একটা রিকশা দেকে দিতে।
আমরা কৃতার্থ হই তার সেবায় লাগতে পেরে।
রুবি রায়-রা অনেক সময়েই আমাদের নাম মনে রাখতে পারেন না। কিন্তু আমরা তাদের মনে রাখি আমৃত্যু। আমরা মনে রাখি তার পছন্দের ফুল, মনে রাখি তার পছন্দের সুগন্ধী, মনে রাখি তার হাসির আওয়াজ, চপল ভ্রুঁ ভঙ্গী। এবং বহু পরে দীর্ঘজীবন পথ পাড়ি দিয়ে মোহনার দিকে যখন অগ্রসরমান, তখন হঠাৎ করেই কারো হাসির নুপুর নিক্কণ, কিংবা কারো অর্ধস্ফুরিত ওষ্ঠাধর মনে করিয়ে দেয় জীবনের এক মহার্ঘ্য প্রাপ্তির কথা---রুবি রায়ের সাথে পরিচয় হবার কথা।

আমার রুবি রায়ের সাথে পরিচয় হয়েছিল বেশ দেরীতেই।
তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষের দিকে পড়ছি। এমনি সময় আমাদের নীরস,নির্জীব জীবনে যেন বৃষ্টির শব্দ হয়ে এলেন ---ধরা যাক, তার নাম---রুবি রায়। একেবারেই একজন ক্লাসিক রুবি রায় ইনি। রুবি রায়েদের কিছু লক্ষণবিচার আছেঃ বয়েসে তারা জ্যেষ্ঠ, অধিকাংশ সময়েই তারা থাকেন আমাদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে, তাদের প্রেমে পড়া যায় বিনিময়ে কোনকিছুর প্রত্যাশা না করেই। অধিকাংশ সময়ে তারা জানেনই না যে একজন নীরবে নিভৃতে পূজা করছে তাকে।
ফিরে আসি 'আমার' রুবি রায়ের কাহিনীতে।
রুবি রায়ের সাথে আমার দেখা হল। কথা হল। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে কী একটা প্রযুক্তি মেলা হবে বা এইরকম কিছু একটা। রুবি রায় এক বিভাগের প্রভাষিকা। তার কিছু সাহায্য দরকার আঁকিবুকি নিয়ে। আমার এক স্যার আমার নাম করাতে হাওয়ায় ভেসে এলেন তিনি আমার সাথে দেখা করতে। তখন আমরা বিশাল ল্যাবরেটরীর মেঝেতে গোল হয়ে বসে নানান প্রজেক্টের কাজ করছি। ঘাড় গুঁজে প্রায় ক্রীতদাসের মত অবস্থা। ল্যাবের দরজাটা হাট করে খোলা। সারাটা ঘরে ঐটেই একমাত্র আলোর উৎস। ঘাড় গুঁজে কাজ করতে করতেই হঠাৎ টের পেলাম ঘরে আলোটা কেমন জানি একটু মৃদু হয়ে এল। সাথে সাথে ভেসে এল এক অপূর্ব সুঘ্রাণ! ঘাড় ঘুরিয়ে তাকানোর আগেই শুনলাম ভীষন মিস্টি একটা কন্ঠ। এবং অস্টম আশ্চর্য রচিত হল তখনই যখন শুনলাম আসলে আমাকেই খোঁজা হচ্ছে। আমি ঠিক জানিনা আমি কী করেছিলাম বা বলেছিলাম। আমি এটাও জানিনা উনি আমাকে কী বলছিলেন। শুধু জানি আমি এমন কিছু প্রত্যক্ষ করছি, এমন কিছু অনুভব করছি যা আগে কখনো করিনি। মনে আছে উনি চলে যাবার পরও অনেকখন ঐখানে স্থানুবৎ হয়ে রয়েছিলাম। হাতের সকল কাজ ফেলে রেখে তার কাজটা করে দিয়েছিলাম। বার বার রুবি রায় এসে ধন্যবাদ জানিয়ে গেছেন। প্রতিটাবার মনে হয়েছে আমি পৃথিবীশ্রেষ্ঠ বীর। হঠাৎ করেই পৃথিবীর সব্বাইকে খুব আপন লাগতে শুরু করল। এমনকি প্রতিদিন সকালে শ্লেষা-জর্জরিত আসুরিক গলায় 'মায়াবন বিহারিনী হরিণী' গাওয়া ফরিদকে পর্যন্ত ক্ষমা করে দিলাম।
আমার এতদিনের আপাত লক্ষ্যবিহীন জীবনে একটা বড় রকমের অদল-বদল হল। যে আমি সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতে দশটা করে ফেলতাম--সেই আমি নিয়মিত সকাল সাতটায় উঠে পড়ি। সবার আগে গোসল করে সবচাইতে ভাল জামাটা পরে নাস্তা না খেয়েই ছুটি ক্যাম্পাসের পথে। রুবি রায় ক্যম্পাসে আসেন ঠিক সকাল সাড়ে নয়টার বাসে। সারা পৃথিবীর বদলেও আমাকে ঐ সময়টায় ঘরে আটকে রাখা যেত না। ক্যাম্পাসে এসেই ঘড়ি দেখার পালা শুরু হতো। সেই সাথে নানান চিন্তা। গতকাল কোথায় দাঁড়িয়ে ছিলাম? আজ অন্য কোথাও দাঁড়াতে হবে। রোজ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলে হয়ত সন্দেহ করবেন। আজকে কি সালাম দেব? নাকি গতকালের মত ব্যস্ততার ভান করে হেটে বেরিয়ে যাব? এবং সব প্রশ্নের বড় প্রশ্ন----আজ কি উনি আমার দিকে তাকিয়ে হাসবেন???

জানি, জানি, আপনাদের বড্ড আমোদ হচ্ছে আমার এহেন নাজেহাল নাজুক অবস্থা দেখে।
অনেকের হয়ত বিরক্তি চড়ছে---ভাবছেন এ কী রকম ছ্যাবলামো রে বাবা!
কেউ কেউ হয়ত চোখ কপালে তুলে ভাবছেন, My God...this is creepy!!
কিন্তু আমার তখন এইসব ভাবনার কোন অবকাশই ছিল না। আমার ভাবনার গাছে তখন নিত্য হাওয়া দিয়ে যান রুবি রায়। ঘড়িতে সাড়ে নয়টা বাজে। আর আমার চারদিকের পৃথিবী থমকে দাঁড়ায়। আমি উলটো দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকি। এইটা আমার প্রিয় একটা খেলা। রুবি রায় যখন আসেন, তার সাথে করে আসে এক অপার্থিব সুঘ্রাণ! আজ এতদিন পর মাঝে মাঝে মনে প্রশ্ন জাগে---আমি আসলে তার প্রেমে পড়েছিলাম? নাকি তার সুগন্ধীর? যা হোক, আমার খেলাটা ছিল এই রকম। ডিপার্টমেন্ট বিল্ডিং এর মেইন গেটে আমি উল্টোমুখী হয়ে দাঁড়িয়ে রইতাম। শুধু তাই নয়। চোখ বন্ধ করে। সকাল বেলা ডিপার্টমেন্টের মেইন গেটে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকাটা যে কী পরিমান রিস্কি সেটা বলে বোঝানো যাবে না। ছাত্রছাত্রীরা অহরহ আসা-যাওয়া করছে। এরমাঝে কল্পনা করুন--আপনি চোখ বন্ধ করে গেটে দাঁড়িয়ে আছেন রাস্তার দিকে পিঠ দিয়ে। পাগল-ছাগল জাতীয় গালিগালাজ সহ্য হয়ে গেছিল দ্রুতই। কিন্তু মুস্কিল হল বন্ধুদের কাছ থেকে ব্যাপারটা চেপে রাখা নিয়ে। একবার যদি টের পায় যে ডাল মে কুছ কালা হ্যায়, তাহলে আমার একেবারেই 'হায় হায়' করে দেবে ওরা। রুবি রায়ের বিষয়টা জানুক বা না জানুক সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ---আমি ভর সকালে মেইনগেটে চোখ বুঁজে দাঁড়িয়ে আছি এইখবরটুকুই আমার জীবনটা ছারখার করে দেবার জন্যে যথেষ্ট।

সবকিছুর পরও আমার কাছে ব্যাপারটা তখন নেশার মত হয়ে গেছে। ততদিনে প্র্যাক্টিস করে করে চোখ পর্যায়ক্রমিক ভাবে খোলা বন্ধ করতে পারি---যাতে লোকের সন্দেহ না হয় (একবার অবশ্য ধরা পড়ে গেসলাম--বন্ধু যখন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, কি রে এইখানে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? আমার উত্তর ছিল---আসলে গতরাতে ঘুম হয় নি তো--)। এত কষ্ট (!) সার্থক হয়ে যায়--যখন রুবি রায় আসেন। রুবি রায় উচ্ছল, প্রানবন্ত--কবি নজরুলের ভাষায় 'প্রকৃতির মত সচ্ছল'! তার সাথে কেউ থাকলে তিনি অনবরত কথা বলতে-বলতে-হাসতে-হাসতে আসেন। আমি তার হাসির শব্দ দুই মাইল দূর থেকেই শুনে চিনতে পারি। মজাটা হয় যখন তিনি একলা আসেন। আমি চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে। রুবি রায়ের কোন হাসির শব্দ, কোন কথার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি না। ঠিক তখনই ঘটে এক অলৌকিক ঘটনা! আমি নিশ্চিত ভাবে টের পাই--বাতাসটা আমার আশে পাশে বদলে যাচ্ছে। একটু একটু করে পালটে যাচ্ছে তার ঘ্রাণ, কেমন যেন হালকা হয়ে যাচ্ছে বুকের ভেতরটা। আমি আমার সকল মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করি। খুব আস্তে করে নিজেকে বিযুক্ত করে ফেলি আশেপাশের পৃথিবীটা থেকে। নিজেকে সন্তর্পনে নিয়ে যাই এমন এক পৃথিবীতে যেখানে শুধু আমি আছি---আর আছেন রুবি রায়---আর এক ব্রহ্মান্ড ভরা সুগন্ধী হাওয়া!

রুবি রায় আমার প্রথম প্রেম না হলেও---অন্যতম প্রেম তো বটেই। রুবি রায় আমার একমাত্র প্রেম--যাকে আমি কখনো মুখ ফুটে বলিনি মনের কথা। রুবি রায়ের কাছে আমার চাওয়ার কিছু ছিলনা। পাওয়ারও ছিলনা কোন প্রত্যাশা। তাকে ভালবাসতাম এক পূজারীর নিষ্ঠা নিয়ে। আমি ভীষন সুখী ছিলাম সেই সময়ে। অথচ সেই সময়ে আমার সুখী থাকার কথা ছিলনা। প্রচন্ড এক কষ্টের সময় পার করছিলাম আমি। রুবি রায়ের কাছে আমার আমৃত্যু ঋণ---তিনি আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন। রুবি রায়ের জন্যেই জীবনে প্রথম বারের মত জানতে পেরেছিলাম---পৃথিবীতে কিছু ভালবাসা এখনো লৌকিক চাওয়া-পাওয়ার উর্ধে থাকে।

রুবি রায় কিছুদিন পরে আমাদের ভার্সিটি ছেড়ে চলে যান বিদেশে। উচ্চ শিক্ষালভ্যার্থে। যাবার আগে অবশ্য একটা জরুরি দায়িত্ব পালন করে যেতে ভুলেন নি। আমার বাবার একবন্ধুর মেয়ে ছিলেন তিনি। বিয়ের চিঠি দিতে তিনি নিজেই এসেছিলেন বাসায়।

আমি সেদিন বাসায় ছিলাম না।

বহুবছর পরের কথা।
আমি নিজেও এখন দেশের বাইরে। সেই একই কারণে। উচ্চ শিক্ষালাভ। ক্রমাগত ভুল মানুষের প্রেমে পড়ে পড়ে নিজেকে ক্লান্ত-শ্রান্ত করে তুলেছি। হঠাৎ একদিন একজনের জন্মদিনের দাওয়াতে গিয়ে টের পেলাম আমার আশেপাশের বাতাসে যেন একটা চেনা চেনা গন্ধ। প্রায় দশ বছর পর আমি আবার ঘর ভর্তি মানুষের মাঝে চোখ বন্ধ করতে গিয়ে হেসে ফেললাম। জীবনটা কি আর হিন্দী সিনেমা! পরে জন্মদিনের পার্টির এক কোনায় যখন চুপটি করে বসেছিলাম তখন হঠাতই কানে ভেসে এল পরিচিত একটা হাসির শব্দ।

আমি তার কাছে গিয়ে বললাম, রুবি রায়, চিনতে পারছেন??

নীচের গানটির কথা,সুর আমার।
বরাবরের মত সঙ্গীতায়োজন ও কন্ঠঃ অনিকেত

আপনাদের কেমন লাগল জানালে খুশি হবো।
আনন্দম!

================================================
ইস্নিপ্সের লিঙ্কটা কাজ করছে না অনেকে বলছেন। এখানে আরো একটা এম্বেডেড প্লেয়ারের লিঙ্ক দিলাম।
এটাও কাজ না করলে জানাবেন। সেই সাথে কারো যদি একটা ভাল streaming web player জানা থাকে, আমাকে তার ঠিকুজি দিলে খুশি হবো।


মন্তব্য

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এক নিঃশ্বাসে পড়লাম। মনে পড়ে গেল রুবি রায়ের কথা... আসলেও ভোলার নয় রুবি রায়দের মুখ...

লেখায় গুরু গুরু

গানটা শুনতে পারছি না কেনো! দেরি সহ্য হচ্ছে না। তাড়াতাড়ি ঠিক করেন!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ বস।
ইস্নিপ্স কাজ করছিল না। আরেকটা লিঙ্ক দিলাম। আশা করি সেটা কাজ করবে।

 অর্ক এর ছবি

চমৎকার লাগলো !! (গুড়)

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ অর্ক!

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ দ্রোহী।

দ্রোহী এর ছবি

সুন্দর, চমৎকার, ও গোছানো লেখা। পড়তে আরাম লাগলো।

গানটা কাজ করছে না।

অনিকেত এর ছবি

একি মুস্কিল! আপনাকে (দ্রোহী) করা কমেন্ট দেখি লাফ-ঝাপ দিয়ে উপরে চলে গেল।
একটা নতুন এম্বেডেড প্লেয়ার দিয়েছি। দেখুন এখন শুনতে পান কি না---
শুভেচ্ছা নিরন্তর

ফ্রুলিক্স.. এর ছবি

খুবই সুন্দর।

অ.ফ: প্রিন্সিপালের বাসা থেকে কেকটাস, পেয়ার চুরি করা হয়েছে অনেক। ফুলের গাছগুলো আমাদের হোস্টেল বিভিন্ন রুমে শোভা (!) বর্ধন করতো। আম, কাঠাল বিভিন্ন ব্লকে এতো ছিলো যে প্রিন্সিপালের বাসায় যাওয়া হতো না।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ ফ্রুলিক্স। শুভেচ্ছা নিরন্তর

অপছন্দনীয় এর ছবি

সাউন্ডট্র্যাকে গুরু গুরু আর লেখায় চলুক

মহানায়ক উত্তম কুমার স্মরণে ক্যাসেটটায় যতদূর মনে পড়ে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কিছু কথা ছিলো। তবে ওটায় অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত না কার যেন কবিতা আবৃত্তি ছিলো আমার জন্য চরম একটা বিরক্তিকর ব্যাপার - মনে হতো জোর করে আহ্লাদী আহ্লাদী ন্যাকা ন্যাকা গলায় আবৃত্তি করা হচ্ছে। কবিতাগুলো টেনে টেনে হেমন্তের কথা আর গানগুলো শুনতাম।

'এ' পাশের শেষে রুবি রায়ের উপস্থিতি অবশ্য মনে করতে পারছি না হাসি

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে আর গানটা শোনার জন্যে অনেক ধন্যবাদ অ'পছন্দনীয়'!
অনেক অনেক ভাল থাকুন।

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ ইশতিয়াক।
আর হ্যাঁ---চিনতে পেরেছিল হাসি

ইশতিয়াক এর ছবি

দী-ঈ-ঈ-ঈর্ঘ পোষ্ট আরো দীর্ঘ হলে ভালো হত। একটানে পড়ে ফেললাম।

চিনতে পেরেছিলো রুবি রায়?

অনিকেত এর ছবি

ডুপ্লি

অনিকেত এর ছবি

ইশতিয়াক, আপনাকে করা মন্তব্যটা কেন জানি উপরে চলে গেল।
অদ্ভূতুড়ে সব কাজ কারবার হচ্ছে দেখি।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

এমসি কলেজের প্রিন্সিপালের বাংলোটা পৃথিবীর সুন্দরতম বাড়ির একটা, এ কথা স্বীকার করতেই হয়।
হাসান ওয়াজেদ স্যার যখন প্রিন্সিপাল ছিলেন, তখন একটা মজার কথা বলেছিলেন একবার। উনার বাবাও এই কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন সে কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন, ' কোনোদিন এমসি কলেজের প্রিন্সিপাল হয়ে এই বাড়িতে থাকতে পারব আবার, এ জন্যই আমি টিচিংয়ে এসেছিলাম।'
আপনি কতো সালের দিকে ওখানে ছিলেন?

অনিকেত এর ছবি

ডুপ্লি

অনিকেত এর ছবি

আরিফ ভাই আপনাকে করা কমেন্ট উপরে চলে গেছে। যাই হোক এখানে আবার দিলাম
"ধন্যবাদ আরিফ ভাই।
আমি ওইখানে ছিলাম ৮৫ সাল থেকে ৮৮ পর্যন্ত। আমার জীবনের সেরা সময়।"

মর্ম এর ছবি

আপনার লেখাগুলো সর্বকালেই একটানে পড়ার মত হয়, শেষে যখন একটা গান থাকে তখন তো সোনায় সোহাগা!

এত দিন পর পর লেখেন কেন? আরেকটু নিয়মিত হওয়া যায় না?

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

অনিকেত এর ছবি

ডুপ্লি

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ মর্ম। চেষ্টা করব নিয়মিত হবার। নানান কাজে ব্যস্ত ছিলাম কিছু দিন।
ভাল থাকুন--অনেক অনেক ভাল--
শুভেচ্ছা নিরন্তর

guest_writer এর ছবি

বাহ!

-মেফিস্টো

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ মেফিষ্টো

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

হাততালি
একটা প্রশ্ন।

"রুবি রায়েদের কিছু লক্ষণবিচার আছেঃ বয়েসে তারা জ্যেষ্ঠ"

রাহুল দেব বর্মণের গানে এমন ইঙ্গিত আছে কী? আমি যাকে নিজের 'রুবি রায়' বলে হিসেব করতে চাচ্ছি, সে তো বয়সে আমার কাছাকাছিই। নাকি এমনক্ষেত্রে নচিকেতার- 'নীলাঞ্জনা' আখ্যা দেয়া যায়

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ ধৈবত। চমৎকার প্রশ্ন করেছেন। এইটা কখনোই ভেবে দেখা হয় নি। কেন জানি গানটা শুনলেই মনে হত রুবি রায় একজন ধরাছোঁয়ার বাইরের মানুষ। কিন্তু সেটা কেন বয়োজ্যেষ্ঠতার কারনেই---এইটা কখনোই তলিয়ে দেখা হয় নি। আর আমি যখন 'আমার' রুবি রায়ের দেখা পেয়েছিলাম তখন সেটা একেবারেই আমার ঐ অনুভূতির সাথে মিলে গিয়েছিল।
আপনার রুবি রায় অথবা নীলাঞ্জনার জন্যে শুভ কামনা রইল!
শুভেচ্ছা নিরন্তর

নীড় সন্ধানী এর ছবি

বয়সে জ্যৈষ্ঠ সেটা গানের কথাতেই বলা আছে, যখন ......একটি কিশোর ছেলে একা কেন দাড়িয়ে, বলা হয় তখনই। হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নীড় সন্ধানী এর ছবি

অদ্ভুত সুন্দর লেখাটা এক নাগাড়ে পড়ার জন্য দুদিন অপেক্ষা করে আজকে সময় পেলাম। রুবী রায়ের গানটা আমি কৈশোরে শুনিনি, পূর্নবয়সে এসে শুনেছি এবং মজার ব্যাপার হলো গানটা শোনার পরে আমিও একজন রুবী রায়ের দেখা পেয়ে যাই অসময়ে। তাকে দেখেই চোখ বন্ধ করে আমি কৈশোরে ফিরে গিয়েছিলাম মুগ্ধতাকে ছুঁয়ে দেখতে। বলতে ইচ্ছে করছিল, এতদিন কোথায় ছিলেন রুবী রায়? হাসি

এই লেখায় আপনার গদ্যের প্রতি আমার ভক্তি রেখে যাচ্ছি কয়েকটা উদাহরণ দিয়ে-

"দারুণ গ্রীষ্মের দুপুরে বাড়িটার প্রশস্ত বারান্দায় অলস দুপুর ঘুমুতে আসত।"
"বারান্দা থেকে হাত-বাড়ানো দূরে একটা পেয়ারা গাছ"
"ঘাসেরা যেন ছোট ছোট হাত বাড়িয়ে আলতো করে জড়িয়ে ধরছে আমার পায়ের পাতাটাকে"
"আমার পুড়ন্ত ঘরে ঝরঝর করে আগুন নেভানো বৃষ্টির পানি পড়ল--- এক বৃষ্টির দিনে"
"খুব আস্তে করে নিজেকে বিযুক্ত করে ফেলি আশেপাশের পৃথিবীটা থেকে। নিজেকে সন্তর্পনে নিয়ে যাই এমন এক পৃথিবীতে যেখানে শুধু আমি আছি---আর আছেন রুবি রায়---আর এক ব্রহ্মান্ড ভরা সুগন্ধী হাওয়া!"

এরকম চমৎকার শব্দ বিন্যাস প্রতিষ্ঠিত লেখকদের কাছেও খুব বেশী পাইনি। চলুক

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অনিকেত এর ছবি

নীড়'দা, আমি জানিনা আপনার এমন প্রশংসার আমি যোগ্য কিনা। লেখাটা আপনার ভাল লেগেছে এইটে বুঝতে পারছি। আমার কষ্ট সার্থক। আপনার রুবি রায়ের জন্যেও একটা সেলাম ঠুকে দিলাম
ভাল থাকুন নীড়'দা---অনেক অ-নে-ক ভাল!

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

চলুক

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

নি্লম্বিত গণিতক এর ছবি

লেখাটির লাইনগুলোতে পা রেখে অনেকের জীবনের রুবী রায়েরা হেঁটে গেলেন যেন। এইসব রুবী রায়েদের কথা কেউ জানেনা। তারা যেন একধরণের লজ্জা জড়ানো সিন্দুকের গোপন কোঠর। মাঝে মাঝে যখন কাছেধারে কেউ থাকেনা, তখন লুকিয়ে খোলা হয় সেই সিন্দুক। ধ্বক করে বেরিয়ে আসে স্মৃতির ন্যাপথলিনের সুবাস। চমকে তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দেই সিন্দুকের ডালা, নইলে যেন হারিয়ে যাবে রুবী রায়। তার পরের কয়েকটি মুহুর্ত চোখ বন্ধ করে আস্বাদন করি ফেলে আসা রুবী রায় নামের স্মৃতিটিকে। সে এক ভারী আনন্দের ব্যাপার, ভারী বিষাদের ব্যাপার। তা কারো সাথে ভাগ করা যায় না, কাউকে বলা যায়না সেই মানুষটির কথা। তখন আমরা সবাই ফিরে যাই কৈশোরে, যেখানে রোদ জ্বলা দুপুরে রুবী রায় বাস থেকে নামেন। হাহাকার করে ওঠা বুকে আমরা লুকিয়ে তাকে দেখি, অনেকটা প্রতিমা দেখবার মতো। সে এক ভারী আনন্দের ব্যাপার, ভারী বিষাদের ব্যাপার।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এমন একটি বিষয় নিয়ে লিখবার জন্যে।

-নিলম্বিত গণিতক

অনিকেত এর ছবি

ভাই রে, আমি আপনার লেখার ভক্ত হয়ে গেলাম আপনার কমেন্ট পড়েই।
অনেক ধন্যবাদ এমন একটা অসাধারণ মন্তব্যের জন্য। লেখালেখিটা সার্থক হয়ে যায় যখন এইরকম কিছু মর্মস্পর্শী মন্তব্য আসে।
অনেক অনেক ভাল থাকুন। শুভেচ্ছা নিরন্তর।

মাহবুব রানা এর ছবি

অনেক দিন পর! লেখা নিয়ে বলার কিছু নেই, গানটা শোনা গেলনা।

আপনার রুবি রায়কে চেনার চেষ্টা করলাম, পেরেছি পেরেছি বোধহয় হাসি

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ মাহবুব রানা। গানের লিঙ্কটা ঠিক করে দিয়েছি এখন।
ভাল থাকুন

সাইফ তাহসিন এর ছবি

লেখাটা পড়ে ভালো লাগল, অনেকদিন পর আপনার দেখা পাইলাম

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিকেত এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ বস

আশালতা এর ছবি

পড়ে মন ভার হলেও মাঝে মাঝে সেটাও বিরাট প্রাপ্তি তাই শুধু ভালো লাগল বললে কম বলা হবে ।

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ আশালতা!

আব্দুর রহমান এর ছবি

"রুবি রায় আমাদের কৈশোরের অবধারিত প্রেম। রুবি রায় আমাদের অনেকেরই প্রথম প্রেম। অনেকের প্রথম প্রেমের সমাধি। তার সাথে আমাদের পরিচয় হয়েছে কখনো ইস্কুলে বড় বোনের ক্লাসে বোনকে কলম দিতে গিয়ে। কখনো রুবি রায় ছিলেন আমাদের পাশের বাসার সেই ঝলমলে আপু যার হাসিতে কাঁচের শার্সিতে টোল পড়ত। কখনো রুবি রায় ছিলেন কলেজের বড় আপু। কখনো রুবি রায় পাড়ায় রবীন্দ্র জয়ন্তীতে সব বাচ্চাদের রিহার্সেল করানো ব্যস্তবাগীশ এক উচ্ছল ঝর্ণা। রুবি রায় কখনো আমাদের অংক দেখিয়ে দেন। কখনো আমাদের বলেন একটা রিকশা দেকে দিতে।"
"রুবি রায়-রা অনেক সময়েই আমাদের নাম মনে রাখতে পারেন না। কিন্তু আমরা তাদের মনে রাখি আমৃত্যু। আমরা মনে রাখি তার পছন্দের ফুল, মনে রাখি তার পছন্দের সুগন্ধী, মনে রাখি তার হাসির আওয়াজ, চপল ভ্রুঁ ভঙ্গী। এবং বহু পরে দীর্ঘজীবন পথ পাড়ি দিয়ে মোহনার দিকে যখন অগ্রসরমান, তখন হঠাৎ করেই কারো হাসির নুপুর নিক্কণ, কিংবা কারো অর্ধস্ফুরিত ওষ্ঠাধর মনে করিয়ে দেয় জীবনের এক মহার্ঘ্য প্রাপ্তির কথা---রুবি রায়ের সাথে পরিচয় হবার কথা।"

ঠিক বোঝানোর মত নয় সেই ভালোলাগা। আপনি অনেকটাই সফল, এতোটা সুন্দর ভাবে খুব কম মানুষ বলতে পারবে রুবি রায় জনিত ভালোবাসার কথা। তবু আমি বলব, সে কেবল অনুভবের, অসাধ্য তাকে কাগজ কলমের বেড়াজালে আটকানো।

------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ আব্দুর রহমান।
ভাল থাকুন সকল সময়ে--

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

চমৎকার লেখাটা।
অনিকেত-এর গদ্য কী অসাধারণ!

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

অনিকেত এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ রিটন ভাই এমন স্নেহার্দ্র মন্তব্যের জন্য।
অনেক ভাল থাকুন
শুভেচ্ছা নিরন্তর

রাহিন হায়দার এর ছবি

লেখাটা দীর্ঘ কিনা আপনার চমৎকার গদ্য তা আন্দাজই করতে দিল না। দেঁতো হাসি

আর গানে, গুরু গুরু

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ বস। তোমার নতুন গান কবে দিচ্ছ???

রু (অতিথি)  এর ছবি

গদ্য ও গান দুটোই খুব ভালো লেগেছে।

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ রু!!
ভাল থাকুন সকল সময়ে সকলকে নিয়ে---

তারাপ কোয়াস এর ছবি

মুগ্ধতা জানিয়ে গেলাম। গুরু গুরু


love the life you live. live the life you love.

অনিকেত এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ বস। তোমার গিটারের নতুন কাজ শোনাচ্ছ কবে??

মণিকা রশিদ এর ছবি

অনিকেতদার কন্ঠ অসাধারণ লাগলো। বিশেষ করে স্ট্যান্ডিং তো ভয়ানক রকমের ভালো। লেখাটা এক নিঃশ্বাসে পড়ার মতন প্রানবন্ত।

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মণিকা'দি। আপনার গানের অপেক্ষায় আছি কিন্তু--

নিঃসঙ্গ গ্রহচারী! এর ছবি

দুর্দান্ত!

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ গ্রহচারী!
ভাল থাকুন সকলকে সঙ্গে নিয়ে এই গ্রহেই--

নিলয় নন্দী এর ছবি

পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বাড়িটিতে ছিলেন, না স্বর্গে ছিলেন ভেবে পাচ্ছি না ! আমাদের সবার ছোটবেলা কেন এমন ভূস্বর্গে কাটে না ভেবে চোখে জল আসছে। মন খারাপ আমি আপনার মূল লেখাটা পড়ে যতটা না মুগ্ধ হয়েছি তার চেয়ে চতুর্গুন মুগ্ধ হয়েছি ভূমিকাটুকু পড়ে।
ক্যাসেটের নাম ছিল উত্তম কূমারের মৃত্যু । তখনও স্কুলে ভর্তি হইনি ( নাকি হয়েছিলাম ?) প্রতিদিন শুনতে শুনতে পুরো ক্যাসেটটাই প্রায় মুখস্থ হবার যোগাড় হয়েছিল। কিন্তু শেষের ইন্সট্রমেন্টালের কথা মনে করতে পারছি না। আমাদের ক্যাসেটে বোধহয় ওই জিনিস ছিল না।

রুবি রায়ের সাথে গায়কের বয়সের একটা ডিফারেন্স ছিল সেটা বোধহয় গানেই উল্লেখিত আছে।
একটি কিশোর ছেলে একা কেন দাঁড়িয়ে সে কথা কি কোনো দিনও ভাবতে...

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে আর এমন একটা চমৎকার মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ নিলয়।

তাসনীম এর ছবি

দুর্দান্ত, লেখা ও গান।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ তাসনীম ভাই--
শুভেচ্ছা নিরন্তর

tanjim এর ছবি

লেখা ভাল......তবে গানটা সত্যিই অসাধারন! আপ্নার কণ্ঠ তো দেখি দুর্দান্ত!!

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে আর গানটা শোনার জন্যে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ তানজীম।
শুভেচ্ছা নিরন্তর

সাঝবাতির রূপকথা এর ছবি

গানটার ডাউনলোড লিঙ্ক দেয়া যাবে?
প্রথম একবার পড়লাম, গানটা শুনতে শুনতে আবার পড়লাম।অদ্ভুত! রুবি রায় দের জন্যে ভালোবাসার অনুভূতি বুঝি সবার একই রকম!

সাঝবাতির রূপকথা এর ছবি

গানটার ডাউনলোড লিঙ্ক দেয়া যাবে?
প্রথম একবার পড়লাম, গানটা শুনতে শুনতে আবার পড়লাম।অদ্ভুত! রুবি রায় দের জন্যে ভালোবাসার অনুভূতি বুঝি সবার একই রকম!

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ সাঝবাতির রূপকথা (এই নামের ছবিটা দারুন লেগেছিল আমার)।
আপনার ইমেল আমাকে মেইল করে দিতে পারেন। আমার ইমেল পাবেন আমার একাউন্টেই। তাহলে আপনাকে সরাসরি গানটা মেইল করে দিতে পারি।
ভাল থাকুন সকল সময়ে।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।

তিথীডোর এর ছবি

মনটন বেজায় খ্রাপ! মন খারাপ
সচলে ঢোকার সময়-সুযোগ পাচ্ছি না...
খোমাখাতায় আপনার লেখার লিঙ্ক দেখে ঢুকলাম এবং মন আরো খ্রাপ করে বেরুচ্ছি। চিন্তিত

লেখা এবং গানে যথারীতি তারা।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অনিকেত এর ছবি

মন খারাপ কেন রে তিথী?
ভাল থাকিস সকল সময়ে

rahil_rohan এর ছবি

মুগ্ধতা জানিয়ে গেলাম।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ রাহিল রোহান।
ভাল থাকুন সকল সময়ে

মুশফিকা মুমু এর ছবি

গানটি দারুন লাগল ভাইয়া, চমৎকার!!!!!

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মুমু। অনেক দিন পর তোমার দেখা পেলাম। কেমন আছো?
নতুন একটা লেখা দাও ---
শুভেচ্ছা নিরন্তর

শাহনাজ এর ছবি

চমৎকার গান, মুগ্ধ হবার মত লেখা। ঈর্ষা হচ্ছে রুবি রায়দের জন্য। সেই সঙ্গে বড়ো জানতে ইচ্ছে করছে---আমি কি কখনো কারো রুবি রায় ছিলাম দেঁতো হাসি

অনিকেত এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ শাহনাজ।
আমি নিশ্চিত আপনি কারো না কারো 'রুবি রায়' ছিলেন
এই পৃথিবীতে সব মেয়েরাই কোন না কোন সময় 'রুবি রায়' হয় বলে আমার ধারণা---

শুভেচ্ছা নিরন্তর

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

মজার বিষয় হচ্ছে, আমারও গানটা শুনে ধারণা হয়েছে রুবি রায় আমার চেয়ে বয়সে বড় কেউই হবেন। কী কারণে এই মনে হওয়া, সেটা অবশ্য গানটা বিশ্লেষণ করে বলা যায় না...

গান নামাতে দিলাম অনিকেতদা। বলে যাই, লেখাটা খুব ভালো লেগেছে। অনেক দিন পরে আপনার লেখা পেয়ে ভালো লাগলো খুব...

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

হুম। হয়তো 'রুবি' নামটি এই প্রজন্মের মেয়েদের ক্ষেত্রে অবসলিট হয়ে গিয়েছে। 'রুবি' নামে নামের পরিচিতজনেরা যারা আছেন তারা আমার খালা কিম্বা কাকী শ্রেণীয়া। অথবা লিরিকে 'রুবি'র পিছে 'রায়' যুক্ত করাতে একটা 'ভদ্রমহিলা'সুলভ ভাবের উদয় হয়েছে যেটা শুধুমাত্র 'রুবি' থাকলে মনে হতো না। এইজন্য নামটা শুনলে তোর বয়ঃজ্যেষ্ঠ কারো কথা মনে হয়।
এইখানে একটা ইউটিউব লিঙ্ক দিলাম।

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ সুহান----

শুভেচ্ছা নিরন্তর

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

লেখা ও গান, অসাধারন!!! চলুক

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ জাহাঁপনা!
তোমার লেখা দেখি না কেন???
নতুন লেখা দাও মিয়া---

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

দিসি চোখ টিপি

একটা ছোট্ট কথা বলার জন্যে আসোলে আজ আবার মন্তব্য করা.... এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত...

গানের শেষে রুবী রায়ের মূল ইন্ট্রো আর সুরটা না দিলে ভালো হতো। হাসি

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

চমৎকার লেখা এবং মিউজিক। অনেক দিন পরপর এসে একটা মাস্টারপীস ঝেড়ে দিয়ে যান। আপনার লেখাটা পড়ার পর গিটারটা পেড়ে ধুলো ঝেড়ে মনে পড়ে রুবী রায় সুরটা তুলছিলাম, টুং টাং টুং টাং। আইফোন দিয়ে শব্দ ভালো ধরা যায়না।

লেখাটা নিয়ে বিশেষ কথা নেই। অত্যন্ত সুন্দরভাবে আপনি তরুন মনের অনুভূতিগুলো উজাড় করে দিয়েছেন। সম্ভবত পৃথিবীতে একজন মানুষও নেই যার জীবনে এমন একজন হলেও রুবী রায় আসেনি। আমার নিজের তো মনে হয় হাফ সেঞ্চুরী পুরো হয়ে গেছে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা ---অনেক ধন্যবাদ রাতঃস্মরণীয় ভাই। আপনার গীটারের বাজনা কবে শোনাবেন???

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

গিটার আপাতত শোনাতে পারছি না দাদা কারিগরী কারণে। তয় অন্য কিছু শোনাতে পারি। আপনি যার সুরে মজেছেন আমি তার বাপের সুরে মজেছি। যন্ত্রসংগীতের সঙ্গতে কিছু ঝগড়াঝাঁটি শোনেন তবে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অনিকেত এর ছবি

বাহ, বাহ! দারুণ জিনিস বস। আপনার গলা তো জোস!!
এইটা কবে রেকর্ড করা ???
এমন আরো চাই বস।
আর বাঁশীওয়ালার কথা আলাদা করে না বললেই নয়। দারুণ বাঁশী!!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

গতকাল সন্ধায় হঠাৎ করেই এটুকু আমার এক বন্ধু ফোনে ধরে ফেললেন। আমরা বাংলার বাউল নাম দিয়ে একটা বাউল সংগীতের সংগঠন করেছি, সেখানে বসেই এই অপকর্মটা করেছি।

বাঁশীওয়ালার কথা আলাদাভাবে বলতেই হয়। তিনি নিখিল কৃষ্ণ মজুমদার, একজন লোক সংগীতের নিরলস এবং প্রচার বিমূখ সাধক। আমি প্রায় মাসখানেকের জন্যে বাইরে যাচ্ছি। ফিরে এসে যদি সময় করে খুলনা যাই, তখন কিছু ট্র্যাক প্রফেশনাল স্টুডিওতে নামাবো। ফোক ইন্সট্রুমেন্টে গানস এর রোজেস এর "সুইট চাইল্ড অব মাইন" গানটাও করার প্ল্যান করছি আস্তে আস্তে। চোখ টিপি নিখিল বাবুর উপর ছোট্ট এই ভিডিওটা দেখেন,

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কুটুমবাড়ি [অতিথি] এর ছবি

চমৎকার লেখা। একটানে পড়লাম। আচ্ছা, শুরুতে দী-ঈ-ঈ-ঈর্ঘ পোস্ট বলে ভয় দেখানোটা কি জরুরি ছিল? চিন্তিত

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ কুটুমবাড়ি।

শুরুতে দী-ঈ-ঈ-ঈর্ঘ পোস্ট বলে ভয় দেখানোটা কি জরুরি ছিল?

ঠিকাছে--পরের বার যখন বি-শা-আ-আ-আল লেখা দেব আর শুরুতে বলে দেব না--আর সেটা পড়তে গিয়ে যখন টের পাবেন---তখন কেমন মজা পান দেখব-- হে হে হে !

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সব সময়ের মতোই অসামান্য পোস্ট+গান। মুগ্ধতা ভাষাতীত, তাই চেষ্টা করলাম না। হাসি

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ ইশতি। আমি জানি তুমি ভীষন ব্যস্ততার মাঝে আছ। তবুও মাঝে মধ্যে লেখা দিও বস।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।

নৈষাদ এর ছবি

লেখা ও গান... চলুক

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ নৈষাদদা--
ভাল থাকুন সকল সময়ে, সকলকে নিয়ে

তারেক আল ইসলাম (সুমন) এর ছবি

মুগ্ধতা মুগ্ধতা মুগ্ধতা
খোমাখাতায় শেয়ার করতে চাই ...

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ তারেক। নিশ্চয়ই শেয়ার করবেন--- হাসি
ভাল থাকুন--অনেক অনেক ভাল

বিমল চন্দ্র এর ছবি

চমত্কার লেখা আর গান। ভাল লাগল, অনেক ভাল।

বিমল চন্দ্র এর ছবি

ভাল লাগ্ল অনিকেত দা, অনেক ভাল। যেমন লেখনি তেমনি গায়কি।

অনিকেত এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ বিমল'দা।
ভাল থাকুন সকল সময়

guest_writerআদু ভাই এর ছবি

রুবি রায়কে মনে পড়ে গেল। আমার রুবি রায় যে এতোটা দেবী হতে পারে, আগে খেয়াল করিনি। অসাধারণ একটা লেখা উপহার দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
পড়েছি আজকে এই বৃষ্টি-বিষণ্ণ দিনে। এমন দিনে তারে বলা যায়/ এমন ঘন ঘোর বরিষায়।

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ আদু ভাই।
ভাল থাকুন সকল সময়ে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

লেখাটা দারুণ... বড় হলেও তাই তরতরিয়ে পড়া হয়ে গেলো।
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সেই বাড়িটির জন্য ঈর্ষা
এখন আমার সিলেট যেতে ইচ্ছে করছে

গানটা শুনতে পেলাম না, দুটো লিঙ্কের একটাও কাজ করছে না মন খারাপ

রুবি রায়ের ঘটনা আসলে এইটাই, আমাদের সবার জীবনেই এই কাহিনী ঘুরে ফিরে আসে। বুদ্ধদেব বসুর প্রেমে পড়ার গল্পটা মনে পড়ে গেলো

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ নজু ভাই। গানের লিঙ্কটা টেস্ট করলাম মাত্র। কাজ করল তো দেখি।
এনিহু লাগলে বইলেন--মেইল কইরা দিমু নে।
শুভেচ্ছা নিরন্তর

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

পয়লাটা বাজে না বাঁশী গো... আর দ্বিতীয়টা প্লে দেওনের পরে পুরা মেশিন হ্যাঙ হয়ে যায়। রিস্টার্ট দিতে হয়... ক্যান এমন হয় কে জানে?
একটু যদি কষ্ট কইরা মেইলান...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনিকেত এর ছবি

মেইল কইরা দিসি বস.......

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনিকেত এর ছবি

ডুপ্লি

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

লেখাটা খুব ভাল লাগল অনিকেত।
গানটা এই লিংক থেকে শোনা যাচ্ছে না।
ছেলেদের জীবনে যদি রুবী রায় থাকেন তাহলে মেয়েদের জীবনেও যারা এমন করে আসে তাদের কী বলা যায়?
তাদের নিয়ে কি এমন কোন গান নেই? হাসি

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ অনিন্দিতা। গান শুনতে চাইলে বইলেন। মেইল করে দিতে পারি।

ছেলেদের জীবনে যদি রুবী রায় থাকেন তাহলে মেয়েদের জীবনেও যারা এমন করে আসে তাদের কী বলা যায়?

---মনে হয় 'রবার্ট রায়' !!! চোখ টিপি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আপনার গানটা ছাড়ার পরে যে জিনিসটা প্রথমেই মাথায় বাড়ি খেলো তা হলো, শুরুটা স্পিকারের চার দিকেই সুষম বন্টিত হয়েছে। কখনো বামে, কখনো ডানে বাজনাগুলো আলাদা হয়ে বাজছিলো (একেবারে হাইফাই সাউন্ডের মতো)। এটা কী করে করলেন! জিজ্ঞেস করলাম এইজন্য যে সাধারণত ব্যক্তিগত রেকর্ডিংগুলো খুব ফ্ল্যাট হয়। আপনারটা ব্যতিক্রম লাগলো।

আর রুবী রায় নিয়ে যে মন্তব্য করবো ঠিক করেছিলাম, সেটা দেখি উপরে অনিন্দিতা চৌধুরী বলে ফেলেছেন। আমি কেবল যোগ করি কিছু। সব ছেলেদের জীবনেই যদি একজন করে রুবী রায় থাকেন, তাহলে সব মেয়ের জীবনেই একজন ধুগো রায় (ইয়ে মানে, অই আরকি!) থাকবে না কেনো? এইটা কী রকমের নীতি হলো? কখনো তো শুনলাম না কোনো নারী কণ্ঠে ধুগো রায়ের বিরহে কোনো বালিকার লাল রঙা দোতলা বিআরটিসির বাসের গায়ে মাথা ঠুকার উপাখ্যান! দুইন্যার যতো ভালো আর বিখ্যাত গান আছে সবগুলোই পুরুষের কণ্ঠে, নারীকে উৎসর্গ করে। বলি, পুরুষদের কি উৎসর্গীত হতে মঞ্চায় না? মন খারাপ

অনিকেত এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ধুগো।
গানের শুরুর দিকের ভার্সটাতে আমি একটা সারাউন্ড ইফেক্ট দিয়েছি। সাউন্ডটা লেফট স্পিকার হতে বেরিয়ে সেন্ট্রাল স্পিকার হয়ে রাইট স্পিকারে যায়। 5.02 সেকেন্ড সময় লাগে গোটা প্রসেসে। এর মাঝে একটু ইকো ইফেক্ট আছে। দুটো ইফেক্ট মিলে শেষে এই ফাইন্যাল রেজাল্ট হয়।
আমার খুব ভাল লাগল তুমি এই জিনিসটা নিয়ে প্রশ্ন করেছ দেখে। আমি অপেক্ষা করছিলাম কেউ ব্যাপারটা খেয়াল করে কি না। You made my day, bro...!!

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

শুধু রঙিন ভাই না, সারাউন্ড সাউন্ড এফেক্টটা আমিও শুনলাম, এবং খেয়াল করলাম, এবং জানাতে এলাম। তবে সেটা আপনার মতো সঙ্গীতায়োজক (হোক শখের) করে ফেলতেই পারে এইটা ধরে নিয়েই মোটেও অবাক হলাম না। হাসি
কিন্তু, তার সাথে ব্যাকগ্রাউন্ডে যে আরেকটা আওয়াজ এলো এবং থাকলো বেশ অনেকক্ষণ ধরে, যেইটা শুনে মনে হলো যে কেউ লোহার পাইপের উপরে আরেকটা দেড় ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ টেনে নিয়ে যাচ্ছে, ঐটা একদমই ভালো লাগলো না... মন খারাপ

এইটা বললাম বলে মন খারাপ করেন না। আপনার গান আর সঙ্গীতায়োজন ভালো লাগে বলেই নির্দ্বিধায় বলে ফেললাম। হাসি

লেখাটা দারুণ লাগলো। আর এই রকম ব্যাপার-স্যাপার মানে সবারই হয় আসলেই কম-বেশি। তবে আমার মনে হয় না রুবি রায়-রা পূজারীদের কথা অজ্ঞাত থাকেন, হয়তো ভক্তদের ভবিষ্যতের প্রয়োজনেই খেয়াল না করার অভিনয় করে যান। হাসি

অট: আপনাদের সিলেটের বাড়ির গল্প পড়ে আনন্দ পেলাম। আর আপনি সত্যিই আমার পোস্ট পড়া বাদ দিয়েছেন, নাকি পড়ছেন কিন্তু নিজের কথা রাখার জন্যেই মন্তব্য করছেন না, শুনি? চিন্তিত

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অনিকেত এর ছবি

আররে, আমি তো তোমার মন্তব্যের অপেক্ষায় বসেছিলাম হে! অনেক অনেক ধন্যবাদ গানের অংশটুকু নিয়ে এমন দারুণ কমেন্টের জন্য!! আমি আসলেই মুগ্ধ তুমি এতকিছু খেয়াল করেছ দেখে। আর পাইপের কথা বলছ? হা হা হা হা---- ঐটা খানিকটা ইচ্ছা করে দেয়া একটা যান্ত্রিক আবহ তৈরি করার জন্য। এবং আমি স্বীকার করছি এক্সপেরিমেন্টটা অতটা ভাল হয় নি। থ্যাঙ্কু তোমাকে জিনিসটা ধরিয়ে দেবার জন্য।

আমি বেশ ব্যস্ত থাকায় এইদিকে তেমন নিয়মিত ছিলাম না। তাই তোমার এবং আরো অনেকের লেখা চোখ এড়িয়ে গেছিল। কিন্তু এখন 'মহাসমারোহে' আবার ফিরে এসেছি। মন্তব্যের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়---হে হে হে

শুভেচ্ছা নিরন্তর

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ও, আর আপনার 'বড় লেখা' হুমকি দেখে, আমি ভেবেছিলাম হাতে সময় নিয়ে এসে পড়বো, তো আজকে গান শুনতে শুনতে পড়লাম। গান তো বটেই, লেখাটা এত অসাধারণ হয়েছে, কোথায় বড় ছিল, টেরই পাই নাই! (গুড়)

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সচল জাহিদ এর ছবি

এই লেখা পড়তে এত দেরী হলো !!!!


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

আশালতা এর ছবি

আপনার রুবি রায়ের গল্প শুনে অনেক আগে পড়া একটা ছোট গল্প মনে পড়ে গেল, যেখানে একটা ছেলে পুরনো কাগজের ভাঁজে পাওয়া সাদা কালো ছবির এক অচেনা অদেখা নারীর প্রেমে পড়ে ...

সবাই আপনার লেখার এত ভূয়সী প্রশংসা করে যে আমি নতুন করে কিছু বলার খুঁজে পাইনা । তবু আজ বলতেই হচ্ছে যে আমার সচলে অচল হবার একটা বড় কারন আপনার লেখা । রোজদিন পড়া লেখাগুলোও ঘুরে ফিরে পড়তে ইচ্ছে করে, পড়িও । কাল রাতেও সামারার গান শুনে ঘুমতে গিয়েছি ।

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আশালতা আপনার মন্তব্যের জন্য। আমি ঠিক নিশ্চিত নই আপনার এত প্রশংসার যোগ্য আমি কিনা। তবে আপনার এই প্রশংসা আমাকে ভবিষ্যতে আরো ভাল লিখতে উৎসাহ দেবে --- এইটা আমি নিশ্চিত।
ভাল থাকুন সকল সময়ে, সকলকে নিয়ে---

একজন পাঠক এর ছবি

বাসায় নানুর ছোটবেলার একটা চন্দন কাঠের বাক্স আছে, খুললে একটা অপার্থিব গন্ধে মন ভরে ওঠে। আপনার লেখাটা যেন ঠিক সে রকম।

ভাল থাকুন।

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এমন অসাধারণ একটা মন্তব্য করার জন্যে।
শুভেচ্ছা নিরন্তর

ওডিন এর ছবি
অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু !

ওডিন এর ছবি

এইখানে 'আহ' বলতে http://www.sachalayatan.com/aah/ এর 'আহ' কে বোঝানো হয়েছে দেঁতো হাসি

ফাহিম হাসান এর ছবি

গান লেখা দুটোই ভালো লাগলো। আপনার পুরানো লেখাও পড়লাম। ভক্তের তালিকায় আমাকে যোগ করে নিয়েন।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ ফাহিম---ভাল থাকুন সকল সময়ে

guest_writer এর ছবি

খুব পাগলামী কিন্তু দারুন লেখা...আপনি কেনো চোখ বুজে উলটো থাকতেন ?

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা ---সেইটাই তো মজা---আপ্নিও একদিন করে দেখুন!

মিলু এর ছবি

ওরে অনিকেতদা! কি গান বানাইছেন এইটা!! সত্যি কথা বলছি, প্রথম টানটা শুনেই হার্টটা বিট মিস করল! বারবার শুনেই যাচ্ছি। গুরু গুরু

গানটা নামাব কি করে বুঝতে পারছি না। একটু হেল্পান প্লিজ।

আর লেখা? অসামান্য! মনে হচ্ছিল অসম্ভব সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছি, আর তাতে আমার রুবি রায়ও এসে হাজির!

এম্বেডিং করতে চাইলে সাউন্ডক্লাউড ব্যাবহার করতে পারেন। সমস্যা করেনা বলেই জানি, আর লুকটাও বেশ স্মার্ট।

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মিলু। তোমার নতুন গানের অপেক্ষায় থেকে থেকে তো বুড়ো হয়ে যাচ্ছি বস।
নতুন গান ছাড়ো-----জলদিইইইইইই

পাঠক এর ছবি

বেলি আপা আপনার মত আমারও শিক্ষিকা ছিলেন। তবে তফাৎ এই যে অতদিনে আমি "ঝর্ণার মত উচ্ছল" হয়ে গিয়েছিলাম!

আমাদের অনেক পুরাতন পরিচয় আছে, সেইটুকু উল্লেখ না করাই ভালো। ফেইসবুকে তো মুখোমুখি হচ্ছিই প্রতি নিয়ত-ই! বালা থাকবাইন হাসি

অনিকেত এর ছবি

ওরে দুষ্টু সা--, ভেবেছ তোমাকে চিনি নি?
'আমি আমি জানি জানি, তোর যত শয়তানী' হে হে হে ---
তবে নিরাশ করতে হচ্ছে হে, এইটা বেলি আপা-কে নিয়ে লেখা নয় রে।
কারণ তো ফেসবুকে বলেইছি
ভাল থেকো বস, এখানে আমার লেখা পড়তে আসার জন্যে এবং মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ!

অলস ফানুস এর ছবি

গানটা শুনতে শুনতে পড়লাম । অনেক ভাল লেগেছে ।
চলুক

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ অলস ফানুস!

Guest_Writer নীলকমলিনী এর ছবি

আজকেই মার জন্য লেখাটি পড়লাম। তোমার পুরনো লেখা দেখে এই লেখাটিও এক টানে পড়ে ফেললাম।
নিজের অনেক কথা মনে পড়ে গেল। কখনো নিজেই রুবি রায় বা কখনো ধুগ রায়ের জন্য প্রতীক্ষা সব নুতন করে মনে পড়ছে। খুব ভাল হয়েছে, মোটেই বড় লাগেনি।
পৃথিবীর সবচে সুন্দর বাসাটায় ৭৮ এ গিয়েছিলাম সিলেটে শিক্ষা সফরে গিয়ে। বাড়ীটা তখন খালি ছিল, আমরা এক সপ্তাহ ছিলাম। প্রাক্তন প্রিন্সিপাল এর মেয়ে আমাদের ক্লাস ফ্রেন্ড। ওই থাকার ব্যাবস্থা করেছিল। আমরা অনেক এনজয় করেছিলাম।
খুব ভোরে উঠে লনে হাঁটা, সন্ধ্যায় সূর্যাস্ত দেখা, অপূর্ব।
তুমি কি এখন দেলওয়ারে আছ? ডালাসে ১৩ই জুলাই এর সচল আড্ডায় আসবে কি? নেমন্তন্ন রইল।

অনিকেত এর ছবি

সুপ্রিয় নীলকমলিনী'দি,
মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
আমি ডেলাওয়ারে এখন আর নেই। আছি নিউ ইয়র্কে।
ডালাসে নিমন্ত্রণের জন্যে অনেক ধন্যবাদ। আসতে পারলে নিজেরও খুব ভাল লাগত, সন্দেহ নেই।
অনেক অনেক ভাল থাকুন।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।

Guest_Writer নীলকমলিনী এর ছবি

আমিও নুইইয়র্ক এ থাকি। রকল্যান্ড এ, বেয়ার মাউনটেনের কাছে। এই মুহূর্তে আমি আলাবামায় আছি, আমার স্বামীর কাজের জন্য। আমি প্রায়ই নুইই য়র্কের বাড়ীতে যাই। আগামীতে নুইইয়র্ক এ সচল আড্ডার আয়োজনের কথা ভাবছি। তখন তোমার সাথে যোগাযোগ করব। তোমার এ মেইলটা দিও।
ভাল থাক। আমার মেইল

তারেক অণু এর ছবি

অসাধারণ!

এই লেখার কথা অনেক শুনেছিলাম, পড়ে বুঝলাম কেন এতবার শুনেছি।

আরে পৃথিবীর সেই সেরা বাড়িটিতে গিয়েছিলাম একবার, টিলাগড়ে থাকার সময়।

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ বস! তুমি টিলাগড়েও ছিলে??!!! তুমি তো ভগবান হে---

কড়িকাঠুরে এর ছবি

একটানে রুবি রায় এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়ে যায়, জানতে বা অজান্তে । সেই ক্ষতে যে কী মায়া! কী স্বস্তি! কী না পাওয়া সুখ! যার কারণে বছরের পর বছর রুবি রায়কে নিজের একদম ভেতরের কোন কুঠুরি তে বসবাস করার আজীবন বন্দোবস্ত করে দিতে আমাদের কোনরূপ দ্বিধা থাকে না । তাঁর ফিরে না তাকানোতেও আমাদের রাজ্য জয়ের আনন্দ- মনে হয় চিরকাল সেই ফিরে যাওয়া পথে চেয়ে থাকতে কোন ক্লান্তি নেই, নেই কোন হতাশ প্রেমিকের মত বিরান বালিয়াড়ি... রুবি রায় ফিরে আসে না, রুবি রায়'দের ফিরে আসতে নেই- এতসব জেনেও বুকে পুষে রাখি এক বাবুই বাসা । সে বাসা মাঝে মাঝে দোলে- দমকা হাওয়ায় জেগে উঠে... "আমার রুবি রায়"- পড়ে...

গুরু গুরু

অনিকেত এর ছবি

অসামান্য এই মন্তব্যের জন্যে কড়িকাঠুরে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এমন একটা মন্তব্যে লেখার সকল পরিশ্রম সার্থক হয়ে যায়--
শুভেচ্ছা নিরন্তর।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।