জাকির জাহামজেদ
ক্রিকইনফোর যে ভদ্রলোক ম্যাচ রিপোর্ট লিখেছেন, তার নাম লেখা নেই, রিপোর্টের উপরে লেখা ক্রিকইনফো স্টাফ, আর একেবারে নিচে গ্লাসগো। হয়তো তিনি তার নাম লেখেননি লজ্জায়, আমরা এটাই ধরে নিতে পারি। হয়তো ভদ্রলোক নিছক ম্যাচ কাভার করতে না, গ্লাসগো ঘুরে আসতেও গেছিলেন, অবকাশ যাপনের একটা সুপ্ত ইচ্ছেও হয়তো মনের ভিতরে ছিলো। কিন্তু তিনিও কি ঘুণাক্ষরে ভেবেছিলেন, এমন লজ্ঝা তাকে দেখতে ...
ঠিকানা বাংলাদেশ!
পাহাড় ও অরণ্য, মসজিদ ও মন্দির, সৈকত ও দ্বীপ—এই সবকিছু ছাপিয়ে যে পরিচয়টি সবচেয়ে বড় হয়ে ওঠে বাংলাদেশের, তা হচ্ছে তার নামটি—বাংলাদেশ! একসময় ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, দারিদ্র্য, দুর্নীতি আর উপচে পড়া ভিড়ের জন্যই বেশি পরিচিত ছিলাম আমরা। ধীরে ধীরে সেই ভাবমূর্তির পরিবর্তন ঘটতে শুরু করেছে। আমরা এখন মাথা তুলে দাঁড়াতে শিখেছি, ক্রমেই হয়ে উঠছি বিশ্বায়নের সক্রিয় অংশীদার। ঐতিহাসিক ...
বুয়েটে ফোর্থ ইয়ারের কথা। একমাস হল এক স্যারের ক্লাসে যাইনা। স্যার একদিন ডেকে পাঠালেন, তার জিজ্ঞাস্য হচ্ছে, আমি তার ক্লাসে যাইনা কেন? নিরীহ মুখ করে বললাম, “স্যার, আপনি তো আটটার পরে ক্লাসে আসলে ঢুকতে দেননা”। আসলেই ঘুম থেকে ৮.১৫ তে উঠে, দাঁত ব্রাশ না করেই তো আর ক্লাসে চলে যেতে পারিনা। এর চেয়ে পরের একঘন্টার ব্রেক সহ ৯ টা পর্যন্ত ঘুমানোই ভাল। সেই আমি, এখন অনেক তোড়জোর করেও সাতটা পর্যন্ত ঘু ...
আমার খুব পছন্দের ছিল চাকরীটা। কাজটা হচ্ছে 'বিজনেস এনালিষ্টের'। কোম্পানীর খরচে প্লেনে করে যেতাম আমেরিকার বিভিন্ন শহরে, এয়ারপোর্ট থেকে রেন্টে-এ-কার ভাড়া করে নিতাম কাজের জন্যে এবং মোটামুটি ভাল হোটেলে রাত্রীবাস ও খাওয়া-দাওয়া সবই কোম্পানীর খরচে। আমি চিরকাল নতুন নতুন স্থানে যেতে ও বেড়াতে পচ্ছন্দ করি। আমেরিকা ঘুরে দেখার এমন সূযোগ সহজে হয় না।
প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলের শহর ...
............................................
প্রথম পর্ব--
............................................
কেউ রোদ কুড়ায়। কেউ ছায়া কুড়ায়। মাঝে মাঝে পাতা। কোন পাতা? আমপাতা জামপাতা-- বেনে বউ রূপকথা।। হি হি হি। জলকথা মলকথা। পদতল চুপকথা।। এরপর আকাশ। এরপর বাতাস। এরপর ধরনী, দ্বিধা হও গো মা জননী।এ প্রাণ রাখি কেমনে!
এইখানে এসে সুতো ফুরিয়ে গেছে। সুঁইটা চোখের সামনে ধরলে ফুটোর মধ্য দিয়ে দেখা গেল—বেলা বিলের মাঝখানে উঠে পড়েছে। দরিয়াবানু পাতিলের মধ্ ...
ভোলাগঞ্জের রাস্তা পুরোটাই ঘুমের উপর দিয়ে গেল। রাস্তায় দু'একবার ঘুম ভেঙেছে যদিও তা রাস্তার ঝাকুনিতে। ঘুমের ব্যাপারে আমার ভালই সুনাম আছে। যে কোনো অবস্থায় যে কোনো স্থানে আমি ঘুমোতে পারি। নৌকার ইঞ্জিনের পাশে ঘুমিয়ে আমি নির্দ্বিধায় পাড়ি দিতে পারি মাইলের পর মাইল।
ঘুম পুরোপুরি ভাঙল ভোলাগঞ্জ পৌঁছার মিনিট পাঁচেক আগে। তাও আমাদের সহযাত্রি ফখরুল ভাইয়ের চিৎকারে। চোখ মেলতেই দেখলাম সা ...
আমাদের প্রত্যেকের চিন্তা-ভাবনা-দর্শন শেষ পর্যন্ত আমরা 'নিজের' বলি। এগুলি কতটা নিজের, কতটা জেনেটিক, কতটা রিপিটেশনভিত্তিক, এইটা আমরা কে বলতে পারি?
চিন্তা নিজের কী না, সেটা 'বিবর্তিত' হওয়ার পর পুরো পরিষ্কার হয় না সবসময়। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া অনেক সময় ধরা খাইয়ে দেয়। এ্যাডভার্টাইজিং কোর্স পড়ার সময় এর বেশ কিছু উদাহরণ পেয়েছিলাম। প্রাত্যহিক জীবনে দৈনিকই উদাহরণ পাই। 'চিন্তারাজি লুক ...
প্রেমের ঋতু হিসেবে বসন্ত নাকি বর্ষা, কোনটা বেশি উপযোগী, এ নিয়ে ধুন্ধুমার তর্ক চলছে। স্থান--শাটল ট্রেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালযে পৌঁছতে ওটাই প্রধান ভরসা। প্রেমের ঋতু বর্ষা,এই ঘোষণা দিয়ে তর্কের সূচনা করে দিলেও, শেষ করার দায়িত্বটা অন্যদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে ট্রেনে জানালার পাশের সিটে বসে আমি বৃষ্টি উপভোগ করছি।
ট্রেন চলছে ঢুলে ঢুলে--কী জানি কিসের মাদকতায়! রেল লাইনের দুধারে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত। তাতে অবিরাম বর্ষণ। কী অপূর্ব! জানালা গলে বৃষ্টির ছাঁট আমাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে। আহা বহুদিন পর বৃষ্টি নেমেছে এমন! তীব্র গরমে ঝিমিয়ে থাকা প্রকৃতিতে নেমেছে প্রাণের জোয়ার। বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে ট্রেনটা যখন পৌঁছালো তখন বৃষ্টির ছোঁয়ায় ঝকঝক করছে সবুজ সজীব ক্যাম্পাস। পাহাড়গুলো স্নিগ্ধতা মেলে ধরেছে। কদমের সারি সারি গাছ ফুলে ছেয়ে গেছে। এতদিন তো লক্ষই করিনি, কখন কুঁড়ি আসলো, পাঁপড়ি মেললো!
ছোটবেলা থেকে ভারতজুজু দেখতে দেখতে বুড়ো হলাম, আমার নানীকে ভারতবিরোধী ফিমেল বিচিং করতে দেখে নানা আর সহ্য করতে না পেরে বলেছিলেন এতো বিশাল একটা দেশ, চাইলে যা খুশী করতে পারে, কিন্তু পারলে সাহায্যই করে, যুদ্ধের বছর বছরখানেক গুষ্টি সুদ্ধো খেয়ে এলে, এখন নুন খেয়ে উলটা গুণ গাইছো।ঐদিন খান আতার খাঁচাটা ভেঙ্গে ফেললেন নানা।
ফারাক্কা ইস্যুতে ভাসানী পদযাত্রা করেছেন।ফারাক্কা বাঁধ ইস্য ...
::শ্রেণীচৈতন্য ও আত্মের সংযোগসূত্র::
একা মানুষ বিপ্লব ঘটায় না। যদিও সে বিপ্লব ‘করতে’ পারে। সকল ইতিহাস একান্তই শ্রেণীসংঘাতের। বাহুল্য, তবু বলা। একা মানুষ, দলে দলে, ঐ শ্রেণীভুক্তমাত্র। জনসাধারণের মধ্যে সেও থাকে। কখনো প্ল্যাকার্ড হাতে। কখনো নুড়িপাথর। পাউরুটিও থাকতে পারে। ‘যার যা কিছু আছে’ তাই নিয়ে সবার মধ্যে সংগ্রামী সে। তাই পুঁজিতন্ত্র তাকে বারংবার একা করে তুলতে চায়। ...