গরল নামো কলম বেয়ে
এবার আমায় মুক্ত করো।
পিঠভাঙা এক বিষের পাথর
বইছি আমি বিষণ্ণতায়
আজ সিসিফাস।
আগের জন্মে হয়তো ছিলাম নোতরদামের কুঁজো।
দিন সাতেকের না আঁচড়ানো চুলের জটা
মেঘ ভেবে যেই ভুল করেছি
হাত পেতেছি মেঘের কাছে
বৃষ্টি নামুক
বৃষ্টি নামুক।
মেঘগলা জল গরল ধুয়ে
এবার আমায় মুক্ত করো।
কবি ঝুলেখা ঠাকুর সনে কোথা পরিচয়
এ ফিযুল প্রশ্ন করে খেয়ে দিয়ো না তোমরা সময় আমার।
পুরুষ কবির টানে মহিলা কবিরা
সততই চলে আসে দূর হতে কাছে
গ্রেবিঠির টান দিয়ে নিউটন যেইরূপে গাছ হতে আপেল পাড়িত।
সেইরূপে ঝুলেখা ঠাকুর এসে ঠাঁই নেই মম হটসাপে।
হিংস্র পত্নী হোসনে আরা ভাতরুমে ঝর্ণাটি ছেড়ে যেই মাতিল গোসলে
অমনি করিনু আমি হটসাপ ঝুলেখা ঠাকুরে
কবিতার ঘেনঘেন বাদ দিয়া বলি তারে সরাসরি, ওগো শুনছো?
The Hill We Climb - Amanda Gorman
যখন দিন আসে আমরা প্রশ্ন করি নিজেদের
এই অনিঃশেষ অন্ধকারে আমরা কোথায় পাবো আলো?
ক্ষতির ভার বয়ে,
এক সমুদ্র পাড়ি দিতে হবে আমাদের।
পাশবিক এক দুঃসময় আমরা মোকাবেলা করেছিলাম,
আমরা জেনেছিলাম শান্ত থাকা মানেই সবসময় শান্তি নয়,
এবং ন্যায়ের নিয়মকানুন মানেই ন্যায়বিচার নয়।
এই ভোর আমাদের, আমরা জানার আগেই।
কোনভাবে আমরাই তা এনেছি।
'বাংলা দেশের রং যে নীল তা এই সব যাত্রায় খুব টের পাওয়া যেত- আকাশ নীল, বাতাস নীল,প্যাডলের আঘাতে ফেনিল জলটুকু ছাড়া পুরো মেঘনা কালচে নীল, তীরের পাটখেত নীল, সুপুরি-নারকেল বন নীল, গ্রামের গাছগাছালি নীল, ধূ ধূ জলের দূরের তীরও শুধু একটা হালকা নীল রঙের রেখা। এই নীল জীবনানন্দ আরো অনেক বেশি দেখেছিলেন :
অশ্বত্থে সন্ধ্যার হাওয়া যখন লেগেছে নীল বাংলার বনে
বিস্তারিত থাক
শুধু বলি, লিফ্টের ভিতরে আমরা তিনজন ঠেসাঠেসি, নিঃস্পন্দ নির্বাক।
হিংস্র পত্নী প্রাণপ্রিয়া হোসনে আরা অদূরে জ্বলন্ত চোখে কটমট
আমা পানে চেয়ে, বিড়বিড়ায়ে কী যেন চলিছে বলি।
তার পাশে ততোধিক জ্বলন্ত যুগল আঁখি পিটপিটায়ে চেয়ে আছে
নিতম্বিনী রাবেয়া পাটেল। হোসনে বিবির সে সহকর্মিনী। নিকটেই বাসা।
সুন্দরী। তনুটি খাসা।
আলগোছে দেখে লই, হোসনে আরা খন্তাখানি লগে লয়ে আনিয়াছে কি না।
সরল অঙ্কের বিশ্বাসঘাতকতার
কোন তুলনা নেই।
(সরল কর বলে যার শুরু
তার নাম সরল অঙ্ক হত কি করে!)
কেন ওরে ইতালি মনির তুমি আনপড় চিউবাকার মত হট্টগোল করে
বলেছিলে কানট্রি সিষ্টেমকে ফাক কর?
জুলিয়াছ সিজারুদ্দৌলার দেশে এতডি বৎসর গুজরে জীবন
কিছুই কি শিখ নাই ছলাকলা পূর্বরাগ
মেক লাভ, নট ফাকাফাকি?
একেই কি বলে সভ্যতা? উড়ে এসে ফুঁড়ে দিবে পরিযায়ী উটপাখির মত?
কানট্রি সিষ্টেমকে তুমি একদিন সন্ধ্যা বা রাইতে
ডেটে যাইতে ফুসলাইতে
পার না কি?
(১৯৭৩ এর ২৩ সেপ্টেম্বর পাবলো নেরুদা চিলিতে মারা যান বা হয়তো খুন হন। তার দেড় মাসের মধ্যেই ১৯৭৩ সালের নভেম্বরে ‘বিনোদন’ পত্রিকায় শামসুর রাহমানের এই লেখাটি প্রকাশিত হয়, যা সাধারণত কোথাও দেখি না। সম্প্রতি পত্রিকাটি হাতে আসায় ভাবলাম এই লেখাটি ব্লগে থাকুক। আর ভারতীয় কূটনীতিক জনাব মুচকুন্দ দুবের একটা কথা মনে পড়ল, উনি শামসুর রাহমানের কবিতা নিয়ে বলেছিলেন যে “বিশ্ব সাহিত্য নিয়ে আমার যে লেখাপড়া তাতে সত্যি বল
পাবলো নেরুদা একই সাথে বাঙালি সমাজে চরম জনপ্রিয় অথচ প্রায় অপরিচিত। মানে কবি হিসেবে তাঁর সুনাম পাঠক মাত্রই জানেন, তাঁর সৃষ্ট কিছু গনগনে অবাক স্তবক সকলেরই মুখে শোভা পায় কিন্তু এক জীবনে যে প্রায় অসম্ভব সাড়ে তিন হাজার পৃষ্ঠা কবিতা তিনি পৃথিবীকে দিয়ে গেছেন, এবং যে পাবলো নেরুদার নির্বাচিত কবিতার সাম্প্রতিক প্রকাশিত সংকলনটি ১৫০০ পাতার ( পৃথিবীর আর কোন কবির নির্বাচিত কবিতা হাজার পাতা পেরিয়েছে বলে জানা নেই!
কিছু না। কিছু বিশৃঙ্খলা - চিন্তা ও চেতনায়। ভাগ করে নিই, এই মাত্র।