আমার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে কয়েকটি ছোট্ট ছোট্ট মফস্বল শহরে। তখন 'নববর্ষ' বা ইংরেজী 'NEW YEAR' এর কোন ধারনা আমাদের ছিলনা। এ ধরনের কথা শুনেছি বলেও মনে পড়েনা। যেটা মনে পড়ে তা হল 'চৈত-সক্রান্তির মেলা' ও 'বৈশাখী' মেলার কথা।
নদীর পাড়ে বা স্কুল-মাঠে মেলা বসত। বিরাট মেলা। কয়েকদিন ধরেই চলত সেই মেলা। আমরা সকাল, বিকাল, সন্ধ্যা বা রাত্রি, যে কোন সময়ই মেলায় হাজির হতাম।
আমি মনে হয় বেশীই সাধারণ। বুদ্ধি যেমন তেমন শুদ্ধি একটুও নাই। ক্রিয়েটিভিটি নাই, এই জন্যেই তাড়াতাড়ি ভক্ত বনে যাই; ভাল লাগলেই!
স্মৃতিকথাকে গল্প বলাটা কতোটুকু যৌক্তিক? গল্প মানে তো বানানো কথা। আবার ছোট থাকতে, আব্বু বা দাদু তাদের ‘ছেলেবেলার গল্প’ শোনাতো আমাকে। সেগুলো কি তবে সত্যি কথা, নাকি বানানো গল্প, নাকি সত্যি কথার সাথে বানানো কথার মিশেল? আমার বাচ্চাকালের একটা স্মৃতি আছে, এক মেঘলা বিকালে আমি আমাদের ঢাকার বাসার বারান্দায় লাল সুয়েটার আর হাফ-প্যান্ট পড়ে আব্বুর পাশে বসে বাদাম খাচ্ছি আর কথা বলছি, বাইরে তুষারপাত হচ্ছে! হাসবেন না, কিন্তু অন্ততঃ ১০ বৎসর বয়স পর্যন্ত আমি এটাকে সত্য স্মৃতি (বা সত্য ঘটনা) বলেই ভাবতাম। যাই হোক, ঢাকা আমার অত্যান্ত প্রিয় একটা শহর। ‘বড়’ হবার পর থেকে বন্ধু, বান্ধবী, প্রেমিকার সাথে এই শহরের আনাচে-কানাচে ঘুরে-ফিরে, খেয়ে-দেয়ে বেড়িয়েছি। তাই ভাবলাম এই শহরটাকে নিয়ে নিতান্তই সাদা-মাটা কিছু স্মৃতিকথা লিখে ফেলি। সেই স্মৃতিকথায় কতটুকু সত্য আর কতটুকু কল্পনার খাঁদ আছে, সেটা পাঠকের উপরেই ছেড়ে দিলাম।
অধম গোলাম হইতে উত্তম যদি তার দেশপ্রেম থাকে।
অধম গোলাম হইতে উত্তম যদি সে নরাধম না হয়, যদি তার না থাকে পশু প্রবৃত্তি।
অধম গোলাম হইতেও উত্তম যদি তার মওদুদি-দাড়ি-টুপি সম্বল না হয়।
একজন অধমের সাথে তবুও ভুল করে মেলানো যায় হাত, গোলামের সাথে আমৃত্যু নয়!
মেয়েটি মরেছে। শেষ পর্যন্ত মেয়েটি মরেছে। হয়তো তার মরার কথাই ছিল। এই লেখাটা কিভাবে লিখব ভাবছিলাম। কোথায় থেকে শুরু করব তাই ভাবছিলাম। কিন্তু পারছি না। কিছুতেই কোন কিছু মিলিয়ে উঠতে পারছি না । কারণ ঘটনাটি ঘটেছে আমার থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে। আমি শুধু শুনেছি। ওই মেয়েটিকে আমি দেখিনি কখনো। কিন্তু প্রশ্ন হল তার মৃত্যুর জন্য দায়ী কে? সুসাইড নোট জাতীয় কিছু লিখে যায়নি সে...
সায়েম এবং সায়মা জমজ দু’ভাই বোন। প্রকৃতির অদ্ভুদ খেয়ালের বশে দু’জনেই ছোটবেলা থেকে দূরারোগ্য এক ব্যাধিতে আক্রান্ত। হুইলচেয়ার ছাড়া চলাফেরা দুঃসাধ্য। হাঁটতে পারতো না বলে পড়ালেখা বেশি দূর এগুয়নি তাদের। শিক্ষক যদি স্কুলে যেতে মানা করেন বাবা মা আর কি করবেন। ঘরে বসে এস.এস.সি. টা কোনমতে দেওয়া হলো। তারপর... বাংলাদেশের আরো অনেকের মতোনই তাদের জীবনটা এখন কাটছে চারদেয়ালের আবদ্ধ ঘরেই।
রোজার মাসটা কোনো ছুটি ছাড়া টানা অফিস করে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম আর তা হলো এবার ঈদের ছুটিতে অবশ্যই কোথাও যাবো। ক্যাম্রার অবস্থা ভালোনা, তার মধ্যে রোয়েনা বর্তমানে ক্যাম্রাহীনতায় ভুগছে, তারপরও এই সঙ্কল্প থেকে এক চুলও টলবোনা বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলাম। কিন্তু শালার, যাবোটা কোথায়? ঈদের পর তো বাংলাদেশের ঘুরাঘুরি করার মতো সর্ব অঞ্চলে মানুষের ভীড়ে টেকা দায় হয়ে যায় ... তবে ... তবে ... আমাদের কি আর কোথাও যাওয়া হবে না? পরিস্থিতি যখন এতটাই ঘোলাটে ঠিক তখন প্রমিথিউসের মতো এক খাবলা আগুন হাতে আসমান থেকে নেমে এলো ‘কাউয়া’। কা ... কা ... রবে জানান দিলো যে এবার ঈদের পর বিক্রমপুর যেতে নাকি কোনো বাধা নেই। কারন, আবুইল্লা বা ফারুইক্কা কেউ ‘এই ঈদে কম কম বিক্রমপুর যান, জীবন উন্নত হবে’ টাইপ বক্তব্য দেননি। সুতরাং আমাদের সামনে সম্ভাবনার সমস্ত দুয়ার চিচিং ফাক করে খুলে গেলো।
এই স্বল্প জানার পরিধি নিয়েও এমন একটা লেখা ফেঁদে বসার কথা আমার নয়। কিন্তু গত কালকের একটা ঘটনা মনে হলো একটু আলোচনায় আনতে পারলে অন্তত কে কি ভাবছে সেটা জেনেও নিজের দুর্বলতা কিছুটা দূর হবে। লেখাটিকে কেউ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার করবেন না আশা করি।
পৌরাণিক যুগের শুরুতে দৈহিক শুচিতাই যেন ক্রমে চরিত্রের সংজ্ঞা হয়ে দাড়াচ্ছে।
অতি ক্রুর স্বভাবাপন্ন নর-নারী কোন ক্রমে দৈহিক শুচিতা রক্ষা করতে পারলেই তাঁরা চরিত্রবান আর চরিত্রবতী হচ্ছেন।
সংহিতা যুগে এ পরিবর্তনের গৈরব বহন করেছেন, উদ্দালক ঋষিপুত্র শ্বেতকেতু।