সুতপা’র একটা চিঠি পেয়েছিলাম।
চৈত্রের তারিখটা মনে নেই।
ও লিখেছিল-
“জানিস এপ্রিলের আগে হয়তোবা পরে অথবা মার্চের শেষেই
ওরা মানে পাষন্ডগুলো, কী জানি নি দোষ পেয়েছিল বাবার,
তাঁর বলিষ্ঠ দেহটাকে মেরে খাক করে ফেলেছিল, ফুটন্ত পানিতে ডুবিয়ে রেখেছিল বাবাকে।
উহ কি নির্মম অত্যাচার সহ্য করেছিলেন বাবা!
ওপার থেকে শুনে যখন ছুটে এলাম
তখন তাঁর মৃত, দগ্ধ দেহটাকে মাটি চাপা দিয়ে রেখেছিল কেবা কারা।
"কিপ রোয়িং ফরওয়ার্ড!" পেছন থেকে চাক চেঁচিয়ে উঠলো। ডানে বসে থাকা লীও অস্ফুটস্বরে চিনা ভাষায় কি জানি বলে উঠলো, মনে হয় "ইয়াল্লা" জাতীয় কিছু। ভেলার ঠিক সামনে বসে বৈঠা বাইছি আমি। আমার ঠিক পেছনে বামে ফিল , আর ডানে লীও। সবার পেছেন হাল ধরে চাক। চোখের সামনে ফেনিল জলরাশি, তার ভেতর জেগে আছে বিশাল বিশাল ভয়ালদর্শন পাথর, সেই সাথে কানে তালা লেগে যাওয়া পানির গর্জন। পানির গতি বেড়ে চলেছে। কারন সামনেই নদী কয়েক ফিট
তাই বলে খড়ম মারিলি ওরে বনিতা মুষলিনী?
এইরূপ কমপ্রিহেনসিভ কমবখতপনায় অঙ্গে অঙ্গে সর্ব প্রত্যঙ্গে কুন কিছু বাদ না রাখিয়া?
আমি কানে ইয়ারফুন দিয়া শুনি ফাঁসিবাদের পদধ্বনি ভলিউম
কম করে। বিবি অদূরে শয়ান।
ঘটনা আর কিছু নয় সারাদিন পেশাদার কবির হাড়ভাংগা খাটুনি খাটিয়া যবে
বাটী ফিরে বসেছিনু আপন কবিতার চর্চাপীঠে হেলান ও হাই সহযোগে
করকমলে লয়ে বামাচারিনী বামাটির প্রস্তুতকৃত এক পেয়ালা চা
বুয়েটের পাঁচ বছর মোটামুটি ঘোলাটে একটা সময়। কখন কী করেছি তার প্রায় কিছুই মনে নাই। তবে ফোর্থ ইয়ারে এসে মনে হয় আমাদের কম্পিউটার গ্রাফিক্স কোর্স নিতে হলো। সেইখানে গ্রুপ প্রজেক্ট দেয়া হলো আমাদের ক্লাসরুমকে ভেন্যু হিসাবে রেখে কলম খেলার একটা গেইম বানানো। সারভাইভাল টেকনিক হিসাবে আমি বরাবরই ভালো কাজ পারে এমন ছেলেপুলেদের গ্রুপে জুটে যেতাম। এবারো বাপ্পি আর অভির সাথে গ্রুপ করে ফেললাম।
আমি ততদিনে দুনিয়াবি সকল বিষয়ে নির্বাণ লাভ করে ফেলেছি। গ্রেড, প্রজেক্ট কমপ্লিশন, ভালো প্রজেক্ট করে প্রচুর "বস!" শোনার লোভ (লাইকপূর্ব যুগে এটা একটা বড় কারেন্সি ছিলো) ইত্যাদি কোন বিষয়েই বিন্দুমাত্র আগ্রহ না দেখিয়ে গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। আমাকে দিয়ে কিছু হবে না এই উপলব্ধি আর সাথে কম্পিউটার গ্রাফিক্স দিয়ে ম্যাজিক ঘটানোর উৎসাহে দুই গ্রুপমেটই আমাকে একদিন বললো, "তোর কিছু করা লাগবে না, আমরা দুই জন মিলে পুরা প্রজেক্ট নামায় দিবো।" ফেরেশতার মত দুই গ্রুপমেটের কথায় আমি একবারে আপ্লুত হয়ে রুমে ফিরে এসে ল্যান থেকে পাওয়া বাংলা নাটক দেখা শুরু করলাম।
রাতের আঁধারে
হোসনে আরা মারে
হাইহুঁই ধুপধাপ।
ঘুমের আড়ালে
স্বপ্নের ময়দানে সে খেলে ফুটবল
বাস্তবের খাটে সে উল্টিপাল্টি খায় ঘনঘন তাহার মালিকানাধীন
কোলবালিশদুটি লয়ে
পাশে শুয়ে পেশাদার কবি আমি খেলায়েত খাঁ
টের পাই স্বপ্নেও হোসনে আরা প্রতিপক্ষের পায়ে পা পেচিয়ে অযথা
ল্যাং মারে সুদক্ষ ল্যাংচু হেন
সম্ভবত হলুদ কার্ডও পায়, কারণ বিবির হাসি-হাসি
বদনখানি মলিন হয়ে আসে ঘনঘন
মনে আছে, তোমায় গল্প করেছিলাম - কৈশোরে দেখা সে মায়াবী আলোর খেলা?
রক্তকরবী। মঞ্চে নারী ও পুরুষ, হাতের মুঠোয় হাত। মাত্র কয় পা হেঁটে তারা পার হয়ে গেল – যেন, অনেক দূরের পথ!
আমরাও।
তেত্রিশ বছর। কত দূর, কত-ও দূ-ঊ-র! জীবনের রঙ্গমঞ্চে, চোখের সামনে, সেদিনের তরুণ-তরূণী – আজ প্রায় আবছায়া। রূপালী মায়ার খেলা!
শুধু, তুমি আছ তাই, খেলা চালু আছে। না হলে আউট!
কাল যতিহীন, তবুও।
স্থানঃ এলিফ্যান্ট রোডে "এরোপ্লেন মসজিদ"-এর পেছনে কোনো একটি বাড়ি। ঢাকা।
ক্ষণছবি - ১
[justify]ক.
"ছিঃ ছিঃ ছিঃ, আরে ভাই বিচার চাইতে হবে ভালো কথা, কিন্তু তাই বলে চার পাঁচ বছরের শিশুদের হাতে 'ফাঁসি চাই' পোস্টার দিয়ে নিয়ে আসতে হবে কেন? ওরা কারা, যারা কোমলমতি শিশুদের মনে এভাবে ঘৃণার চাষ করছে?"
"দেখ ভাই, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমিও চাই, তবে সেটা তো স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, আন্তর্জাতিক মানের এবং সবার গ্রহণযোগ্য হতে হবে, তাই না? এই আইসিটি না ফাইসিটি তো কোন জাতেরই কিছু হচ্ছে না।"