আমি যেখানে আছি-
-----------------
আমি কিন্তু এখানে এখন নেই,
বরং রয়েছি সুদূর অতীতে,
এই ঘরের কোণেই চুপটি দাঁড়িয়ে আছি,
কিন্তু কাঁপছি বহু আগের শীতে।
মানুষ টানুস, টেকা টুকা, আর ইকোনমি খাউয়ার পরে করোনা ভাইরাস ছুটিটাও খেয়ে ফেলল সুড়ুৎ করে।
দেশ ছেড়ে এসেছি ছয় বছর।
বয়স খাউয়ার পর এডভাইজার ঢেকুর তুলে বলল, পোস্ট ডক খাউ?
এদিকে এক্স পেমিকাকে খাউয়ার পর তার জামাই ইনস্টাগ্রামে ছবি দিয়ে বলে, হ্যালো ফ্রান্স, দুনিয়ার সকল শান্তি এই খাউয়াতেই।
ছোট ভাইটাও দাঁড়ি মোচ পাকিয়ে আন্ডারগ্রাজুয়েট খেয়ে ফেলল।
হোম কুয়ারান্টিনে
আছি
আপাতত
যদিও বিদেশ মোর হয়নিকো যাওয়া
শরীলও মাশাল্লাহ সুস্থ
তবু
মাবুদের ইশারায় এ কি হল?
বেপারটা এমনও নয়, পুরা বাসা জুড়ে মোর আনাগোনা
যেতে পারি যেথা খুশি, পাকঘরে বানাতে পারি কফি
খাটঘরে বিছানা জুড়ে খেতে পারি গড়াগড়ি
বৈঠকখানায় বসে দেখতে পারি তাগড়া তাগড়া হিন্দি নায়িকার ঘাগড়া।
কিংবা চাইলেই যাব আলামিন ভাতের হোটেলে, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বসে দিব গুলতানি, খাব সিংগারা।
বারিন্দায় ছফা পেতে শুয়ে
একবার নক্ষত্রের পানে আর একবার বেদনার পানে
চেয়ে চেয়ে বেলা করি গুজরান।
ঘটনা জটিল তাই আস্তে আস্তে বলি।
পালঙ্কের পাশে ড্রয়ারের গোপন খনিতে মোর কবিতার খাতা
তালাচাবি দিয়া রাখি যেন মোর প্রাণপ্রিয়া বজ্রমুষ্ঠি শক্তিমতী পত্নী হোসনে আরা
উহা খুলিয়া পড়িতে নারে।
তবে যেহেতু সকল চাবি হোসনের কবলে তাই কুন খাতা কুন বই নিরাপদ নহে
তাই সকল কাব্য আমি চর্চা করি ওষুদ কম্পানির পেডে
বরং তুমি নিজেকে প্রত্যাহার করো।
এই সংঘ এই আনন্দ এবং মনভালো
পেছনে ফেলে মৌন হও, হও একা।
মানুষের মাঝে আলো থাকে, তুমি
তাই আঁধারে হও নির্জন, নির্জন হও।
অনেকের মাঝে থেকে একা হয়ে যাও।
আলো থাকুক, কোলাহল থাকুক উজ্জল
মানুষদের জন্য। তুমি ফিরে যাও প্রচ্ছায়ায়।
তুমি নিজেকে প্রত্যাহার করে নাও,
এই সংঘ এই আনন্দ এই মনভালো
থেকে নিজেকে সরিয়ে নাও আলবাব।
অনেক অনেক বছর আগে, যখন বেশ কিছু নেরুদার কবিতা অনুবাদ করছিলাম, এক বড় ভাই সেগুলো পড়ে বলেছিলেন শার্ল বোদলেয়ারের কবিতা অনুবাদের চেষ্টা করতে। প্রথম চেষ্টায় খুবই কঠিন লেগেছিল অনুবাদ করা সেগুলোকে। তাও একবার একটি কবিতা অনুবাদ করে ফেলেছিলাম। আজকে হঠাৎ খোমাখাতায় ঘুরতে ঘুরতে সেই ভাইয়ের একটি মন ছুঁয়ে যাওয়া লেখা পড়ে আবারও বোদলেয়ারের কথা মনে পড়লো। সেই সূত্র ধরে এই অনুবাদ প্রচেষ্টা…
তুবা যেদিন বড় হবে
তৈরি থেকো, তোমরা সবাই
সবচে পাকা রূপকথাকার সঙ্গে নিয়ে, তোমরা যেন
গল্প ফাঁদতে ভুল কোরো না। সঙ্গে রেখো
কল্পকথা, সত্যজিতের একশ আঁকা
জবরখাকির মস্ত ব্লোআপ দেখিয়ে বোলো
আসছে দিনের সেই তুবাকে
ওটাই খেলো তোমার মাকে।
সেদিন যেন মিথ্যা-মিথে
খুবসে রাঙায় রিলের ফিতে
কম্পুছবির কৌশলে আর তুলির টানে সঠিক শোভায়
গুলিয়ে ছবি দেখিয়ে বোলো
তুবার মা-ই ভালেন্তিনা তেরেস্কোভা
সেরা পুশকিন বিশেষজ্ঞ সের্গেই ফোমিচেভের পিছন পিছনে ভল্টের ভারী দরজা দিয়ে প্রবেশ করি। এক তাকের উপর থেকে চামড়ায় মোটা নোটবই নিয়ে তিনি দেখান লেখা ছাড়াও সেখানে নানা মুখ ও ফিগার আঁকা, যা কবি শব্দের আবেশের বসে আঁকিয়ে ছিলেন। বিশেষজ্ঞ ভদ্রলোক পাতা উল্টাতে উল্টাতে তিনি দেখাতে থাকলেন কোন পাতায় ‘জিপসি’ লেখা, কোথায় ‘ওনেজিন’ যেখানে এক কোণে রাজকীয় তাতিয়ান দাঁড়িয়ে আছে।
ওয়াল্ট হুইটম্যানে উপরে পারিবাহিক আবহের প্রভাব ছিল খুব সামান্য। মা মূলত ধর্মীয় বইপত্র পড়তেন। বাবা ছিলেন পোড় খাওয়া শ্রমিক (!) ও মদে আসক্ত। তাদের ৭ সন্তানের মধ্যে ৩ জনই কোন না কোন মানসিক সমস্যায় ভুগতেন। বিদ্যালয় তাদের কাছে কোন সময়ই গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছিল না, ওয়াল্ট ১১ বছর বয়সেই স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন, যদিও সুযোগ পেলেই বই ধার করে পড়তে থাকতেন আরব্য রজনী, জেমস ফেনিমোর কুপার আর স্যার ওয়াল্টার স্কটের